hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কবর যিয়ারত ও কবরবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন

লেখকঃ শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ

সম্মান ও মর্যাদার দ্বারা ওসীলা করা
আর তৃতীয় প্রকার হচ্ছে, এটা বলা, “হে আল্লাহ তোমার কাছে অমুকের সত্ত্বার বিনিময়ে অথবা অমুকের বরকতে অথবা আপনার কাছে অমুকের মর্যাদা দ্বারা, আমার জন্য এটা এটা কর।” এটা অধিকাংশ লোক করে থাকে। কিন্তু কোনো সাহাবী, তাবে‘ঈ ও এ উম্মাতের সালাফ বা গ্রহণযোগ্য পূর্বসূরী থেকে এটি বর্ণিত হয় নি যে তারা এ ধরনের দো‘আ করতো। আর আমার কাছে এ বিষয়ে কোনো আলেমের পক্ষ থেকে বর্ণিত হয়ে আসে নি, যা আমি পেশ করতে পারবো। তবে কেবল আমি ফকীহ আবু মুহাম্মদ ইবন আবদুস সালামের ফতোয়ায় দেখি যে, তিনি এ মর্মে ফাতওয়া দিয়েছিলেন যে, “কারোর ব্যাপারে (সত্ত্বা, বরকত, মর্যাদা ইত্যাদির মাধ্যমে চাওয়া) বৈধ নয়, তবে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে যদি হাদীসটি বিশুদ্ধ হয়, তাহলে সেটি নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত থাকবে।” বস্তুত আবু মুহাম্মাদের এ ফাতওয়ায় বর্ণিত হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে ঐ হাদীসটি যা নাসাঈ ও তিরমিযী ও অন্যান্যরা বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কোনো এক সাহাবীকে যে দো‘আ শিখিয়েছেন, সেটি। সে দো‘আটি হচ্ছে,

«اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ وَأَتَوَجَّهُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ نَبِيِّ الرَّحْمَةِ، إِنِّي تَوَجَّهْتُ بِكَ إِلَى رَبِّي فِي حَاجَتِي هَذِهِ لِتُقْضَى لِيَ، اللَّهُمَّ فَشَفِّعْهُ فِيَّ»

“হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি এবং আপনার নবীর মাধ্যমে আপনার দিকে ফিরছি, যিনি রহমাতের নবী, হে মুহাম্মদ! হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে নিয়ে আমার রবের কাছে ফিরছি; যেন তিনি আমার প্রয়োজন পূরণ করেন। হে আল্লাহ, আপনি আমার ব্যাপারে তাঁর সুপারিশ কবুল কর।” [জামে তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৭৮; সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৩৮৫।] কেননা এ হাদীস দ্বারা একদল আলেম নবীর জীবদ্দশায় ও তার মৃত্যুর পর তার দ্বারা ওসীলা করা বৈধ বলেছেন।

যারা উপর্যুক্ত হাদীস দ্বারা রাসূলের ব্যক্তিসত্ত্বার ওসীলা দেওয়া জায়েয মনে করে তারা বলে ওসীলা করা দ্বারা সৃষ্টিজীবের কাছে দো‘আ করা বুঝায় না এবং সৃষ্টিজীবের কাছে উদ্ধার কামনাও বুঝায় না; বরং এর দ্বারা একমাত্র আল্লাহর কাছে দো‘আ ও উদ্ধার কামনাই উদ্দেশ্য। তবে সেটা রাসূলের সত্ত্বার ওসীলায় চাওয়া। যেমনিভাবে সুনান ইবন মাজাহতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে বের হওয়ার সময় দো‘আ করে বলতেন,

«اللهمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِحَقِّ السَّائِلِينَ عَلَيْكَ، وَبِحَقِّ مَمْشَايَ هَذَا، أَنِّي لَمْ أَخْرُجْ أَشِرًا، وَلاَ بَطَرًا، وَلاَ رِيَاءً، وَلاَ سُمْعَةً، خَرَجْتُ اتِّقَاءَ سَخَطِكَ وَابْتِغَاءَ مَرْضَاتِكَ، أَسْأَلُكَ أَنْ تُعِيذَنِي مِنَ النَّارِ، وَأَنْ تَغْفِرَ لِي، إِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ»

“হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আপনার প্রার্থনাকারীদের অধিকারে এবং আমার এ হাটার অধিকারে চাই। কারণ, আমি তো কোনো আমার অনিষ্ট, ঔদ্ধত্য, অহংকার কিংবা সুখ্যাতির জন্য বের হই নি। আপনার অসন্তুষ্টির ভয়ে ও আপনার সন্তুষ্টি লাভের প্রত্যাশায় আমি বের হয়েছি। আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি, জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি আর আমার সকল অপরাধের ক্ষমা। কেননা আপনি ব্যতীত পাপ ক্ষমা করার কেউ নেই।” [হাদীসটির সনদ দুর্বল। সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৭৭৮; মুসনাদে আহমাদ (৩/২১)।]

তারা বলে: এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর ওপর প্রার্থনাকারীদের অধিকারের মাধ্যমে ও সালাতের দিকে তার গমনের মাধ্যমে চেয়েছেন। আর আল্লাহ তা‘আলা তার নিজের ওপর কিছু অধিকার নির্ধারণ করে নিয়েছেন। যেমন আল্লাহ বলেন,

﴿ وَكَانَ حَقًّا عَلَيۡنَا نَصۡرُ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ ٤٧ ﴾ [ الروم : ٤٧ ]

“আর মুমিনদের সাহায্য করা তো আমার ওপর তাদের অধিকার।” (সূরা আর রূম: ৪৭)

অনুরূপভাবে তাঁর বক্তব্য :

﴿ كَانَ عَلَىٰ رَبِّكَ وَعۡدٗا مَّسۡ‍ُٔولٗا ١٦ ﴾ [ الفرقان : ١٦ ]

এ প্রতিশ্রুতি পূরণ আপনার রব-এরই দায়িত্ব। [সূরা আল-ফুরকান, আয়াত: ১৬]

তদ্রূপ সহীহ বুখারী ও মুসলিমে মু‘আয ইবন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেন,

«يا مُعاذ : هَلْ تَدْري ما حَقُّ اللهِ عَلى عِبادِهِ قُلْتُ : اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ : حَقُّ اللهِ عَلى عِبادِهِ أَنْ يَعْبُدوهُ وَلا يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئاً ثُمَّ قَال : هَلْ تَدْري ما حَقُّ الْعِبادِ عَلى اللهِ إِذَا فَعَلُوهُ قُلْتُ اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ، قَالَ : حَقُّ الْعِبادِ عَلى اللهِ أَنْ لا يُعَذِّبَهُمْ»

“হে মু‘আয! তুমি কি জান, বান্দার ওপর আল্লাহর হক কী? তিনি বলেন আল্লাহ ও তার রাসূল এ সম্পর্কে অধিক জানেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বান্দার ওপর আল্লাহর হক হলো: তাঁর ইবাদত করা এবং তার সাথে কোনো কিছু শরীক না করা। তুমি কি জান যদি তারা এটা করে তবে আল্লাহর ওপর বান্দার হক কী? নিশ্চয় তার ওপর তাদের হক হলো: তাদের শাস্তি না দেওয়া।” [হাদীসটি সহীহ। সহীহ বুখারী(৬/৪৪); মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ৩০, ৪৯।]

অন্য হাদীসে এসেছে: “আল্লাহর ওপর অমুক হক রয়েছে।” যেমন, তার বাণী:

مَنْ شَرِبَ الْخَمْرَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ، فَإِنْ تَابَ تَابَ الله عَلَيْهِ ، فَإِنْ عَادَ الثَّانِيَةَ لَمْ تُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ، فَإِنْ تَابَ تَابَ الله عَلَيْهِ ، فَإِنْ عَادَ الثَّالِثَةَ لَمْ يُقْبَلْ لَهُ صَلاَةٌ أَرْبَعِينَ يَوْمًا ، فَإِنْ تَابَ تَابَ الله عَلَيْهِ ، فَإِنْ عَادَ الرَّابِعَةَ لَمْ يُقْبَلْ لَهُ تَوْبَةٌ ، وَكَانَ حَقًّا عَلَى الله عَزَّ وَجَلَّ أَنْ يَسْقِيَهُ مِنْ طِينَةِ الْخَبَالِ ، قِيلَ : مَا طِينَةُ الْخَبَالِ ؟ قَالَ : عُصَارَةُ أَهْلِ النَّارِ .

“যে ব্যক্তি মদ পান করে, চল্লিশ দিন পর্যন্ত তার সালাত কবুল করা হবে না। যদি সে তাওবা করে তবে আল্লাহ তার তাওবাহ কবুল করেন। অতঃপর যদি পুনরায় পান করে, তবে পুনরায় চল্লিশ দিন তার সালাত কবুল করা হবে না। অতঃপর যদি পুনরায় তৃতীয়বার অথবা চতুর্থবার পান করে তখন আল্লাহর দায়িত্ব হলো তাকে ত্বীনাতুল খাবাল পান করানো।” জিজ্ঞেস করা হলো ‘ত্বীনাতুল খাবাল” কী? তিনি বলেন “জাহান্নামীদের পুঁজ।” [জামে তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৬৩; মুসনাদে আহমাদ (২/৫৩)।] (এ হচ্ছে একদল লোকের বক্তব্য, যারা রাসূলের সত্ত্বা দিয়ে ওসীলা করা জায়েয মনে করে থাকে) কিন্তু অপর দল আলেমের বক্তব্য হলো:

«اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ وَأَتَوَجَّهُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّكَ مُحَمَّدٍ نَبِيِّ الرَّحْمَةِ، إِنِّي تَوَجَّهْتُ بِكَ إِلَى رَبِّي فِي حَاجَتِي هَذِهِ لِتُقْضَى لِيَ، اللَّهُمَّ فَشَفِّعْهُ فِيَّ»

“হে আল্লাহ আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি এবং আপনার নবীর মাধ্যমে আপনার দিকে ফিরছি, যিনি রহমাতের নবী, হে মুহাম্মাদ! হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে নিয়ে আমার রবের কাছে ফিরছি; যেন তিনি আমার প্রয়োজন পূরণ করেন। হে আল্লাহ, আপনি আমার ব্যাপারে তাঁর সুপারিশ কবুল কর।” [জামে তিরমিযী, হাদীস নং ৩৫৭৮; সুনান ইবন মাজাহ, হাদীস নং ১৩৮৫।] এ হাদীস দ্বারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর এবং তার অনুপস্থিতিতে তাঁর ওসীলা ধরা জায়েয প্রমাণিত হয় না। বরং এ হাদীস দ্বারা কেবল রাসূলের জীবদ্দশায় তাঁর উপস্থিতিতে ওসীলা করার বৈধতা সাব্যস্ত হচ্ছে। যেমনটি সহীহ বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে,

«اللهم إنا كنا إذا أجدبنا نتوسل إليك بنبينا فتسقينا وإنا نتوسل إليك بعم نبينا فاسقنا»

“হে আল্লাহ! আমরা যখন অনাবৃষ্টিতে পতিত হতাম তখন আমরা তোমার নিকট আমাদের নবীর দো‘আর মাধ্যমে প্রার্থনা করতাম। ফলে আমাদের বৃষ্টি দেওয়া হতো। আর এখন আমরা তোমার নিকট আমাদের নবীর চাচার দো‘আর মাধ্যমে চাচ্ছি। সুতরাং আমাদের বৃষ্টি দিন, ফলে বৃষ্টি বর্ষিত হতো।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ১০১০; ইবনু হিব্বান, হাদীস নং ২৮৫০।]

আর এ ওসীলা হচ্ছে, তারা রাসূলের চাচার কাছে চাইতো যে, তিনি যেন তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দো‘আ করেন, ফলে তিনি তাদের জন্য দো‘আ করতেন এবং তারাও তার সাথে দো‘আ করতেন। আর তার সুপারিশ ও দো‘আ দ্বারা ওসীলা করতেন। যেমনিভাবে সহীহ বুখারীতে আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত আছে: কোনো এক ব্যক্তি জুম‘আর দিনে বিচারালয়ের পার্শ্বস্থ দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করল, আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান হয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। অতঃপর লোকটি দাঁড়িয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দিকে অগ্রসর হলেন এবং বললেন,

«يا رسول الله هلكت الأموال وانقطعت السبل فادع الله يمسكها عنا قال فرفع رسول الله صلى الله عليه وسلم يديه ثم قال اللهم حوالينا ولا علينا اللهم على الآكام والظراب وبطون الأودية ومنابت الشجرة»

“হে আল্লাহর রাসূল! সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে এবং পথ-ঘাট নষ্ট হয়ে গেছে। সুতরাং আপনি আমাদের জন্য দো‘আ করুন যেন আমাদের থেকে তা দুর হয়ে যায়। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর হাত উত্তোলন করলেন। অতঃপর বললেন, “হে আল্লাহ আমাদের ওপর নয়, আমাদের আশে পাশে বৃষ্টি দিন, হে আল্লাহ উঁচু ভূমিতে, পাহাড়ে, উপত্যকার কোলে ও বনাঞ্চলে বর্ষন করুন।” [সহীহ বুখারী,(২/৫১,৫২,৩৬), মুসনাদে আহমাদ, হহাদীস নং ৮৯৭, সুনান আবু দাউদ,হাদিস নং ১১৭৪/১১৭৫।] বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আমরা সুর্যের মধ্যে বের হলাম। এ হাদীসের মধ্যে তিনি বলেছেন, “আপনি আমাদের জন্য দো‘আ করুন যেন আমাদের থেকে তা দুর হয়ে যায়।” (যা দ্বারা বুঝা গেলো যে, তা দো‘আ ছিল, ব্যক্তিসত্ত্বার দ্বারা ওসীলা করা নয়)

আর সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে, আবদুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমার মনে পড়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ব্যাপারে আবু তালিবের বক্তব্য, তিনি বলেছিলেন,

«وَأَبْيَضَ يُسْتَسْقَى الغَمَامُ بِوَجْهِهِ ... ثِمَالُ اليَتَامَى عِصْمَةٌ لِلْأَرَامِلِ»

“আর তিনি শুভ্র, তাঁর চেহারার বিনিময়ে বৃষ্টি লাভ হয়, তিনি ইয়াতিমদের ভারবহনকারী এবং বিধবাদের আশ্রয়স্থল”।

সুতরাং এটা ছিল বৃষ্টি ও অনুরূপ কাজে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্বারা তাদের ওসীলা গ্রহণ; কিন্তু এটা কেবল তার জীবদ্দশাতেই ছিল, তার মৃত্যুর পরে তারা আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর দ্বারা সে রকম ওসীলা করেছিলেন, যে রকম ওসীলা ও বৃষ্টি প্রার্থনা তারা ইতোপূর্বে রাসূলের দ্বারা করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুর পর তারা তার কাছে আর কোনো প্রার্থনা করেন নি। তার অনুপস্থিতিতেও নয়, তার কবরের নিকটও নয় এবং অন্য কোনো কবরেও করেন নি।

অনুরূপভাবে মুয়াবিয়া ইবন আবু সুফিয়ান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার সময়ে ইয়াযিদ ইবন আসওয়াদ আল জুরাশীর মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য দো‘আ করতেন। আর তিনি বলতেন, “হে আল্লাহ, আমরা আমাদের উত্তম ব্যক্তি দ্বারা আপনার নিকট শাফায়াত চাচ্ছি। হে ইয়াযীদ আল্লাহর দিকে তোমার হাত উত্তোলন কর। ফলে তিনি তার হাত উত্তোলন করলেন এবং দো‘আ করলেন। আর তারাও তার সাথে দো‘আ করল, ফলে বৃষ্টি হলো।”

এ কারণে আলেমগণ বলেন, ভাল ও কল্যাণময় ব্যক্তির মাধ্যমে বৃষ্টির প্রার্থনা করা মুস্তাহাব। অতঃপর যখন সেখানে আহলে বাইতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাওয়া যায় তখন তা হবে অধিক উত্তম; কিন্তু কোনো আলেমই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সৎকর্মপরায়ন ব্যক্তির মৃত্যুর পর বা তার অনুপস্থিতে ওসীলা করা ও বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করা শরী‘আতসম্মত বলে উল্লেখ করেন নি। আর তারা কোনো বৃষ্টি প্রার্থনা, কিংবা বিপদাপদে সাহায্য চাওয়া বা অন্যান্য কোনো দো‘আর ক্ষেত্রেই এ ধরনের ওসীলা করা মুস্তাহাব বলেন নি। অথচ ‘দু‘আ হচ্ছে ইবাদতের সার।

আর ইবাদতের ভিত্তি হলো সুন্নাহ ও অনুসরণ। প্রবৃত্তি ও নব আবিস্কার নয়। একমাত্র যা শরী‘আহসম্মত তা দ্বারাই ইবাদত করা যাবে। প্রবৃত্তি ও নব আবিস্কার দ্বারা ইবাদত করা যাবে না। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿أَمۡ لَهُمۡ شُرَكَٰٓؤُاْ شَرَعُواْ لَهُم مِّنَ ٱلدِّينِ مَا لَمۡ يَأۡذَنۢ بِهِ ٱللَّهُ﴾ [ الشورا : ٢١ ]

“নাকি তাদের এমন কতগুলো শরীক রয়েছে, যারা এদের জন্য দীন থেকে শরী‘আত প্রবর্তন করেছে, যার অনুমতি আল্লাহ দেন নি?” [সূরা আশ-শুরা, আয়াত: ২১]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন,

﴿ٱدۡعُواْ رَبَّكُمۡ تَضَرُّعٗا وَخُفۡيَةًۚ إِنَّهُۥ لَا يُحِبُّ ٱلۡمُعۡتَدِينَ ٥٥﴾ [ الاعراف : ٥٥ ]

“তোমরা বিনিতভাবে ও গোপনে তোমাদের রবকে ডাক; নিশ্চয় তিনি সীমালংঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৫৫]

আর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«سيكون بعدي قوم من هذه الأمة يعتدون في الدعاء والطهور»

“অচিরেই আমার উম্মতের মধ্যে এক সম্প্রদায় হবে যারা দো‘আ ও পবিত্রতার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন করবে। [আবু দাউদ, হাদীস নং ৯৬; বায়হাকি (১/১৯৭)।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন