মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অনুবাদ : নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুমিনদের জান ও মাল জান্নাতের বিনিময়ে। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাস্তায়। অতঃপর তারা মারে ও মরে। উপরোক্ত সত্য ওয়াদা মওজুদ রয়েছে তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআনে। আল্লাহর চেয়ে ওয়াদা পূর্ণকারী আর কে আছে? অতএব তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর তোমাদের ক্রয়-বিক্রয়ের উপরে, যা তোমরা সম্পাদন করেছ তাঁর সাথে। আর সেটিই হ’ল মহান সফলতা’ (তাওবাহ ১১১)।
শানে নুযূল :
অত্র আয়াতটি বায়‘আতে আক্বাবায়ে কুবরায় অংশগ্রহণকারী আনছারদের উদ্দেশ্যে নাযিল হয়। নবুওয়াতের ত্রয়োদশ বর্ষে হজ্জের মওসুমে ইয়াছরিব থেকে মক্কায় আগত হাজীদের নিকট থেকে ‘মিনা’র ‘আক্বাবাহ’ নামক পাহাড়ী সুড়ঙ্গ পথে চন্দ্রালোকিত গভীর রজনীর আলো-আঁধারিতে এই বায়‘আত গ্রহণ করা হয়। পরপর তিন বছরের মধ্যে এটিই ছিল সর্ববৃহৎ ও মক্কার সর্বশেষ বায়‘আত। সেকারণ ‘বায়‘আতে আক্বাবাহ’ বলতে মূলতঃ এই সর্বশেষ বায়‘আতকেই বুঝায়। হাজীদের সংখ্যাধিক্যের কারণে বর্তমানে ‘মিনা’-র উক্ত পর্বতাংশকে জামরায়ে আক্বাবাটুকু বাদ দিয়ে বাকীটা সমান করে দেওয়া হয়েছে। এই বায়‘আতেই তাওহীদ ভিত্তিক আক্বীদা ও আমল, বিরোধী পক্ষের সাথে জিহাদ এবং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মদীনায় হিজরত করে গেলে তাঁর নিরাপত্তা ও সহযোগিতার বিষয়ে অঙ্গীকার গ্রহণ করা হয়। বায়‘আত গ্রহণ কালে আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহা আনছারী বলেন, اِشْتَرِطْ لِرَبِّكَ وَلِنَفْسِكَ مَا شِئْتَ ‘আপনি আপনার প্রভুর জন্য ও আপনার নিজের জন্য যা খুশী শর্তারোপ করুন’! তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন,
‘আমি আমার প্রতিপালকের জন্য এই শর্ত আরোপ করছি যে, তোমরা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। অতঃপর আমার নিজের ব্যাপারে শর্ত হ’ল এই যে, তোমরা আমার হেফাযত করবে, যেমন তোমরা নিজেদের জান ও মালের হেফাযত করে থাক’। জবাবে তারা বলল : فَمَالَنَا إِذَا فَعَلْنَا ذَلِكَ ‘এসব করলে বিনিময়ে আমরা কি পাব’? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, ‘জান্নাত’ ( اَلْجَنَّةُ )। তখন তারা খুশীতে উদ্বেলিত হয়ে বলে উঠল, رِبْحُ الْبَيْعِ لاَ نُقِيْلُ وَلاَ نَسْتَقِيْلُ ‘ব্যবসায়িক লাভের এই চুক্তি আমরা কখনোই ভঙ্গ করব না এবং ভঙ্গ করার আবেদনও করব না’। তখন অত্র আয়াত নাযিল হয়।[1] সেকারণ সূরা তাওবাহ ‘মাদানী’ সূরা হলেও এ আয়াতটি মক্কায় অবতীর্ণ হওয়ার কারণে ‘মাক্কী’।
আয়াতের ব্যাখ্যা :
যেকোন আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য তার প্রচারের সাথে সাথে চাই নিবেদিতপ্রাণ একদল মানুষ। দুনিয়াবী স্বার্থ থাকলে কখনোই নিবেদিতপ্রাণ হওয়া যায় না। আল্লাহ প্রেরিত অহি-র বিধান প্রতিষ্ঠার জন্য উৎসর্গিতপ্রাণ একদল মানুষ তৈরীর লক্ষ্যেই উপরোক্ত আয়াত নাযিল হয়।
‘ইসলাম’ এসেছে দাওয়াতের মাধ্যমে এবং ‘ইমারত’ এসেছে বায়‘আতের মাধ্যমে ( اَلْإِسْلاَمُ دَعْوَةٌ وَالْإِمَارَةُ بَيْعَةٌ )। বায়‘আত অর্থ : ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি। আমীরের নিকটে ইসলামী আনুগত্যের চুক্তিকে বায়‘আত বলা হয়। কারণ এর বিনিময়ে জান্নাত লাভ হয়, যেমন মাল বিক্রয়ের বিনিময়ে অর্থ লাভ হয়। তিন বৎসর যাবত মক্কায় গোপন দাওয়াত দেওয়ার পর ৪র্থ নববী বর্ষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) হজ্জের মওসুমে আগত বিভিন্ন গোত্রের নিকটে দাওয়াত দেওয়া শুরু করেন। উল্লেখ্য যে, যুলক্বা‘দাহ, যুলহিজ্জাহ ও মুহাররম পরপর এই তিন মাস, অতঃপর ‘রজব’ মাস, মোট এই চার মাসে আরবদের মধ্যে লড়াই-ঝগড়া ও মারামারি নিষিদ্ধ ছিল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই সুযোগটি কাজে লাগান এবং নবুওয়াতের ৪র্থ বর্ষ থেকে ১০ম বর্ষ পর্যন্ত ৭ বছর সময়ের মধ্যে মোট ১৫টি গোত্রের নিকটে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে সক্ষম হন। কিন্তু কেউই তাঁর দাওয়াত কবুল করেনি। এসময় ১০ম নববী বর্ষের মধ্যভাগে রজব মাসে তিন দিন বা অনুরূপ নিকটতম ব্যবধানে স্নেহময় চাচা আবু ত্বালিব ও প্রাণপ্রিয়া স্ত্রী খাদীজা (রাঃ)-এর মৃত্যু হয়। সাথে সাথে কুরায়েশদের অত্যাচার বেড়ে যায়। এমতাবস্থায় তিনি কুরায়েশের শাখা গোত্র বনু জামাহ-এর সাথে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ শক্তিশালী বনু ছাক্বীফ গোত্রের সমর্থন লাভের আশায় মক্কা থেকে ত্বায়েফ গমন করেন।
১০ম নববী বর্ষের শাওয়াল মাস মোতাবেক ৬১৯ খৃষ্টাব্দের মে মাসের শেষ কিংবা জুন মাসের শুরুতে প্রচন্ড দাবদাহের মধ্যে বিশ্বস্ত গোলাম যায়েদ বিন হারেছাহ (রাঃ)-কে সাথে নিয়ে স্রেফ পায়ে হেঁটে তিনি ৬০ মাইল দূরে ত্বায়েফ রওয়ানা হন। রাস্তায় যেখানে যে গোত্রকে পেয়েছেন, তিনি তাদের নিকটে গিয়ে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। কিন্তু কারু কাছ থেকেই তিনি সাড়া পাননি। অতঃপর ত্বায়েফ পৌঁছে তিনি বনু ছাক্বীফ গোত্রের তিন নেতা তিন ভাই আব্দ ইয়ালাইল, মাসঊদ ও হাবীব বিন ‘আমরের নিকটে দাওয়াত দেন ও অত্যাচারী কুরায়েশদের বিরুদ্ধে তাদের সাহায্য কামনা করেন। কিন্তু তারা তাঁকে চরমভাবে নিরাশ করে। এমনকি তাঁর পিছনে তরুণ ছেলেদের লেলিয়ে দেয়। যারা তাঁকে মেরে-পিটিয়ে রক্তাক্ত করে তাড়িয়ে দেয় এবং তিন মাইল দূরে এক আঙ্গুর বাগানে এসে তিনি আশ্রয় নেন। এখানে বসেই তিনি ত্বায়েফবাসীর হেদায়াতের জন্য প্রসিদ্ধ দো‘আটি করেন।[2]
অতঃপর মক্কার পথে রওয়ানা হয়ে ‘ক্বারনুল মানাযিল’ নামক স্থানে পৌঁছলে জিব্রীল (আঃ) পাহাড় সমূহের নিয়ন্ত্রক ( مَلَكُ الْجِبَالِ ) ফেরেশতাকে নিয়ে অবতরণ করেন এবং কা‘বা শরীফের উত্তর ও দক্ষিণ পার্শ্বের দু’পাহাড়কে (আবূ কুবাইস ও কু‘আইক্বিআন) একত্রিত করে তার মধ্যবর্তী মক্কার অধিবাসীদেরকে পিষে মেরে ফেলার অনুমতি প্রার্থনা করেন ( إِنْ شِئْتَ أَنْ أُطْبِقَ عَلَيْهِمُ الْأَخْشَبَيْنِ لَفَعَلْتُ )। কিন্তু দয়াশীল রাসূল (ছাঃ) তাতে রাযী না হয়ে বলেন, بَلْ أَرْجُو أَنْ يُخْرِجَ اللهُ مِنْ أَصْلاَبِهِمْ مَنْ يَعْبُدُ اللهَ وَحْدَهُ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا ‘আশা করি আল্লাহ এদের পৃষ্ঠদেশ থেকে এমন বংশধর সৃষ্টি করবেন, যারা কেবলমাত্র তাঁরই ইবাদত করবে এবং তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না’।[3] অতঃপর মক্কাভিমুখে রওয়ানা হয়ে নাখলা উপত্যকায় কয়েক দিন অবস্থান করেন। সেখানে আল্লাহ একদল জিনকে প্রেরণ করেন ও তারা কুরআন শুনে ঈমান আনয়ন করে। যাদের ঘটনা আল্লাহ স্বীয় রাসূলকে পরে জানিয়ে দেন (আহক্বাফ ২৯-৩১ ও জিন ১-১৫)।
উপরোক্ত গায়েবী মদদের আশ্বাস ও জিনদের ইসলাম গ্রহণের ঘটনায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) উদ্বুদ্ধ ও আশ্বস্ত হন এবং ইতিপূর্বেকার সমস্ত দুঃখ-কষ্ট ভুলে গিয়ে পুনরায় মক্কায় প্রত্যাবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন। তখন যায়েদ বিন হারেছাহ (রাঃ) তাঁকে বলেন, হে রাসূল! যারা আপনাকে বের করে দিয়েছে, সেখানে আপনি কিভাবে প্রবেশ করবেন? রাসূল (ছাঃ) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ একটা পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাঁর দ্বীনকে সাহায্য ও বিজয়ী করবেন’। অতঃপর তিনি হেরা গুহাতে আশ্রয় নিয়ে মক্কার বিভিন্ন নেতার নিকটে আশ্রয় চেয়ে সংবাদ পাঠাতে থাকেন। সবাই তাঁকে নিরাশ করে। একমাত্র মুত্ব‘ইম বিন ‘আদী সম্মত হন এবং তার সহায়তায় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) ও যায়েদ বিন হারেছাহ (রাঃ) সরাসরি কা‘বা গৃহে এসে দু’রাক‘আত ছালাত আদায় করেন। তখন মুত্ব‘ইম ও তার ছেলেরা সশস্ত্র অবস্থায় তাঁকে পাহারা দিতে থাকে। অতঃপর তারা তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেন। আবু জাহল প্রমুখ নেতাগণ যখন জানতে পারল যে, মুত্ব‘ইম ইসলাম গ্রহণ করেননি, কেবলমাত্র বংশীয় কারণেই মুহাম্মাদকে আশ্রয় দিয়েছে, তখন তারাও বিষয়টি মেনে নেয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) অতঃপর পরবর্তী হজ্জ মওসুমে বিপুল উৎসাহে দাওয়াত দিতে শরু করেন। এই সময় ইয়াছরিবের বিখ্যাত কবি সুওয়াইদ বিন ছামিত, খ্যাতনামা ছাহাবী আবু যার গিফারী, ইয়ামনের কবি ও গোত্রনেতা তুফায়েল বিন আমর, অন্যতম ইয়ামনী নেতা যিমাদ আল-আযদী ইসলাম গ্রহণ করেন।
[1]. তাফসীর ইবনে কাছীর ২/৪০৬; কুরতুবী ৮/২৬৭।
[2]. আর-রাহীকুল মাখতূম পৃঃ ১২৬।
[3]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ; আর-রাহীক্ব পৃঃ ১২৭।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/457/5
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।