মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কুরআন করীমের মোট ১১৪ টি সূরার একটি সূরার নাম ইয়াসিন। সূরার ধারাবাহিক ক্রমানুসারে এটি কুরআনের ৩৬ নং সূরা। কুরআনের অন্যান্য আয়াত তেলাওয়াত করলে প্রতিটি অক্ষরে যে পরিমাণ ছওয়াব পাওয়া যায় এই সূরা তেলাওয়াত করলেও তার প্রতিটি অক্ষরে সেই পরিমাণ ছওয়াব পাওয়া যাবে। তবে কুরআনে মাত্র কয়েকটি সূরা রয়েছে যেগুলোর অতিরিক্ত কিছু ফযিলত রয়েছে যা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। সহীহ হাদীসে সূরা ইয়াসিনের অতিরিক্ত কোনো ফযিলত বর্ণিত হয় নি। দু একটি দুর্বল ও বিভিন্ন জাল বানোয়াট হাদীসে এ সূরার বিভিন্ন ফযিলত বর্ণনা করা হয়েছে। দুর্বল হাদীসের মধ্যে প্রসিদ্ধ হাদিসটি হচ্ছে:
" إن لكل شيء قلبا وقلب القرآن يس ومن قرأ يس كتب الله له بقراءتها قراءة القرآن عشر مرات ". ( سنن الترمذي، فضل يس، رقم :2887)
‘‘প্রত্যেক বস্তুর একটি হৃদয় রয়েছে, আর কুরআনে হৃদয় হচ্ছে ‘ইয়াসিন’। যে ব্যক্তি ‘ইয়াসিন’ পড়বে আল্লাহ তার আমলনামায় দশবার পূর্ণ কুরআন পড়ার নেকী দান করবেন।’’ [তিরমিযী. সুনান, ইয়াসিনের মর্যাদা অনুচ্ছেদ, নং:২৮৮৭।]
ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনার পর নিজেই হাদীসটির সনদ গরীব ও দুর্বল বলে মন্তব্য বরং প্রমাণ করেছেন। তার মন্তব্য মতে হাদীসটি একেবারেই দুর্বল। অনেকে হাদীসটিকে বানোয়াট বলেও মন্তব্য করেছেন। তিরমিযির আলোচনা থেকেও এমন ইঙ্গিত পাওয়া যায়। মোটকথা ‘ইয়াসিন’ সূরার আলাদা ফযিলতে কোনো নির্ভরযোগ্য হাদীস নেই। [আলী হাশীশ, সিলসিলাতুল আহাদীসিল ওয়াহিয়াহ, ১/৩৩৫, আলবানী, আস-সিলসিলাতুদ্-দ‘য়ীফাহ, ১/৩১২।]
হাদীসটির অবস্থা এমন অর্থাৎ বিশুদ্ধ না হলেও তা আমাদের সমাজে অত্যন্ত প্রচলিত। অপরদিকে এই হাদীস এবং আরো কিছু ভিত্তিহীন হাদীসের উপর নির্ভর করে চালু রয়েছে এই সূরার খতম। একবার পড়ার খতম, দশবার পড়ার খতম, চল্লিশবার পড়ার খতম। কুরআন বা সুন্নায় যার কোনো ভিত্তি নেই। যার মনে যা চেয়েছে ইচ্ছামত রাসূলের সুন্নাহ এর পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
কারো মৃত্যু নিকটবর্তী হলে তার নিকট এই সূরা খতম করার প্রচলন রয়েছে।
এতে নাকি মুমূর্ষ ব্যক্তির কষ্ট হাল্কা হয়। এসবের কোনো কিছুই সহীহ হাদীস নির্ভর নয়। পক্ষান্তরে সহীহ হাদীসে মুমূর্ষ ব্যক্তির পাশে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর তালক্বীনের কথা এসেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
« لقنوا موتاكم لا إله إلا الله » . ( صحيح مسلم، باب تلقين الموتى لا اله الا الله، رقم :2162 )
‘‘মৃত্যু উপস্থিত ব্যক্তিকে তোমরা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর তালক্বীন করো।’’ [সহীহ মুসলিম, মৃত্যু উপস্থিত ব্যক্তিকে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর তালক্বীন অনুচ্ছেদ, নং: ২১৬২। তালক্বীন অর্থাৎ মুমূর্ষ ব্যক্তি মুখোমুখি এই কালেমা উচ্চরণ করা, যাতে সে তা শিখে বা স্মরণ করে পড়তে পারে। এতে তার জীবনের শেষ বাক্য ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ হবে।]
এর বিপরীত মূমূর্ষ ব্যক্তির পাশে ‘ইয়াসিন’ পড়ার কোনো আমল রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন শিক্ষা সাহাবিদের দেন নি। এ সম্পর্কে যা বলা সবই অনির্ভরযোগ্য, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।
‘ইয়াসিন’ খতমের একটি বানোয়াট পদ্ধতি
‘নস’ তথা কুরআন হাদীসের শিক্ষা একপাশে রেখে যুক্তি ও মনগড়া এবং সহীহ ছেড়ে ভিত্তিহিনের উপর দিয়ে নিজের মর্জি মোতাবেক শরী‘আত পরিবর্তনের কর্ম মূলত শিয়া, খাওয়ারিজ ইত্যাদি ভ্রান্ত সম্প্রদায় থেকেই শুরু হয়। পরবর্তীতে তাদের প্রভাব অনেক আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আলেমদের মাঝে বিস্তার লাভ করে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পর থেকে এ পর্যন্ত ইতিহাসের পাতায় একটু গভীর দৃষ্টি দিলেই বিষয়টি সবার কাছে ধরা পড়বে বলে আশা করি। এবার শিয়াদের বানানো একটি মনগড়া ‘খতমে ইয়াসিন’ দেখুন,
প্রয়োজন পূরণে ইয়াসিনের খতম যার পদ্ধতি এই [মুনতাদাল-কফীল ওয়েব। আল-মুনতাদার্-রাসমি, শায়খ আব্দুর রেযা মা‘আশ।] بِسْمِ اللّهِ الرَّحْمنِ الرَّحِيمِ
পাঠক, পদ্ধতিটি নমুনা স্বরূপ হুবহু উল্লেখ করতে গিয়ে একটু দীর্ঘ হয়েছে। বোঝার সুবিধার্থে শিয়া আলেমদের উল্লেখিত পদ্ধতিটি হুবহু তুলে ধরলাম। পদ্ধতিটির সাথে বানোয়াট অনেক ফযিলত উল্লেখ করা হয়েছে। অতিরিক্ত দীর্ঘ হয়ে যাবে বলে তা ছেড়ে দেয়েছি। নিশ্চয় আপনি ইয়াসিন খতমের এই পদ্ধতি দেখেই তা মনগড়া বানোয়াট এবং বানানো বলে উড়িয়ে দিবেন। কারণ হিসেবে রাসূল শিখান নি, সাহাবিরা করেন নি, খাইরুল ক্বুরুনে এর কোনো নজীর নেই বলে উল্লেখ করবেন। এই যদি হয় এই পদ্ধতি বানোয়াট হওয়ার দলীল এবং বাস্তবেও তাই, তবে আমাদের মাঝে যে পদ্ধতির প্রচলন আছে তার কি কোনো অস্তিত্ব কল্যাণের সাক্ষ্যপ্রাপ্ত যুগে আছে? যদি এর উত্তর ‘না’ হয় এবং আসলেও তাই, তবে উভর পদ্ধতিই মনগড়া ও বানোয়াট। সবকিছু থেকেই বিরত থাকা আমাদের জন্য অপরিহার্য। আর যদি বলেন, বুযুর্গদের থেকে এমন আমল পাওয়া গেছে, তবে অন্যদের বুযুর্গদের কি দোষ? আপনার আমার বুযুর্গের কথা গ্রহণযোগ্য, আর তাদের বুযুর্গদের কথা গ্রহণযোগ্য নয় এ কেমন ইনসাফ? আপনি নিজেই বিচার করুন।
নিজের পক্ষের লোকের কথা নির্বিচারে গ্রহণ, অন্যের কথা শুদ্ধ হলেও প্রত্যাখ্যান এটি একমাত্র বিভ্রান্ত দলের বৈশিষ্ট্য। পক্ষান্তরে আহলুস্সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আলেমদের বৈশিষ্ট হচ্ছে, সবার কথা নিরীক্ষার মাধ্যমে গ্রহণ, সহীহ বা নির্ভুল হলে অন্যের কথাও গ্রহণ। ভুল হলে নিজ মতাদর্শের লোকের কথাও প্রত্যাখ্যান। এই আমানতদারীর সাথে তারা দ্বীনি ইলমের শিক্ষা দিয়ে গেছেন।
যুক্তির আলোকে সুন্নাহ বিরোধী কর্ম সৃষ্টির সূচনা করতে পারলে আরেকজন তার যুক্তিতে বানানো জিনিসটিকে একটু মোডিফাই বা সুন্দর করতে সমস্যা কোথায়? বরং এটাইতো নিয়ম। যাইহোক, আমরা যারা সুন্নাতের উপর থাকতে চাই, সুন্নাতকে যুক্তি ও প্রচলনের উপর অগ্রাধিকার দেই ইবাদতের মধ্যে কম বেশ নতুন কোনো নিয়মই আমরা মানি না বা মানতে পারি না। রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতের বাইরে গেলেই বিদ‘আতে লিপ্ত হওয়ার আশংকা সর্বদা আমাদের মনে কাজ করে। আল্লাহ যেন আমাদেরকে এই আদর্শের অবিচল রাখেন। সবাইকে সুন্নাহ বোঝার তওফিক দান করেন। হুবহু সুন্নাতের উপর থাকা, বিদ‘আতকে সম্পূর্ণরুপে পরিহার করার তওফিকই তার কাছে আমাদের কাম্য। আমীন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/250/13
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।