মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
প্রথমত: আল্লাহর নামসমূহ ও সিফাত নির্ধারণে কুরআন, সুন্নাহ ও বিবেকের দলীল
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/36/24
[ক] কুরআন ও সুন্নাহর দলীল
ইতোপূর্বে আমরা উল্লেখ করেছি যে, তাওহীদ তিনভাগে বিভক্ত: তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ, তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ, তাওহীদুল আসমা ওয়াস-সিফাত। আমরা প্রথম দু’টির ওপর বেশ কিছু প্রমাণ উল্লেখ করেছি। এখন আমরা তৃতীয় প্রকার তাওহীদুল আসমা ওয়াস-সিফাতের ওপর কিছু দলীল পেশ করব।
“আর আল্লাহর রয়েছে সুন্দর সুন্দর নাম তোমরা সে নামে তাঁকে আহ্বান করো। আর সেসব লোকদের তোমরা পরিত্যাগ করো যারা তাঁর নামসমূহে বিকৃতি সাধন করে। তারা যা করত অচিরেই তাদেরকে তার প্রতিদান দেওয়া হবে।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ১৮০]
এ আয়াতটিতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা নিজের জন্য অনেকগুলো নাম সাব্যস্ত করেছেন এবং জানিয়েছেন যে, সেগুলো সুন্দরতম। তিনি তাঁকে সে নামসমূহে ডাকার নির্দেশ প্রদান করেছেন। যেমন এভাবে তাঁকে ডাকা হবে যে, ‘ইয়া আল্লাহ ! ইয়া রাহমান! ইয়া রাহীম! ইয়া হাইয়্যূ! ইয়া কাইয়্যেম! ইয়া রাব্বাল আলামীন!’ আর যারা তাঁর নামে বিকৃতি সাধন করে তাদেরকে তিনি ভয় প্রদর্শন করেছেন। অর্থাৎ যারা তাঁর নামের ব্যাপারে সত্যকে পাশ কাটিয়ে চলে, আল্লাহ থেকে সে নামগুলোকে অস্বীকার করার মাধ্যমে অথবা তার যে শুদ্ধ অর্থ রয়েছে সে শুদ্ধ অর্থ ব্যতীত অন্য অর্থে সেগুলোকে প্রয়োগ করার মাধ্যমে কিংবা অন্য আরো যেভাবে তা বিকৃত করা যায় সেভাবে বিকৃত করার মাধ্যমে; তাদেরকে তিনি এ মর্মে ভয় প্রদর্শন করেছেন যে, তাদের এ মন্দ কর্মের প্রতিফল তিনি অচিরেই তাদেরকে প্রদান করবেন। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,
“তিনি আল্লাহ। তিনি ব্যতীত প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই। তিনি গায়েব ও দৃশ্যমান সবকিছুর ব্যাপারে জ্ঞান রাখেন। তিনি দয়াময়, পরম দয়ালু। তিনি আল্লাহ। তিনি ব্যতীত প্রকৃত কোনো ইলাহ নেই। তিনি মালিক, তিনি পবিত্র, তিনি শান্তি, তিনি নিরাপত্তাবিধায়ক, তিনি পরাক্রমশালী, তিনি প্রবল, তিনি অতি মহিমান্বিত, তারা যাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ তা হতে পবিত্র ও মহান। তিনি আল্লাহ সৃষ্টিকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, অবয়বদানকারী। তাঁর রয়েছে সকল উত্তম নাম। আকশমণ্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সকলি তাঁরই পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে। তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।” [সূরা আল-হাশর, আয়াত: ২২-২৪]
এ আয়াতগুলো আল্লাহর নামসমূহকে সাব্যস্ত করে।
[২] রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নায় আল্লাহর নামসমূহ সাব্যস্ত করার ব্যাপারে অনেকগুলো দলীল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটি হলো আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“আল্লাহর রয়েছে নিরানব্বইটি নাম, একটি ছাড়া একশতটি। যে ব্যক্তি এগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাল, সে জান্নাতে প্রবেশ করল।” [হাদীসটি মুত্তাফাকুন আলাইহি। সহীহ বুখারী, হাদীস নং ২৭৩৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৯৮৬।]
আল্লাহর নামসমূহ এ সংখ্যায় সীমাবদ্ধ নয়। এর প্রমাণ হলো - আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“আমি আপনার কাছে আপনার সে সব নামের উসিলায় দো‘আ করছি যেসব নাম আপনার রয়েছে, যে নামে আপনি নিজেকে নামকরণ করেছেন অথবা যে নাম আপনি আপনার গ্রন্থে নাযিল করেছেন অথবা আপনার সৃষ্টির কাউকে আপনি শিক্ষা দিয়েছেন কিংবা আপনার কাছে যে গায়েবী ইলম রয়েছে তাতে আপনি যে নাম রেখে দিয়েছেন সেগুলোর উসিলায় আমি প্রার্থনা করছি যে, আপনি মহান আল-কুরআনকে আমার হৃদয়ের প্রিয় বসন্ত করে দিন।” [হাদীসটি মুসনাদ গ্রন্থে (৪৩১৮ নং) ইমাম আহমদ বর্ণনা করেছেন। ইবন হিব্বান (৯৭২ নং) একে সহীহ হাদীস বলেছেন। এ হাদীসটি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর নাম নিরানব্বই থেকেও অনেক বেশি। অতএব, পূর্ববর্তী নিরানব্বই নামের হাদীসটি দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে, যে ব্যক্তি এ নিরানব্বইটি নাম শিখবে, সেগুলো দ্বারা আল্লাহকে আহবান করবে, আল্লাহর কাছে দো‘আ করবে এবং সেগুলোর উসীলায় আল্লাহর ইবাদাত করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর এটি এ নিরানব্বইটি নামের ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য।]
আল্লাহর নামসমূহের প্রত্যেকটি নামই তাঁর যে কোনো একটি সিফাতকে শামিল করে। অতএব, ‘আল-‘আলীম’ এ নামটি ‘ইলম’ গুণের প্রমাণ বহন করছে। ‘আল-হাকিম’ নামটি হিকমতের প্রমাণ বহন করছে। ‘আস-সামি‘উ’ ও ‘আল-বাছিরু’ এ দু’টো নাম প্রমাণ বহন করছে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তির ওপর। এভাবে প্রত্যেকটি নাম আল্লাহর একেকটি সিফাত বা গুণের প্রমাণ বহন করছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
“বল, তিনি আল্লাহ একক। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। তাঁর কোনো সন্তান নেই, তিনিও কারো সন্তান নন। কেউই তাঁর সমকক্ষ নয়।” [সূরা আল-ইখলাস, আয়াত: ১-৪]
আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আনসারের এক লোক মসজিদে কুবায় ইমামতি করছিল। যখনি সে কোনো সূরা দিয়ে সালাত শুরু করত তখনি সে ‘কুল-হু আল্লাহু আহাদ’ সূরাটি পাঠ করত। এটি পাঠ শেষ করার পর সে এর সাথে আরেকটি সূরা মিলাত। সে প্রত্যেক রাক‘আতেই এরকম করত। তখন তার সাথীরা এ ব্যাপারে তার সাথে কথা বলল। তারা বলল, তুমি এই সূরা দিয়ে সালাত শুরু করো এরপর অন্য একটি সূরা মিলাও কারণ তোমার কাছে হয়ত এই সূরাটি যথেষ্ট নয়। সুতরাং হয় তুমি এ সূরা দিয়ে পাঠ করবে অথবা এ সূরা ছেড়ে অন্য সূরা পাঠ করবে। তখন সে ব্যক্তি বললেন, ‘আমি সূরা ইখলাস ত্যাগ করতে পারবো না। যদি তোমরা চাও তাহলে আমি তোমাদের এভাবেই ইমামতি করব। আর যদি তোমরা অপছন্দ করো তাহলে আমি তোমাদেরকে ছেড়ে যাবো।’ তাদের অভিমত ছিল সে ব্যক্তি তাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি এবং তাদের অপছন্দ ছিল যে, তিনি ছাড়া আর কেউ ইমামতি করবেন। যখন তাদের কাছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসলেন তখন তারা তাঁকে সংবাদটি দিলেন। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, “হে অমুক! তোমাকে তোমার বন্ধুরা যে নির্দেশ প্রদান করছে তা পালন করতে কিসে তোমাকে নিষেধ করছে? আর প্রত্যেক রাক‘আতেই এ সূরা নিয়মিত পাঠে কিসে তোমাকে উদ্বুদ্ধ করছে?” তখন তিনি বললেন, ‘আমি এ সূরাটিকে ভালোবাসি।’ তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, “এ সূরার প্রতি ভালোবাসা তোমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।” [হাদীসটি ইমাম বুখারী তার গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন, হাদীস নং ৭৪১।]
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে একটি ছোট সৈন্য দলে প্রেরণ করলেন। সে ব্যক্তি তার সাথীদের নিয়ে সালাতের ইমামতি করত এবং সে ‘কুল-হু আল্লাহ’ দিয়ে সালাত শেষ করত। যখন তারা ফিরে আসল তখন তারা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলে তিনি বললেন, “তাকে জিজ্ঞেস করো কেন সে এ কাজটি করত?” তারা তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, কেননা এ সূরাটি হচ্ছে আল্লাহর গুণ, তাই আমি এ সূরাটি দিয়ে পড়তে ভালোবাসি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তাকে এ সংবাদ দাও যে, আল্লাহ তা‘আলা তাকে ভালোবাসেন।” [সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৬৯৪০।] অর্থাৎ সূরাটি আল্লাহর গুণাবলীকে শামিল করছে।
আল্লাহ তা‘আলা এ সংবাদও দিয়েছেন যে, তাঁর মুখমণ্ডল রয়েছে। তিনি বলেন,
এ সংবাদও দিয়েছেন যে, তাঁর দু’টো হাত রয়েছে। তিনি বলেছেন, ﴿لِمَا خَلَقۡتُ بِيَدَيَّۖ ﴾ [ص: ٧٥ ] “আমার দু’হাত দিয়ে আমি যা সৃষ্টি করেছি।” [সূরা সোয়াদ, আয়াত: ৭৫] ﴿بَلۡ يَدَاهُ مَبۡسُوطَتَانِ ﴾ “বরং তাঁর দুই হস্ত প্রসারিত।” [সূরা আল-মায়েদাহ, আয়াত: ৬৪]
তিনি এ সংবাদও দিয়েছেন যে, তিনি সন্তুষ্ট হন, তিনি ভালোবাসেন, তিনি ক্রোধান্বিত হন, তিনি রাগান্বিত হন ইত্যাদি আরো অনেক গুণাবলী রয়েছে যেগুলো দিয়ে আল্লাহ নিজেকে বর্ণনা করেছেন অথবা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ব্যাপারে বর্ণনা করেছেন। আর আল্লাহর যে সকল নাম ও গুণাবলী সাব্যস্ত করার ক্ষেত্রে শরী‘আতের দলীল রয়েছে সেগুলোর ওপর বিবেকের নিম্নলিখিত দলীলও প্রমাণ বহন করছে:
[১] বিভিন্ন প্রকার, নানা পার্থক্য ও নিজ নিজ কর্তব্য আদায়ে নিজস্ব শৃঙ্খলা নিয়ে এই যে বিশাল সৃষ্টিজগত রয়েছে এবং তাদের জন্য দেওয়া নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা চলছে সেসব কিছুই মহান আল্লাহর মহত্ত্ব, সামর্থ, কুদরত ও তাঁর জ্ঞান-হিকমত-ইচ্ছার ওপর প্রমাণ বহন করছে।
[২] ইহসান এবং দয়া প্রদর্শন, ক্ষতি অপসারণ, বিপদ থেকে উদ্ধার এ সকল কিছুই আল্লাহর রহমত, দয়া, করুণা ও মহত্ত্বের প্রমাণ বহন করছে।
[৩] পাপীদের শাস্তি এবং তাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ, তাদের প্রতি আল্লাহর ক্রোধ ও আল্লাহর ঘৃণার প্রমাণ বহন করছে।
[৪] আর অনুগত লোকদের সম্মানিত করা এবং তাদের পুরস্কৃত করা তাদের প্রতি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও ভালোবাসার প্রমাণ বহন করছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/36/24
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।