HADITH.One
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব
১. ইখলাস
صحيح ترغيب وطهريب
ইবনে হিব্বানও থেকে বর্ণিতঃ
(হাফেজ আবদুল আযীম আল মুনযেরী বলেনঃ হাদীছটি আরো বর্ণিত হয়েছে- ইবনে মাসউদ, মুআয বিন জাবাল, নূমান বিন বাশীর, জুবায়র বিন মুতঈম, আবু দারদা ও আবু কুরছাফা জানদারা বিন খায়শানা ও আরো অনেক ছাহাবী (রাযিআল্লাহ আনহুম) থেকে এদের কিছু সনদ সহীহভাবে বর্ণিত হয়েছে।)
মুসআব বিন সা’দ তার পিতা সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন নাসাঈ ও আরো অনেকে। হাদীছটি সহীহ বুখারীতে রয়েছে। তবে সেখানে এখলাস শব্দের উল্লেখ নেই)
আবু ফেরাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একদা) বললেনঃ
“যা ইচ্ছা তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর।”
তখন জনৈক ব্যক্তি ডাক দিয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইসলাম কি?
তিনি বললেনঃ “সালাত কায়েম করা ও যাকাত প্ৰদান করা।”
সে বলল, ঈমান কি?
তিনি বললেনঃ “ইখলাস বা একনিষ্ঠতা।"
সে বলল, ইয়াকীন কি?
তিনি বললেনঃ “(ইসলাম ধর্মের যাবতীয় বিষয়কে) সত্য প্রতিপন্ন করা।"
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বায়হাকী)
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যাহহাক বিন ক্বায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“তোমাদের পূর্ববর্তী জাতি বনী ইসরাঈলের মধ্যে থেকে তিন ব্যক্তি একদা কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে গমন করল। রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে তারা একটি গুহায় প্রবেশ করল। হঠাৎ পাহাড়ের উপর থেকে প্রকান্ড একটি পাথর আছড়ে পড়ে গুহার দারদেশ বন্ধ করে দিল। এসময় তারা একে অপরকে বললঃ এই প্রকান্ড পাথর থেকে তোমাদেরকে কেউ মুক্তি দিতে পারবে না। তাই প্রত্যেকে স্বীয় সৎআমলের অসীলায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর। এক ব্যক্তি দু’আ করতে লাগলঃ আয় আল্লাহ! আমার পিতামাতা উভয়ই অতিবৃদ্ধ ছিলেন। আমি কখনই তাদের আগে কাউকে দুধ পান করাতাম না, না পরিবারের কোন ব্যক্তিকে না কোন দাস-দাসীকে। একদা গবাদি পশুর জন্য ঘাষ-পাতার অনুসন্ধানে দূরে চলে গিয়েছিলাম। রাতে যখন ফিরে আসি তখন তারা ঘুমিয়ে পড়েন। তাদের জন্য দুধ দহন করে দেখলাম তারা ঘুমন্ত। কিন্তু তাদেরকে দুধ পান করানোর আগে পরিবারের অন্য কাউকে দুধ পান করানো আমি অপছন্দ করলাম। তাই তাদের শিয়রে অবস্থান নিলাম। দুধের পেয়ালা আমার হাতেই থাকল। অপেক্ষা করতে থাকলাম কখন তারা জাগ্রত হয়। শেষ পর্যন্ত ফজরের আলো উদ্ভাসিত হয়ে গেল। (কোন কোন বর্ণনায় এসেছেঃ সে সময় ছোট ছোট শিশুরা আমার পায়ের কাছে ক্ষুধার তাড়নায় চিৎকার করছিল)। তারা জাগ্রত হল। তারপর দুধ পান করল। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তষ্টির উদ্দেশ্য করে থাকি, তবে আমাদেরকে এ পাথরের বিপদ থেকে উদ্ধার কর। পাথরটি তখন সামান্য একটু সরে গেল। কিন্তু তারা বের হতে সক্ষম হল না।
নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ দ্বিতীয় ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ! আমার এক চাচাত বোন ছিল। আমি তাকে খুব ভালবাসতাম। তাই তাকে একান্ত কাছে পেতে চাইলাম। কিন্তু সে রাজি হল না। একবার সে দুর্ভিক্ষের সম্মুখিন হয়ে আমার কাছে আসল। আমি তাকে একশত বিশটি স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম। এই শর্তে যে, সে আমার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দিবে। সে রাজি হল। আমি যখন আমার উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে পুরাপুরি প্রস্তুত হলাম, তখন সে বললঃ অধিকার ছাড়া সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া আমি তোমার জন্য হালাল মনে করি না। একথায় আমি ভীত হলাম এবং তাকে ছেড়ে দিলাম। অথচ সে আমার কাছে সর্বাধিক ভালবাসার পাত্র ছিল। যে স্বর্ণমুদ্রা তাকে দিয়েছিলাম তাও ছেড়ে দিলাম। আয় আল্লাহ! উক্ত কাজ যদি তোমার সম্ভাষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করে থাকি তবে আমাদের এই বিপদ দূর করে দাও। ফলে পাথরটি আরও একটু সরে গেল। কিন্তু তারা সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হল না।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ তৃতীয় ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ! আমি কতিপয় শ্রমিক নিয়োগ করি। প্রত্যেককে তাদের পারিশ্রমিকও দিয়ে দেই। কিন্তু এক ব্যক্তি তার পারিশ্রমিক না নিয়েই চলে যায়। আমি সে পারিশ্রমিকের অর্থ দিয়ে চাষাবাদ করি। ফলে তা থেকে অনেক সম্পদ বৃদ্ধি হয়। বহু দিন পর সে লোক আমার কাছে ফিরে এসে বলেঃ হে আল্লাহর বান্দা! আমার পারিশ্রমিক দাও। আমি বললামঃ এই উট, গরু, ছাগল ও ক্রীতদাস যা দেখছো তা সবই তোমার পারিশ্রমিক। সে বললঃ হে আল্লাহর বান্দা! আমার সাথে ঠাট্টা কর না। আমি বললামঃ আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না। তখন সে সবগুলোই নিয়ে নিল। কোন কিছুই ছেড়ে গেল না। হে আল্লাহ! এ কাজ যদি তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করে থাকি, তবে আমাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করে দাও। তখন পাথরটি সরে গেল এবং তারাও সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হল।
অন্য বর্ণনায় আছেঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“তোমাদের পূর্ব জাতির তিন ব্যক্তি রাস্তা চলছিল। তারা বৃষ্টির সম্মুখিন হলে আশ্রয়ের জন্য একটি গুহায় প্রবেশ
করল। এমন সময় গুহার মুখ বন্ধ হয়ে গেল। তখন তারা একে অপরকে বললঃ আল্লাহর শপথ এ বিপদ থেকে সত্যবাদিতা ছাড়া তোমাদেরকে কোন কিছুই মুক্ত করতে পারবে না। সুতরাং তোমাদর প্রত্যেকের আল্লাহর কাছে এমন আমলের মাধ্যমে দু’আ করা উচিত যাতে সে সততার পরিচয় দিয়েছে।
একজন বললঃ হে আল্লাহ! তুমি ভাল ভাবেই জান, আমার একজন শ্রমিক ছিল। ধানের একটি নির্দিষ্ট মাপের বিনিময়ে সে আমার নিকট কাজ করেছিল। কিন্তু সে তার প্রাপ্য না নিয়েই চলে যায়। আমি সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান কৃষি কাজে ব্যবহার করি ফলে উৎপাদন এমন হয় যা থেকে আমি কতগুলো গরু খরিদ করি। একদিন সে আমার নিকট এসে তার পারিশ্রমিক চায়। আমি বললামঃ ঐ গরুগুলোর কাছে যাও। এগুলো তোমার সেই প্রাপ্য ধান থেকে হয়েছে। তখন সে গরুগুলো নিয়ে চলে গেল। হে আল্লাহ! উক্ত কাজ যদি আমি আপনার ভয়ে করে থাকি তবে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তখন পাথর গুহার মুখ থেকে (কিছুটা) সরে গোল........ |* অতঃপর হাদীসের বাকী অংশ প্রায় প্রথমটির মতই উল্লেখ করেছেন। (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম)
আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
“দুনিয়া অভিশপ্ত। উহার মধ্যস্থিত সকল বস্তুও অভিশপ্ত। তবে যে কাজের মাধ্যমে আল্লাহ সন্তষ্টি কামনা করা হয়
তা অভিশপ্ত নয়।” (হাদীছটি ত্বাবরানী বর্ণনা করেন।)
আবু উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিতঃ
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি ইমাম বুখারী, মুসলিম প্রমুখ বৰ্ণনা করেন।)
আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী ও আবু দাউদ, তবে আবু দাউদের বর্ণনা এভাবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “তোমরা মদীনায় একদল লোককে ছেড়ে এসেছ। তোমরা যে পথই চলেছো, যে অর্থই খরচ করেছে এবং যে উপত্যকাই পাড়ি দিয়েছো- তারা তোমাদের সাথেই রয়েছে। তারা প্রশ্ন করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে তারা আমাদের সাথে থাকল, অথচ তারা তো মদীনাতেই রয়েছে? তিনি বললেনঃ (এই কারণে যে) অসুস্থতা তাদেরকে তোমাদের সাথে থাকতে বাধা দিয়েছে।”
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম) মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছেঃ
“আল্লাহ তা একটিমাত্ৰ পাপ হিসেবে লিখে থাকেন অথবা তা মিটিয়ে দেন। আর আল্লাহর ব্যাপারে ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যক্তি মাত্ৰই ধ্বংস হয়ে থাকে।”
আবু কাবশা আল আনমারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, আহমাদ, তিরমিয়ী ও ইবনে মাজাহ।) তবে ইবনে মাজার বর্ণনা এভাবেঃ
(সহীহ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“এ উম্মতের উদাহরণ চার ব্যক্তির ন্যায়ঃ (১) এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন। স্বীয় সম্পদে সে ইলম অনুযায়ী আমল করে থাকে। হক পথে তা ব্যয় করে। (২) অপর এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করেছেন, কিন্তু কোন সম্পদ দেন নাই। সে বলেঃ এই ব্যক্তির মত যদি আমার (সম্পদ) থাকত তবে তার মত আমি তা ব্যবহার করতাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ উভয় ব্যক্তি প্রতিদানের ক্ষেত্রে বরাবর। (৩) তৃতীয় এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু কোন জ্ঞান দান করেননি, ফলে সে তার সম্পদে মূর্খতা সুলভ আচরণ করে, নাহক পথে তা ব্যয় করে। (৪) চতুৰ্থ ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে না দিয়েছেন ধন-সম্পদ না দিয়েছেন জ্ঞান। সে বলেঃ এ ব্যক্তির ন্যায় যদি আমার (সম্পদ) থাকত, তবে এমন ভাবে তা ব্যবহার করতাম, যেমন এ ব্যক্তি করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ উভয় ব্যক্তি পাপের ক্ষেত্রে এক সমান।”
মা’ন বিন ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ উত্তম সনদে বর্ণনা করেন এবং ইবনে হিব্বান স্বীয় সহীহ গ্রন্থে আবু যার অথবা আবু দারদা থেকে বর্ণনা করেন।)
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(বুখারী, মুসলিম ও নাসাঈ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
তবে মুসলিম ও নাসাঈর বর্ণনায় এসেছেঃ তাকে স্বপ্ন মারফত বলা হল, তোমার সাদকা কবূল করা হয়েছে ...। তারপর হাদীছের বাকী অংশ উল্লেখ করেন।
মুসলিমের অপর রেওয়ায়াতে এসেছেঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন সৎ কাজের ইচ্ছা করে, অতঃপর তা বাস্তবায়ন না করে, তবে তার জন্য একটি পূণ্য লেখা হয়। আর যে ব্যক্তি সৎকর্মের ইচ্ছা করার পর তা বাস্তবায়ন করে, তবে তার জন্য দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত নেকী লিখা হয়। আর যে ব্যক্তি অসৎ কাজের ইচ্ছা করে তা বাস্তবায়ন না করে, তবে তার কোন পাপ লিখা হয় না। আর যদি বাস্তবায়ন করে তবে তা লিখা হয়।”
মুসলিমের আর এক বর্ণনায় রয়েছেঃ আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “সম্মানিত মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন মনে মনে বলে যে, সে একটি সৎকাজ করবে, তখন উহা বাস্তবায়ন না করলে আমি উহা একটি সৎকাজ হিসেবে লিখে নেই। আর যদি বাস্তবায়ন করে, তবে তাকে দশগুণ বৃদ্ধি করে লিখে থাকি। আর যখন আমার বান্দা মনে মনে বলে যে, সে একটি খারাপ কাজ করবে, তখন উহা বাস্তবায়ন না করলে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। আর যদি বাস্তবায়ন করে, তবে সে কাজের অনুরূপ আমি পাপ লিখে থাকি। আর যদি উহা বাস্তবায়ন করা ছেড়ে দেয় তবে (হে ফেরেশতাকুল) তার জন্য একটি পূণ্য লিখে নাও। কেননা সে উহা একমাত্র আমার কারণেই পরিত্যাগ করেছে।”
উবাই বিন কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(আহমাদ, ইবনে হিব্বান সহীহ গ্রন্থে, হাকেম ও বাইহাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
বাইহাকীর অপর বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“এই উম্মতকে সুসংবাদ দাও- সহজতা ও দ্বীনের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে উচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের। আরো (সুসংবাদ দাও) রাজ্যসমূহে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ও বিজয় লাভের। সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়ার উদ্দেশ্যে আখেরাতের আমল করবে, তার জন্য পরকালে কোনই অংশ থাকবে না।"
আবু হিন্দ আদদারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি ইমাম আহমাদ উত্তম সনদে ও বায়হাকী বর্ণনা করেন।)
জুনদুব বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম)
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি ত্বাবরানী [কবীর] গ্রন্থে কয়েকটি সনদে বর্ণনা করেন। সেগুলোর একটি বিশুদ্ধ এবং বায়হাক্বী বর্ণনা করেন। শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি ইমাম আহমদও বর্ণনা করেন।)
আউফ বিন মালেক আল আশজাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(হাসান সনদে তাবরানী হাদীছটি বর্ণনা করেন।)
ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(বায়হাক্বী মাওকুফ সূত্রে বর্ণনা করেছেন)
রুবাইহ বিন আবদুর রহমান বিন আবু সাঈদ খুদরী তাঁর পিতা (আবদুর রহমান) থেকে বর্ণিতঃ
(ইবনে মাজাহ ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এবং (সর্বপ্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যক্তির যে জ্ঞানার্জন করেছিল ও মানুষকে তা শিক্ষাদান করেছিল এবং কুরআন পাঠ করেছিল। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত সমূহের পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, কি আমল করেছ এই নেয়ামত দ্বারা। সে বলবে, জ্ঞানার্জন করেছি এবং মানুষকে তা শিখিয়েছি। আর আপনার সন্তুষ্টির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, বরং তুমি জ্ঞানার্জন করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে আলেম বা জ্ঞানী। কুরআন পাঠ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে ক্বারী বা পাঠক। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এবং (সর্ব প্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যক্তির, আল্লাহ যাকে প্রাচুর্য দান করেছিলেন, দান করেছিলেন বিভিন্ন ধরণের সম্পদ। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ তা’আলা) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত রাজীর পরিচয় করবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তখন তিনি প্রশ্ন করবেন, কি কাজ করেছ এই নেয়ামত সমূহ দ্বারা? সে জবাব দিবে, যে পথে অর্থ ব্যয় করলে আপনি খুশি হবেন। এ ধরনের সকল পথে আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অর্থ সম্পদ ব্যয় করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এরূপ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে, সে দানবীর। আর তা তো বলাই হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে। তখন তাকে মুখের ভরে ছেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম ও নাসাঈ)
হাদীছটি ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করে তাকে হাসান বলেন এবং ইবনে হিব্বান স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, উভয়ের বাক্যরূপ একইঃ
ওয়ালীদ বিন আবুল ওয়ালীদ আবু উছমান আল মাদীনী হতে বৰ্ণিত। উক্ববা বিন মুসলিম তাঁর কাছে হাদীছ বর্ণনা করেন যে, শুফাইয়া আল আসবাহী বর্ণনা করেন, তিনি (শুফাইয়া) একদা মদীনায় প্রবেশ করলেন, এসময় তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন, মানুষ তার নিকট একত্রিত হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করলেন, কে এই লোক? তারা বললঃ আবু হুরায়রা। তিনি বলেনঃ একথা শুনে আমি তাঁর নিকটবর্তী হলাম, এমনকি তাঁর সম্মুখে বসে গেলাম। সে সময় মানুষকে তিনি হাদীছ শুনাচ্ছিলেন। যখন তিনি থামলেন এবং নির্জন হলেন, আমি তাঁকে বললাম, দয়া করে আপনি আমার নিকট হাদীছ বর্ণনা করুন, যা আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর নিকট থেকে শুনে বুঝেছেন ও জেনেছেন। আবু হুরায়রা বললেনঃ তা করব, আমি অবশ্যই তোমার নিকট হাদীছ বর্ণনা করব যা আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বৰ্ণনা করেছেন। আমি তা বুঝেছি এবং জেনেছি। অতঃপর আবু হুরায়রা চিৎকার দিয়ে উঠলেন (একনকি ভয়ে প্রায় বেহুশ হয়ে গেলেন)। আমরা কিছু সময় অপেক্ষা করলাম। তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। অতঃপর বললেনঃ আমি অবশ্যই তোমার নিকট একটি হাদীছ বৰ্ণনা করব, যা রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। আমি এবং তিনি এই ঘরেই ছিলাম। আমাদের সাথে আমি এবং তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলনা। অতঃপর আবার আবু হুরায়রা চিৎকার দিয়ে উঠলেন। অতঃপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। এবং মুখমন্ডলে হাত বুলালেন। বললেন, তা করব, আমি অবশ্যই তোমার নিকট একটি হাদীছ বর্ণনা করব, যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। আমি এবং তিনি এই ঘরেই ছিলাম। আমাদের সাথে আমি এবং তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলনা। অতঃপর আবার আবু হুরায়রা ভীষণ ভাবে চিৎকার দিয়ে উঠলেন এবং মুখের ভরে পড়ে যেতে লাগলেন। আমি তাঁকে দীর্ঘ সময় সোজা করে ধরে রাখলাম। অতঃপর তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। তারপর বললেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেনঃ
“কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাবারকা ওয়া তা’আলা বান্দাদের মাঝে বিচার-ফায়সালা করার জন্য অবতরন করবেন। প্রত্যেক জাতি হাঁটুর উপর ভর করে নতজানু অবস্থায় থাকবে। সর্বপ্রথম যাকে ডাকা হবে সে এক ব্যক্তি যে কুরআনের প্রচুর জ্ঞানার্জন করেছিল, আর এক ব্যক্তি যে আল্লাহর পথে নিহত হয়েছিল এবং এক ব্যক্তি যে অঢেল সম্পদের অধিকারী ছিল। সম্মানিত মহান আল্লাহ কুরআনের ক্বারীকে বলবেন, আমার রাসূলের উপর আমি যা নাযিল করেছিলাম তার জ্ঞান কি তোমাকে দান করি নি? সে বলবে, হাঁ হে আমার প্রতিপালক। তিনি বলবেন, যে জ্ঞান অর্জন করেছ সে অনুযায়ী কি আমল করেছ? বলবে আমি রাত-দিন তা নিয়ে ব্যস্ত থেকেছি তার হক আদায় করেছি। সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। আর মহান আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো ইচ্ছে করেছিলে যে, (তোমাকে) বলা হবে উমুক ব্যক্তি ক্বারী। আর তা তো বলাই হয়েছে।
সম্পদশালী ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে। সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে বলবেনঃ আমি কি তোমাকে সম্পদের প্রাচুর্য দান করিনি? এমনকি কারো মুখাপেক্ষী করে তোমাকে রাখিনি? সে বলবে, হ্যাঁ, হে আমার বর। তিনি বলবেনঃ তোমাকে যা দান করেছিলাম তা কোন কাজে ব্যবহার করেছ? সে বলবেঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতাম এবং দান-সাদকা করতাম। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। সুমহান আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো হচ্ছে করেছিলে যে, তোমাকে বলা হবে উমুক ব্যক্তি দানশীল। আর তা তো অবশ্যই বলা হয়েছে।
আল্লাহর পথে নিহত ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ কি কারনে নিহত হয়েছ? সে বলবে, হে প্ৰভু! আপনার রাস্তায় জিহাদ করার জন্য আপনি আদেশ করেছিলেন, তাই লড়াই করে নিহত হয়েছি। আল্লাহ তা’আলা তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো ইচ্ছে করেছিলে যে, (তোমাকে) বলা হবে উমুক ব্যক্তি বীর যোদ্ধা। আর তা তো অবশ্যই বলা হয়েছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার হাঁটুর উপর আঘাত করে বললেনঃ “হে আবু হুরায়রা! আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে এরা হল তিন ব্যক্তি কিয়ামত দিবসে যাদেরকে সর্বপ্রথম জাহান্নামের আগুনে প্রজ্জলিত করা হবে।"
আল ওয়ালীদ আবু উছামান আল মাদীনী বলেনঃ উক্ববা আমাকে সংবাদ দেন যে, শুফাইয়াই আবার মুআবিয়ার নিকট গিয়ে এই হাদীছ বর্ণনা করেন। আবু উছমান বলেন, আর আলা বিন আবু হাকীম আমাকে বলেন যে, তিনি (শুফাইয়া) ছিলেন মুআবিয়ার জন্য তরবারী স্বরূপ। তিনি (আবু উছমান) বলেনঃ জনৈক ব্যক্তি তাঁর নিকট গিয়ে আবু হুরায়রার বরাত দিয়ে এ হাদীছ বর্ণনা করেন। হাদীছ শুনে মুআবিয়া বলেনঃ এ ধরণের ব্যক্তিদের সাথে এরকম ব্যবহার হবে, তাহলে বাকী মানুষের অবস্থা কি হবে? অতঃপর মুআবিয়া খুব কাঁদতে লাগলেন। তার ক্ৰন্দনের আধিক্যতা দেখে আমরা মনে করলাম তিনি হয়ত মারাই যাবেন। বললামঃ এ লোকটি আমাদের জন্য অমঙ্গল নিয়ে এসেছে। মুআবিয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে মুখমন্ডল মুছলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেনঃ (مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لَا يُبْخَسُونَ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ(
“যে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবন এবং তার চাকচিক্য কামনা করবে, আমি তাদের কর্মের প্রতিদান দুনিয়াতেই পুরাপুরি দান করব। এবং তাদের কোন প্রকার কমতি করা হবে না। এদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই। দুনিয়াতে তারা যা করেছে তা ধ্বংস হয়ে গেছে আর যা সম্পাদন করেছে তা বিনষ্ট হয়েছে।"(সূরা হূদঃ১৫-১৬)
হাদীছটি ইবনু খাযায়মা স্বীয় [ছহীহ] গ্রন্থে এরূপই বর্ণনা করেন। দুয়েকটি শব্দ ছাড়া তেমন কোথাও তেমন বৈপরিত্য নেই।
মাহমুদ বিন লাবীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(ইবনু খুযায়মা [সহীহ] গ্রন্থে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
আবু সাঈদ বিন আবু ফুযালা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(তিরমিয়ী, ইবনু মাজাহ, ইবনে হিব্বান ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
সম্মানিত আল্লাহ এরশাদ করেনঃ “আমি অংশীদারদের অংশীস্থাপন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার উদ্দেশ্যে কোন আমল করে তাতে আমার সাথে অন্যকে অংশীদার করে, তবে উক্ত আমল থেকে আমি সম্পূর্ণ মুক্ত। আমলটি তার সেই অংশীদারের জন্যই নির্দিষ্ট (অর্থাৎ তা সম্পূর্ণ বাতিল)।
(ইবনু মাজাহ, ইবনু খুযায়মা ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, তবে হাদীছটির বাক্য ইবনু মাজাহ থেকে গৃহীত।)
মাহমূদ বিন লাবীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
(উত্তম সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ, আরো বর্ণনা করেন বায়হাকী ও ইবনু আবীদ দুনিয়া)
ইমাম বায়হাকী ইয়ালা বিন শাদ্দাদ থেকে বর্ণিতঃ
(হাদীছটি হাকেমও বর্ণনা করেন।)
আবু আলী থেকে বর্ণিতঃ
(আরবি) (আল্লাহুম্মা ইন্না নাউযুবিকা মিন আন নুশরেকা বেকা শাইআন তা’লামুহু ওয়া নাসতাগাফেরুকা লিমা লা না’লামুহু) হে আল্লাহ জেনে শুনে কোন কিছুকে তোমার সাথে শরীক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং না জেনে শির্ক হয়ে গেলে তা থেকে তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমদ ও ত্বাবরানী)
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।