সুলাইমান ইবনু 'আম্র ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমার বাবা আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বিদায় হাজ্জে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাথে ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও তাঁর গুণগান বর্ণনা করলেন, ওয়াজ-নাসীহাত করলেন ও উপদেশ দিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি কোন দিনটির মর্যাদা বর্ণনা করছি, আমি কোন দিনটির মর্যাদা ঘোষণা করছি? বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! হাজ্জের মহান দিনের।তিনি বললেনঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-মাল, তোমাদের ইজ্জত-সম্মানে হস্তক্ষেপ তোমাদের উপর হারাম, যেরূপ তোমাদের এ দিনে এ শহরে ও এ মাসে হারাম। জেনে রেখ! অপরাধীই অপরাধ কর্মের জন্য দায়ী ও দোষী। ছেলের অপরাধের জন্য বাবা এবং বাবার অপরাধের জন্য ছেলে অপরাধী নয়। জেনে রেখ! এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। কাজেই এক মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের ঐ জিনিসই হালাল যা সে স্বেচ্ছায় তার জন্য হালাল করে (দান করে)। জেনে রেখ! জাহেলী যুগের প্রাপ্য সকল প্রকার সুদ বাতিল ঘোষণা করা হল। তবে তোমাদের মূলধন ফেরত পাবে। তোমরা কারো প্রতি যুলুম করবে না এবং তোমাদের প্রতিও যুলুম করা হবে না। ‘আব্বাস ইবনু 'আবদুল মুত্তালিবের সুদের সকল পাওনা বাতিল ঘোষণা করা হল। জেনে রেখ! জাহিলিয়াতের সকল প্রকার রক্তের দাবি বাতিল করা হল। জাহিলিয়াতের সর্বপ্রথম যার রক্ত আমি বাতিল ঘোষণা করছি সে হচ্ছে হারিস ইবনু 'আবদুল মুত্তালিবের রক্ত। সে শিশু অবস্থায় বনূ লাইস গোত্রে দুধ পানরত অবস্থায় হুযাইল গোত্র তাকে হত্যা করেছিল। শোন! আমি তোমাদেরকে নারীদের সাথে ভালো ব্যবহারের উপদেশ দিচ্ছি। তারা তোমাদের নিকট বন্দীর মত যুক্ত। তাদের উপর তোমাদের কোন কর্তৃত্ব নেই, যদি না তারা কোন প্রকাশ্য অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। যদি তারা তাই করে তাহলে তোমরা তাদের বিছানা পৃথক করে দাও এবং একান্ত প্রয়োজন হলে হালকাভাবে আঘাত কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়ে যায়, তবে তাদের প্রতি বাড়াবাড়ির পথ অন্বেষণ কর না। জেনে রেখ! তোমাদের যেরূপ অধিকার রয়েছে তোমাদের স্ত্রীদের উপর, তোমাদের স্ত্রীদেরও তদ্রুপ অধিকার রয়েছে তোমাদের উপর (কাজেই উভয়ের প্রতি উভয়ের অধিকার আদায় করা কর্তব্য)। তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার এই যে, তারা তোমাদের অপছন্দনীয় লোককে তোমাদের বিছানায় স্থান দিবে না এবং তোমাদের অপছন্দনীয় লোককে তোমাদের ঘরে যাতায়াতের অনুমতি দিবে না। আর তোমাদের উপর তাদের অধিকার এই যে, তোমরা (যথাসম্ভব) তাদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও আহারের সুব্যবস্থা করবে।
হাসান : ইবনু মা-জাহ (১৮৫১)।