HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
গুনাহের দরজা
লেখকঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
৫
দ্বিতীয়তঃ জিহ্বা:মানুষের অর্থহীন আচরণ যেমন কাজের ক্ষেত্রে হয় তদ্রূপ কথার ক্ষেত্রেও হয়। কেননা কথাও তার কাজের অংশ। তবে এ বিষয়ে অধিকাংশ মানুষই বেখবর। তাই তারা তাদের কথাবার্তাকে কর্মের অঙ্গীভূত মনে করে না। উমার ইবন আব্দুল আযীয তাদের জন্য এ বিষয়টির তাৎপর্য সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। তিনি বলেন,
«مَنْ عَلِمَ أَنَّ الْكَلاَمَ مِنْ عَمَلِهِ أَمْسَكَ عَنِ الْكَلاَمِ إِلاَّ فِيْمَا يَعْنِيْهِ»
“যে জানবে যে তার কথা কর্মেরই অংশ সে নিরর্থক কথা থেকে নিবৃত্ত থাকবে।” [. ইমাম আহমদের ‘কিতাবুজ জুহুদ’ পৃষ্ঠা: ২৯৬। ইবন রজবের ‘জামে আল-উলুম ওয়ালহিকাম’, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২৯১।]
বরং নিরর্থক কাজ থেকে বিরত থাকার নিকটতম উদ্দেশ্যে হলো জিহবাকে অর্থহীন কথা থেকে বাঁচিয়ে রাখা। এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা সাক্ষ্য দিচ্ছে,
«إِنَّ مِنْ حُسْنِ إِسْلامِ الْمَرْءِ، قِلَّةَ الْكَلامِ فِيمَا لَا يَعْنِيهِ»
“মানুষের সৌন্দর্য্য ইসলাম হলো অর্থহীন কথা থেকে জিহ্বাকে বাঁচিয়ে রাখা।” [. মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১৭৩২।]
আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন,
«مِنْ فِقْهِ الرَّجُلِ قِلَّةُ الْكَلاَمِ فِيْمَا لاَ يَعْنِيْهِ»
“মানুষের বুদ্ধিমত্তার অংশ বিশেষ হলো নিরর্থক বিষয়ে কথার স্বল্পতা।” [. আদাবুল মুজালিসা, ইবন আব্দুল বার, পৃ. ৬৮।]
মানুষের বাক্য সংযমের ক্ষেত্রে আল্লাহর বাণী যথেষ্ট যে, তিনি বলেছেন,
﴿مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨﴾ [ق: ١٨ ]
“মানুষ যে কথা উচ্চারণ করে তার নিকট রয়েছে রক্ষণশীল প্রহরী”। [সূরা ক্বাফ, আয়াত: ১৮]
এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وَهَلْ يَكُبُّ النَّاسَ فِي النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ أَوْ عَلَى مَنَاخِرِهِمْ إِلَّا حَصَائِدُ أَلْسِنَتِهِمْ»
“মানুষকে তাদের চেহারা বা কাঁধের উপর দিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে কেবল তাদের জিহ্বার শস্যসমূহ (কথা)।” [. সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ২৬১৬; মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং২২০১৬]
জিহ্বাকে সংযত রাখবে এভাবে যে কোনো শব্দ অনর্থক উচ্চারিত হবে না কেবলমাত্র ঐসব বিষয়ে কথা বলবে যেখানে তার দীনের ক্ষেত্রে লাভ ও বৃদ্ধির আশা করা যায়। যখন সে কথা বলবে চিন্তা করবে তাতে কোনো লাভ ও কল্যাণ আছে কি নেই? যদি কোনো লাভ না থাকে নিজেকে সংযত রাখবে আর যদি তাতে কোনো লাভ থাকে, তবে লক্ষ্য রাখবে এই কথার মাধ্যমে কী তার চেয়েও অধিক লাভ জনক কোনো পথ ছুটে যাবে? এমন হলে এর দ্বারা ঐটিকে বিনষ্ট করবে না। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেছেন,
«خَمْسًا لَهُنَّ أَحْسَنُ مِنَ الدُّهْمِ الْمُوقَفَةِ : لا تَكَلَّمْ فِيمَا لا يَعْنِيكَ، فَإِنَّهُ فَضْلٌ، وَلا آمَنُ عَلَيْكَ الْوِزْرَ، وَلا تَتَكَلَّمْ فِيمَا يَعْنِيكَ حَتَّى تَجِدَ لَهُ مَوْضِعًا، فَإِنَّهُ رُبَّ مُتَكَلِّمٍ فِي أَمْرٍ يَعْنِيهِ، قَدْ وَضَعَهُ فِي غَيْرِ مَوْضِعِهِ فَعَنَتَ»
“যখন তুমি অন্তরের কোনো ইচ্ছাকে প্রকাশ করতে চাও তবে জিহ্বার নড়াচড়ার মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। কেননা তার অভিব্যক্তি চেহারায় ফুটে ওঠে চাই সে চাক বা অস্বীকার করুক”। [. আসসমত, ইবন আবুদ দুনয়া, পৃষ্ঠা: ৯৫।]
আশ্চর্যের বিষয় হলো, মানুষের জন্য হারাম বস্তু খাদ্য হিসেবে গ্রহণ, যুলুম, ব্যভিচার, চুরি, মদ্য পান এবং নিষিদ্ধ দৃষ্টিদান ইত্যাদি বিষয় থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। আর তার পক্ষে জিহ্বার আন্দোলন থেকে নিবৃত্ত থাকা খুবই কঠিন বিষয়। তাই তুমি এমন লোক দেখতে পাবে যার কাছে দীন, ইবাদত এবং দুনিয়া বিমুখতা সম্পর্কে পরামর্শ করা হয়। অথচ ঐ ব্যক্তি এমন সব কথা বলে যা তাকে নির্ঘাত আল্লাহর ক্রোধে নিপতিত করবে এবং এমন বৈপরীত্য কথাবার্তা বলে যা আকাশ ও জমিনের চেয়ে ও অধিক দূরত্ব রাখে এবং তুমি এমন অনেক লোক দেখেতে পাবে যারা অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে অনেক সচেতন অথচ তার জিহ্বা জীবিত বা মৃত সকলের ব্যাপারেই নির্বিচারে মন্তব্য করে সে কী বলেছে এ ব্যাপারে তার কোনো পরওয়া নেই।
অর্থহীন কথাবার্তার সীমা বা পরিধি:
এমন কথাবার্তা বলা যদি সে চুপ থাকে তবে সে গুনাহগার হবে না এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতে তার কোনো ক্ষতি ও সাধিত হবে না। যেমন নিত্য দিনের ঘটনা এমন খাবার পোশাক ইত্যাদির আলোচনা এবং অপরকে তার ইবাদাত সম্পর্কে প্রশ্ন করা এবং তার অবস্থান ও অপরের সঙ্গে তার কথাবার্তার অবস্থান ও কথাবার্তার বিবরণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা, যা দ্বারা জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি কোনো মিথ্যা বা ক্ষতি শিকার হয়।
প্রকৃতপক্ষে মানুষ:
আর নিরর্থক কথার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে অর্থপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরঞ্জন করা। তবে এটা আপেক্ষিক বিষয়। অর্থহীন বেফায়দা কথাবার্তার ক্ষেত্রে ঈমানদের নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত আলোচনা অনেক বেশি।
এটা অস্পষ্ট নয় যে, গিবত, পরনিন্দা, অপবাদ ও মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি অধিক যুক্তিসঙ্গতভাবে হাদীসের অন্তর্ভুক্ত।
মোটকথা, জবানের ধ্বংসাত্মক পরিণাম ও তার বিপদসমূহের পরিচয় লাভ এবং তা থেকে বেঁচে থাকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া নেহায়েত জরুরি এই ভয়ে যে, এর মাধ্যমে এগুলোর সংঘটকরা ধ্বংস ও ক্ষতির মধ্যে নিপতিত হবে। ন্যূনতম এতটুকু উন্নীত হতে পারত তা থেকে বঞ্চিত হবে এবং অর্থহীন কথাবার্তায় অনেক ক্ষতি রয়েছে। যথা- রিযিক বিলম্বকরণ, হিফাযতকারী ফিরিশতাদের যন্ত্রণা প্রদান, আল্লাহর নিকট নিরর্থক কথাবার্তার রেকর্ড প্রেরণ ও শীর্ষ সাক্ষীদের সামনে সে আমলনামা পঠন, জান্নাতে থেকে বাধা প্রদান, হিসাব, ভৎর্সনা, তিরস্কার, দলীল উপস্থাপন করা এবং আল্লাহর থেকে লজ্জা পাওয়া। হাদীসে এসেছে,
«إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالكَلِمَةِ مِنْ رِضْوَانِ اللَّهِ مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ فَيَكْتُبُ اللَّهُ لَهُ بِهَا رِضْوَانَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ، وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللهِ مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ، فَيَكْتُبُ اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا سَخَطَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ»
“তোমাদের কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টিদায়ক কোনো কথা বলে অথচ সে ধারনা করতে পারে না তা কোথায় পৌঁছবে, অতঃপর আল্লাহ তার জন্য কিয়ামতের সাক্ষাৎ দিবসে আপন সন্তুষ্টি লিপিবদ্ধ করে রাখেন এবং তোমাদের একই আল্লাহর অসন্তোষ প্রদানকারী কোনো কথা বলে অথচ সে ধারনাও করতে পারে না তার পরিণাম কী হবে, অতঃপর আল্লাহ কিয়ামত দিবসের জন্য তার প্রতি অসন্তুষ্টি লিখে রাখেন।” [. সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ২৩১৯; হাদীসটিকে আলবানী সহীহ বলেছেন; সহীহ সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৮৮।]
কথিত আছে, লোকমানকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তিনি কীভাবে তার মর্যাদাও সম্মানের আসন লাভ করেছেন। তিনি বলেছেন,
«صِدْقُ الْحَدِيثِ، وَطُولُ السُّكُوتِ عَمَّا لَا يَعْنِينِي»
“সত্য কথন ও অর্থহীন বিষয়ে দীর্ঘ নীরবতা পালন।”
মুহাম্মাদ ইবন আজলান বলেছেন,
«إِنَّمَا الْكَلامُ أَرْبَعَةٌ : أَنْ تَذْكُرَ اللَّهَ، وَتَقْرَأَ الْقُرْآنَ، أَوْ تَسْأَلَ عَنْ عَلْمٍ فَتُخْبَرَ بِهِ، أَوْ تَتَكَلَّمَ فِيمَا يَعْنِيكَ مِنْ أَمْرِ دُنْيَاك»
“প্রকৃতপক্ষে কথা চার প্রকার: যথা- আল্লাহকে স্মরণ করা অথবা পবিত্র কুরআন পাঠ করা অথবা কোনো জ্ঞান সম্পর্কে প্রশ্ন করে সে বিষয়ে অবগত হওয়া অথবা দুনিয়ার বিষয়ে উপকারী কথাবার্তা বলা।” [. আত-তামহীদ, ইবন আব্দুল বার, খণ্ড: ৯, পৃষ্ঠা: ২০২।]
হাসান ইবন হুমাইদ বলেছেন,
إذا عقل الفتى استحيا واتقى :: وقلت من مقالته الفضول
“যখন কোনো যুবক বুদ্ধিদীপ্ত হবে সে সলাজ ও আল্লাহভীরু হবে এবং সে কথাবার্তায় পরিমিত ও স্বল্পভাষী হবে।”
«مَنْ عَلِمَ أَنَّ الْكَلاَمَ مِنْ عَمَلِهِ أَمْسَكَ عَنِ الْكَلاَمِ إِلاَّ فِيْمَا يَعْنِيْهِ»
“যে জানবে যে তার কথা কর্মেরই অংশ সে নিরর্থক কথা থেকে নিবৃত্ত থাকবে।” [. ইমাম আহমদের ‘কিতাবুজ জুহুদ’ পৃষ্ঠা: ২৯৬। ইবন রজবের ‘জামে আল-উলুম ওয়ালহিকাম’, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ২৯১।]
বরং নিরর্থক কাজ থেকে বিরত থাকার নিকটতম উদ্দেশ্যে হলো জিহবাকে অর্থহীন কথা থেকে বাঁচিয়ে রাখা। এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা সাক্ষ্য দিচ্ছে,
«إِنَّ مِنْ حُسْنِ إِسْلامِ الْمَرْءِ، قِلَّةَ الْكَلامِ فِيمَا لَا يَعْنِيهِ»
“মানুষের সৌন্দর্য্য ইসলাম হলো অর্থহীন কথা থেকে জিহ্বাকে বাঁচিয়ে রাখা।” [. মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১৭৩২।]
আবুদ দারদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেছেন,
«مِنْ فِقْهِ الرَّجُلِ قِلَّةُ الْكَلاَمِ فِيْمَا لاَ يَعْنِيْهِ»
“মানুষের বুদ্ধিমত্তার অংশ বিশেষ হলো নিরর্থক বিষয়ে কথার স্বল্পতা।” [. আদাবুল মুজালিসা, ইবন আব্দুল বার, পৃ. ৬৮।]
মানুষের বাক্য সংযমের ক্ষেত্রে আল্লাহর বাণী যথেষ্ট যে, তিনি বলেছেন,
﴿مَّا يَلۡفِظُ مِن قَوۡلٍ إِلَّا لَدَيۡهِ رَقِيبٌ عَتِيدٞ ١٨﴾ [ق: ١٨ ]
“মানুষ যে কথা উচ্চারণ করে তার নিকট রয়েছে রক্ষণশীল প্রহরী”। [সূরা ক্বাফ, আয়াত: ১৮]
এবং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«وَهَلْ يَكُبُّ النَّاسَ فِي النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ أَوْ عَلَى مَنَاخِرِهِمْ إِلَّا حَصَائِدُ أَلْسِنَتِهِمْ»
“মানুষকে তাদের চেহারা বা কাঁধের উপর দিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে কেবল তাদের জিহ্বার শস্যসমূহ (কথা)।” [. সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ২৬১৬; মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং২২০১৬]
জিহ্বাকে সংযত রাখবে এভাবে যে কোনো শব্দ অনর্থক উচ্চারিত হবে না কেবলমাত্র ঐসব বিষয়ে কথা বলবে যেখানে তার দীনের ক্ষেত্রে লাভ ও বৃদ্ধির আশা করা যায়। যখন সে কথা বলবে চিন্তা করবে তাতে কোনো লাভ ও কল্যাণ আছে কি নেই? যদি কোনো লাভ না থাকে নিজেকে সংযত রাখবে আর যদি তাতে কোনো লাভ থাকে, তবে লক্ষ্য রাখবে এই কথার মাধ্যমে কী তার চেয়েও অধিক লাভ জনক কোনো পথ ছুটে যাবে? এমন হলে এর দ্বারা ঐটিকে বিনষ্ট করবে না। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেছেন,
«خَمْسًا لَهُنَّ أَحْسَنُ مِنَ الدُّهْمِ الْمُوقَفَةِ : لا تَكَلَّمْ فِيمَا لا يَعْنِيكَ، فَإِنَّهُ فَضْلٌ، وَلا آمَنُ عَلَيْكَ الْوِزْرَ، وَلا تَتَكَلَّمْ فِيمَا يَعْنِيكَ حَتَّى تَجِدَ لَهُ مَوْضِعًا، فَإِنَّهُ رُبَّ مُتَكَلِّمٍ فِي أَمْرٍ يَعْنِيهِ، قَدْ وَضَعَهُ فِي غَيْرِ مَوْضِعِهِ فَعَنَتَ»
“যখন তুমি অন্তরের কোনো ইচ্ছাকে প্রকাশ করতে চাও তবে জিহ্বার নড়াচড়ার মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। কেননা তার অভিব্যক্তি চেহারায় ফুটে ওঠে চাই সে চাক বা অস্বীকার করুক”। [. আসসমত, ইবন আবুদ দুনয়া, পৃষ্ঠা: ৯৫।]
আশ্চর্যের বিষয় হলো, মানুষের জন্য হারাম বস্তু খাদ্য হিসেবে গ্রহণ, যুলুম, ব্যভিচার, চুরি, মদ্য পান এবং নিষিদ্ধ দৃষ্টিদান ইত্যাদি বিষয় থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। আর তার পক্ষে জিহ্বার আন্দোলন থেকে নিবৃত্ত থাকা খুবই কঠিন বিষয়। তাই তুমি এমন লোক দেখতে পাবে যার কাছে দীন, ইবাদত এবং দুনিয়া বিমুখতা সম্পর্কে পরামর্শ করা হয়। অথচ ঐ ব্যক্তি এমন সব কথা বলে যা তাকে নির্ঘাত আল্লাহর ক্রোধে নিপতিত করবে এবং এমন বৈপরীত্য কথাবার্তা বলে যা আকাশ ও জমিনের চেয়ে ও অধিক দূরত্ব রাখে এবং তুমি এমন অনেক লোক দেখেতে পাবে যারা অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে অনেক সচেতন অথচ তার জিহ্বা জীবিত বা মৃত সকলের ব্যাপারেই নির্বিচারে মন্তব্য করে সে কী বলেছে এ ব্যাপারে তার কোনো পরওয়া নেই।
অর্থহীন কথাবার্তার সীমা বা পরিধি:
এমন কথাবার্তা বলা যদি সে চুপ থাকে তবে সে গুনাহগার হবে না এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতে তার কোনো ক্ষতি ও সাধিত হবে না। যেমন নিত্য দিনের ঘটনা এমন খাবার পোশাক ইত্যাদির আলোচনা এবং অপরকে তার ইবাদাত সম্পর্কে প্রশ্ন করা এবং তার অবস্থান ও অপরের সঙ্গে তার কথাবার্তার অবস্থান ও কথাবার্তার বিবরণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা, যা দ্বারা জিজ্ঞাসিত ব্যক্তি কোনো মিথ্যা বা ক্ষতি শিকার হয়।
প্রকৃতপক্ষে মানুষ:
আর নিরর্থক কথার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে অর্থপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে অতিরঞ্জন করা। তবে এটা আপেক্ষিক বিষয়। অর্থহীন বেফায়দা কথাবার্তার ক্ষেত্রে ঈমানদের নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত আলোচনা অনেক বেশি।
এটা অস্পষ্ট নয় যে, গিবত, পরনিন্দা, অপবাদ ও মিথ্যা কথা বলা ইত্যাদি অধিক যুক্তিসঙ্গতভাবে হাদীসের অন্তর্ভুক্ত।
মোটকথা, জবানের ধ্বংসাত্মক পরিণাম ও তার বিপদসমূহের পরিচয় লাভ এবং তা থেকে বেঁচে থাকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া নেহায়েত জরুরি এই ভয়ে যে, এর মাধ্যমে এগুলোর সংঘটকরা ধ্বংস ও ক্ষতির মধ্যে নিপতিত হবে। ন্যূনতম এতটুকু উন্নীত হতে পারত তা থেকে বঞ্চিত হবে এবং অর্থহীন কথাবার্তায় অনেক ক্ষতি রয়েছে। যথা- রিযিক বিলম্বকরণ, হিফাযতকারী ফিরিশতাদের যন্ত্রণা প্রদান, আল্লাহর নিকট নিরর্থক কথাবার্তার রেকর্ড প্রেরণ ও শীর্ষ সাক্ষীদের সামনে সে আমলনামা পঠন, জান্নাতে থেকে বাধা প্রদান, হিসাব, ভৎর্সনা, তিরস্কার, দলীল উপস্থাপন করা এবং আল্লাহর থেকে লজ্জা পাওয়া। হাদীসে এসেছে,
«إِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالكَلِمَةِ مِنْ رِضْوَانِ اللَّهِ مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ فَيَكْتُبُ اللَّهُ لَهُ بِهَا رِضْوَانَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ، وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَتَكَلَّمُ بِالكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللهِ مَا يَظُنُّ أَنْ تَبْلُغَ مَا بَلَغَتْ، فَيَكْتُبُ اللَّهُ عَلَيْهِ بِهَا سَخَطَهُ إِلَى يَوْمِ يَلْقَاهُ»
“তোমাদের কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টিদায়ক কোনো কথা বলে অথচ সে ধারনা করতে পারে না তা কোথায় পৌঁছবে, অতঃপর আল্লাহ তার জন্য কিয়ামতের সাক্ষাৎ দিবসে আপন সন্তুষ্টি লিপিবদ্ধ করে রাখেন এবং তোমাদের একই আল্লাহর অসন্তোষ প্রদানকারী কোনো কথা বলে অথচ সে ধারনাও করতে পারে না তার পরিণাম কী হবে, অতঃপর আল্লাহ কিয়ামত দিবসের জন্য তার প্রতি অসন্তুষ্টি লিখে রাখেন।” [. সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ২৩১৯; হাদীসটিকে আলবানী সহীহ বলেছেন; সহীহ সুনান তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৮৮।]
কথিত আছে, লোকমানকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তিনি কীভাবে তার মর্যাদাও সম্মানের আসন লাভ করেছেন। তিনি বলেছেন,
«صِدْقُ الْحَدِيثِ، وَطُولُ السُّكُوتِ عَمَّا لَا يَعْنِينِي»
“সত্য কথন ও অর্থহীন বিষয়ে দীর্ঘ নীরবতা পালন।”
মুহাম্মাদ ইবন আজলান বলেছেন,
«إِنَّمَا الْكَلامُ أَرْبَعَةٌ : أَنْ تَذْكُرَ اللَّهَ، وَتَقْرَأَ الْقُرْآنَ، أَوْ تَسْأَلَ عَنْ عَلْمٍ فَتُخْبَرَ بِهِ، أَوْ تَتَكَلَّمَ فِيمَا يَعْنِيكَ مِنْ أَمْرِ دُنْيَاك»
“প্রকৃতপক্ষে কথা চার প্রকার: যথা- আল্লাহকে স্মরণ করা অথবা পবিত্র কুরআন পাঠ করা অথবা কোনো জ্ঞান সম্পর্কে প্রশ্ন করে সে বিষয়ে অবগত হওয়া অথবা দুনিয়ার বিষয়ে উপকারী কথাবার্তা বলা।” [. আত-তামহীদ, ইবন আব্দুল বার, খণ্ড: ৯, পৃষ্ঠা: ২০২।]
হাসান ইবন হুমাইদ বলেছেন,
إذا عقل الفتى استحيا واتقى :: وقلت من مقالته الفضول
“যখন কোনো যুবক বুদ্ধিদীপ্ত হবে সে সলাজ ও আল্লাহভীরু হবে এবং সে কথাবার্তায় পরিমিত ও স্বল্পভাষী হবে।”
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন