মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ফার্সি শব্দ ‘খাজা’ যার বহুবচন ‘খাজেগাঁ’। খতমের নাম থেকেই তা যে অনারব কোনো সুফি থেকে আবিষ্কৃত তা সহজেই অনুমেয়। এই নামকরণের কারণে বলা হয়, ‘‘পীর-পীরানগণের উপর দো‘আ করা হয় বলিয়া এই খতমের নাম খাজেগান বা পীরান [নেয়ামুল কুরআন, মৌলবী শামছুল হুদা, রহমানিয়া লাইব্রেরী, একাদশ সংস্করণ, পৃষ্ঠা: ২০০।] রাখা হইয়াছে’’।
খতমের নিয়মে লিখা হয়েছে: [প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা:১৯৯।]
১. সূরা ফাতেহা ৭০ বার।
২. দুরূদ শরীফ ১০০ বার।
৩. সূরা ‘আলাম নাশরাহ লাকা’ ৭০ বার।
৪. সূরা ইখলাস ১০০০ বার।
৫. পুনরায় সূরা ফাতেহা ৭ বার।
৬. পুনরায় দুরূদ শরীফ ১০০ বার।
৭. নিম্নাক্ত দো‘আ ১০০ বার:
" فسهل يا الهي كل صعب بحرمة سيد الأبرار سهل بفضلك يا عزيز ".
৮. يا قاضي الحاجات (হে প্রয়োজন পূর্ণকারী) ১০০ বার।
يا كافي المهمات (হে বৃহৎ কাজ সমাধানকারী) ১০০ বার।
يا دافع البليات (হে বিপদ প্রতিরোধকারী) ১০০ বার।
يامجيب الدعوات (হে প্রার্থনা কবুলকারী) ১০০ বার।
يا رافع الدرجات (হে মর্যাদা বর্ধনকারী) ১০০ বার।
يا حلال المشكلات (হে বিপদ দূরকারী) ১০০ বার।
يا غوث أغثني وامددني (হে সাহায্যকারী আমায় সাহায্য ও মদদ কর) ১০০ বার।
انا لله وانا اليه راجعون (নিশ্চয় আমরা আল্লাহর এবং তার নিকটই আমরা ফিরে যাব) ১০০ বার।
لا اله الا انت سبحانك اني كنت من الظالمين (তুমি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র। নিশ্চয় আমি গোনাহ্গার) ১০০ বার।
৯. সর্বশেষ দুরূদ একশত বার।
এই খতমের এই পদ্ধতি লিখিত হলেও যে যার মত সময়ের দিকে লক্ষ্য রেখে, টাকা পয়সার কম বেশির দিকে বিবেচনা করে এদিক সেদিক যোগ বিয়োগ করে বানিয়ে খতম করেন। খতমকারীদের ভাষায় সটকার্ট খতম বা লং খতম। বানানো জিনিস একেকজন একেক রকম বানাবেন এটাই স্বাভাবিক।
এই খতমের ৭ নাম্বারে উল্লেখিত দো‘আটি আপত্তিকর। আপত্তির কারণ ও পর্যায় একটু পরেই আলোচনা করছি ইনশাআল্লাহ। এ ছাড়া বাকী অনেকটি যেমন সুরা, দুরূদ মানসুস, যার নির্দিষ্ট ফযিলত রয়েছে। কিছু বাক্য যেগুলোতে আল্লাহকে সম্বোধন করা হয়েছে এই বাক্যগুলো দ্বারা আল্লাহকে ডাকা এবং নিজের প্রয়োজন প্রার্থনা করা যাবে। ওযিফা হিসেবে তা পাঠ বা এতে ছওয়াব আছে মনে করা যাবে না, কেননা ছওয়াবের বিষয়টি সম্পূর্ণ তাওক্বীফি বা ওহি নির্ভর। এর বাইরে খতমের যে ধারা উল্লেখ করা হয়েছে এবং এর নির্দিষ্ট যে ফযিলত বলা হয় তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মানসুস বা রাসূল সাল্লাল্লাহু থেকে প্রমাণিত আমলগুলো তিনি যেভাবে করেছেন সেভাবেই করতে হবে এবং তিনি যে ফযিলত বলেছেন বিশ্বাসের ক্ষেত্রে এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আমলের ক্ষেত্রে এর বাইরে কিছু বলার কারো কোনো অধিকার নেই।
এই খতমের ফযিলতে বলা হয়ে থাকে, কঠিন পীড়া ও বিপদাপদ হতে উদ্ধার লাভের জন্য ও প্রত্যেক প্রকার মনের বাসনা, পরীক্ষা পাস ও চাকরী লাভ করিবার জন্য এই খতমটি অদ্বিতীয়। [প্রাগুক্ত।]
এ সবকথাই ভিত্তিহীন ও মনগড়া। এগুলো হচ্ছে বিভিন্ন দো‘আ বা ইবাদত। এর ফযিলত একমাত্র তিনি বলতে পারেন যিনি এগুলো দিয়েছেন। আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে আমল যেভাবে করলে যে ফযিলত বলেছেন তা সেভাবে করেই উক্ত ফযিলতের আশা করতে হবে। রাসূল কর্তৃক প্রদানকৃত রূপকে পরিবর্তন করা এবং সাথে সাথে নতুন ফযিলতের বুলি আওড়ানোর অধিকার কাউকে তিনি দেননি। আর এগুলো হচ্ছে ধর্মীয় বিষয়। ধর্মীয় বিষয়ে অভিজ্ঞতার কথা বলা অনর্থক।
৭ নং দো‘আটি আপত্তিকর হওয়ার কারণ হলো, অন্যের মর্যাদার দোহাই দিয়ে পার পাওয়ার ধারণা মূলত মুশরিকদের। ঈসা আলাইহিস সালামের মর্যাদার দোহাই দিয়ে পার পাওয়া খ্রিস্টবাদী ধারণা। উযাইর আলাইহিস সালামের দোহাই দিয়ে পার পাওয়ার আশা ইয়াহুদীবাদী ধারণা। ফেরেশ্তাগণ আল্লাহর মেয়ে হওয়ার ধারণায় তাদের মর্যাদার দোহাই দিয়ে পার হওয়ার ধারণা মক্কার মুশরিকরা লালন করত। কুরআন করীমে এসবের বিবরণ ও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন জাতি আল্লাহতে বিশ্বাসী হওয়া সত্বেও শির্কে লিপ্ত হয়। ইসলাম এর মূলোৎপাটন করেছে। আল্লাহর বিধান রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শিখানো পদ্ধতিতে পালনের মাধ্যমে একমাত্র আল্লাহরই দয়ায় পার পাওয়া যাবে বলে শিক্ষা দিয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে আজীবন এই শিক্ষাই দিয়ে গেছেন। কুরআন ও হাদীসের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়িয়ে দিলেই বিষয়টি সবার কাছে ফুটে উঠবে। কুরআন বা হাদীসে বর্ণিত দো‘আগুলো এবং দো‘আর শিক্ষা থেকেও আমরা বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারি। আল্লাহ তাঁর জ্ঞানের দিক থেকে বান্দার শাহরগের চেয়েও অধিক নিকটে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। [সূরা ক্বাফ, আয়াত: ১৬। এটি গ্রন্থকারের মত। আর এটা সত্য যে আল্লাহ তা‘আলা স্বয়ং আরশের উপর থাকা সত্বেও জ্ঞানের দিক থেকে আমাদের সাথেই রয়েছেন। তবে বিশুদ্ধ তাফসীর মতে আলোচ্য আয়াতে ‘আমরা’ বলে ফিরিশতাদের বুঝানো হয়েছে। [সম্পাদক]] তাই আল্লাহর কাছে কিছু চাইতে কোনো ব্যক্তি মিডিয়া বা ব্যক্তির মর্যাদা মিডিয়া বানানোর প্রয়োজন ইসলাম বোধ করে না। আর এটাই ছিল সালাফে সালিহিনের আক্বীদা। ইমাম আবু হানিফা রাহ. বলেন:
" لا ينبغي لأحد أن يدعو الله إلا به والدعاء المأذون فيه المأمور به ما استفيد من قوله تعالى " ولله الأسماء الحسنى فادعوه بها ".) الدر المختار، كتاب الحظر والاباحة )
‘‘কারো জন্য উচিত নয় আল্লাহর কাছে তারই মাধ্যম ছাড়া দো‘আ করা। আর তাঁর নাম নিয়ে দো‘আর অনুমোদন ও নির্দেশিত হওয়ার দলীল আল্লাহর বাণী: ‘‘আর আল্লাহর অনেক সুন্দর নাম রয়েছে, অতএব তোমরা তাকে এগুলোর মাধ্যমে ডাকো’’।’’ [আল্লামা আলাউদ্দীন আল-হাসকাফী, আদ্দুররুল-মুখতার, অবৈধ বৈধ অধ্যায়, বেচাকেনা অনুচ্ছেদ।ড: আব্দুর রহমান আল-খুমাইছ, ই‘তিক্বাদুল আয়িম্মাতিল আরবা‘আহ, আক্বীদাতুল ইমাম আবু হানিফা। পৃষ্ঠা:৩। শামসুদ্দীন আফগানী (১৩৭২-১৪২০ হি.), জুহুদুল উলামায়িল হানাফিয়্যাহ ফি ইব্তালি আক্বায়িদিল ক্বুবুরিয়্যাহ (কবরপূজারীদের আক্বায়িদ বাতিল করতে হানাফী আলেমদের প্রচেষ্টা), ১/৩১, ২/১১২৪।]
‘তারই মাধ্যমে’ দো‘আর ব্যখ্যায় আল্লামা শামী লিখেন:
"( قوله إلا به ) أي بذاته وصفاته وأسمائه ".
অর্থাৎ আল্লাহর সত্বা, তার গুণাবলী এবং তার নামের মর্যাদার ওসিলাতেই কেবল দো‘আ করা যাবে।
ফিক্বহে হানাফীতে আবু হানিফা রাহ. মাযহাব উল্লেখে বলা হয়েছে:
" ( و ) كره قوله ( بحق رسلك وأنبيائك وأوليائك ) أو بحق البيت لأنه لا حق للخلق على الخالق تعالى ".
‘‘এবং বলা মাকরূহ [উল্লেখ্য যে, আমাদের পূর্বসূরীগণ ‘মাকরূহ’ শব্দ বলে হারাম বোঝাতেন। [সম্পাদক]], তোমার রাসূলগণ, নবীগণ ও ওলীগণের অধিকারে অথবা বাইতুল্লাহর অধিকারে কেননা আল্লাহর উপর মাখলুকের কোনো অধিকার নেই।’’ [আদ্দুররুল মুখতার, প্রাগুক্ত, জুহুদুল উলামায়িল হানাফিয়্যাহ ফি ইব্তালি আক্বায়িদিল ক্বুবুরিয়্যাহ, ১/৭, ২/১১২৬।]
আহলুস-সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত, বিশেষ করে ইমাম আবু হানিফা (রাহ.) ও তার দুই বিশিষ্ট ছাত্র ইমাম আবু ইউসুফ (রাহ.) এবং ইমাম মুহাম্মদ (রাহ.) এর আক্বীদা বর্ণনায় হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত আলেম আবু জা‘ফর আত্ত্বাহাবী [হানাফী বিশিষ্ট ফক্বীহ আবু জা‘ফর আহমদ ইবন মুহাম্মদ সালামাহ আত্ত্বাহাবী। বলা হয়, মিশরে ফিক্বহে হানাফীর নেতৃত্ব তাঁর কাছে এসে শেষ হয়েছে। তিনি প্রথমে ফিক্বহে শাফি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ফিক্বহি হানাফী গ্রহণ এবং এতে নেতৃত্বের স্থান অধিকার করেন। জন্ম: ২৩৯, ওফাত: ৩২১ হিজরী, ৮৫৩-৯৩৩ ঈসায়ী। (আল-আ‘লাম ১/২০৬) তার রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ যা ‘আরব ‘আজম সবখানে প্রসিদ্ধ। তাঁর লিখিত আক্বীদার কিতাব ‘আল-আক্বীদাতুত্ত্বাহাবীয়াহ’ আরব ‘আজম সবখানে প্রসিদ্ধ ও পাঠ্য সিলেবাসভুক্ত। অনেকেই তর এ কিতাবের শরাহ বা ব্যাখ্যাগ্রন্থ লিখেছেন। তিনি তার এ কিতাব ইমাম আবু হানিফা (রাহ.) ও সাহেবাইন অর্থাৎ ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ (রাহ.) এর আক্বীদা বর্ণনা করতে লিখেছেন বলে কিতাবের শুরুতেই নিজে উল্লেখ করেছেন। তার বক্তব্যটি এরূপ:" هذا ذكر بيان عقيدة أهل السنة والجماعة على مذهب فقهاء الملة : أبي حنيفة النعمان بن ثابت الكوفي وأبي يوسف يعقوب بن إبراهيم الأنصاري وأبي عبدالله محمد بن الحسن الشيباني رضوان الله عليهم أجمعين وما يعتقدون من أصول الدين ويدينون به رب العالمين ".( العقيدة الطحاوية، مقدمة، 1-1)] রচিত আক্বীদার কিতাব ‘আল-আক্বীদাতুত্ত্বাহাবীয়্যাহ’ এর ব্যাখ্যা গ্রন্থে আল্লামা আবুল-ইয আল-হানাফী [আলী ইবন আলী ইবন মুহাম্মদ ইবন আবীল-‘ইয। ইবনু আবীল ‘ইয নামে প্রসিদ্ধ। দামেশে্কের বিশিষ্ট হানাফী ফক্বীহ। জন্ম: ৭৩১, ওফাত: ৭৯২হিজরী, ১৩৩১-১৩৯০ ঈসায়ী। (আল-আ‘লাম ৪/৩১৩)] লিখেন:
" قال أبو حنيفة وصاحباه رضي الله عنهم : يكره أن يقول الداعي : أسألك بحق فلان، أو بحق أنبيائك ورسلك، وبحق البيت الحرام، والمشعر الحرام، ونحو ذلك حتى كره أبو حنيفة ومحمد رضي الله عنهما أن يقول الرجل : اللهم إني أسألك بمعقد العز من عرشك ".
‘‘আবু হানীফা এবং তার দুই সঙ্গী (ইমাম আবু ইউসুফ ও মুহাম্মদ) রাদিয়াল্লাহু আনহুম বলেন: দো‘আকারীর জন্য বলা মাকরূহ, ‘‘অমুকের অধিকারে তোমার কাছে প্রার্থনা করছি, অথবা তোমার নবী ও রাসূলগণের অধিকারে এবং বাইতুল হারামের অধিকারে এবং মাশ‘আরে হারামের [মাশ‘আরে হারাম অর্থ সম্মানী প্রতীক। বর্ণনার আলোকে কুরআনের মাশ‘আরে হারাম বলতে মুযদালিফার মাঠ উদ্দেশ্য নিয়েছেন উলামায়ে কেরাম। কেউ কেউ শুধুমাত্র মুযদালিফার শেষ প্রান্তে অবস্থিত ছোট পাহাড়টি উদ্দেশ্য নিয়ে থাকেন। দেখুন: সহীহুল বুখারী, হজ্জ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ: যারা পরিবারের দুর্বল লোকদের রাতে পাঠিয়ে দেয় (মুযদালিফা থেকে মিনায়) অতঃপর তারা রাতে মুযদালিফায় অবস্থান করে এবং দো‘আ করে..., নং: ১৫৯২, সহীহ মুসলিম, হজ্জ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ: পরিবারের দুর্বল লোক মহিলা ও অন্যদেরকে মানুষের ভিড়ের পূর্বে রাতের শেষভাগের দিকে মুযদালিফা থেকে মিনায় পাঠিয়ে দেওয়া এবং অন্যরা ফজরের সালাত আদায় পর্যন্ত মুযদালিফায় অবস্থান করে যিকরে লিপ্ত থাকা মুস্তাহাব, নং: ৩১৯০, আল্লামা আলুসী, রুহুল মা‘আনী, সূরা বাক্বারা, আয়াত:১৯৮, তাফসীর ইবনে কাসীর, সূরা বাক্বারা, আয়াত:১৯৮।] অধিকারে।’’ এ জাতীয় আরো যা রয়েছে। এমনকি ইমাম আবু হানিফা ও মুহাম্মদ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা মাকরূহ মনে করেন যে, লোকটি বলবে: ‘‘হে আল্লাহ, তোমার আরশের সম্মানিত আসনের দোহাই দিয়ে তোমার কাছে প্রার্থনা করছি’’।’’ [ইবনু আবীল ইয, শরহুল আক্বীদাতুত্তাহাবীয়্যাহ, শাফা‘আত প্রসঙ্গ, ১/১৫৪।]
তিনি আরো লিখেন:
وتارة يقول : بجاه فلان عندك، يقول : نتوسل إليك بأنبيائك ورسلك وأوليائك . ومراده أن فلانا عندك ذو وجاهة وشرف ومنزلة فأجب دعاءنا . وهذا أيضا محذور، فإنه لو كان هذا هو التوسل الذي كان الصحابة يفعلونه في حياة النبي صلى الله عليه وسلم لفعلوه بعد موته، وإنما كانوا يتوسلون في حياته بدعائه، يطلبون منه أن يدعو لهم، وهم يؤمنون على دعائه، كما في الاستسقاء وغيره . فلما مات صلى الله عليه وسلم قال عمر رضي الله عنه – لما خرجوا يستسقون -: «اللهم إنا كنا إذا أجدبنا نتوسل إليك بنبينا فتسقينا، وإنا نتوسل إليك بعم نبينا» . معناه بدعائه هو ربه وشفاعته وسؤاله، ليس المراد أنا نقسم عليك به، أو نسألك بجاهه عندك، إذ لو كان ذلك مرادا لكان جاه النبي صلى الله عليه وسلم أعظم وأعظم من جاه العباس . ( شرح العقيدة الطحاوية، بحث : الشفاعة، 1-154 )
‘‘এবং অনেক সময় দো‘আ প্রার্থী বলে: ‘আপনার কাছে অমুকের যে সম্মান রয়েছে তার মাধ্যমে’ সে বলে ‘আমরা আপনার নিকট আপনার নবী, রাসূল ও ওলীগণকে মাধ্যম গ্রহণ করছি’, এর দ্বারা লোকটির উদ্দেশ্য, অমুক আপনার নিকট মান, সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী, তাই আপনি আমাদের দো‘আ কবুল করুন। এটাও নিষিদ্ধ। কেননা যদি সাহাবায়ে কেরাম নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবিত থাকাকালে এ ধরণের মাধ্যম গ্রহণ করতেন তবে তাঁর মৃত্যুর পরও অবশ্যই নিতেন। অথচ তিনি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবিত থাকাকালে তারা তাঁর দো‘আর মাধ্যম নিতেন। তারা তাঁর কাছে তাদের জন্য দো‘আর প্রার্থনা করতেন। তারা তাঁর দো‘আর উপর ঈমান রাখতেন, যেমন বৃষ্টি কামনা ইত্যাদির বেলায়। অতঃপর যখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা গেলেন এবং তারা বৃষ্টি কামনার দো‘আর জন্য বের হলেন, তখন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন : ‘হে আল্লাহ, যখন আমরা দুর্ভিক্ষের শিকার হতাম তোমার কাছে তোমার নবীর মাধ্যমে দো‘আ করতাম, ফলে তুমি আমাদের বৃষ্টি দিতে। এখন আমরা তোমার কাছে আমাদের নবীর চাচা (আব্বাস) এর (দো‘আর) মাধ্যম গ্রহণ করছি’। এর অর্থ হলো, তিনি আল্লাহর কাছে যে দো‘আ করেন, সুপারিশ করেন এবং প্রার্থনা করেন এর মাধ্যমে। তোমার কাছে তার শপথ এ উদ্দেশ্য নয়, অথবা আমরা তোমার কাছে প্রার্থনা করছি তার সম্মানের মাধ্যমে যা তোমার কাছে রয়েছে এটাও উদ্দেশ্য নয়। কেননা যদি এ ধরণের মাধ্যম ধরা উদ্দেশ্য হত তবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সম্মান সর্বাধিক এবং আব্বাসের সম্মান থেকে বেশি।’’ [শরহুল আক্বীদাতুত্তাহাবীয়্যাহ, প্রাগুক্ত, জুহুদুল উলামায়িল হানাফিয়্যাহ ফি ইব্তালি আক্বায়িদিল ক্বুবুরিয়্যাহ, ৩/১৫১২।]
কুরআন হাদীসের শিক্ষা অনুযায়ী এই ছিল আবু হানিফা রাহ. সহ সমস্ত আসলাফের আক্বীদা বা বিশ্বাস। সালফে সালিহিনের আক্বীদা, বিশ্বাস, আদর্শ থেকে দূরে সরে যাওয়ার ফলেই আজ আমাদের মাঝে এমন অনেক কিছু বিস্তার লাভ করেছে যা তাদের মাঝে ছিল না। তাদের আদর্শ থেকে সরে যাওয়ার ফলেই আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত থেকে সরে গেছি। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবিদের আর আমাদের আমলের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারতম্য সৃষ্টি হয়ে গেছে। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের নমূনার উপর উঠার তওফিক দান করুন। সুন্নাতের বিপরীত যে কোনো ইবাদতের বেলায় জায়েয না-জায়েযের বাহাসে লিপ্ত না হয়ে চোখ বুঁজে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি সাল্লামের সুন্নাতকে সাহাবা ও সালফে সালেহিনের মত নেয়ার তওফিক দান করুন। হক্ব বোঝার জন্য প্রথমে আমার চক্ষু এবং আমাদের চক্ষু খোলে দিন। মুফতি ফয়জুল্লাহ রাহ. রচিত কবিতার দুটি পঙক্তি দিয়ে আলোচনাটি শেষ করছি। পঙক্তিদ্বয় এই:
ھم مروج ایں دعاے خواجگاں از سلف منقول نے خوب داں
اں عبادت نیست بااں اھتمام مثل طاعت بدعت امد لا کلام
‘‘প্রচলিত এই খাজেগাঁর দো‘আও, ভালভাবে জেনে রাখ এগুলো সালাফ থেকে প্রমাণিত নয়,
এগুলো ইবাদত নয়, ইবাদতের মত এগুলোর গুরুত্ব দেওয়া নিশ্চিত বিদ‘আত।’’ [মুফতি ফয়জুল্লাহ, পান্দে নামাহ খাকী, দো‘আয়ে খাজেগাঁ অপ্রমাণিত, পৃষ্ঠা: ৩৪।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/250/17
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।