HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কীভাবে আপনি জান্নাত লাভ করবেন

লেখকঃ ইউসুফ ইবন মুহাম্মাদ আল ‘উয়াইয়েদ

যে সকল সহজ আমল জান্নাতে প্রবেশের কারণ ও উপায়, তন্মধ্যে রয়েছে:
১. রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক কিছু সরিয়ে দেওয়া, জন্তু জানোয়ারের প্রতি করুণা করা, উত্তম চরিত্র, কথা ও কাজে সততা, ক্রোধ সংবরণ করা এবং রাগ না করা, রোগী দেখতে যাওয়া ও সেবা করা, মুসলিম ভাইদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করা, বেচা-কেনার ক্ষেত্রে উদার হওয়া এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির মানদণ্ডে কথা বলা।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

«لقد رأيت رجلا يتقلب في الجنة في شجرة قطعها من ظهر الطريق كانت تؤذي الناس» .

“আমি একজন লোককে জান্নাতে এপাশ ওপাশ করতে দেখেছি রাস্তার উপর থেকে একটি গাছ কেটে ফেলার কারণে যার দরূন মানুষের চলাফেরায় কষ্ট হতো”। [সহীহ মুসলিম।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেন:

«أن رجلا رأى كلبا يأكل الثرى من العطس، فأخذ الرجل خفه فجعل يغرف له به حتى أرواه، فشكر الله له فأدخله الجنة» .

“এক ব্যক্তি একটি কুকুরকে পিপাসায় মাটি চাটতে দেখে। অতঃপর লোকটি নিজের মোজার সাহায্যে কুকুরটিকে পানি পান করালো। ফলে আল্লাহ তাকে প্রতিদান দিলেন এবং জান্নাত দান করলেন”। [সহীহ বুখারী।]

আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমি জান্নাতের আঙ্গিনায় এমন একটি ঘরের গ্যারান্টিদাতা, যে ঘরটি ঐ ব্যক্তির জন্য হবে, হকদার হওয়া সত্ত্বেও যে ঝগড়া করে না। অনুরূপভাবে আমি জান্নাতের মাঝে ঐ ঘরেরও গ্যারান্টিদাতা, যে ঘরটি ঐ ব্যক্তির জন্য, যে ঠাট্টা করেও মিথ্যা বলে না। তদুপরি জান্নাতের উপরিভাগের ঐ ঘরেরও আমি জামিনদার, যে ঘরটি হবে উত্তম চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তির জন্য”। [আবু দাউদ এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী একে সহীহ বলেছেন।]

আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«إن الصدق يهدي إلى البر وإن البر يهدي إلى الجنة، وإن الرجل ليصدق حتى يكون صديقا، وإن الكذب يهدي إلى الفجور، وإن الفجور يهدي إلى النار، وإن الرجل ليكذب حتى يكتب عند الله كذابا» .

“নিঃসন্দেহে সততা পূণ্যের দিকে পথ দেখায়। আর পূণ্য জান্নাতের দিশা দেয়। একজন ব্যক্তি সত্য বলতে বলতে সত্যবাদী হয়ে যায়। পক্ষান্তরে মিথ্যা কথা খারাপ ও গুনাহের দিকে ঠেলে দেয়। আর গুনাহ ও পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। একজন ব্যক্তি মিথ্যা বলতে থাকে। এভাবে সে আল্লাহর নিকট মিথ্যাবাদী বলে লিখিত হয়ে যায়”। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]

আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বললেন:

«دُلَّنِي عَلَى عَمَلٍ يُدْخِلُنِي الْجَنَّةَ، قَالَ :" لا تَغْضَبْ، وَلَكَ الْجَنَّة»

“আমাকে এমন একটি আমল শিক্ষা দিন যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ক্রোধান্বিত হয়ো না, তাহলে জান্নাতে যাবে।” [তাবারানী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ عَادَ مَرِيضًا لَمْ يَزَلْ فِى خُرْفَةِ الْجَنَّةِ حَتَّى يَرْجِعَ»

“যে ব্যক্তি কোনো রুগীকে দেখতে গেল, সে ফিরে না আসা পর্যন্ত জান্নাতের ফল কুড়ানো অবস্থায় থাকে”। [সহীহ মুসলিম।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«مَنْ عَادَ مَرِيضًا أَوْ زَارَ أَخًا فِي اللهِ ، نَادَى مُنَادٍ مِنَ السَّمَاءِ : طِبْتَ، وَطَابَ مَمْشَاكَ ، وَتَبَوَّأْتَ مِنَ الْجَنَّةِ مَنْزِلاً»

“যে ব্যক্তি কোনো রুগীকে দেখতে গেল অথবা আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোনো ভাইকে দেখতে গেল, তখন একজন আহ্বানকারী তাকে ডেকে বলে: তোমার ও তোমার চলার পথ কল্যাণময় হোক, সুন্দর হোক। তুমি জান্নাতে তোমার বাসস্থান করে নিয়েছ”। [ইবন মাজাহ, তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী অন্যান্য হাদীসের সমর্থনে একে সহীহ বলেছেন।]

উসমান ইবন আফফান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أدخل الله عز و جل الجنة رجلا كان سهلا مشتريا وبائعا وقاضيا ومقتضيا»

“আল্লাহ তা‘আলা এমন এক ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যে বেচা-কেনায়, বিচার ফয়সালা করায় এবং বিচার চাওয়ায় সরলতা অবলম্বন করেছে”। [ইমাম আহমাদ ও নাসাঈ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী একে উত্তম বলেছেন। আর আহমাদ শাকির এর সনদকে সহীহ বলেছেন।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টির মানদণ্ডে কথা বলে, এ ব্যাপারে কোনো ভ্রূক্ষেপ করে না। একথার দরূন আল্লাহ তার মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। অন্যদিকে যে ব্যক্তি আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক কথা বলে অথচ এ ব্যাপারে ভ্রূক্ষেপও করে না, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করেন”। [সহীহ বুখারী।]

২. জান্নাতের মধ্যে মুসলিম ব্যক্তির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও সুন্দর স্থান হলো যে ব্যক্তি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথী হবে। আর কন্যাদের সঠিক শিক্ষাদান ও লালন পালন করা এবং ইয়াতীমের দায়িত্ব গ্রহণ করা জান্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সান্নিধ্য পাওয়া ও তাঁর প্রতিবেশী হওয়ার সুনিশ্চিত কারণ।

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«من عال جاريتين حتى تبلغا جاء يوم القيامة أنا وهو، وضم أصابعه» .

“যে ব্যক্তি দু’ কন্যাকে সাবালিকা হওয়া পর্যন্ত লালন পালন করে, কিয়ামতের দিন আমি ও সে একত্রে থাকব”, এই বলে তিনি তাঁর দু’ আঙ্গুলকে একত্র করে দেখালেন। [সহীহ মুসলিম।]

সহল ইবন সা‘দ থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«أَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ فِي الْجَنَّةِ هَكَذَا وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا شَيْئًا»

“আমি এবং ইয়াতীমের অভিভাবক জান্নাতে এভাবে থাকব”। এ কথা বলে তিনি শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুল দু’টোকে একত্রে মিলিয়ে দু’টোর মাঝে একটু ফাঁক রাখলেন”। [সহীহ বুখারী]

৩. পিতামাতা উভয়ের প্রতি অথবা যে কোনো একজনের প্রতি সদ্ব্যবহার করাও জান্নাতে যাওয়ার উপায়। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি:

«رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ ثُمَّ رَغِمَ أَنْفُ . قِيلَ مَنْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ مَنْ أَدْرَكَ أَبَوَيْهِ عِنْدَ الْكِبَرِ أَحَدَهُمَا أَوْ كِلَيْهِمَا فَلَمْ يَدْخُلِ الْجَنَّةَ»

“ঐ ব্যক্তির নাক ধুলো মলিন হোক (৩ বার) অর্থাৎ সে ধ্বংস হোক। প্রশ্ন করা হলো: হে আললাহর রাসূল! কোনো ব্যক্তির? তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জবাব দিলেন: “যে ব্যক্তি পিতামাতাকে অথবা তাদের যে কোনো একজনকে বৃদ্ধ অবস্থায় পেল, তারপরও জান্নাতে যেতে পারলো না”। [সহীহ মুসলিম।]

আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “পিতা হলো জান্নাতের মাঝের দরজা। তুমি চাইলে এ দরজার হিফাযত করতে পার অথবা হারাতে পার”। [তিরমিযী, ইবন মাজাহ ও আহমাদ এটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী একে সহীহ বলেছেন।]

জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলো। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার মা আছে কিনা জিজ্ঞাসা করলো। লোকটি বললো: জী, আমার মা আছেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তুমি সার্বক্ষণিক তার দেখাশুনা কর। কেননা তার পায়ের নিকটেই জান্নাত রয়েছে”। [আহমাদ, নাসাঈ ও ইবন মাজাহ এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী একে উত্তম ও সহীহ বলেছেন।]

৪. মানুষের সবচেয়ে বড় কাজ হলো তার জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হিফাযত করা। সুতরাং যে ব্যক্তি এ দু'টো হিফাযতের দায়িত্ব নিবে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জান্নাতের ব্যাপারে দায়িত্ব নিবেন। সহল ইবন সা‘দ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«من يضمن لي ما بين لحييه وما بين رجليه أضمن له الجنة» .

“যে ব্যক্তি তার দুই চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্বা) এবং দু’ পায়ের মধ্যখানের (লজ্জাস্থান) হিফাযতের গ্যারান্টি দিবে, আমি তার জান্নাতের ব্যাপারে গ্যারান্টি দেব”। [সহীহ বুখারী।]

৫. মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাক্ষীস্বরূপ। সুতরাং মানুষ যার পক্ষে ভাল সাক্ষ্য দেয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করে।

আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা একটি লাশের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় তার ভাল প্রশংসা করা হলো। তখন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: “ওয়াজিব হলো, ওয়াজিব হলো, ওয়াজিব হলো”। অনুরূপভাবে আরো একটি লাশের পাশ দিয়ে অতিক্রম করা হল। এটি সম্পর্কে খারাপ বর্ণনা করা হলো। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, “ওয়াজিব হলো” (৩ বার)। এরপর উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এর কারণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন: “তোমরা যার ভালো প্রশংসা কর, তার জন্য জান্নাত অপরিহার্য হয়ে যায়। আর তোমরা যার খারাপ বর্ণনা কর, তার জন্য জাহান্নাম অপরিহার্য হয়ে যায়। তোমরা পৃথিবীতে আল্লাহর সাক্ষী” (৩ বার বললেন)। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম]

৬. আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿إِنَّمَا يُوَفَّى ٱلصَّٰبِرُونَ أَجۡرَهُم بِغَيۡرِ حِسَابٖ ١٠﴾ [ الزمر :10]

“নিশ্চয় সবরকারীগণকে বেহিসাবী প্রতিদান দেওয়া হয়”। [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ১০]

তাই সবর হলো আল্লাহর প্রতি বান্দার ঈমান এবং তাঁর নৈকট্যের আলামতসমূহের একটি আলামত। সুতরাং যে ব্যক্তি তার প্রিয়জন যথা: সন্তান, ভাই-বেরাদার ইত্যাদির মৃত্যুতে ধৈর্য্য ধারণ করে, সে জান্নাতী।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى مَا لِعَبْدِي الْمُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءٌ إِذَا قَبَضْتُ صَفِيَّهُ مِنْ أَهْلِ الدُّنْيَا ثُمَّ احْتَسَبَهُ إِلاَّ الْجَنَّة»

“আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমার মুমিন বান্দার নিকট থেকে যখন তার অতি প্রিয়জনের জান কবয করা হয়, আর সে আল্লাহর নিকট সাওয়াবের আশা করে ধৈর্য্যধারণ করে, তার প্রতিদান আমার নিকট জান্নাত ছাড়া আর কিছু নয়”। [সহীহ বুখারী।]

আবু মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যখন কোনো বান্দার সন্তান মারা যায়, তখন আল্লাহ তাঁর ফিরিশতাদের জিজ্ঞাসা করেন: তোমরা কি আমার বান্দার সন্তানের জান কবজ করেছো? তারা বলেন, হ্যাঁ। আল্লাহ বলেন, তোমরা কি তার কলিজার টুকরার জান কবজ করেছো? তারা বলেন, হ্যাঁ। আল্লাহ আবার বলেন, আমার বান্দা কি বললো? ফিরিশতারা জবাব দেন, সে আল্লাহর প্রশংসা করেছে এবং বলেছে: ( إنا لله وإنا إليه راجعون ) ‘নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর দিকেই আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হবে’। আল্লাহ তখন বলেন, তোমরা আমার বান্দার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ কর এবং এ ঘরটির নাম দাও ‘বায়তুল হামদ’ বা প্রশংসার ঘর”। [তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী উত্তম বলেছেন।]

৭. যে ব্যক্তি অন্ধ হয়েও ধৈর্য্য ধারণ করে সে জান্নাতে যাবে। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমার বান্দাকে তার দু’টি প্রিয় বস্তু (অর্থাৎ চোখ) কেড়ে নিয়ে পরীক্ষা করি। অতঃপর সে ধৈর্য্যধারণ করে। আমি এ দু’টোর পরিবর্তে তাকে জান্নাত দান করি”। []

৮. যে মুসলিম নারী সৎ কাজে তার স্বামীর আনুগত্য করে এবং আল্লাহর হুকুম আহকাম পালন করে, সে জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করবে।

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যদি কোনো মহিলা পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমযানের সাওম পালন করে, লজ্জাস্থানের হিফাযত করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে, সে জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করবে”। [ইবন হিব্বান এটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী একে সহীহ বলেছেন।]

৯. মুসলিম মহিলা প্রসবের সময় মারা গেলে তার সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সাথে সাথে তার প্রসব বেদনা তাকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়।

রাশেদ ইবন হুবাইশ থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহর পথে নিহত ব্যক্তি শহীদ, প্লেগ রোগে মারা যাওয়া ব্যক্তি শহীদ, ডুবে মরে যাওয়া ব্যক্তি শহীদ, পেটের পীড়ায় মারা যাওয়া ব্যক্তি শহীদ, আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ব্যক্তি শহীদ, অসুস্থ অবস্থায় মৃত ব্যক্তি শহীদ এবং সন্তান প্রসবের পর নেফাস অবস্থায় মৃত মহিলা, তার সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার কারণে সে জান্নাতে চলে যায়”। [আহমাদ হাদীসটি বর্ননা করেছেন, আলবানী একে উত্তম বলেছেন।]

১০. যে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বিরত থাকলো আল্লাহর রাসূল তাকে জান্নাতে নেওয়ার জামিন হলো। সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«من تكفل لي أن لا يسأل الناس شيئا أتكفل له بالجنة» .

“যে ব্যক্তি মানুষের নিকট হাত না পাতার দায়িত্ব নিবে, আমি তাকে জান্নাতে নেওয়ার দায়িত্ব নেব”। [আহমাদ, নাসাঈ, ইবন মাজাহ ও আবু দাউদ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী একে সহীহ বলেছেন।]

১১. যে ব্যক্তি নিজের সম্পত্তি রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয়, সেও জান্নাতী। আবদুল্লাহ ইবন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«من قتل دون ماله مظلوما فله الجنة» .

“যে ব্যক্তি সম্পদ রক্ষার নিমিত্তে নিপীড়িত হয়ে মারা যায়, তার জন্য রয়েছে জান্নাত”। [নাসাঈ এটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

১২. প্রিয় পাঠক! আপনার জন্য রয়েছে জান্নাত, যদি আপনি সালাম প্রচার করেন, অন্যকে খাদ্য দান করেন, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখেন এবং রাতের বেলা মানুষ ঘুমিয়ে গেলে সালাত আদায় করেন।

আবদুল্লাহ ইবন সালাম থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “হে মানব সকল! তোমরা সালামের প্রসার কর, খাদ্য প্রদান কর, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখ এবং মানুষ ঘুমিয়ে গেলে রাতের সালাত আদায় কর। তাহলে নিরাপদে জান্নাতে যেতে পারবে”। [তিরমিযী, ইবন মাজাহ, আহমাদ ও হাকেম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

শুরাইহ ইবন হানী তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন: “হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন বিষয়ে অবহিত করুন যা আমার জান্নাতে যাওয়াকে নিশ্চিত করবে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেন: তুমি সর্বদা উত্তম কথা বলবে এবং খাদ্য দান করবে”। [বুখারী আদাবুল মুফরাদে এবং হাকেম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

১৩. যে ব্যক্তি অহংকার, ঋণ ও যুদ্ধে লব্ধ গণীমতের মালের খেয়ানত থেকে মুক্ত অবস্থায় মারা যাবে, সে জান্নাতে যাবে। সাওবান রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যে ব্যক্তি অহংকার, গণীমতের সম্পদে খেয়ানত করা এবং ঋণ থেকে মুক্ত অবস্থায় মারা গেল, সে জান্নাতে প্রবেশ করলো”। [তিরমিযী, নাসাঈ ও ইবন মাজাহ এটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

১৪. আল্লাহর কিতাব ও রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাতকে অবলম্বন করে যারা মুসলিম জামায়াতকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবে, তারা জান্নাতের মধ্যবর্তী স্থানে প্রবেশ করবে। উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমাদের জন্য ইসলামী জামা‘আতকে আঁকড়ে ধরা অপরিহার্য। আর বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে বেঁচে থাক। কেননা একা একা থাকলে শয়তান তার সঙ্গী হয়। আর জামা‘আতবদ্ধ দু’ ব্যক্তি থেকে শয়তান অনেক দূরে অবস্থান করে। যে ব্যক্তি জান্নাতের মধ্যবর্তী স্থান পাওয়ার আশা করে, সে যেন অবশ্যই ইসলামী জামা‘আতকে আঁকড়ে ধরে”। [তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

১৫. ন্যায়পরায়ণ শাসক, কোমল হৃদয়ের অধিকারী দয়ালু ব্যক্তি এবং চরিত্রবান ও সুরুচিপূর্ণ পরিবার প্রধান জান্নাতবাসীদের অন্তর্গত। ইয়ায ইবন হিমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তিনশ্রেণির লোকেরা জান্নাতবাসী হবে। এক. ন্যায়পরায়ণ, দাতা ও আল্লাহর তাওফীকপ্রাপ্ত শাসক, দুই. দয়ালু ব্যক্তি যার অন্তর প্রতিটি আত্মীয় ও মুসলিমের জন্য কোমল, এবং তিন. সুরুচিপূর্ণ চরিত্রবান পরিবার প্রধান”। [সহীহ মুসলিম।]

১৬. যে বিচারক ন্যায় ও ইনসাফের সাথে মানুষের বিচার ফয়সালা করে, সে জান্নাতী। বুরাইদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, “বিচারকগণ তিন প্রকার। দুই শ্রেণির বিচারক হবে জাহান্নামী আর এক শ্রেণির বিচারক হবে জান্নাতী। যে ব্যক্তি সত্য জেনে সে অনুযায়ী ফয়সালা করলো, সে জান্নাতী। অন্য দিকে যে ব্যক্তি না জেনে মূর্খতাবশতঃ ফয়সালা দেয়, সে জাহান্নামী। আর যে ব্যক্তি সত্য জানার পরও যুল্ম করলো, সে জাহান্নামী”। [আবু দাউদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবন মাজাহ ও হাকেম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

১৭. সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে, তারা হল যারা কারো নিকট ঝাড়-ফুঁক চায় নি, পাখি দ্বারা ভাগ্য নির্ণয় করে নি এবং কারো নিকট বিশেষ চিকিৎসা চায় নি।

ইমরান ইবন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “আমার উম্মাতের মধ্যে ৭০ হাজার হিসাব ছাড়াই জান্নাতে প্রবেশ করবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তারা কারা? নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তারা হলো যারা কারো নিকট ঝাড়-ফুঁক চায় না, পাখির সাহায্যে ভাগ্য নির্ধারণ করে না, কারো নিকট বিশেষ চিকিৎসার জন্য যায় না। বস্তুতঃ তারা তাদের প্রতিপালকের উপর ভরসা করে”। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]

লক্ষ্যণীয় যে, শরী‘আতসম্মত ঝাড়-ফুঁক এবং বিশেষ চিকিৎসা করা শরী‘আতে নিষিদ্ধ নয়। কিন্তু আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ ভরসা করা উত্তম।

১৮. কতগুলো গুণ ও বৈশিষ্ট্য কোনো মুসলিম ব্যক্তির মধ্যে অর্জিত হলে এগুলোর কারণে সে জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভূক্ত হবে।

উবাদাহ ইবন সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা তোমাদের নিজেদের মধ্যে ৬টি গুণ অর্জনের জামিন হও, আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের জামিন হবো। এক. কথা বলার সময় সত্য বলবে, দুই. ওয়াদা করে তা পূরণ করবে, তিন. তোমাদের নিকট আমানাত রাখা হলে সে আমানাত আদায় করবে, চার. লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে, পাঁচ. দৃষ্টিকে সংযত রাখবে, ছয়. তোমদের হাতকে অন্যায় করা থেকে বিরত রাখবে”। [আহমাদ, ইবনু হিব্বান ও হাকিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন এবং আলবানী সহীহ বলেছেন।]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তোমাদের মধ্যে আজ কে সাওম পালন করেছো? আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমাদের মধ্যে আজ কে জানাযার অনুসরণ করেছো? আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমাদের কে আজ মিসকীনকে খাদ্য দান করেছো? আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় বললেন: তোমাদের মধ্যে কে আজ রুগীর সেবা করেছো? আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি। অতঃপর রাসূল সাল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: উপরোক্ত গুণাবলী যে ব্যক্তির মধ্যে একত্রিত হবে সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে”। [সহীহ বুখারী ও মুসলিম।]

প্রিয় পাঠক! পরিশেষে আপনাকে তাওবার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। বস্তুতঃ গুনাহ থেকে তাওবাকারী নিষ্পাপ, যার কোনো গুনাহ নেই। আল্লাহর নিকট খাঁটি তাওবাকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে। মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ تُوبُوٓاْ إِلَى ٱللَّهِ تَوۡبَةٗ نَّصُوحًا عَسَىٰ رَبُّكُمۡ أَن يُكَفِّرَ عَنكُمۡ سَيِّ‍َٔاتِكُمۡ وَيُدۡخِلَكُمۡ جَنَّٰتٖ تَجۡرِي مِن تَحۡتِهَا ٱلۡأَنۡهَٰرُ ﴾ [ التحريم :8 ]

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট নিষ্ঠাপূর্ণ খাঁটি তাওবা কর। আশা করা যায় তোমাদের রব তোমদের সকল ত্রুটি বিচ্যুতি মিটিয়ে দেবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার তলদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত”। [সূরা আত-তাহরীম, আয়াত: ৮]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন