আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা আল্লাহ তা’আলার নিকটে জাহান্নামের শাস্তি থেকে আশ্রয় প্রার্থণা কর, আল্লাহ তা’আলার নিকট তোমরা ক্ববরের শাস্তি হতে মুক্তি কামনা কর, তোমরা আল্লাহ তা’আলার কাছে মসীহ দাজ্জালের যুলম হতে মুক্তি চাও, তোমরা আল্লাহ তা’আলার নিকট জীবন ও মুত্যর বিপর্যয় হতে আশ্রয় প্রার্থনা কর।
সনদ সহীহঃ মুসলিম (২/৯৩), তাশাহুদের বর্ণনার সাথে আরেক বর্ণনায় শেষ তাশাহুদে” এই কথা উল্লেখ আছে। সিফাতুস সালাত (১৬৩)
আবূ ঈসা বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।
-----------------
৩৬০৪/১. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে তিনবার বলে, “আল্লাহ তা’আলার নিকট আমি তাঁর সম্পূর্ণ কালামের ওয়াসীলায় আশ্রয় প্রার্থনা করি, সে সকল অনিষ্ট হতে, যা তিনি সৃষ্টি করেছেন”, ঐ রাতে কোন বিষ তার অনিষ্ট করতে পারবে না। সুহাইল (রহঃ) বলেন, আমার পরিবারের লোকেরা এই দুআ শিখে তা প্রতি রাতে পড়ত। একদিন তাদের একটি মেয়ে দংশিত হয়, কিন্তু তাতে সে কোন যন্ত্রণা অনুভব করেনি।
সহীহঃ তালীকুর রাগীব (১/২২৬), মুসলিম সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করেছেন।
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান। মালিক ইবনু আনাস (রহঃ) এ হাদীস সুহাইল ইবনু আবী সালিহ্ হতে, তিনি তাঁর বাবা হতে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদে রিওয়ায়াত করেছেন। এ হাদীস উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘উমার প্রমুখ সুহাইল (রহঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন, কিন্তু তাতে আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর উল্লেখ করেননি।
-----------------------
৩৬০৪/২. আবূ হুরাইরা (রাঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের) নিকট হতে একটি দু’আ আয়ত্ত করেছি, যা আমি কখনও বাদ দেই নাঃ “হে আল্লাহ! তুমি আমাকে বেশি পরিমাণে তোমার প্রতি শুকরিয়া প্রকাশকারী, তোমাকে অধিক স্মরণকারী, তোমার নাসিহাতের অনুসারী এবং তোমার ওয়াসিয়াত (নির্দেশ) স্মরণকারী বানাও”।
যইফ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (২৪৯৯), আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব।
------------------
অনুচ্ছেদ-১৩৪ সম্পর্ক ছিন্নকারী দু’আ ব্যতীত দু’আ ক্ববূল হওয়া প্রসঙ্গে।
৩৬০৪/৩. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে কোন ব্যক্তি আল্লাহর নিকট কোন দু’আ করলে তার দু’আ ক্ববূল হয়। হয়তোবা সে দুনিয়াতেই তার ফল পেয়ে যায় অথবা তা তার আখিরাতের পাথেয় হিসেবে জমা রাখা হয় অথবা তার দু’আর সম-পরিমাণ তার গুনাহ মাফ করা হয়, যতক্ষণ না সে পাপ কাজের অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার দুআ করে অথবা দুআ ক্ববূলের জন্য তাড়াতাড়ি করে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাড়াতাড়ি করে কিভাবে? তিনি বলেনঃ সে বলে, আমি আমার আল্লাহর নিকটে দু’আ করেছিলাম, কিন্তু আমার দু’আ তিনি ক্ববূল করেননি।
“হয়তোবা তার দু’আর সমপরিমাণ গুনাহ মাফ করা হয়” এই অংশ ব্যতীত হাদীসটি সহীহ। যঈফাহ (হাঃ ৪৪৮৩)
আবূ ঈসা বলেন, উপর্যুক্ত সূত্রে এ হাদীসটি গারীব।
-----------------------
৩৬০৪/৪. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে সময় কোন বান্দা তার দুই হাত উপরের দিকে উত্তোলন করে, এমনকি তার বগল খুলে আল্লাহর নিকটে কিছু প্রার্থনা করে, তখন তিনি অবশ্যই তাকে তা দেন, যদি সে তাড়াহুড়া না করে। সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! তার তাড়াহুড়া কি? তিনি বললেনঃ সে বলে, আমি তো প্রার্থনা করছি, আবারও প্রার্থনা করেছি (অধিকবার প্রার্থনা করছি), কিন্তু আমাকে কিছুই দান করা হয়নি।
“হাত উত্তোলন” অংশ ব্যতীত হাদীসটি সহীহঃ প্রাগুক্ত, মুসলিম অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।
এ হাদীসটি যুহরী (রহঃ) ইবনু ‘আযহারের মুক্তদাস আবূ উবাইদ হতে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এই সনদে রিওয়ায়াত করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের যে কারো দু’আ ক্ববূল হয়ে থাকে, যতক্ষণ না সে তড়িঘড়ি করে এবং বলে, আমি দু’আ করলাম কিন্তু ক্ববূল তো হল না। সহীহঃ বুখারী ও মুসলিম।
-----------------
অনুচ্ছেদ-১৩৫ আল্লাহ! আমার শ্রবণ শক্তি দ্বারা আমাকে উপকৃত কর।
৩৬০৪/৫. আবূ হুরাইরা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আলাহ তা’আলা প্রসঙ্গে ভাল উপলব্ধি পোষণও আল্লাহ্র উত্তম ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত।
যঈফ, যঈফা (৩১৫০), আবূ ঈসা বলেনঃ উক্ত সনদসূত্রে এ হাদীসটী গারীব।
-----------------
অনুচ্ছেদ-১৩৬ সকল সময়েই কল্যাণের ইচ্ছা করবে
৩৬০৪/৬. আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান (রাঃ) হতে তার পিতার সূত্রে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের যে কেউ অবশ্যই লক্ষ্য রাখবে যে, সে কি (পাওয়ার) ইচ্ছা করছে। যেহেতু সে জানেনা যে, তার চাওয়ার ভিত্তিতে তার জন্য কি লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে (তাই সর্বদা উত্তম ধারণা ও উত্তম কিছু চাইতে হবে)।
দুর্বল, যঈফা (৪৪০৫), আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান।
-------------------
৩৬০৪/৭. আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ “হে আল্লাহ! আমার কর্ণ ও চক্ষুর মাধ্যমে আমাকে উপকৃত কর এবং এ দুটোকে আমার উত্তরাধিকারী কর (মৃত্যু পর্যন্ত অটুট রাখ), যে লোক আমার উপর অত্যাচার করে তার বিরুদ্ধে আমায় তুমি সহযোগিতা কর এবং তার হতে তুমি আমার প্রতিশোধ গ্রহণ কর”।
হাসানঃ রাওযুন নাযীর (১৯০)
আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উক্ত সনদসূত্রে হাসান গারীব।
----------------
৩৬০৪/৮. আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই যেন তার প্রতিটি অভাব পূরণের উদ্দেশ্যে তার রবের নিকটে প্রার্থনা করে, এমনকি তার জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে তাও যেন তাঁর নিকটে চায়।
যঈফ, যঈফা (১৩৬২) আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। একাধিক রাবী এ হাদীস জাফর ইবনু সুলাইমান হতে তিনি সাবিত আল-বুনানী হতে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তাতে তারা আনাস (রাঃ)-এর উল্লেখ করেননি।
-------------------
৩৬০৪/৯. সাবিত আল-বুনানী (রাহঃ) হতে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের সকলেই যেন তার অভাব পূরণের উদ্দেশ্যে তার রবের নিকটে প্রার্থনা করে, এমনকি তার লবণের জন্যও, এমনকি তার জুতার ফিতা ছিঁড়ে গেলে তার জন্যও তাঁর নিকটে প্রার্থনা করে।
যঈফ, প্রাগুক্ত আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি কাতান হতে জাফর ইবনু সুলাইমান-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসের তুলনায় বেশি সহীহ।