মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
ইবন রজব আল-হাম্বলী রহ. এর ‘লাতায়িফুল মা‘আরিফ’ অবলম্বনে রমযানের দায়িত্ব-কর্তব্য
লেখকঃ শাইখ যাইনুদ্দীন আব্দুর রহমান ইবন রজব আল-হাম্বলী রহ.
৬
পরিচ্ছেদ: তারাবীহ
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/113/6
তারাবীহর সালাত আদায় করা সুন্নাত। আর তা জামা‘আতে আদায় করা উত্তম। সাহাবীদের জামা‘আতের সাথে এ সালাত আদায় সর্বজনবিদিত এবং সর্বযুগের উম্মত এ মতটি গ্রহণ করেছেন।
....
শাইখ তাকীউদ্দীন রহ. বলেছেন: কেউ ইচ্ছা করলে বিশ রাকাত তারাবীহ আদায় করতে পারে, এটি হাম্বলী ও শাফে‘ঈ মাযহাবের প্রসিদ্ধ মতামত। আবার কেউ ছত্রিশ রাকাত আদায় করতে পারে, যা মালেকী মাযহাবের প্রসিদ্ধ মতামত। আবার কেউ এগারো বা তেরো রাকাতও আদায় করতে পারে। সবটিই উত্তম। তবে রাকাত সংখ্যা কম বা বেশি নির্ভর করে দীর্ঘ সময় ধরে তিলাওয়াত কম বা বেশির ওপর।
উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু উবাই ইবন কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর ইমামতিতে বিশ রাকাতের উপর একত্রিত করেছিলেন। সাহাবীদের কেউ কেউ এরচেয়ে কম বা বেশি করতেন। শরী‘আতে রাকাত সংখ্যা নির্ধারিত নেই।
অনেক ইমাম তারাবীহ সালাতে এত দ্রুত কুরআন তিলাওয়াত করেন যে তারা কি তিলাওয়াত করছেন কিছুই বুঝা যায় না, রুকু ও সিজদাও ধীরস্থিরতার সাথে আদায় করে না অথচ ধীরস্থিরতার সাথে রুকু-সাজদাহ করা সালাতের অন্যতম রুকন। সালাত এমনভাবে আদায় করা উচিৎ যাতে অন্তর আল্লাহর সামনে উপস্থিতি অনুভব করে, তিলাওয়াতকৃত আল্লাহর কালাম বুঝে উপদেশ গ্রহণ করা যায়। আর তাড়াহুড়া করলে এগুলো করা সম্ভবপর হয় না। অতএব, ধীরস্থিরতার সাথে রুকু-সাজদাহ আদায় করে ছোট কিরাত পড়া তাড়াহুড়া করে মাকরূহের সাথে দীর্ঘ কিরাত পড়ার চেয়ে উত্তম।
দীর্ঘ কিরাত ও প্রশান্তির সাথে তেরো রাকাত তারাবীহ আদায় করা মাকরূহসহ তাড়াহুড়া করে পড়ার চেয়ে উত্তম। কেননা সালাতের মূল ও আত্মা হলো আল্লাহর সামনে অন্তরসহ উপস্থিত হওয়া। অনেক সময় অল্প কাজ বেশি কাজের চেয়ে উত্তম। তাছাড়া তারতীলসহ কিরাত তিলাওয়াত বৈধ দ্রুততার সাথে কিরাত তিলাওয়াতের চেয়ে উত্তম। আর কিরাতের বৈধ সীমা হলো তিলাওয়াতের সময় কোনো হরফ বাদ পড়ে না যাওয়া। তাড়াহুড়ার কারণে কোনো হরফ বাদ পড়ে গেলে তার তিলাওয়াত জায়েয হবে না; বরং এ ধরণের তিলাওয়াত করা নিষেধ। কিন্তু স্পষ্টকরে কিরাত পড়লে ইমামের পিছনের মুসল্লীগণ যদি সে কিরাত দ্বারা উপকৃত হতে পারে তাহলে ততটুকু দ্রুত পড়া বৈধ।
যারা কুরআনের অর্থ না বুঝে কুরআন পড়ে তাদেরকে আল্লাহ নিন্দা করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:
“আর তাদের মধ্যে আছে নিরক্ষর, তারা মিথ্যা আকাঙ্খা ছাড়া কিতাবের কোনো জ্ঞান রাখে না”। [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ৭৮] অর্থাৎ অর্থ না বুঝে তিলাওয়াত করা। কুরআন নাযিলের উদ্দেশ্যই হলো কুরআন বুঝা এবং সে অনুযায়ী আমল করা। শুধু তিলাওয়াতের জন্য কুরআন নাযিল হয় নি।
সুন্দর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত মুস্তাহাব। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَتَغَنَّ بِالقُرْآنِ» .
“যে ব্যক্তি সুন্দর আওয়াজে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৭৫২৭; আবু দাউদ, হাদীস নং ১৪৬৯।]
ইমাম যুহুরী রহ. রমযান আগমন করলে বলতেন, এটি কুরআন তিলাওয়াত ও মানুষকে খাদ্য খাওয়ানোর মাস।
ইবন আব্দুল হাকাম রহ. বলেন, রমযান মাস আসলে ইমাম মালিক রহ. হাদীস পাঠ ও আহলে ইলমের মসলিস বন্ধ দিয়ে মুসহাফ থেকে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। আব্দুর রাযযাক রহ. বলেন, রমযান মাস আগমন করলে ইমাম সাওরী রহ. অন্যান্য সমস্ত (নফল) ইবাদত বাদ দিয়ে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। সুফইয়ান রহ. বলেন, যায়েদ আল-ইয়াম্মী রহ. রমযান আসলে কুরআন তিলাওয়াত করতেন এবং তার সাথীদেরকেও কুরআন তিলাওয়াতে একত্রিত করতেন। সৎপূর্বসূরীগণ রমযান আসলে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। তাদের কেউ কেউ সাত দিনে, কেউ তিন দিনে, আবার কেউ দু’রাতে, কেউ আবার শেষ দশকের প্রতি রাতে কুরআন খতম করতেন। হাদীসে তিন দিনের কমে কুরআন খতমের যে নিষেধাজ্ঞা এসেছে তা নিয়মিতভাবে সর্বদা এভাবে খতম করা নিষেধ করা হয়েছে। অন্যদিকে সম্মানিত সময় যেমন রমযান মাসে, বিশেষ করে রমযানের রাতে কদরের রাত তালাশের উদ্দেশ্যে কুরআন তিলাওয়াত এবং মর্যাদাবান স্থানে উক্ত সময় ও স্থানকে কাজে লাগাতে বেশি পরিমাণ কুরআন তিলাওয়াত করা মুস্তাহাব। এটি ইমাম আহমাদ ও অন্যদের মতামত। এ মতানুযায়ীই অধিকাংশ আলেমের আমল দেখা যায়। আবু উমামা আল-বাহেলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি,
“যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার কিতাবের একটি হরফ পাঠ করবে তার জন্য একটি নেকী, আর একটি নেকী দশ গুণ হবে। আমি এ কথা বলব না যে, আলিফ লাম মীম একটি হরফ, বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ।” [তিরমিযী, হাদীস নং ২৯১০।] তাহলে রমযান মাসে এ আমলের সাওয়াব কত বেশি গুণ বর্ধিত হবে তা সহজেই অনুমেয়।
ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
“(অতঃপর সে পড়তে থাকবে) এবং প্রতিটি আয়াত পড়ার সাথে সাথে একটি স্তর অতিক্রম করবে। এভাবে সে তার সাথে থাকা শেষ আয়াতটি পর্যন্ত পড়বে ও স্তর অতিক্রম করবে।” [ইবন মাজাহ, হাদীস নং ৩৭৮০; আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন; মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১১৩৬০।]
জেনে রাখুন, মুমিনের জন্য রমযান মাসে দু’টি জিহাদ একত্রিত হয়। একটি দিনের বেলায় সাওম পালন করে নফসের বিরুদ্ধে জিহাদ এবং অন্যটি রাতের বেলায় সালাত আদায়। যে ব্যক্তির মধ্যে এ দু’টি জিহাদ একত্রিত হবে, এ দু’টির হক আদায় করবে এবং ধৈর্যধারণ করবে সে-ই অপরিসীম পরিপূর্ণ সাওয়াব পাবে।
কা‘ব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, কিয়ামতের দিন একজন আহ্বানকারী ডেকে বলবেন, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য রয়েছে তার কর্মের প্রতিদান ও আরও বেশি। তবে আহলে কুরআন ও সিয়াম পালনকারীগণ ব্যতীত। তাদের প্রতিদান বে-হিসাব। কুরআন ও সিয়াম আল্লাহর কাছে ব্যক্তির জন্য শাফা‘আত করবে।
.....
সাওম যে ব্যক্তিকে সমস্ত হারাম কাজ থেকে বিরত রেখেছে তার জন্য সাওম কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে শাফা‘আত করবে এবং বলবে, হে আমার রব! আমি তাকে দিনের বেলায় প্রবৃত্তির কামনা থেকে বিরত রেখেছি, সুতরাং আমার শাফা‘আত গ্রহণ করুন। কিন্তু হারাম কাজে লিপ্ত হওয়ার কারণে যার সাওম নষ্ট হয়ে গেছে সাওম তার বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করবে এবং বলবে, হে আল্লাহ আমাকে যেভাবে ধ্বংস করেছে তুমিও তাকে সেভাবে ধ্বংস করুন।
কোন এক সৎপূর্বসূরী বলেছেন: কিয়ামতের দিন যখন মুমিনকে উপস্থিত করা হবে তখন আল্লাহ ফিরিশতাকে বলবেন, তার মাথার ঘ্রাণ দেখ। সে বলবে, তার মাথায় কুরআনের ঘ্রাণ পাচ্ছি। অতঃপর বলা হবে, তার ক্বলবের ঘ্রাণ দেখ। ফিরিশতা বলবে, তার ক্বলবে সিয়ামের ঘ্রাণ পাচ্ছি। আবার বলা হবে, তার পায়ের ঘ্রাণ নাও। সে বলবে, তার পায়ে রাত জেগে সালাতের ঘ্রাণ পাচ্ছি। তখন আল্লাহ বলবেন, সে (আমার বান্দা) নিজেকে হিফাযত করেছে, আল্লাহও তাকে হিফাযত করেছেন। এমনিভাবে কুরআন যাকে রাতে ঘুমানো থেকে বিরত রেখেছে কিয়ামতের দিনে তার জন্য শাফা‘আত করবে। সুতরাং যে ব্যক্তি কুরআন তিলাওয়াত করেছে এবং রাতের বেলায় সালাতে দাঁড়িয়ে কুরআন পড়েছে সে-ই যথার্থভাবে কুরআনের হক আদায় করেছে। ফলে কুরআন তার জন্য শাফা‘আত করবে। একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে শুরাইহ আল-হাদরামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর আলোচনা হলো। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
« ذلك لَا يَتَوَسَّدُ الْقُرْآنَ» .
“সে কুরআনকে বালিশ বানায় না (অর্থাৎ সে কুরআনের উপর ঘুমায় না যাতে তা বালিশের মতো হয়ে যায়, বরং সে কুরআন না পড়ে ঘুমায় না এবং যত্নের সঙ্গে রাত্রে কুরআন পড়ে থাকে)।” [সুনান নাসাঈ, হাদীস নং ১৭৮৩। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহুল ইসনাদ বলেছেন।]
ইমাম আহমাদ বুরাইদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেন,
“কিয়ামতের দিন কুরআন ওয়ালা যখন সে কবর থেকে উত্থিত হবে তখন কুরআন তার সাথে ফ্যাকাশে রঙ্গ অবস্থায় মিলিত হয়ে বলবে, তুমি কি আমাকে চেন? সে বলবে, আমি তো আপনাকে চিনি না। তখন কুরআন বলবে, আমি তোমার সাথী কুরআন যে তোমাকে দিনের বেলায় (দ্বিপ্রহরে) তৃষ্ণার্ত রেখেছে এবং রাতের বেলায় জাগিয়ে রেখেছে। আজ প্রত্যেক ব্যক্তি তার পশ্চাতে পাঠানো ফলাফল পাবে। আজ তোমার ব্যবসার ফলাফল গ্রহণ করো। তখন তার ডানে রাজত্ব ও বামে জান্নাতুল খুলদ দেওয়া হবে। তার মাথায় সম্মানের মুকুট পরিয়ে দেওয়া হবে এবং তার পিতামাতাকে দু’টি চাদর পরিধান করানো হবে যার মূল্য দুনিয়াবাসীরা দিতে পারবে না। তারা বলবেন, আমাদেরকে কিসের বিনিময়ে এ চাদর পরিধান করা হলো? তাদেরকে বলা হবে, আপনাদের সন্তানকে কুরআন শিক্ষা দেওয়ার জন্য। অতঃপর তাকে (কুরআনধারী) বলা হবে, তুমি কুরআন পড়তে থাকো আর জান্নাতের এক একটি স্তর ও রুমে উঠতে থাকো। সে যতক্ষণ কুরআন পড়তে থাকবে ততক্ষন উপরে উঠতে থাকবে, চাই সে দ্রুত তিলাওয়াত করুক বা তারতীলের সাথে ধীরে ধীরে তিলাওয়াত করুক।” [মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ২২৯৫০। শু‘আইব আরনাঊত হাদীসটির সনদকে মুতাবা‘আত ও শাওয়াহেদের ভিত্তিকে হাসান বলেছেন।]
...
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, কুরআনের ধারক-বাহককে যেন রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন তাকে বিশেষভাবে চেনা যায়, দিনে মানুষ যখন কর্মব্যস্ত থাকে তখন তাকে বিশেষভাবে চেনা যায়, মানুষ যখন বিভিন্ন কথাবার্তায় মগ্ন থাকে তখন তাকে চুপ থাকার কারণে চেনা যায়, মানুষ যখন খুশিতে মত্ত থাকে তখন তাকে চিন্তিত হওয়ার মাধ্যমে চেনা যায়।
উহাইব রহ. বলেন, এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলো, আপনি কেন ঘুমান না? সে বলল, কুরআনের বিস্ময় আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছে।
একলোক তার বন্ধুর সাথে দুমাস একত্রে থাকল; কিন্তু তাকে কখনও ঘুমাতে দেখেনি। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনাকে কখনও ঘুমাতে দেখি না কেন? তিনি বললেন, কুরআনের বিস্ময় আমার ঘুম কেড়ে নিয়েছে। কুরআনে এক বিস্ময় থেকে বের হলেই আরেক বিস্ময়ে পড়ে যাই (ফলে আর ঘুমাতে পারি না)।
আহমাদ ইবন আবিল-হাওয়ারী রহ. বলেন, আমি যখন কুরআন পড়ি তখন এক আয়াত এক আয়াত করে এতে গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করি। তখন আমার জ্ঞান হয়রান হয়ে যায়। আমি কুরআনের হাফিযদের ব্যাপারে আশ্চর্য হয়ে যাই কিভাবে তাদের ঘুম আসে বা তারা কিভাবে দুনিয়ার কাজ-কর্মে ব্যস্ত হয়ে যায় অথচ তারা কুরআন তিলাওয়াত করে? তারা যদি কুরআন অনুধাবন করত, কুরআনের হক যথাযথ বুঝত, এর স্বাদ পেত এবং এর দ্বারা মুনাজাত করত তাহলে আল্লাহ তাদেরকে (কুরআন বুঝার) যে নি‘আমত দিয়েছেন সে আনন্দে ঘুম চলে যেত।
অন্যদিকে যার কাছে কুরআন আছে; কিন্তু সে কুরআন ছেড়ে রাতের বেলায় শুধু ঘুমিয়েছে এবং দিনের বেলায় কুরআন অনুযায়ী আমল করে নি, কিয়ামতের দিন কুরআন তার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়াবে এবং সে তার নষ্টকৃত অধিকার চাইবে।
ইমাম আহমাদ রহ. সামুরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে দেখলেন,
“একলোক চিৎ হয়ে শুয়ে আছে আর আরেক লোক হাতুড়ি বা পাথর দ্বারা তার মাথায় সজোরে আঘাত করছে, এতে পাথর তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিচ্ছে। এভাবে তার মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ হলে আবার তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আনা হয়। এভাবে আবার আগের মতোই করা হয়। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, এ ব্যক্তিকে আল্লাহ কুরআন দান করেছিলেন, কিন্তু সে কুরআন না পড়ে রাতে ঘুমিয়ে থাকত আর দিনের বেলায় সে অনুযায়ী আমল করত না। আপনি তাকে যেভাবে দেখেছেন সেভাবে কিয়ামত পর্যন্ত তাকে শাস্তি দেওয়া হবে”। [মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ২০১৬৫, শু‘আইব আরনাঊত হাদীসটিকে শাইখাইনের শর্তানুযায়ী সহীহ বলেছেন।]
আমর ইবন শু‘আইব তার পিতা থেকে, তিনি তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“কিয়ামতের দিন কুরআনকে মানুষের আকৃতিতে ব্যক্তির সামনে উপস্থিত করা হবে। অতঃপর ঐ ব্যক্তির সামনে উপস্থিত করা হবে যে কুরআন শিক্ষা করে কুরআনের বিপরীত আমল করেছে। তখন তার প্রতিপক্ষ হয়ে কুরআন আল্লাহর কাছে বলবে, হে আমার রব! আপনি আমাকে অমুকের দ্বারা বহন করিয়েছেন; কিন্তু সে অত্যন্ত খারাপ বহনকারী ছিল। সে আমার সীমালঙ্ঘন করেছে, আমার ফরযসমূহ নষ্ট করেছে, আমার অবাধ্যতায় লিপ্ত হয়েছে, আমার আনুগত্য বাদ দিয়েছে। এভাবে সে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পর অভিযোগ দিতেই থাকবে। এমনকি তাকে (কুরআনকে) বলা হবে, তাহলে উক্ত কুরআন ধারণকারীর ফয়সালা তোমাকেই দিলাম। তখন কুরআন তার হাত ধরে টেনে নিয়ে নাকেসা খত দিয়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। অন্যদিকে কুরআন ধারণকারী সৎ ব্যক্তির কাছে কুরআনকে উপস্থিত করা হবে যে কুরআনের আদেশ মান্য করেছে। তখন কুরআন তার পক্ষে সাক্ষী হয়ে বলবে, হে আমার রব! আপনি আমাকে এ ব্যক্তির মাধ্যমে ধারণ করিয়েছেন, সে উত্তম ধারণকারী ছিল। সে আমার সীমারেখা সংরক্ষণ করেছে, আমার ফরয অনুযায়ী আমল করেছে, আমার অবাধ্যতা থেকে বিরত থেকেছে, আমার অনুসরণ করেছে, এভাবে তার পক্ষে সাক্ষ্য দিতে থাকবে, এমনকি তাকে (কুরআনকে) বলা হবে, তার সমস্ত ব্যাপার তোমার ওপর ন্যস্ত। তখন সে উক্ত কুরআন ধারণকারীর হাত ধরবে, তাকে জান্নাতের রেশমী কাপড় পরিধান করাবে, তার মাথায় রাজ-মুকুট পরিধান করাবে এবং তাকে মদের কাপ থেকে শরাব পান করাবে।” [মুসান্নাফ ইবন আবু শাইবা, হাদীস নং ৩০০৪৪; আল-মাতালিবুল ‘আলিয়্যাহ বিযাওয়ায়িদিল মাসানিদিস সামানিয়্যাহ, ইবন হাজার আসকালালী, ১৪/৩৮২, হাদীস নং ৩৪৯১, ইবন হাজার রহ. হাদীসের সনদটিকে হাসান বলেছেন।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/113/6
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।