HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সিয়াম, তারাবীহ ও যাকাত বিষয়ে কয়েকটি অধ্যায়

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ সালেহ আল-উসাইমীন রহ.

তৃতীয় অধ্যায়: মুসাফির ও অসুস্থ ব্যক্তিদের সাওম প্রসঙ্গে
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ ١٨٥﴾ [ سورة البقرة : 185]

“আর যে অসুস্থ হবে অথবা সফরে থাকবে তবে অন্যান্য দিবসে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫]

অসুস্থতা দু’প্রকার:

এক. যদি অসুস্থতা এমন হয় যে, যা থেকে সুস্থ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যেমন, ক্যান্সার, তাহলে এরূপ রোগীর ওপর সাওম জরুরি নয়। কারণ, তার ক্ষেত্রে এটাই স্বাভাবিক যে, সে কখনো সাওম পালনে সক্ষম হবে না, তাই সে প্রত্যেক সাওমের পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাদ্য দেবে। সাওমের সংখ্যানুপাতে মিসকিনদের জমা করে দুপুর অথবা রাতের খাবার দেবে যেমন, আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বার্ধক্যে করতেন অথবা সাওমের সংখ্যা হিসেবে মিসকিনদের পৃথক পৃথক খাদ্য দেবে। প্রত্যেক মিসকিনকে হাফ কিলু দশ গ্রাম গম/চাল দেবে। এর সাথে তরকারী হিসেবে গোস্ত অথবা তেল দেওয়া ভালো। সাওম পালনে বৃদ্ধ অক্ষম ব্যক্তিও অনুরূপ করবে।

দুই. সাময়িক অসুস্থতা, যা থেকে আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা বেশি যেমন জ্বর ও অনুরূপ অসুস্থতা। এর তিন অবস্থা:

প্রথম অবস্থা: সাওম যদি তার জন্য ক্ষতিকর ও কষ্টকর না হয়, তাহলে তার ওপর সাওম ওয়াজিব, যেহেতু তার কোনো ওযর নেই।

দ্বিতীয় অবস্থা: সাওম তার জন্য কষ্টকর, কিন্তু ক্ষতিকর নয়, এমতাবস্থায় তার জন্য সাওম মাকরুহ। কারণ, এতে আল্লাহর রোখসত ত্যাগ করে নিজের ওপর কষ্টের বোঝা চাপানো বৈ কিছু নয়।

তৃতীয় অবস্থা: সাওম যদি ক্ষতিকর হয়, তাহলে তার জন্য সাওম হারাম। কারণ, এর ফলে নিজের ওপর বিপদ ডেকে আনা বৈ কিছু নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلَا تَقۡتُلُوٓاْ أَنفُسَكُمۡۚ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ بِكُمۡ رَحِيمٗا ٢٩﴾ [ سورة النساء : 29]

“আর তোমরা নিজেরা নিজদেরকে হত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ব্যাপারে পরম দয়ালু”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৯]

আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র বলেন,

﴿وَلَا تُلۡقُواْ بِأَيۡدِيكُمۡ إِلَى ٱلتَّهۡلُكَةِ ١٩٥﴾ [ سورة البقرة : 195]

“এবং নিজ হাতে নিজদেরকে ধ্বংসে নিক্ষেপ করো না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৯৫]

হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«لا ضَرَرَ ولا ضِرَارَ»

“ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া যাবে না এবং ক্ষতিগ্রস্ত করাও যাবে না”। [সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ২৩৪১; মুসনাদে আহমদ: (৫/৩২৭); মুসতাদরাকে হাকেম, হাদীস নং ২৩৪৫। হাকেম হাদীসটি মুসলিমের শর্ত মোতাবেক সহীহ বলেছেন এবং ইমাম যাহাবী তার সমর্থন করেছেন।]

ইমাম নববী রহ. বলেছেন: এ হাদীসের কয়েকটি সনদ রয়েছে, যার একটি অপরটি দ্বারা শক্তিশালী হয়।

রোগীর ওপর সাওম ক্ষতিকর কি-না তা রোগীর অনুভূতি অথবা নির্ভর যোগ্য ডাক্তারের পরামর্শ থেকে বুঝা যাবে। এ অবস্থায় যদি রোগী সাওম ভঙ্গ করে, তাহলে সুস্থ হওয়ার পর অনুরূপ সংখ্যা ক্বাযা করবে। আর যদি সুস্থ হওয়ার পূর্বে মারা যায়, তাহলে মৃত্যুর কারণে তার থেকে সাওম মওকুফ হয়ে যাবে। কারণ, তার ওপর পরবর্তীতে যে দিনে সাওম ফরয ছিল, সে দিনগুলো সে পায় নি।

আর মুসাফির দু’প্রকার:

এক. যদি কেউ রমযানের সাওম না রাখার জন্য বাহানা হিসেবে সফর আরম্ভ করে, তার সাওম ভঙ্গ করা বৈধ হবে না। কারণ, বাহানার ফলে আল্লাহর ফরয রহিত বা মওকুফ হয় না।

দুই. সত্যিকার অর্থে মুসাফির। এর তিন অবস্থা:

প্রথম অবস্থা: সাওম যদি তার ওপর খুব কষ্টকর হয়, তাহলে তার জন্য সাওম হারাম। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতহে মক্কার সময় সাওম অবস্থায় ছিলেন, তার নিকট সংবাদ পৌঁছল যে, মানুষের নিকট সিয়াম খুব কষ্টকর হচ্ছে, তারা আপনার নির্দেশের অপেক্ষায় আছে। তিনি আসরের পর পানির পাত্র ডেকে আনলেন, অতঃপর পান করলেন, সবাই তাকে দেখতে ছিল। তাকে বলা হলো: কতক লোক সাওম অবস্থায় আছে। তিনি বললেন: “তারা পাপী, তারা পাপী”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১১৪)]

দ্বিতীয় অবস্থা: সাওম তার জন্য কষ্টকর, তবে বেশি কষ্টকর নয়। এমতাবস্থায় তার জন্য সাওম মাকরূহ। কারণ, এর দ্বারা নিজের ওপর কষ্ট চাপিয়ে আল্লাহর শিথিলতা ত্যাগ করা হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿يُرِيدُ ٱللَّهُ بِكُمُ ٱلۡيُسۡرَ وَلَا يُرِيدُ بِكُمُ ٱلۡعُسۡرَ ١٨٥﴾ [ سورة البقرة : 185]

“আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৮৫]

এখানে আল্লাহর ইচ্ছার অর্থ মহব্বত। যদি সাওম রাখা না-রাখা উভয় সমান হয়, তাহলে সাওম রাখাই উত্তম। কারণ, এটা ছিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল।

সহীহ মুসলিমে আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«خرجنا مع النبي صلى الله عليه وسلّم في رمضان في حر شديد حتى إن كان أحدنا ليضع يده على رأسه من شدة الحر وما فينا صائم إلا رسول الله صلى الله عليه وسلّم وعبدالله بن رواحة»

“আমরা কঠিন গরমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে বের হয়ে, প্রখর রৌদ্রের কারণে এক সময় আমরা নিজেদের হাত মাথায় ধরে ছিলাম। আমাদের মধ্যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আব্দুল্লাহ ইবন রাওয়াহা ব্যতীত কেউ সাওম অবস্থায় ছিল না”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১২২।]

নিজ শহর থেকে সফর আরম্ভকারী মুসাফির ফিরে আসা পর্যন্ত সফরে থাকে। সফরের দেশে যদিও তার অবস্থান দীর্ঘ ও লম্বা হয়, যদি তার নিয়ত থাকে যে, সফরের উদ্দেশ্য হাসিল হলেই দেশে ফিরবে। এমতাবস্থায় সে সফরের রোখসত গ্রহণ করবে, তার অবস্থান যত দীর্ঘ হোক। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর সমাপ্তির নির্দিষ্ট কোনো সময় বর্ণনা করেন নি। অতএব, যতক্ষণ পর্যন্ত সফর ও সফরের বিধান শেষ হওয়ার দলিল কায়েম না হবে, সে সফর অবস্থায় থাকবে।

সাময়িক সফর ও ধারাবাহিক সফরে কোনো পার্থক্য নেই। সাময়িক সফর যেমন হজ, উমরাহ ও নিকটাত্মীয়দের দেখার জন্য সফর। ধারাবাহিক সফর যেমন ভাড়া গাড়ি ও অন্যান্য বড় গাড়ির চালক ও হেলপারগণের সফর। তারা যখন শহর ত্যাগ করবে, তখন থেকে তাদের জন্য মুসাফিরের বিধান আরম্ভ হবে, যেমন রমযানে পানাহার করা, চার রাকাত বিশিষ্ট সালাতকে দু’রাকাত আদায় করা এবং প্রয়োজন হলে যোহর-আসর ও মাগরিব-এশা একত্র আদায় করা। তাদের জন্য সাওম না রেখে পানাহার করা উত্তম। কারণ, তারা শীতের দিনে এসব সাওম ক্বাযা করতে সক্ষম। তারা যখন নিজ দেশে অবস্থান করে, তখন তারা মুকিম, মুকিমদের সুবিধা-অসুবিধা তারা ভোগ করবে। আর যখন তারা সফরে থাকে, তখন তারা মুসাফির, মুসাফিরদের সুবিধা-অসুবিধা তারা ভোগ করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন