HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
মসজিদে নববী শরীফের যিয়ারত ও যিয়ারতকারীর জন্য কতিপয় সতর্কতা ও নির্দেশনা
লেখকঃ ড. আব্দুল্লাহ ইবন নাজী আল-মাখলাফী
৩
ভূমিকাপরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে
সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের রব মহান আল্লাহর জন্যে আর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের সরদার ও নবী মুহাম্মদ আল-আমীন সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, তাঁর পরিবার-পরিজন ও বরকতময় উজ্জ্বল সাহাবীগণের ওপর।
অতঃপর: হে সম্মানিত যিয়ারতকারী ভাই, আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আপনাকে স্বাগত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদীনায় (শহরে)।
যিয়ারতকারী ভাই! মহান আল্লাহর শোকর আদায় করুন যে, তিনি আপনাকে সুস্থ রেখেছেন, ধনবান বানিয়েছেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শহরে উপস্থিত হওয়ার তাওফীক দিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা আপনাকে তার তাওফীক দিয়েছেন; কিন্তু অনেক লোক আছেন তারা নিজেদের আগ্রহ ও অনুরাগ থাকা সত্ত্বেও এখানে উপস্থিত হতে পারেননি।আপনি যখন মদীনা মুনাওওয়ারাতে পৌঁছবেন তখন শরী‘আতসম্মত আদব ও শিষ্টাচার বজায় রাখবেন, যেসব শিষ্টাচার বজায় রাখতে হিদায়েতের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে উৎসাহিত করেছেন। সর্বত্র এসব শিষ্টাচার বজায় রাখা মুসলিমদের নিকট একান্ত কাম্য, তবে মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদীনায় তার গুরুত্ব আরো বেশি।আর মহান আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করুন, যিনি আপনাকে তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদ যিয়ারত করার তাওফীক দিয়েছেন। যেটি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিন্মোক্ত বাণীর কারণে ফযিলতপূর্ণ তিনটি মসজিদের একটি : “তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও (সাওয়াবের আশায়) সফর করা যায় না: মসজিদুল হারাম, আমার এ মসজিদ ও মসজিদুল আকসা।” [হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম রাহিমাহুমুল্লাহ বর্ণনা করেছেন]
মহান আল্লাহর প্রশংসা করুন যিনি আপনাকে মসজিদে নববী যিয়ারতের সাথে আপনাকে আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর যিয়ারত করার তাওফীক দিয়েছেন। সুতরাং, আপনার উপর আবশ্যক হলো এই যিয়ারতের সময় সে নিয়মের উপর চলা যা তিনি স্বীয় উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন ও যার অনুমোদন দিয়েছেন এবং যার ওপর আমাদের পূর্বসূরীগণ-রাহিমাহুমুল্লাহ- প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
সম্মানিত যিয়ারতকারী! আপনি যখন মসজিদে নববী শরীফে উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা করবেন, তখন উত্তমরূপে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র হোন এবং সুগন্ধি ব্যবহার করুন ও দুর্গন্ধসহ মসজিদে উপস্থিত হওয়া পরিহার করুন। যখন মসজিদে পৌঁছবেন, তখন প্রবেশের সময় ডান পা এগিয়ে দিন এবং প্রবেশকালে বলুন:. بِسْمِ اللِه، والصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ ، اللّهُمَّ اغْفِرْلِي ذُنُوْبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابِ رَحْمَتِكَ «أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ، وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ، وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ، مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ» ‘‘ي বিসমিল্লাহ (আল্লাহর নামে), সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, হে আল্লাহ! আপনি আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাগুলো খুলে দিন। আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি, অতীব মর্যাদা ও চিরন্তন ক্ষমতার অধিকারী মহান আল্লাহর নিকট বিতাড়িত শয়তান হতে।”
অতঃপর আপনি রাওজা শরীফের দিকে যান এবং সেখানে তাহিয়্যাতুল মসজিদ-এর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করুন-যদি সেখানে সালাত আদায় করা সহজ হয়-, আর যদি সেখানে ভিড় থাকে, তাহলে মসজিদে নববী শরীফের যেখানে সুবিধা সেখানেই সালাত আদায় করুন। অবশ্যই মুসলিমদের কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন ও ভিড় এড়িয়ে চলুন। কেননা, কাউকে কষ্ট দেওয়া জায়েয নেই, আর আপনি তো মসজিদে নববীতে এসেছেন সাওয়াব অর্জন করতে, গুনাহ হাসিল করতে নয়।
অতঃপর আদব, গাম্ভীর্য ও ধীরতাসহ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের দিকে অগ্রসর হোন। যদি সেখানে ভিড় থাকে তাহলে মানুষের সঙ্গে ধাক্কা-ধাক্কি না করাকে প্রাধান্য দিন, যদিও ভিড় হালকা না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে তা সামান্য পেছাতে হয়। লক্ষ্য রাখুন তা যেন ফরয সালাতের পরপরই না হয়; কেননা তখন সাধারণত ভিড় বেশি হয়। খবরদার আওয়াজ উঁচু করবেন না। কেননা, আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে তা থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন,“হে ঈমানদারগণ, তোমরা নবীর আওয়াজের ওপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো না এবং তোমরা নিজেরা পরস্পর যেমন উচ্চস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরকম উচ্চস্বরে কথা বলো না। এ আশঙ্কায় যে তোমাদের সকল আমল-নিষ্ফল হয়ে যাবে অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না। (২)“নিশ্চয় যারা আল্লাহর রাসূলের নিকট নিজদের আওয়াজ অবনমিত করে, আল্লাহ তাদেরই অন্তরগুলোকে তাকওয়ার জন্য বাছাই করেছেন, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।” (৩)[সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: 2, 3]ইমাম ইবন কাসীর রাহিমাহুল্লাহ নিজ তাফসীরে বলেন,নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় যেভাবে তাঁর সামনে আওয়াজ উঁচু করা মাকরূহ ছিলো, তেমনিভাবে তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর কবরের কাছেও আওয়াজ উঁচু করা মাকরূহ। কেননা তিনি জীবিতাবস্থায় যেমন সম্মানিত, তার কবরেও তিনি সর্বদা সম্মানিত।উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একদা দু’ব্যক্তিকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে উচ্চস্বরে কথা বলতে শুনলেন। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা কারা? অথবা তিনি বললেন, তোমরা কোথাকার? তারা বললো, আমরা তায়েফবাসী। তিনি বললেন, তোমরা যদি মদীনাবাসী হতে, অবশ্যই আমি তোমাদের কঠোর শাস্তি দিতাম। তোমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলেছো!ইমাম বুখারী-রাহিমাহুল্লাহ-হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।যখন আপনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের সামনে উপস্থিত হবেন, তখন শান্ত ও গাম্ভীর্যের সাথে দাঁড়ান এবং এই বলে তাকে সালাম দিন: السلام عليك يا رسول الله ورحمة الله وبركاته (হে আল্লাহর রাসূল! আপনার ওপর সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)। السلام عليك يا نبي الله (হে আল্লাহর নবী! আপনার ওপর সালাম)। السلام عليك يا خيرة الله من خلقه (হে আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠে সৃষ্টি, আপনার ওপর সালাম)। السلام عليك يا سيد المرسلين وإمام المتقين (হে সাইয়্যেদুল মুরসালীন ও ইমামুল মুত্তাকীন, আপনার ওপর সালাম)।আমি সাক্ষী দিচ্ছি যে, আপনি নিশ্চয়ই রিসালাত পোঁছে দিয়েছেন। আমানত আদায় করেছেন। উম্মতকে নসিহত করেছেন। জিহাদ করেছেন আল্লাহর জন্যে সত্যিকারের জিহাদ। একজন নবীকে তার উম্মতের পক্ষ থেকে যে উত্তম বিনিময় প্রদান করা হয় তার চেয়ে উত্তম বিনিময় আল্লাহ আপনাকে দান করুন। اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ (“হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম এবং ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশধরদের ওপর বরকত দান করুন যেমন বরকত দান করেছেন ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম এবং ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী)।
এসব শব্দ ছাড়া শরী‘আতসম্মত অন্যান্য শব্দ দ্বারাও আপনি সালাম দিতে পারেন।
অতঃপর আপনার ডানদিকে সামান্য সরে যান এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের খলীফা আবূ বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সালাম দিন এভাবে: السلام عليك يا أبا بكر الصديق ورحمة الله وبركاته، السلام عليك يا خليفة رسول الله -صلى الله عليه وسلم- وثانيه في الغار، جزاك الله عنّا وعن الإسلام والمسلمين خير الجزاء . (হে আবূ বকর সিদ্দীক, আপনার উপর আল্লাহর সালাম (শান্তি), রহমত ও বরকত নাযিল হোক, হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের খলীফা ও গুহায় তাঁর দ্বিতীয়জন (সাথী), আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আপনাকে আমাদের, ইসলামের ও মুসলিমদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন)। অথবা এ জাতীয় শব্দ বলুন।অতঃপর ডান দিকে আরেকটু সরে যান এবং আমীরুল মুমিনীন ‘উমার ফারূক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সালাম দিন এভাবে: السلام عليك يا عمر الفاروق ورحمة الله وبركاته، السلام عليك يا ثاني الخلفاء الراشدين، جزاك الله عنّا وعن الإسلام والمسلمين خير الجزاء (হে উমার ফারূক, আপনার ওপর সালাম (শান্তি), আল্লাহর রহমত ও বরকত নাযিল হোক, হে খোলাফায়ে রাশেদীনের দ্বিতীয় খলীফা! আল্লাহ আপনাকে আমাদের, ইসলামের ও মুসলিমদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন)।এভাবে আপনার মসজিদে নববী, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর দু’জন সাথীর কবর যিয়ারত সম্পন্ন হলো।হে যিয়ারতকারী ভাই! আপনি যখন আল্লাহর কাছে দু‘আ করার ইচ্ছা করবেন তখন মসজিদে নববী শরীফের যে কোনো পাশ থেকে দিন ও রাতের যে কোনো সময় কিবলামুখী হয়ে দু‘আ করুন এবং ভিড় মুক্ত জায়গা নির্বাচন করুন। কেননা তা আপনার নফসের জন্যে নিরিবিলি হবে, আপনার চিন্তাকে এক করবে ও আপনার অন্তরকে প্রশান্তি দিবে।মহান আল্লাহর কাছে আপনার নিজের জন্যে ও আপনার মুসলিম ভাইদের জন্যে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করুন।হে সম্মানিত যিয়ারতকারী! দু‘আয় সীমালঙ্ঘন করা থেকে বিরত থাকুন। এর বিভিন্ন সুরুত রয়েছে, যেমন: আপনার গায়রুল্লাহকে (আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে) আহ্বান করা, তার কাছে চাওয়া ও তার দ্বারা ফরিয়াদ করা। কেননা এগুলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশের পরিপন্থী, বরং তা আল্লাহর সাথে শিরকের অন্তর্ভুক্ত। কেননা আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে তিনি ছাড়া অন্য কাউকে ডাকতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,“কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না।”সূরা আল-জিন, আয়াত: ১৮।তিনি আরও বলেন,“আর যখন আমার বান্দাগণ আপনাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে।”সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: 186।তিনি আরও বলেন,“তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কাউকে ডাকে, যে কিয়ামত দিবস পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না? আর তারা তাদের আহ্বান সম্পর্কে উদাসীন।”[সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: 5]ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“তুমি যখন প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করবে। আর যখন তুমি সাহায্য চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে।”ইমাম তিরমিযী রাহিমাহুল্লাহ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
বরং আপনি বলুন: হে আল্লাহ! আপনার নবীকে আমার ব্যাপারে শাফা‘আতকারী করুন। হে আল্লাহ! আপনার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাফা‘আত থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন না। আর আল্লাহর নৈকট্য প্রার্থনা করুন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহব্বত, তাঁর প্রতি আপনার আনুগত্য ও আপনার যাবতীয় নেক আমলের উসিলায় দিয়ে।
হে যিয়ারতকারী ভাই! জেনে রাখুন, এভাবে যিয়ারত করাই হলো সালফে সালেহীন- আল্লাহ তাদের সবার ওপর রহম করুন- এর আদর্শ।
সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের রব মহান আল্লাহর জন্যে আর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক আমাদের সরদার ও নবী মুহাম্মদ আল-আমীন সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, তাঁর পরিবার-পরিজন ও বরকতময় উজ্জ্বল সাহাবীগণের ওপর।
অতঃপর: হে সম্মানিত যিয়ারতকারী ভাই, আসসালামু ‘আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আপনাকে স্বাগত নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদীনায় (শহরে)।
যিয়ারতকারী ভাই! মহান আল্লাহর শোকর আদায় করুন যে, তিনি আপনাকে সুস্থ রেখেছেন, ধনবান বানিয়েছেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শহরে উপস্থিত হওয়ার তাওফীক দিয়েছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা আপনাকে তার তাওফীক দিয়েছেন; কিন্তু অনেক লোক আছেন তারা নিজেদের আগ্রহ ও অনুরাগ থাকা সত্ত্বেও এখানে উপস্থিত হতে পারেননি।আপনি যখন মদীনা মুনাওওয়ারাতে পৌঁছবেন তখন শরী‘আতসম্মত আদব ও শিষ্টাচার বজায় রাখবেন, যেসব শিষ্টাচার বজায় রাখতে হিদায়েতের নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনাকে উৎসাহিত করেছেন। সর্বত্র এসব শিষ্টাচার বজায় রাখা মুসলিমদের নিকট একান্ত কাম্য, তবে মুস্তাফা সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদীনায় তার গুরুত্ব আরো বেশি।আর মহান আল্লাহ তাআলার শোকর আদায় করুন, যিনি আপনাকে তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদ যিয়ারত করার তাওফীক দিয়েছেন। যেটি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিন্মোক্ত বাণীর কারণে ফযিলতপূর্ণ তিনটি মসজিদের একটি : “তিনটি মসজিদ ছাড়া অন্য কোথাও (সাওয়াবের আশায়) সফর করা যায় না: মসজিদুল হারাম, আমার এ মসজিদ ও মসজিদুল আকসা।” [হাদীসটি বুখারী ও মুসলিম রাহিমাহুমুল্লাহ বর্ণনা করেছেন]
মহান আল্লাহর প্রশংসা করুন যিনি আপনাকে মসজিদে নববী যিয়ারতের সাথে আপনাকে আমাদের নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবর যিয়ারত করার তাওফীক দিয়েছেন। সুতরাং, আপনার উপর আবশ্যক হলো এই যিয়ারতের সময় সে নিয়মের উপর চলা যা তিনি স্বীয় উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন ও যার অনুমোদন দিয়েছেন এবং যার ওপর আমাদের পূর্বসূরীগণ-রাহিমাহুমুল্লাহ- প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
সম্মানিত যিয়ারতকারী! আপনি যখন মসজিদে নববী শরীফে উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা করবেন, তখন উত্তমরূপে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র হোন এবং সুগন্ধি ব্যবহার করুন ও দুর্গন্ধসহ মসজিদে উপস্থিত হওয়া পরিহার করুন। যখন মসজিদে পৌঁছবেন, তখন প্রবেশের সময় ডান পা এগিয়ে দিন এবং প্রবেশকালে বলুন:. بِسْمِ اللِه، والصَّلاَةُ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ ، اللّهُمَّ اغْفِرْلِي ذُنُوْبِيْ وَافْتَحْ لِيْ أَبْوَابِ رَحْمَتِكَ «أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ، وَبِوَجْهِهِ الْكَرِيمِ، وَسُلْطَانِهِ الْقَدِيمِ، مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ» ‘‘ي বিসমিল্লাহ (আল্লাহর নামে), সালাত ও সালাম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর, হে আল্লাহ! আপনি আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দিন এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাগুলো খুলে দিন। আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি, অতীব মর্যাদা ও চিরন্তন ক্ষমতার অধিকারী মহান আল্লাহর নিকট বিতাড়িত শয়তান হতে।”
অতঃপর আপনি রাওজা শরীফের দিকে যান এবং সেখানে তাহিয়্যাতুল মসজিদ-এর দু’রাক‘আত সালাত আদায় করুন-যদি সেখানে সালাত আদায় করা সহজ হয়-, আর যদি সেখানে ভিড় থাকে, তাহলে মসজিদে নববী শরীফের যেখানে সুবিধা সেখানেই সালাত আদায় করুন। অবশ্যই মুসলিমদের কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকুন ও ভিড় এড়িয়ে চলুন। কেননা, কাউকে কষ্ট দেওয়া জায়েয নেই, আর আপনি তো মসজিদে নববীতে এসেছেন সাওয়াব অর্জন করতে, গুনাহ হাসিল করতে নয়।
অতঃপর আদব, গাম্ভীর্য ও ধীরতাসহ নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের দিকে অগ্রসর হোন। যদি সেখানে ভিড় থাকে তাহলে মানুষের সঙ্গে ধাক্কা-ধাক্কি না করাকে প্রাধান্য দিন, যদিও ভিড় হালকা না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে তা সামান্য পেছাতে হয়। লক্ষ্য রাখুন তা যেন ফরয সালাতের পরপরই না হয়; কেননা তখন সাধারণত ভিড় বেশি হয়। খবরদার আওয়াজ উঁচু করবেন না। কেননা, আল্লাহ তাঁর মুমিন বান্দাদেরকে তা থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন,“হে ঈমানদারগণ, তোমরা নবীর আওয়াজের ওপর তোমাদের আওয়াজ উঁচু করো না এবং তোমরা নিজেরা পরস্পর যেমন উচ্চস্বরে কথা বল, তাঁর সাথে সেরকম উচ্চস্বরে কথা বলো না। এ আশঙ্কায় যে তোমাদের সকল আমল-নিষ্ফল হয়ে যাবে অথচ তোমরা উপলব্ধিও করতে পারবে না। (২)“নিশ্চয় যারা আল্লাহর রাসূলের নিকট নিজদের আওয়াজ অবনমিত করে, আল্লাহ তাদেরই অন্তরগুলোকে তাকওয়ার জন্য বাছাই করেছেন, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান।” (৩)[সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: 2, 3]ইমাম ইবন কাসীর রাহিমাহুল্লাহ নিজ তাফসীরে বলেন,নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় যেভাবে তাঁর সামনে আওয়াজ উঁচু করা মাকরূহ ছিলো, তেমনিভাবে তাঁর মৃত্যুর পরে তাঁর কবরের কাছেও আওয়াজ উঁচু করা মাকরূহ। কেননা তিনি জীবিতাবস্থায় যেমন সম্মানিত, তার কবরেও তিনি সর্বদা সম্মানিত।উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু একদা দু’ব্যক্তিকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে উচ্চস্বরে কথা বলতে শুনলেন। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা কারা? অথবা তিনি বললেন, তোমরা কোথাকার? তারা বললো, আমরা তায়েফবাসী। তিনি বললেন, তোমরা যদি মদীনাবাসী হতে, অবশ্যই আমি তোমাদের কঠোর শাস্তি দিতাম। তোমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে কথা বলেছো!ইমাম বুখারী-রাহিমাহুল্লাহ-হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।যখন আপনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবরের সামনে উপস্থিত হবেন, তখন শান্ত ও গাম্ভীর্যের সাথে দাঁড়ান এবং এই বলে তাকে সালাম দিন: السلام عليك يا رسول الله ورحمة الله وبركاته (হে আল্লাহর রাসূল! আপনার ওপর সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক)। السلام عليك يا نبي الله (হে আল্লাহর নবী! আপনার ওপর সালাম)। السلام عليك يا خيرة الله من خلقه (হে আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠে সৃষ্টি, আপনার ওপর সালাম)। السلام عليك يا سيد المرسلين وإمام المتقين (হে সাইয়্যেদুল মুরসালীন ও ইমামুল মুত্তাকীন, আপনার ওপর সালাম)।আমি সাক্ষী দিচ্ছি যে, আপনি নিশ্চয়ই রিসালাত পোঁছে দিয়েছেন। আমানত আদায় করেছেন। উম্মতকে নসিহত করেছেন। জিহাদ করেছেন আল্লাহর জন্যে সত্যিকারের জিহাদ। একজন নবীকে তার উম্মতের পক্ষ থেকে যে উত্তম বিনিময় প্রদান করা হয় তার চেয়ে উত্তম বিনিময় আল্লাহ আপনাকে দান করুন। اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، وبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ (“হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম এবং ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের বংশধরদের ওপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের বংশধরদের ওপর বরকত দান করুন যেমন বরকত দান করেছেন ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালাম এবং ইবরাহীম ‘আলাইহিস সালামের বংশধরদের ওপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী)।
এসব শব্দ ছাড়া শরী‘আতসম্মত অন্যান্য শব্দ দ্বারাও আপনি সালাম দিতে পারেন।
অতঃপর আপনার ডানদিকে সামান্য সরে যান এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের খলীফা আবূ বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সালাম দিন এভাবে: السلام عليك يا أبا بكر الصديق ورحمة الله وبركاته، السلام عليك يا خليفة رسول الله -صلى الله عليه وسلم- وثانيه في الغار، جزاك الله عنّا وعن الإسلام والمسلمين خير الجزاء . (হে আবূ বকর সিদ্দীক, আপনার উপর আল্লাহর সালাম (শান্তি), রহমত ও বরকত নাযিল হোক, হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের খলীফা ও গুহায় তাঁর দ্বিতীয়জন (সাথী), আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আল্লাহ আপনাকে আমাদের, ইসলামের ও মুসলিমদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন)। অথবা এ জাতীয় শব্দ বলুন।অতঃপর ডান দিকে আরেকটু সরে যান এবং আমীরুল মুমিনীন ‘উমার ফারূক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে সালাম দিন এভাবে: السلام عليك يا عمر الفاروق ورحمة الله وبركاته، السلام عليك يا ثاني الخلفاء الراشدين، جزاك الله عنّا وعن الإسلام والمسلمين خير الجزاء (হে উমার ফারূক, আপনার ওপর সালাম (শান্তি), আল্লাহর রহমত ও বরকত নাযিল হোক, হে খোলাফায়ে রাশেদীনের দ্বিতীয় খলীফা! আল্লাহ আপনাকে আমাদের, ইসলামের ও মুসলিমদের পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন)।এভাবে আপনার মসজিদে নববী, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর দু’জন সাথীর কবর যিয়ারত সম্পন্ন হলো।হে যিয়ারতকারী ভাই! আপনি যখন আল্লাহর কাছে দু‘আ করার ইচ্ছা করবেন তখন মসজিদে নববী শরীফের যে কোনো পাশ থেকে দিন ও রাতের যে কোনো সময় কিবলামুখী হয়ে দু‘আ করুন এবং ভিড় মুক্ত জায়গা নির্বাচন করুন। কেননা তা আপনার নফসের জন্যে নিরিবিলি হবে, আপনার চিন্তাকে এক করবে ও আপনার অন্তরকে প্রশান্তি দিবে।মহান আল্লাহর কাছে আপনার নিজের জন্যে ও আপনার মুসলিম ভাইদের জন্যে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা করুন।হে সম্মানিত যিয়ারতকারী! দু‘আয় সীমালঙ্ঘন করা থেকে বিরত থাকুন। এর বিভিন্ন সুরুত রয়েছে, যেমন: আপনার গায়রুল্লাহকে (আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে) আহ্বান করা, তার কাছে চাওয়া ও তার দ্বারা ফরিয়াদ করা। কেননা এগুলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদেশের পরিপন্থী, বরং তা আল্লাহর সাথে শিরকের অন্তর্ভুক্ত। কেননা আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে তিনি ছাড়া অন্য কাউকে ডাকতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন,“কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না।”সূরা আল-জিন, আয়াত: ১৮।তিনি আরও বলেন,“আর যখন আমার বান্দাগণ আপনাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। সুতরাং তারা যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে। আশা করা যায় তারা সঠিক পথে চলবে।”সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: 186।তিনি আরও বলেন,“তার চেয়ে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কাউকে ডাকে, যে কিয়ামত দিবস পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে না? আর তারা তাদের আহ্বান সম্পর্কে উদাসীন।”[সূরা আল-আহকাফ, আয়াত: 5]ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,“তুমি যখন প্রার্থনা করবে তখন আল্লাহর কাছেই প্রার্থনা করবে। আর যখন তুমি সাহায্য চাইবে তখন আল্লাহর কাছেই সাহায্য চাইবে।”ইমাম তিরমিযী রাহিমাহুল্লাহ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।
বরং আপনি বলুন: হে আল্লাহ! আপনার নবীকে আমার ব্যাপারে শাফা‘আতকারী করুন। হে আল্লাহ! আপনার নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের শাফা‘আত থেকে আমাকে বঞ্চিত করবেন না। আর আল্লাহর নৈকট্য প্রার্থনা করুন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহব্বত, তাঁর প্রতি আপনার আনুগত্য ও আপনার যাবতীয় নেক আমলের উসিলায় দিয়ে।
হে যিয়ারতকারী ভাই! জেনে রাখুন, এভাবে যিয়ারত করাই হলো সালফে সালেহীন- আল্লাহ তাদের সবার ওপর রহম করুন- এর আদর্শ।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন