HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সন্তান প্রতিপালনে ইসলামের প্রেরণা

লেখকঃ আলী হাসান তৈয়ব

সন্তান প্রতিপালনে ইসলামের প্রেরণা
ইসলাম যেসব দিক বিবেচনায় নিয়ে মানুষকে বিবাহে উদ্বুদ্ধ করে সন্তান জন্ম দেয়া তার অন্যতম প্রধান কারণ। সন্তানের মাধ্যমে বিবাহিত জীবনের স্বার্থকতা ফুটে ওঠে। বিবাহিত মানুষ মাত্রই সন্তান কামনা করেন। বিশেষত নারীদের দৃষ্টিতে। আপন জন্মের স্বার্থকতাই সন্তান জন্ম দেবার মধ্যে বলে মনে করেন নারীরা। নিঃসন্তান দম্পতিরাই জানেন সন্তান কতটা আরাধ্য। মানুষের স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহ তা‘আলা তার স্বভাব সম্পর্কে সবচে ভালো জানেন। তাই তিনি পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন,

﴿ٱلۡـَٰٔنَ بَٰشِرُوهُنَّ وَٱبۡتَغُواْ مَا كَتَبَ ٱللَّهُ لَكُمۡۚ ﴾ [ البقرة :187]

‘অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর।’ {সূরা আল-বাকারা : ১৮৭}

ইবন আব্বাস, মুজাহিদ, ইকরামা, হাসান বসরী, সাদ্দী ও যাহহাক বলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য সন্তান।

আজ পশ্চিমা প্রচারণার যুগে অধিক সন্তান নেয়াকে শুধু নিরুৎসাহিতই করা হচ্ছে না। বেশি সন্তান জন্মদানকারী দম্পতিকে অপরাধীর দৃষ্টিতেও দেখা হচ্ছে কোথাও কোথাও। অথচ মানবতার কল্যাণের বার্তাবাহী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অধিক সন্তান নিতে সুস্পষ্টভাবে অনুপ্রাণিত করছেন।

আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَأْمُرُ بِالْبَاءَةِ ، وَيَنْهَى عَنِ التَّبَتُّلِ نَهْيًا شَدِيدًا ، وَيَقُولُ : تَزَوَّجُوا الْوَدُودَ الْوَلُودَ ، إِنِّي مُكَاثِرٌ الأَنْبِيَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ» .

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিয়ে করতে উদ্বুদ্ধ করতেন এবং বৈরাগ্য থেকে তীব্রভাবে বারণ করতেন। তিনি বলতেন, ‘তোমরা অধিক সন্তানদানকারী স্বামীভক্ত নারীদের বিয়ে করো। কেননা কিয়ামতের দিন আমি তোমাদের (সংখ্যা) নিয়ে নবীদের সামনে গর্ব করবো।’ [মুসনাদ আহমাদ : ১২৬৩৪।]

মা‘কাল বিন ইয়াসার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- فَقَالَ إِنِّى أَصَبْتُ امْرَأَةً ذَاتَ حَسَبٍ وَجَمَالٍ وَإِنَّهَا لاَ تَلِدُ أَفَأَتَزَوَّجُهَا قَالَ : لاَ . ثُمَّ أَتَاهُ الثَّانِيَةَ فَنَهَاهُ ثُمَّ أَتَاهُ الثَّالِثَةَ فَقَالَ : «تَزَوَّجُوا الْوَدُودَ الْوَلُودَ فَإِنِّى مُكَاثِرٌ بِكُمُ الأُمَمَ» .

‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এক ব্যক্তি এলো। সে বলল, একজন কুলীনা ও সুন্দরী মহিলা পেয়েছি, তবে সে সন্তান জন্ম দিতে পারে না। আমি কি তাকে বিয়ে করবো? তিনি বললেন, ‘না’। অতপর তাঁর কাছে দ্বিতীয়বার এসে পরামর্শ চাইলেন। আবার তিনি বারণ করলেন। সে তৃতীয়বার তাঁর কাছে এলে সেবারও তিনি তাকে নিষেধ করলেন। অতপর তিনি বললেন, ‘তোমরা অধিক সন্তানদানকারী স্বামীভক্ত নারীদের বিয়ে করো। কেননা কিয়ামতের দিন আমি তোমাদের (সংখ্যা) নিয়ে গর্ব করবো।’ [আবূ দাউদ : ২০৫২; নাসায়ী : ৩২২৭]

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«النِّكَاحُ مِنْ سُنَّتِي ، فَمَنْ لَمْ يَعْمَلْ بِسُنَّتِي , فَلَيْسَ مِنِّي، وَتَزَوَّجُوا ، فَإِنِّي مُكَاثِرٌ بِكُمُ الأُمَمَ ، وَمَنْ كَانَ ذَا طَوْلٍ فَلْيَنْكِحْ ، وَمَنْ لَمْ يَجِدْ فَعَلَيْهِ بِالصِّيَامِ ، فَإِنَّ الصَّوْمَ لَهُ وِجَاءٌ» .

‘বিবাহ আমার সুন্নত। যে আমার সুন্নত মোতাবেক কাজ করে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়। তোমরা বিবাহ করো। কেননা আমি তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে অন্যান্য উম্মতের সামনে গর্ব করব। অতএব যার যোগ্যতা আছে সে যেন বিয়ে করে। আর যার নাই সে যেন সিয়াম পালন করে। কেননা, সাওম একে প্রশমিত করে।’ [ইবন মাজা : ১৮৪৬]

ইদানীং তথাকথিত অনেক আধুনিক ব্যক্তিকে দেখা যায় বিয়ের প্রতি তারা উন্নাসীক। এমনকি অনেক ধার্মিক ব্যক্তিকেও দেখা যায় বিবাহিত জীবনকে কেবল ‘ঝামেলা’ (?) হিসেবে দেখেন। তাদের বিয়েতে উদ্বুদ্ধ হবার জন্য সন্তান গ্রহণের ফযীলতসম্বলিত হাদীসগুলো হতে পারে দারুণ প্রেরণা। কেননা বিয়ে না করলে এসব ফযীলত তারা কখনো অর্জন করতে পারবেন না। যেমন :

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِنَّ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ لَيَرْفَعُ الدَّرَجَةَ لِلْعَبْدِ الصَّالِحِ فِي الْجَنَّةِ ، فَيَقُولُ : يَا رَبِّ ، أَنَّى لِي هَذِهِ ؟ فَيَقُولُ : بِاسْتِغْفَارِ وَلَدِكَ لَكَ» .

‘জান্নাতে নেক ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি করা হবে। সে বলবে, হে রব, কিসের সৌজন্যে আমার এ মর্যাদা? আল্লাহ বলবেন, তোমার জন্য তোমার সন্তানের ইস্তেগফারের বদৌলতে।’ [ইবন মাজা : ১০৬১৮]

আবূ হাসসান থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

قُلْتُ لِأَبِي هُرَيْرَةَ إِنَّهُ قَدْ مَاتَ لِيَ ابْنَانِ فَمَا أَنْتَ مُحَدِّثِي عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِحَدِيثٍ تُطَيِّبُ بِهِ أَنْفُسَنَا عَنْ مَوْتَانَا قَالَ قَالَ نَعَمْ «صِغَارُهُمْ دَعَامِيصُ الْجَنَّةِ يَتَلَقَّى أَحَدُهُمْ أَبَاهُ أَوْ قَالَ أَبَوَيْهِ فَيَأْخُذُ بِثَوْبِهِ أَوْ قَالَ بِيَدِهِ كَمَا آخُذُ أَنَا بِصَنِفَةِ ثَوْبِكَ هَذَا فَلَا يَتَنَاهَى أَوْ قَالَ فَلَا يَنْتَهِي حَتَّى يُدْخِلَهُ اللَّهُ وَأَبَاهُ الْجَنَّةَ» .

‘আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু -এর উদ্দেশে আমি বললাম আমার দু’টি সন্তান মারা গেছে। আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কোনো হাদীস শোনাতে পারেন যা মৃতদের ব্যাপারে আমাদের মনটাকে খুশি করে দেবে? হাসসান বলেন, আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হ্যা। ‘তাদের ছোটরা জান্নাতে মুক্তবিচরণশীল। এদের কেউ তার পিতা অথবা (তিনি বলেছেন) পিতামাতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। অতপর তার কাপড় অথবা (বলেছেন) হাত ধরবে যেমন আমি তোমার এ কাপড়ের প্রান্ত ধরেছি। অতপর সে ছাড়বে না অথবা ক্ষান্ত হবে না যাবৎ না আল্লাহ তার বাবাকে জান্নাতে প্রবেশ করান।’ [মুসলিম : ৪৭৬৯; মুসনাদ আহমদ : ১০৩৩১]

মুয়াবিয়া বিন কুররা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন,

أَنَّ رَجُلاً كَانَ يَأْتِي النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمَعَهُ ابْنٌ لَهُ ، فَقَالَ لَهُ النَّبِيّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : «أَتُحِبُّهُ ؟» فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، أَحَبَّكَ اللَّهُ كَمَا أُحِبُّهُ ، فَفَقَدَهُ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالَ «مَا فَعَلَ ابْنُ فُلاَنٍ ؟» قَالُوا : يَا رَسُولَ اللهِ ، مَاتَ ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لأَبِيهِ : «أَمَا تُحِبُّ أَنْ لاَ تَأْتِيَ بَابًا مِنْ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ ، إِلاَّ وَجَدْتَهُ يَنْتَظِرُكَ ؟ فَقَالَ رَجُلٌ : يَا رَسُولَ اللهِ ، أَلَهُ خَاصَّةً أَمْ لِكُلِّنَا ؟ قَالَ : بَلْ لِكُلِّكُمْ» .

‘এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আসতো। তার সঙ্গে থাকতো তার একটি ছেলে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘তুমি কি তাকে ভালোবাসো?’ সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আল্লাহ আপনাকেও তেমন ভালোবাসুন যেমন আমি তাকে ভালোবাসি। পরবর্তীতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (কয়েকদিন) দেখতে না পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন, অমুকের সন্তানের খবর কী? সাহাবীরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, সে মারা গেছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তার পিতার উদ্দেশে বললেন, তুমি কি এমনটি পছন্দ করো না যে জান্নাতের যে দরজাতেই তুমি যাবে সেখানে তাকে তোমার জন্য অপেক্ষমান পাবে?’ এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, হে আল্লাহর রাসূল, এটা কি শুধু ওই ব্যক্তির জন্য নাকি আমাদের সবার জন্য? তিনি বললেন, ‘বরং তোমাদের সবার জন্য’।’ [মুসনাদ আহমদ : ১৫৫৯৫]

سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، يَقُولُ : «مَنْ كَانَ لَهُ فَرَطَانِ مِنْ أُمَّتِي ، دَخَلَ الْجَنَّةَ فَقَالَتْ عَائِشَةُ : بِأَبِي ، فَمَنْ كَانَ لَهُ فَرَطٌ ؟ فَقَالَ : وَمَنْ كَانَ لَهُ فَرَطٌ يَا مُوَفَّقَةُ قَالَتْ : فَمَنْ لَمْ يَكُنْ لَهُ فَرَطٌ مِنْ أُمَّتِكَ ؟ قَالَ : فَأَنَا فَرَطُ أُمَّتِي ، لَمْ يُصَابُوا بِمِثْلِي» .

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে যার দু’দুটি সন্তান বিয়োগ ঘটবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমার পিতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোন, যার একটি সন্তান বিয়োগ ঘটবে (সেও কি এমন বিনিময় পাবে)? তিনি বললেন, ‘হে সুন্দরপ্রশ্নের তাওফীক প্রাপ্তা, যার একটি সন্তান বিয়োগ ঘটবে তার জন্যও একই (বিনিময়) রয়েছে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আপনার উম্মতের মধ্যে যার কোনো সন্তানই বিয়োগ ঘটবে না? তিনি বললেন, আমিই আমার উম্মতের মৃত সন্তান, তারা আমার মতো আর কাউকে পাবে না।’ [মুসনাদ আহমদ : ৩০৯৮; শুয়াবুল ঈমান : ৯২৯৫]

আবূ সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ الرِّجَالُ بِحَدِيثِكَ فَاجْعَلْ لَنَا مِنْ نَفْسِكَ يَوْمًا نَأْتِيكَ فِيهِ تُعَلِّمُنَا مِمَّا عَلَّمَكَ اللَّهُ قَالَ «اجْتَمِعْنَ يَوْمَ كَذَا وَكَذَا» فَاجْتَمَعْنَ فَأَتَاهُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَعَلَّمَهُنَّ مِمَّا عَلَّمَهُ اللَّهُ ثُمَّ قَالَ «مَا مِنْكُنَّ مِنْ امْرَأَةٍ تُقَدِّمُ بَيْنَ يَدَيْهَا مِنْ وَلَدِهَا ثَلَاثَةً إِلَّا كَانُوا لَهَا حِجَابًا مِنْ النَّارِ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ وَاثْنَيْنِ»

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের উদ্দেশে বলেন, একজন মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, পুরুষরা তো আপনার হাদীস শুনে যায়। অতএব আপনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্যও একটি দিন নির্ধারণ করুন। আমরা সেদিন আপনার কাছে আসবো, যাতে আল্লাহ আপনাকে যা শিখিয়েছেন আমাদেরকেও তার কিছু শিখিয়ে দেন। তিনি বললেন, ‘তোমরা অমুক অমুক দিনে সমবেত হবে। অতপর তারা জমায়েত হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে তাশরীফ রাখলেন। আল্লাহ তাঁকে যা শিখিয়েছেন তা থেকে তাদের শিক্ষা দিলেন। এক পর্যায়ে তিনি তাদের বললেন, ‘তোমাদের যে কারও তিনটি সন্তান মারা গিয়ে থাকে তার জীবদ্দশায়, তবে তারা তার জন্য (জান্নামের) আগুন আড়ালকারী হবে। এক মহিলা জিজ্ঞেস করলেন, যদি দু’টি দু’টি দু’টি করে সন্তান মরে গিয়ে থাকে তবে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দু’টি সন্তানও (অগ্নি থেকে আড়ালকারী হবে।) [মুসলিম : ৪৭৬৮; বুখারী : ১১৯২]

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

«مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَمُوتُ لَهُ ثَلاَثَةٌ مِنَ الْوَلَدِ لَمْ يَبْلُغُوا الْحِنْثَ ، فَتَمَسُّهُ النَّارُ ، إِلاَّ تَحِلَّةَ الْقَسَمِ» .

‘এমন কোনো মুসলিম নেই তিনটি সন্তান মারা যাবে অপ্রাপ্ত বয়সে আর তাকে আগুন স্পর্শ করবে। হ্যা, সামান্য পরিমাণ হতে পারে [. কেবল কসম পূরণের নিমিত্তে। আর তা হলো, আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, ‘আর তোমাদের প্রত্যেককেই তা (পুলসিরাত) অতিক্রম করতে হবে, এটি তোমার রবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।’ {সূরা মারইয়াম : ৭১}]।’ [মুসনাদ আহমদ : ১০১২০]

আনাস বিন মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَا مِنَ النَّاسِ مُسْلِمٌ يَمُوتُ لَهُ ثَلَاثَةٌ مِنَ الْوَلَدِ لَمْ يَبْلُغُوا الْحِنْثَ إِلَّا أَدْخَلَهُ اللهُ الْجَنَّةَ بِفَضْلِ رَحْمَتِهِ إِيَّاهُمْ»

‘মুসলিমদের মধ্যে যে কোনো ব্যক্তির যদি তিনটি সন্তান মারা যায় নাবালক অবস্থায়, আল্লাহ অবশ্যই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। এটি করবেন তিনি তাদের প্রতি ওই ব্যক্তির মমতার কারণে।’ [বুখারী : ১৩৮১]

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

أَتَتِ امْرَأَةٌ النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- بِصَبِىٍّ لَهَا فَقَالَتْ يَا نَبِىَّ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ لَهُ فَلَقَدْ دَفَنْتُ ثَلاَثَةً قَالَ «دَفَنْتِ ثَلاَثَةً» قَالَتْ نَعَمْ . قَالَ « لَقَدِ احْتَظَرْتِ بِحِظَارٍ شَدِيدٍ مِنَ النَّارِ»

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে একজন মহিলা তার বাচ্চাকে নিয়ে এসে বলল, হে আল্লাহর নবী, আপনি এর জন্য দু‘আ করুন (যাতে এ জীবিত থাকে)। কেননা, আমি (এর আগে) তিনজনকে দাফন করেছি। তিনি বললেন, তুমি কি তিনজনকে দাফন করেছ? মহিলা বলল, জী। তিনি বললেন, তুমি তো কঠিন বন্ধনী দিয়ে নিজেকে আগুন থেকে বাঁচিয়ে নিয়েছো।’ [মুসলিম : ৬৮৭১; নাসায়ী : ৮৮৭৭; মুসনাদ আহমদ : ৯৪২৭]

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

«إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثٍ : صَدَقَةٌ جَارِيَةٌ ، وَعِلْمٌ يُنْتَفَعُ بِهِ ، وَوَلَدٌ صَالِحٌ يَدْعُو لَهُ

‘মানুষ যখন মরে যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায় তবে সে তিনটি (উৎস থেকে নেকী প্রাপ্তি বন্ধ হয় না) : সাদাকায়ে জারিয়া, এমন কোনো ইলম যা থেকে মানুষ উপকৃত হয় এবং সুসন্তান যে তার জন্য দু‘আ করে।’ [তিরমিযী : ১৩৭৬; মুসলিম : ১৬৩১; ইবন খুযাইমা : ২৪৯৪]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন