সুফইয়ান ইবনু আবদুল্লাহ্ (রা) থেকে বর্ণিতঃ
উমার ইবনু খাত্তাব (রা) যাকাত উসুলকারী হিসেবে নিযুক্ত করে তাঁকে এক অঞ্চলে পাঠিয়েছিলেন। বকরী গণনা করার সময় তিনি বাচ্চাগুলোকেও গণনায় শামিল করে নিতেন। এতে এলাকাবাসিগণ তাঁকে বললেন, বাচ্চাগুলোকে আপনি গণনায় শামিল করেন কিন্তু যাকাতের মধ্যে একে গ্রহণ করেন না কেন ? যাই হোক, যাকাত উসুল করে ফিরে আসার পর উমার (রা)-এর কাছে এলাকাবাসীদের প্রশ্নের কথা উল্লেখ করলে তিনি বললেন, হ্যাঁ, বকরীর বাচ্চা এমনকি যে সমস্ত বাচ্চা রাখালগণকে কোলে তুলে নিয়ে যেতে হয় সেই ধরনের বাচ্চাগুলোকে পর্যন্ত গণনায় শামিল করা হবে। কিন্তু যাকাতের বেলায় এগুলো আমরা গ্রহণ করি না। খাওয়ার উদ্দেশ্যে পালিত মোটাতাজা বকরী, বাচ্চারা যার দুধের উপর নির্ভরশীল তেমন বাচ্চাওয়ালা বকরী, ছাগল, গর্ভবতী বকরীও আমরা যাকাতে গ্রহণ করি না। এক বৎসর দুই বৎসর বয়সের যা একেবারে বাচ্চা নহে বা একেবারে বৃদ্ধ নহে এমন ধরনের বকরীই আমরা এতে গ্রহণ করে থাকি। (হাদীসটি ইমাম মালিক (রঃ) একক ভাবে বর্ণনা করেছেন)
মালিক (র) বলেন, কারো কাছে যদি নিসাব পরিমাণ হতে কম বকরী থাকে আর যাকাত উসুলকারীর আগমনের একদিন পূর্বেও যদি এই বকরীগুলোর বাচ্চা জন্মে এবং এতে নিসাব পরিমাণ হয়ে যায় তবে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে। কারণ গণনার বেলায় বকরীর বাচ্চাও বকরীর মধ্যে শামিল হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে কারো কাছে যদি নিসাব পরিমাণের কম বকরী হয়, পরে ক্রয় বা হেবা বা ওয়ারিস সূত্রে সে যদি আরও কিছু বকরীর মালিক হয় এবং এতে তার নিকট নিসাব পরিমাণ বকরী হয়ে যায়, তবে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। প্রথমোল্লিখিত মাস’আলাটির উপমা হল কারো কাছে যদি নিসাব পরিমাণ হতে কম মূল্যের সম্পদ থাকে, আর যদি এমন লাভে এটা বিক্রয় করে যাতে নিসাব পরিমাণ হয়ে যায়, তবে পুঁজির সাথে লাভের উপরও যাকাত ধার্য হবে। কিন্তু ঐ লাভ যদি হেবা বা মিরাস আকারের হয় তবে হেবা বা ওয়ারিস সূত্রে প্রাপ্তির দিন হতে পূর্ণ এক বৎসর অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত এতে যাকাত ওয়াজিব হবে না। মালিক (রা) বলেন, সুতরাং লাভ যেমন পুঁজি ও সম্পদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে তদ্রুপ বকরীর সঙ্গে শামিল বলে গণ্য হবে।
মালিক (র) বলেন, অন্য একটি দিক হতে এই পূর্বোল্লিখিত বিষয় দুটির মধ্যে সামঞ্জস্যহীনতাও রয়েছে। তা হল কারো কাছে যদি এতটুকু পরিমাণ স্বর্ণ বা রৌপ্য থাকে যতটুকুর উপর যাকাত ওয়াজিব হয়, পরে যদি ঐ ব্যক্তি অন্য আরও কোন সম্পদ অর্জন করে তবে পূর্বস্থ নিসাবের সঙ্গে এটা সম্পৃক্ত হবে না এবং যেদিন হতে এটা অর্জিত হয়েছে সেদিন হতে পূর্ণ এক বৎসর অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাতে যাকাত ধার্য হবে না। পক্ষান্তরে কারো নিকট যদি উট, গাভী ও বকরী ইত্যাদি নিসাব পরিমাণ পশু থাকে এবং পরে যদি আরও কিছু পশু তার অধিকারে আসে তবে পূর্বস্থ নিসাবের সমজাতীয় পশুর সঙ্গে এগুলোর উপরও যাকাত আদায় করতে হবে। মালিক (র) বলেন, এ মাস’আলাটির বিষয়ে আমি যা শুনেছি উক্ত ভাষ্যটিই তন্মধ্যে অধিক উত্তম।