HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

শী‘আ মতবাদের বিস্তৃতি

লেখকঃ আব্দুল্লাহ আল-মাত্বরাফী

শী‘আ মতবাদের বিস্তৃতি
বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম

সমস্ত প্রশংসা জগৎসমূহের প্রতিপালকের জন্য, দুরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি এবং তাঁর পরিবার-পরিজন ও সকল সাহাবীর প্রতি।

সম্মানিত পাঠক! অপরাধীর অপরাধ পরিকল্পনা এবং তাদের দুরভিসন্ধি ফাঁস করে দেওয়া মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নির্ধারিত একটি পদ্ধতি। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর এমনিভাবে আমি নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করি, যাতে অপরাধীদের পথ সুস্পষ্ট হয়ে উঠে’ (আল-আন‘আম ৫৫)।

মুসলিম উম্মাহ্‌র বৃহত্তম জনগোষ্ঠী তাদের বিরোধীদের আক্বীদাসমূহ সম্পর্কে জানলে কতই না ভাল হত! বাতিলকে হক্ব বলে চালিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের নানা পরিকল্পনা ও পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত হলেও না কত ভাল হত!

আমরা এমন একটি ভয়াবহ বিষয়ের সাথে পরিচিত হব, যার প্রচার ঘণ্টা বেজে উঠেছে, ধুম্রজাল ছেয়ে গেছে এবং যার আগুন জ্বলে উঠেছে। আর তা হল, ইসলামী বিশ্বে শী‘আ মতবাদের বিস্তৃতির ভয়াবহতা।

শী‘আ মতবাদের বিস্তৃতির ঘটনা বাস্তব, ইহা কল্পনাপ্রসূত কোন বিষয় নয়। সেজন্য জাপান থেকে শুরু করে ল্যাটিন আমেরিকা পর্যন্ত এমন কোন দেশ বা এলাকা নেই, যেখানে শী‘আ মতবাদের অপচ্ছায়া প্রবেশ করেনি।

শী‘আ মতবাদ প্রসারের নানা প্রকল্প বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবেশ করে ইসলামের রজ্জু, আক্বীদা, ইতিহাস ও প্রতীককে খাটো করছে। এমনকি ক্রমবর্ধমান এই বাতেনী প্রলয়ের প্রতি ক্রোধান্বিত ও উত্তেজিত প্রত্যেকের অভিযোগ এমন এক মুহূর্তে বৃদ্ধি পেয়েছে, যখন ইসলামী সংস্থা ও সংগঠনসমূহ পাপিষ্ঠ খৃষ্টান চক্রের নানা কষ্ট-ক্লেশ ও নির্যাতন ভোগ করছে।

গুরুত্বের দিক থেকে আক্বীদাগত সংঘাতের আলোচনা সামরিক দখলদারিত্বের আলোচনার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। বিশেষ করে এই সংঘাতের যে ফলাফল আমরা লক্ষ্য করছি, তা মুসলিম উম্মাহ্‌র জন্য একটি নিশ্চিন্ত ভবিষ্যতের সুসংবাদ প্রদান করে না। যাহোক, এক্ষণে আমাদের প্রশ্ন হল, শী‘আ মতবাদের বিস্তৃতি থেকে কেন এই হুঁশিয়ারী?

এর জবাবে এক কথায় বলা যায়, আমাদের ও তাদের মধ্যকার দলীল-প্রমাণাদি ভিন্ন এবং উভয়ের মধ্যকার মৌলিক বিষয়সমূহ পূর্ব ও পশ্চিম দিগন্তের দূরত্বের ন্যায় দূরত্ব সম্পন্ন।

সম্মানিত পাঠক! আমরা কিভাবে এমন একটি সম্প্রদায়ের সাথে ঘনিষ্টতা সৃষ্টি করতে পারি, যারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারের ইমামগণকে মাছূম দাবী করে এবং বিশ্বাস রাখে যে, তাঁরা গায়েব বা অদৃশ্যের খবর রাখেন! (দেখুনঃ কুলায়নী, উছূলুল কাফী ১/১৬৫)। তারা বলে, কুরআন কারীমে পরিবর্তন-পরিবর্ধন সাধিত হয়েছে এবং আমাদের কাছে যে কুরআন আছে, তা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর অবতীর্ণ কুরআন নয়; বরং তাতে পরিবর্তন-পরিবর্ধন ও কমবেশী করা হয়েছে! (উছূলুল কাফী ১/২৮৫)।

কিভাবে আমরা ধর্মীয়ভাবে এমন এক সম্প্রদায়ের কাছাকাছি যেতে পারি, যারা সাহাবীগণকে ফাসিক্ব বলে। শুধু তাই নয়, তারা তাঁদেরকে অভিশাপ দিয়ে এবং কাফির বলে নিজেদের উগ্র যবানকে পিচ্ছিল করে ফেলেছে (মাজলীসী, বিহারুল আনওয়ার ৬৯/১৩৭, ১৩৮)।

কেউ ১২ (বারো) ইমামের কারো নেতৃত্ব ও প্রতিনিধিত্ব অস্বীকার করলে সে শী‘আ ইমামিয়াদের নিকট কাফির, পথভ্রষ্ট এবং জাহান্নামের চিরস্থায়ী অধিবাসী (আব্দুল্লাহ শুব্বার, হাক্কুল ইয়াক্বীন ২/১৮৯)।

এখানেই শেষ নয়, মুসলিম উম্মাহ্‌র সাথে এই সম্প্রদায়ের রয়েছে ইতিহাসের কালো অধ্যায়। সুতরাং আমাদের প্রতি তাদের শত্রুতা যেমন সুপ্রতিষ্ঠিত, তেমনি আমাদের প্রতি তাদের ক্রোধ ও হিংসাও অব্যাহত; বরং আমাদের মুসলিম উম্মাহ্‌র ইতিহাসে এমন কোন সময় অতিক্রম করেনি, যখন তাদের আঘাত, গাদ্দারী, বিদ্রোহ আর খেয়ানত মুসলিমদেরকে জর্জরিত করেনি। এটিই শী‘আদের বাস্তব চিত্র। কবি বলেন,

اقرؤوا التاريخ إذ فيه العبر * ضل قوم ليس يدرون الخبر

‘তোমরা ইতিহাস পড়, কেননা তাতে শিক্ষা রয়েছে। ইতিহাস জানে না এমন কোনো কোনো সম্প্রদায় পথভ্রষ্ট হয়েছে’।

তাদের মতবাদ বিস্তৃতি লাভের পদ্ধতিসমূহ প্রকাশ করে দেওয়ার অর্থ তাদের প্রতি যুলম নয় এবং নয় তাদের সাথে বেইনছাফী। কেননা আমরা ইনছাফ, ন্যায়, দয়া ও মধ্যমপন্থী উম্মত।

আল্লাহ্‌র শপথ! বর্তমান সময়ে দলীয় সংঘাতের দিকে আহ্বান করা মুসলিম উম্মাহ্‌র জন্য কল্যাণকর নয়। কেননা এটি এমন একটি বীজ, যার ফল ভোগ করে ইয়াহুদীবাদী প্রকল্প এবং তার দোসররা। কিন্তু এই স্পষ্ট বিস্তৃতি ও সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে চুপ থাকা এবং তা থেকে চোখ ফিরিয়ে রাখার নীতি আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বিপক্ষে যায়। কেননা শী‘আদের এই ধর্মপ্রচার মুলতঃ সুন্নী অধ্যুষিত এলাকাসমূহকে টার্গেট করে।

অতএব শী‘আ মতবাদ বিস্তৃতির প্রকল্প অনুধাবন, উহার ঝুঁকিসমূহ নিরূপণ এবং শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিসমূহের মাধ্যমে উহাকে প্রতিরোধের আহ্বান জানানোর লক্ষ্যেই এই বক্তব্যটি লেখা হল। ইহা দলীয় সংঘাত সৃষ্টির আহ্বান নয়।

সম্মানিত পাঠক! শী‘আ মতবাদ বিস্তৃতির চিন্তাধারা ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট খুমেনীর শাসনামল থেকে শুরু হয়, যিনি তাঁর অভ্যুত্থানের সঙ্গে সঙ্গে তথাকথিত ইসলামী বিপ্লব শুরুর ঘোষণা দেন।

শী‘আ মতবাদ বিস্তৃতির এই প্রকল্প ‘ফক্বীহ-এর শাসন ব্যবস্থা’-এর নতুন যুগের সঙ্গে একই সাথে শুরু হয়। শী‘আদের নিকটে ‘ফক্বীহ-এর শাসন ব্যবস্থা’-এর অর্থ হল, শী‘আদের একটি গ্রুপ ‘মাযহাবে ইমামী’র অনুসারীদের উপর ‘ফক্বীহ’-এর অনুসরণ করা ওয়াজিব, যিনি অনুপস্থিত প্রতীক্ষিত ইমাম মাহদীর স্থলাভিষিক্ত। খুমায়নী তার গ্রন্থ ‘আল-হুকুমাহ আল-ইসলামিয়াহ’-এর ৩৬ পৃস্ঠায় ‘ফক্বীহ-এর শাসন ব্যবস্থা’ বিষয়ক আক্বীদার উল্লেখ করে বলেন, ‘ফক্বীহদের অধিকার; বরং তাদের উপর ওয়াজিব ও ফরয যে, তারা আখেরী যামানার অনুপস্থিত ইমামের খলীফা বা প্রতিনিধি হবেন এবং তারা হবেন ইমামের প্রতিনিধি হিসাবে শাসন ক্ষমতার অধিকারী। অতএব, তাকে অনুসরণ করা ওয়াজিব একজন ইমাম হিসাবে শুধু নয়; বরং একজন নবী বা রাসূল হিসাবে’। এই চিন্তা-চেতনার আলোকে ইসলামী বিপ্লবের ঘোষক তার অনুসারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে সর্বত্র ধরে রেখেছে, যাতে তারা পরবর্তীতে তার অনুসারী এবং তার নির্দেশ পালনকারী হতে পারে।

বিপ্লব ঘোষণার উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খুমায়নীর সরকার আট বছর ধরে ইরাকের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, যে ইরাককে পারস্যবাসীরা ইসলামী বিশ্বে তাদের প্রবেশ দ্বার মনে করে। এছাড়া তাদের আক্বীদায় ইরাকের একটা ধর্মীয় গুরুত্ব তো রয়েছেই। অসংখ্য প্রাণের আত্মহুতি ও ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধনের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে।

ইরানের মোড়ল সরকার শুরু থেকেই শী‘আ সংখ্যালঘু এলাকাসমূহকে স্বাধীন এবং সেখানে স্বায়ত্বশাসন প্রতিষ্ঠার দাবীর প্রতি উৎসাহ দিয়ে আসছিল। যে কারণে সে সময় শী‘আদের বেশ কিছু সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দল জন্ম নেয়, বর্তমান বিশ্বে যেগুলির নাম ছড়িয়ে পড়েছে। যেমনঃ ইরাকে ‘হিযবুদ্‌-দা‘ওয়াহ আল-ইসলামিইয়াহ’ লেবাননে ‘হারাকাতে আমাল’ ও ‘হিযবুল্লাহ’, বাহরাইনে ‘জাবহাতুত্‌-তাহরীর আল-ইসলামী’ ইয়েমেনে ‘আল-হারাকাহ আল-হূছিইয়াহ’ ইত্যাদি। এই দলগুলি ‘ক্বুম’-এর মোড়লদের নির্দেশনাসমূহ বাস্তবায়নের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং পরবর্তীতে পারস্য নিনাদের প্রতিধ্বনিতে পরিণত হয়েছে। পারস্যবাসীরা শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিপ্লব প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হওয়ার পর শান্তিপূর্ণ কূটনীতির মাধ্যমে বিপ্লব প্রতিষ্ঠার বিচক্ষণ নীতি বেঁছে নেয়। দীর্ঘমেয়াদী নীতি, গভীর পরিকল্পনা এবং সম্ভবপর কার্য সম্পাদনের নীতিকে সামনে রেখে শী‘আ মতবাদের বিস্তৃতি ইসলামী দেশসমূহে আগ্রাসন চালাতে শুরু করে। দেশের সীমারেখার সে পরোয়া করে না এবং কোন প্রতিবন্ধকতাও তাকে থামাতে পারে না।

এই প্রকল্পকে একটি শী‘আ রাষ্ট্র সার্বিক সাহায্য-সহযোগিতা করতে শুরু করে এবং সে নেতৃত্বের আসন গ্রহণের প্রয়াস চালায়। এই লক্ষ্যে সে তার সার্বিক ক্ষমতা, প্রতিষ্ঠানসমূহ ও অর্থ তহবিলকে কাজে লাগায় এবং শী‘আ মতবাদ প্রচারের পথে সে মোটা অংকের অর্থ ব্যয় করে। এ মর্মে প্রচারিত সংবাদ হল, ইরানী খনিজ তেলের লভ্যাংশের এক পঞ্চমাংশ এই উদ্দেশ্যকে বাস্তবায়নের জন্য ব্যয় করা হয়।

খুমায়নী স্বীয় অছিয়তে তার ভক্তদেরকে শী‘আ মতবাদ প্রচারের প্রতি উৎসাহ দিয়ে বলেন, ‘ধর্ম প্রচার কেবল জাতীয় পথনির্দেশ মন্ত্রণালয়ের একার দায়িত্ব নয়; বরং তা সমস্ত আলেম, খত্বীব, লেখক ও দক্ষ ব্যক্তির দায়িত্ব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্তব্য, দূতাবাস সমূহে প্রচুর পরিমাণে প্রচারপত্র সরবরাহের প্রয়াস চালানো, যেগুলি ইসলামের আলোকিত অধ্যায় বর্ণনা করবে’ (খুমায়নী, আল-ওয়াছিইয়াহ আস্‌-সিয়াসিইয়াহ, পৃঃ ৪০)।

এদিকে ইরানের বর্তমান প্রধান আহমাদিনেজাদ স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন যে, ইরান নীতির মূল উদ্দেশ্য হল, বিশ্বে শী‘আ মতবাদের প্রসার ঘটানো এবং প্রতীক্ষিত মাহদীর নিশান বুলন্দ করা। তিনি বলেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি প্রচারের দায়িত্ব গণপ্রজাতন্ত্রী ইরানের উপর বর্তায়’ [‘মুফাক্কেরাতুল ইসলাম’ ( مفكرة الإسلام ) ওয়েবসাইট থেকে গৃহীত]।

একজন শী‘আ আলেম ০৪/০১/১৪২৮ হিঃ তারিখে ‘আল-মুসতাক্বেল্লাহ’ ( المستقلة ) চ্যানেলে তার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শী‘আ অধ্যুষিত অঞ্চল ক্বুম ও নাজাফ, হেজায, শাম, ইয়েমেন এবং ইরাকে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার প্রয়াস চালাবে এবং শী‘আ আলেমদের লক্ষ্য হল, সমগ্র ইসলামী বিশ্বের নেতৃত্ব প্রদান। আর শী‘আ মতবাদ বিস্তৃতির ক্ষেত্রে কোন সীমানা নেই, তারা সারা জাহানে এই মতবাদ সম্প্রসারণের চেষ্টা চালাবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন