মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
যাকাত ইসলামের পাঁচটি ফরযের একটি। কালেমায়ে শাহাদাত ও সালাতের পর যাকাতের স্থান। কুরআন-হাদীস ও মুসলিমের ইজমা‘ দ্বারা এর ফরযিয়্যাত প্রমাণিত। যাকাতের ফরযিয়্যাত অস্বীকারকারী কাফির ও ইসলাম থেকে বহিষ্কৃত মুরতাদ। তাকে তাওবার জন্য বলা হবে, যদি তাওবা করে গ্রহণ করা হবে, অন্যথায় তাকে হত্যা করা। আর যাকাতের ব্যাপারে যে কৃপণতা করল অথবা কম আদায় করল সে যালিমদের অন্তর্ভুক্ত ও আল্লাহর শাস্তির উপযুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর আল্লাহ যাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে। আর আসমানসমূহ ও যমীনের উত্তরাধিকার আল্লাহরই জন্য। আর তোমরা যা আমল কর সে ব্যাপারে আল্লাহ সম্যক জ্ঞাত”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৮০]
সহীহ বুখারীতে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ যাকে সম্পদ দান করেছেন, অতঃপর সে তার যাকাত প্রদান করল না, কিয়ামতের দিন তার জন্য বিষধর সাপ সৃষ্টি করা হবে, যার দু’টি চোঁয়াল থাকবে, যা দ্বারা সে তাকে কিয়ামতের দিন পেঁছিয়ে ধরবে, অতঃপর তার দু’চোয়াল পাকড়ে বলবে: আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার সঞ্চিত ধন”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৮৪০৩।]
“এবং যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, তুমি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দাও। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেওয়া হবে। (আর বলা হবে) ‘এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে। সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ৩৪-৩৫]
সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«ما من صاحب ذهب ولا فضة لا يؤدِّي منها حقَّها إلا إذا كان يوم القيامة صُفِّحت له صفائح من نار فأحمي عليها في نار جهنم فيكوى بها جنبهُ وجبينه وظهرهُ كلما بردت أُعيدت في يوم كان مقدارهُ خمسين ألف سنة حتى يقضى بين العباد»
“স্বর্ণ ও রূপার এমন কোনো মালিক নেই, যে এর হক প্রদান করে না, যার জন্য কিয়ামতের দিন আগুনের পাত তৈরি করা হবে না, যা জাহান্নামের আগুনে তাপ দিয়ে অতঃপর তার পার্শ্ব, কপাল ও পৃষ্ঠদেশ সেক দেওয়া হবে। যখন যখন তা ঠাণ্ডা হবে গরম করা হবে, সে দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর, যতক্ষণ না বান্দাদের ফয়সালা সমাপ্ত হয়”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৯৮৭)]
যাকাতের রয়েছে দীনি, চারিত্রিক ও সামাজিক বহুবিধ উপকার। যেমন,
দীনি ফায়দা:
১. যাকাত ইসলামের এক বিশেষ রোকন, যার ওপর বান্দার দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ নির্ভর করে।
২. অন্যান্য ইবাদতের ন্যায় যাকাত বান্দাকে আল্লাহর নৈকট্য প্রদান করে ও তার ঈমান বৃদ্ধি করে।
৩. যাকাত আদায়ের ফলে প্রভূত কল্যাণ লাভ হয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“আর তোমরা যে সূদ দিয়ে থাক, মানুষের সম্পদে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তা মূলতঃ আল্লাহর কাছে বৃদ্ধি পায় না। আর তোমরা যে যাকাত দিয়ে থাক আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে (তাই বৃদ্ধি পায়) এবং তারাই বহুগুণ সম্পদ প্রাপ্ত”। [সূরা আর-রূম, আয়াত: ৩৯]
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«مَن تصدَّق بعدل تمرة - أي : ما يعادل تمرة - من كسب طيب، ولا يقبل الله إلا الطيب، فإن الله يأخذها بيمينه ثم يربيها لصاحبها كما يربي أحدكم فُلُوَّه حتى تكون مثل الجبل»
“হালাল উপার্জন থেকে যে খেজুর পরিমাণ সদকা করল, আর আল্লাহ হালাল ব্যতীত গ্রহণ করেন না, আল্লাহ তা ডান হাতে গ্রহণ করেন, অতঃপর সদকাকারীর জন্য তা বৃদ্ধি করতে থাকেন, যেমন তোমরা অশ্বশাবক লালন কর। অতঃপর পাহাড়ের ন্যায় পরিণত হয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪১০; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১০১৬।]
৪. যাকাত দ্বারা আল্লাহ পাপসমূহ দূরীভূত করেন, যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«والصدقة تطفئ الخطيئة كما يطفئ الماء النار»
“সদকা পাপ মোচন করে দেয়, যেমন পানি আগুন নির্বাপিত করে দেয়”। [সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ২৬১৬, তিরমিযী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন। ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৯৩৭৩; মুসনাদে ইমাম আহদ: (৩/৩২১)।] এখানে সদকা দ্বারা উদ্দেশ্য যাকাত-নফল সদকা উভয়।
যাকাতের চারিত্রিক ফায়দা:
১. যাকাত ব্যক্তিকে দানশীল ও বদান্যদের কাতারে শামিল করে।
২. যাকাত প্রমাণ করে, যাকাত আদায়কারী অভাবীদের প্রতি রহম, দয়া ও অনুগ্রহশীল, আর আল্লাহ দয়াশীলদের ওপর দয়া করেন।
৩. আমাদের অভিজ্ঞতা যে, মুসলিমদের ওপর আর্থিক ও শারীরিক সেবা প্রদান অন্তঃকরণকে প্রশস্ত ও প্রফুল্ল করে এবং মানুষের নিকট যাকাত দাতাকে প্রিয় ও ঘনিষ্ঠ করে তুলে।
৪. যাকাতে রয়েছে লোভ ও কৃপণতা থেকে মুক্তি। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“তাদের সম্পদ থেকে সদাকা নাও। এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে”। [সূরা আত-তাওবাহ, আয়াত: ১০৩]
যাকাতের সামাজিক উপকারিতা:
১. যাকাতের ফলে অভাবীদের অভাব দূর হয়, দুনিয়ার অধিকাংশ জায়গায় যাদের সংখ্যাই বেশি।
২. যাকাতের ফলে মুসলিমদের শক্তি অর্জন হয় ও তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। কারণ, যাকাতের একটি খাত জিহাদ।
৩. যাকাত গরীবদের অন্তর থেকে ধনীদের প্রতি হিংসা ও বিদ্বেষ দূর করে দেয়। কারণ, গরীবরা যখন দেখে ধনীরা তাদের সম্পদ দ্বারা যাবতীয় প্রয়োজন পুরো করে, কিন্তু তাদের সম্পদ থেকে তারা কোনোভাবে উপকৃত হয় না, এ কারণে অনেক সময় ধনীদের প্রতি তাদের অন্তরে হিংসা ও বিদ্বেষের জন্ম নেয়, যেহেতু ধনীরা তাদের অধিকার রক্ষা করে না, তাদের কোনো প্রয়োজনে তারা সাড়া দেয় না, কিন্তু ধনীরা যদি বছর শেষে গরীবদের যাকাত দেয়, তাহলে তাদের অন্তর থেকে এসব বিষয় দূরীভূত হয় এবং উভয় শ্রেণির মধ্যে মহব্বত ও ভালোবাসার সৃষ্টি হয়।
৪. যাকাতের ফলে সম্পদ বৃদ্ধি পায় ও তাতে বরকত হয়। যেমন, হাদীসে এসেছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
অর্থাৎ সদকার ফলে যদিও সম্পদের অংক কমে, কিন্তু তার বরকত ও ভবিষ্যতে তার বৃদ্ধি কমে না, বরং আল্লাহ তার সম্পদে বরকত দেন ও তার বিনিময়ে অধিক দান করেন।
৫. যাকাতের ফলে সম্পদে বরকত হয় ও তা বৃদ্ধি পায়। কারণ, সম্পদ যখন খরচ করা হয়, তখন তার পরিধি বৃদ্ধি পায় ও মানুষ উপকৃত হয়, ধনীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ও গরীবরা তা থেকে বঞ্চিত হলে যা হয় না।
অতএব, এ কথা নিশ্চিতভাবে বলা যায় ব্যক্তি ও সমাজ বিনির্মাণে যাকাত অপরিহার্য।
যাকাত নিদিষ্ট সম্পদের ওপর ওয়াজিব হয়, যেমন স্বর্ণ ও রূপা, শর্ত হচ্ছে এর নিসাব পূর্ণ হতে হবে। স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ, আর রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপা বা তার সমপরিমাণ অর্থের মালিক হলে যাকাত ওয়াজিব হবে। স্বর্ণ ও রূপা অলংকার বা যে অবস্থাতে থাক, তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে। অতএব, নারীর পরিধেয় অলংকারের ওপর যাকাত ওয়াজিব যদি তা নিসাব পরিমাণ হয়, সে নিজে পরিধান করুক বা অন্যকে পরিধান করতে দিক। কারণ, দলীলের ব্যাপকতা এটাই প্রমাণ করে। দ্বিতীয়তঃ কতক নির্দিষ্ট দলীল আছে, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, অলংকারের ওপর যাকাত ওয়াজিব, যদিও তা ব্যবহারের হয়। যেমন, আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল আস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, জনৈক নারী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আগমন করে, তার হাতে ছিল স্বর্ণের দু’টি চুড়ি, তিনি বললেন: “তুমি এগুলোর যাকাত দাও?”। সে বলল: না। তিনি বললেন: “তুমি কি পছন্দ কর আল্লাহ এগুলোর পরিবর্তে তোমাকে জাহান্নামের দু’টি চুড়ি পরিধান করান?। সে তা নিক্ষেপ করে বলল: এগুলো আল্লাহ ও তার রাসূলের জন্য। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১৫৬৩; তিরমিযী, হাদীস নং ৬৩৭; নাসাঈ, হাদীস নং ২৪৭৯।]
আরো যেসব জিনিসের ওপর যাকাত ওয়াজিব তন্মধ্যে রয়েছে: ব্যবসায়ী সম্পদ, অর্থাৎ ব্যবসার জন্য রক্ষিত সম্পদ যেমন জমিন, গাড়ি, চতুষ্পদ জন্তু ও অন্যান্য সম্পদ। এগুলোতে এক-দশমাংশের চার ভাগের এক ভাগ যাকাত ওয়াজিব, অর্থাৎ চল্লিশ ভাগের একভাগ। বছর শেষে হিসাব কষে তা বের করবে, তখন তার মূল্য কেনার দামের চেয়ে কম হোক অথবা বেশি হোক অথবা সমান সমান।
কিন্তু যেসব সম্পদ সে নিজের প্রয়োজন অথবা ভাড়া দেওয়ার জন্য রেখেছে, তাতে যাকাত ওয়াজিব হবে না। কারণ, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “মুসলিমের ওপর তার গোলাম ও ঘোড়ার সদকা নেই”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১৪৬৪; সহীহ মুসলিম, কিতাবুয যাকাত, হাদীস নং ৮।] তবে ভাড়ার উপার্জনে যাকাত আসবে, যদি বছর পূর্ণ হয়।
অনুরূপভাবে স্বর্ণ বা রৌপ্যের অলঙ্কারেও যাকাত আসবে, যেমনটি পূর্বে বর্ণিত হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/138/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।