HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন

১১
কুরআন তিলাওয়াতের আদব :
১. কুরআন তিলাওয়াতের শুরুতে নিয়ত খালেস করা।

আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন :

( فَادْعُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ ) ( غافر :14)

‘‘সুতরাং তোমরা আল্লাহকে একনিষ্ঠভাবে ইখলাসের সাথে ডাক।’’ [সূরা গাফের, আয়াত : ১৪]

আল্লাহ তাআলা বলেন :

( فَاعْبُدِ اللَّهَ مُخْلِصاً لَهُ الدِّينَ ) ( الزمر :2)

‘‘সুতরাং তুমি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত কর।’’ [সূরা যুমার, আয়াত : ২]

আল্লাহ তাআলা বলেন :

( وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ ) ( البينة :5)

‘‘তাদের এ জন্যই নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, তারা আল্লাহর ইবাদত করবে খাঁটি মনে, এখলাসের সাথে।’’ [সূরা বাইয়েনা, আয়াত : ৫]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করছেন :

( اقْرَءُوا الْقُرْآنَ وَابْتَغُوا بِهِ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ مِنْ قَبْلِ أَنْ يَأْتِيَ قَوْمٌ يُقِيمُونَهُ إِقَامَةَ الْقِدْحِ يَتَعَجَّلُونَهُ وَلَا يَتَأَجَّلُونَهُ ) رواه أحمد

‘‘তোমরা কুরআন তিলাওয়াত কর এবং এ তিলাওয়াত দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা কর। সে দলের আবির্ভাবের পূর্বে যারা কুরআনকে তীরের ন্যায় স্থাপন করবে। কুরআন দ্রুত পড়বে, ধীর স্থীরভাবে পড়বে না।’’ [আহমাদ]

২. একনিষ্ঠ মন নিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করা। যা পড়া হয় তা নিয়ে গভীর চিন্তা-ভাবনা করা, তার অর্থ অনুধাবনের চেষ্টা করা, বিনয়ীভাব গ্রহণ করা এবং নিজকে এমনভাবে হাজির করা যেন আল্লাহর সাথে সংলাপ হচ্ছে। বাস্তবেও কুরআন তিলাওয়াত আল্লাহর সাথে সংলাপ, যেহেতু কুরআন আল্লাহ তাআলারই বাণী।

৩. পবিত্র অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অপবিত্র ব্যক্তি বা যার উপর গোসল ফরজ, সে পবিত্রতা অর্জন ব্যতীত কুরআন পাঠ করবে না। সম্ভব হলে পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে অন্যথায় তায়াম্মুম দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করবে। তবে গোসল ব্যতীত আল্লাহর যিকির করতে পারবে এবং কুরআনে আছে এমন দোয়া পাঠ করতে পারবে, কিন্তু কুরআন পাঠের নিয়তে নয়। যেমন সে বলতে পারে :

( لا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظَّالِمِينَ ) ( الانبياء :87)

‘‘আল্লাহ তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তোমার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। নিশ্চয় আমি জালিমদের অর্ন্তভুক্ত।’’

কিংবা পড়তে পারবে :

) رَبَّنَا لا تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِنْ لَدُنْكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنْتَ الْوَهَّابُ ) ( آل عمران :৮)

‘‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদেরকে হেদায়েত দান করার পর আমাদের অন্তরসমূহকে বক্র করে দিওনা। আর তুমি তোমার পক্ষ থেকে দান কর আমাদের রহমত। নিশ্চয় তুমি অফুরন্ত দানশীল।’’

৪. ময়লা আবর্জনা আছে এমন স্থানে কুরআন তিলওয়াত না করা। যেখানে গান-বাদ্য বা শোরগোল হচ্ছে এমন জায়গায় কুরআন তিলাওয়াত না করা। এ সব জায়গায় কুরআন তিলাওয়াত করা, কুরআনের সাথে অসম্মান ও অপমান জনিত ব্যবহার করার শামিল। প্রশ্রাব কিংবা পায়খানার জন্য তৈরীকৃত স্থানে কুরআন তিলাওয়াত করা জায়েজ নেই।

৫. কুরআন তিলাওয়াতের শুরুতে বলা :

اعوذ بالله من الشيطان الرجيم

আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন :

( فَإِذَا قَرَأْتَ الْقُرْآنَ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ ) ( النحل :98)

‘‘যখন তুমি কুরআন পাঠ কর, তখন বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাও।’’ [সূরা নাহল, আয়াত : ৯৮]

যাতে তিলাওয়াতের সর্বক্ষেত্রে শয়তানের বাধা থেকে নিরাপদ থাকা যায়। সুরার মাঝখান থেকে তিলাওয়াত করলে বিসমিল্লাহ পড়ার প্রয়োজন নেই, শুধু আউজুবিল্লাহ পড়লেই চলবে, সুরার শুরু থেকে পাঠ করলে বিসমিল্লাহ পড়বে। অবশ্য সূরা তাওবার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়বে না। কারণ এ সুরার প্রথমে বিসমিল্লাহ নেই।

৬. তিলাওয়াতের কণ্ঠ সুন্দর করা এবং সুর দিয়ে তিলাওয়াত করা। সহীহ বুখারী ও মুসলিমে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে কুরআনের ক্ষেত্রে আওয়াজ সুন্দর করার জন্য যতটুকু তাগিদ দিয়েছেন, অন্য কোন বিষয়ে তত তাগিদ দেননি।

সহিহ বুখারি ও মুসলিম শরীফে জুবাইর ইবনে মুতইম রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন :

سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقْرَأُ فِي الْمَغْرِبِ بِالطُّورِ فَمَا سَمِعْتُ أَحَدًا أَحْسَنَ أو قراءة منه

‘‘আমি মাগরিব নামাযে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সূরায়ে তুর পড়তে শুনেছি। এত সুন্দর কণ্ঠ ও কেরাত আমি আর কারো থেকে শুনিনি।’’

৭. কারো কষ্টের কারণ হলে উচ্চ স্বরে কুরআন পাঠ করবে না। যেমন নামাযী, ঘুমন্ত বা অসুস্থ ব্যক্তির নিকট। একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতক সাহাবাদের দেখলেন, তারা নামাযে উচ্চ স্বরে কেরাতে পড়ছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন :

( إِنَّ الْمُصَلِّيَ يُنَاجِي رَبَّهُ تَبَارَكَ فَلْيَنْظُرْ بِمَا يُنَاجِيهِ وَلَا يَجْهَرْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ فِيْ القرآن ) رواه مالك في المطأ قال أبي عبد البر : وهو حديث صحيح

‘‘নামাযী ব্যক্তি নিজ রব আল্লাহর সাথে মোনাজাত করে, অতএব তার লক্ষ্য রাখা উচিত, কিভাবে সে প্রার্থনা করবে। কুরআন পাঠের সময় একজনের আওয়াজ অপর জনের আওয়াজের চেয়ে যেন উচ্চ না হয়।’’ [মুআত্তা মালেক ইমাম ইবনে আব্দুল বার একে সহীহ হাদীস বলেছেন।]

৮. কুরআন তারতীল বা ধীর স্থীরভাবে সুন্দর করে তিলাওয়াত করা। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন :

( وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلاً ) ( المزمل :৪)

‘‘তুমি কুরআনকে তারতীলের সাথে তিলাওয়াত কর।’’ [সূরা মুযযাম্মিল : আয়াত ৬৫]

কুরআন তিলাওয়াত করবে ধীর স্থীরভাবে। কারণ ধীর স্থীরভাবে তিলাওয়াত করলে শব্দ ও অক্ষর সঠিকভাবে উচ্চারণ করা যায় এবং কুরআনের অর্থ অনুধাবন করার জন্যও সহায়ক হয়। সহিহ বুখারিতে এসেছে :

عن أنس بن مالك رضي الله عنه أنه سُئِلَ أَنَسٌ عَنْ قِرَاءَةِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ كَانَتْ مَدًّا ثُمَّ قَرَأَ بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ يَمُدُّ بِبِسْمِ اللَّهِ وَيَمُدُّ بِالرَّحْمَنِ وَيَمُدُّ بِالرَّحِيمِ- رواه البخاري

‘‘আনাস বিন মালেক থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনাস রাদিআল্লাহু আনহুকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কেরাতের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বললেন, তার কেরাত ছিল দীর্ঘ আকারের, টেনে টেনে তিনি তিলাওয়াত করতেন। এরপর তিনি রাসূলের তিলাওয়াত নকল করার জন্য পড়লেন :

بسم الله الرحمن الرحيم

তিনি ‘আল্লাহ, রাহমান ও রাহীম শব্দে মদ করলেন।

উম্মে সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কেরাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন :

كان يقطع قراءته آية آية- بسم الله الرحمن الرحيم -الحمد لله رب العالمين -الرحمن الرحيم-مالك يوم الدين- رواه أحمد وأبو داود والترمذي

‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটা একটা আয়াত, আলাদা আলাদা পড়তেন। যেমন, তিনি পড়তেন:

بسم الله الرحمن الرحيم

তারপর পড়তেন :

( الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ )

তারপর পড়তেন :

( الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ )

তারপর পড়তেন :

( مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ )

এভাবে আলাদা আলাদা তিলাওয়াত করতেন। [আহমদ , আবু দাউদ, তিরমিজী]

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন :

وقال ابن مسعود رضي الله عنه لا تنشروه نثر الرمل ولا تهذوه هذا الشعر قفوا عند عجائبه وحركوا به القلوب ولا يكن هم أحدكم آخر السورة .

‘‘তোমরা বালু ছিটানোর মত ও কবিতার আবৃতি দ্রুত কুরআন তিলাওয়াত কর না। কুরআনের বিস্ময়কর বিষয়ের নিকট থামো এবং কুরআন দ্বারা তোমাদের অন্তরসমূহকে আন্দোলিত কর। তোমাদের কারো সূরা শেষ করা-ই যেন তিলাওয়াতের মূল উদ্দেশ্য না হয়।’’

৯. কুরআন তিলাওয়াতের সময় সেজদার আয়াত আসলে সেজদা করা, তবে ওজু থাকা জরুরি।

সিজদার নিয়ম : প্রথমে আল্লাহু আকবার বলে সিজাদায় যাবে এবং সিজদায় গিয়ে বলবে : سبحان ربى الاعلى অতঃপর দোয়া করবে। সিজদা থেকে তাকবীর বলে মাথা উঠাবে, তবে নামাজের ন্যায় সালাম ফিরাবে না।

বর্ণিত আছে, আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু সিজদায় মাথা উঠাতে ও নামাতে তাকবির বলতেন। তিনি বলতেন, ‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযে এরূপ করেছেন।’’ [মুসলিম]

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন :

رأيت النبي صلى الله عليه وسلم يكبر في كل رفع وخفض وقيام وقعود-رواه أحمدوالنسائيوالترمذي وصححه

‘‘আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রত্যেকবার মাথা উঠাতে ও নামাতে, বসতে ও দাঁড়াতে তাকবির বলতে দেখেছি।’’ [আহমদ, নাসারী, তিরমিযী, তিরমিযী একে সহীহ বলেছেন।]

এ হাদিস নামাযের সিজদা ও নামাযের বাইরে কুরআন তিলাওয়াতের সিজদা উভয়কেই শামিল করে। এ হলো কুরআন তিলাওয়াতের কতিপয় আদব। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে সর্ব ক্ষেত্রে তার বিধান ও সন্তুষ্টি মোতাবেক আমল করার তওফিক দান করুন। আমীন

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন