hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

গল্পের মাধ্যমে জ্ঞান

লেখকঃ হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ

৫০
কূটকৌশলের পরিণাম
একজনের অধিকারে অন্যজনের অন্যায় হস্তক্ষেপের ফলেই জগতে অশান্তি সৃষ্টি হয়ে থাকে। জগতের অধিকাংশ যুদ্ধ-বিগ্রহ এ অন্যায় হস্তক্ষেপের কারণেই সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু এ অশান্তি দীর্ঘদিন স্থায়িত্ব লাভ করতে পারে না। তবুও এ অশান্তির শিকার হয় অগণিত মানুষ। এ সম্পর্কে নিম্নের কাহিনী-

অনেক দিন আগের কথা। পাশাপাশি দু’টি মুসলিম রাজ্য। রাজ্য দু’টির মধ্যে সখ্যতা বিদ্যমান। এক রাজ্যের বড় শাহজাদার নাম হারূণ। ছোট শাহজাদা ইমরান। সে বাদশাহর দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান। বড় শাহজাদা হারূণ বাদশাহর মত সৎ এবং রাজ্যের দায়িত্বভার গ্রহণে উপযুক্ত। বাদশাহর ইচ্ছা, তিনি বড় শাহজাদার উপর রাজ্য পরিচালনার ভার অর্পণ করে বাকী জীবনটা আরাম-আয়েশে কাটিয়ে দিবেন। কিন্তু তাঁর সে ইচ্ছার চরম অন্তরায় হয়ে দাঁড়ালেন তাঁর বেগম। বেগমের ছেলে ইমরানও বেশ বড় হয়েছে। বেগমের ইচ্ছা, ইমরানই সিংহাসনের অধিকার লাভ করুক। কিন্তু বেগম জানেন, বাদশাহর কাছে তাঁর ছেলেকে রাজ্যভার অর্পণের কথা জানালে তাতে বাদশাহর সম্মতি পাওয়া যাবে না। তাই এ ব্যাপারে তিনি কিছু কূটকৌশলের আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করলেন।

বাদশাহ ন্যায়পরায়ণ শাসক। তাঁর রাজ্যে কোথাও কোন গোলমাল-গোলযোগ নেই। রাজ্যের সর্বত্রই শান্তি বিরাজিত। এমন দিনে এক প্রজা বাদশাহর দরবারে এসে অভিযোগ দায়ের করল যে, কে একজন তার কন্যাকে অপহরণ করেছে। সে এর উপযুক্ত বিচার চায়। বাদশাহ অভিযোগ শুনে একেবারে বিস্মিত হয়ে গেলেন। এত বড় অনাচার কার দ্বারা সাধিত হ’ল? অতি সত্বর তদন্ত করে আসামীকে রাজ দরবারে উপস্থিত করার জন্য বাদশাহ প্রধান সেনাপতিকে নির্দেশ দিলেন। তদন্তে পাওয়া গেল, বাদশাহর দ্বিতীয় ছেলে ইমরানই এ অপকর্ম করেছে। বাদশাহর কর্ণগোচর হওয়ার পূর্বেই বিষয়টি বেগম জানলেন। তিনি ছেলেকে এ কাজের জন্য খুব তিরস্কার করলেন। কেননা বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে তাঁর উদ্দেশ্য সাধনে চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হবে। তাই তিনি অন্দর মহলের ঝি দ্বারা প্রধান সেনাপতিকে গোপনে ডাকলেন। তিনি সেনাপতিকে প্রচুর উপঢৌকন দিয়ে বশীভূত করে ফেললেন। বিষয়টি যাতে কোনক্রমেই ফাঁস না হয় সেজন্য তাকে বিশেষভাবে বললেন। এমনকি বাদশাহও যাতে এটা জানতে না পারে তার ব্যবস্থাও করতে বললেন। উপঢৌকন গ্রহণ করে সেনাপতি বাদশাহকে জানালেন, তদন্তেকাউকে দোষী সাব্যস্ত করা গেল না। অভিযোগটি মিথ্যা প্রতিপন্ন হ’ল। কাউকে আসামী হয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হ’ল না।

শিকারে বের হওয়া রাজা-বাদশাহদের প্রিয় শখ। এতে নাকি তাঁদের মানসিক অশান্তি দূরীভূত হয়। বড় ছেলেকে কোন অজ্ঞাত কারণে একটু বিমর্ষ বলে মনে হ’ল বাদশাহর। তাই তিনি তাকে শিকারে যেতে আদেশ করলেন। পার্শ্ববর্তী রাজ্যের রাজকন্যা জাহানারাও সঙ্গী-সাথী সহ একই বনে শিকারে উপস্থিত। একটি পাখীকে উভয়েই তীর নিক্ষেপ করল। দু’টি তীরই পাখীর দেহে বিদ্ধ হয়ে পাখীটি মাটিতে পড়ে গেল। শাহজাদা বলল, আপনার তীরের আঘাতে পাখীটি ধরাশায়ী হয়েছে। অতএব পাখীটি আপনার। রাজকন্যাও অনুরূপ বলল। উভয়ের মধ্যে পরিচয়-পরিচিতি হ’ল। শাহজাদা মনে মনে তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজবাড়ীতে ফিরে এসে পিতাকে তার সিদ্ধান্তের কথা জানালেন। আগে থেকে পার্শ্ববর্তী ঐ রাজ্যের সাথে সখ্যতা ছিল। বাদশাহ তাই সানন্দে শাহজাদার প্রস্তাবে রাযী হয়ে শীঘ্র্ই আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের কাজ সম্পাদন করে দিলেন।

এখন বাদশাহর একটি কাজ বাকী। তা হ’ল শাহজাদাকে রাজ্যভার অর্পণ করা। বাদশাহ এজন্য পূর্ব প্রস্ত্ততি নিতে থাকলেন। বেগম দেখলেন, তাঁর উদ্দেশ্য সফল করতে আর দেরি করা চলে না। তাই তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন, শাহজাদাকে কিছু পান করিয়ে সাময়িক উন্মাদ করে দিবেন। এজন্য তিনি শরবত তৈরী করে ঝি দ্বারা বড় শাহজাদাকে ডাকলেন। শাহজাদা সৎমাকে আপন মায়ের মতো শ্রদ্ধা করে। মায়ের ডাক পেয়ে ছেলে এলে মা বললেন, তোমার জন্য আমি এ শরবত তৈরী করে রেখেছি, পান কর। বেগমের বাহ্যিক আচরণে কোন সন্দেহের কারণ ছিল না। কিন্তু তিনি অন্তরে শাহজাদার প্রতি চরম বৈরিতা পোষণ করেন। শাহজাদা কোনরূপ সন্দেহ-সংশয়ে না পড়ে সরল মনে শরবত পান করল। সাথে সাথে তার পাগলামি শুরু হয়ে গেল। বেগম বাদশাহকে তাঁর কক্ষে ডাকলেন। স্বচক্ষে তার এরূপ আচরণ লক্ষ্য করে তার প্রতি তাঁর ধারণা পাল্টে গেল। তিনি ছেলেকে রাজবাড়ী হ’তে বের করে বনবাসে পাঠালেন। শাহজাদার স্ত্রীও স্বামীর সঙ্গে বনবাসে যেয়ে এক লোকের আশ্রয়ে উঠল।

এরপর বেগম গোপনে প্রধান সেনাপতিকে ডাকলেন। তিনি সেনাপতিকে আগে থেকে আরো বেশী পুরস্কার প্রদানের প্রতিশ্রুতিতে বাদশাহকে বন্দী করে কারাগারে পাঠাতে বললেন। সেনাপতি বাদশাহকে কারাগারে আবদ্ধ করলেন। বেগম এবার তাঁর ছেলেকে সিংহাসনে বসালেন। ইমরান এখন বাদশাহ, রাজ্যের সর্বেসর্বা। বাদশাহ হয়েই সে নিত্য নতুন আইন জারী করে প্রজাদের উপর নির্যাতন শুরু করে দিল। বেগম এতে বাধা দিলেন। কিন্তু সে তার মায়ের কথায় কান দিল না। প্রজারা ক্ষিপ্ত হ’তে লাগল।

নতুন বাদশাহ তার মায়ের মতই ধূর্ত। সে জানে, এবার সেনাপতি প্রতিশ্রুত উপঢৌকন দাবী করবে। তাই সে সেনাপতিকে পুরস্কার প্রদানের জন্য ডাকল। সেনাপতি আসলে তরবারী উঁচিয়ে বলল, পুরস্কারের লোভে যে ব্যক্তি একজন সৎ বাদশাহকে কারাগারে পাঠাতে পারে, পুরস্কারের লোভে সে আমারও চরম ক্ষতি করতে পারে। এ বলেই তাকে শেষ করে দিল।

বাদশাহর বিয়াই বাদশাহ সমস্ত সংবাদ অবগত হওয়ার পর প্রথমে জামাই ও মেয়েকে নিজ প্রাসাদে আনলেন। এরপর তিনি জামাই সহ সামরিক অভিযান পরিচালনা করে বন্দী দশা হ’তে বাদশাহকে উদ্ধার করলেন। নতুন বাদশাহ ও বেগমকে বন্দী করা হল। বেগম বুঝলেন, এখন তাদের মৃত্যু অবধারিত। তিনি বার বার বলতে লাগলেন, সব অপকর্মের জন্য আমিই দায়ী। আমাকে মেরে ফেলুন। আমার ছেলেকে মুক্তি দিন। তার কোন দোষ নেই। কিন্তু উভয়কেই মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করা হ’ল। বড় শাহজাদা কণ্টকমুক্ত হয়ে সিংহাসনে আরোহণ করল। রাজ্যে আগের মত শান্তির সুবাতাস প্রবাহিত হ’তে লাগল।

শিক্ষা : কুচক্রীদের শেষ পরিণতি সর্বদাই মন্দ হয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন