HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

মেধাস্বত্ব ও কপিরাইট আইন

লেখকঃ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ

কিতাবের নাম/ লেখক/ অনুবাদক/ সম্পাদক
মেধাস্বত্ব ও কপিরাইট আইন : ইসলামি দৃষ্টিকোণ

মাওলানা আবুল কালাম আযাদ

সম্পাদনা : কাউসার বিন খালিদ

মেধাস্বত্ব ও কপিরাইট আইন : ইসলামি দৃষ্টিকোণ
কপিরাইট একটি আইনি ধারণা। কপিরাইট বলতে কোন কাজের মূল সৃষ্টিকর্তার সেই কাজটির ওপর একক, অনন্য অধিকারকে বোঝানো হয়। কপিরাইট সাধারণত একটি সীমিত সময়ের জন্য কার্যকর হয়। ওই মেয়াদের পর কাজটি পাবলিক ডোমেইনের অন্তর্গত হয়ে যায়।

কপিরাইট/মেধাস্বত্ব কী?
মেধাস্বত্ব কোন একটি বিশেষ ধারণার প্রকাশ বা তথ্য ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণকারী বিশেষ কিছু অধিকারের সমষ্টি বা সেট। সবচেয়ে সাধারণভাবে, শাব্দিক অর্থে এটা কোন মৌলিক সৃষ্টির ‘অনুলিপি তৈরির অধিকার’ বুঝায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই অধিকারগুলো সীমিত সময়ের জন্য সংরক্ষিত থাকে। কপিরাইটের চি ‎‎‎ হ্ন হর্ল, এবং কিছু কিছু স্থানে বা আইনের এখতিয়ারে এটার বিকল্প হিসেবে (c) বা (C) লেখা হয়।

সৃষ্টিশীল, বুদ্ধিবৃত্তিক কিংবা শিল্পের বিভিন্ন প্রকার কাজের একটা বিরাট পরিব্যাপ্তিতে মেধাস্বত্ব থাকতে পারে বা হওয়া সম্ভব। বই, প্রবন্ধ, কবিতা, থিসিস, নাটক এবং অন্যান্য সাহিত্যকর্ম, চলচ্চিত্র, মিউজিক্যাল কম্পোজিশন, অডিও রেকর্ডিং, চিত্র বা পেইন্টিংস, আঁকা বা ড্রইং, ফটোগ্রাফ, সফট্ওয়্যার, রেডিও ও টেলিভিশনের সরাসরি ও অন্যান্য সম্প্রচার এর অন্তর্গত।

মেধাস্বত্ব আইন, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ (ইন্টেলেকচুয়্যাল প্রোপার্টি) সংক্রান্ত একটি ব্যাপ্ত বিষয়ের অধীনে অনেকগুলি আইনের একটি।

মেধাস্বত্ব আইনগুলোকে কোন কোন দেশে বার্ন কনভেশনের মত আন্তর্জাতিক সমঝোতার মাধ্যমে স্বীকৃত ও প্রমিতকরণ করা হয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মত আন্তর্জাতিক সংস্থা বা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সদস্য দেশগুলিতে এটা প্রয়োজন হয়।

সারা বিশ্বে মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগ আছে। এ দেশে ২০০০ সালে এ আইন হয় এবং ২০০৫ এ তা সংশোধন করা হয়। কিন্তু আইনটির কোনো বাস্তব প্রয়োগ নেই।

বর্তমান আইনটির আগে ১৯৬২ সালেও এ ধরনের একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। ‘কপিরাইট’ শব্দটিতে দুটি শব্দ আছে - কপি ও রাইট। ‘কপি’ অর্থ কোনো একটি আসল জিনিস পুনরায় তৈরি করা, আর ‘রাইট’ মানে অধিকার বা স্বত্ব।

কোন কিছু সৃষ্টি করে কোন প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানে কিছু টাকার বিনিময়ে প্রকাশ করতে দিলে, এর মানে এই নয় যে ওই প্রতিষ্ঠানকে কপিরাইট দিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে হয়তো একটা নির্দিষ্টসংখ্যা, ধরুন ১০ হাজার কপির জন্য চুক্তি হয়েছে, ওই পর্যন্তই। পেশাদারিত্বের প্রথম শর্ত হিসেবে সবকিছু লিখিত ও পরিষ্কার থাকতে হবে। যত কপির জন্য চুক্তি হচ্ছে তার বাইরে কপি হলে সেটার জন্য আবার নতুন করে চুক্তি করতে হবে।

আপনার কপিরাইটের নির্দিষ্ট চুক্তি কতটুকু সেই অনুযায়ী আপনি তা করতে পারবেন। আপনার মৃত্যুর ৬০ বছর পর পর্যন্ত আপনার কপিরাইটের স্বত্ব থাকবে। যেমন আপনি ২০১০ সালে মারা গেলে আপনার কপিরাইটের স্বত্ব থাকবে ২০৭০ সাল পর্যন্ত।

কী কী অবস্থায় মেধাস্বত্ব ও কপিরাইট অধিকার লঙ্ঘিত হয় :
লেখকের অনুমতি ছাড়া লেখক ব্যতীত অন্য কেউ কোন লেখা প্রকাশ করার উদ্যোগ নেয়া, অথবা লেখকের লেখাকে নিজের লেখা বলে দাবি করা।

লেখকের বিষয়বস্ত্ত পরিবর্তন পরিবর্ধন করা।

ইসলামের দৃষ্টিতে কপিরাইট অধিকার
মেধাস্বত্ব কবি বা লেখকের একমাত্র হক। এ হক নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। মেধা তাঁর একমাত্র সম্পদ। এ সম্পদ দ্বারা একমাত্র সে-ই উপকৃত হবে।

তার অনুমতি ব্যতীত অন্য কেউ এতে হাত দিতে পারবে না। অন্যের হক নষ্ট করা ইসলাম হারাম করেছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:

لا ضرر ولا ضرار .

‘ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা ক্ষতি করা কোনটাই ইসলামে নেই।’

অতএব, কপিরাইট আইনের মাধ্যমে যদি কবি বা লেখকের মেধাস্বত্ব অধিকার প্রতিষ্ঠা করা না হয় তাহলে তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অনেকে আবার মেধাস্বত্ব অধিকারকে স্বীকার করে না। তাদের মতে লেখকের বিষয়বস্ত্ত বিকৃত না করে অন্য কেউ যদি তার বই ছাপিয়ে ব্যবসা করে তাহলে কোন অসুবিধা নেই। ছাপানোর অধিকার যদি কেবল একজনের হাতে রাখা হয় তাহলে জনগণ এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ তারা ইচ্ছা মত মূল্য নির্ধারণ করে ব্যবসা করার পরোয়া করে না। তারা দলিল হিসেবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিম্নোক্ত হাদিস পেশ করে থাকে-

نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم عن تلقي الركبان، وأن يبيع حاضر لباد .

অথচ আমরা যে বিষয়বস্ত্ত নিয়ে আলোচনা করছি তার সাথে এ হাদিসের নিকটবর্তী সম্পর্ক তো দূরের কথা, কোন দূরবর্তী সম্পর্কও নেই।

কপিরাইট আইন বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশে ইতিপূর্বে যেসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা নিম্নে দেয়া হলো -
১। কপিরাইট অফিসের প্রতিষ্ঠা :

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইনের গুরুত্ব অনুধাবন করে বিদ্যমান বিশ্ব কপিরাইট চুক্তি/কনভেনশনের সামঞ্জস্য বিধান করে সরকার কপিরাইট আইন, ২০০০ (২০০০ সনের ২৮ নং আইন) প্রণয়ন করেছেন। এই আইন জারির ফলে পুরাতন কপিরাইট অধ্যাদেশ ১৯৬২ (অধ্যাদেশ নম্বর ৩৪, ১৯৬২) রহিত করা হয়েছে এবং এই আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে একটি কপিরাইট অফিস, রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস্ ও কপিরাইট বোর্ড গঠন, বোর্ডের ক্ষমতা ও কার্য পদ্ধতির বিধান প্রণীত হয় (কপিরাইট আইন ২০০০, অধ্যায়-২ ধারা ৯, ১০, ১১ ও ১২)। সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা ১লা নভেম্বর ২০০০ ই. সালে কপিরাইট আইন কার্যকর করা হয়। কপিরাইট অফিস গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে একটি সংযুক্ত দপ্তর। সরকারের জাতীয় পর্যায়ের একটি আধা-বিচার বিভাগীয় (Quasi-judicial) প্রতিষ্ঠান।

২। কপিরাইট অফিসের পটভূমি :

কপিরাইট আইন ব্রিটিশ আমলে এই দেশে প্রবর্তিত হয়। ১৭০৯ সালে ইংল্যান্ডে এই আইন প্রথম প্রণীত হয়। পরবর্তীকালে একাধিকবার এর সংশোধন করা হয়। ১৯১৪ ই. সালে এক সংশোধনীর মাধ্যমে এই উপমহাদেশকে কপিরাইট আইনের আওতাভুক্ত করা হয়। ভারত বিভক্তির পর তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার ১৯১৪ সালের কপিরাইট আইন বাতিল করত ১৯৬২ সালের ২রা জুন কপিরাইট অধ্যাদেশ নামে একটি অধ্যাদেশ জারি করে করাচীতে একটি কেন্দ্রীয় অফিস প্রতিষ্ঠা করে। পরে ঢাকায় একটি আঞ্চলিক কপিরাইট অফিস স্থাপন করা হয়। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশক্রমে ১৯৭৪ সালে সংসদে অনুমোদিত একটি অ্যাক্টের মাধ্যমে ১৯৬২ সালের অধ্যাদেশের কতিপয় ধারা সংশোধন পূর্বক উক্ত আঞ্চলিক অফিস জাতীয় পর্যায়ের একটি সংযুক্ত দপ্তরের মর্যাদায় উন্নীত করা হয় এবং তখন হতে কপিরাইট অফিস শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সংযুক্ত দপ্তর হিসেবে কার্যরত।

কপিরাইট আইন ২০০০ (২০০০ সনের ২৮ নং আইন) ১লা নভেম্বর কার্যকর হওয়ার ফলে উক্ত আইনে ১০৫ ধারা অনুযায়ী রহিত করণ, হেফাজত এবং ক্রান্তিকালীন বিধান ১৯৬২ সনের কপিরাইট অধ্যাদেশ নং ৩৪ (সংশোধিত ১৯৭৪, ১৯৭৮), এ দ্বারা রহিত করা হয়।

৩। কপিরাইট আইন, ২০০০ এর আওতায় নিম্নবর্ণিত বিষয়বস্ত্ত অন্তর্ভূক্ত :

সকল জ্ঞান ভান্ডারের বই পুস্তক, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, নাট্যকর্ম, সংগীত কর্ম, শব্দ রেকর্ডিং, শিল্পকর্ম, ভিডিও ছবি, কম্পিউটার, সফট্ওয়্যার প্রোগ্রাম, আলোকচিত্র, সম্পাদনকারীর অধিকার। বেসরকারিভাবে কপিরাইট সমিতি/সোসাইটি পরিচালনার উদ্দেশ্যে নিবন্ধন, নিয়ন্ত্রণ ও পরিদর্শন ইত্যাদি। এই সকল মৌলিক সৃজনশীল কর্মের প্রণেতা অর্থে গ্রন্থকার/ লেখক/ সুরকার/ রচয়িতা/ নির্মাতা, চিত্রগ্রাহক, প্রযোজক, কর্মটির সৃষ্টিকারী ব্যক্তির কতিপয় অধিকার/ বা এক গুচ্ছ স্বত্বের স্বত্বাধিকারী হিসেবে জাতীয় বা আন্তর্জাতিক কপিরাইট আইনে স্বীকৃত। প্রচলিত কপিরাইট আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে উল্লেখিত কর্মের স্বত্ব সমূহের নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করত সৃজনশীল প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে শিক্ষা ও সংস্কৃতি উন্নয়ন কপিরাইটের মূল উদ্দেশ্য।

এই কারণে জ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিনিময়ে কপিরাইট আইনের প্রয়োগ, বিদেশি বই পুস্তক, পুনঃ প্রকাশ, পুন মুদ্রণ/পূণরুৎপাদন, পুনঃমুদ্রন, কপিরাইট সফট্ওয়্যার/প্রোগ্রামের ব্যবহার হস্তান্তর, ইত্যাদি কার্যাবলী কপিরাইট আইনের অন্তর্ভুক্ত বিধায় কপিরাইট সম্পর্কযুক্ত মামলা মোকদ্দমা ও অভিযোগের নিষ্পত্তি এ অফিসের কর্মের অন্যতম দিক। কপিরাইট আইনের মূখ্য উদ্দেশ্য হল গ্রস্থকার/লেখক, রচয়িতা, নির্মাতা, প্রযোজক, কর্মটির সৃষ্টিকারী ব্যক্তির সর্বপ্রকার স্বত্ব রক্ষা করা এবং জাতীয় ও আস্তর্জাতিক পর্যায়ে কপিরাইট আইনের বাস্তবায়ন করা।

কপিরাইট অফিসের প্রধান প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য :
কপিরাইট আইন/২০০০ এর ৯ ধারা অনুযায়ী কপিরাইট অফিস প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কপিরাইট অফিস একটি আধা বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠান। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরনকল্পে কপিরাইট অফিস, কপিরাইটের রেজিস্ট্রারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীন থাকবে এবং কপিরাইট রেজিস্ট্রার সরকারের তত্ত্বাবধায়ন ও নির্দেশ সাপেক্ষে তার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রধান দায়িত্ব নিম্নরূপ হবে।

১। কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন ও সনদপত্র প্রদান...

২। প্রশাসন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্য সম্পাদন।

৩। কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে উদ্ভুত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য শুনানী অনুষ্ঠান ও সাক্ষ্য গ্রহণ।

৪। বিদেশী ভাষা থেকে বাংলা ভাষায় অনুবাদ কিংবা পুনঃ প্রকাশের লাইসেন্স মঞ্জুরীকরণ।

৫। সম্প্রচারের কোন কোন বিদেশী কর্মের বাংলায় অনুবাদ করার লাইসেন্স প্রদান।

৬। ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে কপিরাইট রেজিস্ট্রীকৃত কোন কর্মের অবৈধ কপির আমদানির ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।

৭। জাতীয় স্বার্থে কোন সাহিত্য কিংবা নাট্যকর্মের অনুবাদ, প্রকাশ কিংবা পুনরুৎপাদন এর লাইসেন্স মঞ্জুরীকরণ।

৮। কবিতা, সাহিত্য, কিংবা বই-পুস্তক জনসাধারনের নিকট প্রকাশের উদ্দেশ্যে কোন কোন ক্ষেত্রে রয়্যালিটি নির্ধারণ।

৯। কপিরাইট সোসাইটি/সমিতি নিবন্ধন, পরিচালনা, পরিদর্শন ইত্যাদিসহ উক্ত সোসাইটি সমিতি কর্তৃক সংগৃহীত ফি/ রয়্যালিটি অথবা চার্জ ইত্যাদির যৌক্তিকতা যাচাই ও নিয়ন্ত্রণ।

১০। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশেষ করে ‘‘ইউনেস্কো’’ কর্তৃক পরিচালিত ইউনিভার্সেল কপিরাইট কনভেনশন,WIPO কর্তৃক পরিচালিত বার্ণ কনভেনশন এবং WTO কর্তৃক পরিচালিত TRIPS চুক্তি থেকে কপিরাইট ও নেইবারিং রাইটস সংক্রান্ত উদ্ভুত দায়-দায়িত্ব পালন এবং সরকারকে পরামর্শ দান। উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ বর্তমানে ওই সমস্ত সংস্থা/ কনভেনশন/ চুক্তির সদস্য বিধায় যাবতীয় দায়-দায়িত্ব পালনে বাধ্য।

১১। জাতীয় কপিরাইট তথ্যকেন্দ্র পরিচালনা।

১২। কপিরাইট বোর্ডে আপিল গ্রহণ ও কপিরাইট বোর্ড মিটিং আহবান ও পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত কিংবা রায় কার্যকরীকরণ।

উল্লেখ্য যে, রেজিষ্ট্রার অব কপিরাইটস্ পদাধিকার বলে বোর্ডের সদস্য সচিব এবং কপিরাইট বোর্ড একটি অবৈতনিক বোর্ড যা কোন কোন ক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতের ভূমিকা পালন করে থাকে।

১৩। রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রাপ্ত কপিরাইট যুক্ত কর্মের রক্ষনাবেক্ষণ।

১৪। কপিরাইট রুলসের সংশোধন উন্নয়নের দায়িত্ব এবং এই ব্যপারে সরকারকে সময়ে সময়ে পরামর্শ দান।

১৫। রাজস্ব অর্জনকারী সংস্থা হিসেবে দায়িত্ব পালন।

১৬। অন্যান্য সংবিধিবদ্ধ কার্যাবলী কপিরাইট বোর্ড পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট কার্যাবলী যেমন সমন প্রদান করা এবং কোন ব্যক্তির উপস্থিতি, নিশ্চিত করা এবং তাকে শপথ পূর্বক পরীক্ষা করা, কোন দলিল প্রদর্শন এবং উপস্থাপনা করানো, হলফনামাসহ সাক্ষ্যগ্রহণ, সাক্ষ্য বা দলিল পরীক্ষার জন্য কমিশন মঞ্জুর করা, কোন আদালত বা কার্যালয় থেকে কোন সরকারী নথি বা তার অনুলিপি তলব করা ও নির্ধারিতব্য অন্য যে কোন বিষয় এ অফিসের দায়িত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত।

কপিরাইট অফিসের আইন সংক্রান্ত কতিপয় সংক্ষিপ্ত তথ্য :
কপিরাইট অফিসের কার্যাবলী সংবিধিবদ্ধভাবে নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়ে থাকে। এটি এক বিশেষ ধরনের আইন যার অধীনে কপিরাইটযুক্ত কোন ধী - সম্পদ (Intellectual Property Rights) এর মেয়াদ কত বছর পর্যন্ত বলবৎ থাকবে তা কপিরাইট আইন ২০০০ (২০০০ সনে ২৮ নং আইন) অধ্যায়-৫, ধারা-২৪ থেকে ২৯, ৩০, ৩১, ৩২ ধারাসমূহে উল্লেখ রয়েছে। প্রনেতা/রচয়িতা মৃত্যুর পর ৬০ বছর, ৫০ বছর ও ২৫ বছর বলবৎ থাকে।

কপিরাইট আইন, ২০০০ এর ১০ ধারায় রেজিস্ট্রারের কার্যাবলী নির্ধারণ করা হয়েছে এবং ১১ ও ১২ ধারায় কপিরাইট বোর্ডের গঠন, বোর্ডের ক্ষমতা ও কার্য পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। কপিরাইট বোর্ড এবং কপিরাইট রেজিস্ট্রারকে ৯৯ ধারা মতে কতিপয় ক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। কপিরাইট আইনের ৫৬/৫৭ ধারামতে কপিরাইট সার্টিফিকেট ইস্যু করার ক্ষমতা রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস’কে প্রদান করা হয়েছে। উক্ত আইনের ৯৫ ধারায় কপিরাইট বোর্ডের নিকট আপীল করার বিধান রয়েছে।

রচয়িতা/প্রনেতা/ কপিরাইটের মালিকের অনুমতি ছাড়া কপিরাইটযুক্ত কর্মের চুরি উলেলখিত কর্ম কেউ নকল বা অধিকার লংঘন করলে (মুদ্রণ, পূর্ণ মুদ্রণ অনুবাদ, প্রকাশ, পুনঃ প্রকাশ পুনরুৎপাদন, অভিযোজন, প্রচার, সম্প্রচার, প্রদর্শন, রেকর্ডিং ও ভাড়া ইত্যাদি) শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে সর্বোচ্চ ৪ বছর কারাদন্ড এবং জরিমানা হিসেবে ৩ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড হতে পারে (ধারা-৮২-৮৩)।

আইনগত প্রতিকারের ব্যবস্থা :

প্রতিকার হিসেবে দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় ক্ষেত্রেই মামলা রুজু করা যায় : (ক) দেওয়ানী মামলা নিষেধাজ্ঞা ও ক্ষতিপূরনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা রুজু করতে হবে। (খ) ফৌজদারী মামলা দায়রা জজ আদালতে দায়ের করা যাবে।

উচ্চ আদালতে আপীল :

হাইকোর্টে আপীল করা যাবে। কোন কোন ক্ষেত্রে কপিরাইট বোর্ডে আপীল করার বিধান আছে। তবে এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রারের রায়ের বিরুদ্ধে করতে হবে (ধারা-৯৪-৯৬)।

পুলিশের ক্ষমতা :

ইচ্ছাকৃত লংঘনের ক্ষেত্রে কোন পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতারী পরোয়ানা ছাড়াই লংঘিত সকল কপি জব্দ করতে পারবেন (ধারা-৯৩)।

অবৈধ কপি আমদানীর ক্ষেত্রে :

কপিরাইট মালিকের বা তার প্রতিনিধির দরখাস্তের ভিত্তিতে কপিরাইট রেজিস্ট্রার তদন্ত পরিচালনা করতে পারেন এবং কাষ্টমস আইন অনুযায়ী তা নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা নিতে পারেন (ধারা-৭৪)।

কপিরাইট হস্তান্তর যোগ্য :

কপিরাইটের মালিক ইচ্ছা করলে অন্যকে সম্পূর্ণ বা আংশিক কপিরাইট হস্তান্তর করতে পারেন। তবে তা লিখিত ও প্রয়োজনীয় শর্তাবলীসহ বৈধ চুক্তির মাধ্যমে সম্পাদন করতে হবে (ধারা-১৮)।

কপিরাইট যৌথ ব্যবস্থাপনা :

বেসরকারীভাবে কপিরাইট সমিতি (সোসাইটি) গড়ে তোলার জন্য আইনে বিভিন্ন ধারা আছে। এই ব্যবস্থাপনা স্থাপিত হলে সৃজনশীল কর্মকান্ড বৃদ্ধি পাবে এবং কপিরাইটের মালিকগণ তাদের স্ব-স্ব অধিকার রক্ষা করে নিজেরাই কপিরাইট আইনের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারবেন (ধারা-৪১-৪৭)।

বিদেশী কর্মের লাইসেন্স :

বিদেশী বই পুস্তক ও শিল্পকর্মের পুনরুৎপাদন বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত বই পুস্তকের বাংলায় অনুবাদ ও পুনরুৎপাদনের লাইসেন্স প্রাপ্তির সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ধারা উপধারা আইনে সন্বিবেশিত করা হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে রচয়িতা/কপিরাইট মালিককে র‌্যয়েলিটি পরিশোধ ও বিভিন্ন শর্ত পূরণ করতে হবে (ধারা-৫২)।

কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন :

বাংলাদেশ কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনযোগ্য তবে এটা বাধ্যতামুলক নয়। ইচ্ছা করলে কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কপিরাইট মালিকের নাম, কর্মটি প্রকাশনার বছর কিভাবে কপিরাইট অর্জন করলেন ইত্যাদি বিষয়ে নির্ধারিত আবেদনপত্রের ফর্মে ঘোষণা দিতে হবে। কপিরাইট অফিস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করত রেজিস্ট্রেশনের পর যে সার্টিফিকেট ইস্যু করে তা আইন আদালতে একটি প্রমাণযোগ্য দলিল হিসেবে গৃহীত হয়ে থাকে (ধারা-৫৬)।

বই পুস্তকের জমা :

বই পুস্তকের একটি করে কপি জাতীয় লাইব্রেরীতে এবং ছয়টি বিভাগীয় পাবলিক লাইব্রেরীতে জমা দিতে হবে (ধারা-৬২)।

বিদেশী কর্মের কপিরাইট :

কপিরাইট বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তির স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে বিদেশী কর্মের কপিরাইট প্রটেকশন দিতে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ (ধারা-৬৮)।

কপিরাইট আইনের ১০৩ ধারার আওতায় নিম্নোক্ত কাজসমূহ সংবিধিবদ্ধভাবে কপিরাইট অফিসের দায়িত্ব অন্তর্ভুক্ত।
১। চেয়ারম্যান এবং বোর্ডের অন্যান্য সদস্যগণের কার্যের মেয়াদ ও চাকুরীর শর্তাবলী।

২। এই আইনের অধীন দাখিল তব্য অভিযোগ ও দরখাস্ত এবং মঞ্জুরীতব্য লাইসেন্সের ফরম।

৩। রেজিস্ট্রার বা বোর্ডের সমীপে কার্যধারায় অনুসরণীয় পদ্ধতি।

৪। ধারা ৪১ এর উপধারা (২) এর অধীন দরখাস্ত দলিলের শর্তাবলী।

৫। ধারা ৪১ এর উপধারা (৩) এর অধীন কপিরাইট সমিতি নিবন্ধন হওয়ার শর্তাবলী।

৬। ধারা ৪১ এর উপ-ধারা (৪) এর অধীন নিবন্ধন বাতিলের তদন্ত।

৭। ধারা ৪২ এর উপ-ধারা (১) এর দফা (ক) এর অধীন কপিরাইট সমিতিকে প্রদেয় ক্ষমতার শর্ত এবং উপ-ধারা দফা (খ) এর অধীনে অধিকারের মালিকদের অনুরূপ ক্ষমতা অর্পনের ক্ষমতা প্রত্যাহারের শর্তাবলী।

৮। ধারা ৪২ এর উপধারা (৩) এর অধীন কপিরাইট সমিতি কর্তৃক লাইসেন্স ইস্যুকরণ ফি আদায় এবং অধিকারের মালিকদের মধ্যে অনুরূপ ফি বণ্টনের শর্তাবলী।

৯। ধারা ৪৪ এর উপধারা (১) এর অধীনে ফি আদায় ও বণ্টন বিষয় অধিকারে মালিকদের অনুমোদন ফি হিসেবে আদায়কৃত কোন অর্থের সদ্ব্যবহার এবং অনুরূপ মালিকদের তাদের অধিকারসমূহে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট কার্যাবলীর তথ্য সরবরাহের পদ্ধতি।

১০। ধারা ৪৫ এর উপধারা (১) এর অধীন কপিরাইট সমিতি কর্তৃক রেজিস্ট্রারের নিকট বিবরণী দাখিল।

১১। এই আইনের অধীন প্রদেয় কোন রয়্যালিটি নির্ধারণ এবং অনুরূপ রয়্যালিটি প্রদানের জন্য জামানত গ্রহনের পদ্ধতি।

১২। এই আইনের অধীন প্রদেয় রয়্যালিটি প্রদানের পদ্ধতি।

১৩। কপিরাইট সমিতি কর্তৃক হিসেব এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক নথি সংরক্ষন এবং বার্ষিক হিসাব বিবরণীর নমুনা ও পদ্ধতি এবং ধারা ৪২ এর উপধারা (২) এর অধীন অধিকারের ব্যক্তি মালিককে প্রদত্ত পারিশ্রমিকের পরিমাণ নির্ধারণের পদ্ধতি;

১৪। এই আইনের অধীন রক্ষিতব্য কপিরাইট রেজিষ্ট্রারের ফরম এবং এতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এমন বিবরণী।

১৫। যে সকল বিষয়ে রেজিস্ট্রার এবং বোর্ডের দেওয়ানী আদালতের ক্ষমতা থাকবে।

১৬। এই আইনের অধীন প্রদেয় ফিস।

১৭। এই আইন দ্বারা রেজিষ্ট্রারের ব্যবস্থাপনা বা নিয়ন্ত্রণে ন্যাস্ত কপিরাইট অফিসের কার্যাদি ও অন্যান্য সকল বিষয়।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন