আবূ যিনাদ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইব্নু আবদুল আযীয (র)-এর একজন কর্মচারী ডাকাতির দায়ে এমন কয়েকজনকে গ্রেফতার করলেন, যারা কাউকেও হত্যা করেনি। কর্মচারী তাদের হাত কেটে ফেলতে অথবা তাদেরকে হত্যা করতে ইচ্ছা করলেন। কিন্তু কোনটি করা ঠিক হবে সাব্যস্ত করতে না পেরে অবশেষে এ ব্যাপারটি উমার ইবনু আঃ আযীয-এর নিকট লিখে জানালেন। উমার ইবনু আঃ আযীয উত্তরে লিখলেন, যদি তুমি সহজ শাস্তি প্রদান কর, তবে তাই উত্তম হবে। [১] (হাদীসটি ইমাম মালিক এককভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, আমাদের মতে যদি কোন ব্যক্তি বাজারের সামগ্রী হতে এক-চতুর্থাংশ দীনারের সমমানের মাল চুরি করে, যা উহার মালিক একটি পাত্রে রেখেছে এবং একটিকে অন্যটির সাথে মিলিয়ে রেখেছে, তবে চোরের হাত কাটা যাবে, ঐ মালের মালিক তথায় উপস্থিত থাকুক অথবা না থাকুক, দিনে চুরি হয়ে থাকুক অথবা রাতে।
মালিক (র) বলেন, যদি কোন ব্যক্তি চুরি করে এমন কিছু, যার মূল্য দীনারের এক-চতুর্থাংশ। অতঃপর সে ধরা পড়ে, উহা মালের প্রকৃত মালিককে প্রত্যর্পণ করে, তবুও তার হাত কাটা যাবে। কেউ যদি বলে কেন তার হাত কাটা হবে? তার নিকট হতে মাল ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। তাহলে বলা হবে কেননা এর উদাহরণ এইরূপ যেমন কোন ব্যক্তি কোন মাদক দ্রব্য পান করল, যার গন্ধ তার মুখ হতে নিঃসৃত হচ্ছে, কিন্তু মাতাল হচ্ছে না, তবে তার উপর শাস্তির আদেশ জারি হবে। কেননা সে ব্যক্তি উহা মাদকতার জন্যই খেয়েছিল যদিও সে মাতাল হয়নি। তদ্রুপ চোরও মাল নিয়ে যাওয়ার জন্যই চুরি করেছিল, যদিও নিয়ে যেতে সক্ষম হয়নি।
মালিক (র) বলেছেন, যদি কতিপয় ব্যক্তি কোন ঘরে চুরি করার নিমিত্তে প্রবেশ করে আর তথা হতে একটি বাক্স বা কাষ্ঠ অথবা টুকরি সকলে মিলে উঠিয়ে নেয়, যদি উহার মূল্য এক দীনারের এক-চতুর্থাংশ পরিমাণ হয় তা হলে ঐ সকল ব্যক্তির হাত কাটতে হবে। আর যদি প্রত্যেকে পৃথক পৃথক মাল নিয়ে বের হয়, তবে যার মালের মূল্য এক-চতুর্থাংশ দীনারের পরিমাণ হয় তার হাত কাটা যাবে। আর যার মাল এই পরিমাণের না হবে, তার হাত কাটা যাবে না।
মালিক (রা) বলেন, আমাদের মত এই যে, যদি কোন ঘরে শুধু একজন লোকই থাকে আর ঐ ঘর হতে চোর কোন দ্রব্য চুরি করে, কিন্তু ঘরের বাহিরে নিয়ে যেতে সক্ষম না হয়, তবে তার হাত কর্তন করা হবে না, যতক্ষণ না ঐ মাল ঘরের বাহিরে নিয়ে যায়। যদি ঘরে পৃথক পৃথক কয়েকটি কামরা থাকে আর প্রতি কামরায় লোক থাকে, এমতাবস্থায় যদি চোর কোন কামরা হতে কারো মাল চুরি করে কামরার বাহিরে নিয়ে যায়, কিন্তু ঘরের বাহিরে নিয়ে যায়নি, তবুও তার হাত কাটা হবে।
মালিক (র) বলেন, আমাদের মতে যে দাস-দাসী ঘরে যাতায়াত করে আর তার প্রভু তার উপর পূর্ণ নির্ভরশীল থাকে, যদি সে স্বীয় প্রভুর কোন মাল চুরি করে তা হলে তার হাত কাটতে হবে না। এইরূপে যে দাস বা দাসী ঘরে যাতায়াত করে না, আর প্রভু তার উপর নির্ভরও করে না, সেও যদি স্বীয় প্রভুর মাল চুরি করে থাকে তবে তার হাত কাটতে হবে না। যদি ঐ দাস বা দাসী স্বীয় প্রভুর স্ত্রীর মাল অথবা স্বীয় প্রভুর স্বামীর মাল চুরি করে, তা হলে তার হাত কাটতে হবে।
মালিক (র) বলেন, অনুরূপভাবে যদি স্বামী স্ত্রীর এমন মাল চুরি কর্ যা যেই ঘরে তারা উভয়ে অবস্থান করে সেই ঘরে রক্ষিত নয়, বরং অন্য কোন ঘরে রক্ষিত অথবা স্ত্রী স্বীয় স্বামীর এমন মাল চুরি করে যা অন্য ঘরে রয়েছে, তা হলে হাত কাটতে হবে।
মালিক (র) বলেন, বালক-বালিকা অথবা কোন বিদেশী ব্যক্তি যে এই দেশের কথা বলতে পারে না যদি কোন চোর তাদেরকে ঘর হতে চুরি করে, তা হলে হাত কাটতে হবে। যদি রাস্তা হতে অথবা ঘরের বাহির হতে নিয়ে যায় তা হলে হাত কাটতে হবে না। এদের হুকুম পাহাড়ের ছাগল ও গাছের লটকানো ফলের মতো হবে।
মালিক (র) বলেন, যদি কেউ কবর খুঁড়ে দীনারের চতুর্থাংশ পরিমাণ মাল চুরি করে নেয়, তবে চোরের হাত কাটা হবে। কেননা কবরও ঘরের মতো একটি রক্ষিত স্থান। কিন্তু যতক্ষণ না কাফন কবর হতে বের করে আনবে ততক্ষণ হাত কাটতে হবে না।