hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অনন্য উপায় তাওবা

লেখকঃ জাকের উল্লাহ আবুল খায়ের

২১
তাওবার প্রতিবন্ধকতা
১- শয়তান মানুষের সামনে গুনাহগুলো সু-শোভিত করে তুলে এবং প্রিয় বানিয়ে দেয়। ফলে বান্দার অন্তর গুনাহের কর্মের দিক অগ্রসর ও ধাবিত হয়। আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করা হতে পলায়ন করে এবং ইবাদাত বন্দেগী করা তার নিকট কষ্টকর হয়।

২- হারামকে হালাল হিসেবে তুলে ধরে এবং হালালকে হারাম হিসেবে তুলে ধরে শয়তান বান্দাকে ধোকায় ফেলে দেয়। এ ছাড়াও ভালো কাজকে খারাপ এবং খারাপ কাজকে ভালো হিসেবে প্রকাশ করে শয়তান মানুষকে ধোকা দেয়। ফলে তার আর তাওবা করার সুযোগ হয় না। সে যে অন্যায় করছে, তা সে বুঝতেই পারে না।

৩- শয়তান বান্দাকে তাওবা থেকে ফিরানোর জন্য তারা তাকে বিভিন্ন ধরনের আশা দিয়ে থাকে। শয়তান বান্দাকে বলতে থাকে, তুমি তাওবা করতে এত তাড়াহুড়া করছ কেন? তোমারতো তাওবা করার এখনো অনেক সময় আছে। তুমি এখনো যুবক, পড়া লেখা শেষ করোনি, চাকুরি পাওনি ইত্যাদি। এরপর যখন চাকুরি পায় তখন বলে এখনো বিবাহ করোনি ইত্যাদি বলে শয়তান মানুষকে তাওবা থেকে ফিরিয়ে রাখে। এ ধরনের সমস্য সামনে আসলে মৃত্যুর কথা স্মরণ করবে। কারণ, মৃত্যু ছোট বড় কাউকেই ছাড়ে না। যে কোন সময় যে কোন বয়সের লোকের মৃত্যু এসে যেতে পারে। তখন আর তাওবা করার সুযোগ থাকবে না।

৪- গুনাহকে ছোট মনে করে তাওবা করা হতে বিরত থাকে। যখন কোন একটি গুনাহ করে, তখন শয়তান এসে বলে, এতো বড় ধরনের কোন অপরাধ নয় যে, তা হতে তাওবা করতে হবে। মানুষ এর চেয়ে আরও বড় বড় গুনাহ করে থাকে।

৫- তাওবা করার পর গুনাহ ছেড়ে আল্লাহর আনুগত্যের উপর অবিচল থাকা কষ্টকর হওয়ার কারণে তাওবা করতে মনে চায় না। কারণ, যখন তাওবা করে তখন সাথীরা বলে তুমি এত কষ্ট করছ কেন? তোমার থেকে তোমার সাথীরা দূরে সরে যাচ্ছে, সবাই তোমার বিরুদ্ধে ক্ষেপে যাচ্ছে।

৬- হতাশাও মানুষকে তাওবা থেকে ফিরিয়ে রাখে। কারণ, যখন কোন বান্দাহ গুনাহ করার পর তাওবা করতে চায়, তখন শয়তান এসে বলে, তোমার গুনাহ অনেক বড় যা আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করবে না। যদি ক্ষমা নাই করে, তাহলে তাওবা করে লাভ কি? ফলে সে তাওবা করা হতে বিরত থাকে।

উল্লেখিত বিষয়গুলো যখন আপনার সামনে আসবে তখন আমরা আপনাকে বলব, আপনি শয়তানদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করুন। নিশ্চয় শয়তানদের চক্রান্ত খুবই দুর্বল। আপনি শয়তানের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন, এসব শয়তান ও তার দোসররা অবশ্যই থেমে যাবে অতঃপর খুব শীঘ্রই তার ষড়যন্ত্র দূর্বল হয়ে পড়বে এবং মুমিনের ধৈর্য ও দৃঢ়তার সামনে সে পরাজিত হবে।

আপনি নিশ্চিত থাকুন যে, আপনি যদি শয়তানের কথা মত চলেন, তার কাছে মাথা নত করেন, তাহলে সে আরো বেশী বেশী ধোকা আপনার বিরুদ্ধে দাঁড় করাবে। সুতরাং পূর্বে ও পরে সর্বাবস্থায় আপনিই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অতএব তার অনুসরণ না করে আল্লাহর সাহায্য চান এবং বলুন:

﴿ حَسۡبُنَا ٱللَّهُ وَنِعۡمَ ٱلۡوَكِيلُ ١٧٣ ﴾ [ ال عمران : ١٧٣ ]

“আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই আমার উত্তম অভিভাবক”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১৭৩] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোন সম্প্রদায়ের ক্ষতির আশংকা করতেন তখন বলতেন:

] اللَّهُمَّ إِنَّا نَجْعَلُكَ فِي نُحُورِهِمْ وَنَعُوذُبِكَ مِنْ شُرُورِهِمْ ] [ مسند أحمد، أبو داود، صحيح الجامع [

“হে আল্লাহ! আমি আপনাকে তাদের গলার উপর ছেড়ে দিচ্ছি এবং আপনার নিকট পরিত্রাণ চাচ্ছি তাদের খারাপী থেকে”। [আহমদ: ১৯৭১৯ আবু দাউদ: ১৫৩৭]

অনেক সময় দেখা যায় গুনাহের কর্ম ছাড়ার কারণে তার সাথে তার খারাপ বন্ধুরা যাদের সাথে ইতিপূর্বে বন্ধুত্ব ছিল, তারা যোগাযোগ করে তাকে হুমকি দিয়ে বলে, তুমি এতদিন আমাদের সাথে ছিলে এখন কেন আমাদের থেকে দূরে সরে গেলে? আমাদের কাছে তোমার সব গোপন তথ্য আছে যেগুলো আমরা রেকর্ড করে রেখেছি, তোমার ছবিও আমাদের নিকট রয়েছে, তুমি যদি আমাদের সাথে বের না হও তাহলে তোমার পরিবারের নিকট সব ফাঁস করে দিবো! একথা সঠিক যে, আপনার অবস্থান খুবই নাজুক।

এ ধরনের কোন পরিস্থিতির স্বীকার হলে, আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে, আল্লাহ মুত্তাকিদের সাথে রয়েছেন, তাওবাকারীদের সাথে রয়েছেন এবং তিনি মুমিনদের অভিভাবক। তিনি তাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন না এবং তাদেরকে ছেড়ে দিবেন না। তাঁর নিকট কোন বান্দা আশ্রয় নেয়ার পর সে কখনো অপমানিত হয় না। আপনি জেনে রাখুন, নিশ্চয় কঠিন অবস্থার সাথেই সহজ অবস্থা আসে এবং সংকীর্ণতার পরেই প্রশস্ততা আসে।

হে তাওবাকারী ভাই!

আপনার জন্য একটি ঘটনা উল্লেখ করছি যা আমাদের কথার যথার্থতা প্রমাণ করবে। ঘটনাটি হল, প্রখ্যাত ফেদায়ী [গেরিলা] সাহাবী মারসাদ ইবন আবিল মারসাদ আল গানাবীর, যিনি দুর্বল মুসলমানদেরকে মক্কা থেকে গোপনে মদীনায় নিয়ে আসতেন। তিনি মক্কা থেকে দুর্বল বন্দী লোকদের গোপনে মদীনায় পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করতেন।

মক্কায় একজন নষ্টা মহিলা ছিল যার নাম আনাক এবং সে ছিল তার বান্ধবী। তিনি মক্কার একজন বন্দী লোককে ওয়াদা দিয়েছিলেন মদীনায় পৌছে দেয়ার। তিনি বলেন, এক চাঁদনী রাতে আমি মক্কার এক দেয়ালের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। আনাক আমার ছায়া দেখে এগিয়ে আসে এবং বলে, মারসাদ? আমি বললাম হাঁ, মারসাদ। সে বলল, মারহাবা, স্বাগতম, এস আমার কাছে রাত কাটাও। আমি বললাম, হে আনাক! আল্লাহ ব্যভিচারকে হারাম করেছেন। সে তখন চিৎকার দিয়ে বলে উঠলো, হে তাবুবাসীরা! এই লোকটি তোমাদের বন্দীদেরকে নিয়ে ভাগতে চায়।

তিনি বলেন, আটজন লোক আমার পিছু নেয় এবং আমি তখন খান্দামা পাহাড়ে [মক্কার প্রবেশ পথের একটি পাহাড়] ঢুকে পড়ে এক গুহায় লুকিয়ে যাই। এরা আমার সন্ধানে আমার কাছে এসে পড়ে, কিন্তু আল্লাহ আমাকে এদের থেকে আড়াল করে রাখেন। তিনি বলেন, এরপর তারা ফিরে যায় এবং আমিও ঐ লোকটির নিকট গিয়ে তাকে বহন করে নিয়ে আসি। লোকটি ছিল বেশ ভারী, আমার অনেক কষ্ট হয়ে ছিল। তাকে কিছু দূরে বয়ে নিয়ে গিয়ে তার হাত পায়ের বাঁধন খুলে ফেলি। আমি অনেক কষ্টে তাকে মদীনায় নিয়ে আসি। এরপর আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলি, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আনাককে বিয়ে করতে পারি? [কথাটি দুবার বললাম] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ করে থাকলেন কোন জবাব দিলেন না। তখন এ আয়াত নাযিল হয়:

﴿ ٱلزَّانِي لَا يَنكِحُ إِلَّا زَانِيَةً أَوۡ مُشۡرِكَةٗ وَٱلزَّانِيَةُ لَا يَنكِحُهَآ إِلَّا زَانٍ أَوۡ مُشۡرِكٞۚ ٣ ﴾ [ النور : ٣ ]

“ব্যভিচারী পুরুষ ব্যভিচারিণী মহিলাকেই বিয়ে করে অথবা মুশরিকা মহিলাকে এবং ব্যভিচারিণী মহিলা ব্যভিচারী পুরুষ অথবা মুশরিক লোককেই বিয়ে করে থাকে”। [সূরা নূর, আয়াত:১৭]

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে মারসাদ! ব্যভিচারী পুরুষই কেবল ব্যভিচারিণীকে অথবা মুশরিকা মহিলাকে বিয়ে করে থাকে এবং ব্যভিচারিণী মহিলাও একমাত্র ব্যভিচারী পুরুষ অথবা মুশরিক লোককে বিয়ে করে থাকে, সুতরাং তুমি তাকে বিয়ে করো না”।

আপনি দেখলেন কিভাবে আল্লাহ তা’আলা ঈমানদারের পক্ষে প্রতিরোধ গড়লেন এবং তিনি মুহসিনদের [সৎকর্মশীল লোকদের] সাথে কি আচরণ করলেন? অবস্থা যদি খুবই খারাপ হয় যে, আপনি যা আশংকা করছেন তাই ঘটে, আর এর ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে তাহলে আপনি আপনার অবস্থান বর্ণনা করুন, স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিন এবং বলুন, হ্যাঁ, আমি পাপ করতাম। এখন আল্লাহর নিকট তাওবা [প্রত্যাবর্তন] করেছি? এখন তোমরা কি চাও?

আমাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে যে, প্রকৃত কেলেঙ্কারী তো হল আল্লাহর সামনে কিয়ামতের দিন প্রকাশিত কেলেঙ্কারী। সেই ভয়ানক দিনে যেদিন একশ, দু’শ, হাজার, দু’হাজার লোকের সামনে নয় বিশ্বের সকল মানুষের সামনে, সমস্ত সৃষ্টিকুলের সামনে, ফেরেশতা, জিন ও ইনসান সবার সামনে আদম থেকে শুরু করে দুনিয়ার সর্বশেষ মানুষের সামনে তা ঘটবে।

আসুন আমরা ইবরাহীম আলাইহি ওয়া সাল্লামের দু’আ পাঠ করি:

﴿ وَلَا تُخۡزِنِي يَوۡمَ يُبۡعَثُونَ ٨٧ يَوۡمَ لَا يَنفَعُ مَالٞ وَلَا بَنُونَ ٨٨ إِلَّا مَنۡ أَتَى ٱللَّهَ بِقَلۡبٖ سَلِيمٖ ٨٩ ﴾ [ الشعراء : ٨٧، ٨٩ ]

েআর যেদিন সকলকে উত্থাপিত করা হবে সেদিন আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না। যেদিন কোন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কাজে আসবে না। একমাত্র কাজে আসবে যদি সঠিক অন্তঃকরণ নিয়ে কেউ উপস্থিত হয়”। [[সূরা শুআরা, আয়াত: ৮৭,৮৯]] সংকট মুহূর্তে নবীর শেখানো দু’আ পড়ে নিজেকে হেফাযত করুন:

] اللَّهُمَّ اسْتُرْ عَوْرَاتِنَا وَآمِنْ رَوْعَاتِنَا، اللَّهُمَّ اِجْعَلْ ثَأْرَنَا عَلَى مَنْ ظَلَمَنَا، وَانْصُرْنَا عَلَى مَنْ بَغَى عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ لاَ تُشْمِتْ بِنَا الأَعْدَاءَ وَلاَ الْحَاسِدِيْنَ [

“হে আল্লাহ! আপনি আমাদের ইজ্জত রক্ষা করুন এবং আমাদের নিরাপদ রাখুন। হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিশোধ তাদের উপর ফেলুন যারা আমাদের উপর জুলুম করেছে এবং আমাদেরকে সাহায্য করুন তাদের বিরুদ্ধে যারা আমাদের উপর চড়াও হয়েছে। হে আল্লাহ! আমাদের শত্রুদেরকে ও হিংসুকদেরকে আমাদের বিরুদ্ধে খুশি হতে দেবেন না।” [আহমদ: ১৬২]

আল্লাহর নিকট প্রার্থনা হল আল্লাহ যেন আমাদের ক্ষমা করেন এবং আমাদের তওবা কবুল করেন। আল্লাহ আমাদের সকলকে এ থেকে রক্ষা করুন। নিশ্চয় তিনি শুনেন ও দোয়া কবুল করেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন