মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
এক:- শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য পাপ ও গুনাহের কাজ ত্যাগ করাকে তাওবা বলা হবে, অন্য কোন কারণে পাপচার ত্যাগ করাকে তাওবা বলা যাবে না, যেমন;
-অক্ষমতার কারণে পাপ থেকে দূরে থাকা, এসব কর্ম করতে ভাল না লাগা অথবা লোকজন মন্দ বলবে এই ভয়ে পাপ ত্যাগ করা, এমন ব্যক্তিকে তাওবাকারী বলা হবে না।
-যে ব্যক্তি মানহানী ঘটা বা চাকুরীচ্যুত হওয়া বা পদ-পদবী হারানোর ভয়ে তাওবা করে, তাকে তাওবাকারী বলা হবে না।
-যে ব্যক্তি পাপ ত্যাগ করল তার শক্তি ও স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য; যেমন কেউ ব্যভিচার করা ত্যাগ করলো যেন দুরারোগ্য ব্যাধি-এইডস থেকে বাঁচতে পারে অথবা তার শরীর ও স্মৃতি শক্তি যাতে দুর্বল না হয়, তাহলে তাকে তাওবাকারী বলা যাবে না।
-তেমনিভাবে তাকে তাওবাকারী বলা যাবে না, যে ব্যক্তি চুরি করা ছেড়ে দিয়েছে; কোন বাড়ীতে ঢুকার পথ না পেয়ে বা সিন্দুক খুলতে অসমর্থ হওয়ার কারণে কিংবা পাহারাদার ও পুলিশের ভয়ে।
-তাকে তাওবাকারী বলা যাবে না, যে দূর্নীতি দমন বিভাগের লোকজনদের জোর তৎপরতায় ধরা পড়ার ভয়ে ঘুষ খাওয়া বন্দ করে দেয়।
-আর তাকেও তাওবাকারী বলা যাবে না, যে ব্যক্তি মদ পান, মাদকদ্রব্য বা হেরোইন সেবন ইত্যাদি ছেড়ে দেয় দারিদ্রতার আশঙ্কায়।
-তেমনিভাবে তাকেও তাওবাকারী বলা যাবে না, যে সামর্থহীন হওয়ার কারণে গুনাহ করা ছেড়ে দিলো। যেমন মিথ্যা বলা ছেড়ে দিয়েছে তার কথায় জড়তা সৃষ্টি হওয়ার কারণে কিংবা ব্যভিচার করছে না যেহেতু সে শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে, কিংবা চুরি করা ছেড়ে দিয়েছে আহত হয়ে পঙ্গু হয়ে পড়ার কারণে।
বরং এসব থেকে তাওবার জন্য অবশ্যই অনুতপ্ত হতে হবে, সব ধরনের পাপ থেকে মুক্ত হতে হবে এবং অতীত কর্মকান্ডের জন্য লজ্জিত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। এ জন্যেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: التوبة الندامة “অনুতপ্ত হওয়াই হল তাওবা”। [জামে সহীহ, হাদিস নং: ৬৮০২, আহমদ ও ইবনে মাজাহ]
মহান আল্লাহ কোন সৎ কর্ম বা অসৎ কর্ম করার আকাংখা পোষণকারী অপারগকে কর্ম সম্পাদনকারীর মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। আপনি জানেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন,
“দুনিয়া চার প্রকার লোকের জন্য; [১] সেই বান্দার জন্য যাকে আল্লাহ মাল ও জ্ঞান দান করেছেন সুতরাং সে এতে তার প্রভূকে ভয় করছে, তার আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক রাখছে এবং তার ব্যাপারে আল্লাহর হক কি তা জানছে, এ হল সর্বোত্তম অবস্থানে। [২] সেই বান্দা যাকে আল্লাহ জ্ঞান দান করেছেন কিন্তু মাল দেননি, সে হল সঠিক নিয়তের লোক, সে বলে, যদি আমার টাকা পয়সা থাকতো তাহলে উমুক ব্যাক্তির মত কাজ করতাম। সে তার নিয়ত অনুযায়ী সওয়াব পাবে। এদের দুজনের নেকী সমান হবে। [৩] আর সেই বান্দা যাকে আল্লাহ টাকা পয়সা দিয়েছেন কিন্তু জ্ঞান দান করেননি। সে না জেনেই তার টাকা পয়সা খরচ করছে। এতে সে আল্লাহকে ভয় করে না, আত্মীয়তা রক্ষা করে না এবং এতে আল্লাহর হকও সে জানে না। সে হল সর্ব নিকৃষ্ট অবস্থানে। [৪] আর সেই বান্দা যাকে আল্লাহ মালও দেননি জ্ঞানও দেননি, সে বলে আমার টাকা পয়সা থাকলে উমুকের মতই [খারাপ কাজ] করতাম। সে তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে। এরা দুজনই গুনাহর দিক থেকে সমান। [তিরমিযি, হাদিস : ২৩২৫]
দুই:- পাপের কদর্যতা ও ভয়াবহতা অনুভব করা; অর্থাৎ যদি সঠিক তাওবা করা হয়, তাহলে অতীত পাপের কথা স্মরণ হলেও কখনো আনন্দ ও মজা পাওয়া যাবে না অথবা কখনো ভবিষ্যতে সে সব কাজে ফিরে যাবে, এ কামনা মনে স্থান পাবে না।
ইবনুল কাইয়্যেম রহমতুল্লাহ আলাইহে তার লিখা [ الداء والدواء ] ‘রোগ ও চিকিৎসা’ এবং [ الفوائد ] ‘আল-ফাওয়াইদ’ নামক গ্রন্থে গুনাহের অনেক ক্ষতির কথা উলে¬খ করেছেন।
তন্মধ্যে রয়েছে: জ্ঞান থেকে বঞ্চিত হওয়া, অন্তরে একাকিত্ব অনুভব করা, কাজকর্ম কঠিন হয়ে যাওয়া, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, আল্লাহর আনুগত্য থেকে বঞ্চিত হওয়া, রুজি রোজগারের বরকত কমে যাওয়া, কাজ কর্মে সমন্বয় না হওয়া, গুনাহর কাজে অভ্যস্থ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এছাড়াও আল্লাহর ব্যাপারে পাপীর অন্তরে অনাসক্তি সৃষ্টি হয় এবং লোকজন তাকে অশ্রদ্ধা করে। জীবজন্তু ও পশু পাখি তাকে অভিশাপ দেয়। পাপী ব্যক্তি সর্বদা অপমানিত হতে থাকে। পাপীর অন্তরে মোহর পড়ে যায়। পাপী ব্যক্তি লানতের মাঝে পড়ে এবং পাপীর দু’আ আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। জলে ও স্থলে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। পাপীর আত্মমর্যাদাবোধ কমে যায়। লজ্জা চলে যায়, ফলে সে যা ইচ্ছা তাই করে। নিয়ামত হতে বঞ্চিত হয়। আল্লাহর আজাব ও বিপর্যয় নেমে আসে। পাপীর অন্তরে সর্বদা ভয় ও আতঙ্ক নেমে আসে এবং সে শয়তানের দোসরে পরিণত হয়। তার জীবন সমাপ্ত হয় মন্দের উপর এবং ঈমান হারা হয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হয়। পরকালীন আজাবে নিপতিত হয়।
পাপের এই ক্ষতি ও বিপর্যয় যদি বান্দা জানতে পারে, তাহলে সে পাপ থেকে সম্পূর্ণ দূরে থাকবে। কিছু কিছু লোক এক পাপ ছেড়ে আরেক পাপ করতে শুরু করে তার কিছু কারণ হল:
১. মনে করে যে, এর পাপ কিছুটা হালকা।
২. মন পাপের দিকে বেশী আকৃষ্ট হয় এবং এর দিকে ঝোঁক খুবই প্রবল থাকে।
৩. অন্যটির তুলনায় এ পাপ করার জন্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা সহজ ও সহায়ক হয়, অন্য পাপের জন্য অনেক কিছু জোগাড় করা লাগে।
৪. তার সঙ্গী সাথীরা এ পাপের সাথে জড়িত, তাদেরকে ত্যাগ করা কঠিন বলে মনে হয়।
৫. কোন কোন ব্যক্তির নিকট বিশেষ পাপ তার তার সঙ্গী সাথীদের মাঝে মান সম্মানের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য সে চিন্তা করে যেন তার অবস্থান সে ধরে রাখে এবং এ পাপ অব্যাহত রাখে, যেমনটি ঘটে বিভিন্ন অপরাধ ও সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধানদের বেলায়।
তিন- তাড়াতাড়ি তাওবা করা:- যার জন্য তাওবার প্রয়োজন সে যেন তাড়াতাড়ি তাওবা করে। কারণ তাওবা করতে দেরী করাটাই পাপ।
চার- আল্লাহর হক আদায় করা:- আল্লাহর হক যা ছুটে গেছে তা যথাসম্ভব আদায় করা। যেমন যাকাত দেয়া যা সে পূর্বে দেয়নি। কেননা এতে আবার দরিদ্র লোকজনের অধিকারও রয়েছে।
পাঁচ- পাপের স্থানকে ত্যাগ করা:- কারণ যেখানে পাপ করছে, যদি সেখানে অবস্থান করে, আবার সে পাপে জড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকে।
ছয়- স্থান ত্যাগ করা:- যারা পাপ কাজে সহযোগিতা করে তাদেরকে পরিত্যাগ করা। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করতে না পারলে আবারও সে পাপে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
“আন্তরিক বন্ধুরাই সেদিন একে অপরের শত্রুতে পরিণত হবে, মুত্তাকীরা ছাড়া”। [সূরা যুখরফ, আয়াত: ৬৮]
খারাপ সাথীরা একে অপরকে কিয়ামতের দিন অভিশাপ দিবে। এজন্য হে তাওবাকারী, আপনাকে এদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতে ও এদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে, যদি আপনি তাদেরকে দাওয়াত দিতে অপারগ হন। শয়তান যেন আপনার ঘাড়ে আবার সওয়ার হবার সুযোগ না পায় এবং আপনাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে আবার কুপথে নিয়ে না যায়। আর আপনি তো জানেন যে, আপনি দুর্বল তাকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবেন না। এ ধরনের অনেক ঘটনা রয়েছে যে, অনেক লোকই তার পুরাতন বন্ধু বান্ধবের সাথে সম্পর্কিত হওয়ার পর আবার পাপে জড়িয়ে পড়েছে।
সাত- নিজের কাছে রক্ষিত হারাম জিনিসকে নষ্ট করে ফেলা:- যেমন মাদক দ্রব্য, বাদ্যযন্ত্র, যেমন একতারা, হারমনিয়াম, অথবা ছবি, ব্লু ফ্লিম, অশ্লীল নভেল নাটক। এগুলো নষ্ট করে ফেলতে হবে অথবা পুড়িয়ে ফেলতে হবে। তাওবাকারীকে সঠিক পথে দৃঢ়ভাবে থাকার জন্য অবশ্যই সব জাহেলিয়াতের জিনিস থেকে মুক্ত হতে হবে। এ ধরনের অনেক ঘটনা রয়েছে, যাতে দেখা যায়, এসব হারাম জিনিসই তাওবাকারীর পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাবার পিছনে প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এর দ্বারাই সে পথভ্রষ্ট হয়েছে। আমরা আল্লাহর নিকট সঠিক পথে টিকে থাকার জন্য তাওফীক কামনা করছি।
আট- ভাল সঙ্গী-সাথী গ্রহণ করা:- ভাল সঙ্গী-সাথী গ্রহণ করতে হবে, যারা তাকে দ্বীনের ব্যাপারে সহায়তা করবে এবং এরা হবে খারাপ সঙ্গী সাথীর বিকল্প। আর চেষ্টা করতে হবে বিভিন্ন ধর্মীয় ও ইলমী আলোচনায় বসার জন্য। নিজেকে সব সময় এমন কাজে মশগুল রাখতে হবে যাতে কল্যাণ রয়েছে, যেন শয়তান তাকে পূর্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেবার সুযোগ না পায়।
নয়- হারাম বর্জন করে হালাল ভক্ষণ করা: নিজ শরীরের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে যাকে সে হারাম দিয়ে প্রতিপালন করেছে। একে আল্লাহর আনুগত্যের কাজে লাগাতে হবে এবং হালাল রুজি খেতে হবে যেন শরীরে আবার পবিত্র রক্ত-মাংস সৃষ্টি হয়।
দশ- গরগরা তথা মৃত্যুক্ষণ আসার পূর্বে তাওবা করা: তাওবা দম আটকে যাওয়া বা ফুরিয়ে যাবার [মৃত্যুর পূর্বক্ষণে শ্বাসকষ্ট শুরু হবার] পূর্বে এবং পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হবার পূর্বে হতে হবে। গরগরার অর্থ হল কণ্ঠনালী হতে এমন শব্দ বের হওয়া যা মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তে হয়ে থাকে। এর উদ্দেশ্য হল কিয়ামতের পূর্বেই তাওবা করতে হবে তা ছোট কিয়ামত হোক [মৃত্যু] বা বড় কিয়ামতই হোক [পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া]। কেননা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, من تاب إلى الله قبل أن يغرغر قبل الله منه “যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট তাওবা করবে গরগরা উঠার পূর্বে, আল্লাহ তার তাওবা কবুল করবেন”। [জামে সহীহ, হাদিস: ৬১৩২]
এগার- সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদয় হওয়ার পূর্বে তাওবা করা: কারণ, হাদীসে বর্ণিত রাসূল সা. বলেন, من تاب قبل أن تطلع الشمس من مغربها تاب الله عليه “যে ব্যক্তি পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উঠার পূর্বে তাওবা করবে, আল্লাহ তা’আলা তার তাওবা কবুল করবেন”। [মুসলিম: ২৭০৩]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/177/9
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।