hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

বিদ‘আত ও এর মন্দ প্রভাব

লেখকঃ শাইখ আবদুল আযীয ইবন আব্দুল্লাহ ইবন বায

২৫
তলোয়ার দ্বারা নিজেকে আঘাত করার উৎসব পালন করা নিন্দনীয় কাজ
প্রশ্ন: একটি ব্যাপার দেখে আমি এবং আমার পরিবারের সকলেই অত্যন্ত হতভম্ব হয়েছি, আর তা হলো: আমাদের গ্রামে কিছু অনুষ্ঠান এবং জন্মোৎসব পালন করা হয়, এতে কিছু আশ্চর্য আশ্চর্য কাজ হয়ে থাকে। কিছু লোক তলোয়ার বা খঞ্জর দিয়ে নিজেকে আঘাত করে এবং হাত বা হাতের আঙ্গুল কেটে ফেলে। এ সব কাণ্ড কি যুক্তিসঙ্গত? এটি কি শয়তানের কাজ? নাকি জাদু টোনা? যদি শয়তানের কাজ হয়ে থাকে তাহলে তা কিভাবে দেখবেন যে, কেউ যদি বলে তা ঠিক নয় বরং তা জাদু, তাহলে পরের দিনই সে মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে যা থেকে ভালো হওয়ার সম্ভাবনা কম। কিন্তু যদি তাদের নিকট ক্ষমা চায় তাহলেই ভালো হয়। নিশ্চয়ই তা একটি ফেৎনা, আমরা এর সম্মুখীন হচ্ছি। এ ব্যাপারে আমাদেরকে একটি সঠিক দিক নির্দেশনা দিন, আল্লাহ আপনাকে উত্তম বদলা দিন।

উত্তর: সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর। অতঃপর প্রশ্নকারী উল্লেখ করেছেন যে, কিছু লোক অনুষ্ঠান এবং উৎসব পালনের সময় তাদের হাত এবং হাতের অঙ্গুলি কেটে ফেলে এবং যে ব্যক্তি এর নিন্দা করবে তাকে বিভিন্ন রোগে আক্রমন করে। এ সবই শয়তানী কাজ, মানুষের জন্য সাজিয়েছে তার আনুগত্য করার জন্য, এমন কি সে যদি বলে: আল্লাহর নাফরমানী করে তার আনুগত্য করতে তারা তা-ই করে থাকে।

আর এ অপরাধীগণ যে কাজ করে থাকে তা হলো: জাদুর মাধ্যমে তারা লোকদের চোখে ধাঁধাঁ বা ভেলকি লাগিয়ে রাখে ফলে তারা মনে করে যে, হাত-পা অথবা হাত-পায়ের আঙ্গুল কেটে ফেলে, আসলে এর কিছুই নয়, সবকিছুই মিথ্যা এবং জাদু টোনা।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿قَالَ أَلۡقُواْۖ فَلَمَّآ أَلۡقَوۡاْ سَحَرُوٓاْ أَعۡيُنَ ٱلنَّاسِ وَٱسۡتَرۡهَبُوهُمۡ وَجَآءُو بِسِحۡرٍ عَظِيمٖ ١١٦ ﴾ [ الاعراف : ١١٦ ]

“অতঃপর যখন তারা তাদের রশিগুলো নিক্ষেপ করল তখন লোকদের চোখ ধাঁধিয়ে ফেলল এবং তাদেরকে ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলল, এবং তারা মহাজাদু প্রদর্শন করল।” [সূরা আরাফ/১১৬]

কাজেই জাদুকর অন্য লোকদের চোখকে জাদু করে ফলে, তারা রশি এবং লাঠিকে সাঁপ দেখতে পায়, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন:

﴿قَالَ بَلۡ أَلۡقُواْۖ فَإِذَا حِبَالُهُمۡ وَعِصِيُّهُمۡ يُخَيَّلُ إِلَيۡهِ مِن سِحۡرِهِمۡ أَنَّهَا تَسۡعَىٰ ٦٦ ﴾ [ طه : ٦٦ ]

“মুসা বললেন, বরং তোমরা নিক্ষেপ কর, তখনই তার মনে হলো যেন তাদের লাঠি এবং রশিগুলো ছুটাছুটি করছে।” [সূরা ত্বা-হা/৬৬]

মোটকথা, এ সকল জাদুকরী কাজ ভ্রান্ত। এর নিন্দা করা ওয়াজিব। আর সরকারের উচিৎ হলো: তাদেরকে এবং তাদের মত যারা আছে সকলকে এ কাজ থেকে নিষেধ করা এবং তাদেরকে শাস্তি দেওয়া। ইসলামী শাসন হলে তাদের ক্ষতি থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য তাদের উপর ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করা ওয়াজিব। তেমনি কারো জন্মোৎসব পালন করার কোনো ভিত্তি নেই বরং তা মানুষের তৈরী করা বিদ‘আত, ইসলামে কারো কোনো জন্মোৎসব নেই। বরং নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণী অনুযায়ী ইসলামে উৎসব হলো: ঈদুল আযহা এবং ঈদুল ফিতর, হাজিদের জন্য আরাফা দিবস, এবং মিনার দিনগুলো।

কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা হুসাইন বা অন্য কারো জন্মোৎসব পালন করা ইসলামের স্বর্ণযুগের পর পরবর্তী লোকদের তৈরী করা বিদ‘আত। কাজেই তা ছেড়ে দিয়ে তাওবা করা, একে অপরকে সৎকাজে সহযোগিতা করা, পরস্পরে সৎ পরামর্শ দেওয়া এবং আল্লাহ ও রাসূলের বিধানের দিকে ফিরে আসা সকল মুসলিমের উপর ওয়াজিব। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণেই রয়েছে সকল কল্যাণ এবং তাঁর ও সাহাবীগণের বিরোদ্ধচারণ রয়েছে যাবতীয় অমঙ্গল।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

“যে ব্যক্তি আমার এ দ্বীনের মধ্যে নতুন কোনো জিনিস সৃষ্টি করবে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয় তা প্রত্যাখ্যাত।”

তিনি আরো বলেন : “যে ব্যক্তি এমন কোনো আমল করবে যা আমার শরিয়ত সমর্থিত নয় তা প্রত্যাখ্যাত।”

সহীহ বুখারীতে জাবের ইবন আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুম‘আর খুৎবায় বলেছেন,

“অতঃপর সর্বোত্তম বাণী হলো, আল্লাহর কিতাব এবং সর্বোত্তম হেদায়েত হলো: মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হেদায়েত, আর নিকৃষ্টতর কাজ হলো এর নব আবিষ্কৃত কাজ, এবং প্রতিটি বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা।”

ইমাম নাসায়ী আরো একটু বাড়িয়ে বর্ণনা করেছেন: “এবং প্রতিটি ভ্রষ্টতাই জাহান্নামে।”

অনুরূপ ইরবাদ্ব ইবন সারিয়ার হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “এবং নব রচিত কর্মসমূহ থেকে সাবধান থাক; কেননা প্রতিটি নব আবিষ্কৃত কাজ হচ্ছে বিদ‘আত এবং সকল বিদ‘আত হচ্ছে ভ্রষ্টতা।”

অতএব মিসর, ইরাক, ইরানসহ সকল জায়গার মুসলিম ভাইদের প্রতি আমার উপদেশ হলো: তারা যেন এ সকল নিন্দনীয় উৎসব পালন করা ছেড়ে দিয়ে শরিয়ত সম্মত ইসলামি উৎসবগুলো পালন করে এবং রাত্রে বা দিনের বেলায় উপযুক্ত সময়ে তাদের মাজলিস যেন কুরআন ও হাদীসের আলোকে দ্বীনের জ্ঞান শিক্ষার জন্য হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সেই বাণীর উপর আমল করার লক্ষ্যে যা সহীহ হাদীসে এসেছে:

“তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সেই ব্যক্তি, যে কুরআন শিক্ষা করে এবং শিক্ষা দেয়।” [সহীহ বুখারী; হাদীস নং ৫০২৭।]

এবং তাঁর বাণী:

“আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে তিনি দ্বীনের জ্ঞান শিক্ষা দান করেন।” [সহীহ বুখারী; হাদীস নং ৭১, সহীহ মুসলিম; হাদীস নং ১০৩৭।]

এবং তাঁর বাণী:

“যে ব্যক্তি জ্ঞান শিক্ষার জন্য বের হবে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতের পথকে সহজ করে দিবেন।” [সহীহ মুসলিম; হাদীস নং ২৬৯৯।]

কারো জন্মোৎসব পালনের জন্য একত্রিত হওয়া বিদ‘আত, কাজেই তা ছেড়ে দেওয়া এবং তা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে ভালো পদ্ধতি এবং সদোপদেশের মাধ্যমে পরস্পরে সহযোগিতা করা উচিৎ যেন প্রকৃত মুমিন নর-নারীগণ তা বুঝতে পারে এবং মাজলিস যেন হয় আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্যের জন্য, দ্বীনের জ্ঞান শিক্ষা গ্রহণ এবং বুঝার জন্য, ও পরস্পরে ভালো এবং তাকওয়াপূর্ণ কাজে সহযোগিতা করার জন্য। কিন্তু কারো জন্মোৎসব পালন করার জন্য একত্রিত হওয়া বিদ‘আত, বিশেষ করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্মোৎসব পালনের জন্য একত্রিত হওয়া। কারণ তিনি উম্মতের জন্য তা বিধান করেন নি, যেমন পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে। যদি তাঁর জন্মোৎসব পালন বৈধ হত তাহলে তিনি তা নিজে করতেন এবং তাঁর সাহাবীগণকে পালন করা শিক্ষা দিতেন, ফলে তাঁর পরবর্তীতে সাহাবীগণ নিজেরা পালন করতেন এবং লোকদেরকে তা শিক্ষা দিতেন তারা তা পালন করতো। যেহেতু এর কোনো কিছুই হয় নি, বিধায় বুঝতে হবে যে তা বিদ‘আত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন