HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কুরআন তিলাওয়াতের ফজিলত

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল-উসাইমীন

দ্বিতীয় প্রকার তিলাওয়াত : তিলাওয়াতে হুকমি
আল্লাহর আদেশ মান্য করা ও নিষিদ্ধ বিষয় পরিহার করার মাধ্যমে কুরআন অনুযায়ী জীবন-যাপন করাই হচ্ছে তিলাওয়াতে হুকমি। অর্থাৎ কুরআনের সকল সংবাদ বিশ্বাস, কুরআনে বর্ণিত সকল নিষিদ্ধ বস্ত্ত বর্জন ও সকল নির্দেশ পালন করার মাধ্যমে কুরআনের হুকুম আহকাম মেনে চলা। আর কুরআন নাজিলের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে এ প্রকার তিলাওয়াত।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

( كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ ) ( صّ :২৯)

‘আমি এমন বরকতপূর্ণ কিতাব তোমার নিকট নাজিল করেছি, যাতে করে তারা এর আয়াত নিয়ে গবেষণা করতে পারে এবং যাতে করে জ্ঞানবানরা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে।’’ [সূরা সাদ : ২৯]

আমাদের পূর্ব পুরুষ সালফে সালেহিনগণ এ আয়াতের নির্দেশনা অনুযায়ী কুরআন অধ্যয়ন করতেন। তারা এর প্রতি গভীর বিশ্বাস ও সুদৃঢ় আকিদা পোষণ করে এর হুকুম আহকামগুলো বাস্তবায়ন করতেন।

আবু আব্দুর রহমান আস্সুলামা রহ. বলেন :

حدثنا الذين كانوا يقرؤوننا القرآن، عثمان بن عفان وعبد الله بن مسعود، وغيرهما، إنهم كانوا إذا تعلموا من النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عشر آيات لم يتعلموها ومافيها من العلم والعمل قالوا فتعلمنا القرآن والعلم والعمل جميعا -

‘‘যারা আমাদেরকে কুরআন পড়ে শোনাতেন, তারা আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন, অর্থাৎ ওসমান বিন আফফান, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ও অন্যান্য সাহাবাবৃন্দ। যখন তারা নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কুরআনের দশটি আয়াত শিখতেন, তখন তারা এ দশটি আয়াতই ভালভাবে আত্মস্থ করতেন এবং এতে যা এলম ও আমল আছে তা বাস্তবায়ন করা ছাড়া সামনে অগ্রসর হতেন না। তারা বলেন, এভাবেই আমরা কুরআন, এলম ও আমল সব এক সঙ্গে শিখেছি।’’

এ প্রকার তিলাওয়াতের মাধ্যমেই মানুষের ভাগ্য নির্ণীত হয়, কে ভাগ্যবান আর কে হতভাগা।

আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন :

( فَإِمَّا يَأْتِيَنَّكُمْ مِنِّي هُدىً فَمَنِ اتَّبَعَ هُدَايَ فَلا يَضِلُّ وَلا يَشْقَى- وَمَنْ أَعْرَضَ عَنْ ذِكْرِي فَإِنَّ لَهُ مَعِيشَةً ضَنْكاً وَنَحْشُرُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْمَى- قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِي أَعْمَى وَقَدْ كُنْتُ بَصِيراً- قَالَ كَذَلِكَ أَتَتْكَ آيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا وَكَذَلِكَ الْيَوْمَ تُنْسَى- وَكَذَلِكَ نَجْزِي مَنْ أَسْرَفَ وَلَمْ يُؤْمِنْ بِآياتِ رَبِّهِ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَشَدُّ وَأَبْقَى ) ( طـه :১২৩-১২৭)

‘‘এরপর যদি আমার পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে হেদায়েত আসে, তখন যে আমার হেদায়েতকে অনুসরণ করবে, সে পথভ্রষ্ট হবে না এবং কষ্টে পতিত হবে না। আর যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ করে। সে তখন বলবে, হে আমার রব, কেন তুমি আমাকে অন্ধ করে উত্থিত করলে? আমিতো ছিলাম চক্ষুষ্মান। আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে এসেছিল তোমার নিকট আমার আয়াতগুলো। এরপর তুমি সেগুলো ভুলে গিয়েছিলে। তেমনিভাবে আজ তুমি বিস্মৃত হবে। এমনিভাবে আমি তাকে দেব প্রতিফল, যে সীমালঙ্ঘন করেছে এবং বিশ্বাস করেনি তার রবের আয়াতসমূহের প্রতি। আর পরকালের শাস্তি হবে কঠোরতর এবং অনেক স্থায়ী।’’ [তাহা : ১২৩-১২৭]

‘‘আল্লাহ তাআলা এ আয়াতসমূহে রাসুলদের নিকট পাঠানো হেদায়েত অনুসরণকারীদের কল্যাণের কথা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন। আমাদের সামনে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন হল সবচেয়ে বড় হেদায়েত। এখানে তিনি হেদায়েত বিমুখদের শাস্তির কথাও বর্ণনা করেছেন। যারা হেদায়েত অনুসরণ করবে, তারা পথভ্রষ্ট হবে না, দুঃখ কষ্টে পতিত হবে না, তাদের থেকে পথ বিচ্যুতি ও অকল্যাণ দূর করে দেয়া হবে। তাদের জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে নেয়ামত ও কল্যাণ অব্যাহত থাকবে। আর যারা হেদায়েত বিমুখ, যারা হেদায়েত অনুযায়ী আমল করেনি বরং অহংকার করেছে, তাদের জন্য রয়েছে শাস্তি। তারা দুনিয়া ও আখেরাতে পথ ভ্রষ্টতায় থাকবে, তাদের থেকে দুঃখ কষ্ট লাগব করা হবে না। তাদের জীবন হবে খুব-ই সংকীর্ণ। তারা দুনিয়াতে দুশ্চিন্তা ও আত্মিক অস্থিরতার মধ্যে থাকবে। কারণ, তাদের কোন সহিহ বিশ্বাস বা নেক আমল ছিল না। আল্লাহ তাআলা তাদের ব্যাপারে-ই বলেছেন।

( أُولَئِكَ كَالْأَنْعَامِ بَلْ هُمْ أَضَلُّ أُولَئِكَ هُمُ الْغَافِلُونَ ) ( الأعراف :১৭৯)

‘‘এরা চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায় বরং এরা তাদের চেয়েও আরো অধম ও নিকৃষ্ট, এরাই হলো গাফেল।’’ [আরাফ : ১৭৯]

হেদায়েত প্রত্যাখ্যানকারী এ গ্রুপের কবর হবে সংকীর্ণ, যার দরুন তাদের দেহের পাঁজরগুলো বাঁকা হয়ে যাবে। অবশেষে কিয়ামতের দিন অন্ধ হয়ে উত্থিত হবে, তারা কিছুই দেখতে পাবে না।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

( وَنَحْشُرُهُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى وُجُوهِهِمْ عُمْياً وَبُكْماً وَصُمّاً مَأْوَاهُمْ جَهَنَّمُ كُلَّمَا خَبَتْ زِدْنَاهُمْ سَعِيراً ) ( الاسراء :৯৭)

‘‘আমি কিয়ামতের দিন তাদেরকে সমবেত করব তাদের মুখে ভর দিয়ে চলা অবস্থায়, অন্ধ অবস্থায়, মূক অবস্থায়, বধির অবস্থায়। তাদের আবাসস্থল জাহান্নাম। যখন জাহান্নামের আগুন নির্বাপিত হওয়ার উপক্রম হবে আমি তখন তাদের জন্য অগ্নি আরও বাড়িয়ে দেব।’’ [সূরা আল ইসরা : ৯৭]

তারা দুনিয়ায় সত্য পথ অবলম্বন করেনি, সত্য কথাও শ্রবণ করেনি। তারা ছিল অন্ধ-বধির। আল্লাহ তাআলা তাদের কথার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন :

( وَقَالُوا قُلُوبُنَا فِي أَكِنَّةٍ مِمَّا تَدْعُونَا إِلَيْهِ وَفِي آذَانِنَا وَقْرٌ وَمِنْ بَيْنِنَا وَبَيْنِكَ حِجَابٌ ) ( فصلت :5)

‘‘তারা বলে, আপনি যে বিষয়ের দিকে আমাদেরকে ডাকছেন, সে বিষয়ে আমাদের অন্তর আবরণে আবৃত, আর আমাদের কর্ণে আছে বধিরতা এবং আমাদের ও আপনার মাঝখানে আছে অন্তরায়।’’ [সূরা ফুসসিলাত : ৫]

তারা দুনিয়াতে যেরূপ কর্ম করেছে আল্লাহ তাআলা আখেরাতে তাদেরকে সেরূপ প্রতিদান দেবেন। এরা যেরূপ আল্লাহর শরিয়তকে ধ্বংস ও বিনষ্ট করেছে, তদ্রুপ আল্লাহও তাদের ধ্বংস ও বিনষ্ট করবেন।

আল্লাহ তাআলা এসব কাফিরের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন :

( قَالَ رَبِّ لِمَ حَشَرْتَنِي أَعْمَى وَقَدْ كُنْتُ بَصِيرا . قَالَ كَذَلِكَ أَتَتْكَ آيَاتُنَا فَنَسِيتَهَا وَكَذَلِكَ الْيَوْمَ تُنْسَى ) ( طـه :১২৬)

‘‘সে বলবে, হে আমার রব! তুমি কেন আমাকে অন্ধ করে উত্থিত করলে অথচ আমি তো ছিলাম চক্ষুষ্মান? তখন আল্লাহ বলবেন, এমনিভাবে তোমার নিকট আমার আয়াতসমূহ এসেছিল এরপর তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে, তাই আজ তোমাকেও সেরূপ ভুলে যাওয়া হবে, বিস্মৃত হবে তুমি।’’ [সূরা তা-হা : ১২৬]

এটা তাদের কর্মের পরিপূর্ণ প্রতিদান হিসেবে দেয়া হবে। তাদের জন্য আরো রয়েছে জাহান্নামের ফুটন্ত পানি ও পুঁজ।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

( وَمَنْ جَاءَ بِالسَّيِّئَةِ فَلا يُجْزَى الَّذِينَ عَمِلُوا السَّيِّئَاتِ إِلَّا مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ) ( القصص :৮৪)

‘‘আর যে ব্যক্তি মন্দ কর্ম নিয়ে আসবে, তবে যারা মন্দ কর্ম করেছে, তাদের সেরূপই প্রতিদান দেয়া হবে।’’ [সূরা কাসাস : ৮৪]

সহিহ বুখারিতে আছে :

وعن سمرة بن جندب  { أن النبي كان إذا صلى صلاة - وفي لفظ : صلاة الغداة - أقبل علينا بوجهه فقال : "  من رأى منكم الليلة رؤية؟  "  قال : فإن رأى أحد قَصَّها . فيقول : "  ما شاء الله ". فسألنا يوما فقال : "  هل رأى أحد منكم رؤية؟  "  قلنا : لا . قال : "  لكني رأيت الليلة رجلين أتياني  " ( فساق الحديث وفيه :) "  فانطلقنا حتى أتينا على رجل مضطجع، وإذا آخر قائم عليه بصخرة وإذا هو يهوي بالصخرة لرأسه فيثلغ رأسه فيَتَدَهْدَه الحجر هاهنا فيتبع الحجر فيأخذه فلا يرجع إلى الرجل حتى يصبح رأسُه كما كان، ثم يعود عليه فيفعل به مثلما فعل به المرة الأولى، فقلت : سبحان الله ! ما هذا؟ فقالا لي : انطلِق  " ( فذكر الحديث وفيه :) "  أما الرجل الذي أتيت عليه يُثْلغ رأسُه بالحجر فهو الرجل يأخذ القرآن فيرفضه وينام عن الصلاة المكتوبة }

‘‘আল্লাহর নবি ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন নামায পড়তেন, অন্য রেওয়ায়েতে এসেছে, যখন ফজরের নামায পড়তেন তখন তিনি আমাদের দিকে মুখ করে অগ্রসর হয়ে বলতেন, তোমাদের মধ্যে কেউ কি আজ রাতে কোন স্বপ্ন দেখছে? হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি বলেন, কেউ স্বপ্ন দেখলে সে তা বর্ণনা করত। তিনি স্বপ্ন শ্রবন করে বলতেন, মা-শাআল্লাহ। অর্থাৎ আল্লাহ যা চেয়েছেন তা-ই হয়েছে। অভ্যাস মোতাবেক একদিন তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের কেউ কি আজ রাতে কোন স্বপ্ন দেখেছে? আমরা বললাম না, তিনি বললেন, কিন্তু আমি দেখেছি। দুজন লোক রাতে আমার নিকট এসেছে, (হাদীসের ভাষা, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন) আমরা চললাম, অতঃপর এমন জায়গায় আসলাম যেখানে একজন লোক শুয়ে আছে, অপরজন তার মাথার কাছে পাথর নিয়ে দাঁড়ানো। মাথার ওপর পাথর নিক্ষেপ করতেই, মাথা পাথরের আঘাতে টুকরো টুকরো হয়ে যায়, যখন সে পাথর উঠিয়ে আনতে যায়, তার মাথা পুর্বের ন্যায় হয়ে যায়। অতঃপর তার সাথে পুনরায় আগের মত ব্যবহার করা হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন : আমি এতে আশ্চর্য হয়ে বললাম, সুব্হানাল্লাহ! এটা কি? তারা দুজন আমাকে বলল, সামনে চলুন। এ হাদিসের শেষে আছে, যে লোকটার মাথা খন্ডবিখন্ড করা হচ্ছিল, সে হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যে কুরআনকে গ্রহণ করে, দূরে নিক্ষেপ করেছে, ফরজ নামাজ আদায় না করে ঘুমিয়ে থেকেছে।’’

আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, আল্লাহর নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে সকলকে লক্ষ্য করে বলেছেন :

( إن الشيطان قد يئس أن يعبد في أرضكم ولكن رضي أن يطاع فيما سوى ذلك مما تحاقرون من أعمالكم فاحذروا، إني تركت فيكم ما إن تمسكتم به فلن تضلوا أبدا كتاب الله وسنة نبيه ) رواه الحاكم وقال صحيح الإسناد

‘‘এ ভূমিতে শয়তানের দাসত্ব করা হবে, এমন আশা শয়তান করে না। তবে তা ছাড়া অন্য ব্যাপারে যে তোমরা তার আনুগত্য করবে, তাতেই সে সন্তুষ্ট। যেমন তোমরা তোমাদের আমলকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে, খবরদার! এমনটি কর না। আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিস রেখে যাচ্ছি, যা আকড়ে ধরলে তোমরা গোমরাহ হবে না। অর্থাৎ আল্লাহর কিতাব ও তার রাসূলের সুন্নত।’’ [হাকেম : তিনি বলেন- হাদীসটির সনদ সহীহ।]

সহীহ মুসলিম শরীফে আবূ মালেক আশয়ারী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন :

( القرآن حجة لك او عليك )

‘‘কুরআন তোমার পক্ষের কিংবা বিপক্ষের দলীল।’’ [মুসলিম : ২২৩]

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন :

( القرآن شافع مشفع فمن جعله أمامه قاده إلى الجنة ومن جعله خلف ظهره ساقه إلى النار ).

‘‘কুরআন সুপারিশকারী এবং তার সুপারিশ গ্রহণযোগ্য। সুতরাং যে ব্যক্তি কুরআনকে সামনে রেখে তার অনুসরণ করবে, কুরআন তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি একে নিজ পশ্চাতে রেখে দিবে, কুরআন তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে।’’

প্রিয় পাঠক! যাদের বিরুদ্ধে কুরআন মামলা করবে, তাদের জন্য কুরআন কিভাবে সুপারিশ করবে, তারা কিভাবে কুরআনের সুপারিশ আশা করতে পারে?

হে আল্লাহর বান্দাগণ! এটা আল্লাহর কালাম, আল-কুরআন। যে কুরআন পাহাড়ের পর নাজিল হলে, পাহাড়ও ভয়ে ফেঁটে পড়ত। তা সত্বেও তোমাদের কর্ণসমূহ কুরআন শ্রবন করছে না! তোমাদের চক্ষুসমূহ অশ্রু ঝরাচ্ছে না! ভীত সন্ত্রস্ত হচ্ছে না তোমাদের হৃদয়সমূহ! আফসোস! কিভাবে তোমরা জাহান্নম থেকে নির্ভয় হয়ে গেলে! অথচ কুরআন হচ্ছে জাহান্নাম থেকে নাজাতের একমাত্র পথ, তার সুপারিশ নিশ্চিত কবুল করা হবে। তবুও কেন তোমাদের এ পশ্চাৎগামীতা, কুরআন বিমূখীতা।

আমাদের অন্তরগুলো তাকওয়া শূন্য, জনমানব হীন পরিত্যক্ত এক মরুভূমি, যার চারদিকে ছড়িয়ে আছে গোনার অন্ধকার। আমাদের অন্তরগুলো পাথরের মত কিংবা তার চেয়ে আরো কঠিন। কত রমযান আমাদের ওপর দিয়ে অতিক্রম করেছে অথচ আমাদের অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। কোন যুবক বিরত থাকেনি তার যৌবনের ফানুস উড়ানো থেকে, কোন বৃদ্ধ সরে আসেনি তার প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে। আমরা কবে হব তাদের মত, যারা কুরআনের ডাকে সাড়া দেয়, কুরআনের তিলাওয়াত শুনে যাদের হৃদয় প্রকম্পিত হয়, কেঁপে উঠে। তারা সত্যকে চিনতে পেরেছে, তারাই কল্যাণের পথ এখতিয়ার করেছে। তাদের ওপরই রয়েছে আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ ও দয়া।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন :

( ينبغي لقارئ القرآن أن يعرف بليله إذا الناس ينامون، وبنهاره إذا الناس يفطرون، وببكائه إذا الناس يضحكون، وبورعه إذا الناس يخلطون وبصمته إذا الناس يخوضون وبخشوعه إذا الناس يختالون وبحزنه إذا الناس يفرحون ).

‘‘কুরআন পাঠকের রাতের মর্যাদা বুঝা উচিত, যখন মানুষ ঘুমিয়ে থাকে; দিনের গুরুত্ব বুঝা উচিত, যখন মানুষ রোযা বিহীন থাকে; ক্রন্দনের মহত্ব বুঝা উচিত, যখন মানুষ হাসে; তাকওয়ার গুরুত্ব বুঝা উচিত, যখন মানুষ গুনাহে লিপ্ত হয়; নিরবতার ফজিলত বুঝা উচিত, যখন মানুষ অযথা গল্পে-আড্ডায় মগ্ন থাকে; বিনয়ের কদর করা উচিত, যখন মানুষ অহংকার করে এবং চিন্তার গুরুত্ব উপলব্দি করা উচিত, যখন মানুষ উল্লাসে মেতে থাকে।’’

প্রিয় পাঠক! সময় ফুরিয়ে যাবার পূর্বে কুরআন মুখস্থ করে নাও, এর বিধানের সীমালঙ্ঘন করা থেকে বিরত থাক। মনে রেখ, এ কুরআন একদিন তোমার পক্ষ নিবে কিংবা বিপক্ষে অবতীর্ণ হবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন :

( وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلاً . يَا وَيْلَتَى لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلاناً خَلِيلاً . لَقَدْ أَضَلَّنِي عَنِ الذِّكْرِ بَعْدَ إِذْ جَاءَنِي وَكَانَ الشَّيْطَانُ لِلْإِنْسَانِ خَذُولاً . وَقَالَ الرَّسُولُ يَا رَبِّ إِنَّ قَوْمِي اتَّخَذُوا هَذَا الْقُرْآنَ مَهْجُوراً . وَكَذَلِكَ جَعَلْنَا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوّاً مِنَ الْمُجْرِمِينَ وَكَفَى بِرَبِّكَ هَادِياً وَنَصِيراً ) ( الفرقان :২৭-৩১)

‘‘আর সেদিন যালিম নিজের হাত দু’টো কামড়িয়ে বলবে, ‘হায়, আমি রাসূলের সাথে কোন পথ অবলম্বন করতাম! হায়, আমার দুর্ভোগ, আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। অবশ্যই সে তো আমাকে উপদেশবাণী থেকে বিভ্রান্ত করেছিল, আমার কাছে তা আসার পর।’ আর শয়তান তো মানুষের জন্য চরম প্রতারক। আর রাসূল বলবে, ‘হে আমার রব, নিশ্চয় আমার কওম এ কুরআনকে পরিত্যাজ্য গণ্য করেছে। আর এভাবেই আমি প্রত্যেক নবীর জন্য অপরাধীদের মধ্য থেকে শত্রু বানিয়েছি। আর পথ পথপ্রদর্শক ও সাহায্যকারী হিসেবে তোমার রবই যথেষ্ট।’’ [সূরা আল-ফুরকান : ২৭-৩১]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন