HADITH.One

Bangla

Support

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব

. ইখলাস

صحيح ترغيب وطهريب

/ পরিচ্ছেদঃ ইখলাস, সত্যবাদিতা ও সৎ নিয়তের প্রতি উদ্বুদ্ধ করণঃ

সহিহ হাদিস

ইবনে হিব্বান থেকে বর্ণিতঃ

ইবনে হিব্বান হাদীছটি আবু হুরায়রার বরাতে সংক্ষেপে বর্ণনা করেন। ‘পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার’ অনুচ্ছেদে তার বর্ণনা আসবে। ইনশাআল্লাহ।

সহিহ হাদিস

ইবনে হিব্বানও থেকে বর্ণিতঃ

এ হাদীছটি ইবনে হিব্বানও {সহীহ} গ্রন্থে যায়েদ বিন ছাবেত থেকে বর্ণনা করেন। ‘হাদীছ শ্ৰবণ” অনুচ্ছেদে এর বর্ণনা আসবে ইনশাআল্লাহ।
(হাফেজ আবদুল আযীম আল মুনযেরী বলেনঃ হাদীছটি আরো বর্ণিত হয়েছে- ইবনে মাসউদ, মুআয বিন জাবাল, নূমান বিন বাশীর, জুবায়র বিন মুতঈম, আবু দারদা ও আবু কুরছাফা জানদারা বিন খায়শানা ও আরো অনেক ছাহাবী (রাযিআল্লাহ আনহুম) থেকে এদের কিছু সনদ সহীহভাবে বর্ণিত হয়েছে।)

সহিহ হাদিস
(صحيح) و عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّهُ ظَنَّ أَنَّ لَهُ فَضْلًا عَلَى مَنْ دُونَهُ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ نَبِيُّ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّمَا يَنْصُرُ اللَّهُ هَذِهِ الْأُمَّةَ بِضَعِيفِهَا بِدَعْوَتِهِمْ وَصَلَاتِهِمْ وَإِخْلَاصِهِمْ. رواه النسائي وغيره وهو في البخاري وغيره دون ذكر الإخلاص

মুসআব বিন সা’দ তার পিতা সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুসআব বিন সা’দ তার পিতা সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি (সাদ) একবার মনে করলেন গণীমতের মালে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর অন্যান্য সাহাবীর তুলনায়- তার বেশী অধিকার আছে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ "আল্লাহ তো এই উম্মতের দূর্বল ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাদেরকে সাহায্য করে থাকেন- তাদের দু’আ, সালাত ও (কৰ্মে) এখলাস তথা একনিষ্ঠতার মাধ্যমে।"
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন নাসাঈ ও আরো অনেকে। হাদীছটি সহীহ বুখারীতে রয়েছে। তবে সেখানে এখলাস শব্দের উল্লেখ নেই)

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ أَبِي فِرَاسٍ رَجُلٍ مِنْ أَسْلَمَ، قَالَ: نَادَى رَجُلٌ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللهِ، مَا الْإِيمَانُ؟ قَالَ: " الْإِخْلَاصُ ". وفي لفظ آخر قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : سَلُونِي عَمَّا شِئْتُمْ "، فَنَادَى رَجُلٌ: يَا رَسُولَ اللهِ، مَا الْإِسْلَامُ ؟ قَالَ: " إِقَامُ الصَّلَاةِ وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ "، قَالَ: فَمَا الْإِيمَانُ ؟ قَالَ: " الْإِخْلَاصُ "، قَالَ: فَمَا الْيَقِينُ ؟ قَالَ: " التَّصْدِيقُ بالْقيامةِ. رواه البيهقي

আবু ফেরাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ছিলেন আসলাম গোত্রের লোক। তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি ডাক দিয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ঈমান কি? তিনি বললেনঃ “ইখলাস বা একনিষ্ঠতা।”
অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (একদা) বললেনঃ
“যা ইচ্ছা তোমরা আমাকে প্রশ্ন কর।”
তখন জনৈক ব্যক্তি ডাক দিয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইসলাম কি?
তিনি বললেনঃ “সালাত কায়েম করা ও যাকাত প্ৰদান করা।”
সে বলল, ঈমান কি?
তিনি বললেনঃ “ইখলাস বা একনিষ্ঠতা।"
সে বলল, ইয়াকীন কি?
তিনি বললেনঃ “(ইসলাম ধর্মের যাবতীয় বিষয়কে) সত্য প্রতিপন্ন করা।"
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বায়হাকী)

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) وَعَنْ أبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدِرِيْ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أنه قال في حجة الوداع نَضَّرَ اللهُ عَبْدًا سَمِعَ مَقَالَتِي فَوَعَاهَا , فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لَيْسَ بِفَقِيهٍ. ثَلاثٌ لا يَغِلُّ عَلَيْهِنَّ قَلْبُ مُؤْمِنٍ : إِخْلاصُ الْعَمَلِ لِلَّهِ وَالنَّصِيحَةُ لأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ ، وَلُزُومُ جَمَاعَتِهِمْ ، فَإِنَّ دَعْوَتَهُمْ ، تُحِيطُ مَنْ وَرَاءَهُمْ. رواه البزار بإسناد حسن

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিদায় হজ্জে বলেনঃ ‘আল্লাহ তা’আলা ঐ ব্যক্তির মুখমন্ডল উজ্জল করুন (তাকে সম্মানিত করুন) যে ব্যক্তি আমার কথা শুনে তা মুখস্ত রেখেছে। কেননা এমন কতই না জ্ঞান বহনকারী রয়েছে, অথচ সে ফকীহ (জ্ঞানী) নয়। তিনটি বিষয়ে কোন মুমিন ব্যক্তির অন্তরে হিংসা প্রবেশ করতে পারে না। (১) আল্লাহর জন্য আমলকে একনিষ্ঠ করা। (২) মুসলমানদের নেতৃবৃন্দকে নসীহত করা। (৩) মুসলমানদের জামাতকে আকড়ে ধরা। কেননা তাদের দু’আ তাদের পরবর্তীদেরকেও বেষ্টন করে।’ (হাদীছটি বাযযার হাসান সনদে বর্ণনা করেন।)

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) وَعَنْ الضحاك بن قيس قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ يَقُولُ أَنَا خَيْرُ شَرِيكٍ فَمَنْ أَشْرَكَ مَعِى شَرِيكًا فَهُوَ لِشَرِيكِى يَا أَيُّهَا النَّاسُ أَخْلِصُوا أَعْمَالَكُمْ لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَقْبَلُ إِلاَّ مَا أُخْلِصَ لَهُ وَلاَ تَقُولُوا هَذَا لِلَّهِ وَلِلرَّحِمِ فَإِنَّهَا لِلرَّحِمِ وَلَيْسَ لِلَّهِ مِنْهَا شَىْءٌ وَلاَ تَقُولُوا هَذَا لِلَّهِ وَلِوُجُوهِكُمْ فَإِنَّهَا لِوُجُوهِكُمْ وَلَيْسَ لِلَّهِ مِنْهَا شَىْءٌ. رواه البزار بإسناد لا بأس به والبيهقي

যাহহাক বিন ক্বায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “আল্লাহ তাবারাক ওয়া তা’আলা বলেন, আমি উত্তম শরীক । (কোন আমলে) আমার সাথে কেউ যদি শরীক করে তবে উহা আমার শরীকের জন্যেই সাব্যস্ত হবে। হে লোক সকল! তোমরা একনিষ্ঠভাবে আমল কর। কেননা আল্লাহ তাবরাক ওয়া তা'আলা একনিষ্ঠভাবে যা তার জন্যে করা হয় তা ব্যতীত অন্য কোন আমল কবূল করেন না। তোমরা এরূপ বলো না যে, এ আমলটি আল্লাহর জন্যে এবং আত্মীয়ের জন্যে। কেননা উহা আত্মীয়ের জন্যেই সাব্যস্ত হবে। তাতে আল্লাহর কোন অংশ থাকবে না। তোমরা এরূপ বলো না যে, এ আমলটি আল্লাহর জন্যে এবং তোমাদের সন্তুষ্টির জন্যে। কেননা উহা তোমাদের উদ্দেশ্যেই সাব্যস্ত হবে। তাতে আল্লাহর কোন অংশ থাকবে না।” (হাদীছটি বাযযার এবং বায়হাক্বী বর্ণনা করেছেন)

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُماَ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: انْطَلَقَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ حَتَّى آوَاهُمُ الْمَبِيتُ إِلَى غَارٍ فَدَخَلُوهُ فَانْحَدَرَتْ صَخْرَةٌ مِنَ الْجَبَلِ فَسَدَّتْ عَلَيْهِمُ الْغَارَ فَقَالُوْا إِنَّهُ لاَ يُنْجِيكُمْ مِنْ هَذِهِ الصَّخْرَةِ إِلَّا أَنْ تَدْعُوا اللَّهَ بِصَالِحِ أَعْمَالِكُمْ. فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمُ: اللَّهُمَّ كَانَ لِي أَبَوَانِ شَيْخَانِ كَبِيرَانِ وَكُنْتُ لَا أَغْبِقُ قَبْلَهُمَا أَهْلًا وَلَا مَالًا فَنَأَى بِيْ فِيْ طَلَبِ شَجرٍ يَوْمًا فَلَمْ أُرِحْ عَلَيْهِمَا حَتَّى نَامَا فَحَلَبْتُ لَهُمَا غَبُوقَهُمَا فَوَجَدْتُهُمَا نَائِمَيْنِ وَكَرِهْتُ أَنْ أَغْبِقَ قَبْلَهُمَا أَهْلًا أَوْ مَالًا فَلَبِثْتُ وَالْقَدَحُ عَلَى يَدَيَّ أَنْتَظِرُ اسْتِيقَاظَهُمَا حَتَّى بَرَقَ الْفَجْرُ فَاسْتَيْقَظَا فَشَرِبَا غَبُوقَهُمَا اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ مِنْ هَذِهِ الصَّخْرَةِ فَانْفَرَجَتْ شَيْئًا لاَ يَسْتَطِيعُونَ الْخُرُوجَ. قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : قَالَ الْآخَرُ: اللَّهُمَّ كَانَتْ لِيْ بِنْتُ عَمٍّ كَانَتْ أَحَبَّ النَّاسِ إِلَيَّ فَأَرَدْتُهَا عَنْ نَفْسِهَا فَامْتَنَعَتْ مِنِّي حَتَّى أَلَمَّتْ بِهَا سَنَةٌ مِنَ السِّنِينَ فَجَاءَتْنِي فَأَعْطَيْتُهَا عِشْرِينَ وَمِائَةَ دِينَارٍ عَلَى أَنْ تُخَلِّيَ بَيْنِي وَبَيْنَ نَفْسِهَا فَفَعَلَتْ حَتَّى إِذَا قَدَرْتُ عَلَيْهَا قَالَتْ لاَ أُحِلُّ لَكَ أَنْ تَفُضَّ الْخَاتَمَ إِلاَّ بِحَقِّهِ فَتَحَرَّجْتُ مِنَ الْوُقُوعِ عَلَيْهَا فَانْصَرَفْتُ عَنْهَا وَهِيَ أَحَبُّ النَّاسِ إِلَيَّ وَتَرَكْتُ الذَّهَبَ الَّذِي أَعْطَيْتُهَا اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافْرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ فَانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ غَيْرَ أَنَّهُمْ لاَ يَسْتَطِيعُونَ الْخُرُوجَ مِنْهَا. قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : قَالَ الثَّالِثُ: اللَّهُمَّ إِنِّي اسْتَأْجَرْتُ أُجَرَاءَ فَأَعْطَيْتُهُمْ أَجْرَهُمْ غَيْرَ رَجُلٍ وَاحِدٍ تَرَكَ الَّذِي لَهُ وَذَهَبَ فَثَمَّرْتُ أَجْرَهُ حَتَّى كَثُرَتْ مِنْهُ الْأَمْوَالُ فَجَاءَنِي بَعْدَ حِينٍ فَقَالَ يَا عَبْدَ اللَّهِ أَدِّ إِلَيَّ أَجْرِي فَقُلْتُ لَهُ كُلُّ مَا تَرَى مِنْ أَجْرِكَ مِنَ الْإِبِلِ وَالْبَقَرِ وَالْغَنَمِ وَالرَّقِيقِ فَقَالَ يَا عَبْدَ اللَّهِ لَا تَسْتَهْزِئُ بِي فَقُلْتُ إِنِّي لَا أَسْتَهْزِئُ بِكَ فَأَخَذَهُ كُلَّهُ فَاسْتَاقَهُ فَلَمْ يَتْرُكْ مِنْهُ شَيْئًا اللَّهُمَّ فَإِنْ كُنْتُ فَعَلْتُ ذَلِكَ ابْتِغَاءَ وَجْهِكَ فَافْرُجْ عَنَّا مَا نَحْنُ فِيهِ فَانْفَرَجَتِ الصَّخْرَةُ فَخَرَجُوا يَمْشُونَ. وفي رواية: أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: بَيْنَمَا ثَلَاثَةُ نَفَرٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ يَمْشُونَ إِذْ أَصَابَهُمْ مَطَرٌ فَأَوَوْا إِلَى غَارٍ فَانْطَبَقَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ إِنَّهُ وَاللَّهِ يَا هَؤُلَاءِ لَا يُنْجِيكُمْ إِلَّا الصِّدْقُ فَليَدْعُ كُلُّ رَجُلٍ مِنْكُمْ بِمَا يَعْلَمُ أَنَّهُ قَدْ صَدَقَ فِيهِ فَقَالَ وَاحِدٌ مِنْهُمْ اللَّهُمَّ إِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنَّهُ كَانَ لِي أَجِيرٌ عَمِلَ لِي عَلَى فَرَقٍ مِنْ أَرُزٍّ فَذَهَبَ وَتَرَكَهُ وَأَنِّي عَمَدْتُ إِلَى ذَلِكَ الْفَرَقِ فَزَرَعْتُهُ فَصَارَ مِنْ أَمْرِهِ أَنِّي اشْتَرَيْتُ مِنْهُ بَقَرًا وَأَنَّهُ أَتَانِي يَطْلُبُ أَجْرَهُ فَقُلْتُ لَهُ اعْمِدْ إِلَى تِلْكَ الْبَقَرِ فَسُقْهَا فَقَالَ لِي إِنَّمَا لِي عِنْدَكَ فَرَقٌ مِنْ أَرُزٍّ فَقُلْتُ لَهُ اعْمِدْ إِلَى تِلْكَ الْبَقَرِ فَإِنَّهَا مِنْ ذَلِكَ الْفَرَقِ فَسَاقَهَا فَإِنْ كُنْتَ تَعْلَمُ أَنِّي فَعَلْتُ ذَلِكَ مِنْ خَشْيَتِكَ فَفَرِّجْ عَنَّا فَانْسَاحَتْ عَنْهُمْ الصَّخْرَةُ. فذكر الحديث قريبا من الأول

ইবনে ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“তোমাদের পূর্ববর্তী জাতি বনী ইসরাঈলের মধ্যে থেকে তিন ব্যক্তি একদা কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্যে গমন করল। রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে তারা একটি গুহায় প্রবেশ করল। হঠাৎ পাহাড়ের উপর থেকে প্রকান্ড একটি পাথর আছড়ে পড়ে গুহার দারদেশ বন্ধ করে দিল। এসময় তারা একে অপরকে বললঃ এই প্রকান্ড পাথর থেকে তোমাদেরকে কেউ মুক্তি দিতে পারবে না। তাই প্রত্যেকে স্বীয় সৎআমলের অসীলায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা কর। এক ব্যক্তি দু’আ করতে লাগলঃ আয় আল্লাহ! আমার পিতামাতা উভয়ই অতিবৃদ্ধ ছিলেন। আমি কখনই তাদের আগে কাউকে দুধ পান করাতাম না, না পরিবারের কোন ব্যক্তিকে না কোন দাস-দাসীকে। একদা গবাদি পশুর জন্য ঘাষ-পাতার অনুসন্ধানে দূরে চলে গিয়েছিলাম। রাতে যখন ফিরে আসি তখন তারা ঘুমিয়ে পড়েন। তাদের জন্য দুধ দহন করে দেখলাম তারা ঘুমন্ত। কিন্তু তাদেরকে দুধ পান করানোর আগে পরিবারের অন্য কাউকে দুধ পান করানো আমি অপছন্দ করলাম। তাই তাদের শিয়রে অবস্থান নিলাম। দুধের পেয়ালা আমার হাতেই থাকল। অপেক্ষা করতে থাকলাম কখন তারা জাগ্রত হয়। শেষ পর্যন্ত ফজরের আলো উদ্ভাসিত হয়ে গেল। (কোন কোন বর্ণনায় এসেছেঃ সে সময় ছোট ছোট শিশুরা আমার পায়ের কাছে ক্ষুধার তাড়নায় চিৎকার করছিল)। তারা জাগ্রত হল। তারপর দুধ পান করল। হে আল্লাহ! আমি যদি এ কাজ তোমার সন্তষ্টির উদ্দেশ্য করে থাকি, তবে আমাদেরকে এ পাথরের বিপদ থেকে উদ্ধার কর। পাথরটি তখন সামান্য একটু সরে গেল। কিন্তু তারা বের হতে সক্ষম হল না।
নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ দ্বিতীয় ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ! আমার এক চাচাত বোন ছিল। আমি তাকে খুব ভালবাসতাম। তাই তাকে একান্ত কাছে পেতে চাইলাম। কিন্তু সে রাজি হল না। একবার সে দুর্ভিক্ষের সম্মুখিন হয়ে আমার কাছে আসল। আমি তাকে একশত বিশটি স্বর্ণ মুদ্রা দিলাম। এই শর্তে যে, সে আমার কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দিবে। সে রাজি হল। আমি যখন আমার উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে পুরাপুরি প্রস্তুত হলাম, তখন সে বললঃ অধিকার ছাড়া সঙ্গমে লিপ্ত হওয়া আমি তোমার জন্য হালাল মনে করি না। একথায় আমি ভীত হলাম এবং তাকে ছেড়ে দিলাম। অথচ সে আমার কাছে সর্বাধিক ভালবাসার পাত্র ছিল। যে স্বর্ণমুদ্রা তাকে দিয়েছিলাম তাও ছেড়ে দিলাম। আয় আল্লাহ! উক্ত কাজ যদি তোমার সম্ভাষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে করে থাকি তবে আমাদের এই বিপদ দূর করে দাও। ফলে পাথরটি আরও একটু সরে গেল। কিন্তু তারা সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হল না।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ তৃতীয় ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ! আমি কতিপয় শ্রমিক নিয়োগ করি। প্রত্যেককে তাদের পারিশ্রমিকও দিয়ে দেই। কিন্তু এক ব্যক্তি তার পারিশ্রমিক না নিয়েই চলে যায়। আমি সে পারিশ্রমিকের অর্থ দিয়ে চাষাবাদ করি। ফলে তা থেকে অনেক সম্পদ বৃদ্ধি হয়। বহু দিন পর সে লোক আমার কাছে ফিরে এসে বলেঃ হে আল্লাহর বান্দা! আমার পারিশ্রমিক দাও। আমি বললামঃ এই উট, গরু, ছাগল ও ক্রীতদাস যা দেখছো তা সবই তোমার পারিশ্রমিক। সে বললঃ হে আল্লাহর বান্দা! আমার সাথে ঠাট্টা কর না। আমি বললামঃ আমি তোমার সাথে ঠাট্টা করছি না। তখন সে সবগুলোই নিয়ে নিল। কোন কিছুই ছেড়ে গেল না। হে আল্লাহ! এ কাজ যদি তোমার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করে থাকি, তবে আমাদেরকে এ বিপদ থেকে উদ্ধার করে দাও। তখন পাথরটি সরে গেল এবং তারাও সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হল।

অন্য বর্ণনায় আছেঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“তোমাদের পূর্ব জাতির তিন ব্যক্তি রাস্তা চলছিল। তারা বৃষ্টির সম্মুখিন হলে আশ্রয়ের জন্য একটি গুহায় প্রবেশ
করল। এমন সময় গুহার মুখ বন্ধ হয়ে গেল। তখন তারা একে অপরকে বললঃ আল্লাহর শপথ এ বিপদ থেকে সত্যবাদিতা ছাড়া তোমাদেরকে কোন কিছুই মুক্ত করতে পারবে না। সুতরাং তোমাদর প্রত্যেকের আল্লাহর কাছে এমন আমলের মাধ্যমে দু’আ করা উচিত যাতে সে সততার পরিচয় দিয়েছে।
একজন বললঃ হে আল্লাহ! তুমি ভাল ভাবেই জান, আমার একজন শ্রমিক ছিল। ধানের একটি নির্দিষ্ট মাপের বিনিময়ে সে আমার নিকট কাজ করেছিল। কিন্তু সে তার প্রাপ্য না নিয়েই চলে যায়। আমি সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ ধান কৃষি কাজে ব্যবহার করি ফলে উৎপাদন এমন হয় যা থেকে আমি কতগুলো গরু খরিদ করি। একদিন সে আমার নিকট এসে তার পারিশ্রমিক চায়। আমি বললামঃ ঐ গরুগুলোর কাছে যাও। এগুলো তোমার সেই প্রাপ্য ধান থেকে হয়েছে। তখন সে গরুগুলো নিয়ে চলে গেল। হে আল্লাহ! উক্ত কাজ যদি আমি আপনার ভয়ে করে থাকি তবে আমাদেরকে উদ্ধার কর। তখন পাথর গুহার মুখ থেকে (কিছুটা) সরে গোল........ |* অতঃপর হাদীসের বাকী অংশ প্রায় প্রথমটির মতই উল্লেখ করেছেন। (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম)

হাসান লিগাইরিহি
(حسن لغيره) وَعَنْ أبِيْ الدَّرْداَءِ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: الدنيا ملعونة ملعون ما فيها إلا ما ابتغي به وجه الله تعالى. رواه الطبراني

আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন
“দুনিয়া অভিশপ্ত। উহার মধ্যস্থিত সকল বস্তুও অভিশপ্ত। তবে যে কাজের মাধ্যমে আল্লাহ সন্তষ্টি কামনা করা হয়
তা অভিশপ্ত নয়।” (হাদীছটি ত্বাবরানী বর্ণনা করেন।)

হাসান হাদিস
(حسن ) وَعَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ الْبَاهِلِيِّ قَالَ: جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَرَأَيْتَ رَجُلًا غَزَا يَلْتَمِسُ الْأَجْرَ وَالذِّكْرَ مَالَهُ فَقاَلَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا شَيْءَ لَهُ فَأَعَادَهَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ يَقُولُ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا شَيْءَ لَهُ ثُمَّ قَالَ إِنَّ اللَّهَ لَا يَقْبَلُ مِنْ الْعَمَلِ إِلَّا مَا كَانَ لَهُ خَالِصًا وَابْتُغِيَ بِهِ وَجْهُهُ. رواه أبو داود والنسائي بإسناد جيد

আবু উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জনৈক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর নিকট এসে বললঃ এমন লোক সম্পর্কে আপনি কি মনে করেন, যে ছোয়াব ও প্রশংসা পাওয়ার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে- সে কি প্রতিদান পাবে? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ “তার জন্য কোনই প্রতিদান নেই। লোকটি তিন বার কথাটি পূণরাবৃত্তি করলে প্রতিবারই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তার জন্য কিছুই নেই। তারপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা ইখলাছ ও তার সম্ভাষ্টির উদ্দেশ্য ছাড়া কোন আমল কবুল করবেন না।" (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ ও নাসাঈ উত্তম সনদে। এ ধরণের হাদীছ জিহাদ অধ্যায়ে আসবে ইনশাআল্লাহ)

১০

সহিহ হাদিস
(صحيح) عن عمر بن الخطاب رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: سمعت رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بالنية وفي رواية بِالنِّيَّاتِ وَإِنَّمَا لِامْرِئٍ مَا نَوَى فَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ فَهِجْرَتُهُ إِلَى اللَّهِ وَرَسُولِهِ وَمَنْ كَانَتْ هِجْرَتُهُ إِلَى دُنْيَا يُصِيبُهَا أَوْ امْرَأَةٍ يَنْكِحُهَا فَهِجْرَتُهُ إِلَى مَا هَاجَرَ إِلَيْهِ. رواه البخاري ومسلم وأبو داود والترمذي والنسائي

ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ ‘যাবতীয় আমল (শুদ্ধ না অশুদ্ধ তা) নিয়তের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি যা নিয়ত করে তাই রয়েছে তার জন্য। সুতরাং যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং তার রাসূলের প্রতি হিজরত করবে তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি বলেই গণ্য হবে। আর যে ব্যক্তির হিজরত দুনিয়া অর্জন বা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্য হবে, তার হিজরত যে উদ্দেশ্য করেছে সে দিকেই গণ্য হবে।’ (হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিয়ী, নাসাঈ)

১৪

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) ورواه أيضا من حديث جابر إلا أنه قال: يُحْشَرُ النَّاسُ

ইবনে মাজাহ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি (ইবনে মাজাহ) জাবের (রাঃ) থেকেও অত্র হাদীছটি বর্ণনা করেছেনঃ তবে তিনি বলেন, “মানুষকে হাশরের মাঠে একত্রিত করা হবে তাদের নিয়ত অনুযায়ী।”

১৩

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) عنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّمَا يُبْعَثُ النَّاسُ عَلَى نِيَّاتِهِمْ. رواه ابن ماجه بإسناد حسن

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “মানুষকে তাদের নিয়ত অনুযায়ী (কিয়ামতের দিন) উঠানো হবে।” (ইবনে মাজাহ হাদীছটি হাসান সনদে বর্ণনা করেন।)

১৫

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لا يَنْظُرُ إِلَى أَجْسَامِكُمْ وَلا إِلَى صُوَرِكُمْ، وَلَكِنْ يَنْظُرُ إِلَى قُلُوبِكُمْ [وأشار بأصابعه إلى صدره]، [وأعْماَلِكُمْ]" رواه مسلم

আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের দেহ এবং আকার-আকৃতি দেখেন না; বরং তিনি দেখে থাকেন তোমাদের অন্তর।” [একথা বলে তিনি আঙ্গুল দ্বারা নিজের বুকের দিকে ইঙ্গিত করলেন।] এবং তিনি দেখে থাকেন তোমাদের আমল।" (ইমাম মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

১১

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُا قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَغْزُو جَيْشٌ الْكَعْبَةَ فَإِذَا كَانُوا بِبَيْدَاءَ مِنْ الْأَرْضِ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ وَفِيهِمْ أَسْوَاقُهُمْ وَمَنْ لَيْسَ مِنْهُمْ قَالَ يُخْسَفُ بِأَوَّلِهِمْ وَآخِرِهِمْ ثُمَّ يُبْعَثُونَ عَلَى نِيَّاتِهِمْ. رواه البخاري ومسلم وغيرهما

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “একদল সৈনিক কাবা শরীফে যুদ্ধ করতে আসবে। তারা যখন “বায়দা’ নামক স্থানে পৌছবে কখন তাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তিকে নিয়ে যমীন ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। আমি (আয়েশা) বললামঃ কেমন করে তাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তিকে যমীনে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে, অথচ তাদের মধ্যে এমন লোকও তো রয়েছে যারা হাটে-বাজারে বেচা কেনায় লিপ্ত থাকবে এবং এমনও লোক থাকবে যারা সে সৈনিক দলের অন্তর্ভুক্ত নয়? তিনি বললেনঃ তাদের প্রথম ও শেষ ব্যক্তিকে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে। অতঃপর নিয়ত অনুযায়ী তাদেরকে পূনরুথিত করা হবে।”
(হাদীছটি ইমাম বুখারী, মুসলিম প্রমুখ বৰ্ণনা করেন।)

১২

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ فِي غَزَاةٍ فَقَالَ إِنَّ أَقْوَامًا بِالْمَدِينَةِ خَلْفَنَا مَا سَلَكْنَا شِعْبًا وَلَا وَادِيًا إِلَّا وَهُمْ مَعَنَا فِيهِ حَبَسَهُمْ الْعُذْرُ. رواه البخاري وأبو داود لَقَدْ تَرَكْتُمْ بِالْمَدِينَةِ أَقْوَامًا مَا سِرْتُمْ مَسِيرًا وَلَا أَنْفَقْتُمْ مِنْ نَفَقَةٍ وَلَا قَطَعْتُمْ مِنْ وَادٍ إِلَّا وَهُمْ مَعَكُمْ فِيهِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَكَيْفَ يَكُونُونَ مَعَنَا وَهُمْ بِالْمَدِينَةِ فَقَالَ: حَبَسَهُمْ الْمَرَضُ.

আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সাথে তাবুক যুদ্ধ থেকে ফিরে এলাম। এসময় তিনি বললেনঃ “আমাদের পশ্চাতে কতিপয় লোক মদীনায় রয়ে গেছে। আমরা এমন কোন পর্বতময় পথ ও উপত্যকা অতিক্রম করিনি যেখানে তারা আমাদের সাথে ছিল না। (অর্থাৎ আমাদের বরাবর প্রতিদান লাভ করেছে)। কেননা ওযর তাদেরকে বের হতে বাধা দিয়েছে।”

হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম বুখারী ও আবু দাউদ, তবে আবু দাউদের বর্ণনা এভাবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “তোমরা মদীনায় একদল লোককে ছেড়ে এসেছ। তোমরা যে পথই চলেছো, যে অর্থই খরচ করেছে এবং যে উপত্যকাই পাড়ি দিয়েছো- তারা তোমাদের সাথেই রয়েছে। তারা প্রশ্ন করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে তারা আমাদের সাথে থাকল, অথচ তারা তো মদীনাতেই রয়েছে? তিনি বললেনঃ (এই কারণে যে) অসুস্থতা তাদেরকে তোমাদের সাথে থাকতে বাধা দিয়েছে।”

১৭

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ قَالَ إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ سَيِّئَةً وَاحِدَة" زاد في رواية: "أو محاها ولا يهلك [على] الله إلا هالك" رواه البخاري ومسلم

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার সম্মানিত মহান পালনকর্তা হতে বর্ণনা করে বলেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা সৎ কর্মসমূহ এবং অসৎকর্ম সমূহ লিখে রেখেছেন। অতঃপর উহা স্বীয় কিতাবে (কুরআনে) বিশুদ্ধভাবে বর্ণনা করে দিয়েছেন। অতএব যে ব্যক্তি সৎ কাজের ইচ্ছা করে, অতঃপর উহা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম না হয়, তবে আল্লাহ উহা পূর্ণ একটি সৎকর্ম হিসেবে লিখে নেন। আর ইচ্ছা করার পর যদি তা কর্মে বাস্তবায়ন করে, তবে আল্লাহ সে সৎকর্মটিকে দশ থেকে সাতশত থেকে আরো অনেক গুণে বৃদ্ধি করে লিখে নেন। আর যে ব্যক্তি কোন অসৎকর্ম করার ইচ্ছা পোষণ করে। অতঃপর উহা কর্মে বাস্তবায়ন না করে, তবে আল্লাহ উহা একটি পূর্ণ সৎকর্ম হিসেবে লিখে নেন। আর ইচ্ছা করার পর যদি উহা বাস্তবায়ন করে তবে আল্লাহ তা একটি মাত্ৰ পাপ কাজ হিসেবে লিখে থাকেন।”

(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম) মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছেঃ
“আল্লাহ তা একটিমাত্ৰ পাপ হিসেবে লিখে থাকেন অথবা তা মিটিয়ে দেন। আর আল্লাহর ব্যাপারে ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যক্তি মাত্ৰই ধ্বংস হয়ে থাকে।”

১৬

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) وَعَنْ أَبي كَبْشَةَ الْأَنَّمَارِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ ثَلَاثَةٌ أُقْسِمُ عَلَيْهِنَّ وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا فَاحْفَظُوهُ قَالَ مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ وَلَا ظُلِمَ عَبْدٌ مَظْلَمَةً فَصَبَرَ عَلَيْهَا إِلَّا زَادَهُ اللَّهُ عِزًّا وَلَا فَتَحَ عَبْدٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ إِلَّا فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقْرٍ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا فَاحْفَظُوهُ. قَالَ إِنَّمَا الدُّنْيَا لِأَرْبَعَةِ نَفَرٍ عَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ مَالًا وَعِلْمًا فَهُوَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ وَيَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ وَيَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقًّا فَهَذَا بِأَفْضَلِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ عِلْمًا وَلَمْ يَرْزُقْهُ مَالًا فَهُوَ صَادِقُ النِّيَّةِ يَقُولُ لَوْ أَنَّ لِي مَالًا لَعَمِلْتُ بِعَمَلِ فُلَانٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهِ فَأَجْرُهُمَا سَوَاءٌ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ مَالًا وَلَمْ يَرْزُقْهُ عِلْمًا فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ لَا يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ وَلَا يَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ وَلَا يَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقًّا فَهَذَا بِأَخْبَثِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ لَمْ يَرْزُقْهُ اللَّهُ مَالًا وَلَا عِلْمًا فَهُوَ يَقُولُ لَوْ أَنَّ لِي مَالًا لَعَمِلْتُ فِيهِ بِعَمَلِ فُلَانٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهِ فَوِزْرُهُمَا سَوَاءٌ رواه أحمد والترمذي واللفظ له وقال حديث حسن صحيح مَثَلُ هَذِهِ الْأُمَّةِ كَمَثَلِ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا وَعِلْمًا فَهُوَ يَعْمَلُ بِعِلْمِهِ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي حَقِّهِ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ عِلْمًا وَلَمْ يُؤْتِهِ مَالًا فَهُوَ يَقُولُ لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُمَا فِي الْأَجْرِ سَوَاءٌ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا وَلَمْ يُؤْتِهِ عِلْمًا فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ يُنْفِقُهُ فِي غَيْرِ حَقِّهِ وَرَجُلٌ لَمْ يُؤْتِهِ اللَّهُ عِلْمًا وَلَا مَالًا فَهُوَ يَقُولُ لَوْ كَانَ لِي مِثْلُ هَذَا عَمِلْتُ فِيهِ مِثْلَ الَّذِي يَعْمَلُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَهُمَا فِي الْوِزْرِ سَوَاءٌ.

আবু কাবশা আল আনমারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেনঃ “তিনটি বিষয়ের উপর আমি শপথ করছি এবং তোমাদের কাছে একটি হাদীছ বর্ণনা করছি, তোমরা তা মুখস্ত করে রাখ। তিনি বলেনঃ উক্ত তিনটি বিষয় হল (১) সাদকা করলে কোন বান্দার সম্পদ কমে না। (২) কোন বান্দার উপর জুলুম করা হলে সে যদি ধৈর্য ধারণ করে, তবে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন। (৩) যখনই কোন বান্দা ভিক্ষার দরজা খুলে দিবে তখনই আল্লাহ তার জন্য অভাবের দ্বার উন্মুক্ত করে দিবেন।” (অথবা তিনি এ জাতীয় একটা কথা বলেছেন) এবং তোমাদের নিকট আরেকটি হাদীছ বর্ণনা করছি, তোমরা উহা মুখস্ত করে রাখঃ “দুনিয়াটা চার প্রকার মানুষের জন্য। (১) একজন বান্দা, আল্লাহ তাকে সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন। সে তাতে তার পালনকর্তাকে ভয় করে, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে এবং তাতে আল্লাহর হক আছে তাও বুঝে (এবং তা আদায় করে)। এব্যক্তি সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী। (২) অপর এক বান্দা, আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করেছেন, কিন্তু সম্পদ দেন নাই। কিন্তু সে সৎ নিয়তের অধিকারী। সে বলেঃ আমার যদি সম্পদ থাকত তবে উমুক (প্রথম) ব্যক্তির ন্যায় তা ব্যবহার করতাম। সে তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে। উভয়ে সমান প্রতিদান পাবে। (৩) তৃতীয় বান্দা, আল্লাহ তাকে সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু জ্ঞান দেন নাই। সে স্বীয় সম্পদ মুর্খতাবশতঃ অন্যায় কাজে ব্যয় করে। তাতে নিজ পালনকর্তাকেও ভয় করে না, আত্মীয়তার সম্পর্কও রক্ষা করে না, আল্লাহর কোন হকও আদায় করে না। এ ব্যক্তি নিকৃষ্টতম মানের অধিকারী। (৪) চতুৰ্থ বান্দা, আল্লাহ তাকে কোন সম্পদও দেন নাই, জ্ঞানও দান করেন নাই। সে বলেঃ আমার যদি সম্পদ থাকত, তবে উমুক (তৃতীয়) ব্যক্তির মত (অন্যায় কাজে) তা ব্যয় করতাম, সেও তার নিয়ত অনুযায়ী ফল পাবে। আর উভয় ব্যক্তির পাপ এক সমান।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, আহমাদ, তিরমিয়ী ও ইবনে মাজাহ।) তবে ইবনে মাজার বর্ণনা এভাবেঃ
(সহীহ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“এ উম্মতের উদাহরণ চার ব্যক্তির ন্যায়ঃ (১) এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ ও জ্ঞান দান করেছেন। স্বীয় সম্পদে সে ইলম অনুযায়ী আমল করে থাকে। হক পথে তা ব্যয় করে। (২) অপর এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে জ্ঞান দান করেছেন, কিন্তু কোন সম্পদ দেন নাই। সে বলেঃ এই ব্যক্তির মত যদি আমার (সম্পদ) থাকত তবে তার মত আমি তা ব্যবহার করতাম। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ উভয় ব্যক্তি প্রতিদানের ক্ষেত্রে বরাবর। (৩) তৃতীয় এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ দিয়েছেন, কিন্তু কোন জ্ঞান দান করেননি, ফলে সে তার সম্পদে মূর্খতা সুলভ আচরণ করে, নাহক পথে তা ব্যয় করে। (৪) চতুৰ্থ ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে না দিয়েছেন ধন-সম্পদ না দিয়েছেন জ্ঞান। সে বলেঃ এ ব্যক্তির ন্যায় যদি আমার (সম্পদ) থাকত, তবে এমন ভাবে তা ব্যবহার করতাম, যেমন এ ব্যক্তি করে। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ উভয় ব্যক্তি পাপের ক্ষেত্রে এক সমান।”

১৯

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ معن بن يزيد رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قال كَانَ أَبِي يَزِيدُ أَخْرَجَ دَنَانِيرَ يَتَصَدَّقُ بِهَا فَوَضَعَهَا عِنْدَ رَجُلٍ فِي الْمَسْجِدِ فَجِئْتُ فَأَخَذْتُهَا فَأَتَيْتُهُ بِهَا فَقَالَ وَاللَّهِ مَا إِيَّاكَ أَرَدْتُ فَخَاصَمْتُهُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ لَكَ مَا نَوَيْتَ يَا يَزِيدُ وَلَكَ مَا أَخَذْتَ يَا مَعْنُ. رواه البخاري

মা’ন বিন ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমার পিতা ইয়াযীদ কিছু দীনার বের করলেন দান করার উদ্দেশ্যে। অতঃপর মসজিদে গিয়ে এক ব্যক্তির নিকট রেখে দিলেন। (ঘটনাক্রমে আমি ছিলাম সে ব্যক্তি) আমি উহা নিয়ে তার নিকট ফিরে এলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম আমি তোমাকে উদ্দেশ্য করি নাই। তখন ব্যাপারটির ফায়সালার জন্য আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) নিকট পেশ করলাম। তিনি বললেনঃ “হে ইয়ায়ীদ তুমি যা নিয়ত করেছ তার ছোয়াব পেয়ে যাবে। আর হে মা’ন যা তোমার হস্তগত হয়েছে তা তোমারই।” (ইমাম বুখারী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)

২১

হাসান সহিহ
(حسن صحيح) عَنْ أبِيْ الدَّرْداَءِ يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ أَتَى فِرَاشَهُ وَهُوَ يَنْوِي أَنْ يَقُومَ يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ فَغَلَبَتْهُ عَيْنَاهُ حَتَّى أَصْبَحَ كُتِبَ لَهُ مَا نَوَى وَكَانَ نَوْمُهُ صَدَقَةً عَلَيْهِ مِنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ. رواه النسائي وابن ماجه بإسناد جيد ورواه ابن حبان في صحيحه من حديث أبي ذر أو أبِيْ الدَّرْداَءِ.

আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হাদীছটি তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি বিছানায় শয়ন করবে এই নিয়তে যে, সে রাতে কিয়ামুল লায়ল তথা নফল ছালাত আদায় করবে। কিন্তু তার চোখ তাকে পরাজিত করে দেয় ফলে (জাগ্রত হতে না পারার কারণে নামাযও আদায় করতে পারে না) সকাল হয়ে যায়। তবে সে যা নিয়ত করেছিল তা তার জন্য লিখে দেয়া হয়। আর নিদ্রা তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে সাদকা স্বরূপ হয়ে যায়।
(হাদীছটি নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ উত্তম সনদে বর্ণনা করেন এবং ইবনে হিব্বান স্বীয় সহীহ গ্রন্থে আবু যার অথবা আবু দারদা থেকে বর্ণনা করেন।)

২০

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُم أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ رَجُلٌ لَأَتَصَدَّقَنَّ الليلة بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدِ سَارِقٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ عَلَى سَارِقٍ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ لَأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدَيْ زَانِيَةٍ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ اللَّيْلَةَ عَلَى زَانِيَةٍ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى زَانِيَةٍ لَأَتَصَدَّقَنَّ بِصَدَقَةٍ فَخَرَجَ بِصَدَقَتِهِ فَوَضَعَهَا فِي يَدَيْ غَنِيٍّ فَأَصْبَحُوا يَتَحَدَّثُونَ تُصُدِّقَ عَلَى غَنِيٍّ فَقَالَ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ عَلَى سَارِقٍ وَعَلَى زَانِيَةٍ وَعَلَى غَنِيٍّ فَأُتِيَ فَقِيلَ لَهُ أَمَّا صَدَقَتُكَ عَلَى سَارِقٍ فَلَعَلَّهُ أَنْ يَسْتَعِفَّ عَنْ سَرِقَتِهِ وَأَمَّا الزَّانِيَةُ فَلَعَلَّهَا أَنْ تَسْتَعِفَّ عَنْ زِنَاهَا وَأَمَّا الْغَنِيُّ فَلَعَلَّهُ يَعْتَبِرُ فَيُنْفِقُ مِمَّا أَعْطَاهُ اللَّهُ. (رواه البخاري واللفظ له ومسلم والنسائي وقالا فيه: فقيل له أما صدقتك فقد تقبلت ثم ذكر الحديث

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “(বনী ইসরাঈলের) জনৈক ব্যক্তি একদা বলল, অবশ্যই আমি কিছু দান করব। এ উদ্দেশ্যে সে স্বীয় দান নিয়ে বের হল, এবং (গোপনীয়তার কারেণে নিজের অজান্তে) এক চোরের হাতে তা রেখে দিল। সকালে মানুষে বলাবলি করতে লাগল, (কি আশ্চর্য!) আজ রাতে এক চোরকে দান করা হয়েছে। সে বলল, হে আল্লাহ চোরের হাতে আমার দান যাওয়ার কারণে সকল প্রশংসা তোমার জন্য। অবশ্যই। (আবার) দান করব। অতঃপর সে তার দান নিয়ে বের হল এবং এক ব্যভিচারিনীর হাতে রেখে দিল। সকালে মানুষ বলাবলি করতে লাগল, (কি আশ্চর্য!) গত রাতে একজন ব্যভিচারিনীকে দান করা হয়েছে। সে বলল, হে আল্লাহ ব্যভিচারিনীকে দান করার কারণে সমস্ত প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য। অবশ্যই। (আবার সাদকা করব)। সে তার দান নিয়ে বের হল অতঃপর এক ধনী লোকের হাতে দিয়ে দিল। সকালে মানুষ বলতে লাগল, (আশ্চর্য ব্যাপার!)। আজ রাতে একজন ধনী মানুষকে দান করা হয়েছে। সে বললঃ হে আল্লাহ যাবতীয় প্রশংসা তোমারই প্রাপ্য চোরের, ব্যভিচারিনী এবং ধনী লোককে দান করার কারণে। তাকে স্বপ্ন মারফত বলা হল, তোমার দান চোরের হাতে যাওয়ার কারণে- হতে পারে সে চুরি থেকে বিরত থাকবে। আর ব্যভিচারিনী, হতে পারে সে এ দানের কারণে ব্যভিচার থেকে পবিত্র হবে। আর ধনী ব্যক্তি এ থেকে শিক্ষা গ্ৰহণ করে হতে পারে, ফলে সেও তার সম্পদ থেকে দান করবে।”
(বুখারী, মুসলিম ও নাসাঈ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

তবে মুসলিম ও নাসাঈর বর্ণনায় এসেছেঃ তাকে স্বপ্ন মারফত বলা হল, তোমার সাদকা কবূল করা হয়েছে ...। তারপর হাদীছের বাকী অংশ উল্লেখ করেন।

১৮

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ، أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: يَقُولُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: " إِذَا أَرَادَ عَبْدِي بعْمَلَ سَيِّئَةً فَلا تَكْتُبُوهَا عَلَيْهِ حَتَّى يَعْمَلَهَا، فإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا بِمِثْلِهَا، وَإِنْ تَرَكَهَا مِنْ أَجْلِي فَاكْتُبُوهَا حَسَنَةً، فَإِذَا أَرَادَ أَنْ يَعْمَلَ حَسَنَةً فَلَمْ يَعْمَلْهَا فَاكْتُبُوهَا حَسَنَةً، فَإِنْ عَمِلَهَا فَاكْتُبُوهَا بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ." رواه البخاري واللفظ له ومسلم مَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كُتِبَتْ لَهُ حَسَنَةً وَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَعَمِلَهَا كُتِبَتْ لَهُ عَشْرًا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا لَمْ تُكْتَبْ وَإِنْ عَمِلَهَا كُتِبَتْ. قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِذَا تَحَدَّثَ عَبْدِي بِأَنْ يَعْمَلَ حَسَنَةً فَأَنَا أَكْتُبُهَا لَهُ حَسَنَةً مَا لَمْ يَعْمَلْ فَإِذَا عَمِلَهَا فَأَنَا أَكْتُبُهَا بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا وَإِذَا تَحَدَّثَ بِأَنْ يَعْمَلَ سَيِّئَةً فَأَنَا أَغْفِرُهَا لَهُ مَا لَمْ يَعْمَلْهَا فَإِذَا عَمِلَهَا فَأَنَا أَكْتُبُهَا لَهُ بِمِثْلِهَا وَإِنْ تَرَكَهَا فَاكْتُبُوهَا لَهُ حَسَنَةً إِنَّمَا تَرَكَهَا مِنْ جَرَّايَ
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ আমার বান্দা যখন কোন অসৎ কর্ম করার ইচ্ছা পোষণ করে, তখন তা কর্মে বাস্তবায়ন করা পর্যন্ত তোমরা (ফেরেশতাকুল) কিছুই লিখিও না। যদি কর্মে বাস্তবায়ন করে তবে সে কর্ম অনুরূপ তার পাপ লিখ। আর যদি তা আমার কারণে পরিত্যাগ করে, তবে উহা তার জন্য একটি পূণ্য হিসেবে লিখে নাও। আর যদি কোন সৎকর্মের ইচ্ছা করে অতঃপর তা বাস্তবায়ন না করে তবে তা একটি পূণ্য হিসেবে লিখে নাও। আর যদি তা কর্মে বাস্তবায়ন করে, তবে তা দশ থেকে সাতশতগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে লিখে নাও।” (বুখারী ও মুসলিম হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। তবে বাক্যগুলো বুখারী থেকে গৃহীত)
মুসলিমের অপর রেওয়ায়াতে এসেছেঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি কোন সৎ কাজের ইচ্ছা করে, অতঃপর তা বাস্তবায়ন না করে, তবে তার জন্য একটি পূণ্য লেখা হয়। আর যে ব্যক্তি সৎকর্মের ইচ্ছা করার পর তা বাস্তবায়ন করে, তবে তার জন্য দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত নেকী লিখা হয়। আর যে ব্যক্তি অসৎ কাজের ইচ্ছা করে তা বাস্তবায়ন না করে, তবে তার কোন পাপ লিখা হয় না। আর যদি বাস্তবায়ন করে তবে তা লিখা হয়।”
মুসলিমের আর এক বর্ণনায় রয়েছেঃ আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “সম্মানিত মহান আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা যখন মনে মনে বলে যে, সে একটি সৎকাজ করবে, তখন উহা বাস্তবায়ন না করলে আমি উহা একটি সৎকাজ হিসেবে লিখে নেই। আর যদি বাস্তবায়ন করে, তবে তাকে দশগুণ বৃদ্ধি করে লিখে থাকি। আর যখন আমার বান্দা মনে মনে বলে যে, সে একটি খারাপ কাজ করবে, তখন উহা বাস্তবায়ন না করলে আমি তাকে ক্ষমা করে দেই। আর যদি বাস্তবায়ন করে, তবে সে কাজের অনুরূপ আমি পাপ লিখে থাকি। আর যদি উহা বাস্তবায়ন করা ছেড়ে দেয় তবে (হে ফেরেশতাকুল) তার জন্য একটি পূণ্য লিখে নাও। কেননা সে উহা একমাত্র আমার কারণেই পরিত্যাগ করেছে।”
/ পরিচ্ছেদঃ রিয়া থেকে সতর্কী করণ। কোন ব্যক্তি রিয়ার আশংকা করলে কি বলবে

২৩

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ أُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بَشِّرْ هَذِهِ الْأُمَّةَ بِالسَّنَاءِ وَالرِّفْعَةِ وَالدِّينِ وَالتَّمْكِينِ فِي الْأَرْضِ فَمَنْ عَمِلَ مِنْهُمْ عَمَلَ الْآخِرَةِ لِلدُّنْيَا لَمْ يَكُنْ لَهُ فِي الْآخِرَةِ نَصِيبٌ. رواه أحمد وابن حبان في صحيحه والحاكم والبيهقي وقال الحاكم صحيح الإسناد

উবাই বিন কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “এই উম্মত (মুহাম্মদী)-কে দ্বীনের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সম্মান ও মর্যাদার সুসংবাদ দাও। আর সুসংবাদ দাও পৃথিবীতে আধিপত্য লাভের। সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়ার উদ্দেশ্যে আখেরাতের কাজ করবে, পরকালে তার জন্য কোনই অংশ থাকবে না।”
(আহমাদ, ইবনে হিব্বান সহীহ গ্রন্থে, হাকেম ও বাইহাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

বাইহাকীর অপর বর্ণনায় রয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“এই উম্মতকে সুসংবাদ দাও- সহজতা ও দ্বীনের মাধ্যমে আল্লাহর দরবারে উচ্চ মর্যাদা ও সম্মানের। আরো (সুসংবাদ দাও) রাজ্যসমূহে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ও বিজয় লাভের। সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়ার উদ্দেশ্যে আখেরাতের আমল করবে, তার জন্য পরকালে কোনই অংশ থাকবে না।"

২৪

সহিহ হাদিস
(صحيح) عن أَبي هِنْدٍ الدَّارِيِّ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ قَامَ مَقَامَ رِيَاءٍ وَسُمْعَةٍ رَاءى اللَّهُ تَعَالَى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَسَمَّعَ. رواه أحمد والبيهقي

আবু হিন্দ আদদারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি শুনেছেন নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ "যে ব্যক্তি রিয়া এবং শ্রুতির উদ্দেশ্যে কোন আমল করবে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তার গুপ্ত অসৎ উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দিবেন এবং সকলের সম্মুখে তাকে লাঞ্ছিত করবেন।”
(হাদীছটি ইমাম আহমাদ উত্তম সনদে ও বায়হাকী বর্ণনা করেন।)

২৬

সহিহ হাদিস
(صحيح) عن جُنْدَب بن عبد الله قالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ وَمَنْ يُرَائِي يُرَائِي اللَّهُ بِهِ . رواه البخاري ومسلم

জুনদুব বিন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি প্ৰশংসা শোনার জন্য নিজের আমল মানুষের সামনে প্রকাশ করবে, আল্লাহ কিয়ামত দিবসে তার খারাপ নিয়ত প্ৰকাশ করে দিবেন। যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর জন্য আমল করবে, আল্লাহ কিয়ামত দিবসে তার আমল মানুষকে দেখিয়ে দিবেন এবং তাকে সকলের সামনে লাঞ্ছিত করবেন।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম)

২৫

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أبي هند الداري أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ قَامَ مَقَامَ رِيَاءٍ وَسُمْعَةٍ رَاءيَ اللَّهُ تَعَالَى بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَسَمَّعَ. رواه أحمد بإسناد جيد والبيهقي والطبراني

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি শুনেছি। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি মানুষের সামনে নিজের আমলের কথা শুনিয়ে বেড়াবে, আল্লাহ সৃষ্টিকুলের সামনে তার কথা শুনিয়ে দিবেন এবং তাকে ক্ষুদ্র করে দিবেন এবং লাঞ্ছিত করবেন।”
(হাদীছটি ত্বাবরানী [কবীর] গ্রন্থে কয়েকটি সনদে বর্ণনা করেন। সেগুলোর একটি বিশুদ্ধ এবং বায়হাক্বী বর্ণনা করেন। শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটি ইমাম আহমদও বর্ণনা করেন।)

২৭

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) عَنْ عَوْفِ بن مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، يَقُولُ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ:"مَنْ قَامَ مَقَامَ رِيَاءٍ رَاءَى اللَّهُ بِهِ، وَمَنْ قَامَ مَقَامَ سُمْعَةٍ سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ".رواه الطبراني بإسناد حسن

আউফ বিন মালেক আল আশজাঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোন আমল সম্পাদন করবে আল্লাহ তার উক্ত আমল দেখিয়ে দিবেন। যে ব্যক্তি মানুষের প্রশংসা শোনার উদ্দেশ্যে কোন আমল সম্পাদন করবে আল্লাহ তার কথা সৃষ্টিকুলকে শুনিয়ে দিবেন এবং তাকে অপমানিত করবেন।" (হাসান সনদে তাবরানী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)

২৮

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) وَعَنْ مُعَاذِ بن جَبَلٍ، عَن ْرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:"مَا مِنْ عَبْدٍ يَقُومُ فِي الدُّنْيَا مَقَامَ سُمْعَةٍ وَرِيَاءٍ إِلا سَمَّعَ اللَّهُ بِهِ عَلَى رُءُوسِ الْخَلائِقِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ". رواه الطبراني بإسناد حسن

মুআয বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “যে বান্দা পৃথিবীতে শ্রুতি এবং প্রদর্শনের জন্য কোন আমল করবে, আল্লাহ ক্বিয়ামত দিবসে সমস্ত সৃষ্টির সামনে তার অসৎ নিয়তের কথা মানুষকে শুনিয়ে দিবেন।"
(হাসান সনদে তাবরানী হাদীছটি বর্ণনা করেন।)

২৯

সহিহ মাওকুফ
(صحيح موقوف) وَعَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: "مَنْ رَاءَى بِشَيْءٍ فِي الدُّنْيَا مِنْ عَمَلٍ وَكَلَهُ اللهُ إِلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، وَقَالَ: انْظُرْ هَلْ يُغْنِي عَنْكَ شَيْئًا؟ ". رواه البيهقي موقوفا

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ “যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোন আমল মানুষকে দেখানোর জন্যে সম্পাদন করেছে। উহা ক্বিয়ামত দিবসে আল্লাহ তার কাছে সোপর্দ করবেন এবং বলবেনঃ দেখো তো উহা কি তোমার কোন উপকারে আসবে?
(বায়হাক্বী মাওকুফ সূত্রে বর্ণনা করেছেন)

৩০

হাসান হাদিস
(حسن) عَنْ رُبَيْحِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَنَحْنُ نَتَذَاكَرُ الْمَسِيحَ الدَّجَّالَ فَقَالَ أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِمَا هُوَ أَخْوَفُ عَلَيْكُمْ عِنْدِي مِنَ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ قَالَ قُلْنَا بَلَى فَقَالَ: الشِّرْكُ الْخَفِيُّ أَنْ يَقُومَ الرَّجُلُ يُصَلِّي فَيُزَيِّنُ صَلَاتَهُ لِمَا يَرَى مِنْ نَظَرِ رَجُلٍ* (رواه ابن ماجة والبيهقي)

রুবাইহ বিন আবদুর রহমান বিন আবু সাঈদ খুদরী তাঁর পিতা (আবদুর রহমান) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি (আবদুর রহমান) তাঁর (রুবাইহ) দাদা আবু সাঈদ থেকে বর্ণনা করেন। তিনি (আবু সাঈদ খুদরী) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা আমাদের নিকট বের হয়ে এলেন। সে সময় আমরা মাসীহ দাজ্জালেন কথা আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেনঃ “তোমাদের জন্য দাজ্জালের চেয়ে ভয়ানক বিষয়ের সংবাদ দিব না কি? আমরা বললামঃ হ্যাঁ হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেনঃ তা হল গোপন শির্ক। উহা এইরূপ যে, কোন ব্যক্তি সালাত আদায় করতে দন্ডায়মান হবে। অতঃপর মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য তার সালাতকে সুসজ্জিত করবে।”
(ইবনে মাজাহ ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)

২২

সহিহ হাদিস
صحيح [22] عن أبِيْ هُرَيْرَةَ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضَى يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ قَاتَلْتُ فِيكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ قَاتَلْتَ لِأَنْ يُقَالَ جَرِيءٌ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ. وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَهُ وَقَرَأَ الْقُرْآنَ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُهُ وَقَرَأْتُ فِيكَ الْقُرْآنَ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ عَالِمٌ وَقَرَأْتَ الْقُرْآنَ لِيُقَالَ هُوَ قَارِئٌ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ حَتَّى أُلْقِيَ فِي النَّارِ. وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْمَالِ كُلِّهِ فَأُتِيَ بِهِ فَعَرَّفَهُ نِعَمَهُ فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيهَا قَالَ مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيلٍ تُحِبُّ أَنْ يُنْفَقَ فِيهَا إِلَّا أَنْفَقْتُ فِيهَا لَكَ قَالَ كَذَبْتَ وَلَكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ فَقَدْ قِيلَ ثُمَّ أُمِرَ بِهِ فَسُحِبَ عَلَى وَجْهِهِ ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّارِ. (رواه مسلم والنسائي) ورواه الترمذي وحسنه وابن حبان في صحيحه كلاهما بلفظ واحد عن الْوَلِيدِ بْنِ أَبِي الْوَلِيدِ أَبُيْ عُثْمَانَ الْمَدَيِْنِيِّ أَنَّ عُقْبَةَ بْنَ مُسْلِمٍ حَدَّثَهُ أَنَّ شُفَيًّا الْأَصْبَحِيَّ حَدَّثَهُ " أَنَّهُ دَخَلَ الْمَدِينَةَ فَإِذَا هُوَ بِرَجُلٍ قَدِ اجْتَمَعَ عَلَيْهِ النَّاسُ فَقَالَ مَنْ هَذَا فَقَالُوا أَبُو هُرَيْرَةَ فَدَنَوْتُ مِنْهُ حَتَّى قَعَدْتُ بَيْنَ يَدَيْهِ وَهُوَ يُحَدِّثُ النَّاسَ فَلَمَّا سَكَتَ وَخَلَا قُلْتُ لَهُ أَنْشُدُكَ بِحَقٍّ وَبِحَقٍّ لَمَا حَدَّثْتَنِي حَدِيثًا سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَقَلْتَهُ وَعَلِمْتَهُ فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَفْعَلُ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَقَلْتُهُ وَعَلِمْتُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً فَمَكَثَ قَلِيلًا ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَنَا أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً أُخْرَى ثُمَّ أَفَاقَ فَمَسَحَ وَجْهَهُ فَقَالَ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا وَهُوَ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَنَا أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً أُخْرَى ثُمَّ أَفَاقَ وَمَسَحَ وَجْهَهُ فَقَالَ أَفْعَلُ لَأُحَدِّثَنَّكَ حَدِيثًا حَدَّثَنِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا مَعَهُ فِي هَذَا الْبَيْتِ مَا مَعَهُ أَحَدٌ غَيْرِي وَغَيْرُهُ ثُمَّ نَشَغَ أَبُو هُرَيْرَةَ نَشْغَةً شَدِيدَةً ثُمَّ مَالَ خَارًّا عَلَى وَجْهِهِ فَأَسْنَدْتُهُ عَلَيَّ طَوِيلًا ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ حَدَّثَنِي رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : إنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى إِذَا كَانَ يَوْمُ الْقِيَامَةِ يَنْزِلُ إِلَى الْعِبَادِ لِيَقْضِيَ بَيْنَهُمْ وَكُلُّ أُمَّةٍ جَاثِيَةٌ فَأَوَّلُ مَنْ يَدْعُو بِهِ رَجُلٌ جَمَعَ الْقُرْآنَ وَرَجُلٌ يَقْتَتِلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَرَجُلٌ كَثِيرُ الْمَالِ فَيَقُولُ اللَّهُ لِلْقَارِئِ أَلَمْ أُعَلِّمْكَ مَا أَنْزَلْتُ عَلَى رَسُولِي قَالَ بَلَى يَا رَبِّ قَالَ فَمَاذَا عَمِلْتَ فِيمَا عُلِّمْتَ قَالَ كُنْتُ أَقُومُ بِهِ آنَاءَ اللَّيْلِ وَآنَاءَ النَّهَارِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلَائِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ إِنَّ فُلَانًا قَارِئٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ وَيُؤْتَى بِصَاحِبِ الْمَالِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ أَلَمْ أُوَسِّعْ عَلَيْكَ حَتَّى لَمْ أَدَعْكَ تَحْتَاجُ إِلَى أَحَدٍ قَالَ بَلَى يَا رَبِّ قَالَ فَمَاذَا عَمِلْتَ فِيمَا آتَيْتُكَ قَالَ كُنْتُ أَصِلُ الرَّحِمَ وَأَتَصَدَّقُ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلَائِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ فُلَانٌ جَوَادٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ وَيُؤْتَى بِالَّذِي قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَيَقُولُ اللَّهُ لَهُ فِي مَاذَا قُتِلْتَ فَيَقُولُ أُمِرْتُ بِالْجِهَادِ فِي سَبِيلِكَ فَقَاتَلْتُ حَتَّى قُتِلْتُ فَيَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى لَهُ كَذَبْتَ وَتَقُولُ لَهُ الْمَلَائِكَةُ كَذَبْتَ وَيَقُولُ اللَّهُ بَلْ أَرَدْتَ أَنْ يُقَالَ فُلَانٌ جَرِيءٌ فَقَدْ قِيلَ ذَاكَ ثُمَّ ضَرَبَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى رُكْبَتِي فَقَالَ: يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أُولَئِكَ الثَّلَاثَةُ أَوَّلُ خَلْقِ اللَّهِ تُسَعَّرُ بِهِمُ النَّارُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وقَالَ الْوَلِيدُ أَبُو عُثْمَانَ فَأَخْبَرَنِي عُقْبَةُ بْنُ مُسْلِمٍ أَنَّ شُفَيًّا هُوَ الَّذِي دَخَلَ عَلَى مُعَاوِيَةَ فَأَخْبَرَهُ بِهَذَا قَالَ أَبُو عُثْمَانَ وَحَدَّثَنِي الْعَلَاءُ بْنُ أَبِي حَكِيمٍ أَنَّهُ كَانَ سَيَّافًا لِمُعَاوِيَةَ فَدَخَلَ عَلَيْهِ رَجُلٌ فَأَخْبَرَهُ بِهَذَا عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ قَدْ فُعِلَ بِهَؤُلَاءِ هَذَا فَكَيْفَ بِمَنْ بَقِيَ مِنَ النَّاسِ ثُمَّ بَكَى مُعَاوِيَةُ بُكَاءً شَدِيدًا حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ هَالِكٌ وَقُلْنَا قَدْ جَاءَنَا هَذَا الرَّجُلُ بِشَرٍّ ثُمَّ أَفَاقَ مُعَاوِيَةُ وَمَسَحَ عَنْ وَجْهِهِ وَقَالَ صَدَقَ اللَّهُ وَرَسُولُهُ (مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لَا يُبْخَسُونَ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ) وراه ابن خزيمة في (صحيحه) نحو هذا

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে একথা বলতে শুনেছিঃ “কিয়ামত দিবসে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যার বিচার করা হবে, সে এমন ব্যক্তি যে শাহাদত বরণ করেছে। তাকে সামনে নিয়ে আসা হবে। তখন (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামতরাজীর পরিচয় করবেন। সে উহা চিনতে পারবে। বলবেন, কি কাজ করেছ তা দ্বারা? সে বলবে, তোমার পথে যুদ্ধ করে শহীদ হয়ে গেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি যুদ্ধ করেছ, এই উদ্দেশ্যে যে, তোমাকে বলা হবে উমুক ব্যক্তি বীর যোদ্ধা। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার সম্পর্কে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এবং (সর্বপ্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যক্তির যে জ্ঞানার্জন করেছিল ও মানুষকে তা শিক্ষাদান করেছিল এবং কুরআন পাঠ করেছিল। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত সমূহের পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তিনি জিজ্ঞেস করবেন, কি আমল করেছ এই নেয়ামত দ্বারা। সে বলবে, জ্ঞানার্জন করেছি এবং মানুষকে তা শিখিয়েছি। আর আপনার সন্তুষ্টির জন্য কুরআন পাঠ করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, বরং তুমি জ্ঞানার্জন করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে আলেম বা জ্ঞানী। কুরআন পাঠ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে ক্বারী বা পাঠক। আর তা তো বলা হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে, তখন তাকে মুখের ভরে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
এবং (সর্ব প্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যক্তির, আল্লাহ যাকে প্রাচুর্য দান করেছিলেন, দান করেছিলেন বিভিন্ন ধরণের সম্পদ। তাকে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ তা’আলা) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত রাজীর পরিচয় করবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তখন তিনি প্রশ্ন করবেন, কি কাজ করেছ এই নেয়ামত সমূহ দ্বারা? সে জবাব দিবে, যে পথে অর্থ ব্যয় করলে আপনি খুশি হবেন। এ ধরনের সকল পথে আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অর্থ সম্পদ ব্যয় করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এরূপ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, (তোমাকে) বলা হবে, সে দানবীর। আর তা তো বলাই হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে। তখন তাকে মুখের ভরে ছেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হবে এবং জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম মুসলিম ও নাসাঈ)
হাদীছটি ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করে তাকে হাসান বলেন এবং ইবনে হিব্বান স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেন, উভয়ের বাক্যরূপ একইঃ
ওয়ালীদ বিন আবুল ওয়ালীদ আবু উছমান আল মাদীনী হতে বৰ্ণিত। উক্ববা বিন মুসলিম তাঁর কাছে হাদীছ বর্ণনা করেন যে, শুফাইয়া আল আসবাহী বর্ণনা করেন, তিনি (শুফাইয়া) একদা মদীনায় প্রবেশ করলেন, এসময় তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন, মানুষ তার নিকট একত্রিত হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করলেন, কে এই লোক? তারা বললঃ আবু হুরায়রা। তিনি বলেনঃ একথা শুনে আমি তাঁর নিকটবর্তী হলাম, এমনকি তাঁর সম্মুখে বসে গেলাম। সে সময় মানুষকে তিনি হাদীছ শুনাচ্ছিলেন। যখন তিনি থামলেন এবং নির্জন হলেন, আমি তাঁকে বললাম, দয়া করে আপনি আমার নিকট হাদীছ বর্ণনা করুন, যা আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর নিকট থেকে শুনে বুঝেছেন ও জেনেছেন। আবু হুরায়রা বললেনঃ তা করব, আমি অবশ্যই তোমার নিকট হাদীছ বর্ণনা করব যা আমার নিকট রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বৰ্ণনা করেছেন। আমি তা বুঝেছি এবং জেনেছি। অতঃপর আবু হুরায়রা চিৎকার দিয়ে উঠলেন (একনকি ভয়ে প্রায় বেহুশ হয়ে গেলেন)। আমরা কিছু সময় অপেক্ষা করলাম। তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। অতঃপর বললেনঃ আমি অবশ্যই তোমার নিকট একটি হাদীছ বৰ্ণনা করব, যা রাসূলুল্লাহ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। আমি এবং তিনি এই ঘরেই ছিলাম। আমাদের সাথে আমি এবং তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলনা। অতঃপর আবার আবু হুরায়রা চিৎকার দিয়ে উঠলেন। অতঃপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। এবং মুখমন্ডলে হাত বুলালেন। বললেন, তা করব, আমি অবশ্যই তোমার নিকট একটি হাদীছ বর্ণনা করব, যা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। আমি এবং তিনি এই ঘরেই ছিলাম। আমাদের সাথে আমি এবং তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলনা। অতঃপর আবার আবু হুরায়রা ভীষণ ভাবে চিৎকার দিয়ে উঠলেন এবং মুখের ভরে পড়ে যেতে লাগলেন। আমি তাঁকে দীর্ঘ সময় সোজা করে ধরে রাখলাম। অতঃপর তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলেন। তারপর বললেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার নিকট বর্ণনা করেছেনঃ
“কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তাবারকা ওয়া তা’আলা বান্দাদের মাঝে বিচার-ফায়সালা করার জন্য অবতরন করবেন। প্রত্যেক জাতি হাঁটুর উপর ভর করে নতজানু অবস্থায় থাকবে। সর্বপ্রথম যাকে ডাকা হবে সে এক ব্যক্তি যে কুরআনের প্রচুর জ্ঞানার্জন করেছিল, আর এক ব্যক্তি যে আল্লাহর পথে নিহত হয়েছিল এবং এক ব্যক্তি যে অঢেল সম্পদের অধিকারী ছিল। সম্মানিত মহান আল্লাহ কুরআনের ক্বারীকে বলবেন, আমার রাসূলের উপর আমি যা নাযিল করেছিলাম তার জ্ঞান কি তোমাকে দান করি নি? সে বলবে, হাঁ হে আমার প্রতিপালক। তিনি বলবেন, যে জ্ঞান অর্জন করেছ সে অনুযায়ী কি আমল করেছ? বলবে আমি রাত-দিন তা নিয়ে ব্যস্ত থেকেছি তার হক আদায় করেছি। সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। আর মহান আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো ইচ্ছে করেছিলে যে, (তোমাকে) বলা হবে উমুক ব্যক্তি ক্বারী। আর তা তো বলাই হয়েছে।
সম্পদশালী ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে। সম্মানিত মহান আল্লাহ তাকে বলবেনঃ আমি কি তোমাকে সম্পদের প্রাচুর্য দান করিনি? এমনকি কারো মুখাপেক্ষী করে তোমাকে রাখিনি? সে বলবে, হ্যাঁ, হে আমার বর। তিনি বলবেনঃ তোমাকে যা দান করেছিলাম তা কোন কাজে ব্যবহার করেছ? সে বলবেঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করতাম এবং দান-সাদকা করতাম। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। সুমহান আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো হচ্ছে করেছিলে যে, তোমাকে বলা হবে উমুক ব্যক্তি দানশীল। আর তা তো অবশ্যই বলা হয়েছে।
আল্লাহর পথে নিহত ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে। আল্লাহ তাকে বলবেনঃ কি কারনে নিহত হয়েছ? সে বলবে, হে প্ৰভু! আপনার রাস্তায় জিহাদ করার জন্য আপনি আদেশ করেছিলেন, তাই লড়াই করে নিহত হয়েছি। আল্লাহ তা’আলা তাকে বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। ফেরেশতারাও বলবেনঃ তুমি মিথ্যা বলছ। আল্লাহ বলবেনঃ বরং তুমি তো ইচ্ছে করেছিলে যে, (তোমাকে) বলা হবে উমুক ব্যক্তি বীর যোদ্ধা। আর তা তো অবশ্যই বলা হয়েছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার হাঁটুর উপর আঘাত করে বললেনঃ “হে আবু হুরায়রা! আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে এরা হল তিন ব্যক্তি কিয়ামত দিবসে যাদেরকে সর্বপ্রথম জাহান্নামের আগুনে প্রজ্জলিত করা হবে।"
আল ওয়ালীদ আবু উছামান আল মাদীনী বলেনঃ উক্ববা আমাকে সংবাদ দেন যে, শুফাইয়াই আবার মুআবিয়ার নিকট গিয়ে এই হাদীছ বর্ণনা করেন। আবু উছমান বলেন, আর আলা বিন আবু হাকীম আমাকে বলেন যে, তিনি (শুফাইয়া) ছিলেন মুআবিয়ার জন্য তরবারী স্বরূপ। তিনি (আবু উছমান) বলেনঃ জনৈক ব্যক্তি তাঁর নিকট গিয়ে আবু হুরায়রার বরাত দিয়ে এ হাদীছ বর্ণনা করেন। হাদীছ শুনে মুআবিয়া বলেনঃ এ ধরণের ব্যক্তিদের সাথে এরকম ব্যবহার হবে, তাহলে বাকী মানুষের অবস্থা কি হবে? অতঃপর মুআবিয়া খুব কাঁদতে লাগলেন। তার ক্ৰন্দনের আধিক্যতা দেখে আমরা মনে করলাম তিনি হয়ত মারাই যাবেন। বললামঃ এ লোকটি আমাদের জন্য অমঙ্গল নিয়ে এসেছে। মুআবিয়া স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসে মুখমন্ডল মুছলেন এবং বললেনঃ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল সত্যই বলেছেনঃ (مَنْ كَانَ يُرِيدُ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيْهِمْ أَعْمَالَهُمْ فِيهَا وَهُمْ فِيهَا لَا يُبْخَسُونَ أُولَئِكَ الَّذِينَ لَيْسَ لَهُمْ فِي الْآَخِرَةِ إِلَّا النَّارُ وَحَبِطَ مَا صَنَعُوا فِيهَا وَبَاطِلٌ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ(
“যে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবন এবং তার চাকচিক্য কামনা করবে, আমি তাদের কর্মের প্রতিদান দুনিয়াতেই পুরাপুরি দান করব। এবং তাদের কোন প্রকার কমতি করা হবে না। এদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই। দুনিয়াতে তারা যা করেছে তা ধ্বংস হয়ে গেছে আর যা সম্পাদন করেছে তা বিনষ্ট হয়েছে।"(সূরা হূদঃ১৫-১৬)
হাদীছটি ইবনু খাযায়মা স্বীয় [ছহীহ] গ্রন্থে এরূপই বর্ণনা করেন। দুয়েকটি শব্দ ছাড়া তেমন কোথাও তেমন বৈপরিত্য নেই।

৩১

সহিহ হাদিস
(حسن ) وَعَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِيَّاكُمْ وَشِرْكَ السَّرَائِرِ" قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا شِرْكُ السَّرَائِرِ ؟ قَالَ:" أَنْ يُتِمَّ رُكُوعَهَا وَسُجُودَهَا لِمَا يَلْحَظُهُ مِنَ الْحَدَقِ وَالنَّظَرِ فَذَلِكَ شِرْكُ السَّرَائِرِ "رواه ابن خزيمة في صحيحه

মাহমুদ বিন লাবীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একদা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বের হয়ে এসে বললেনঃ “হে লোক সকল! তোমরা গোপন শির্ক থেকে সাবধান!" তারা জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! গোপন শির্ক কি? তিনি বললেনঃ “এক ব্যক্তি সালাতে দন্ডায়মান হবে অতঃপর মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তার সালাতকে সুন্দর করবে। আর এটাই হল গোপন শির্ক।”
(ইবনু খুযায়মা [সহীহ] গ্রন্থে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৩৩

হাসান হাদিস
(حسن) عَنْ أَبِي سَعْدِ بْنِ أَبِي فَضَالَةَ الْأَنْصَارِيِّ وَكَانَ مِنَ الصَّحَابَةِ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِذَا جَمَعَ اللَّهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لِيَوْمٍ لَا رَيْبَ فِيهِ نَادَى مُنَادٍ مَنْ كَانَ أَشْرَكَ فِي عَمَلٍ عَمِلَهُ لِلَّهِ أَحَدًا فَلْيَطْلُبْ ثَوَابَهُ مِنْ عِنْدِه فَإِنَّ اللَّهَ أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ. رواه الترمذي وابن ماجه وابن حبان والبيهقي

আবু সাঈদ বিন আবু ফুযালা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবু সাঈদ বিন আবু ফুযালা (রাঃ) তিনি সাহাবী ছিলেন, তাঁর থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা যখন কিয়ামত দিবসে —যে দিবসের ব্যাপারে কোনই সন্দেহ নেই- সকল মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবে, যে ব্যক্তি স্বীয় আমল আল্লাহর সাথে অন্যকে অংশীদার করেছে, সে যেন তার নিকটেই স্বীয় আমলের প্রতিদান তলব করে। কেননা আল্লাহ তা’আলা অংশীদারদের অংশীস্থাপন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত।”
(তিরমিয়ী, ইবনু মাজাহ, ইবনে হিব্বান ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৩৪

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ فَمَنْ عَمِلَ لِي عَمَلًا أَشْرَكَ فِيهِ غَيْرِي فَأَنَا مِنْهُ بَرِيءٌ وَهُوَ لِلَّذِي أَشْرَكَ * رواه ابن ماجه واللفظ له وابن خزيمة في صحيحه والبيهقي

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
সম্মানিত আল্লাহ এরশাদ করেনঃ “আমি অংশীদারদের অংশীস্থাপন থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। সুতরাং যে ব্যক্তি আমার উদ্দেশ্যে কোন আমল করে তাতে আমার সাথে অন্যকে অংশীদার করে, তবে উক্ত আমল থেকে আমি সম্পূর্ণ মুক্ত। আমলটি তার সেই অংশীদারের জন্যই নির্দিষ্ট (অর্থাৎ তা সম্পূর্ণ বাতিল)।
(ইবনু মাজাহ, ইবনু খুযায়মা ও বায়হাকী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, তবে হাদীছটির বাক্য ইবনু মাজাহ থেকে গৃহীত।)

৩২

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ أَخْوَفَ مَا أَخَافُ عَلَيْكُمُ الشِّرْكُ الْأَصْغَرُ قَالُوا وَمَا الشِّرْكُ الْأَصْغَرُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ: الرِّيَاءُ، يَقُولُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِذَا جُزِيَ النَّاسُ بِأَعْمَالِهِمُ اذْهَبُوا إِلَى الَّذِينَ كُنْتُمْ تُرَاءُونَ فِي الدُّنْيَا فَانْظُرُوا هَلْ تَجِدُونَ عِنْدَهُمْ جَزَاءً (رواه أحمد بإسناد جيد وابن أبي الدنيا والبيهقي في الزهد وغيره)

মাহমূদ বিন লাবীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “তোমাদের উপর সবচেয়ে ভয়ানক যে বিষয়ের আমি আশংকা করছি তা হল শির্ক আসগার (ছোট শির্ক)।” তারা বললেনঃ ছোট শির্ক কী হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেনঃ “রিয়া। সম্মানিত আল্লাহ যখন মানুষকে তাদের কর্মফল দান করবেন তখন বলবেনঃ দুনিয়ায় যাদেরকে দেখানোর উদ্দেশ্যে তোমরা আমল করতে তাদের কাছে যাও। দেখ, তাদের কাছে কোন প্রতিদান পাও কি না?”
(উত্তম সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ, আরো বর্ণনা করেন বায়হাকী ও ইবনু আবীদ দুনিয়া)

৩৫

সহিহ হাদিস
(صحيح) وروى البيهقي عَنْ يَعْلَى بْنِ شَدَّادٍ، عَنْ أَبِيهِ قَالَ: " كُنَّا نَعُدُّ الرِّيَاءَ فِي زَمَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الشِّرْكَ الْأَصْغَرَ "

ইমাম বায়হাকী ইয়ালা বিন শাদ্দাদ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর পিতা শাদ্দাদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি (শাদ্দাদ) বলেনঃ আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর যুগে রিয়াকে ছোট শির্ক হিসেবে গণ্য করতাম।
(হাদীছটি হাকেমও বর্ণনা করেন।)

৩৬

হাসান লিগাইরিহি
(حسن لغيره) عَنْ أَبِي عَلِيٍّ رَجُلٍ مِنْ بَنِي كَاهِلٍ قَالَ خَطَبَنَا أَبُو مُوسَى الْأَشْعَرِيُّ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا هَذَا الشِّرْكَ فَإِنَّهُ أَخْفَى مِنْ دَبِيبِ النَّمْلِ فَقَامَ إِلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ حَزْنٍ وَقَيْسُ بْنُ المُضَارِبِ فَقَالَا وَاللَّهِ لَتَخْرُجَنَّ مِمَّا قُلْتَ أَوْ لَنَأْتِيَنَّ عُمَرَ مَأْذُونٌ لَنَا أَوْ غَيْرُ مَأْذُونٍ قَالَ بَلْ أَخْرُجُ مِمَّا قُلْتُ خَطَبَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ يَوْمٍ فَقَالَ أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا هَذَا الشِّرْكَ فَإِنَّهُ أَخْفَى مِنْ دَبِيبِ النَّمْلِ فَقَالَ لَهُ مَنْ شَاءَ اللَّهُ أَنْ يَقُولَ وَكَيْفَ نَتَّقِيهِ وَهُوَ أَخْفَى مِنْ دَبِيبِ النَّمْلِ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ قُولُوا اللَّهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ مِنْ أَنْ نُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا نَعْلَمُهُ وَنَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَا نَعْلَمُ * رواه أحمد والطبراني

আবু আলী থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বনূ কাহেলের জনৈক ব্যক্তি। তিনি বলেনঃ আবু মূসা আশআরী (রাঃ) একদা আমাদের সম্মুখে বক্তৃতা করলেন। তিনি বললেনঃ হে লোক সমাজ! তোমরা এই শির্ককে ভয় কর। কেননা উহা পিপিলিকার চলার শব্দ থেকেও গোপন ও সুক্ষ্ম। একথা শুনে আবদুল্লাহ বিন হাসান ও কায়স বিন মুযারেব তাঁর কাছে উঠে গিয়ে বললেনঃ আপনি যা বলেছেন অবশ্যই তার সূত্র আমাদেরকে বলবেন। অন্যথা আমরা ওমার বিন খাত্তাব (রাঃ)এর কাছে যাব, তিনি আমাদেরকে অনুমতি দিবেন বা না দিবেন। তিনি বললেনঃ বরং আমি যা বলেছি তার সূত্র বলছি। একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের সামনে খুতবা দিলেন। তিনি বললেনঃ “হে মানব মন্ডলি! তোমরা শির্ককে ভয় কর (তা থেকে বেঁচে থাক)। কেননা উহা পিপিলিকার চলার শব্দ থেকেও গোপন বা সুক্ষ্ম।” তখন আল্লাহ যাকে চাইলেন এমন এক ব্যক্তি বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কিভাবে আমরা তা থেকে বেঁচে থাকব, অথচ উহা পিপিলিকার চলার শব্দের চেয়েও গোপন? তিনি বললেনঃ তোমরা এই দুআ বলবেঃ
(আরবি) (আল্লাহুম্মা ইন্না নাউযুবিকা মিন আন নুশরেকা বেকা শাইআন তা’লামুহু ওয়া নাসতাগাফেরুকা লিমা লা না’লামুহু) হে আল্লাহ জেনে শুনে কোন কিছুকে তোমার সাথে শরীক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি এবং না জেনে শির্ক হয়ে গেলে তা থেকে তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমদ ও ত্বাবরানী)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন