আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি একদা তূর নামক স্থানে আসলাম। তথায় আমি কা’ব (রাঃ)-কে পেলাম, সেখানে আমি এবং তিনি একদিন অবস্থান করলাম। আমি তাঁকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণনা করতাম, আর তিনি আমাকে ‘তাওরাত’ থেকে বর্ণনা করতেন। আমি তাঁকে বললাম, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সর্বোৎকৃষ্ট দিন যাতে সূর্য উদিত হয়, জুমু’আর দিন। সেই দিনে আদম (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, সে দিনই তাকে জান্নাত থেকে অবতরণ করানো হয়েছে, সে দিনই তাঁর তওবা কবূল করা হয়েছে, সে দিনই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, সে দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। ভূপৃষ্ঠে বনী আদম ছাড়া এমন কোন জীব-জন্তু নেই যা জুমু’আর দিন সূর্যোদয় পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ভয়ে উৎকণ্ঠিত হয়ে না থাকে। সেই দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যে কোন মু’মিন সালাতে রত থাকা অবস্থায় তা পেয়ে আল্লাহ্র কাছে যদি সেই সময় কোন কিছু প্রার্থনা করে, আল্লাহ্ তাকে নিশ্চয় তা দেবেন। তারপর কা’ব জিজ্ঞাসা করলেন, সেই মুহূর্তটি প্রতি বছর কি একদিনই হয়? আমি বললাম, বরং তা প্রতি জুমু’আর দিনেই হয়। তখন কা’ব তাওরাত থেকে পাঠ করলেন, তারপর বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যিই বলেছেন, তা প্রত্যেক জুমু’আর দিনেই হয়। তখন আমি বের হলে বসরা ইব্ন আবূ বসরা গিফারী (রাঃ)-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়। তিনি বললেন, তুমি কোথা থেকে আসছ? আমি বললাম, ‘তূর’ থেকে। তিনি বললেন, যদি তোমার সেখানে যাওয়ার পূর্বে তোমার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতো, তা হলে তুমি সেখানে যেতে না। আমি তাঁকে বললাম, তুমি এমন কথা কেন বলছ? আমি তো রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, তিনটি মসজিদ ছাড়া সফর করা যাবে না। মসজিদে হারাম, আমার মসজিদ (মসজিদে নববী) এবং মসজিদে বায়তুল মুকাদ্দাস। তারপর আমি আব্দুল্লাহ ইব্ন সালাম (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করে বললাম, যদি আপনি আমাকে দেখতেন যে, আমি ‘তূর’ নামক স্থানে গিয়েছি ও কা’ব (রাঃ)-এর সাথে সাক্ষাৎ করেছি আর আমি এবং তিনি একদিন সেখানে অবস্থান করেছি। আমি তাঁকে রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণনা করে শুনাতাম আর তিনি আমাকে তাওরাত থেকে বর্ণনা করে শুনাতেন। তখন আমি তাঁকে বললাম যে, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সর্বোৎকৃষ্ট দিন যাতে সূর্য উদিত হয় জুমু’আর দিন। সেই দিন আদম (‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, সে দিনই তাঁকে জান্নাত থেকে অবতরণ করানো হয়েছে, সে দিনই তাঁর তওবা কবূল করা হয়েছে, সে দিনই তাঁর মৃত্যু হয়েছে এবং সে দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। ভূ-পৃষ্ঠে বনী আদম ছাড়া এমন কোন জীব-জন্তু নেই, জুমু’আর দিন সূর্যোদয় পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার ভয়ে উৎকর্ণ হয়ে না থাকে। সেই দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যে কোন মু’মিন সালাতে রত থাকা অবস্থায় তা পেয়ে আল্লাহ্র কাছে যদি সেই সময় কোন কিছু প্রার্থনা করে আল্লাহ্ তাকে তা নিশ্চয় দেবেন। কা’ব (রাঃ) বলেছেন, সেই দিনটি প্রতি বছর একদিনই হয়, তখন আব্দুল্লাহ ইব্ন সালাম (রাঃ) বললেন, কা’ব (রাঃ) সত্য বলেনি। আমি (আবূ হুরায়রা) বললাম, তারপর কা’ব (রাঃ) পুনরায় (তওরাত) পড়লেন। তখন তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যই বলেছেন, সেই মুহূর্তটি প্রত্যেক জুমু’আর দিনেই হয়। তখন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বললেন, কা’ব (রাঃ) সত্যই বলেছেন, আমি সেই মুহূর্তটি সম্পর্কে অবশ্যই অবগত আছি। আমি বললাম, হে আমার ভাই! আপনি আমাকে সেই মুহূর্তটি সম্পর্কে বর্ণনা করুন। তিনি বললেন, তা হল জুমু’আর দিনে সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে শেষ সময়। তখন আমি বললাম, আপনি কি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেননি যে, কোন মু’মিন ব্যক্তি সালাতে রত থাকা অবস্থায় তা পায় (এবং সে সময় কোন দোয়া করলে আল্লাহ্ কবুল করেন) অথচ সে সময় তো কোন সালাত নেই। তিনি বললেন, তুমি কি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুননি যে, যে ব্যক্তি সালাত আদায় করে এবং বসে বসে পরবর্তী সালাতের অপেক্ষায় থাকে, সে ব্যক্তি সালাতেই থাকবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার কাছে পরবর্তী সালাত উপস্থিত হয়। আমি বললাম, কেন নয়? নিশ্চয়! তিনি বললেন, এটাও সেই রকমই।