মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
‘হে লোকসকল! আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী হতে সৃষ্টি করেছি, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মাঝে যে অধিক মুত্তাকী সে-ই আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত। আল্লাহ তা‘আলা সবকিছু জানেন এবং সবকিছুর খবর রাখেন। [হুজুরাত, ১৩]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ে ঘোষণা করে বলেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়! আল্লাহ তা‘আলা জাহেলী অহমিকা ও বাপ-দাদার বড়াই মিটিয়ে দিয়েছেন। সকল মানুষ আদম সন্তান, আর আদম মাটির সৃষ্টি।
আল্লাহ তা‘আলা মানুষ সৃষ্টি করে তাঁকে চেনার মত যোগ্যতা দিয়েছেন। সাথে সাথে তিনি রব ও উপাস্য হওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট দলিল-প্রমাণ উপস্থাপন করেছেন, যেগুলো মানুষের বিবেক, অনুভূতি ও আত্মাকে সম্বোধন করে। মানুষকে তাঁর পরিচয় লাভ না করার কারণে শাস্তি প্রদানের জন্যে এতটুকুর উপরই ক্ষান্ত হননি; বরং রাসূল প্রেরণ করে কিতাব নাযিল করেছেন, যাতে মানব প্রকৃতিকে সম্বোধন করে সঠিক ধারণার বীজ বপন করা যায়। এ বিষয়ে প্রচুর আয়াত রয়েছে। আল্লাহ বলেন,
“তুমি একনিষ্ঠভাবে নিজেকে দ্বীনের উপর প্রতিষ্ঠিত কর। আল্লাহর (প্রদত্ত) প্রকৃতির অনুসরণ কর, যে প্রকৃতি অনুযায়ী তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই। এটা সহজ-সরল দ্বীন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। বিশুদ্ধচিত্তে তার অভিমুখী হয়ে তাঁরই তাকওয়া অবলম্বন কর, তোমরা সালাত কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।” [সূর আর -রূম : ৩০-৩১]
আল্লাহ তা‘আলা মানুষের নিকট এরকমই চেয়েছেন। কিন্তু মানুষ সংকীর্ণ বিবেক ও কুপ্রবৃত্তির কারণে এদিক-সেদিক ছুটোছুটি করে, বিভ্রান্ত হয়ে নানা পথ ও পন্থা অবলম্বন করে। আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে আকল-বুদ্ধি-বিবেক ও আত্মা দিয়েছেন। যে ব্যক্তি এক দিককে অপরটির উপর প্রাধান্য দেবে, সে সঠিক রাস্তা থেকে সরে যাবে।
ইসলামী ব্যক্তিত্বের গুণ-বৈশিষ্ট্য
আল্লাহ তা‘আলা মুসলিমের জন্য এমন কিছু গুণাবলী নির্ধারণ করেছেন, যেগুলোর মাধ্যমে তাদের সহজেই অন্যদের থেকে পৃথক করা যায়।
(১) মুসলিম আকীদা ও বিশ্বাসে দৃঢ় :—
মুসলিম আল্লাহকে রব, ইসলামকে দীন ও মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবী ও রাসূল হিসেবে দৃঢ়বিশ্বাস করে। আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাব, রাসূলগণ, আখেরাত ও ভাল-মন্দ তাকদীরের উপর ঈমান রাখে।
ঈমানের ভিত্তির উপর একজন মুসলিম জীবনকে পরিচালিত করে, যা তাকে আচার-ব্যবহার, চলাফেরা, উদ্দেশ্য-লক্ষ্য ও লেনদেনে দিক নির্দেশনা দেবে। এর উপরই প্রতিষ্ঠিত হবে তার জীবন-জীবিকা ও সময়। নির্ধারিত হবে তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার কাজকর্ম চলবে সুস্পষ্ট প্রামাণ্যতার উপর, যাতে কোনো প্রকার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও চিন্তা-বিভ্রান্তি থাকবে না।
ইসলাম এ বিষয়টির উপরই বিশেষ জোর দিয়েছে ; কেননা এ জীবনে মানুষের চলার সূচনা কি হবে সেটা একমাত্র ইসলামই নির্ধারণ করতে পারে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন
‘রাসূল ঈমান রাখেন ঐ সব বিষয়ে যা তার রবের পক্ষ থেকে তার নিকট অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলিমরাও। সবাই ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি, তার ফেরেশতাদের প্রতি, গ্রন্থসমূহের প্রতি এবং তার রাসূলগণের প্রতি। তারা বলে: আমরা তাঁর রাসূলগণের মাঝে কোনো তারতম্য করি না। তারা বলে : আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি, আমরা তোমার ক্ষমা চাই হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।’ [বাকারা : ২৮৫]
‘আমি প্রত্যেক উম্মতের মাঝেই রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং তাগুত থেকে নিরাপদ থাক। অতঃপর তাদের মাঝে কিছু সংখ্যককে আল্লাহ হেদায়েত দান করেছেন এবং কিছু সংখ্যকের জন্য বিপথগামিতা অবধারিত হয়ে গেছে।সুতরাং তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ মিথ্যারোপকারীদের কিরূপ পরিণতি হয়েছে।’ [নাহল : ৩৬]
(২) মুসলিম ইবাদতে দৃঢ় :-
আল্লাহর ইবাদত করাই হল মুসলিমের জীবন, তাদের কাজকর্ম চলবে নীতিবদ্ধতা, শৃঙ্খলা, ভারসাম্যের উপর। সে এ ধরনের ইবাদতে অঙ্গীকারাবদ্ধ, যাতে জীবনের সকল দিক অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘হে নবী! আপনি বলুন : আমার নামায, আমার কোরবানী এবং আমার জীবন-মৃত্যু বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহরই জন্য। তার কোনো অংশীদার নেই। আমি তা-ই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আনুগত্য পোষণকারী।’ [আনআম : ১৬২- ১৬৩।]
তার উপর ভিত্তি করেই মুসলিম একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘তাদেরকে এ ছাড়া কোনো নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে।’ [বাইয়্যেনাহ : ৫।]
আর তাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অনুসরণও থাকতে হবে। যেমন হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«من عمل عملا ليس عليه أمرنا فهو رد» .
যে ব্যক্তি এমন আমল করল যাতে আমার কোনো নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত। [মুসলিম : ৩২৪৩]
(৩) মুমিন উত্তম চরিত্রের অধিকারী :—
একজন মুসলিমের ব্যক্তিত্বের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো উত্তম আখলাক ও সুন্দর ব্যবহার। আর এ ক্ষেত্রে একমাত্র অনুসরণ করবে প্রথম আদর্শ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর, যার প্রশংসা করেছেন স্বয়ং রাব্বুল আলামীন। আল্লাহ বলেন—
আয়েশা সিদ্দীকা রা.-কে তাঁর চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন―
«كان خلقه القرآن» .
‘কুরআনই ছিল তার চরিত্র।’ [মুসনাদে আহমদ : ২৩৪৬০]
তিনি সর্বদাই উম্মতকে উত্তম চরিত্র গ্রহণ করার আদেশ দিতেন। তিনি বলেন―
«أكمل المؤمنين إيمانا أحسنهم خلقاً» .
‘সবচেয়ে পরিপূর্ণ মুমিন ঐ ব্যক্তি যে সবচেয়ে চরিত্রবান।’ [তিরমিযী : ১০৮২]
জনৈক ব্যক্তি তাঁর নিকট অসিয়ত তলব করলে তিনি বলেন―
«اتق الله حيثما كنت، وأتبع السيئة الحسنة تمحها، وخالق الناس بخلق حسن» .
‘তুমি যেখানেই থাক আল্লাহকে ভয় কর। গুনাহ হয়ে গেলে সাথে সাথে একটি নেক আমল করে ফেল, তা সেটি মিটিয়ে দিবে। আর মানুষের সাথে ভালো ব্যবহার কর।’ [তিরমিযী : ১৯১০]
ইসলাম ইবাদতের সাথে আখলাককে মিলিয়ে দিয়েছে। একজন প্রকৃত আবেদ ইবাদতের মাধ্যমে তার চরিত্র সংশোধন করে নিবে। আল্লাহ বলেন―
‘তবে সে হজের মাঝে সহবাস, দুষ্কর্ম ও কলহ করতে পারবে না।’ [বাকারাহ্ : ১৯৭]
‘এমনিভাবে উত্তম আখলাকের গুরুত্ব সম্পর্কে শরীয়তের অনেক দলীল প্রমাণ রয়েছে। একজন প্রকৃত মুমিন উত্তম চরিত্র ও প্রশংসিত গুণাবলির অধিকারী হবে―এটি স্বাভাবিক। উত্তম গুণসমূহ যেমন―সততা, বদান্যতা, বিনম্র আচরণ, খারাপ বস্তু থেকে দৃষ্টি সংরক্ষণ, অশালীন কাজ থেকে দূরে থাকা, ধৈর্য, লজ্জা―প্রভৃতি।’
(৪) মুসলিম ইলম ও প্রজ্ঞার উপর জীবন অতিবাহিত করে :―
সে অন্যদের সাথে এমন ব্যবহার করে, যেমন ব্যবহার অন্যদের থেকে আশা করে। অন্যদের ভালোবাসে এবং তাদের কল্যাণ কামনা করে। তাদের জন্যে দো‘আ করে এবং আহ্বান করে এমন কাজের প্রতি যা তাদের জন্যে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ বয়ে আনে।
মুসলিম এমন স্বার্থপর হবে না যে, শুধু নিজের কল্যাণ কামনা করে, অন্যের নেয়ামত কুক্ষিগত করার আশা করে। কখনও সে অন্যের অমঙ্গল চাইতে পারে না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার দাওয়াতের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েই একজন প্রকৃত মুসলিম মানুষকে হেদায়েত ও দিক-নির্দেশনা দেবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন―
‘তোমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। তোমাদেরকে মানুষের কল্যাণের জন্যে বের করা হয়েছে। তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ করবে। এবং অসৎ কাজে বাধা প্রদান করবে। আর আল্লাহর উপর ঈমান রাখবে।’ [আলে ইমরান : ১১০]
‘ঐ ব্যক্তির চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে, যিনি মানুষকে আল্লাহর দিকে আহ্বান করে এবং নিজেও নেক আমল করে, আর বলে আমি মুসলিমদের একজন। [ফুসসিলাত : ৩৩]
মুসলিম গুণে বিশিষ্ট হওয়ার ফল:—
(১) মানসিক শান্তি:
অন্তরের প্রশান্তি ও অস্থিরতার ফলেই পার্থিব জীবনে প্রতিটি মানুষ সুখ-দুঃখের সম্মুখীন হয়। মুসলিম সর্বাবস্থায় মানসিক শান্তিতে থাকে, সতত নিজেকে আবিস্কার করে এক অনাবিল স্থিরতা ও প্রশান্তিতে।
‘যে ব্যক্তির অন্তরকে আল্লাহ তা‘আলা ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছেন এবং সে রবের পক্ষ থেকে নূরের উপর রয়েছে। (পক্ষান্তরে) যাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণের ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে দুর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ট গোমরাহীতে রয়েছে’ [যুমার : ২২]
‘আপনি বলুন : আমার সালাত, কুরবানি, জীবন, মরণ সবই বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে। তার কোনো শরীক নেই। আমি এ মর্মেই আদিষ্ট হয়েছি আর আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’ [আনআম : ১৬২-১৬৩]
(৩) স্থিতিশীলতা :
আল্লাহর পথে চলার মাধ্যমে নিরাপত্তা ও স্থিরতা অর্জিত হয়। এরই মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছা যায়। আর বিপরীত পথে উল্টো ক্ষতি হয়।
‘নিশ্চয় যারা ঈমান এনে নেক আমল করে তাদের জন্য মেহমানদারিরূপে রয়েছে জান্নাতুল ফিরদাউস।’ [কাহাফ : ১০৭]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/738/2
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।