hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায় তাওবা

লেখকঃ জাকের উল্লাহ আবুল খায়ের

১১
গুনাহের খারাপ পরিণতি ও ক্ষতিকর দিক
সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, মনে রাখতে হবে, গুনাহ মানুষের দুনিয়া ও আখেরাত উভয় জগতের জন্যই ক্ষতিকর। গুনাহের কারণে মানুষ দুনিয়াতে লাঞ্ছনা-বঞ্চনা, অপমান- অপদস্থের শিকার হয়। দুনিয়ার জীবনে তার অশান্তির অন্ত থাকে না। অনেক সময় দুনিয়ার জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ে। ফলে দুনিয়াতেও গুনাহের কারণে তাকে নানাবিধ শাস্তি ও আজাব-গজবের মুখোমুখি হতে হয় এবং আখেরাতে তো তার জন্য রয়েছে অবর্ণনীয়- সীমাহীন দুর্ভোগ। এ ছাড়া গুনাহ কেবল মানুষের আত্মার জন্যই ক্ষতিকর নয় বরং আত্মা ও দেহ দুটির জন্যই ক্ষতিকর। গুনাহ মানুষের জন্য কঠিন এক ভয়ানক পরিণতি ডেকে আনে। গুনাহ মানুষের আত্মার জন্য এমন ক্ষতিকর যেমনিভাবে বিষ দেহের জন্য ক্ষতিকর। গুনাহের কয়েকটি ক্ষতিকর দিক ও খারাব পরিণতি নিম্নে আলোচনা করা হল। যাতে আমরা এগুলো জেনে গুনাহ হতে বিরত থাকতে সচেষ্ট হই।

১- ইলম তথা দ্বীনি জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হওয়া: ইলম হল নূর বা আলো যা আল্লাহ তা’আলা মানুষের অন্তরে স্থাপন করেন। আর গুনাহ হল, অন্ধকার, যা ইলমের নুর বা আলোকে নিভিয়ে দেয়। ফলে, ইলম ও গুনাহ এক সাথে এক পাত্রে সহাবস্থান করতে পারে না। তাই গুনাহের কারণে বান্দা দীনি ইলম হতে বঞ্চিত হয়।

২- রিযিক থেকে বঞ্চিত হওয়া: গুনাহের কারণে বান্দা রিযিক হতে বঞ্চিত হয়। মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, إن العبد ليحرم الزرق بالذنب يصيبه “বান্দা গুনাহের লিপ্ত হওয়ার কারণে রিযিক হতে বঞ্চিত হয়”। [ইবনু মাযা: ৪০২২,]

৩- গুনাহ ও পাপাচার মানুষের দেহ এবং আত্মাকে দুর্বল করে দেয়: ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন- নিশ্চয় নেক আমলের কারণে মানুষের চেহারা উজ্জল হয়, অন্তর আলোকিত হয়, রিযিক বৃদ্ধি পায় ও আয় রোজগারে বরকত হয়, দেহের শক্তি বৃদ্ধি পায়, মানুষের অন্তরে অপরের প্রতি মহব্বত বৃদ্ধি পায়। পক্ষান্তরে খারাপ কাজে মানুষের চেহারা কুৎসিত হয়, অন্তর অন্ধকার হয়, দেহ দুর্বল হয়, রিযিকে সংকীর্ণতা দেখা দেয় এবং মানুষের অন্তরে তার প্রতি ঘৃণা জন্মায়। ফলে তাকে কেউ ভালো চোখে দেখে না।

৪- আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য হতে পাপী ব্যক্তি বঞ্চিত হয়: যদিও গুনাহের কারণে দুনিয়াতে তাকে কোন শাস্তি নাও দেয়া হয়, কিন্তু সে আল্লাহর বিশেষ ইবাদাত বন্দেগী হতে বঞ্চিত হবে। গুনাহকে ঘৃণা করা বা খারাপ জানার অনুভূতি হারিয়ে ফেলে। ফলে গুনাহের কাজে সে অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং গুনাহ করতে কোন প্রকার কুন্ঠাবোধ করে না। এমনকি সমস্ত মানুষও যদি তাকে দেখে ফেলে বা তার সমালোচনা করে, তারপরও সে কোন অপরাধ বা অন্যায় করতে লজ্জাবোধ বা খারাপ মনে করে না। এ ধরনের মানুষকে আল্লাহ ক্ষমা করেন না এবং তাদের তওবার দরজাও বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তারা বেঈমান হয়ে দুনিয়া থেকে চির বিদায় নেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

كل أمتي معافى إلا المجاهرين وإن من الإجهار أن الله سترعلى العبد ثم يصبح يفضح نفسه ويقول يا فلان عملت اليوم كذا وكذا وكذا فيهتك نفسه يستره ربه , رواه البخاري والمسلم

‘‘আমার সকল উম্মতকে ক্ষমা করা হবে একমাত্র প্রকাশ্য পাপী ছাড়া। আর প্রকাশ্যে পাপ করা হল, আল্লাহ কোন বান্দার অপকর্মকে গোপন রাখল কিন্তু লোকটি তার নিজের অপকর্ম প্রকাশ করে নিজেকে অপমান করে এবং বলে থাকে, হে ভাই! আমি আজ অমুক অমুক কাজ করেছি - ইত্যাদি। এভাবে সে তার নিজের গোপনীয়তা প্রকাশ করে অথচ আল্লাহ তার গুনাহকে গোপন রাখে”। [বুখারি, হাদিস: ২০৬৯ মুসলিম, হাদিস: ২৯৯০]

৬- গুনাহ করাকে হালকাভাবে দেখা: বান্দা গুনাহ করতে করতে গুনাহ করা তার জন্য সহজ হয়ে যায়, অন্তরে সে গুনাহকে ছোট মনে করতে থাকে। আর এটাই হল ধ্বংসের নিদর্শন। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহ আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন-

أن المؤمن يرى ذنوبه كانه في أصل جبل يخاف أن يقع عليه وأن الفاجر يرى ذنوبه كذباب رفع على أنف فقال به هكذا فطار ذكر البخاري في الصحيح

“একজন মুমিন সে গুনাহকে এমন ভাবে ভয় করে যে, সে যেন একটি পাহাড়ের নিচে আছে আর আশংকা করছে যে পাহাড়টি তার উপর ভেঙ্গে পড়বে। পক্ষান্তরে একজন বদকার ব্যক্তি সে তার গুনাহকে মনে করে তার নাকের উপর একটি মাছি বসে আছে হাত নাড়া দিল আর সে চলে গেল”। [বুখারি, হাদিস: ৬৩০৮]

৭-গুনাহ লাঞ্ছনা ও অপমানের কারণ হয়: কারণ হল, সকল প্রকার ইজ্জত একমাত্র আল্লাহ আনুগত্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। আর আল্লাহর আনুগত্যের বাহিরে যা কিছু করা হবে, তাই অপমান অপদস্থের কারণ হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেন-

﴿ مَن كَانَ يُرِيدُ ٱلۡعِزَّةَ فَلِلَّهِ ٱلۡعِزَّةُ جَمِيعًاۚ١٠ ﴾ [ فاطر : ١٠ ]

‘‘কেউ ইজ্জতের আশা করলে মনে রাখতে হবে যে, সমস্ত ইজ্জত আল্লাহই জন্য”। [সুরা ফাতির, আয়াত: ১০]

অর্থাৎ, ইজ্জত আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমেই তালাশ করা উচিত, কারণ সে আল্লাহর আনুগত্য ছাড়া কোথাও ইজ্জত খুঁজে পাবে না।

৮- গুনাহ মানুষের জ্ঞান বুদ্ধিকে ধ্বংস করে দেয়: মানুষের জ্ঞান বুদ্ধির জন্য একটি আলো বা নূর থাকে আর গুনাহ ঐ নূর বা আলোকে নিভেয়ে দেয়, ফলে গুনাহের কারণে মানুষের জ্ঞান বুদ্ধি ধ্বংস হয়।

৯- গুনাহ গুনাহকারীর অন্তরকে কাবু করে ফেলে এবং সে ধীরে ধীরে অলসদের অর্ন্তভুক্ত হয়। যেমন, আল্লাহ তা’আলা বলেন-

﴿ كَلَّاۖ بَلۡۜ رَانَ عَلَىٰ قُلُوبِهِم مَّا كَانُواْ يَكۡسِبُونَ ١٤ ﴾ [ المطففين : ١٤ ]

অর্থাৎ ‘‘কখনো না, বরং তারা যা করে তাই তাদের হৃদয়ে মরিচা ধরিয়ে দিয়েছেন”। [সূরা মুতাফফেফীন, আয়াত: ১৪]

এ আয়াত সম্পর্কে ওলামায়ে কেরাম বলেন, বার বার গুনাহ করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।

عن أبي هريرة - رضِي الله عنه - قال : قال رسول الله - صلَّى الله عليه وسلَّم -: إنَّ المؤمن إذا أذنَبَ كانت نكتة سوداء في قَلبِه، فإنْ تاب ونزَع واستَغفَر صقل قلبه، وإنْ زاد زادتْ حتى يعلو قلبه ذاك الرين الذي ذكر الله - عزَّ وجلَّ - في القُرآن : ﴿كَلَّا بَلْ رَانَ عَلَى قُلُوبِهِمْ مَا كَانُوا يَكْسِبُونَ ﴾ [ المطففين : ১৪].

অর্থ: যখন কোন মু’মিন গুনাহ করে তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে তারপর সে যখন তাওবা করে এবং গুনাহ থেকে বিরত থেকে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চায় তখন তার অন্তর পরিস্কার হয়ে যায়। আর যখন মু’মিন আবারো গুনাহ করে তখন অন্তরের কালো দাগ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে মু’মিনের অন্তরে আল্লাহর কুরআনে বর্ণিত ‘রাইন’ তথা মরিচা প্রভাব বিস্তার করে। আল্লাহ্ বলেন, ‘‘কক্ষনো না, বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের অন্তরে জং ধরিয়ে দিয়েছে।’’ [তিরমিযি, হাদিস: ৩৩৩৪, আহমদ, হাদিস: ৭৯৫২] (সূরা মুতাফফিফীন, আয়াত: ১৪)

১০- গুনাহ অভিশাপকে টেনে আনে: গুনাহ বান্দাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভিশাপের অর্ন্তভুক্ত করে। কারণ, তিনি গুনাহগার ও পাপীদের উপর অভিশাপ দিয়েছেন। যেমন - সুদগ্রহীতা, দাতা, লেখক ও সাক্ষী সকলের উপর অভিশাপ করেছেন। এমনি ভাবে চোরের উপর অভিশাপ করেছেন। গাইরুল্লাহর নামে জাবেহকারী, ছবি অংকনকারী, মদ্যপানকারী সহ বিভিন্ন গুনাহের উপর তিনি অভিশাপ করেন।

১১-গুনাহ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার ফেরেশতাদের দু’আ হতে বঞ্চিত হওয়ার কারণ। কেননা আল্লাহ তার নবীকে নর-নারী সকলের জন্য দু’আ করার আদেশ দিয়েছেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন