HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

তালাক ও তাহলীল

লেখকঃ প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব

১৩
২য় দলের দলীল সমূহ
এই দল বলেন, একত্রিত তিন তালাকে তিন তালাকই পতিত হবে। কিন্তু ঐ ব্যক্তি গোনাহগার হবে ( وَكاَنَ عَاصِيًا )। অবশ্য ইমাম যুফার-এর মতে তিন তালাক পতিত হবে না। বরং পৃথক পৃথকভাবে পতিত হবে। কেননা একত্রিত তিন তালাক দেওয়া বিদ‘আত।[1]

তারা কুরআনী আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা দেন এভাবে যে, কুরআনে উত্তম পন্থাটি বর্ণিত হয়েছে। তার অর্থ এটা নয় যে, এর বিপরীতটা করলে তালাক হবে না। কুরআনী নির্দেশের বিরোধী হ’লেও কিতাব, সুন্নাহ, ইজমা, আছার ও ক্বিয়াস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, এ অবস্থায় তিন তালাক হবে (আল-ফিক্বহুল ইসলামী ৭/৪১০)। যেমন-

(১) সূরায়ে বাক্বারাহ ২৩৬ আয়াতে বলা হয়েছে, فَإِنْ طَلَّقَهَا فَلاَ تَحِلُّ لَهُ مِنْ بَعْدُ حَتَّى تَنْكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ - ‘যদি সে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়, তবে তার জন্য তা আর হালাল নয়, যতক্ষণ না স্ত্রী অন্য স্বামীকে বিবাহ করে’।

অত্র আয়াতে একত্রিত তিন তালাক বা পৃথক পৃথক তিন তালাক, এ বিষয়ে কোন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।[2] তাছাড়া ২২৯ আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর সীমারেখা অতিক্রম করে, তারা যালেম’। কিন্তু একত্রিতভাবে তিন তালাক দেওয়াকে ‘হারাম’ বলা হয়নি।[3] অতএব এক মজলিসে তিন তালাক দিলে তিন তালাক-ই কার্যকরী হবে।

জবাব : (ক) বাক্বারাহ ২২৯-২৩০ এবং সূরায়ে তালাক্ব ১-২ আয়াত ইদ্দত অনুযায়ী পৃথক পৃথকভাবে তালাক দেওয়ার স্পষ্ট দলীল (খ) ছহীহ হাদীছ সমূহে পৃথক পৃথকভাবে তালাক দেওয়ার স্পষ্ট বিধান ও ব্যাখ্যা এসেছে (গ) সীমা লংঘন করাটাই নিষিদ্ধ হওয়ার বড় দলীল। যেমন অন্যত্র বলা হয়েছে, ‘যারা নিজ স্ত্রী ও দাসী ব্যতীত অন্যকে কামনা করে, তারা সীমা লংঘনকারী’ (মুমিনূন ২৩/৬-৭)।এর অর্থ কি তাহ’লে অন্য মহিলার সঙ্গে যেনা করা হালাল হবে? (নাঊযুবিল্লাহ)। (ঘ) তালাক দিলেই যদি স্ত্রী হারাম হয়ে যায়, তাহ’লে উক্ত আয়াতের অধীনে ঋতু অবস্থার তালাক, সহবাসকৃত পবিত্র অবস্থার তালাক গণ্য হবে কি? অনুরূপভাবে এক মজলিসে একত্রিত তিন তালাকও গণ্য হবে না।

(২) ‘ওয়াইমির ‘আজলানী রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর উপস্থিতিতে তাঁর নির্দেশের পূর্বেই স্বীয় স্ত্রীকে তিন তালাক দেন।[4] এক্ষণে যদি এক সাথে তিন তালাক দেওয়াটা গুনাহের কাজ হ’ত, তাহ’লে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) উহা স্বীকার করে নিতেন না।

জবাব : এখানে স্বামীর পক্ষ থেকে স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেনার অভিযোগ ছিল এবং লে‘আনের ঘটনা ছিল। নিয়ম হ’ল: উভয়পক্ষে লে‘আনের ফলে সাথে সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যায়। পৃথকভাবে তালাক দেওয়ায় কোন প্রয়োজন হয় না। অতএব সাধারণ অবস্থার তালাকের সঙ্গে লে‘আনকে তুলনা করা চলে না। এই সময় তিন তালাক বলাটা বাহুল্য কথা মাত্র। তাছাড়া বুখারীর বর্ণনায় এসেছে ‘রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিদের্শের আগেই সে তিন তালাক দেয়’। অতএব এর কোন কার্যকারিতা নেই।

(৩) আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রিফা‘আহ তার স্ত্রীকে তিন তালাক দেন। অতঃপর স্ত্রী অন্যত্র বিবাহ করে। কিন্তু সেখানেও তালাকপ্রাপ্তা হয়। তখন ঐ মহিলা তার পূর্ব স্বামীর সাথে পুনরায় বিবাহিত হ’তে পারবে কি-না, এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে এসে জিজ্ঞেস করা হ’লে তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ না সে দ্বিতীয় স্বামীর সাথে সহবাস করবে’।[5]

জবাব : উক্ত হাদীছে এক মজলিসে তিন তালাকের কথা নেই। বরং সে তাকে স্বাভাবিক নিয়মে তিন তুহরে তিন তালাক দিয়েছিল বলেই বুঝতে হবে। কেননা রাসূলের যামানায় ‘বায়েন তালাক’ বলতে তিন তুহরে তালাকই বুঝাতো।

(৪) আবু হাফ্ছ ইবনুল মুগীরাহ আল-মাখযূমী তার স্ত্রী ফাতেমা বিনতে ক্বায়েসকে তিন তালাক দিয়ে খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ)-এর সাথে ইয়ামন চলে যান। তখন উক্ত স্ত্রী রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে এসে জিজ্ঞেস করলেন ইদ্দত পালনকালে তার খোরপোষ সম্পর্কে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, এই সময়ে তার জন্য কোন খোরপোষ নেই। তবে যদি তুমি গর্ভবতী হও’ (অর্থাৎ সন্তান প্রসব হওয়া পর্যন্ত তুমি খোরপোষ পাবে)। [6]

জবাব : অত্র হাদীছে এক মজলিসে তিন তালাকের কোন কথা নেই। বরং অন্য বর্ণনায় ‘আলবাত্তাতা’ শব্দ এসেছে। যা দ্বারা বায়েন তালাক বুঝানো হয়। আর তিন তালাক বায়েন প্রাপ্তা স্ত্রীর জন্য স্বামীর পক্ষ হ’তে কোন খোরপোষের দায়িত্ব নেই।

(খ) মুসলিম-এর বর্ণনায় (হা/১৪৮০) পরিষ্কার এসেছে اَخِرَ ثَلاَثِ تطليقاتٍ ‘শেষ তৃতীয় তালাক’ বলে। অতএব এটি যে তিন মাসে তিন তালাক ছিল, তাতে কোন সন্দেহ নেই’।[7]

(৫) ‘উবাদাহ বিন ছামিত (রাঃ) বলেন, আমার দাদা তার স্ত্রীকে একসঙ্গে ১০০০ তালাক দেন। তখন আমার আববা রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে গেলেন। রাসূল (ছাঃ) তাকে বললেন, তোমার দাদা তালাক দেওয়ার সময় আল্লাহকে ভয় করেনি। তার অধিকারে মাত্র তিনটি। বাকী ৯৯৭টি বাড়াবাড়ি ও যুলম হয়েছে। আল্লাহ চাইলে তাকে আযাব দিবেন, চাইলে ক্ষমা করবেন’।[8]

জবাব : হাদীছটি যঈফ ও মওযূ।[9]

(৬) আব্দুল্লাহ বিন ওমর (রাঃ) তাঁর স্ত্রীকে ঋতু অবস্থায় তালাক দেন। অতঃপর বাকী দুই ঋতুর সময় বাকী দুই তালাক দিতে উদ্যত হন। এখবর রাসূল (ছাঃ)-এর কানে গেলে তিনি বলেন, হে আব্দুল্লাহ! এভাবে আল্লাহ তোমাকে নির্দেশ দেননি। নিশ্চয়ই তুমি নিয়মে ভুল করেছ (অর্থাৎ স্ত্রীকে পবিত্র অবস্থায় তালাক দিতে হবে)। ...তখন ইবনে ওমর বললেন, হে রাসূল (ছাঃ)! যদি আমি তিন তালাক দিতাম, তাহ’লে কি স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে পারতাম? রাসূল (ছাঃ) বললেন, না। সে পৃথক হয়ে যেত এবং তোমার গোনাহ হ’ত’ (দারাকুৎনী)।

জবাব : হাদীছটি মুনকার’। ছহীহ হাদীছ সমূহে এর বিপরীত বর্ণিত হয়েছে।[10]

(৭) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি বিদ‘আতী পন্থায় তালাক দিবে, আমরা তার বিদ‘আতকে তার উপর অপরিহার্য করে দেব’।

জবাব : হাদীছটি মুনকার’।[11]

(৮) ওমর (রাঃ) খেলাফতকালে বলেন, লোকেরা তালাকের ব্যাপার খুব জলদী করছে। অথচ সে কাজে তাদের অবকাশ দেওয়া হয়েছিল। এক্ষণে যদি কেউ এরূপ জলদী করে, তবে আমরা তার উপরে সেটা জারি করে দেব’।[12]

জবাব : এটি ছিল ওমর (রাঃ)-এর ইজতেহাদ মাত্র। তা দ্বারা রাজ‘ঈ তালাক-এর কুরআনী পদ্ধতিকে বাতিল করা যায় না। ওমর (রাঃ) এটি করেছিলেন লোকদের ভয় দেখাবার জন্য সাময়িক কঠোরতা হিসাবে। কিন্তু এতে তার উদ্দেশ্য মোটেই হাছিল হয়নি বিধায় মৃত্যুর পূর্বে তিনি লজ্জিত হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।[13]

[1]. হেদায়া ২/৩৫৫; কুদূরী পৃঃ ১৭০; শরহে বেকায়া ২/৬৩; মিরক্বাত ৬/২৯৩।

[2]. যাদুল মা‘আদ ৫/২৩০।

[3]. মিরক্বাত ৬/২৯৩।

[4]. বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩০৪ ‘লি‘আন’ অনুচ্ছেদ।

[5]. বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/৩২৯৫।

[6]. মুসলিম, মিশকাত হা/৩৩২৪।

[7]. যাদুল মা‘আদ ৫/২০৪।

[8]. ত্বারারানী, মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক, মুছান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ।

[9]. সিলসিলা যাঈফা হা/১২১১।

[10]. মুহাল্লা ৯/৩৯২ টীকা; দারাকুৎনী, ইরওয়া হা/২০৫৪, হা/২০৫৪, ৭/১১৯।

[11]. মুহাল্লা ৯/৩৯৩ টীকা।

[12]. মুসলিম হা/১৪৭২।

[13]. ইবনুল ক্বাইয়িম, ইগাছাতুল লাহফান (কায়রো : দারুত তুরাছ আল-আরাবী ১৪০৩/১৯৮৩) ১/২৭৬।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন