সাঈদ ইবনু জুবাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মুসআব ইবনু যুবাইরের শাসনামলে এক জোড়া লিআনকারী (দম্পতি) প্রসঙ্গে আমাকে প্রশ্ন করা হলঃ তাদেরকে আলাদা করে দেয়া হবে কি-না। আমি এই প্রসঙ্গে কি বলব তা সঠিক অনুমান করতে পারলাম না। আমি আমার ঘর হতে বেরিয়ে সোজা আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ)-এর ঘরের দরজার সামনে এলাম এবং তার সাথে সাক্ষাতের জন্য প্রবেশের অনুমতি চাইলাম। আমাকে বলা হল, তিনি দুপুরের খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন। তিনি ভিতর হতে আমার কথা শুনে বললেন, ইবনু জুবাইর? ভিতরে প্রবেশ কর। নিশ্চয়ই কোন জরুরী বিষয় নিয়ে তুমি এসেছ। বর্ণনাকারী বলেন, আমি ভিতরে গেলাম। তিনি তার বাহনের হাওদার নিচের মোটা কাপড় বিছিয়ে তার উপর শুয়ে ছিলেন। আমি বললাম, হে আবদুর রাহমানের পিতা! লিআনকারী দম্পতিকে কি একে অপর হতে আলাদা করতে হবে? তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! হ্যাঁ, এ প্রসঙ্গে সর্বপ্রথম অমুকের ছেলে অমুক প্রশ্ন করেন। তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে তাকে প্রশ্ন করেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমাদের মাঝে কোন লোক তার স্ত্রীকে খারাপ কাজে (যিনায়) জড়িত দেখে তখন সে কি করবে, এ প্রসঙ্গে আপনি কি মত পোষণ করেন? যদি সে মুখ খুলে তবে একটা ভয়ানক কথা বলল, আর সে চুপ থাকলে তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে চুপ রইল।
বর্ণনাকারী (ইবনু উমার) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একথা শুনে নীরব রইলেন এবং কোন উত্তর দিলেন না। তিনি (ফিরে যাওয়ার পর) আবার রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, আপনাকে যে বিষয়ে ইতিপূর্বে প্রশ্ন করেছিলাম তাতে আমি নিজেই জড়িয়ে পড়েছি। এমন সময় আল্লাহ তা'আলা সূরা নূরের আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ “নিজেদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে যে সকল লোক যিনার অভিযোগ তোলে অথচ নিজেরা ব্যতীত তাদের আর কোন সাক্ষী থাকে না তবে তাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হবে যে, সে চারবার আল্লাহ তা'আলার নামে শপথ করে বলবে..... যদি সে সত্যবাদী হয়" (৬-১০)।
তিনি লোকটিকে ডেকে এনে তাকে এ আয়াতগুলো পাঠ করে শুনান, তাকে উপদেশ দিয়ে ভালোভাবে বুঝান। তিনি তাকে বললেনঃ দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তি হতে অনেক হালকা। তিনি বললেন, না, সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন। তাকে আমি মিথ্যা অপবাদ দেইনি। তারপর তিনি স্ত্রীলোকটির প্রতি মনোনিবেশ করলেন এবং তাকেও উপদেশ দিয়ে উত্তমভাবে বুঝালেনঃ দুনিয়ার শাস্তি আখিরাতের শাস্তি হতে খুবই হালকা। স্ত্রীলোকটি বলল, না, সেই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন! সে সত্য কথা বলেনি।
বর্ণনাকারী (ইবনু উমার) বলেন, তারপর প্রথমে পুরুষকে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ করালেন। তিনি আল্লাহ্ তা'আলার নাম সহকারে চারবার শপথ করে সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি (অভিযোগের ব্যাপারে) সত্যবাদী। তিনি পঞ্চম বারে বললেন যে, তিনি (আনীত অভিযোগ প্রসঙ্গে) মিথ্যাবাদী হলে তার উপর আল্লাহর অভিসম্পাত। তারপর তিনি স্ত্রীলোকটিকে লিআন করান। সে চারবার আল্লাহ্ তা'আলার নাম উচ্চারণ সহকারে শপথ করে সাক্ষ্য দিল যে, তার বিরুদ্ধে উঠানো অভিযোগে সে (স্বামী) মিথ্যাবাদী। সে পঞ্চম বারে বলল, সে (স্বামী) সত্যবাদী হলে তবে তার নিজের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত। তারপর তাদের বিয়ে বন্ধন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিন্ন করে দিলেন।
সহীহ্, সহীহ্ আবূ দাউদ- (১৯৫৫), মুসলিম