HADITH.One

Bangla

Support

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সহিহ তারগিব ওয়াত তাহরিব

. ইলম বা বিদ্যা অধ্যায়

صحيح ترغيب وطهريب

/ পরিচ্ছেদঃ বিদ্যা, উহা অনুসন্ধান, শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়ার প্রতি উদ্ধৃদ্ধ করণ। ওলামা এবং ছাত্রদের ধবীলতের ব্যাপারে যা এসেছে তার বর্ণনা।

৬৮

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) (68) وَعَنْ حذيفَةَ بْنَ الْيَمَانِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : فَضْلُ الْعِلْمِ خَيْرٌمِنْ فَضْلِ الْعِبَادَةِ، وخَيْرُ دِينِكُمُ الْوَرَعُ . رواه الطبراني في الأوسط والبزار بإسناد حسن

হুযায়ফা ইবনুল ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “ইবাদতের মর্যাদার চেয়ে বিদ্যার মর্যাদা অনেক বেশী। তোমাদের দ্বীনের মাঝে সর্বোত্তম বিষয় হল পরহেযগারিতা।”
(ত্বাবরানী আওসাত গ্রন্থে ও উত্তম সনদে বাযযার হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৭২

সহিহ হাদিস
(صحيح) وروي عَنْ أنَسِ بْنِ ماَلِكٍقَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ. رواه ابن ماجه وغيره

আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “জ্ঞানার্জন প্রত্যেক মুসলিম ব্যক্তির উপর ফরয।”
(ইবনু মাজাহ প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৭১

হাসান হাদিস
(حسن) وَعَنْ صَفْوَانُ بن عَسَّالٍ الْمُرَادِيُّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ مُتَّكِئٌ عَلَى بُرْدٍ لَهُ أحْمَرَ، فَقُلْتُ لَهُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي جِئْتُ أَطْلُبُ الْعِلْمَ، فَقَالَ:"مَرْحَبًا بطالبِ الْعِلْمِ، إنَّ طَالِبَ الْعِلْمِ تَحُفُّهُ الْمَلائِكَةُ بِأَجْنِحَتِهَا، ثُمَّ يَرْكَبُ بَعْضُهُم بَعْضًا حَتَّى يَبْلُغُوا السَّمَاءَ الدُّنْيَا مِنْ مُحَبَّتِهِمْ لِمَا يَطْلُبُ. رواه أحمد والطبراني بإسناد جيد واللفظ له وابن حبان في صحيحه والحاكم وقال صحيح الإسناد وروى ابن ماجه نحوه باختصار

ছাফওয়ান বিন আসসাল আল মুরাদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একদা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর নিকট এলাম। তখন তিনি একটি লাল চাদরে হেলান দেয়া অবস্থায় মসজিদে নববীতে বসে ছিলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার নিকট এসেছি, উদ্দেশ্য জ্ঞানার্জন করব। তিনি বললেনঃ “তালেবে ইলম স্বাগতম। নিশ্চয় ফেরেশতাগণ জ্ঞানাম্বেষণকারীকে ঘিরে রাখেন এবং ডানাগুলো দ্বারা তাকে ছায়া দান করেন। অতঃপর সে যা অম্বেষণ করে তার ভালবাসায় তারা একে অপরের উপর সওয়ার হয়ে দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত পৌছে যায়।”
(আহমাদ, ত্বাবরানী উত্তম সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন। হাদীছের উপরোক্ত বাক্যগুলো তুবরানী থেকে গৃহিত। হাদীছটি আরো বর্ণনা করেছেন ইবনু হিব্বান ও হাকেম। হাকেম বলেন, তার সনদ সহীহ। হাদীছটি অনুরূপভাবে ইবনে মাজাহ সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছন।)

৬৭

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ مُعَاوِيَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :"مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ". رواه البخاري ومسلم وابن ماجه

মুআবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেনঃ “আল্লাহ যার কল্যান চান, তাকে দ্বীনের গভীর জ্ঞান দান করেন।” [১]
(বুখারী, মুসলিম ও ইবনু মাজাহ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)
(হাসান লি গাইরিহী) হাদীছটি ত্বাবারানীও [কাবীর গ্রন্থে] বর্ণনা করেছেন। তাঁর বর্ণনার বাক্য এরকমঃ
আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে একথা বলতে শুনেছিঃ
يَا أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّمَا الْعِلْمُ بِالتَّعَلُّمِ، وَالْفِقْهُ بِالتَّفَقُّهِ، وَمَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ، وَإِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ"
“হে লোক সকল! শিক্ষার্জনের মাধ্যমে জ্ঞান লাভ করা যায়, গবেষণার মাধ্যমেই ফিক্বাহ অর্জন করা যায়। আর আল্লাহ যার কল্যাণ চান তাকে দ্বীনের ফিক্বহ (গভীর জ্ঞান) দান করেন। إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ {আল্লাহকে তো তাঁর বান্দাদের মধ্যে আলেমরাই ভয় করে চলে।}(সূরা ফাতেরঃ ২৮)
[১] ফিকাহ শব্দের আসল অর্থ হচ্ছে বুঝা। বলা হয় (আরবি) লোকটি বুঝেছে ও জেনেছে। আর ক্বাফ অক্ষরে পেশ দিয়ে অর্থ হবে ফিকাহাবিদ ও আলেম। পরিভাষায় শরীয়তের বিদ্যাকেই ফিকাহ বলা হয়। বিশেষ করে শরীয়তের শাখা-প্ৰশাখাগত জ্ঞানকে ফিকহ বলা হয়। আবুস সা’আদাত একথাটি বলেছেন।
শায়খ আলবানী বলেন, কিন্তু তাঁর এই কথার পক্ষে কোন দলীল নেই। কেননা দারেমী বর্ণনা করেন ইমরান মিনকারী থেকে। তিনি বলেন, আমি কোন একটি বিষয়ে হাসান বাসরীকে বললাম ফিকাহবিদগণ তো এরূপ বলেননি। তিনি বললেন, তোমার ধ্বংস হোক! তুমি প্রকৃত ফিকাহবিদ দেখেছো? প্রকৃত ফিকাহবিদ হচ্ছে সেই ব্যক্তি যিনি দুনিয়া বিমুখ, আখেরাত মুখী, ধর্মের যাবতীয় বিষয়ে পণ্ডিত এবং সর্বদা পালনকর্তার ইবাদতে লিপ্ত।

৭০

হাসান লিগাইরিহি
(حسن لغيره) وَعَنْ أبِيْ الدَّرْداَءِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَطْلُبُ فِيهِ عِلْمًا سَلَكَ اللَّهُ بِهِ طَرِيقًا مِنْ طُرُقِ الْجَنَّةِ وَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ لَتَضَعُ أَجْنِحَتَهَا لِطَالِبِ الْعِلْمِ رِضًا بِمَا يَصْنَعُ وَإِنَّ الْعَالِمَ لَيَسْتَغْفِرُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الْأَرْضِ وَالْحِيتَانُ فِي الْمَاءِ وَإِنَّ فَضْلَ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِ الْقَمَرِ عَلَى سَائِرِ الْكَوَاكِبِ وَإِنَّ الْعُلَمَاءَ وَرَثَةُ الْأَنْبِيَاءِ وَإِنَّ الْأَنْبِيَاءَ لَمْ يُوَرِّثُوا دِينَارًا وَلَا دِرْهَمًا وَرَّثُوا الْعِلْمَ فَمَنْ أَخَذَهُ أَخَذَ بِحَظٍّ وَافِرٍ رواه أبو داود والترمذي وابن ماجه وابن حبان في صحيحه والبيهقي

আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে একথা বলতে শুনেছিঃ “যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে রাস্তা চলবে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের একটি পথ সহজ করে দিবেন। আর নিঃসন্দেহে তালেবে ইলমের কাজে সন্তুষ্ট হয়ে ফেরেশতাগণ ডানাগুলো তাদের জন্যে বিছিয়ে দেন। আসমান সমূহ ও যমীনের মধ্যে যা কিছু আছে সবই আলেম ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে, এমনকি পানির মাছও তার জন্য ইস্তেগফার করে। সাধারণ আবেদ (ইবাদত গুজর) ব্যক্তির উপর একজন আলেম (জ্ঞানী) ব্যক্তির মর্যাদা ঠিক সেরূপ, যেরূপ সমস্ত নক্ষত্ররাজীর উপর চন্দ্রের মর্যাদা। নিঃসন্দেহে ওলামাগণ নবীদের উত্তরসূরী। নিশ্চয় নবীগণ কোন দীনার বা দিরহামের মীরাছ ছেড়ে যান না, বরং তারা ইলম বা জ্ঞানের উত্তরাধিকার ছেড়ে যান। সুতরাং যে ব্যক্তি উহা গ্রহণ করল সে পরিপূর্ণ অংশ গ্রহণ করল।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, ইবনু হিব্বান, বায়হাকী)

৬৯

সহিহ হাদিস
(صحيح) عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ نَفَّسَ عَنْ مُؤْمِنٍ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ الدُّنْيَا نَفَّسَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرَبِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ، وَمَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَمَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ يَسَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ، وَاللَّهُ فِي عَوْنِ الْعَبْدِ مَا كَانَ الْعَبْدُ فِي عَوْنِ أَخِيهِ، وَمَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ، وَمَا اجْتَمَعَ قَوْمٌ فِي بَيْتٍ مِنْ بُيُوتِ اللَّهِ يَتْلُونَ كِتَابَ اللَّهِ وَيَتَدَارَسُونَهُ بَيْنَهُمْ إِلَّا نَزَلَتْ عَلَيْهِمْ السَّكِينَةُ وَغَشِيَتْهُمْ الرَّحْمَةُ وَحَفَّتْهُمْ الْمَلَائِكَةُ وَذَكَرَهُمْ اللَّهُ فِيمَنْ عِنْدَهُ، وَمَنْ بَطَّأَ بِهِ عَمَلُهُ لَمْ يُسْرِعْ بِهِ نَسَبُهُ رواه مسلم وأبو داود والترمذي والنسائي وابن ماجه وابن حبان في صحيحه والحاكم وقال صحيح على شرطهما

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ
“যে ব্যক্তি কোন মুমিনের দুনিয়ার বিপদ সমূহ [১] থেকে একটি বিপদ দূরভীত করবে [২], আল্লাহ তা’আলা কিয়ামত দিবসের বিপদ সমূহ থেকে তার একটি বিপদ দূরভীত করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন [৩] রাখবে। আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। যে ব্যক্তি ঋণগ্রস্থ বা অভাবী ব্যক্তিকে [৪] সহযোগিতা করবে, আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখেরাতে তাকে সহযোগিতা দান করবেন। বান্দা যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করবে, আল্লাহ ততক্ষণ তাকে সাহায্য করবেন।
যে ব্যক্তি বিদ্যার্জনের জন্য রাস্তা চলবে, বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি পথ সহজ করে দেবেন। যখনই কিছু সংখ্যক মানুষ আল্লাহর কোন ঘরে [৫] একত্রিত হয়ে আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে, তার পঠন-পাঠন ও গবেষণায় [৬] লিপ্ত হয় তখনই ফেরেশতাগণ তাদেরকে ঘিরে নেন। নাযিল হয় তাদের প্রতি প্রশান্তি ও দৃঢ়তা, তাদেরকে আচ্ছাদিত করে (আল্লাহর) রহমত এবং আল্লাহ তাঁর নিকটের ফেরেশতাদের মাঝে তাদের সম্পর্কে আলোচনা করেন। যার (মন্দ) কর্ম তাকে পিছে ফেলেছে [৭l, তার বংশ মর্যাদা তাকে (জান্নাতের পথে) অগ্রবর্তী করতে পারবে না।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, ইবনু হিব্বান ও হাকেম। হাকেম বলেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্তনুযায়ী হাদীছটি সহীহ) [৮]
[১] অর্থাৎ দুনিয়ার কোন বিপদ বা দুশ্চিন্তা ছোট-বড় যাই হোক না কেন। চাই তা ইজ্জত সংক্রান্ত হোক বা ধন-সম্পদের বিষয়ে হোক শরীয়ত সম্মত হলে তা দূর করে দিবে। কিন্তু শরীয়ত বহির্ভূত হারাম বা মাকরূহ হলে উক্ত বিপদ দূর করা জায়েয নয়।
[২] অর্থাৎ তার সম্পদ বা সম্মান বা ইঙ্গিত বা মুখের কথা বা মধ্যস্থতা বা দু’আ বা সুপারিশ ইত্যাদি দ্বারা মুমিনের বিপদ দূর করবে।
[৩] গোপন করার অর্থ হল, বস্ত্ৰ দ্বারা শারীরিক ক্ৰটি ঢেকে দিবে অথবা চারিত্রিক দোষ-ত্রুটি গোপন করবে। কিন্তু লোকটি যদি দুশ্চরিত্র হিসেবে পরিচিত থাকে, তবে তার অন্যায় গোপন করা জায়েয নয়। আর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও উত্তম চরিত্রের লোক হলে তার দোষ-ত্রুটি গোপন করবে। নবী (সাঃ) বলেন, “ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন উত্তম চরিত্রের লোকদের দন্ডবিধি সংক্রান্ত অপরাধ ব্যতীত অন্যান্য ত্রুটি মার্জনা করে দিও।” (আবু দাউদ)। অর্থাৎ আল্লাহর অধিকার সম্পর্কিত অপরাধ যেমন ব্যভিচার, মদ্যপান ইত্যাদি গোপন করবে। কিন্তু মানুষের অধিকার সম্পর্কিত হলে যেমন খুন, চুরি ইত্যাদি। তবে তা গোপন করা হারাম; বরং এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো ওয়াজিব।
[৪] অর্থাৎ ঋণে জর্জরিত ব্যক্তি। তাকে সহযোগিতা করার অর্থ হচ্ছে ঋণ মওকুফ করে দেয়া বা পরিশোধের সময় বৃদ্ধি করে দেয়া। অথবা উদ্দেশ্য হচ্ছে যে কোন অভাবী মানুষকে উপহার দিয়ে বা সাদকা প্ৰদান করে বা কর্য দিয়ে তাকে সহযোগিতা করা।
[৫] এখানে ঘর বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, মসজিদ বা মাদ্রাসা বা মক্তব ইত্যাদি যা দ্বীনী কাজের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
[৬] অর্থাৎ কুরআন শিক্ষা করা ও শিক্ষা দেয়া, একজন অপরজনকে পড়ানো, তাফসীর করা, তার শাব্দিক অর্থ ও ব্যাখ্যা করা, গবেষণা করে মাসআলা-মাসায়েল বের করা ইত্যাদি।
['৭'] অর্থাৎ অসৎ কর্মের কারণে এবং নেক কর্মে উদাসীনতার কারণে যে লোক পিছনে পড়ে যাবে তার বংশ মর্যাদা ও বাপ-দাদার দোহাই কোন উপকারে আসবে না, তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে না। বান্দা যদি হাবশী গোলামও হয় তবু তার আনুগত্যশীল কর্ম তাকে অগ্রগামী করবে সম্ভ্রান্ত কুরাইশ বংশের উদাসীন লোকের উপর। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় আল্লাহর নিকট অতি সম্মানিত সেই লোক যে তোমাদের মধ্যে আল্লাহকে অধিক ভয় করে।”
[৮] শায়খ আলবানী বলেন, হাদীছটির উল্লেখিত বাক্যগুলা ইবনে মাজাহ থেকে নেয়া। হুবহু এই বাক্যগুলো অন্যান্য গ্রন্থগুলোতে নেই।

৭৩

হাসান লিগাইরিহি
(حسن لغيره) وَعَنْ أَنَسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " سَبْعٌ يَجْرِي لِلْعَبْدِ أَجْرُهُنَّ وَهُوَ فِي قَبْرِهِ بَعْدَ مَوْتِهِ: مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا، أَوْ كَرَى نَهَرًا، أَوْ حَفَرَ بِئْرًا، أَوْ غَرَسَ نَخْلًا، أَوْ بَنَى مَسْجِدًا، أَوْ وَرَّثَ مُصْحَفًا، أَوْ تَرَكَ وَلَدًا يَسْتَغْفِرُ لَهُ بَعْدَ مَوْتِهِ ". رواه البزار وأبو نعيم في الحلية والبيهقي

আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “সাতটি আমলের ছোয়াব বান্দার মৃত্যুর পর কবরে থাকা অবস্থায় তার জন্য জারি থাকে। যে ব্যক্তি কাউকে বিদ্যা শিক্ষা দিবে, অথবা নদী খনন করবে, অথবা কুপ খনন করবে, অথবা খেজুর গাছ লাগিয়ে যাবে, অথবা মসজিদ তৈরী করবে, অথবা পবিত্র কুরআনের উত্তরাধিকার রেখে যাবে অথবা এমন সন্তান রেখে যাবে যে মৃত্যুর পর তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে।” (এসকল নেক কাজের ছোয়াব মৃত্যুর পরও লাভ করতে থাকবে।)
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বাযযার ও আবু নাঈম [হিলইয়া গ্রন্থে], আরো বর্ণনা করেছেন বায়হাকী]

৭৪

হাসান হাদিস
(حسن ) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ أَلَا إِنَّ الدُّنْيَا مَلْعُونَةٌ مَلْعُونٌ مَا فِيهَا إِلَّا ذِكْرُ اللَّهِ وَمَا وَالَاهُ وَعَالِمًا وَمُتَعَلِّمًا. رواه الترمذي وابن ماجه والبيهقي وقال الترمذي حديث حسن

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “দুনিয়াটা অভিশপ্ত এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছুই অভিশপ্ত। তবে আল্লাহর যিকির, যিকিরের সাথে সংশ্লিষ্ট বিষয়, আলেম (জ্ঞানী) ও জ্ঞানার্জনকারী (অভিশপ্ত নয়)। [১]”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিয়ী, ইবনু মাজহ ও বায়হাকী। তিরমিয়ী বলেনঃ হাদীছটি হাসান)
[১] এখানে দুনিয়া বলতে উদ্দেশ্য হচ্ছে, আল্লাহ তা’আলা থেকে যা দূরে রাখে তা সবই। অভিশপ্ত হওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর রহমতের নযর থেকে বঞ্চিত হওয়া। আল্লাহর যিকিরের সাথে সংশ্লিষ্ট দুনিয়াবী বস্তু আল্লাহ যা পছন্দ করেন। অর্থাৎ আল্লাহর আদেশ-নিষেধের সাথে সামঞ্জস্যশীল বিষয়।

৭৫

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا حَسَدَ إِلَّا فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا فَسَلَّطَهُ عَلَى هَلَكَتِهِ فِي الْحَقِّ وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ الحِكْمَةَ فَهُوَ يَقْضِي بِهَا وَيُعَلِّمُهَا. رواه البخاري ومسلم

ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “দুটি কাজ ছাড়া অন্য কোন ক্ষেত্রে হিংসা[[১] করা বৈধ নয়। (১) এক ব্যক্তি, আল্লাহ তাকে সম্পদ দিয়েছেন এবং তাকে শক্তি দিয়েছেন সৎপথে উহা ব্যয় করতে। (২) আর এক ব্যক্তি আল্লাহ তাকে হিকমত তথা প্রজ্ঞা দিয়েছেন, সে তা দ্বারা বিচার ফায়সালা করে বা সিদ্ধান্ত নেয় এবং অন্যকে উহা শিক্ষা দান করে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম)
[১] আরবীতে الحسد শব্দটি দুটি অর্থে ব্যবহৃত হয়ঃ (১) হিংসা- অর্থাৎ কারো ভাল দেখে তার ধ্বংস কামনা করা। এটা হারাম। (২) হিংসা অর্থ গিবতা অর্থাৎ অন্যের ভাল দেখে তা নিজের জন্য আকাংখা করা, এটা বৈধ। উল্লেখিত হাদীছে দ্বিতীয় অর্থটি উদ্দেশ্য করা হয়েছে।

৭৭

নির্ণীত নয়
(حسن) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ مِمَّا يَلْحَقُ الْمُؤْمِنَ مِنْ عَمَلِهِ وَحَسَنَاتِهِ بَعْدَ مَوْتِهِ عِلْمًا عَلَّمَهُ وَنَشَرَهُ وَوَلَدًا صَالِحًا تَرَكَهُ أوْمُصْحَفًا وَرَّثَهُ أَوْ مَسْجِدًا بَنَاهُ أَوْ بَيْتًا لِابْنِ السَّبِيلِ بَنَاهُ أَوْ نَهْرًا أَجْرَاهُ أَوْ صَدَقَةً أَخْرَجَهَا مِنْ مَالِهِ فِي صِحَّتِهِ وَحَيَاتِهِ تَلْحَقُهُ مِنْ بَعْدِ مَوْتِهِ. رواه ابن ماجه بإسناد حسن والبيهقي ورواه ابن خزيمة

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “মুমিন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার আমল ও নেকীর কাজ থেকে যা তার নিকট পৌঁছবে, তা হল ইলম যা সে শিক্ষা দান করেছে ও প্রচার করেছে। রেখে যাওয়া সৎ সন্তান (তার দু’আ)। অথবা একটি কুরআন যা সে উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে গিয়েছে। অথবা একটি মসজিদ তৈরী করেছে বা মুসাফিরদের জন্য একটি ঘর তৈরী করে গিয়েছে। অথবা একটি নদী প্রবাহিত করেছে বা তার জীবদ্দশায় সুস্থ থাকাকালে নিজ সম্পদ থেকে কিছু সাদকা বের করেছে। এগুলোর ছোয়াব মৃত্যুর পর তার কাছে পৌঁছতে থাকবে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনু মাজাহ হাসান সনদে, বায়হাকী ও ইবনু খুযায়মা অনুরূপ ভাবে।) তবে তার বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ অথবা একটি নদী খনন করে, তিনি কুরআনের কথা উল্লেখ করেন নি।

৭৮

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ. رواه مسلم وغيره

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “আদম সন্তান যখন মৃত্যু বরণ করে, তখন তিনটি আমল ব্যতীত সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়। (১) সাদকায়ে জারিয়া বা প্রবাহমান সাদকা (২) উপকারী বিদ্যা (৩) সৎ সন্তান, যে তার জন্য দু’আ করে।
(মুসলিম প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৭৯

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أبي قتادة رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرُ مَا يُخَلِّفُ الرَّجُلُ مِنْ بَعْدِهِ ثَلَاثٌ وَلَدٌ صَالِحٌ يَدْعُو لَهُ وَصَدَقَةٌ تَجْرِي يَبْلُغُهُ أَجْرُهَا وَعِلْمٌ يُعْمَلُ بِهِ مِنْ بَعْدِهِ. رواه ابن ماجه بإسناد صحيح

আবু কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) করেছেনঃ “কোন ব্যক্তি তার (মৃত্যুর) পর যা ছেড়ে যায় তন্মধ্যে সর্বোত্তম হল তিনটি বিষয়ঃ (১) নেক সন্তান যে তার জন্য দু’আ করবে। (২) সাদকা, মানুষ যা দ্বারা উপকৃত হতে থাকে, এর প্রতিদান তার নিকট পৌঁছতে থাকবে। (৩) ইলম, তার মৃত্যুর পর সে অনুযায়ী আমল করা হবে।”
(ইবনু মাজাহ সহীহ সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৮০

হাসান লিগাইরিহি
(حسن لغيره) وَعَنْ سَهْلِ بْنِ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُم أنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ عَلَّمَ عِلْمًا فَلَهُ أَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهِ لَا يَنْقُصُ مِنْ أَجْرِ الْعَامِلِ شيء. رواه ابن ماجه

সাহল বিন মুআয বিন আনাস স্বীয় পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি ইসলামের জ্ঞান শিক্ষা দিবে, সে তদানুযায়ী আমলকারীর অনুরূপ প্রতিদান লাভ করবে। এতে আমলকারীর প্রতিদান কোন অংশে কম হবে না।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনু মাজাহ)

৭৬

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أَبِي مُوسَى رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ مَثَلَ مَا بَعَثَنِيَ اللَّهُ بِهِ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ الْهُدَى وَالْعِلْمِ كَمَثَلِ غَيْثٍ أَصَابَ أَرْضًا فَكَانَتْ مِنْهَا طَائِفَةٌ طَيِّبَةٌ قَبِلَتْ الْمَاءَ فَأَنْبَتَتْ الْكَلَأَ وَالْعُشْبَ الْكَثِيرَ فَكَانَ مِنْهَا أَجَادِبُ أَمْسَكَتْ الْمَاءَ فَنَفَعَ اللَّهُ بِهَا النَّاسَ فَشَرِبُوا مِنْهَا وَسَقَوْا وَزَرَعَوْا وَأَصَابَ طَائِفَةً أُخْرَى إِنَّمَا هِيَ قِيعَانٌ لَا تُمْسِكُ مَاءً وَلَا تُنْبِتُ كَلَأً فَذَلِكَ مَثَلُ مَنْ فَقُهَ فِي دِينِ اللَّهِ وَنَفَعَهُ بِمَا بَعَثَنِيَ اللَّهُ بِهِ فَعَلِمَ وَعَلَّمَ وَمَثَلُ مَنْ لَمْ يَرْفَعْ بِذَلِكَ رَأْسًا وَلَمْ يَقْبَلْ هُدَى اللَّهِ الَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ. رواه البخاري ومسلم

আবু মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “যে ইলম ও হেদায়াত দিয়ে আল্লাহ তা’আলা আমাকে প্রেরণ করেছে তার উদাহরণ হল যমীনে বৃষ্টিপাতের মত। কোন কোন জায়গার মাটি ভাল, পানি ধারণ করে এবং তাতে প্রচুর উদ্ভিদ ও ঘাষ-পাতা উৎপন্ন হয়। আবার কোন জায়গার মাটি শক্ত, সেখানে উদ্ভিদ হয় না। তবে সে পানি ধরে রাখে। অতঃপর আল্লাহ তা দ্বারা মানুষের উপকার করেন। তারা সে পানি পান করে, সেচের কাজে ব্যবহার করে ও চাষাবাদ করে। আর এক ধরণের মাটি রয়েছে যা শক্ত ও খারাপ, পানিও ধরে রাখে না। উদ্ভিদও উৎপন্ন করে না।
প্রথম দুপ্রকার মাটির উদাহরণ ঐ ব্যক্তির সাথে যে আল্লাহ তা’আলার দ্বীনের গভীর জ্ঞান অর্জন করেছে, আর আল্লাহ যা দিয়ে আমাকে প্রেরণ করেছেন তা দ্বারা তাকে উপকৃত করেছেন। অতঃপর সে নিজে উহা শিখেছে ও অন্যকে শিক্ষা দিয়েছে।
আর তৃতীয় প্রকার মাটির উদাহরণ ঐ ব্যক্তির সাথে, যে আল্লাহর দ্বীনের ব্যাপারে মাথা উঠায়নি এবং আল্লাহর হেদায়াত কবুল করেনি, যা দিয়ে আমি প্রেরীত হয়েছি।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম)

৮২

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) ورواه البزار من حديث عائشة مختصرا قال: مُعَلِّمُ الْخَيْرِ يَسْتَغْفِرُ لَهُ كُلُّ شَيْءٍ حَتَّى الْحِيْتاَنُ فِيْ الْبَحْرِ.

উল্লেখিত হাদীছটি বাযযার আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ “কল্যাণের শিক্ষাদানকারীর জন্য প্রত্যেক বস্তু ক্ষমা প্রার্থনা করে এমনকি সমুদ্রের মৎস্যকুলও।”

৮১

হাসান লিগাইরিহি
(حسن لغيره) وَعَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ الْبَاهِلِيِّ قَالَ ذُكِرَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلَانِ أَحَدُهُمَا عَابِدٌ وَالْآخَرُ عَالِمٌ فَقَالَ عليه أفضل الصلاة والسلام فَضْلُ الْعَالِمِ عَلَى الْعَابِدِ كَفَضْلِي عَلَى أَدْنَاكُمْ ثُمَّ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللَّهَ وَمَلَائِكَتَهُ وَأَهْلَ السَّمَوَاتِ وَالْأَرَضِينَ حَتَّى النَّمْلَةَ فِي جُحْرِهَا وَحَتَّى الْحُوتَ لَيُصَلُّونَ عَلَى مُعَلِّمِ النَّاسِ الْخَيْرَ. رواه الترمذي وقال حديث حسن صحيح

আবু উমামা বাহেলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নিকট দু’ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা হল, একজন আবেদ (সাধারণ ইবাদত গুজর) অন্যজন আলেম (ইসলামী জ্ঞানে পারদর্শী) তিনি বললেনঃ (তাঁর উপর সর্বোত্তম রহমত ও সালাম নাযিল হোক) “আবেদের উপর আলেমের মর্যাদা ঠিক তেমন, যেমন তোমাদের সাধারণ ব্যক্তির উপর আমার মর্যাদা।” অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “নিশ্চয় আল্লাহ[১], ফেরেশতাকুল, আসমান সমূহ ও যমীনের অধিবাসীগণ এমনকি পিপিলিকা তার গর্ত থেকে- এমনকি পানির মাছও মানুষকে কল্যাণের শিক্ষাদানকারীর জন্য দু’আ করতে থাকে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী, তিনি বলেন, হাদীছটি হাসান সহীহ)
(১) আল্লাহ দুআ করেন অর্থ রহমত নাযিল করেন। ফেরেশতাদের দুআর অর্থ হল ইক্তেগফার বা ক্ষমা প্ৰাথনা করা।

৮৩

হাসান মাওকুফ
(حسن موقوف) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ مَرَّ بِسُوقِ الْمَدِينَةِ، فَوَقَفَ عَلَيْهَا، فَقَالَ:"يَا أَهْلَ السُّوقِ، مَا أَعْجَزَكُمْ !"قَالُوا: وَمَا ذَاكَ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ؟ قَالَ:"ذَاكَ مِيرَاثُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقْسَمُ، وَأَنْتُمْ هَاهُنَا ألاَ تَذْهَبُونَ فَتَأَخُذُونَ نَصِيبَكُمْ مِنْهُ !"قَالُوا: وَأَيْنَ هُوَ؟ قَالَ:"فِي الْمَسْجِدِ" فَخَرَجُوا سِرَاعًا إِلَى الْمَسْجِدِ، وَوَقَفَ أَبُوهُرَيْرَةَ لَهُمْ حَتَّى رَجَعُوا، فَقَالَ لَهُمْ:"مَا لَكُمْ؟"قَالُوا: يَا أَبَا هُرَيْرَةَ فَقَدْ أَتَيْنَا الْمَسْجِدَ، فَدَخَلْنَا، فَلَمْ نَرَ فِيهِ شَيْئًا يُقْسَمُ، فَقَالَ لَهُمْ أَبُو هُرَيْرَةَ:"أَمَا رَأَيْتُمْ فِي الْمَسْجِدِ أَحَدًا؟"قَالُوا: بَلَى، رَأَيْنَا قَوْمًا يُصَلُّونَ، وَقَوْمًا يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ، وَقَوْمًا يَتَذَاكَرُونَ الْحَلالَ وَالْحَرَامَ، فَقَالَ لَهُمْ أَبُو هُرَيْرَةَ:"وَيْحَكُمْ، فَذَاكَ مِيرَاثُ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ". رواه الطبراني في الأوسط بإسناد حسن

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি একদা মদীনার বাজার অতিক্রম করছিলেন। তখন বাজারে দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে বাজারের লোক সকল! কিসে তোমাদেরকে অপারগ করল? তারা বলল, উহা কি হে আবু হুরায়রা? তিনি বললেনঃ ওখানে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মীরাছ বন্টন হচ্ছে আর তোমরা এখানে? তোমরা সেখানে গিয়ে কিছু অংশ নাও না কেন? তারা বললঃ উহা কোথায়? তিনি বললেনঃ মসজিদে। একথা শুনে তারা সেখানে ছুটে গেল। আর আবু হুরায়রা দাঁড়িয়ে থাকলেন, শেষ পর্যন্ত তারা ফিরে এল। তারপর তিনি তাদেরকে বললেনঃ তোমরা কি করলে? তারা বললঃ হে আবু হুরায়রা! আমরা গিয়ে মসজিদে প্রবেশ করলাম। কিন্তু কোন কিছু বন্টন হচ্ছে তা তো দেখলাম না? আবু হুরায়রা তাদেরকে বললেনঃ তোমরা মসজিদে কাউকে দেখতে পাওনি? তারা বললঃ হ্যাঁ, আমরা দেখেছি কিছু লোক নামায আদায় করছে, কিছু লোক কুরআন পাঠ করছে, কিছু লোক হালাল-হারামের বিষয়ে পরস্পরে আলোচনা করছে। তখন আবু হুরায়রা তাদেরকে বললেনঃ আফসোস তোমাদের জন্যে ওটাই তো মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর মীরাছ (উত্তরাধিকার)।
(ত্বাবরানী উত্তম সনদে [আওসাত্ব গ্রন্থে] হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।)
/ পরিচ্ছেদঃ জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে ভ্ৰমণ করার প্রতি উদ্ধৃদ্ধ করণঃ

৮৪

সহিহ হাদিস
(صحيح) عن أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: وَمَنْ سَلَكَ طَرِيقًا يَلْتَمِسُ فِيهِ عِلْمًا سَهَّلَ اللَّهُ لَهُ بِهِ طَرِيقًا إِلَى الْجَنَّةِ. رواه مسلم

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি বিদ্যান্বেষণের জন্য রাস্তা চলবে, বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের একটি পথ সহজ করে দিবেন।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন মুসলিম প্রমূখ)

৮৮

হাসান লিগাইরিহি
(حسن لغيره) وَعَنْ أنَسِ بْنِ ماَلِكٍقَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ خَرَجَ فِي طَلَبِ الْعِلْمِ كَانَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ حَتَّى يَرْجِعَ. رواه الترمذي وقال حديث حسن

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জন করার জন্যে (ঘর থেকে) বের হল, সে ফেরত আসার পর্যন্ত আল্লাহর পথেই থাকল।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী, তিনি বলেনঃ হাদীছটি হাসান)

৮৬

হাসান সহিহ
(حسن صحيح) وَعَنْ أَبِيْ أُماَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ:"مَنْ غَدَا إِلَى الْمَسْجِدِ لا يُرِيدُ إِلا أَنْ يَتَعَلَّمَ خَيْرًا أَوْ يَعْلَمَهُ، كَانَ لَهُ كَأَجْرِ حَاجٍّ تَامًّا حِجَّتُهُ".رواه الطبراني في الكبير

আবু উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি শুধুমাত্র কল্যাণ শিক্ষা লাভ বা শিক্ষা প্রদানের উদ্দেশ্যে সমজিদে গমণ করবে, তাকে পরিপূর্ণরূপে হজ্জ পালনকারীর ন্যায় প্রতিদান দেয়া হবে।”
(ত্বাবরানী কাবীর গ্রন্থে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৮৫

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ زر بن حبيش قاَلَ أَتَيْتُ صَفْوَانَ بْنَ عَسَّالٍ الْمُرَادِيَّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ فَقَالَ مَا جَاءَ بِكَ قُلْتُ أُنْبِطُ الْعِلْمَ قَالَ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَا مِنْ خَارِجٍ خَرَجَ مِنْ بَيْتِهِ فِي طَلَبِ الْعِلْمِ إِلَّا وَضَعَتْ لَهُ الْمَلَائِكَةُ أَجْنِحَتَهَا رِضًا بِمَا يَصْنَعُ.

যুরর বিন হুবায়শ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ছাফওয়ান বিন আসসাল আল মুরাদী (রাঃ)এর নিকট আগমণ করলাম। তিনি বললেনঃ কেন এসেছ? আমি বললামঃ জ্ঞানার্জন করব এই উদ্দেশ্যে। তিনি বললেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ
“যে কেউ ইলম তলব করার উদ্দেশ্যে গৃহ থেকে বের হবে, তার কৃতকর্মের প্রতি (জ্ঞানার্জনের কাজে) সম্ভষ্ট
হয়ে ফেরেশতাকুল তার জন্য তাদের ডানাগুলো বিছিয়ে দিবেন।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, ইবনু হিব্বান ও হাকেম। হাকেম বলেন, হাদীছটির সনদ সহীহ হাদীছের বাক্য ইবনে মাজাহর)

৮৭

সহিহ হাদিস
(صحيح) وروي عَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ مَنْ جَاءَ مَسْجِدِي هَذَا لَمْ يَأْتِهِ إِلَّا لِخَيْرٍ يَتَعَلَّمُهُ أَوْ يُعَلِّمُهُ فَهُوَ بِمَنْزِلَةِ الْمُجَاهِدِيْنَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَمَنْ جَاءَ لِغَيْرِ ذَلِكَ فَهُوَ بِمَنْزِلَةِ الرَّجُلِ يَنْظُرُ إِلَى مَتَاعِ غَيْرِهِ. رواه ابن ماجه والبيهقي

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি আমার এই মসজিদে আসবে শুধুমাত্র কল্যাণ শিক্ষা করা বা শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে, সে আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের মর্যাদার অধিকারী হবে। আর যে ব্যক্তি অন্য কোন উদ্দেশ্যে আগমণ করবে, সে এমন ব্যক্তির ন্যায়, যে অন্যের সম্পদের দিকে চেয়ে থাকে।
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইবনু মাজাহ, বায়হাকী ও হাকেম)
/ পরিচ্ছেদঃ হাদীছ শোনা, পৌঁছিয়ে দেয়া ও তা লিখার প্রতি উদ্ধৃদ্ধ করণ এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর প্রতি মিথ্যারোপ করার ব্যাপারে ভীতি প্ৰদৰ্শনঃ

৯১

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح) وروي عن أنَسِ بْنِ ماَلِكٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال: خَطَبَنَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَسْجِدِ الْخَيْفِ مِنْ مِنىً فَقاَلَ: نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مَقَالَتِي فَحَفِظَها وَوَعَاهَا وَبَلَّغَهَا مَنْ لَمْ يَسْمَعْهَا ثم ذهب بها إِلَى مَنْ لَمْ يَسْمَعْهَا فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لا فِقْهَ لَهُ وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ، إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ. رواه الطبراني في الأوسط

আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিনার মসজিদে খায়ফে আমাদের সামনে বক্তব্য রাখলেন। তিনি বললেনঃ
“আল্লাহ সেই ব্যক্তিকে উজ্জলতা দান করুন, যে আমার কথা শুনেছে- মুখস্ত করেছে ও ধারণ করে রেখেছে। অতঃপর যারা তা শুনেনি তাদের কাছে পৌঁছিয়েছে। কেননা কতক জ্ঞান বহনকারী নিজে জ্ঞানী নয়। আর কতক জ্ঞান বহনকারী ব্যক্তি তার চেয়ে বড় জ্ঞানীর নিকট তা পৌঁছিয়ে থাকে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ত্বাবরানী [আওসাত] গ্রন্থে)

৯৪

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْه قال قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ. رواه البخاري ومسلم وغيرهما

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ “যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে তার স্থায়ী ঠিকানা জাহান্নামে করে নিবে।“
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম প্রমূখ। এ হাদীছটি একাধিক সাহাবী থেকে মুতাওয়াতের পর্যায়ে বর্ণিত হয়েছে। যা সহীহ, সুনান ও মুসনাদ গ্রন্থসমূহে বিদ্যমান রয়েছে)

৯০

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا حَدِيثًا فَبَلَّغَهُ غَيْرَهُ فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ وَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لَيْسَ بِفَقِيهٍ. ثَلاثٌ لاَ يَغِلُّ عَلَيْهِنَّ قَلْبُ مُسْلِمٍ: إِخْلاصُ الْعَمَلِ لِلَّهِ، وَمُنَاصَحَةُ وُلاةِ الأَمْرِ وَلُزُومُ الْجَمَاعَةِ ، فَإِنَّ دَعْوَتَهُمْ تُحِيطُ مِنْ وَرَائِهِمْ. وَمَنْ كَانَتْ الدُّنْيَا نِيَّتُهُ فَرَّقَ اللَّهُ عَلَيْهِ أَمْرَهُ، وَجَعَلَ فَقْرَهُ بَيْنَ عَيْنَيْهِ ، وَلَمْ يَأْتِهِ مِنَ الدُّنْيَا إِلا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَهُ، وَمَنْ نِيَّتُهُ كَانَتْ الآخِرَةَ جَمَعَ اللَّهُ لَهُ شَمْلَهُ، وَجَعَلَ غِنَاهُ فِي قَلْبِهِ، وَأَتَتْهُ الدُّنْيَا رَاغِمَةً. رواه ابن حبان في صحيحه والبيهقي بتقديم وتأخير وروى صدره إلى قوله ليس بفقيه أبو داود والترمذي وحسنه والنسائي وابن ماجه بزيادة عليهما

যায়েদ বিন ছাবেত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা উজ্জলতা দান করুন সেই ব্যক্তিকে যে আমাদের একটি হাদীছ শ্রবণ করে অতঃপর তা অপরের কাছে পৌঁছে দেয়। কেননা জ্ঞান বহনকারী কতক ব্যক্তি তার চেয়ে অধিক জ্ঞানীর কাছে পৌছে দেয়। আর জ্ঞান বহনকারী কতক ব্যক্তি, নিজেই জ্ঞানী নয়।
তিনটি বিষয়ে কোন মুসলিমের অন্তর হিংসা করে নাঃ (১) কর্মকে আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ করা (২) নেতৃবৃন্দকে নসীহত করা এবং (৩) (মুসলমানদের) জামাআতকে আকড়ে থাকা। কেননা এদের দু’আ অন্যান্যদেরকেও পরিবেষ্টিত করে।
যে ব্যক্তির দুনিয়াটাই হল একক উদ্দেশ্য, আল্লাহ তার প্রতিটি বিষয়কে বিশৃংখল করে দেন। দুচোখের সামনে শুধু অভাব-অনটন লাগিয়ে রাখেন। আর নির্ধারিত বস্তু ছাড়া দুনিয়ার কোন কিছুই তার কাছে আসে না। যে ব্যক্তির উদ্দেশ্য শুধুমাত্র আখেরাত, আল্লাহ তার প্রতিটি বিষয় সুশৃংখল করে দেন। তার অন্তরকে পরিতৃপ্ত করে দেন। আর দুনিয়ার সম্পদ তার সামনে লাঞ্ছিত অবস্থায় হাজির হয়।”
(হাদীছটি ইবনু হিব্বান (সহীহ) গ্রন্থে এবং বায়হাকী বাক্যগুলো কিছু আগে পিছে করে বর্ণনা করেন।)
(আর আবু দাউদ, তিরমিয়ী, নাসাঈ ও ইবনু মাজাহ হাদীছটির শুরু থেকে নিজেই জ্ঞানী নয়..। পর্যন্ত বর্ণনা করেন।)

৮৯

হাসান সহিহ
(حسن صحيح) عنْ ابنِ مَسْعُوْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قال سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ نَضَّرَ اللَّهُ امْرَأً سَمِعَ مِنَّا شَيْئًا فَبَلَّغَهُ كَمَا سَمِعَ فَرُبَّ مُبَلِّغٍ أَوْعَى مِنْ سَامِعٍ. رواه أبو داود والترمذي وابن حبان

ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে একথা বলতে শুনেছিঃ “আল্লাহ তা’আলা মুখমন্ডল উজ্জল করুন সেই ব্যক্তির, যে আমাদের থেকে কিছু শুনবে, অতঃপর যেভাবে শুনেছে সেভাবেই অপরের কাছে পৌঁছে দিবে। কেননা যার কাছে পৌছান হয় সে অনেক সময় শ্রোতার চেয়ে অধিক সংরক্ষণকারী হয়।”
(আবু দাউদ, তিরমিয়ী ও ইবনু হিব্বান হাদীছটি বর্ণনা করেছেন) [১] তবে ইবনু হিব্বানের বর্ণনায় বলা হয়ঃ আল্লাহ রহম করুন সেই ব্যক্তির উপর......। (তিরমিযী বলেন, হাদীছটি হাসান সহীহ)
[১] শায়খ আলবানী বলেন, এ হাদীছটি আবু দাউদ বর্ণনা করেছেন একথা ভুল। কেননা তিনি ইবনে মাসউদ থেকে এ হাদীছ বর্ণনা করেননি। তিনি যায়েদ বিন ছাবেত বর্ণিত পরের হাদীছটি বর্ণনা করেছেন।

৯৩

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ أبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِذَا مَاتَ الْإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلَّا مِنْ ثَلَاثٍ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ رواه مسلم وغيره

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরশাদ করেছেনঃ “আদম সন্তান যখন মৃত্যু বরণ করে, তখন তিনটি আমল ব্যতীত তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়ঃ (১)
সাদকায়ে জারিয়া (২) উপকারী বিদ্যা (৩) সৎ সন্তানের দু’আ৷”
(মুসলিম প্রমুখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
{ নোটঃ হাফেয ইবনু হাজার বলেনঃ উল্লেখিত হাদীছ ও তদনুরূপ হাদীছ সমূহ দ্বারা বুঝা যায়, উপকারী বিদ্যার নকল কপিকারীও তার ছোয়াব পাবে। এমনি ভাবে যে উহা পাঠ করবে বা নকল কপি করবে বা তদানুযায়ী আমল করবে তার প্রতিদানও লাভ করবে। আর অপকারী বিদ্যা, যাতে পাপ রয়েছে- তার নকলকারী পাপের ভাগী হবে। এমনিভাবে যে উহা পাঠ করবে বা নকল কপি করবে বা সে অনুযায়ী আমল করবে তার পাপও তাকে বহন করতে হবে যতদিন তার সেই লিখা অবশিষ্ট থাকবে। যেমনটি পূর্বোল্লিখিত হাদীছ সমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে, যে ব্যক্তি ইসলামে উত্তম রীতি চালু করবে...... যে ব্যক্তি ইসলামে খারাপ কাজ চালু করবে….. }

৯২

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) وَعَنْ جبير بن مطعم قال: سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ بِالْخَيْفِ خَيْفِ مِنًى : نَضَّرَ اللَّهُ عَبْدًا سَمِعَ مَقَالَتِي فَحَفِظَها وَوَعَاهَا وَبَلَّغَهَا مَنْ لَمْ يَسْمَعْهَا فَرُبَّ حَامِلِ فِقْهٍ لا فِقْهَ لَهُ وَرُبُّ حَامِلِ فِقْهٍ ، إِلَى مَنْ هُوَ أَفْقَهُ مِنْهُ ، ثَلاثٌ لا يَغِلُّ عَلَيْهِنَّ قَلْبُ مُؤْمِنٍ: إِخْلاصُ الْعَمَلِ لِلَّهِ وَالنَّصِيحَةُ لأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ ، وَلُزُومُ جَمَاعَتِهِمْ ، فَإِنَّ دَعْوَتَهُمْ ، تُحِيطُ مَنْ وَرَاءَهُمْ. رواه أحمد وابن ماجه والطبراني في الكبير مختصرا ومطولا

জুবাইর বিন মুতএম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “আল্লাহ তা’আলা সেই বান্দাকে সৌন্দর্যতা ও উজ্জলতা দান করুন, যে আমার বক্তব্য শুনেছে, উহা মুখস্ত করেছে ও ভালভাবে সংরক্ষণ করেছে এবং যে শুনেনি তার কাছে পৌঁছে দিয়েছে। কেননা কতক জ্ঞান বহনকারী ব্যক্তি কোন জ্ঞান রাখে না। আর জ্ঞান বহনকারী কতক ব্যক্তি তার চাইতে বেশী জ্ঞানীর নিকট তা পৌঁছিয়ে দেয়। তিনটি ক্ষেত্রে মুমিন ব্যক্তির দিলে কোন হিংসা-দ্বেষ থাকে না। (১) আমলকে এখলাসের সাথে আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করা। (২) মুসলমানদের নেতৃবৃন্দকে নসীহত করা এবং (৩) তাদের জামাআতকে আঁকড়ে থাকা। কেননা তাদের দু’আ পরবর্তদেরকেও শামিল করে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন আহমাদ, ইবনু মাজহ ও ত্বাবরানী [কাবীর গ্রন্থে] সংক্ষিপ্ত ও দীর্ঘকারে)

৯৫

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ سَمُرَةَ بنِ جُنْدَبٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قاَلَ: مَنْ حَدَّثَ عَنِّي بِحَدِيثٍ يُرَى أَنَّهُ كَذِبٌ فَهُوَ أَحَدُ الْكَاذِبِينَ. رواه مسلم وغيره

সামুরা বিন জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি আমার নামে কোন হাদীছ বর্ণনা করে মনে করে যে হাদীছটি মিথ্যা, তবে (বর্ণনা করার কারণে) সে দু'জন মিথ্যাবাদীর একজন।“
(মুসলিম প্রমূখ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৯৬

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ المغيرة قاَلَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ إِنَّ كَذِبًا عَلَيَّ لَيْسَ كَكَذِبٍ عَلَى أَحَدٍ فَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَوَّأْ مَقْعَدَهُ مِنْ النَّارِ. رواه مسلم وغيره

মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “নিঃসন্দেহে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করা অন্য কারো প্রতি মিথ্যারোপ করার মত নয়। কেননা যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার উপর মিথ্যারোপ করবে, সে তার বাসস্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নিবে।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী ও মুসলিম প্রমূখ)
/ পরিচ্ছেদঃ ওলামাগণকে সম্মান, মর্যাদা ও শ্রদ্ধা দেয়ার প্রতি উদ্ধৃদ্ধ করণ ও তাদেরকে অসম্মান করা ও তাদেরকে পরওয়া না করার প্রতি ভীতি প্ৰদৰ্শনঃ

১০১

হাসান হাদিস
(حسن ) وَعَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ، أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَيْسَ مِنْ أُمَّتِي مَنْ لَمْ يُجِلَّ كَبِيرَنَا، وَيَرْحَمْ صَغِيرَنَا، وَيَعْرِفْ لِعَالِمِنَا. رواه أحمد بإسناد حسن والطبراني والحاكم

উবাদাহ বিন ছামেত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি আমাদের বড়দেরকে শ্রদ্ধা করে না, ছোটদের প্রতি রহম করে না এবং আলেমদের মর্যাদা বুঝে না সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ইমাম আহমাদ, ত্বাবরানী ও হাকেম)

১০২

সহিহ লিগাইরিহি
(صحيح لغيره) وَعَنْ واثلة بن الأسقع قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيُجِلُّ كَبِيرِنَا. رواه الطبراني

ওয়াছেলা বিন আসকা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি ছোটদের প্রতি দয়া করে না এবং বড়দেরকে সম্মান করে না সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।”
(ত্বাবরানী হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)

৯৭

সহিহ হাদিস
(صحيح) عن جابر رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ يعني فِيْ القَبْرِ ثُمَّ يَقُولُ أَيُّهُماَ أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ. رواه البخاري

জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ওহুদ যুদ্ধে শহীদদেরকে কবর দেয়ার সময় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’ব্যক্তিকে একসাথে রাখছিলেন এবং বলছিলেনঃ “দু’জনের মধ্যে কে বেশী কুরআন জানত? যখন কোন এক ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করা হত, তখন তাকে প্রথমে কবরে রাখতেন।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন বুখারী)

৯৯

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ ابن عباس أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال: البَرَكَةُ مَعَ أكاَبِرِكُمْ رواه الطبراني في الأوسط والحاكم وقال صحيح على شرط مسلم

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “তোমাদের বয়স্ক ব্যক্তির সাথে রয়েছে বরকত।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন ত্বাবরানী [আওসাত গ্রন্থে] এবং হাকেম, তিনি বলেন, মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীছটি সহীহ)

১০০

সহিহ হাদিস
(صحيح) وَعَنْ عبد الله بن عمرو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يبلغ به النبي صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قال لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا، وَلَمْ يَعْرِفْ حَقَّ كَبِيرِنَا. رواه الحاكم وقال صحيح على شرط مسلم

আবদুল্লাহ ইবনু ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বর্ণনাটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ “যে ব্যক্তি ছোটদের প্রতি স্নেহশীল নয় এবং বড়দের হক বুঝে না (তাদের শ্রদ্ধা করে না) সে আমার (উম্মতের) অন্তর্ভুক্ত নয়।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন হাকেম, তিনি বলেন, মুসলিমের শর্তানুযায়ী হাদীছটি সহীহ)

৯৮

হাসান হাদিস
(حسن ) و عَنْ أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ إِنَّ مِنْ إِجْلَالِ اللَّهِ إِكْرَامَ ذِي الشَّيْبَةِ الْمُسْلِمِ وَحَامِلِ الْقُرْآنِ غَيْرِ الْغَالِي فِيهِ وَالْجَافِي عَنْهُ وَإِكْرَامَ ذِي السُّلْطَانِ الْمُقْسِطِ. رواه أبو داود

আবু মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, আল্লাহকে মর্যাদা দেয়ার অন্তর্ভুক্ত হল এই ব্যক্তিবর্গকে সম্মান করাঃ (১) বৃদ্ধ মুসলিম ব্যক্তি (২) কুরআন ধারণকারী [১] যিনি সে ব্যাপারে অতিরঞ্জনকারী নয় এবং তার সাথে রুঢ় আচরণকারীও নয়। এবং (৩) ন্যায় পরায়ন শাসককে সম্মান করা।
(আবু দাউদ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
[১] অর্থাৎ কুরআন পাঠ্যকারী, মুখস্তকারী ও তাফসীরকারী। অতিরঞ্জনের অর্থ হচ্ছে, উচ্চারণ ও তাজবীদ নিয়ে বাড়াবাড়ি করা বা কুরআনকে এত তাড়াহুড়া করে পাঠ করা যাতে তার অর্থ অনুধাবন করা অসম্ভব হয়, অথবা কুরআনের গোপন অর্থ অনুসন্ধান করা বা অপব্যাখ্যার আশ্রয় নেয়া। আর রূঢ়তা হচ্ছে, কুরআন পাঠ করার পর তা থেকে দূরে থাকা, অর্থ অনুধাবন না করা, আমল না করা, ভুলে যাওয়া ইত্যাদি। দ্রঃ আউনুল মা’বূদ হা/৪২০৩)

১০৩

হাসান সহিহ
(حسن صحيح) وَعَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيَعْرِفْ شَرَفَ كَبِيرِنَا. رواه الترمذي وأبو داود

আমার বিন শুআয়ব থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর পিতা থেকে তাঁর দাদা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “যে ব্যক্তি ছোটদের স্নেহ করে না এবং বড়দের মর্যাদা বুঝে না সে আমাদের (উম্মতের) অন্তর্ভুক্ত নয়।”
(হাদীছটি বর্ণনা করেছেন তিরমিযী ও আবু দাউদ) তবে আবু দাউদের বর্ণনায় আছে, (আরবি) এবং আমাদের বড়দের হক (শ্রদ্ধা) জানে না…।

১০৪

হাসান হাদিস
(حسن ) وَعَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُسْرٍ، قَالَ:"لَقَدْ سَمِعْتُ حَدِيثًا مُنْذُ زَمَانٍ: إِذَا كُنْتَ فِي قَوْمٍ عِشْرِينَ رَجُلًا، أَوْ أَقَلَّ، أَوْ أَكْثَرَ، فَتَصَفَّحْتَ فِي وُجُوهِهِمْ، فَلَمْ تَرَ فِيهِمْ رَجُلًا يُهَابُ فِي اللهِ، فَاعْلَمْ أَنَّ الْأَمْرَ قَدْ رَقَّ ". رواه أحمد والطبراني في الكبير

আবদুল্লাহ বিন বুসর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বহুদিন পূর্বে একটি হাদীছ শুনেছিলামঃ “তুমি যদি কোন লোকদের মাঝে থাক যেখানে বিশজন বা তার চাইতে কম বা বেশী লোক থাকে। অতঃপর তাদের চেহারা দেখে যদি এমন কোন ব্যক্তি না পাও যাকে মহান পরাক্রমশালী আল্লাহর ব্যাপারে ভয় করা হয়। [১] তবে মনে করবে দ্বীন ক্ষীণ হয়ে গেছে।”
(আহমাদ ও ত্বাবরানী [কাবীর গ্রন্থে] হাসান সনদে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন)
[১] অর্থাৎ- তাদের মধ্যে এমন আল্লাহ ভীরু পরেহজগার নেক লোক নেই। যার চেহারার দিকে তাকালে সততা ও নিষ্ঠার ছাপ লক্ষ্য করা যায়; ফলে তার প্রতি অন্তরে ভয় মিশ্রিত শ্রদ্ধা সৃষ্টি হয়, তাহলে মনে করবে ইসলাম ধর্ম তাদের মধ্যে ক্ষীণ ও দুর্বল হয়ে গেছে। (আল্লাহই অধিক জানেন)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন