HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সাহাবীগণের মর্যাদা

লেখকঃ সালেহ ইবন ফাওযান আল-ফাওযান

২. যেসব রিওয়ায়েতে সাহাবায়ে কেরামের নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়েছে, বিভিন্ন পন্থায় নিম্নলিখিতরূপে সেগুলোর জবাব দেওয়া:
ক. এসব রিওয়ায়েতের মধ্যে এমন কিছু মিথ্যা বর্ণনাও রয়েছে যা সাহাবায়ে কেরামের বদনাম করার উদ্দেশ্যে তাদের ও ইসলামের শত্রুগণ রচনা করেছে।

খ. এগুলোতে এমন বর্ণনাও আছে যাতে কিছু পরিবর্ধন করা হয়েছে, কিছু বাদ দেওয়া হয়েছে এবং এর সঠিক রূপটি বিগড়ে দিয়ে তাতে মিথ্যার অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছে। ফলে তা বিকৃত বলে পরিগণিত, যার দিকে ফিরে তাকানোও ঠিক নয়।

গ. এ রিওয়ায়েতগুলোর ক্ষেত্রে সাহাবায়ে কেরাম মা‘জুর ছিলেন বলে মনে করতে হবে। কেননা তারা সকলেই ইজতিহাদ করেছিলেন এবং এতে হয় তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলেন কিংবা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আর বিষয়টিও ছিল ইজতেহাদের ক্ষেত্র যাতে ইজতেহাদকারী সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে পাবেন দু’টি সওয়াব এবং ভুল করলে একটি সাওয়াব ও ভুলটি ক্ষমা করে দেওয়া হবে। কেননা হাদীসে এসেছে,

«إِذَا حَكَمَ الحَاكِمُ فَاجْتَهَدَ ثُمَّ أَصَابَ فَلَهُ أَجْرَانِ، وَإِذَا حَكَمَ فَاجْتَهَدَ ثُمَّ أَخْطَأَ فَلَهُ أَجْرٌ»

“হুকুম দানকারী কোনো ব্যক্তি যদি ইজতেহাদ করে সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান করেন, তবে তিনি দু‘টি সওয়াব পাবেন এবং ইজতিহাদ করে ভুল সিদ্ধান্ত দিলে একটি সওয়াব পাবেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৩৫২; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৬]

ঘ. তারা ছিলেন আমাদের মতই মানুষ। একক ভাবে তারাও ভুল করতে পারেন। তাই একক ব্যক্তি হিসাবে তারা কেউই গোনাহ-খাতা থেকে মাসুম ছিলেন না; কিন্তু তাদের থেকে যে ভুল-ত্রুটিই প্রকাশিত হয়েছে সে জন্য তাদের বহু কাফফারা তথা নেক আমল রয়েছে, যদ্বারা সে ভুল-ত্রুটি মাফ হয়ে যায়। যেমন,

১. সে ভুল থেকে তারা তাওবা করেছেন। আর দলীল দ্বারা প্রমাণিত যে, তাওবা সকল গুনাহ-খাতা মিটিয়ে দেয়।

২. তাদের অনেক ফযীলত ও নেক আমল রয়েছে, যদ্বারা তাদের কোনো গুনাহ-খাতা প্রকাশ পেলে তা মাফ হয়ে যায়। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন,

﴿إِنَّ ٱلۡحَسَنَٰتِ يُذۡهِبۡنَ ٱلسَّيِّ‍َٔاتِۚ﴾ [ هود : ١١٤ ]

“পুণ্য কাজ অবশ্যই পাপ দূর করে দেয়।” [সূরা হূদ, আয়াত: ১১৪]

৩. অন্যদের নেক আমলের চেয়ে তাদের নেক আমলসমূহ বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেওয়া হয়। ফযীলত ও মর্যাদায় কেউ তাদের সম পর্যায়ে উপনীত হতে পারে না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্তব্য হতে প্রমাণিত যে, তারাই ছিলেন সর্বোত্তম প্রজন্ম, তাদের এক মুদ বা এক অঞ্জলী পরিমাণ সদকা অন্যদের অহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ স্বর্ণ সদকা করার চেয়ে উত্তম। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকুন এবং তাদেরকে ও সন্তুষ্ট রাখুন।

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহ. বলেন: সকল আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত ও আয়িম্মায়ে কেরাম মনে করেন যে, সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে কেউই মাসুম নয়; না রাসূলের আত্মীয় সম্পর্কের কেউ, না সাহাবীগণের অগ্রবর্তী দলের কেউ এবং না এতদ্ব্যতীত অন্য কেউ। বরং তাদের মতে সাহাবীগণের থেকে গুনাহ প্রকাশ পেতে পারে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাওবা দ্বারা তাদের গুনাহ মাফ করে দেন এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। তাদের নেক আমলের বিনিময়ে তাদের গুনাহ মিটিয়ে দেন ইত্যাদি আরো বহু পন্থায় তিনি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَٱلَّذِي جَآءَ بِٱلصِّدۡقِ وَصَدَّقَ بِهِۦٓ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلۡمُتَّقُونَ ٣٣ لَهُم مَّا يَشَآءُونَ عِندَ رَبِّهِمۡۚ ذَٰلِكَ جَزَآءُ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ٣٤ لِيُكَفِّرَ ٱللَّهُ عَنۡهُمۡ أَسۡوَأَ ٱلَّذِي عَمِلُواْ وَيَجۡزِيَهُمۡ أَجۡرَهُم بِأَحۡسَنِ ٱلَّذِي كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ٣٥﴾ [ الزمر : ٣٣، ٣٥ ]

“যারা সত্য নিয়ে আগমন করেছে এবং সত্যকে সত্য বলে মেনে নিয়েছে, তারাই মুত্তাকী। তাদের জন্য তাদের পালন কর্তার কাছে তাই রয়েছে, যা তারা চাইবে। এটা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার, যাতে এরা যে সব মন্দ কাজ করেছিল আল্লাহ তা মার্জনা করে দেন এবং তাদের উত্তম কর্মের পুরস্কার তাদেরকে দান করেন।” [সূরা আয-যুমার, আয়াত: ৩৩-৩৫]

অন্যত্র আল্লাহ বলেন:

﴿حَتَّىٰٓ إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُۥ وَبَلَغَ أَرۡبَعِينَ سَنَةٗ قَالَ رَبِّ أَوۡزِعۡنِيٓ أَنۡ أَشۡكُرَ نِعۡمَتَكَ ٱلَّتِيٓ أَنۡعَمۡتَ عَلَيَّ وَعَلَىٰ وَٰلِدَيَّ وَأَنۡ أَعۡمَلَ صَٰلِحٗا تَرۡضَىٰهُ وَأَصۡلِحۡ لِي فِي ذُرِّيَّتِيٓۖ إِنِّي تُبۡتُ إِلَيۡكَ وَإِنِّي مِنَ ٱلۡمُسۡلِمِينَ ١٥ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ نَتَقَبَّلُ عَنۡهُمۡ أَحۡسَنَ مَا عَمِلُواْ وَنَتَجَاوَزُ عَن سَيِّ‍َٔاتِهِمۡ فِيٓ أَصۡحَٰبِ ٱلۡجَنَّةِۖ ١٦ ﴾ [ الاحقاف : ١٥، ١٦ ]

“অবশেষে যখন সে শক্তি সামর্থ্যের বয়সে পৌঁছে এবং চল্লিশ বৎসরে উপনীত হয়, তখন বলে, হে আমার রব! তুমি আমাকে সামর্থ্য দাও, যাতে আমি তোমার নি‘আমতের শোকর করতে পারি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করতে পারি। আমার জন্য আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ কর। আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং আমি অবশ্যই তোমার নির্দেশ মান্যকারীদের অন্তর্ভুক্ত। আমি এমন লোকদেরই সুকৃতিগুলো কবুল করি এবং মন্দ কর্মগুলো ক্ষমা করে দেই। তারা জান্নাতবাসীদের অন্তর্ভুক্ত।” [সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: ১৫-১৬]

ফিতনার সময় সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে যে মতবিরোধ এবং যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হয়েছিল, ইসলামের শত্রুগণ তাকে সাহাবীগণের ওপর অপবাদ আরোপ করার এবং তাদের মর্যাদা ক্ষুন্ন করার উপায় বানিয়ে নিয়েছে, এমনকি তারা নিজেদের কর্মের মাধ্যমে ইসলামের সুবর্ণ ইতিহাস ও সর্বোত্তম যুগের সালফে সালেহীন সম্পর্কে অনবহিত কিছুসংখ্যক মুসলিম যুবকদের মধ্যে সন্দেহের বীজ বপন করেছে, যাতে করে তারা ইসলামের প্রতি আঘাত হানতে পারে, ও মুসলিমদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা ও বিভক্তি আনয়ন করতে পারে এবং এ উম্মতের পূর্ববর্তীদের প্রতি পরবর্তীদের মনে একরাশ ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে পারে, যেন তারা সালফে সালেহীনের অনুকরণ না করে এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী আমল করাও ছেড়ে দেয়। অথচ আল্লাহ বলেন:

﴿وَٱلَّذِينَ جَآءُو مِنۢ بَعۡدِهِمۡ يَقُولُونَ رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لَنَا وَلِإِخۡوَٰنِنَا ٱلَّذِينَ سَبَقُونَا بِٱلۡإِيمَٰنِ وَلَا تَجۡعَلۡ فِي قُلُوبِنَا غِلّٗا لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٞ رَّحِيمٌ ١٠﴾ [ الحشر : ١٠ ]

“আর যারা তাদের পরে আগমন করেছে, তারা বলে: হে আমাদের রব! আমাদেরকে এবং আমাদের আগে আমাদের যে সব ভাইয়েরা ঈমান এনেছে তাদেরকে ক্ষমা করুন। আর ঈমানদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অন্তরে কোনো বিদ্বেষ রাখবেন না। হে আমাদের রব! আপনি দয়ালু, পরম করুণাময়।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ১০]

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন