HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইবন রজব আল-হাম্বলী রহ. এর ‘লাতায়িফুল মা‘আরিফ’ অবলম্বনে রমযানের দায়িত্ব-কর্তব্য

লেখকঃ শাইখ যাইনুদ্দীন আব্দুর রহমান ইবন রজব আল-হাম্বলী রহ.

পরিচ্ছেদ: রমযানের মধ্য দশদিন
আবু সা‘ঈদ খুদুরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

«كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الْوُسُطَ مِنْ رَمَضَانَ .

“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমযানের মধ্য দশ দিন (১১-২০) ই‘তিকাফ করেছেন।” [মুয়াত্তা মালিক, ১/৩১৯, হাদীস নং ৯; মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১১০৩৪, শু‘আইব আরনাঊত হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন; সহীহ ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ২১৭১।] এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাইলাতুল কদরের তালাশে রমযানের মাঝের দশদিন সাওম পালন করেছেন। অন্য বর্ণনায় এসেছে,

«أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اعْتَكَفَ الْعَشْرَ الْأُوَلَ مِنْ رَمَضَانَ، ثُمَّ اعْتَكَفَ الْعَشْرَ الْوَسَط» ثم قال : «ثُمَّ أَتَيْتُ، فَقِيلَ لِي : إِنَّهَا فِي الْعَشْرِ الْأَوَاخِرِ، فَمَنْ أَحَبَّ مِنْكُمْ أَنْ يَعْتَكِفَ فَلْيَعْتَكِفْ " فَاعْتَكَفَ النَّاسُ معه» .

“রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (লাইলাতুল কদরের তালাশে) রমযানের প্রথম দশদিন ই‘তিকাফ করেছেন। অতঃপর মধ্যদশ দিন ই‘তিকাফ করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি লাইলাতুল কদরের তালাশে ই‘তিকাফ করতে এসেছি। আমাকে বলা হলো, লাইলাতুল কদর রমযানের শেষ দশকে। অতএব, কেউ (এ দশদিন) ই‘তিকাফ করতে চাইলে সে ই‘তিকাফ করতে পারে। এর ফলে লোকজন তাঁর সাথে ই‘তিকাফ করল।” [সহীহ ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ২১৭১; মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১১৭০৪, শু‘আইব আরনাঊত হাদীসটিকে শায়খাইনের শর্তানুযায়ী সহীহ বলেছেন।]

রমযানের শেষ অর্ধেকে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে নির্দেশ এসেছে। আব্দুল্লাহ ইবন উনাইস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তিনি বলেন,

«إِنِّي رَأَيْتُهَا فَأُنْسِيتُهَا , فَتَحَرَّهَا فِي النِّصْفِ الْآخَرِ» .

“আমি লাইলাতুল কদর দেখেছি, অতঃপর আমাকে তা ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতএব, তোমরা রমযানের শেষ অর্ধেকে তালাশ করো”। [মু‘জাম কাবীর, তাবরানী, ১৩/১৪১; শরহে মা‘আনিল আসার, ৩/৮৮।] দিন-রাতের সব সম্মানিত সময়ের শেষার্ধ প্রথমার্ধের চেয়ে উত্তম।

আর দ্বিতীয়ত: আবু দাউদে ইবন মাস‘ঊদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে মারফু‘ সূত্রে বর্ণিত,

«اطْلُبُوهَا لَيْلَةَ سَبْعَ عَشْرَةَ مِنْ رَمَضَانَ» .

“রমযানের সতের তারিখ রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করো”। [আবু দাউদ, হাদীস নং ১৩৮৪, আলবানী রহ. হাদীসটিকে দ‘ঈফ বলেছেন। জামে‘উল উসূল, ৯/২৫৫, মুহাক্কিক আইমান সালিহ শা‘বান হাদীসের সনদটিকে হাসান বলেছেন; তাছাড়া শু‘আইবও আরনাঊত হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।] আলিমগণ বলেছেন: লাইলাতুল কদরের দিনের সকাল বদরের দিনের সকালের মতোই। আর সীরাত ও মাগাযী বিশেষজ্ঞদের প্রসিদ্ধ মতানুসারে বদরের রাত ছিল সতেরোই রমযান এবং এ দিনটি জুমু‘আর দিন ছিল। যায়িদ ইবন সাবিত রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সতেরোই রমযানের মত অন্য রাতে এত বেশি জেগে থাকতেন না। তিনি বলতেন, আল্লাহ বদরের দিন সকালে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য স্পষ্ট করেছেন এবং কাফির নেতাদেরকে সেদিন সকালে চরমভাবে লাঞ্ছিত করেছেন।

ইমাম আহমাদ মদীনাবাসীদের থেকে বর্ণনা করেন, লাইলাতুল কদর সতেরো রমযান তালাশ করা হয়।

সতের তারিখের সবচেয়ে বিশুদ্ধ ঘটনা হলো, এটি বদরের রাত, এ রাতের সকাল হলো ইয়াওমুল ফুরকান তথা সত্য-মিথ্যা পার্থক্যকারী দিন। এটিকে ইয়াওমুল ফুরকান এ কারণে বলা হয় যে, আল্লাহ এ দিনে সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য নিরূপণ করেছেন, সত্য ও হকপন্থীদেরকে স্পষ্ট করেছেন এবং তাদেরকে বাতিলের ওপর বিজয় দান করেছেন, আল্লাহর কালেমা ও তাওহীদকে বুলন্দ করেছেন এবং তাঁর শত্রু মুশরিক ও আহলে কিতাবীদেরকে অপমানিত করেছেন।

...

কদরের রাতে ফিরিশতাগণ জমিনে ছড়িয়ে পড়েন। ফলে শয়তানের ক্ষমতা খর্ব হয়ে যায়। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿تَنَزَّلُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ وَٱلرُّوحُ فِيهَا بِإِذۡنِ رَبِّهِم مِّن كُلِّ أَمۡرٖ ٤ سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ٥﴾ [ القدر : 4 ، ٥ ]

“সে রাতে ফিরিশতারা ও রূহ (জিবরীল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত।” [সূরা আল-কাদর, আয়াত: ৪-৫]

মুসনাদে আহমাদে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«إِنَّ الْمَلَائِكَةَ تِلْكَ اللَّيْلَةَ فِي الْأَرْضِ أَكْثَرُ مِنْ عَدَدِ الْحَصَى» .

“সে রাতে (কদরের) পৃথিবীতে নাযিলকৃত ফিরিশতার সংখ্যা জমিনে বিস্তৃত পাথর কণার চেয়েও অধিক।” [মুসনাদ আহমাদ, হাদীস নং ১০৭৩৪, শু‘আইব আরনাঊত হাদীসটিকে হাসানের সম্ভাবনা বলেছেন। মাজমা‘উয যাওয়ায়েদে (৩/১৭৬) হাইসামী রহ. বলেছেন, হাদীসটি আহমাদ, বাযযার ও তারবানী বর্ণনা করেছেন এবং তাদের বর্ণনাকারীগণ সিকাহ। আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন, সহীহহুল জামে‘ আস-সাগীর, ২/৯৬১।]

জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«لَا يَخْرُجُ شَيْطَانُهَا حَتَّى يُضِيءَ فَجْرُهَا» .

“কদরের রাতে ফজর উদিত না হওয়া পর্যন্ত শয়তান বের হয় না।” [সহীহ ইবন খুযাইমা, হাদীস নং ২১৯০, আলবানী রহ. হাদীসটিকে ২১৯২ ও ২১৯৩ নং শাওয়াহেদের ভিত্তিতে সহীহ বলেছেন। শু‘আইব আরনাঊত হাদীসটিকে শাওয়াহেদের ভিত্তিতে সহীহ বলেছেন।]

...

ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সময় শয়তানও উদিত হয়; তবে কদরের দিন ব্যতীত। আর সেদিন সূর্য উদিত হয় তবে এতে আলোকরশ্মি থাকে না। মুজাহিদ ( سلامٌ هي ) এর ব্যাখ্যায় বলেন, এ সময় কোন রোগ-ব্যাধি থাকবে না, শয়তান কোন কাজ করতে সক্ষম হবে না। তিনি আরও বলেন, কদরের রাত শান্তির রাত, এ রাতে কোন দুর্ঘটনা ঘটে না এবং শয়তানও প্রেরিত হয় না। তিনি আরও বলেন, এ রাত নিরাপদ, শয়তান এ রাতে খারাপ কাজ করতে পারে না এবং ক্ষতিকর কিছু সংঘটিত হয় না। ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, সে রাতে বিতাড়িত জীন শয়তানকে শিকলে আবদ্ধ করা হয়, খবিশ শয়তানদেরকে আবদ্ধ করা হয়, আসমানে দরজা খুলে দেওয়া হয়, সকল তাওবাকারীদের থেকে তাওবা কবুল করা হয়। এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿سَلَٰمٌ هِيَ حَتَّىٰ مَطۡلَعِ ٱلۡفَجۡرِ٥﴾ [ القدر : ٥ ]

“শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত”। [সূরা আল-কাদর, আয়াত: ৪-৫]

হে মুসলিম! সুসংবাদ গ্রহণ করো। তোমাদের জন্য এ মাসে জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেওয়া হয়েছে। জান্নাতের হাওয়া মুমিনের অন্তরে বইছে। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শয়তান ও তার দোসরদের পায়ে শিকল লাগানো হয়েছে। সুতরাং তাওহীদের বাণী দিয়ে শয়তানের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে চূর্ণ বিচূর্ণ করে দাও। সে ভাঙ্গার এ ব্যথা প্রতিটি ফযিলতপূর্ণ মওসুমে ভোগ করতে থাকবে। সে এ মাসে মানুষের জন্য ধ্বংস কামনা করে। কেননা সে দেখে এ মাসে আল্লাহ রহমাত ও মাগফিরাত নাযিল করেন। এ মাসে রহমানের দল বিজয় লাভ করে আর শয়তানের দল পরাজিত হয়।

হে আল্লাহর বান্দা! রমযান মাসের প্রায় অর্ধেক শেষ হয়ে যাচ্ছে। তোমাদের মধ্যে কে নিজের আত্মার মুহাসাবা করেছ? কে এ মাসের হক আদায় করেছ? মনে রেখ, এ মাস কিন্তু শেষ হতে চলছে। অতএব, আমলের পরিমাণ বাড়িয়ে দাও। তুমি তো এ মাসে অবস্থান করছ অথচ মাস তো শেষ হয়ে যাচ্ছে। সব মাসের পরে আরেকটি মাস আসবে; কিন্তু রমযানের পরে কী আর রমযান পাওয়া যাবে?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন