hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

গল্পের মাধ্যমে জ্ঞান

লেখকঃ হাদীছ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ

৬১
গুপ্তধন
জনৈক ব্যক্তি স্ত্রী, তিন পুত্র ও এক কন্যা রেখে মারা যান। ছেলেরা সবাই বিবাহিত। মেয়ের বিয়ে আগেই হয়েছে। তারা সবাই সন্তান-সন্ততির মা-বাবা হয়েছে। পিতার মৃত্যুর পরে গ্রামের কিছু গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে ছেলেরা পৃথক হয়ে যায়। ছোট ছেলের মায়ের প্রতি একটু বেশি ভালবাসা বুঝে মা ছোট ছেলের সাথে থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন।

মায়ের সোনার চুড়ি পরার খুব সখ ছিল। স্বামী তার সে সখ পূরণ করতে পারেননি। তাই ছোট ছেলে মাকে সোনার চুড়ি বানিয়ে দেয়। মা এতে ভীষণ খুশী হন। ছোট ছেলে মাকে আদর-যত্নে রাখে। এভাবে কিছুদিন যাবার পর ছোট ছেলের বউ শাশুড়ীকে বলে, ‘মা তোমার বিষয়-সম্পত্তি তোমার ছোট ছেলেকে লিখে দাও, আমরা তোমাকে বরাবর এভাবে দেখব’। ছেলে ও বউ-এর ব্যবহারে মা প্রীত হয়ে তার যাবতীয় সম্পত্তি ছোট ছেলেকে লিখে দেন। তার ধারণা যে, তিনি বেশি দিন বেঁচেও থাকবে না।

মানুষের চরিত্র বড়ই জটিল ও দুর্বোধ্য। যাকে অতি সৎ লোক মনে করা হচ্ছে, সে-ই একদিন এমন এক অপকর্ম করে বসে, যার ফলে তার দীর্ঘদিনের সুনাম নিমেষে শেষ হয়ে যায়।

মা প্রতি রাতে চুড়িগুলি খুলে রেখে ঘুমান। সকালে আবার পরেন। একদিন তিনি চুড়ি পরতে ভুলে যান। যখন মনে পড়ে, তখন আর চুড়িগুলি পান না। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মা চুড়িগুলি না পেয়ে কান্না শুরু করে দেন। মা বলেন, ‘বউ ছাড়া এ ঘরে তো আমি আর কাউকে কখনও আসতে দেখিনি’। শাশুড়ীর কথায় বউ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং বলে, আমিই কি তাহ’লে চুড়িগুলি চুরি করেছি। আমার কথায় স্বামী তোমাকে চুড়ি বানিয়ে দিয়েছে। আর এখন আমি চোর হ’লাম। মা বললেন, আমি তোমাকে চোর বলিনি। তুমি ছাড়া আমি তো আর কাউকে এ ঘরে আসতে দেখিনি। তুমি চুড়ি নাওনি, তবে চুড়িগুলি গেল কোথায়? ছেলে মা-বউ এর কথা কাটাকাটি থামাতে ব্যর্থ হ’ল। কথা কাটাকাটি চরমে উঠলে মা বললেন, তোমরা আমার বিষয়-আশয় হস্তগত করার কুমতলবে আমাকে আদর-যত্ন করেছ এবং চুড়িগুলিও বানিয়ে দিয়েছ। তোমরা না সরালে চুড়িগুলি কি উড়ে গেল? আমার বিষয়-আশয় আমাকে ফিরিয়ে দাও। আমি এ বাড়ীতে আর একদন্ডও থাকব না। মা বাড়ী হ’তে বের হয়ে গেলে বউ বলে, তোমার পরামর্শে চুড়িগুলি সরিয়ে আমি ভাল কাজ করিনি। ছেলে বলে, আস্তে বল, লোকে শুনতে পাবে।

মা বাড়ী থেকে বের হয়ে বড় ছেলের বাড়ীতে গিয়ে উঠেন। বড় ছেলেকে অতি অনুনয়ের সুরে বলেন, ‘বাবা! তুই আমার বড় ছেলে। তুই আমাকে একটু আশ্রয় দে বাবা। আমি ঘরের এক কোণে পড়ে থাকব। তোরা যা খাবার দিবি, তাই খাব। কোন আবদার ও অভিযোগ করব না’। ছেলে ও বউ একই সাথে বলে উঠল, ‘তুমি বিষয়-আশয় সব ছোট ছেলেকে দিয়ে এখন আমাদের ঘাড়ে চাপতে চাও। তা হবে না। আমরা তোমাকে রাখতে পারব না।

ছেলে ও বউয়ের কাটা জবাব পেয়ে মা কাঁদতে কাঁদতে মেজ ছেলের বাড়ীতে গিয়ে উঠেন। সেখানেও একই পরিস্থিতি। অগত্যা মা তার শেষ ভরসাস্থল মেয়ের বাড়ীতে আশ্রয়ের জন্য যান। সেখানেও তার ভাগ্যে জোটে একই বিড়ম্বনা। মেয়ে-জামাই ছোট ছেলেকে বিষয়-আশয় লিখে দেবার খবর জেনেছে। তাই তারা বলে উঠে, বিষয়-আশয় একজনকে দিয়ে আমাদের এখানে কেন এসেছ? আমরা তোমাকে রাখতে পারব না’।

মা কেঁদেকেটে পথে এসে দাঁড়ান। কোথাও আশ্রয় না পেয়ে ভিক্ষা করে জীবন কাটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এভাবে কিছুদিন কেটেও যায়। একদিন এবাড়ী ওবাড়ী ঘুরে ক্লান্ত হয়ে তিনি একটি গাছের নীচে ঘুমিয়ে পড়েন। এমন সময় এক পরিচিত কণ্ঠের চাচী ডাকে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। ঘুম থেকে জেগে তিনি সামনে আব্দুল্লাহকে দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। স্বামীর বর্তমানে আব্দুল্লাহ তার বাড়ীর দীর্ঘদিনের কাজের ছেলে। সন্তানের স্নেহে মা তাকে নিজ সন্তানদের সাথে মানুষ করেছে। আব্দুল্লাহ বড় হয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কাজ উপলক্ষ্যে সে বাইরে ছিল। তাই তার চাচীর বর্তমান হাল-চাল জানা ছিল না। আব্দুল্লাহ চাচীকে সান্ত্বনা দিয়ে তার বাড়ীতে নিয়ে যায় এবং আদর-যত্নে রাখে। এভাবে কিছুদিন কেটে গেলে একদিন আব্দুল্লাহ শক্ত করে বাঁধা একটি পুঁটলি এনে চাচীকে দিয়ে বলে, এই পুঁটলির মধ্যে কিছু গুপ্তধন রয়েছে। আপনি পুঁটলিটা কখনও খুলবেন না। মরার আগে এর সম্পদ ছেলে-মেয়েদের মধ্যে ভাগ করে দিবেন’। আব্দুল্লাহ বুঝেছিল যে, গুপ্তধনের লোভে ছেলেরা মাকে ফিরিয়ে নিতে আসবে। তাই পুঁটলির ব্যাপারে সতর্ক করে দিল এবং তার কথামত অটল থাকতে বলল।

মায়ের হাতে গুপ্তধন আছে জেনে ছেলে-মেয়ে সবাই স্বামী-স্ত্রীতে পরামর্শ করল। অবশেষে তারা এই সিদ্ধান্ত নিল যে আগে মাকে আনবে, সেই গুপ্তধন পাবে। তাই সবাই সবার আগে মাকে আনতে গেল। ফলে একই দিনে এমনকি একই সময়েই সবাই মাকে আনতে হাযির হ’ল। সবাই জোর দাবী করল সে-ই মাকে নিয়ে যাবে। সবার দাবী দেখে মা বলল, ‘আমি কারো বাড়ীতে স্থায়ীভাবে থাকব না। পালাক্রমে সকলের বাড়ীতে থাকব। আর মরার আগে আব্দুল্লাহর দেওয়া ধন সবাইকে সমান ভাগে ভাগ করে দিব।

মায়ের কথায় সবাই রাযী হয়ে মাকে নিয়ে এল। মা তখন খুবই আদর-যত্নে রইল। কিন্তু মৃত্যু কাউকেও অবকাশ দেয় না। মায়ের ভাগ্যে এই সুখ বেশিদিন সইল না। একদিন মা মৃত্যুবরণ করলেন।

মায়ের মৃত্যুর পর ছেলেরা যখন পুঁটলিটা খুলে সম্পদ ভাগ করে নিতে যাবে, ঠিক সে সময় আব্দুল্লাহ এসে হাযির। সে বলল, ঐ পুঁটলির মধ্যে কোনই ধন নেই। তোমরা সম্পদের লোভী বুঝে আমি এই বুদ্ধি খাঁটিয়েছি। তোমরা মায়ের প্রতি মোটেই দায়িত্ব পালন করনি। তোমাদের এ পাপের ক্ষমা হবে কি-না কে জানে?

ছেলেরা বুঝল, তারা সত্যিই মায়ের প্রতি গর্হিত আচরণ করেছে। তারা এও বুঝল যে, সম্পদের লোভে তারা তো মাকে ভালই যত্ন করেছে। এরূপ আচরণ করা তাদের পূর্বেই উচিত ছিল। মায়ের প্রতি অন্যায় আচরণের জন্য তারা অনুতপ্ত হ’ল এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে এর জন্য ক্ষমা ভিক্ষা চাইল।

শিক্ষা : পিতা-মাতাকে দেখাশুনা করা ও তাদের ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করা সন্তানের অবশ্য কর্তব্য। পার্থিব কোন লোভের জন্য নয়; বরং জান্নাত লাভের আশায় তারা এ দায়িত্ব পালন করবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন