HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
আল কোরআন ও আধুনিক যুগের চাহিদা
লেখকঃ জহির উদ্দিন বাবর
২
আল কোরআন ও আধুনিক যুগের চাহিদাপ্রতিটি মানুষের ভেতরেই এই প্রশ্নটি ঘুরপাক খায় যে, বর্তমান যুগের চাহিদার প্রেক্ষিতে কোরআনুল কারীমের যথার্থতা কতটুকু। কেউ কেউ এ ভাবনায় বিভোর হয়ে কূল-কিনারা না পেয়ে থমকে যান। কারণ দীর্ঘদিন যাবত ইসলামবিদ্বেষীরা কোরআনুল কারীমের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে কোরআনী নেজামকে সেকেলে ও আধুনিক যুগে অকেজো বানিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত। অথচ বাস্তবতা হলো, কোরআনুল কারীম শুধু বর্তমান যুগই নয় ভবিষ্যতের যাবতীয় প্রয়োজন পূরণ করার মতো যথেষ্ট যোগ্যতা রাখে। কোরআনের বর্ণনা ধারার অলৌকিকত্ব এবং বিষয়বস্ত্তর দিক থেকে তুলনাহীন হওয়ার ব্যাপারে কারো কোনো দ্বিমত নেই। আল্লাহর চিরন্তন ঘোষণা ‘লা রাইবা ফী-হ’ নেই কোনো সন্দেহ তাতে-এর সত্যতাও প্রশ্নাতীত। কোরআনুল কারীম সমগ্র মানবতার জন্য একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। আজকের আনবিক যুগের প্রয়োজনও কোরআন যথার্থভাবে পূরণ করতে সক্ষম। তবে শর্ত হলো, কোরআন নাজিলের শান ও গুরুত্ব আমাদের মাঝে বদ্ধমূল হতে হবে। এমন যেন না হয়-আমরা নিজেরা পরিবর্তন হই না বরং কোরআনকেই পাল্টিয়ে দিই।
কোরআন নাজিলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
এটা একটা স্বীকৃত বিষয় যে, বর্তমান যুগে মুসলমানরা জাতি হিসেবে, বিশেষত মুসলমানদের যুবক শ্রেণীটি যারা প্রত্যেক যুগে জাতির ভাগ্যকে আলোকিত করে, কোরআনুল কারীমের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা নিজেরাই যুগের ধর্মদ্রোহী থাবার শিকার। অন্যদেরকেও তারা নিজেদের ফাঁদে আটকে দিতে তৎপর। সাধারণত কিতাবুল্লাহকে হেদায়াত ও আমলের জন্য নয় বরং নিছকই গতানুগতিক বরকত হাসিলের জন্য তেলাওয়াত করা হয়। আল্লামা ইকবাল যথার্থই বলেছেন, ‘আজকের মুসলমান কোরআনী হিকমত অনুযায়ী জীবনকে সাজায় না, সূরা ইয়াসীন জাতীয় কিছু আয়াত শুধু এজন্যই পড়া হয় যে, এর দ্বারা রোগীর আরোগ্য লাভ হয়।’
এটা তো গেল সাধারণ মুসলমানদের কথা। আপনি যদি উম্মাহর বিশেষ শ্রেণী তথা ওলামায়ে কেরামের কথা আলোচনা করেন তাহলে দেখবেন কিছুসংখ্যক আলেম কোরআনকে শুধুই কয়েকটি মতবিরোধপূর্ণ মাসায়েল সমাধানের আঙ্গিকে উপস্থাপন করে থাকে। অথচ কোরআনুল কারীম তার নাজিলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিজেই স্পষ্টভাবে বলছে,
(আরবি)
‘হে নবী! আপনার প্রতি এই বরকতপূর্ণ কিতাব নাজিল করেছি যাতে লোকেরা এর আয়াতসমূহে চিন্তা-ভাবনা করে এবং জ্ঞানীরা যেন তা থেকে শিক্ষা হাসিল করে।’ (সূরা সদ : ২৯)
এই আয়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এই কোরআন যা আল্লাহর এক বরকতময় কিতাব তাকে গভীর চিন্তা-ভাবনা ও মনোযোগের সঙ্গে পড়বে। তা থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখবে না। এটাকে মতবিরোধপূর্ণ মাসআলার একমাত্র সমাধান মনে করবে না। পারস্পরিক বিরোধ সৃষ্টির মাধ্যম বানাবে না। বরং এর মূল বিষয়বস্ত্ত, হিকমতপূর্ণ আহকাম এবং এর রূহ বুঝার চেষ্টা করবে। কোরআনুল কারীম সংবাদ দিচ্ছে, এই পবিত্র কিতাব মতবিরোধ, সংঘাত, বিভেদ ও বৈপরীত্বের ঊর্ধ্বে। যেমন পঞ্চম পারায় বলা হয়েছে,
(আরবি)
‘তারা কি কোরআনুল কারীমের মাঝে চিন্তা করে না?’ এ কিতাব যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো তরফ থেকে হতো তাহলে এতে অধিক পরিমাণে বৈপরীত্ব পাওয়া যেত। (সূরা নিসা : ৮২)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘তারা কি কোরআনে চিন্তা করে না অথবা তাদের অন্তরে তালা লেগে আছে।’ (সূরা মুহাম্মাদ : ২৪)
উল্লিখিত আয়াতসমূহে কোরআনুল কারীমকে বরকতময় কিতাব আখ্যা দেয়া হয়েছে এবং তাতে চিন্তা ও গবেষণা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে অন্য এক স্থানে কোরআনকে রহমত ও শেফা হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে।
ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘হে লোকসকল! তোমাদের কাছে তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে নসীহত, অন্তরের অসুস্থতার শেফা এবং মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও রহমত এসেছে। হে নবী (বলে দিন) এই কিতাব যা আল্লাহ তাআলার ফযল ও রহমতের দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে লোকদের উচিত এর প্রতি সন্তুষ্ট হওয়া। লোকেরা যা জমা করেছে এর চেয়ে অনেক উত্তম এই কিতাব।’ (সূরা ইউনুস : ৫৭-৫৮)
আল্লাহ রাববুল আলামীন কোরআনুল কারীমকে সমস্ত দুনিয়ার জন্য রহমত, মুমিনের শেফা এবং করুণা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি যেন কোরআনুল কারীম পেয়ে সন্তুষ্টি ও খুশি প্রকাশ করেন। অথচ গোনাহগার উম্মত আমরা বলছি কোরআনুল কারীম পুরনো ও জীর্ণশীর্ণ হয়ে গেছে। তা বর্তমান যুগের প্রয়োজন পূরণ করতে অক্ষম। এটাকে বর্তমান যুগের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য করে নিতে হবে। তাদের এই আকীদাকে সহীহ ধরলে এ কথাও মেনে নিতে হবে যে, মহান আহকামুল হাকিমীনের পবিত্র সত্তাও পুরনো হয়ে গেছে। (নাউযুবিল্লাহ) অথচ সেই সত্তা অনন্ত-অসীম কাল ধরে আছেন, অনন্ত অসীম কাল থাকবেন, তিনি চিরঞ্জীব ও সদা জাগ্রত। অথবা তাদের কথা মতো এটাও বলা যেতে পারে যে, কোরআনুল কারীমের ধারক-বাহক মহানবী মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়ত পুরনো হয়ে গেছে। এ যুগে তাঁর নবুওয়ত প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম নয়। বরং তাঁর স্থলে একজন নতুন নবী ও শরীয়তের প্রয়োজন। কিন্তু এ কথা মনে করা কুফুরী ও গোমরাহী। কেননা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সত্তা ওই ’সীরাজাম মুনীরা’ যা কখনও উদয় কিংবা অস্তের প্রয়োজন নেই। সুতরাং তাঁর কোরআন ও তালীম চির ভাস্বর। জানা প্রয়োজন, আল্লাহ তাআলার পবিত্র সত্তা, তাঁর আসমানী বিধি-বিধান, তাঁর সর্বোত্তম নবী ও রাসূলের পবিত্র সত্তা এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত শরীয়ত সবকিছুই অকেজো ও জীর্ণশীর্ণতার ঊর্ধ্বে। এটা এমন এক সত্য ও বাস্তবতা যে, কিয়ামত পর্যন্ত স্বমহিমায় ভাস্বর হয়ে থাকবে। আধুনিক বস্ত্তবাদী দুনিয়ার সমস্ত প্রয়োজন, বিজ্ঞানের যাবতীয় উৎকর্ষ, সাফল্য ও আবিষ্কারের ধাঁধাঁ সবই এর অনুগত ও অনুগামী হবে।
কোরআনী আমানত
একথা জানা প্রয়োজন যে, কোরআনুল কারীমের মহান বোঝা বহন করার মতো কোনো শ্রেণী সৃষ্টিকুলের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মহান সেই আমানত নিজ কাঁধে বহন করেছে একমাত্র আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাত-মানবজাতি। তাদেরকে পৃথিবীর খলিফাও বলা যায়। একমাত্র তাদের ওপরই এ আমানত অর্পিত হয়েছে। কেন তাদের ওপর এই আমানত অর্পণ করা হলো? এর একমাত্র কারণ হলো আমানতের যে বোঝা তা মহববতে এলাহীরই অপর নাম। এজন্য প্রকৃত অর্থে মহববতে এলাহীই মানুষের ওপর সোপর্দ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘নিশ্চয় আমি মানুষকে সুন্দর অবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা ত্বীন : ৪)
কোরআনুল কারীমের দরস দ্বারা প্রত্যেক তেলাওয়াতকারীর পীপাসা দূর হবে। প্রত্যেক মুসলিম সন্তানের নিজের জীবনের বিধি-বিধান জানা হয়ে যাবে।
হেরা পর্বতের গূহায় ওহী অবতরণের উদ্দেশ্য ছিল শুধুই মুসলমান নয়, আন-নাস তথা সমগ্র মানবজাতির জীবনবিধানের মূল ভিত্তি হিসেবে। তাওহীদের সন্তানেরা সমস্ত সৃষ্টিজীবের ওপর মর্যাদাবান সাক্ষী হিসেবে গণ্য হবে। দুনিয়ার খেলাফতের যোগ্য উত্তরাধীকারী হিসেবে গণ্য হবে। দুনিয়ার সবকিছু থাকবে তাদের অধীনে। অথচ দৃশ্যপট হলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। আজকের মুসলমান শুধুই মুসলিম নামের সৌরভ ধারণ করে আছে, রূহানী ক্ষমতা তাদের বিলুপ্ত হয়ে গেছে আগেই। এর কারণ হলো আমরা কোরআনুল কারীমের রূহানী শিক্ষা ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি। এর ওপর আমল করা ছেড়ে দিয়েছি। ইসলামী শরীয়াহকে ঠাট্টা-বিদ্রুপের বস্ত্ত বানিয়ে নিয়েছি। এমনকি কোরআনুল কারীমের সঙ্গে তামাশা করার দুঃসাহসিকতা পর্যন্ত প্রদর্শন করছি। (নাউযুবিল্লাহ) আজও আমরা কোরআনুল কারীমের যথার্থ উত্তরাধিকারী হতে পারি, দুনিয়ার সবকিছু আমাদের অধীনে আসতে বাধ্য। তবে শর্ত হলো-ইকবালের ভাষায় ‘তুমি যদি মুহাম্মদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি আনুগত্যশীল হও, তবেই আমি তোমার সঙ্গে। এ দুনিয়ার যা কিছু আছে লওহ-কলমসহ সবকিছু তোমার।’
কেননা কোরআনুল কারীমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ‘আসমান-জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তোমার অনুগত করে দেয়া হয়েছে।’ যদি আমরা অঙ্গীকার করি যতক্ষণ আমাদের চোখে নূর, অন্তরে সজীবতা, কানে শ্রবণশক্তি, জিহবায় বাচনক্ষমতা, পায়ে চলনশক্তি অবশিষ্ট থাকবে ততক্ষণ প্রত্যেক মুসলমানের প্রধান দায়িত্ব হলো সে কোরআনুল কারীম পড়বে এবং পড়াবে। নিজে বুঝবে এবং অন্যকে বুঝাবে, এর ওপর যথার্থভাবে আমল করবে। মাথায় বোঝা থাকলে কোরআনের, অন্তরে ইশক থাকলে কোরআনের, হাতে কড়ি, পায়ে বেড়ি-সবই যেন হয় কোরআনের। এটাই মুমিন জীবনের উদ্দেশ্য।
সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত!
কোরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
তোমরাই সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। (তোমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো) তোমরা লোকদেরকে সৎ কাজের আদেশ করবে, অসৎ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনবে।’ ( সূরা আলে ইমরান : ১১০ )
মূলত আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেণ এজন্য যে, আমরা লোকদেরকে সৎ কাজের আদেশ করব, অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখব। কিন্তু আমাদের অবস্থা তো হলো আমরা অন্যের গোলাম হয়ে আছি। অন্যের কথা মতো পরিচালিত হচ্ছি। অন্যদেরকে আমরা মন্দ থেকে কী রুখব, নিজেরাই তো মন্দে ডুবে আছি আকণ্ঠ। চারিত্রিক অধঃপতনের দিক থেকে আমরা নিকৃষ্ট জাতির খেতাব পাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। দুনিয়ার দেড়শ কোটি মুসলমান যদি তাদের অন্তরে তাওহীদের আকীদা পোক্ত করে নেয় এবং এর শিক্ষাকে জীবনের পাথেয় বানিয়ে নেয় অথবা তা অনুযায়ী আমল করে, তাহলে দুনিয়ার কোনো জাতির এই শক্তি নেই যে, তাদের দিকে চোখ তুলে তাকাবে। সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, খোদাদ্রোহী রাশিয়া, জায়নবাদী ইহুদী গোষ্ঠীর এমনকি শক্তি আছে যে, তাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে। প্রথম কেবলা বায়তুল মুকাদ্দাস দখল রাখবে বছরের পর বছর!
যখন কোনো জাতি ‘লা ইলাহা’ এর বিষয়বস্ত্ত বুঝে তা অনুযায়ী আমল করে তখন তার সুপ্ত যোগ্যতার বিকাশ ঘটে এবং অপরিমেয় শক্তি জন্ম নেয়। এরপর সে যখন ‘ইল্লাল্লাহ’ বলে আল্লাহ রাববুল আলামীনের বিধানের সামনে নিঃশর্ত মাথা ঝুঁকায়, তখন তাদের অস্তিত্ব সমগ্র দুনিয়ার জন্য রহমত হয়ে যায়। শক্তির অপর নাম ‘জালাল’ আর তাকওয়ার অপর নাম ‘জামাল’। সাহাবায়ে কেরামের গুণ বর্ণনা করে কোরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘তারা কাফেরদের জন্য বজ্রকঠোর, কিন্তু পরস্পরের প্রতি দয়াশীল।’ (সূরা ফাতহ : ২৯)
এর মধ্যে এ দুটি গুণ (জালাল ও জামাল) প্রতিফলিত হয়েছে। যে জাতির মধ্যে এ দুটি গুণ ও বৈশিষ্ট্য জমা হয় তারা কারো কর্তৃত্বাধীন হওয়ার পরিবর্তে দুনিয়ার ওপর কর্তৃত্বশীল হয়ে যান। অন্যান্য জাতিকেও আল্লাহ রাববুল আলামীনের পথে চলতে বাধ্য করে। সমগ্র সৃষ্টি তাদের অনুগত হয়ে যায়। ইসলামী ইতিহাসের সোনালী অধ্যায়গুলো এ কথার জ্বলন্ত প্রমাণ। আজকের দিনে আমাদের মধ্যে জালাল যেমন নেই, তেমনি জামালও অনুপস্থিত। জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে যেমন কোনো ভাবনা নেই, তেমনি নেই আমলী আলোর কোনো বিচ্ছুরণ। ইসরাইল আমাদের মসজিদে আকসা জ্বালিয়ে দেয় অথচ আমরা নির্বিকার। আমাদের সেই স্বাধীনচেতা মনোভাব ও স্পৃহা লুপ্ত হয়ে গেছে যার মাধ্যমে আমরা ‘তোমরাই বিজয়ী হবে’ কোরআনের শাশ্বত সেই সুসংবাদের অধিকারী হয়েছিলাম।
এ সব কিছুর কারণ হলো, আমাদের মধ্যে অজ্ঞতার ছাপ বাকী রয়ে গেছে। ইসলামী রূহ আমাদের থেকে বিলুপ্ত হযে গেছে। আমরা নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম আদর্শকে বেমালুম ভুলে গেছি। পবিত্রতম শরীয়তের আনুগত্য আজ আমাদের কাছে কষ্টের বস্ত্ত বলে মনে হচ্ছে।
কোরআন নাজিলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
এটা একটা স্বীকৃত বিষয় যে, বর্তমান যুগে মুসলমানরা জাতি হিসেবে, বিশেষত মুসলমানদের যুবক শ্রেণীটি যারা প্রত্যেক যুগে জাতির ভাগ্যকে আলোকিত করে, কোরআনুল কারীমের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা নিজেরাই যুগের ধর্মদ্রোহী থাবার শিকার। অন্যদেরকেও তারা নিজেদের ফাঁদে আটকে দিতে তৎপর। সাধারণত কিতাবুল্লাহকে হেদায়াত ও আমলের জন্য নয় বরং নিছকই গতানুগতিক বরকত হাসিলের জন্য তেলাওয়াত করা হয়। আল্লামা ইকবাল যথার্থই বলেছেন, ‘আজকের মুসলমান কোরআনী হিকমত অনুযায়ী জীবনকে সাজায় না, সূরা ইয়াসীন জাতীয় কিছু আয়াত শুধু এজন্যই পড়া হয় যে, এর দ্বারা রোগীর আরোগ্য লাভ হয়।’
এটা তো গেল সাধারণ মুসলমানদের কথা। আপনি যদি উম্মাহর বিশেষ শ্রেণী তথা ওলামায়ে কেরামের কথা আলোচনা করেন তাহলে দেখবেন কিছুসংখ্যক আলেম কোরআনকে শুধুই কয়েকটি মতবিরোধপূর্ণ মাসায়েল সমাধানের আঙ্গিকে উপস্থাপন করে থাকে। অথচ কোরআনুল কারীম তার নাজিলের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিজেই স্পষ্টভাবে বলছে,
(আরবি)
‘হে নবী! আপনার প্রতি এই বরকতপূর্ণ কিতাব নাজিল করেছি যাতে লোকেরা এর আয়াতসমূহে চিন্তা-ভাবনা করে এবং জ্ঞানীরা যেন তা থেকে শিক্ষা হাসিল করে।’ (সূরা সদ : ২৯)
এই আয়াতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, এই কোরআন যা আল্লাহর এক বরকতময় কিতাব তাকে গভীর চিন্তা-ভাবনা ও মনোযোগের সঙ্গে পড়বে। তা থেকে মুখ ফিরিয়ে রাখবে না। এটাকে মতবিরোধপূর্ণ মাসআলার একমাত্র সমাধান মনে করবে না। পারস্পরিক বিরোধ সৃষ্টির মাধ্যম বানাবে না। বরং এর মূল বিষয়বস্ত্ত, হিকমতপূর্ণ আহকাম এবং এর রূহ বুঝার চেষ্টা করবে। কোরআনুল কারীম সংবাদ দিচ্ছে, এই পবিত্র কিতাব মতবিরোধ, সংঘাত, বিভেদ ও বৈপরীত্বের ঊর্ধ্বে। যেমন পঞ্চম পারায় বলা হয়েছে,
(আরবি)
‘তারা কি কোরআনুল কারীমের মাঝে চিন্তা করে না?’ এ কিতাব যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো তরফ থেকে হতো তাহলে এতে অধিক পরিমাণে বৈপরীত্ব পাওয়া যেত। (সূরা নিসা : ৮২)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘তারা কি কোরআনে চিন্তা করে না অথবা তাদের অন্তরে তালা লেগে আছে।’ (সূরা মুহাম্মাদ : ২৪)
উল্লিখিত আয়াতসমূহে কোরআনুল কারীমকে বরকতময় কিতাব আখ্যা দেয়া হয়েছে এবং তাতে চিন্তা ও গবেষণা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে অন্য এক স্থানে কোরআনকে রহমত ও শেফা হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে।
ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘হে লোকসকল! তোমাদের কাছে তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে নসীহত, অন্তরের অসুস্থতার শেফা এবং মুমিনদের জন্য হেদায়াত ও রহমত এসেছে। হে নবী (বলে দিন) এই কিতাব যা আল্লাহ তাআলার ফযল ও রহমতের দ্বারা অবতীর্ণ হয়েছে লোকদের উচিত এর প্রতি সন্তুষ্ট হওয়া। লোকেরা যা জমা করেছে এর চেয়ে অনেক উত্তম এই কিতাব।’ (সূরা ইউনুস : ৫৭-৫৮)
আল্লাহ রাববুল আলামীন কোরআনুল কারীমকে সমস্ত দুনিয়ার জন্য রহমত, মুমিনের শেফা এবং করুণা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর রাসূলকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি যেন কোরআনুল কারীম পেয়ে সন্তুষ্টি ও খুশি প্রকাশ করেন। অথচ গোনাহগার উম্মত আমরা বলছি কোরআনুল কারীম পুরনো ও জীর্ণশীর্ণ হয়ে গেছে। তা বর্তমান যুগের প্রয়োজন পূরণ করতে অক্ষম। এটাকে বর্তমান যুগের চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য করে নিতে হবে। তাদের এই আকীদাকে সহীহ ধরলে এ কথাও মেনে নিতে হবে যে, মহান আহকামুল হাকিমীনের পবিত্র সত্তাও পুরনো হয়ে গেছে। (নাউযুবিল্লাহ) অথচ সেই সত্তা অনন্ত-অসীম কাল ধরে আছেন, অনন্ত অসীম কাল থাকবেন, তিনি চিরঞ্জীব ও সদা জাগ্রত। অথবা তাদের কথা মতো এটাও বলা যেতে পারে যে, কোরআনুল কারীমের ধারক-বাহক মহানবী মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়ত পুরনো হয়ে গেছে। এ যুগে তাঁর নবুওয়ত প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম নয়। বরং তাঁর স্থলে একজন নতুন নবী ও শরীয়তের প্রয়োজন। কিন্তু এ কথা মনে করা কুফুরী ও গোমরাহী। কেননা রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র সত্তা ওই ’সীরাজাম মুনীরা’ যা কখনও উদয় কিংবা অস্তের প্রয়োজন নেই। সুতরাং তাঁর কোরআন ও তালীম চির ভাস্বর। জানা প্রয়োজন, আল্লাহ তাআলার পবিত্র সত্তা, তাঁর আসমানী বিধি-বিধান, তাঁর সর্বোত্তম নবী ও রাসূলের পবিত্র সত্তা এবং নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনিত শরীয়ত সবকিছুই অকেজো ও জীর্ণশীর্ণতার ঊর্ধ্বে। এটা এমন এক সত্য ও বাস্তবতা যে, কিয়ামত পর্যন্ত স্বমহিমায় ভাস্বর হয়ে থাকবে। আধুনিক বস্ত্তবাদী দুনিয়ার সমস্ত প্রয়োজন, বিজ্ঞানের যাবতীয় উৎকর্ষ, সাফল্য ও আবিষ্কারের ধাঁধাঁ সবই এর অনুগত ও অনুগামী হবে।
কোরআনী আমানত
একথা জানা প্রয়োজন যে, কোরআনুল কারীমের মহান বোঝা বহন করার মতো কোনো শ্রেণী সৃষ্টিকুলের মাঝে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মহান সেই আমানত নিজ কাঁধে বহন করেছে একমাত্র আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি আশরাফুল মাখলুকাত-মানবজাতি। তাদেরকে পৃথিবীর খলিফাও বলা যায়। একমাত্র তাদের ওপরই এ আমানত অর্পিত হয়েছে। কেন তাদের ওপর এই আমানত অর্পণ করা হলো? এর একমাত্র কারণ হলো আমানতের যে বোঝা তা মহববতে এলাহীরই অপর নাম। এজন্য প্রকৃত অর্থে মহববতে এলাহীই মানুষের ওপর সোপর্দ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘নিশ্চয় আমি মানুষকে সুন্দর অবয়ব দিয়ে সৃষ্টি করেছি।’ (সূরা ত্বীন : ৪)
কোরআনুল কারীমের দরস দ্বারা প্রত্যেক তেলাওয়াতকারীর পীপাসা দূর হবে। প্রত্যেক মুসলিম সন্তানের নিজের জীবনের বিধি-বিধান জানা হয়ে যাবে।
হেরা পর্বতের গূহায় ওহী অবতরণের উদ্দেশ্য ছিল শুধুই মুসলমান নয়, আন-নাস তথা সমগ্র মানবজাতির জীবনবিধানের মূল ভিত্তি হিসেবে। তাওহীদের সন্তানেরা সমস্ত সৃষ্টিজীবের ওপর মর্যাদাবান সাক্ষী হিসেবে গণ্য হবে। দুনিয়ার খেলাফতের যোগ্য উত্তরাধীকারী হিসেবে গণ্য হবে। দুনিয়ার সবকিছু থাকবে তাদের অধীনে। অথচ দৃশ্যপট হলো সম্পূর্ণ ভিন্ন। আজকের মুসলমান শুধুই মুসলিম নামের সৌরভ ধারণ করে আছে, রূহানী ক্ষমতা তাদের বিলুপ্ত হয়ে গেছে আগেই। এর কারণ হলো আমরা কোরআনুল কারীমের রূহানী শিক্ষা ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি। এর ওপর আমল করা ছেড়ে দিয়েছি। ইসলামী শরীয়াহকে ঠাট্টা-বিদ্রুপের বস্ত্ত বানিয়ে নিয়েছি। এমনকি কোরআনুল কারীমের সঙ্গে তামাশা করার দুঃসাহসিকতা পর্যন্ত প্রদর্শন করছি। (নাউযুবিল্লাহ) আজও আমরা কোরআনুল কারীমের যথার্থ উত্তরাধিকারী হতে পারি, দুনিয়ার সবকিছু আমাদের অধীনে আসতে বাধ্য। তবে শর্ত হলো-ইকবালের ভাষায় ‘তুমি যদি মুহাম্মদের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি আনুগত্যশীল হও, তবেই আমি তোমার সঙ্গে। এ দুনিয়ার যা কিছু আছে লওহ-কলমসহ সবকিছু তোমার।’
কেননা কোরআনুল কারীমে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, ‘আসমান-জমিনে যা কিছু আছে সবকিছু তোমার অনুগত করে দেয়া হয়েছে।’ যদি আমরা অঙ্গীকার করি যতক্ষণ আমাদের চোখে নূর, অন্তরে সজীবতা, কানে শ্রবণশক্তি, জিহবায় বাচনক্ষমতা, পায়ে চলনশক্তি অবশিষ্ট থাকবে ততক্ষণ প্রত্যেক মুসলমানের প্রধান দায়িত্ব হলো সে কোরআনুল কারীম পড়বে এবং পড়াবে। নিজে বুঝবে এবং অন্যকে বুঝাবে, এর ওপর যথার্থভাবে আমল করবে। মাথায় বোঝা থাকলে কোরআনের, অন্তরে ইশক থাকলে কোরআনের, হাতে কড়ি, পায়ে বেড়ি-সবই যেন হয় কোরআনের। এটাই মুমিন জীবনের উদ্দেশ্য।
সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত!
কোরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
তোমরাই সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। তোমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। (তোমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো) তোমরা লোকদেরকে সৎ কাজের আদেশ করবে, অসৎ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখবে এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনবে।’ ( সূরা আলে ইমরান : ১১০ )
মূলত আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেণ এজন্য যে, আমরা লোকদেরকে সৎ কাজের আদেশ করব, অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখব। কিন্তু আমাদের অবস্থা তো হলো আমরা অন্যের গোলাম হয়ে আছি। অন্যের কথা মতো পরিচালিত হচ্ছি। অন্যদেরকে আমরা মন্দ থেকে কী রুখব, নিজেরাই তো মন্দে ডুবে আছি আকণ্ঠ। চারিত্রিক অধঃপতনের দিক থেকে আমরা নিকৃষ্ট জাতির খেতাব পাওয়ার পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। দুনিয়ার দেড়শ কোটি মুসলমান যদি তাদের অন্তরে তাওহীদের আকীদা পোক্ত করে নেয় এবং এর শিক্ষাকে জীবনের পাথেয় বানিয়ে নেয় অথবা তা অনুযায়ী আমল করে, তাহলে দুনিয়ার কোনো জাতির এই শক্তি নেই যে, তাদের দিকে চোখ তুলে তাকাবে। সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা, খোদাদ্রোহী রাশিয়া, জায়নবাদী ইহুদী গোষ্ঠীর এমনকি শক্তি আছে যে, তাদের ওপর কর্তৃত্ব করবে। প্রথম কেবলা বায়তুল মুকাদ্দাস দখল রাখবে বছরের পর বছর!
যখন কোনো জাতি ‘লা ইলাহা’ এর বিষয়বস্ত্ত বুঝে তা অনুযায়ী আমল করে তখন তার সুপ্ত যোগ্যতার বিকাশ ঘটে এবং অপরিমেয় শক্তি জন্ম নেয়। এরপর সে যখন ‘ইল্লাল্লাহ’ বলে আল্লাহ রাববুল আলামীনের বিধানের সামনে নিঃশর্ত মাথা ঝুঁকায়, তখন তাদের অস্তিত্ব সমগ্র দুনিয়ার জন্য রহমত হয়ে যায়। শক্তির অপর নাম ‘জালাল’ আর তাকওয়ার অপর নাম ‘জামাল’। সাহাবায়ে কেরামের গুণ বর্ণনা করে কোরআনুল কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
(আরবি)
‘তারা কাফেরদের জন্য বজ্রকঠোর, কিন্তু পরস্পরের প্রতি দয়াশীল।’ (সূরা ফাতহ : ২৯)
এর মধ্যে এ দুটি গুণ (জালাল ও জামাল) প্রতিফলিত হয়েছে। যে জাতির মধ্যে এ দুটি গুণ ও বৈশিষ্ট্য জমা হয় তারা কারো কর্তৃত্বাধীন হওয়ার পরিবর্তে দুনিয়ার ওপর কর্তৃত্বশীল হয়ে যান। অন্যান্য জাতিকেও আল্লাহ রাববুল আলামীনের পথে চলতে বাধ্য করে। সমগ্র সৃষ্টি তাদের অনুগত হয়ে যায়। ইসলামী ইতিহাসের সোনালী অধ্যায়গুলো এ কথার জ্বলন্ত প্রমাণ। আজকের দিনে আমাদের মধ্যে জালাল যেমন নেই, তেমনি জামালও অনুপস্থিত। জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে যেমন কোনো ভাবনা নেই, তেমনি নেই আমলী আলোর কোনো বিচ্ছুরণ। ইসরাইল আমাদের মসজিদে আকসা জ্বালিয়ে দেয় অথচ আমরা নির্বিকার। আমাদের সেই স্বাধীনচেতা মনোভাব ও স্পৃহা লুপ্ত হয়ে গেছে যার মাধ্যমে আমরা ‘তোমরাই বিজয়ী হবে’ কোরআনের শাশ্বত সেই সুসংবাদের অধিকারী হয়েছিলাম।
এ সব কিছুর কারণ হলো, আমাদের মধ্যে অজ্ঞতার ছাপ বাকী রয়ে গেছে। ইসলামী রূহ আমাদের থেকে বিলুপ্ত হযে গেছে। আমরা নবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম আদর্শকে বেমালুম ভুলে গেছি। পবিত্রতম শরীয়তের আনুগত্য আজ আমাদের কাছে কষ্টের বস্ত্ত বলে মনে হচ্ছে।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন