HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামি আকিদার বৈশিষ্ট্যসমূহ

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

কিতাবের নাম/ লেখক/ অনুবাদক/ সম্পাদক
ইসলামি আকিদার বৈশিষ্ট্যসমূহ

সানাউল্লাহ নজির আহমদ

সম্পাদনা : ইকবাল হোসাইন মাসুম

ইসলামি আকিদার বৈশিষ্ট্যসমূহ
ইসলামী আকিদা-ই একমাত্র আকিদা, যা আল্লাহ তাআলা মানব জাতি হিসেবে আমাদের জন্য পছন্দ করেছেন। মূলত: এর দ্বারা তিনি আমাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন। আমাদের করেছেন ধন্য। ইরশাদ হচ্ছে :

الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الْإِسْلَامَ دِيْنًا . ﴿المائدة :৩﴾

‘‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের উপর আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম। এবং দ্বীন হিসেবে ইসলামকে তোমাদের জন্য পছন্দ করলাম।’’ [আল-মায়েদা : ৩]

আল্লাহ প্রদত্ত্ব বিধান বলেই ইসলাম তার সূচনা লগ্ন থেকে মানব জাতির জীবনে কল্যাণ ও সফলতার স্বাক্ষর রেখে আসছে। একমাত্র এ ধর্মকেই তিনি আমাদের জন্য মনোনীত করেছেন। যাতে আমরা দুনিয়া-আখেরাত উভয় জগতের কল্যাণ অর্জন করে ভাগ্যবান হতে পারি। অর্জন করতে পারি খিলাফতের সে যোগ্যতা, যার জন্য তিনি আমাদের সৃজন করেছেন। ইরশাদ হচ্ছে :

وَإِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلَائِكَةِ إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً . َ ﴿البقرة :৩০﴾

‘‘স্মরণ কর- যখন তোমার রব ফেরেশতাদের বলেছিলেন, আমি দুনিয়াতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব।’’ [আল-বাকারা : ৩০]

আরো অর্জন করতে পারি সে যোগ্যতা, যার মাধ্যমে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী দুনিয়া আবাদ করার দায়িত্ব পালন করতে পারব। ইরশাদ হচ্ছে :

هُوَ أَنْشَأَكُمْ مِنَ الْأَرْضِ وَاسْتَعْمَرَكُمْ فِيهَا .﴿৬১﴾

‘‘একমাত্র তিনিই তোমাদেরকে জমিন হতে সৃষ্টি করেছেন এবং তন্মধ্যে বসতি দান করেছেন।’’ [সুরায়ে হুদ : ৬১]

সব কিছুই যেন হয় তাঁর ইবাদত-আনুগত্য ও বর্ণিত বিধি-নিষেধের অনুসরণ করে। মূলত তিনি এ জন্যই সৃষ্টি করেছেন মানব জাতি। ইরশাদ হচ্ছে :

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ ﴿الذاريات :৫৬﴾

‘‘আমি মানব ও জ্বিন জাতি একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।’’ [জারিয়াত : ৫৬]

ইসলামি আকিদা সম্পর্কে এ সংক্ষিপ্ত উপাস্থাপনা থেকে আমরা একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, ইসলামি আকিদা সার্বজনীন, পরিপূর্ণ, ভারসাম্যময় ও সমৃদ্ধশালী একটি আকিদা বা ধর্ম বিশ্বাস। নিম্নে আমরা এ নিয়েই আলোচনা করার প্রায়াস পাব।

প্রথমত : ইসলামি আকিদার ব্যাপকতা :
ইসলামি আকিদা মানব জাতির বাহ্যিক-আভ্যন্তরীণ বৈশিষ্ট্যের সাথে সম্পূর্ণভাবে সামঞ্জস্যশীল ও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। কি শরীর, বিবেক, আত্মা; কি আখলাক, চিন্তা, অনুভুতি; কি তার দুনিয়া ও আখেরাত সবার সাথেই ইসলামি আকিদার সম্পর্ক বিদ্যমান।

মুদ্দা কথা মানবজগত এবং মানব সংক্রান্ত কোন বিষয় নেই, যা ইসলামি আকিদা থেকে বিচ্ছিন্ন বা ইসলামি আকিদা তার থেকে ভিন্ন। এ আকিদা মানুষের প্রতিটি মুহূর্ত, সম্পাদিত কর্ম ও অন্তরে বিদ্যমান আবেগ-অনুভূতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

পরিবর্তনশীল মানব জীবনের বিভিন্ন অবস্থাতেও এ আকিদার সফল বিচরণ লক্ষ্যণীয়। মানুষের অবস্থার প্রতিটি ধাপ ও প্রত্যেকটি স্তর ইসলামি আকিদার সাথে সম্পর্ক যুক্ত। যেমন:

১- ইসলামি আকিদা : আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস, শেষ দিবসের প্রতি বিশ্বাস, ফেরেশতা, নবি-রাসূল, আসমানি কিতাব এবং ভাল-মন্দের তাকদিরের সমন্বিত বিশ্বাস-ই হচ্ছে ইসলামি আকিদা।

২- ইসলামি আমল : ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জগতের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ আমল-ই হচ্ছে ইসলামি আমল।

৩- ইসলাম মানব প্রকৃতির অনুকুল : মানুষের বাহ্যিক আচার-আচরণ, বিবেকের চিন্তা এবং আত্মার উপলব্ধিও ইসলামে ব্যাপকভাবে আদ্রিত।

৪- ইসলাম ঐক্যের প্রতিক : ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যক্তি, সমাজ, জাতি ও দেশ সবই এক ও অভিন্ন।

৫- ইসলাম পারস্পরিক সম্পর্কের সুদৃঢ় বন্ধন : নিজ সত্তা, আল্লাহ ও অন্য সবার সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের বিধানই হচ্ছে ইসলামি আকিদা। এতে পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন, মুসলমানদের নিজেদের মাঝে পারস্পরিক সম্পর্ক, মুসলমান-অমুসলমান সর্ম্পক এবং মানবজাতি ও বিশ্ব জাহানের সৃষ্টিকর্তার সাথে সম্পর্ক তৈরি করণ ও পরস্পরের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করণের মূলনীতি ও রূপরেখা বিদ্যমান রয়েছে।

ইসলামি আকিদার ন্যায় এত ব্যাপক ও উদার আরেকটি মতবাদের অস্তিত্ব অন্তত এ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না। প্রকৃত পক্ষে কেবলমাত্র ইসলামি আকিদাই অস্তিমান প্রতিটি বস্ত্ত ও তার বিধি-বিধানকে অন্তর্ভুক্ত করেছে ব্যাপক হারে।

দ্বিতীয়ত : ইসলামি আকিদার স্বয়ংসম্পূর্ণতার স্বরূপ :
ইসলামি আকিদা উল্লেখিত বিষয়ের কেবল সমন্বিত রূপই নয়, বরং আলোচিত ব্যাপকতার সাথে সাথে উক্ত বিষয়সমূহের মাঝে পারস্পরিক যোগসূত্রও বিদ্যমান রেখেছে যে, একটি অপরটি থেকে বিচ্ছিন্ন বা আলাদা কিছু নয়। এখানে আমরা প্রত্যেকটি বিষয় নিয়েই আলোচনা করবো, যেখানে প্রতিটি বিষয় ও অধ্যায়ের ব্যাপকতার দলিলের সাথে পারস্পরিক যোগসূত্রও দৃশ্যমান হবে।

১ - ইসলামি আকিদার পরিধি : পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ইসলামি আকিদা আল্লাহ, পরকাল দিবস, ফেরেশতা, কিতাব, নবি-রাসূল এবং ভাল-মন্দের তাকদিরের সমন্বিত রূপ। এর বিপরীতে কতক আকিদা আছে, যা সব বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত নয় বা সব বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে না। আবার তার অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো পাশাপাশি অবস্থান করলেও পরস্পরের মাঝে কোন যোগসূত্র বিদ্যমান থাকে না। প্রত্যেকটি বিষয় নিজস্ব আঙ্গিনায় বিচরণ করে ও পৃথক সীমানার মধ্যে আবদ্ধ থাকে। আমাদের আলোচিত ইসলামি আকিদা এমন নয়, বরং এর এক একটি বিষয় বা রুকন প্রত্যেকটি বিষয় বা রুকনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। চুড়ান্তরূপে সব ক’টি বিষয় মিলে একটি পরিপূর্ণ ও পূণাঙ্গ জীবন বিধানের স্বীকৃতরূপ, যা মানব জাতির জীবনে ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্য বয়ে আনতে বদ্ধপরিকর।

আরেকটু পরিষ্কারভাবে বলা যায় যে, ইসলামি আকিদার প্রতিটি রুকন, প্রথম ও প্রধান রুকন তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের সাথে যুক্ত, মূলত আল্লাহর প্রতি ঈমান-ই হচ্ছে ইসলামি আকিদার মূল ভিত্তি বা মেরুদন্ড। অতঃপর আকিদার অন্যান্য রুকন এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পূর্ণতা লাভ করে। উদাহরণত পরকালের বিশ্বাস, আল্লাহর ইনসাফ, হিকমত, আসমান-জমিন ও জীবন-মৃত্যুর বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অর্থাৎ পরকালের বিশ্বাস মানে আল্লাহর বিভিন্ন সিফাতের উপর বিশ্বাসের আরেকটি ধাপ। যদি আমরা এ শেষ দিবসে বিশ্বাস না রাখি, যেখানে প্রত্যেকের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করা হবে, প্রত্যেক বস্ত্ত তার মূল আকৃতিতে উপস্থিত হবে, তবে আমাদের ঈমানই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

ফেরেশতাদের উপর বিশ্বাস : ফেরেশতাদের উপর বিশ্বাস মূলত আল্লাহর কুদরত তথা আরেকটি সিফাতের উপরই বিশ্বাস। ইরশাদ হচ্ছে :

الْحَمْدُ لِلَّهِ فَاطِرِ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ جَاعِلِ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا أُولِي أَجْنِحَةٍ مَثْنَى وَثُلَاثَ وَرُبَاعَ يَزِيدُ فِي الْخَلْقِ مَا يَشَاءُ إِنَّ اللَّهَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ ﴿الفاطر :১﴾

‘‘সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আসমান ও জমিনের স্রষ্টা এবং ফেরেশতাগণকে করেছেন বার্তাবাহক-তারা দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার পাখাবিশিষ্ট। তিনি সৃষ্টির ভেতর যা ইচ্ছা যোগ করেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সক্ষম।’’ [আল-ফাতের : ১]

ফেরেশতাদের উপর বিশ্বাস আল্লাহর সে জীবন বিধানের উপর বিশ্বাসেরই নামান্তর, যার উপর তিনি আমাদের পরিচালিত করতে চান। কারণ তাদের মাধ্যমেই তিনি নবি-রসূলদের উপর বার্তা প্রেরণ করেন। তাই ফেরেশতাদের উপর ঈমান মূলত আলাদা কোন জিনিসের উপর ঈমান নয় বরং আল্লাহর উপর ঈমানের একটি অংশ এবং অন্যান রুকনের সাথে সম্পৃক্ত।

এ দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, ঈমানের একটি রুকন আরেকটি রুকনের সাথে সম্পৃক্ত, আবার সবকটি রুকন আল্লাহর প্রতি ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত। অতএব আসমানি কিতাবের উপর ঈমান আল্লাহর বিধানের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত, যা তিনি মানবজাতির ইহকালীন ও পরকালীন সাফল্যের জন্য রচনা করেছেন। তদ্রুপ নবিদের উপর ঈমানের সাথেও সম্পৃক্ত, কারণ তারাই ফেরেশতাদের মাধ্যমে প্রাপ্ত ওহীর বিধান আমাদের পর্যন্তপৌঁছিয়েছেন।

তাকদিরের উপর বিশ্বাসও আল্লাহর উপর বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত। কারণ তাকদিরের উপর বিশ্বাসের অর্থ হচ্ছে আল্লাহ তাআলাই একমাত্র এ বিশ্বসংসার নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনাকারী । ভাল-মন্দ ও কল্যাণ-অকল্যাণ একমাত্র তার থেকেই উৎসারিত হয়।

এ আলোচনার দ্বারা আমাদের কাছে স্পষ্ট হল যে, আরকানুল ঈমান তথা আকিদার প্রতিটি রুকন অপর রুকনের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

২. আমলের পরিধি : আগেই আলোচনা হয়েছে, ইসলামি আকিদা থেকে উৎসারিত আমল দুনিয়া-আখেরাত উভয় জগতের সাথে সম্পৃক্ত। এখানে আরেকটি কথা বলতে চাই যে, এ আকিদা দুনিয়া এবং আখেরাতের আমলের মাঝখানে কোন পাথর্ক্য সৃষ্টি করে না। একই আমল দুনিয়ার জন্য যেমন বিবেচ্য তদ্রুপ আখেরাতের জন্যও। অতএব ইসলামি আকিদার ভেতর কোন আমল শুধু দুনিয়া কিংবা শুধু আখেরাতের জন্য নির্দিষ্ট নয়। বরং প্রত্যেকটি আমল এক দৃষ্টিকোণ থেকে যেমন দুনিয়ার জন্য অপর দৃষ্টিকোণ থেকে আখেরাতের জন্য।

এমনকি যেসব আমল বাহ্যত শুধু আখেরাতের বলেই মনে হয়, সে আমলগুলোতেও বস্ত্তত পার্থিব স্বার্থ নিহিত রয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে :

إِنَّ الصَّلَاةَ تَنْهَى عَنِ الْفَحْشَاءِ وَالْمُنْكَرِ ﴿العنكبوت - ৪৫﴾

‘‘নিশ্চিয় নামাজ অশীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে।’’ [আনকাবুত : ৪৫]

অর্থাৎ সালাতের মধ্যে পার্থিব উপকারিতাও বিদ্যমান, যা বাহ্যত আখেরাতের আমল বলে প্রতিয়মান হয়। আরো ইরশাদ হচ্ছে :

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِنْ قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ﴿البقرة :১৮৩﴾

‘‘হে ঈমানদারগণ তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা (এ দুনিয়াতেই) মুত্তাকি হতে পার।’’ [আল-বাকারা : ১৮৩]

এমনিভাবে ইসলামি আকিদা থেকে উৎসারিত সকল আমলের মাঝে দুনিয়া এবং আখেরাত উভয় জগতের স্বার্থ বিদ্যমান রয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য : যে সব আমলকে আমরা শুধু পার্থিব বলে মনে করি, যেমন পানাহার, ঘুমানো, পোষাক পরিধান, বিবাহ-শাদি ও দুনিয়ার উন্নতি কল্পে অন্যন্য পার্থিব কর্ম ব্যস্ততা। সেগুলোও কিন্তু আখেরাতের আমল হিসেবে বিবেচ্য। তবে এর জন্য কিছু শর্তের অনুসরণ করা প্রয়োজন। অর্থাৎ আখেরাতের প্রতিদান পেতে হলে এ সব জিনিসের ক্ষেত্রে হালাল-হারাম এবং আল্লাহর নির্দেশের অনুসরণ করতে হবে। তবেই এ সব আমল ইসলামের দৃষ্টিতে মূল ইবাদত বলে গণ্য হবে। যেহেতু এতে আল্লাহর নির্দেশ পালন করা হয়েছে এবং তার সন্তুষ্টির জন্যই সম্পাদন করা হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে :

وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ ﴿الذاريات :৫৬﴾

‘‘একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি- মানব ও জ্বিনজাতি।’’ [জারিয়াত : ৫৬]

আরো ইরশাদ হচ্ছে :

قُلْ إِنَّنِي هَدَانِي رَبِّي إِلَى صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ دِينًا قِيَمًا مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ . قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ . لَا شَرِيكَ لَهُ ﴿الأنعام :১৬১-১৬৩﴾

‘‘বলুন, আমার নামাজ, আমার কুরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ, একমাত্র আল্লাহ তাআলার জন্য। তার কোন শরীক নেই।’’ [আল আনআম : ১৬২-১৬৩]

এমনিভাবে অন্যসব আমল ও ইসলামি আকিদা দুনিয়া ও আখেরাতের জন্য সমানভাবে বিবেচনা করে।

৩- মানব অবয়বের পরিধি- আমরা আগেই বলেছি- ইমলামি আকিদা মানবজাতির দৈহিক, মানসিক এবং অন্তরাত্মার সবটুকু সন্নিবেশিত করে। তাই বলে এগুলো পৃথক পৃথক নয়। তবে এতটুকু ঠিক : কখনো দৈহিক কর্মচঞ্চলতা প্রাধান্য পায়, যেমন খানা-পান করা ও স্ত্রী সহবাস করা। কখনো চিন্তাশক্তি প্রাধান্য পায়, যেমন- চিন্তার সময় কিংবা গভীর মনোযোগ দিয়ে কোন কর্ম বা বিষয় গবেষণার মুহূর্তে। কখনো আত্মার কর্ম প্রাধান্য পায়, যেমন- ইবাদতের সময় ইত্যাদি। কিন্তু ইসলাম এগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন বিবেচনা করে না। যেমন খানা-পান করা এবং স্ত্রী সহবাসের সময় যদি হালাল-হারাম বিবেচনা এবং আল্লাহর নাম স্মরণ করে তা সম্পন্ন করা হয়, তাহলে এর উপকারিতা শুধু শরীরে সীমাবদ্ধ থাকে না, পরকালীন ইবাদত বলেও গণ্য হয়। চিন্তার সময় সে খারাপ বিষয় থেকে বিরত থাকে। ভাল বিষয় নিয়ে চিন্তা করে। এবং আল্লাহকে ভয় করে, বিধায় এ চিন্তাও শুধু তার বোধশক্তিতে সীমাবদ্ধ থাকে না, ইবাদতে পরিগণিত হয়। মূল ইবাদতের সময়ও শরীর, বোধশক্তি এবং আত্মা সমানভাবে সক্রিয় থাকে। যেমন নামাজ- এতে শুধু আত্মার কর্মই নয়, বরং তাতে উঠা-বসা, রুকু-সেজদার মাধ্যমে যোগ হয় শরীর, কুরআনের আয়াতে ধ্যান নিমগ্নতার কারণে যোগ হয় আত্মা। রসূল সা. বলেন :

ليس لك من صلاتك إلا ما وعيت .

তুমি নামাজে যতটুকু যত্নশীল হবে, ততটুকুই উপকৃত হবে।

৪- সামাজিক পরিধি- ইতঃপূর্বে উল্লেখিত হয়েছে- ইসলামি আকিদা- ব্যক্তি, সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্র প্রভৃতিকে শামিল করে। এখানে আমরা বলতে চাই, ইসলামী আকিদা এ সব বিষয়কে আলাদা করে বিবেচনা করে না। এমন নয় ব্যক্তিকে এক ধাচে আর সমাজকে অন্য ধাচে পরিচালিত করে। বরং উভয়কে একই ধাচে পরিচালিত করে তবে উভয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্য ভিন্ন।

মানদন্ড বলতে- আল্লাহর প্রতি ঈমান, তাকওয়া এবং তাঁর নির্দেশিত বিধি-বিধান। এ মানদন্ডের আওতায় কিছু দায়িত্ব সম্পাদন করে ব্যক্তি, আর কিছু দায়িত্ব সম্পাদন করে সমাজ। কিন্তু উভয়ে এক মানদন্ড-এক দীক্ষায় পরিচালিত। অতএব আমরা বলতে পারি- বিভিন্ন জাতি-গোত্র বিক্ষিপ্ত-বিচ্ছিন্ন হলেও তাদের লক্ষ্য অভিন্ন। ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে আলাদা হলেও তাদের উদ্দেশ্য এক। ব্যক্তি-সমাজ, রাজা-প্রজা, ধনী-গরীব কেউ কারো প্রতিপক্ষ নয়। যেমনটি হয়ে আছে- জাহিলিয়্যাতপূর্ণ সমকালীন প্রাচ্য-পাশ্চাত্যে বরং বিশ্বের সর্বত্র। একদিকে অত্যাচারী শাসক অন্যদিকে অত্যাচারিত জনতা। একদিকে সংঘবদ্ধ জনতা অন্যদিকে নিঃসঙ্গ জননেতা।

তদ্রুপ জাতি ও রাষ্ট্র একত্রিত- এক আল্লাহর ইবাদত এবং তাঁর হুকুম অনুযায়ী সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে। অধিকন্তু এ বিষয়টি আকিদার মেরুদন্ডও বটে। ইরশাদ হচ্ছে :

وَمَنْ لَمْ يَحْكُمْ بِمَا أَنْزَلَ اللَّهُ فَأُولَئِكَ هُمُ الْكَافِرُونَ ﴿المائدة :৪৪﴾

‘‘যে আল্লাহর বিধান অনুযায়ী ফয়সালা করে না, সে কাফের।’’ [আল-মায়েদা : ৪৪]

আমর বিল মারুফ নাহি আনিল মুনকারের ব্যাপারেও জাতি-রাষ্ট্র সমান। অধিকন্তু এ বিষয়টি আকিদার আবেদনও বটে। ইরশাদ হচ্ছে :

كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنْكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ ﴿أل عمران :১১০﴾

‘‘তোমরা সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি। তোমাদেরকে মানবজাতির কল্যাণে বের করা হয়েছে। তোমরা কল্যাণের আদেশ করবে, অকল্যাণ হতে বিরত রাখবে। এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে।’’ [আলে ইমরান : ১১০]

অত্র আয়াতে সুস্পষ্টভাবে রাজা-প্রজা উভয়ের সহযোগিতা ও অভিন্নতা লক্ষণীয়।

৫- সম্পর্কের পরিধি- আমরা আগে বলে এসেছি- ইসলামি আকিদা : মানুষের নিজ আত্মার সাথে সম্পর্ক, আল্লাহর সাথে সম্পর্ক, পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদির সমন্বয়ে গঠিত। এ সমস্ত সম্পর্ক এক অক্ষে এসে একত্রিত হয়ে যায়। অর্থাৎ আল্লাহর উপর ঈমান এবং তাঁর ইবাদত। মানুষের সাথে আল্লাহর সম্পর্ক অর্থাৎ তাঁর উপর ঈমান আনা, তাঁর ইবাদত করা। নিজের নফসের সাথে সম্পর্কের মানে, তাকে সংশোধন করা, যা সম্পূর্ণ হয় আল্লাহর উপর ঈমান, ইবাদত এবং উভয়ের আবেদন তথা আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী চলার মাধ্যমে। পারস্পরিক সম্পর্ক পূর্ণতা পায় আল্লাহর নির্দেশ পালন এবং তার ফয়সালার শরনাপন্ন হওয়ার মাধ্যমে। এভাবে সমস্ত সম্পর্ক একগ্রন্থিতে গ্রন্থিত হয়ে যায়, যার নীতি নির্ধারক ঈমান। এভাবেই ঈমানের একটি শাখা আরেকটি শাখার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।

তৃতীয়ত : ভারসাম্য :
দৈহিক-মানসিক, ইহকালীন-পরকালীন, ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্রের যাবতীয় বিষয়াদি পারস্পরিক সর্ম্পকিত হওয়া সত্বেও- এ আকিদা সামগ্রিক বিবেচনায় ভারসাম্যপুর্ণও বটে।

এ ভারসাম্যপূর্ণতা প্রকাশ পায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ও বিভিন্ন স্তরে :

১- শরীর-আত্মা কিংবা বাহ্যিক-আভ্যন্তরীণ জগতদ্বয়ের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা।

২- দৃশ্য-অদৃশ্য জগতের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা।

৩- তাকদীরের উপর বিশ্বাস এবং আসবাব নির্ভরতার মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা।

৪- রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক জীবনের মাঝে ভারসমা্যপূর্ণতা।

এসব ক্ষেত্র ও বিষয়াদি নিয়ে আমরা সামান্য আলোকপাত করবো।

১- মানুষ একমুষ্টি মাটি ও আল্লাহর রহমত (আত্মা) এর সমষ্টি। উভয়ের মাঝখানে ইসলামি আকিদা ভারসমা্য রক্ষা করেছে। আমরা যদি একটিতে অপরটির তুলনায় বেশি গুরুত্বারোপ করি তাহলে ভুল করব। জাহিলিয়্যাত তথা মূর্খতা সর্বদা এক পক্ষ অবলম্বন করে, ভারসাম্য রক্ষা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। যেমন হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় আধ্যাত্মিকতার প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করে। সমসাময়িক প্রাচ্য-পাশ্চাত্য কায়িক ও দৈহিকতার উপর বেশি গুরুত্ব দেয়।

এ ক্ষেত্রে ইসলামি আকিদার বৈশিষ্ট্য- উভয়ের মাঝখানে সঠিক ও নির্ভুল ভারসাম্য রক্ষা করা। একদিক থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এ আকিদা কর্ম ও ইবাদতের ময়দানে দেহ জগত ও আত্মিক জগত উভয়কে সমানভাবে সমন্বিত করে রেখেছে। অপর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এ আকিদা উভয়কে স্বতন্ত্রভাবে ন্যায্য প্রাপ্যও প্রদান করেছে। মানবজাতিকে দৈহিক কর্মে ব্যস্ত রেখে আধ্যাতিকতা শূণ্য করে দেয়নি- যেমন সমকালিন (জাহিলিয়্যত) মূর্খতা। আবার আধ্যাতিকতায় ব্যস্ত রেখে দৈহিক আবেদন নিঃশেষ করে দেয়নি- যেমন হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় করেছে। এর প্রকৃষ্ট প্রমান রসূল সা. এর বাণী- জেনে রেখো, আমি তোমাদের ভিতর আল্লাহকে অধিক ভয় করি এবং অধিক মান্য করি। তা সত্বেও আমি রোজা রাখি, নামাজ পড়ি, ঘুমাই, বিবাহ করি। (এ হলো আমার সুন্নত) যে আমার সুন্নত হতে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার পক্ষের নয়। (বোখারি - মুসলিম) ইসলামি সংস্কৃতি-সভ্যতা এ আকিদা কেন্দ্রিক কায়িক ও আধ্যাতিকতার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।

২- ইসলামের একটি আবেদন অদৃশ্যের উপর ঈমান। অর্থাৎ আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ঈমান। তাই বলে পার্থিব জগত হতে নিষ্পৃহ হতে বলেনি, বরং এ আকিদার মৌলিক বিষয়াদি বলিষ্ঠভাবে গ্রহণ করার নিমিত্তে, পার্থিব জগতে আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি গভীর দৃষ্টিদানের প্রতি আহবান জানায়। যার ফলে আল্লাহর প্রতি ঈমান হয় আরো দৃঢ়, আরো মজবূত। এ নীতির ভিত্তিতে ইসলাম সেসব গোড়াবাদী নীতি হতে পৃথক হয়ে যায়, যারা বলে আমরা আল্লাহর দর্শনে নিমগ্ন, আল্লাহর সৃষ্ট প্রকৃতির দর্শন আমাদের প্রয়োজন নেই। তদ্রুপ ইসলাম এমন নির্দেশও করে না যে, অদৃশ্য জগত অগ্রাহ্য করে, দৃশ্য জগত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাও। অর্থাৎ আল্লাহ ও আখেরাত হতে বিমুখ হয়ে যাও। যেমন অধুনা-সমকালীন মূর্খতা।

৩- ইসলাম দুনিয়া-আখেরাতের মাঝখানে কোন পার্থক্য সৃষ্টি করে না। অধিকন্তু সে উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধন এবং উভয়কে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত করে। অন্যথায় মানবীয় উপলব্ধিতে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হবে- যার ফলশ্রুতিতে হয়তো দুনিয়ার কর্মব্যস্তায় ব্যাপৃত হবে কিংবা শুধু আখেরাতের আমলে আত্মনিয়োগ করবে। তখনই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। রিজিক ও প্রাচুর্যের অনুসন্ধানে অতিব্যস্ত হয়ে ধীরে ধীরে আখেরাত বিস্মৃত হয়ে পড়বে। কিংবা দুনিয়ার সামগ্রী ও তার আবাদ হতে বিমুখ হয়ে আখেরাত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। যা ইসলামের দৃষ্টিতে পরিত্যাজ্য ও আল্লাহর বিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নিম্নোক্ত আয়াত ভারসাম্য সৃষ্টি করার একটি আলোকবর্তীকা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

وَابْتَغِ فِيمَا آَتَاكَ اللَّهُ الدَّارَ الْآَخِرَةَ وَلَا تَنْسَ نَصِيبَكَ مِنَ الدُّنْيَا ﴿القصص - ৭৭ ا﴾

‘‘আল্লাহ তোমাকে যে নেয়ামত দান করেছেন, তার দ্বারা তুমি আখেরাত অন্বেষণ কর। তবে দুনিয়ার স্বীয় হিস্যা ভুলে যেও না।’’ [আল কাসাস : ১৭৭]

এভাবেই ইসলাম প্রতিটি ক্ষেত্রে দুনিয়া-আখেরাতের সমন্বয় নিশ্চিত করে সামনে অগ্রসর হয়েছে। ইসলাম ইবাদত ও দুনিয়ার আবাদ-এর কোনটাকেই অগ্রাহ্য করে না। কোনটাকেই মূল্যহীন মনে করে না।

৪- তাকদিরের উপর অগাধ বিশ্বাস মুসলিমের উপলব্ধিতে আসবাব নির্ভরতা ও তাকদিরের মাঝখানে ভারসাম্য সৃষ্টি করে। অধিকন্তু তাকদির ইসলামি আকিদার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্যও বটে। আল্লাহর উপর তথাকথিত নির্ভরকারীরা দুনিয়ার উপায়-উপকরণ ত্যাগ করে অভাব-অনটন, রোগ-ব্যধি, অজ্ঞতা-মূর্খতা, অক্ষমতা ও অমর্যাদার সম্মুখিন হয়। পক্ষান্তরে পাশ্চাত্য (জাহিলিয়াত পুর্ণ) সমাজ আল্লাহ ও তাকদির বিমুখ হয়ে সম্পূর্ণ উপকরণ নির্ভর জীবন যাপন করে। যার ফলে ভোগবাদী মানসিকতা নিয়ে, চরিত্র শূণ্য ও মানুষ্যত্বহীন হয়ে উদ্বেগ -উৎকণ্ঠা, অস্থিরতায় দিনাতিপাত করতে হয়। স্বার্থপরতা, স্বদলপ্রীতি, স্বজাতপ্রীতি, অন্ধত্ম, জিনা-ব্যভিচার,হত্যা-খুন ও রাহজানি ইত্যাদিতে মত্ত হয়ে উদ্দেশ্যহীন জীবন যাপন করে। কারণ এ সমাজ আল্লাহর স্মরণ ও তাকদিরের বিশ্বাস জনিত শান্তি ও নিরাপত্তা হতে সম্পূর্ণ বঞ্চিত।

ইসলাম বিপরীতমুখী দু’মেরুর মাঝখানে সুষম ভারসাম্য নিশ্চিত করে। সে জানে পার্থিব জগত এবং মানবীয় জীবন আল্লাহর নির্ধারিত বিধান মোতাবেক চালিত। তাই শুধু দুনিয়াবী উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে দেয়া হলে, সে উপকরণ নির্ভর হয়ে পড়বে। কিন্তু না- তাকে এর সাথে সাথে আল্লাহ নির্ভর হতে হবে, স্বীয় উদ্দেশ্য ও স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তার নিকট প্রার্থনা করতে হবে। তবেই ভারসাম্য সৃষ্টি হবে, অর্থাৎ কাজও করবে-উপকরণও ধরবে এবং তাকদিরের উপর বিশ্বাসও রাখবে।

৫- মুদ্দাকথা : মানবীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্র ও পরিধির মাঝখানে ভারসাম্য সৃষ্টিকারী একমাত্র মতবাদ হচ্ছে আলোচ্য ইসলামি আকিদা। এখানে দৈহিক বিবেচনা আত্মিক বিবেচনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। রাজনৈতিক চিন্তাধারা অর্থনৈতিক চিন্তাধারার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। তদ্রুপ অর্থনৈতিক চিন্তাধারা চারিত্রিক বিবেচনাকে বিসর্জন দিতে পারে না। বরং সবাইকে আল্লাহ এবং তার নাজিলকৃত বিধানের অক্ষ ও গন্ডির আওতায় এনে, সবার মাঝে সমতার বিধান নিশ্চিত করে। ফলে মানবীয় সমস্ত আবেদন সমানভাবে সহবাস্থান করার সুযোগ লাভ করে।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন