HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইসলামি আকিদার বৈশিষ্ট্যসমূহ

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

তৃতীয়ত : ভারসাম্য :
দৈহিক-মানসিক, ইহকালীন-পরকালীন, ব্যক্তি-সমাজ-রাষ্ট্রের যাবতীয় বিষয়াদি পারস্পরিক সর্ম্পকিত হওয়া সত্বেও- এ আকিদা সামগ্রিক বিবেচনায় ভারসাম্যপুর্ণও বটে।

এ ভারসাম্যপূর্ণতা প্রকাশ পায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে ও বিভিন্ন স্তরে :

১- শরীর-আত্মা কিংবা বাহ্যিক-আভ্যন্তরীণ জগতদ্বয়ের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা।

২- দৃশ্য-অদৃশ্য জগতের মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা।

৩- তাকদীরের উপর বিশ্বাস এবং আসবাব নির্ভরতার মাঝে ভারসাম্যপূর্ণতা।

৪- রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক জীবনের মাঝে ভারসমা্যপূর্ণতা।

এসব ক্ষেত্র ও বিষয়াদি নিয়ে আমরা সামান্য আলোকপাত করবো।

১- মানুষ একমুষ্টি মাটি ও আল্লাহর রহমত (আত্মা) এর সমষ্টি। উভয়ের মাঝখানে ইসলামি আকিদা ভারসমা্য রক্ষা করেছে। আমরা যদি একটিতে অপরটির তুলনায় বেশি গুরুত্বারোপ করি তাহলে ভুল করব। জাহিলিয়্যাত তথা মূর্খতা সর্বদা এক পক্ষ অবলম্বন করে, ভারসাম্য রক্ষা করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। যেমন হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় আধ্যাত্মিকতার প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করে। সমসাময়িক প্রাচ্য-পাশ্চাত্য কায়িক ও দৈহিকতার উপর বেশি গুরুত্ব দেয়।

এ ক্ষেত্রে ইসলামি আকিদার বৈশিষ্ট্য- উভয়ের মাঝখানে সঠিক ও নির্ভুল ভারসাম্য রক্ষা করা। একদিক থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এ আকিদা কর্ম ও ইবাদতের ময়দানে দেহ জগত ও আত্মিক জগত উভয়কে সমানভাবে সমন্বিত করে রেখেছে। অপর দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এ আকিদা উভয়কে স্বতন্ত্রভাবে ন্যায্য প্রাপ্যও প্রদান করেছে। মানবজাতিকে দৈহিক কর্মে ব্যস্ত রেখে আধ্যাতিকতা শূণ্য করে দেয়নি- যেমন সমকালিন (জাহিলিয়্যত) মূর্খতা। আবার আধ্যাতিকতায় ব্যস্ত রেখে দৈহিক আবেদন নিঃশেষ করে দেয়নি- যেমন হিন্দু ও বৌদ্ধ সম্প্রদায় করেছে। এর প্রকৃষ্ট প্রমান রসূল সা. এর বাণী- জেনে রেখো, আমি তোমাদের ভিতর আল্লাহকে অধিক ভয় করি এবং অধিক মান্য করি। তা সত্বেও আমি রোজা রাখি, নামাজ পড়ি, ঘুমাই, বিবাহ করি। (এ হলো আমার সুন্নত) যে আমার সুন্নত হতে মুখ ফিরিয়ে নিবে সে আমার পক্ষের নয়। (বোখারি - মুসলিম) ইসলামি সংস্কৃতি-সভ্যতা এ আকিদা কেন্দ্রিক কায়িক ও আধ্যাতিকতার সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।

২- ইসলামের একটি আবেদন অদৃশ্যের উপর ঈমান। অর্থাৎ আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ঈমান। তাই বলে পার্থিব জগত হতে নিষ্পৃহ হতে বলেনি, বরং এ আকিদার মৌলিক বিষয়াদি বলিষ্ঠভাবে গ্রহণ করার নিমিত্তে, পার্থিব জগতে আল্লাহর নিদর্শনাবলীর প্রতি গভীর দৃষ্টিদানের প্রতি আহবান জানায়। যার ফলে আল্লাহর প্রতি ঈমান হয় আরো দৃঢ়, আরো মজবূত। এ নীতির ভিত্তিতে ইসলাম সেসব গোড়াবাদী নীতি হতে পৃথক হয়ে যায়, যারা বলে আমরা আল্লাহর দর্শনে নিমগ্ন, আল্লাহর সৃষ্ট প্রকৃতির দর্শন আমাদের প্রয়োজন নেই। তদ্রুপ ইসলাম এমন নির্দেশও করে না যে, অদৃশ্য জগত অগ্রাহ্য করে, দৃশ্য জগত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাও। অর্থাৎ আল্লাহ ও আখেরাত হতে বিমুখ হয়ে যাও। যেমন অধুনা-সমকালীন মূর্খতা।

৩- ইসলাম দুনিয়া-আখেরাতের মাঝখানে কোন পার্থক্য সৃষ্টি করে না। অধিকন্তু সে উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধন এবং উভয়কে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত করে। অন্যথায় মানবীয় উপলব্ধিতে ভারসাম্যহীনতার সৃষ্টি হবে- যার ফলশ্রুতিতে হয়তো দুনিয়ার কর্মব্যস্তায় ব্যাপৃত হবে কিংবা শুধু আখেরাতের আমলে আত্মনিয়োগ করবে। তখনই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে। রিজিক ও প্রাচুর্যের অনুসন্ধানে অতিব্যস্ত হয়ে ধীরে ধীরে আখেরাত বিস্মৃত হয়ে পড়বে। কিংবা দুনিয়ার সামগ্রী ও তার আবাদ হতে বিমুখ হয়ে আখেরাত নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। যা ইসলামের দৃষ্টিতে পরিত্যাজ্য ও আল্লাহর বিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। নিম্নোক্ত আয়াত ভারসাম্য সৃষ্টি করার একটি আলোকবর্তীকা। আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

وَابْتَغِ فِيمَا آَتَاكَ اللَّهُ الدَّارَ الْآَخِرَةَ وَلَا تَنْسَ نَصِيبَكَ مِنَ الدُّنْيَا ﴿القصص - ৭৭ ا﴾

‘‘আল্লাহ তোমাকে যে নেয়ামত দান করেছেন, তার দ্বারা তুমি আখেরাত অন্বেষণ কর। তবে দুনিয়ার স্বীয় হিস্যা ভুলে যেও না।’’ [আল কাসাস : ১৭৭]

এভাবেই ইসলাম প্রতিটি ক্ষেত্রে দুনিয়া-আখেরাতের সমন্বয় নিশ্চিত করে সামনে অগ্রসর হয়েছে। ইসলাম ইবাদত ও দুনিয়ার আবাদ-এর কোনটাকেই অগ্রাহ্য করে না। কোনটাকেই মূল্যহীন মনে করে না।

৪- তাকদিরের উপর অগাধ বিশ্বাস মুসলিমের উপলব্ধিতে আসবাব নির্ভরতা ও তাকদিরের মাঝখানে ভারসাম্য সৃষ্টি করে। অধিকন্তু তাকদির ইসলামি আকিদার একটি অনন্য বৈশিষ্ট্যও বটে। আল্লাহর উপর তথাকথিত নির্ভরকারীরা দুনিয়ার উপায়-উপকরণ ত্যাগ করে অভাব-অনটন, রোগ-ব্যধি, অজ্ঞতা-মূর্খতা, অক্ষমতা ও অমর্যাদার সম্মুখিন হয়। পক্ষান্তরে পাশ্চাত্য (জাহিলিয়াত পুর্ণ) সমাজ আল্লাহ ও তাকদির বিমুখ হয়ে সম্পূর্ণ উপকরণ নির্ভর জীবন যাপন করে। যার ফলে ভোগবাদী মানসিকতা নিয়ে, চরিত্র শূণ্য ও মানুষ্যত্বহীন হয়ে উদ্বেগ -উৎকণ্ঠা, অস্থিরতায় দিনাতিপাত করতে হয়। স্বার্থপরতা, স্বদলপ্রীতি, স্বজাতপ্রীতি, অন্ধত্ম, জিনা-ব্যভিচার,হত্যা-খুন ও রাহজানি ইত্যাদিতে মত্ত হয়ে উদ্দেশ্যহীন জীবন যাপন করে। কারণ এ সমাজ আল্লাহর স্মরণ ও তাকদিরের বিশ্বাস জনিত শান্তি ও নিরাপত্তা হতে সম্পূর্ণ বঞ্চিত।

ইসলাম বিপরীতমুখী দু’মেরুর মাঝখানে সুষম ভারসাম্য নিশ্চিত করে। সে জানে পার্থিব জগত এবং মানবীয় জীবন আল্লাহর নির্ধারিত বিধান মোতাবেক চালিত। তাই শুধু দুনিয়াবী উদ্দেশ্য নির্ধারণ করে দেয়া হলে, সে উপকরণ নির্ভর হয়ে পড়বে। কিন্তু না- তাকে এর সাথে সাথে আল্লাহ নির্ভর হতে হবে, স্বীয় উদ্দেশ্য ও স্বার্থ সিদ্ধির জন্য তার নিকট প্রার্থনা করতে হবে। তবেই ভারসাম্য সৃষ্টি হবে, অর্থাৎ কাজও করবে-উপকরণও ধরবে এবং তাকদিরের উপর বিশ্বাসও রাখবে।

৫- মুদ্দাকথা : মানবীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্র ও পরিধির মাঝখানে ভারসাম্য সৃষ্টিকারী একমাত্র মতবাদ হচ্ছে আলোচ্য ইসলামি আকিদা। এখানে দৈহিক বিবেচনা আত্মিক বিবেচনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। রাজনৈতিক চিন্তাধারা অর্থনৈতিক চিন্তাধারার উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারে না। তদ্রুপ অর্থনৈতিক চিন্তাধারা চারিত্রিক বিবেচনাকে বিসর্জন দিতে পারে না। বরং সবাইকে আল্লাহ এবং তার নাজিলকৃত বিধানের অক্ষ ও গন্ডির আওতায় এনে, সবার মাঝে সমতার বিধান নিশ্চিত করে। ফলে মানবীয় সমস্ত আবেদন সমানভাবে সহবাস্থান করার সুযোগ লাভ করে।

সমাপ্ত

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন