HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবীগণের মর্যাদা

লেখকঃ সালেহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান

১. সাহাবীগণের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ ও ফিতনা সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মত:
ফিতনার কারণ: ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ইয়াহূদীরা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। তারা এক নিকৃষ্ট প্রতারককে এ কাজের জন্য নির্ধারণ করে, যে মিছেমিছি নিজেকে মুসলিম বলে জাহির করতো। সে ছিল আব্দুল্লাহ ইবন সাবা নামক ইয়ামানের এক ইয়াহূদী। অতঃপর এ ইয়াহূদী খোলাফায়ে রাশেদীনের তৃতীয় খলীফা উসমান ইবন আফ্ফান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর বিরুদ্ধে তার হিংসা ও ঈর্ষার বিষ সম্প্রসারিত করতে শুরু করে এবং তার বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করতে থাকে। ফলে কিছু অদূরদর্শী দুর্বল ঈমানের অধিকারী লোক - যারা ফিতনা-ফাসাদ পছন্দ করে তার ধোঁকায় পতিত হয়ে তার পাশে জমায়েত হলো, এ ষড়যন্ত্রের ফলশ্রুতিতে শেষ পর্যন্ত খলীফায়ে রাশেদ উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু নিতান্ত মযলুম হয়ে শাহাদাত বরণ করেন। তার শাহাদাতের পর মুসলিমদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দিল। উক্ত ইয়াহূদী এবং তার অনুসারীদের প্ররোচনায় এ ফিতনা প্রবল আকার ধারণ করল এবং সাহাবীগণ নিজ নিজ ইজতেহাদ মোতাবেক যুদ্ধে লিপ্ত হলেন।

‘আত-তাহাবিয়া’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকারক বলেন: رفض ‘রাফদ’ এর ফিতনা সৃষ্টি করে এক মুনাফিক ও যিন্দিক তথা বে-দীন ব্যক্তি। তার ইচ্ছা ছিল দীন ইসলামকে মিটিয়ে দেওয়া এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে নিন্দা ও কুৎসা রটনা করা যেমন উলামায়ে কেরাম তা বর্ণনা করেছেন। কেননা আব্দুল্লাহ বইন সাবা যখন ইসলামের ছদ্মবেশ ধারণ করে, তখন সে মূলতঃ স্বীয় ষড়যন্ত্র, প্রতারণা ও নোংরামীর জাল বিস্তার করে ইসলামের বিপর্যয় ও ক্ষতি সাধন করতেই চেয়েছিল, খ্রিস্টান ধর্ম নিয়ে ইয়াহূদী ধর্ম যেমনটা করেছিল। তাই সে ইবাদাতগুজার হওয়ার ভান করল। সৎ কাজের নির্দেশ দান এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করার কাজ জাহির করতে লাগল এমনকি উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সম্পর্কে ফিতনা ছড়িয়ে তাকে হত্যা করার চেষ্টায় সে লিপ্ত হল। এর পর যখন সে কুফায় এলো, তখন আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর পক্ষে বাড়াবাড়ি করা ও তাকে সাহায্য করার ভান করলো, যাতে সে তার উদ্দেশ্য সাধনে সিদ্ধি লাভ করতে পারে। আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে সে নির্দেশ পৌঁছোলে তিনি তাকে হত্যার হুকুম দিলেন। কিন্তু সে কার্কিস এর দিকে পালিয়ে গেল। ইতিহাসে তার সব ঘটনাই প্রসিদ্ধ।

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহ. বলেন: যখন উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু শাহাদাত বরণ করলেন, তখন মুসলিমদের হৃদয় ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল এবং সৎ লোকেরা অপদস্ত হল। যারা আগে ফিতনা সৃষ্টি করতে অক্ষম ছিল, তারা ফিতনা সৃষ্টি করে বেড়াতে লাগল এবং যারা কল্যাণ ও সততা প্রতিষ্ঠা করতে চাইত, তারা তা প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়ে গেল। এমতাবস্থায় লোকেরা আমীরুল মুমিনীন আলী ইবন আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কাছে বাই‘আত গ্রহণ করল। সে সময় তিনিই খেলাফতের সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি ছিলেন এবং জীবিত সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি ছিলেন; কিন্তু যেহেতু মানুষের অন্তকরণ হয়ে পড়েছিল বিভক্ত এবং ফিতনা-ফাসাদের আগুন ছিল প্রজ্বলিত, তাই এক কথার ওপর সবাই ঐক্যবদ্ধ হতে পারে নি। মুসলিমদের জামা‘আত ও সুসংগঠিত হতে পারে নি। ফলে খলীফা নিজে এবং উম্মাতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি বর্গের কেউই ঈপ্সিত কল্যাণ সাধন করতে সমর্থ হন নি। বহু লোক বিচ্ছিন্নবাদিতা ও ফিতনা ফাসাদে লিপ্ত হল। এরপর যা হবার তাই হলো।

আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর মধ্যকার যুদ্ধে সাহাবায়ে কেরামের পরস্পরের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ বিবাদ সম্পর্কে ওজর পেশ করতে গিয়ে ইমাম ইবন তাইমিয়্যাহ বলেন: আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে যুদ্ধের সময় মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু খেলাফত দাবি করেন নি এবং খেলাফতের জন্য কেউ তার কাছে বাই‘আতও করেন নি। নিজেকে খলীফা মনে করে কিংবা খেলাফতের হকদার ভেবে তিনি আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হন নি। এ ব্যাপারে যে কেউ প্রশ্ন করলে তিনি সে কথারই স্বীকৃতি প্রদান করতেন। মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং তার সাথীগণ এ মনোভাব পোষণ করেননি যে, তারা আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও তার সাথীদের সাথে যুদ্ধ শুরু করবেন এবং নিজেদেরকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরবেন বরং আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর সাথীগণ ভাবলেন, মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু এবং তার ও তার সঙ্গীদের উচিত আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর আনুগত্য করা এবং তার কাছে বাই‘আত করা। কেননা মুসলিমদের জন্য একজন খলীফাই শুধু হতে পারে। এদিক থেকে তারা আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর আনুগত্য থেকে দূরে অবস্থান করছে এবং এ দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকছে অথচ তারা শক্তিমত্তারও অধিকারী। তাই আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা জরুরি মনে করলেন। যাতে তারা এ দায়িত্ব পালন করে এবং খলীফার আনুগত্য ও জামা‘আতের ঐক্য বহাল থাকে। পক্ষান্তরে মু‘আবিয়া রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ও তার সাথীদের বক্তব্য ছিল: আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর আনুগত্য ও বাই‘আত তাদের ওপর ওয়াজিব নয় এবং এজন্য যদি তাদের সাথে যুদ্ধ করা হয়, তাহলে তারা হবেন মজলুম। এর কারণ বর্ণনায় তারা বলেন: কেননা সকল মুসলমানের ঐক্যমতে উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু মজলুম হয়ে শহীদ হয়েছেন এবং তার হত্যাকারীগণ আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাহিনীতে অবস্থান করছে। বাহিনীতে তাদেরই প্রাধান্য এবং শক্তি বিদ্যমান। আমরা সংযত থাকলে তারা আমাদের ওপর যুলুম করবে এবং চড়াও হবে অথচ আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর পক্ষে তাদেরকে প্রতিহত করা সম্ভব নয়। যেমনিভাবে উসমান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর ব্যাপারে তাদেরকে বাধা দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় নি। অতএব, আমাদের এমন খলীফার কাছে বাই‘আত হওয়া উচিত, যিনি আমাদের প্রতি ইনসাফ করতে সক্ষম এবং আমাদের প্রতি ইনসাফ করার জন্য তিনি চেষ্টা সাধনা করবেন।

সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ বিগ্রহের ফলে যে মতবিরোধ ও ফিতনা সৃষ্টি হয়েছে, সে সম্পর্কে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মতকে দু‘কথায় সংক্ষিপ্তভাবে ব্যক্ত করা যায়।

প্রথমত: সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ ও মতবিরোধের ব্যাপারে তারা চুপ থাকবে এবং এ ব্যাপারে তারা চুলচেরা বিশ্লেষণ থেকেও বিরত থাকবে। কেননা এ ধরনের ক্ষেত্রে চুপ থাকাটাই নিরাপত্তা লাভের পন্থা। আর তাদের জন্য এ ভাবে দো‘আ করবে।

﴿رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٌ ١٠﴾ [ الحشر : ١٠ ]

“হে আমাদের রব! আমাদেরকে এবং আমাদের আগে আমাদের যে সব ভাইয়েরা ঈমান এনেছে তাদেরকে ক্ষমা করুন। আর ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত নম্বর: ১০]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন