ব্যবসায়ী কিছু মাল খরিদ করলে পুঁজি বিনিয়োগকারী বলল, উহা বিক্রয় করে দাও, কিন্তু ব্যবসায়ী বলল, এখন বিক্রয় করা ঠিক হবে না, তবে এ ব্যাপারে অন্যান্য বিচক্ষণ ব্যবসায়ীর কাছে জিজ্ঞেস করা হবে। যদি তারা বিক্রয় করার পরামর্শ দেয়, তবে বিক্রয় করা হবে, না হয় রেখে দেয়া হবে।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ ব্যবসায়ী শরীকী কারবারের মালে ব্যবসা আরম্ভ করার পর পুঁজি বিনিয়োগকারী তার পূর্ণ মাল মুনাফাসহ তলব করল। উত্তরে ব্যবসায়ী বলল, আমার নিকট পূর্ণ মালই জমা রয়েছে। অতঃপর যখন মাল ফেরত নেয়া আরম্ভ হল তখন ব্যবসায়ী বলল, আমার নিকট কিছু মাল নষ্ট হয়ে গিয়েছে, আমি প্রথমে এজন্য বলেছিলাম যেন মাল আমার কাছে থাকতে দেয়া হয় তবে কোন প্রমাণ ব্যতীত ব্যবসায়ীর এই কথা বিশ্বাস করা হবে না। বরং তার পূর্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ফায়সালা দেয়া হবে।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ অনুরূপভাবে ব্যবসায়ী পুঁজি বিনিয়োগকারীকে বলল, সে এত লাভ করেছে। অতঃপর যখন পুঁজি বিনিয়োগকারী মূলধন ও লভ্যাংশ চাইল তখন বলতে লাগল লাভ হয়নি, মূলধন আমার হাতে রেখে দেয়ার উদ্দেশ্যে লাভের কথা বলেছি, তবে প্রমাণ ব্যতীত তার কথা বিশ্বাস করা হবে না। বরং পূর্ব স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ফায়সালা দেয়া হবে।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ যদি ব্যবসায়ী ব্যবসায়ে লাভ করে তখন পুঁজি বিনিয়োগকারী বলল, লাভের এত-তৃতীয়াংশ তোমার এবং দুই-তৃতীয়াংশ আমার নির্ধারিত ছিল। ব্যবসায়ী বলল, না বরং দুই-তৃতীয়াংশ আমার আর এক-তৃতীয়াংশ তোমার নির্ধারিত করা হয়েছিল। তবে ব্যবসায়ীর কথা কসম সহকারে মেনে নেয়া হবে। কিন্তু এটা যদি দেশ প্রথার বিরুদ্ধে হয় তবে প্রথানুযায়ী লাভ বন্টনের ব্যবস্থা করা হবে।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে একশত দীনার শরীকী কারবারের জন্য দিল। সে উহা দ্বারা মাল খরিদ করল। যখন বিক্রেতাকে মালের মূল্য দিতে লাগল তখন বুঝা গেল ঐ দীনার চুরি হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় অর্থ বিনিয়োগকারী বলল, এই মাল বিক্রয় করে ফেল। যদি উহাতে লাভ হয়, তবে উহা আমার আর যদি ক্ষতি হয়, তবে সে জন্য তুমি দায়ী, কেননা তুমি আমার অর্থ নষ্ট করেছ। কিন্তু ব্যবসায়ী বলল, তুমি এই মালের মূল্য আদায় করে দাও, কেননা আমি এই মাল তোমার অর্থ দ্বারা খরিদ করেছি।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ এই অবস্থায় ক্রেতা ব্যবসায়ীকে বলা হবে তুমি এই মালের মূল্য বিক্রেতাকে আদায় করে দাও এবং অর্থ বিনিয়োগকারীকে বলা হবে যদি তোমার সম্মতি হয় তবে ব্যবসায়ীকে একশত দীনার আরও প্রদান কর যেন শরীকী কারবার বহাল থাকে, না হয় এই মালের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। যদি পুঁজি বা বিনিয়োগকারী একশত দীনার দেয়, তবে কারবার বহাল থাকবে, না হয় ঐ মাল ব্যবসায়ীর হয়ে যাবে। চুরি যাওয়ার কারণে অর্থ বিনিয়োগকারীর একশত দীনার বিনষ্ট হয়ে গেল।
মালিক (রহঃ) বলেনঃ যখন পুঁজি বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ী পৃথক হয়ে যায় (শরীকী কারবার বন্ধ হয়ে যায়), কিন্তু ব্যবসায়ীর নিকট ব্যবসায়ে মাল হতে কোন মাল যেমন পুরাতন মশক বা পুরাতন কাপড় ইত্যাদি থেকে যায়, যদি এ দ্রব্যগুলো নিতান্ত স্বল্প মূল্যের হয়ে থাকে তবে উহা ব্যবসায়ীরই থাকবে। এটা ফেরত দিতে হবে না। যদি এই দ্রব্যগুলো মূল্যবান হয় যেমন কোন জন্তু, উট বা ইয়ামনী মোটা কাপড়, তবে যদি পুঁজি বিনিয়োগকারী হতে মাফ করিয়ে নিয়া থাকে তবে তো ভাল, না হয় এটাও ফেরত দিতে হবে।