hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

গল্পের মাধ্যমে জ্ঞান

লেখকঃ হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ

৬৪
খাদীজার পর্দা
খাদীজা অন্যান্য দিনের মত আজও খুব ভোরেই ঘুম থেকে উঠেছে। ওযূ সেরে ফজরের ছালাত আদায় করে কিছুক্ষণ কুরআন তেলাওয়াত করেছে। এরপর সে জানালার পাশে এসে দাঁড়ায়। তখনও আকাশ পুরা ফর্সা হয়নি। চারিদিক থেকে পাখির কলরব ভেসে আসছে। সকালের শীতল হাওয়ায় খাদীজার মনের ব্যথা অনেকটা প্রশমিত হয়ে যায়। সে দূর দিগন্তের দিকে তাকিয়ে ভাবে এই নোংরা পৃথিবীর কথা, যেখানে নিজের ভাল কাজ করার অধিকারটুকুও নেই। কী এমন অন্যায় সে করেছে, তা ভেবে পায় না। সেতো শুধু বোরক্বা পরে কলেজে যায়। প্রয়োজন ছাড়া কোন ছেলের সাথে কথা বলে না, ক্লাশ ছেড়ে কোথাও যায় না। আচ্ছা এগুলিই কি তার দোষ? তাহ’লে মালীহা, সুমাইয়া, আরীফা ওরা যেভাবে উচ্ছৃংখলভাবে চলাফেরা করে সেটাই কি ভাল? না, তা হবে কেন? আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, ‘হে নবী! আপনি ঈমানদার নারীদেরকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষদেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক, তাদের মালিকানাধীন বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর নিকট তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হ’তে পার’ (নূর ৩১)। আলোচ্য আয়াতে যে কথাগুলি বলা হয়েছে, তা মেনে চলা প্রত্যেক নারীর জন্য ফরয।

প্রতিদিনের মত গতকালও খাদীজা যথারীতি কলেজে গিয়েছিল। সে স্কুল জীবন থেকেই বোরক্বা পরত। মালীহা, সুমাইয়া, আরীফা সবাই খাদীজার খুব ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। স্কুলজীবন থেকে ওরা খুব অন্তরঙ্গ। কলেজে উঠেও সেই অন্তরঙ্গতা বিদ্যমান আছে। এদের মধ্যে একমাত্র খাদীজাই বোরক্বা পরে। অন্যদের মধ্যে মালীহা, আরীফা ততটা উচ্ছৃংখল নয়, যদিও বোরক্বা পরে না। কিন্তু সুমাইয়া খুব উচ্ছৃংখলভাবে চলাফেরা করে। ও প্রায় সময়ই বোরক্বা পরার জন্য খাদীজাকে তিরস্কার করে। কলেজে ওঠার পর বোরক্বা নিয়ে প্রায়ই খাদীজার সাথে তার কথা কাটাকাটি হ’ত। ওর এক কথা, বোরক্বা পরলে সামাজিক ও আধুনিক হওয়া যায় না।

টিফিন পিরিয়ডে সবাই ক্লাস থেকে বেরিয়ে পড়লে সুমাইয়া খাদীজাকে বলল, চল, আর সঙ সেজে বসে না থেকে একটু বাইরে ঘুরে আসি। বোরক্বা নিয়ে বান্ধবীদের রসিকতা সে অনেক সহ্য করেছে। আজ আর পারল না। বলে উঠল, সঙ আমি সাজি, না তোরা? ঠোঁটে লিপস্টিক, কপালে টিপ আর ফিনফিনে জামা পরে তোরাই তো প্রতিদিন সঙ সেজে কলেজে আসিস। একথা শুনে অপমানে সুমাইয়ার চোখ-মুখ লাল হয়ে যায়। সে বলে, কী, এত বড় কথা! দাঁড়া দেখাচ্ছি মজা। এই বলে টান দিয়ে খাদীজার মুখের নেকাব খুলে ফেলল সুমাইয়া। লজ্জায়, অপমানে খাদীজার চোখ-মুখও লাল হয়ে যায়। ও শুধু বলে, কাজটা ভাল করলি না সুমাইয়া। এরপর বাকী ক্লাশের সময় আর কারো সাথে কথা না বলে বেঞ্চে মুখ গুঁজে কাঁদতে থাকে খাদীজা। অতঃপর কলেজ ছুটি হ’লে বাড়ী চলে আসে।

ঘটনাটি বার বার মনের পর্দায় ভেসে উঠছে খাদীজার। একবার মনে হচ্ছে সুমাইয়ার সাথে সে আর কোনদিন কথা বলবে না। পরক্ষণেই তার মনে পড়ে তায়েফে সত্যের দাওয়াত দিতে গিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তায়েফবাসীর হাতে নিগৃহীত হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের অকল্যাণ কামনা না করে তিনি কল্যাণ কামনা করেছিলেন। এ কথা মনে করে খাদীজা ভাবে, হয়ত দোষ আমারই। সুমাইয়াকে ওভাবে বলা ঠিক হয়নি। আজকে ওর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।

কলেজের সময় হয়ে গেছে। ঝটপট তৈরী হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল খাদীজা। কিন্তু একি? আজ তার কোন বান্ধবীই কলেজে আসেনি। এমন তো কোন দিন হয় না। তাই ও চিন্তিত হয়ে পড়ল। ভাবল, কলেজ ছুটি হ’লে সুমাইয়াদের বাসায় যাবে। ওদের বাসায় পেঁŠছে কলিংবেল টিপতেই ওদের কাজের মেয়েটি দরজা খুলে দিল। খাদীজা জিজ্ঞেস করল, সুমাইয়া আছে? মেয়েটি জবাব দিল, না। খাদীজা আবার বলল, তাহ’লে খালাম্মাকে ডেকে দাও। কাজের মেয়েটি তখন কেঁদে ফেলল। খাদীজা অবাক হয়ে বলল, কি হয়েছে খুলে বল। মেয়েটি যা বলল তাতে জানা গেল, গতকাল কলেজ থেকে ফেরার পথে একদল সন্ত্রাসী সুমাইয়ার মুখে এসিড নিক্ষেপ করেছে। সে এখন হাসপাতালে। একথা শুনে খাদীজা ভয়ে কেঁপে উঠল। পর্দাহীনতার পরিণামে যে কত রকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারে-এ ঘটনা তারই জ্বলন্ত প্রমাণ।

আর কথা না বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হয় খাদীজা। হাসপাতালে পৌঁছে নার্সের কাছ থেকে রুম নম্বর জেনে নিয়ে সেই রুমের দিকে এগিয়ে যায়। রুমের দরজা খুলেই চোখ পড়ে মালীহা, আরীফার দিকে। কাছে গিয়ে দেখে সুমাইয়ার মুখের এক পাশের বেশ কিছু অংশের চামড়া সম্পূর্ণ ঝলসে গেছে। খাদীজাকে দেখে সুমাইয়া কেঁদে ফেলে। খাদীজা সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পায় না। সুমাইয়া খাদীজাকে বলে, আমি অন্যায় করেছি। সেরে উঠলে আমিও বোরক্বা পরেই কলেজে যাব। সাথে সাথে মালীহা আর আরীফাও বলে উঠল, শুধু তুই কেন, আমরাও যাব। আনন্দে খাদীজার চোখে পানি এসে যায়। বলে, তোদের নিয়ে আমার অনেক স্বপ্ন ছিল। আজ তা পূরণ হ’ল। অতঃপর খাদীজা ওদের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করল, হে আল্লাহ! ওদের তুমি হেদায়াত দান কর! ওদের সকলের চোখে আনন্দের ঝিলিক, দুর্লভ কিছু খুঁজে পাওয়ার আনন্দ আর বুকে একটি সোনালী সুন্দর সমাজ গঠনের দুর্বার আকাঙ্খা।

শিক্ষা : প্রত্যেক ঈমানদার নারীর উচিৎ হবে পর্দা সহকারে চলাফেরা করা এবং সেই সাথে পুরুষদের কাজ হবে মহিলাদেরকে পর্দা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা ও নিজেদের দৃষ্টিকে অবনমিত রাখা। ইভটিজিং, এসিড নিক্ষেপ ইত্যাদি সামাজিক অপরাধ থেকে নারীকে বাঁচাতে হিজাব অতীব গুরুত্বপূর্ণ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন