HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইখলাসের অপরিহার্যতা ও হজ কবূলে তার প্রভাব

লেখকঃ ড. সালেহ ইবন আবদুল আযীয সিন্দী

১১
দ্বিতীয়ত: দুনিয়াবী স্বার্থে হজ করা
হজকে যদি দুনিয়া কামানোর উসীলা বনান হয় এবং দুনিয়ার সামান্য উপকারই লক্ষ্য হয়। যেমন, এর অন্তর্ভুক্ত হলো, কোনো হজকারীর অন্যের পক্ষ থেকে হজ করে অর্থ উপার্জন করা, কেননা এর দ্বারা মূলত সে তার ভাইয়ের উপকার সাধন উদ্দেশ্য নেয় না। বা যা তাকে দেওয়া হয় তা দিয়ে পবিত্র মক্কা পৌঁছা ও সেখানে সালাত আদায় ও দো‘আ-যিকির করে তার ও তার ভাই যিনি তাকে অর্থ দিয়েছেন তার উপকারিতা অর্জনের সহযোগিতা গ্রহণ করা উদ্দেশ্য নেয় না; বরং যে তাকে হজের জন্য স্থলাভিষিক্ত করেছে তার নিকট থেকে অর্থ উপার্জন করা উদ্দেশ্য নেয়। এ হচ্ছে দুনিয়া কামানোর উদাহারণ। তাছাড়া হয়তো বা সে অর্থ লোভে এমনও বলে দেয়: আরো বাড়িয়ে দিন, কেননা হজে তো অনেক পরিশ্রম করতে হবে। (আল্লাহুল মুস্তায়ান)

অবস্থা যদি এমন হয়, তবে সে অসন্তুষ্টি ও শাস্তিরই উপযুক্ত এবং তার নেকী নষ্ট হয়ে যাবে।

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যা রহ. বলেন, “অর্থ উপার্জনের জন্য হজ নয়; বরং হজ করার জন্য অর্থ গ্রহণ করা মুস্তাহাব। এটিই সৎ আমলের ওপর অর্থ গ্রহণের মূল কথা। সুতরাং যে অর্থ গ্রহণ করে ইলম শিক্ষা করার জন্য বা শিক্ষা দেওয়ার জন্য বা জিহাদ করার জন্য তা ঠিক আছে। পক্ষান্তরে, যে সৎ আমলের লেবাসে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্য রাখে, তা হবে দুনিয়াবী স্বার্থের আমলের অন্তর্ভুক্ত। উভয়ের পার্থক্য হলো:

প্রথম ব্যক্তি: যার দীনই হলো উদ্দেশ্য আর দুনিয়া হলো উসীলা। দ্বিতীয় ব্যক্তি: যার দুনিয়া হলো উদ্দেশ্য আর দীন হলো উসীলা। এর জন্য পরকালে কোনো অংশ নেই। [মাজমু‘ ফাতাওয়া: ২৬/১৯-২০।]

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রহ. আরো বলেন, ইমাম আহমাদ রহ. বলেন, আমি সালাফে সালেহীনের কারো সম্পর্কে জানি না যে, কেউ কোনো কিছুর বিনিময়ে কারো পক্ষ থেকে হজ করেছেন। যদি তা সৎ আমলের অন্তর্ভুক্ত হত, তবে তারা তাতে অগ্রণী হতেন। আর সৎ আমলের দ্বারা রুযী অর্জন করা সৎ লোকদের কর্ম নয়। [মাজমূ‘ ফাতাওয়া: ২৬/১৯।]

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনমূলক কর্মে বিনিময় গ্রহণ করা আমরা নিষেধ করব ও তার ওপর বিনিময় গ্রহণ করাকে ভঙ্গ করব। বিশেষ বিশেষ ইবাদতকে মুয়ামালাতে (লেন-দেনমূলক বিষয়ে) পরিণত করা শরী‘আতের উত্তম আদর্শের অন্তর্ভুক্ত নয়, যার দ্বারা আমরা পার্থিব স্বার্থ ও লেন-দেন অর্জন করতে পারি।” [আর-রূহ: ৩২৫।]

হাদীসের বর্ণনায় অতিবাহিত হয়েছে, ‘সুতরাং যে ব্যক্তি দুনিয়ার জন্য আখিরাতের আমল করবে। আখিরাতে তার জন্য কোনো অংশ থাকবে না।’

মহান আল্লাহ বলেন,

﴿مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡحَيَوٰةَ ٱلدُّنۡيَا وَزِينَتَهَا نُوَفِّ إِلَيۡهِمۡ أَعۡمَٰلَهُمۡ فِيهَا وَهُمۡ فِيهَا لَا يُبۡخَسُونَ ١٥ أُوْلَٰٓئِكَ ٱلَّذِينَ لَيۡسَ لَهُمۡ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ إِلَّا ٱلنَّارُۖ وَحَبِطَ مَا صَنَعُواْ فِيهَا وَبَٰطِلٞ مَّا كَانُواْ يَعۡمَلُونَ ١٦﴾ [ هود : ١٥، ١٦ ]

“যারা শুধু পার্থিব জীবন ও ওর জাঁকজমক কামনা করে, আমরা তাদেরকে তাদের কৃতকর্মগুলোর ফল দুনিয়াতেই পরিপূর্ণরূপে প্রদান করে দিই এবং দুনিয়াতে তাদের জন্যে কিছুই কম করা হয় না। এরা এমন লোক যে, তাদের জন্যে আখিরাতে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই নেই, আর তারা যা কিছু করেছিল তা সবই আখিরাতে অকেজো হয়ে যাবে এবং যা কিছু করছে তাও বিফল হবে।” [সূরা হুদ, আয়াত: ১৫-১৬]

কেউ বলেন আয়াতগুলো কাফেরদের ব্যাপারে, কেউ বলেন তা মুসলিমদের ব্যাপারে। অধিকাংশ তাফসীরকারকের মতে তা সমস্ত সৃষ্টির ব্যাপারে। [জামে‘ লিআহকামিল কুরআন: ৯/১১ ইত্যাদি।]

যেহেতু এক মতানুযায়ী তা কাফেরদের ব্যাপারে, তাই এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, তাদের মতো যারাই এমন কর্মে জড়িত, তাদেরই এমন ফল রয়েছে। [আল-কাওলুল মুফীদ: ১০/৭২৩।]

নিম্নোক্ত আয়াতগুলো উক্ত আয়াতগুলোর অর্থকে আরো নিকটতম করে দেয়:

﴿مَن كَانَ يُرِيدُ حَرۡثَ ٱلۡأٓخِرَةِ نَزِدۡ لَهُۥ فِي حَرۡثِهِۦۖ وَمَن كَانَ يُرِيدُ حَرۡثَ ٱلدُّنۡيَا نُؤۡتِهِۦ مِنۡهَا وَمَا لَهُۥ فِي ٱلۡأٓخِرَةِ مِن نَّصِيبٍ ٢٠﴾ [ الشورى : ٢٠ ]

“যে আখিরাতের ফসল কামনা করে তার জন্যে আমি তার ফসল বর্ধিত করে দিই এবং যে দুনিয়ার ফসল কামনা করে আমরা তাকে এরই কিছু দিই, আখিরাতে তার জন্যে কিছুই থাকবে না।।” [সূরা আশ-শূরা, আয়াত: ২০]

আল্লাহ অন্যত্র বলেন,

﴿مَّن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡعَاجِلَةَ عَجَّلۡنَا لَهُۥ فِيهَا مَا نَشَآءُ لِمَن نُّرِيدُ ثُمَّ جَعَلۡنَا لَهُۥ جَهَنَّمَ يَصۡلَىٰهَا مَذۡمُومٗا مَّدۡحُورٗا ١٨﴾ [ الاسراء : ١٨ ]

“কেউ পার্থিব সুখ-সম্ভোগ কামনা করলে আমি যাকে যা ইচ্ছা সত্বর দিয়ে থাকি; পরে তার জন্যে জাহান্নাম নির্ধারিত করি, সেখানে সে প্রবেশ করবে নিন্দিত ও অনুগ্রহ থেকে দূরীকৃত অবস্থায়।।” [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ১৮]

ইবনুল কাইয়্যেম রহ. বলেন, কুরআনের এ তিনটি স্থান। একটির সাথে অন্যটির সাদৃশ্য রয়েছে। অনুরূপ একটি অন্যটিকে সত্যায়ন করে, যা এক-অভিন্ন অর্থের অন্তর্ভুক্ত: আর তা হলো: যার দুনিয়া অর্জনই উদ্দেশ্য হবে আর সে জন্যই সে চরম প্রচেষ্টা চালাবে; তার জন্য পরকালে কোনো অংশ থাকবে না।

পক্ষান্তরে পরকালই যার উদ্দেশ্য ও সে তার জন্য চরম চেষ্টাও চালিয়ে যায়, তা সে অর্জন করবে।” [উদ্দাতুস সাবেরীন: ১৬৬।]

উক্ত হুকুমের আওতায় যা অন্তর্ভুক্ত নয়:

হজের মধ্যে ব্যবসার উদ্দেশ্য পোষণ করা। কেননা এর অনুমতি আল্লাহ তা‘আলার নিম্নের আয়াতে রয়েছে:

﴿لَيۡسَ عَلَيۡكُمۡ جُنَاحٌ أَن تَبۡتَغُواْ فَضۡلٗا مِّن رَّبِّكُمۡۚ فَإِذَآ أَفَضۡتُم مِّنۡ عَرَفَٰتٖ فَٱذۡكُرُواْ ٱللَّهَ عِندَ ٱلۡمَشۡعَرِ ٱلۡحَرَامِۖ وَٱذۡكُرُوهُ كَمَا هَدَىٰكُمۡ وَإِن كُنتُم مِّن قَبۡلِهِۦ لَمِنَ ٱلضَّآلِّينَ ١٩٨﴾ [ البقرة : ١٩٨ ]

“তোমরা স্বীয় রবের অনুগ্রহ লাভের চেষ্টা করলে তাতে তোমাদের পক্ষে কোনো অপরাধ নেই; অতঃপর যখন তোমরা আরাফাত হতে প্রত্যাবর্তিত হও তখন পবিত্র (মাশ‘আরে হারাম) স্মৃতি-স্থানের নিকট আল্লাহকে স্মরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যেরূপ নির্দেশ দিয়েছেন তদ্রূপ তাঁকে স্মরণ করো এবং নিশ্চয় তোমরা এর পূর্বে বিভ্রান্তদের অন্তর্গত ছিলে।” [সূরা আল-বাকারাহ, আয়াত: ১৯৮]

এ উদ্দেশ্য পোষণে কোনো দোষ নেই যদি তার প্রধান ও মূল উদ্দেশ্য হয় দীন। বিশেষ করে জীবিকা অর্জন তার হজের কার্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত যেন না হয়; বরং তা হবে আনুসঙ্গিক বিষয়। এটি হবে দু’টি নিয়তকে অন্তর্ভুক্তকরণ: একটি শরী‘আতগত অন্যটি তার মধ্যে অনুমতিগত।

আল্লাহ যেন আমাদের প্রত্যেক কর্মকে সৎকর্মের অন্তর্ভুক্ত করেন এবং তা তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য খালেস-বিশুদ্ধ করেন ও তার কোনো অংশই যেন অন্য কারো জন্য না করেন। আল্লাহ আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবার-পরিজনদের প্রতি সালাত ও সালাম তথা শান্তির ধারা বর্ষণ করুন। আমীন!

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন