মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইসলামের সোনালী যুগে মুসলমানদের উন্নতি ও বিশ্ব বিজয়ের মূলে কারণ ছিল তাদের পারস্পরিক মহববত-ভালোবাসা ও বিদ্বেষমুক্ত হৃদয়ের সৃদৃঢ় বন্ধন। তারা অন্যের দুঃখ-বেদনাকে নিজের সাথে ভাগ করে নিতেন। তারা অন্যের জন্য সেটাই ভালবাসতেন, যেটা নিজের জন্য ভালবাসতেন। হযরত আনাস (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, وَالَّذِى نَفْسِى بِيَدِهِ لا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لأَخِيْهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ ‘যার হাতে আমার জীবন তার কসম করে বলছি, তোমাদের কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য ঐ বস্ত্ত ভালবাসবে, যা সে নিজের জন্য ভালবাসে’।[1] এ বিষয়ে মক্কার মুহাজির মুসলমানদের জন্য মদীনার আনছারগণের অনন্য ত্যাগের দৃষ্টান্ত বিশ্ব ইতিহাসে অমর হয়ে আছে। তাদের প্রশংসায় আল্লাহ বলেন, وَالَّذِينَ تَبَوَّءُوا الدَّارَ وَالْإِيمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّونَ مَنْ هَاجَرَ إِلَيْهِمْ وَلاَ يَجِدُونَ فِي صُدُورِهِمْ حَاجَةً مِمَّا أُوتُوا وَيُؤْثِرُونَ عَلَى أَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ ‘যারা (মক্কা হ’তে মুহাজিরদের আগমনের) পূর্ব থেকেই মদীনায় বসবাস করত এবং ঈমান এনেছিল, তারা (আনছাররা) মুহাজিরদের ভালবাসে এবং তাদেরকে যা (সম্পদ ও উচ্চ সম্মান) দেওয়া হয়েছে, তা পাওয়ার জন্য নিজেদের অন্তরে কোনরূপ প্রয়োজন অনুভব করে না। আর তারা নিজেদের উপরে তাদের অগ্রাধিকার দেয়, যদিও তাদের নিজেদেরই ছিল অন্নকষ্ট। বস্ত্ততঃ যারা হৃদয়ের কার্পণ্য হ’তে মুক্ত, তারাই সফলকাম’ (হাশর ৫৯/৯)। এমনকি যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যু পথযাত্রী মুসলিম সৈনিক তৃষ্ণার্ত অন্য সৈনিকের স্বার্থে নিজে পানি পান না করেই প্রাণত্যাগ করে মৃত্যুর দুয়ারে মানবতার চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে গেছেন। যেমন ইয়ারমূকের যুদ্ধে ঘটেছিল।[2] ইতিহাসে এর কোন তুলনা নেই।
আনাস ইবনু মালেক (রাঃ) বলেন, আমরা একদিন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে বসে আছি। এমন সময় তিনি বললেন, يَطْلُعُ عَلَيْكُمُ الآنَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‘এখন তোমাদের নিকট একজন জান্নাতী মানুষের আগমন ঘটবে’। অতঃপর আনছারদের একজন ব্যক্তি আগমন করল। যার দাড়ি দিয়ে ওযূর পানি টপকাচ্ছিল ও তার বাম হাতে জুতা জোড়া ছিল। দ্বিতীয় দিন ও তৃতীয় দিন রাসূল (ছাঃ) একই রূপ বললেন এবং পরক্ষণে একই ব্যক্তির আগমন ঘটলো। অতঃপর যখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) মজলিস থেকে উঠলেন, তখন আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনুল ‘আছ তাঁর পিছু নিলেন। ...আনাস (রাঃ) বলেন, আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) বলেন যে, আমি তার বাসায় একরাত বা তিন রাত কাটাই। কিন্তু তাকে রাতে ছালাতের জন্য উঠতে দেখিনি। কেবল ফজরের জন্য ওযূ করা ব্যতীত। তাছাড়া আমি তাকে সর্বদা ভাল কথা বলতে শুনেছি। এভাবে তিনদিন তিনরাত চলে গেলে আমি তার আমলকে হীন মনে করতে লাগলাম ( كِدْتُ أَنْ أَحْتَقِرَ عَمَلَهُ )। আমি তখন ঐ ব্যক্তিকে বললাম, আপনার সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) এই কথা বলেছিলেন এবং আমিও আপনাকে গত তিনদিন যাবৎ লক্ষ্য করছি। কিন্তু আপনাকে বড় কোন আমল করতে দেখলাম না ( فَلَمْ أَرَكَ تَعْمَلُ كَبِيْرَ عَمَلٍ )। তা’হলে কোন বস্ত্ত আপনাকে ঐ স্থানে পৌঁছিয়েছে, যার সুসংবাদ আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) আমাদেরকে শুনিয়েছেন। তিনি বললেন, আমি যা করি তাতো আপনি দেখেছেন। অতঃপর যখন আমি চলে আসার জন্য পিঠ ফিরাই, তখন তিনি আমাকে ডেকে বললেন, مَا هُوَ إِلاَّ مَا رَأَيْتَ غَيْرَ أَنِّىْ لاَ أَجِدُ فِىْ نَفْسِىْ لِأَحَدٍ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ غِلاًّ وَلاَ أَحْسُدُ أَحَداً عَلَى خَيْرٍ أَعْطَاهُ اللهُ إِيَّاهُ ‘আপনি যা দেখেছেন, তাতো দেখেছেন। তবে আমি আমার অন্তরে কোন মুসলিমের প্রতি কোনরূপ বিদ্বেষ রাখি না এবং আমি কারু প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত কোন কল্যাণের উপর হিংসা পোষণ করি না’। একথা শুনে আব্দুল্লাহ বিন আমর বললেন, هَذِهِ الَّتِىْ بَلَغَتْ بِكَ وَهِىَ الَّتِىْ لاَ نُطِيْقُ ‘এটিই আপনাকে উক্ত স্তরে পৌঁছেছে। এটি এমন এক বস্ত্ত যা আমরা করতে সক্ষম নই।[3]
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, لاَ يَجْتَمِعَانِ فِىْ قَلْبِ عَبْدٍ الإِيْمَانُ وَالْحَسَدُ ‘কোন বান্দার অন্তরে ঈমান ও হিংসা একত্রিত হতে পারে না’।[4] অর্থাৎ মুমিনের অন্তরে হয় ঈমান থাকবে, নয় হিংসা থাকবে। ঈমানদারের অন্তরে হিংসা থাকবে না, হিংসুকের অন্তরে ঈমান থাকবে না। মুমিন কখনো হিংসুক নয়, হিংসুক কখনো মুমিন নয়। অর্থাৎ পূর্ণ মুমিন নয়। হিংসা মুমিনদের পরস্পরে ভাই হওয়ার পথে সবচেয়ে বড় বাধা। এই বাধা দূর না করা পর্যন্ত মুমিন সমাজ আপোষে ভাই ভাই হ’তে পারবে না।
মুমিন সর্বদা অন্যের শুভ কামনা করে। যেমন সে সর্বদা নিজের শুভ কামনা করে। যেমন তামীম দারী (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, الدِّينُ النَّصِيْحَةُ ‘দ্বীন হ’ল নছীহত’।[5] অর্থাৎ এখলাছ। যা পরস্পরের শুভ কামনা ও অকল্যাণ প্রতিরোধের মাধ্যমে অর্জিত হয়। হযরত জারীর বিন আব্দুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকট বায়‘আত করেছিলাম ছালাত কায়েম করা, যাকাত আদায় করা এবং প্রত্যেক মুসলমানের জন্য শুভ কামনার উপর’।[6]
বস্ত্ততঃ প্রথম যুগের মুসলমানেরা ছিলেন পারস্পরিক ভালোবাসায় একটি দেহের ন্যায়। যারা পরস্পরকে সাহায্য করতেন। পরস্পরের দোষ গোপন করতেন। পরস্পরের ব্যথায় সমব্যথী হ’তেন। নু‘মান বিন বাশীর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, তুমি মুমিনদের পারস্পরিক দয়া, ভালবাসা ও স্নেহকে দেখবে একটি দেহের ন্যায়। যার এক অঙ্গ ব্যথাতুর হলে সর্বাঙ্গ ব্যথাতুর হয় অনিদ্রা ও জ্বরের মাধ্যমে’।[7] নিঃসন্দেহে তারা ছিলেন আল্লাহর পথে সংগ্রামে পারস্পরে সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায়, যাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন (ছফ ৬১/৪)। এযুগেও মুসলিম উম্মাহর উন্নতি ও অগ্রগতির সেটাই হ’ল আবশ্যিক পূর্বশর্ত।
[1]. বুখারী হা/১৩, মুসলিম হা/৪৫; মিশকাত হা/৪৯৬১।
[2]. ইবনু কাছীর, আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ ৭/১১।
[3]. হাকেম পৃঃ ৩/৭৯ হা/৪৩৮০, হাকেম ছহীহ বলেছেন এবং যাহাবী তাকে সমর্থন করেছেন। আহমাদ হা/১২৭২০, আরনাঊত্ব ছহীহ বলেছেন; আলবানী প্রথমে ছহীহ পরে যঈফ বলেছেন (তারাজু‘আতুল আলবানী হা/৪৮)।
[4]. নাসাঈ হা/৩১০৯, সনদ হাসান।
[5]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪৯৬৬।
[6]. মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৪৯৬৭।
[7]. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৯৫৩।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/549/8
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।