মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অমুসলিমদের কেউ হাদীছের বিরুদ্ধে লিখলে মুসলমানেরা তা সহজে গ্রহণ করে না। পক্ষান্তরে মুসলিম পন্ডিতগণের কেউ যখন হাদীছের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষভাবে লেখেন, তখন মুসলমানদের অধিকাংশ তা গ্রহণ না করলেও কিছু লোক অবশ্যই তা গ্রহণ করেন। কিন্তু মুশকিল হয় তখনই, যখন দেখা যায় যে, কোন ব্যক্তি দেশে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের জন্য প্রতিজ্ঞা ঘোষণা করেছেন, ইসলামের পক্ষে জান-মাল, সময় ও শ্রমের কুরবানী দিচ্ছেন, অথচ ইসলামী আইনের অন্যতম মূল উৎস ‘হাদীছ’-এর প্রামাণিকতা সম্পর্কে সন্দেহজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছেন। একদিকে তিনি হাদীছের পক্ষে কথা বলছেন, অন্যদিকে তার লেখনী ও বক্তব্য হাদীছ বিরোধীদের পক্ষে মযবুত দলীল হিসাবে প্রতিভাত হচ্ছে, এমন ধরনের ইসলামী চিন্তাবিদগণের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর আক্বীদা ও আমলের সর্বাধিক ক্ষতি সাধিত হয়ে থাকে। এমনি ধরনের দু’একজন সুপ্রসিদ্ধ ও প্রভাবশালী আলেমের দৃষ্টান্ত উদাহরণ স্বরূপ নিম্নে তুলে ধরা হ’ল।-
১. মাওলানা মওদূদী (১৯০৩-১৯৭৯ খৃঃ)
সাইয়িদ আবুল আ‘লা মওদূদী ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের আওরঙ্গাবাদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪১ সালে তিনি جماعت إسلامى (‘জামায়াতে ইসলামী’ -ইসলামী দল) নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এবং ترجمان القرآن ‘তারজুমানুল কুরআন’ (কুরআনের মুখপত্র) নামে একটি উর্দূ মাসিক পত্রিকা বের করেন। তিনি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের উপরে অসংখ্য বই ও পুস্তিকা প্রণয়ন করেন। নাস্তিক্যবাদী চিন্তাধারা ও পাশ্চাত্যের ইসলাম বিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে তাঁর আকর্ষণীয় ও যুক্তিপূর্ণ লেখনী বহু লোকের চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে দেয় ও তারা ইসলামের জন্য জান-মাল উৎসর্গ করতে প্রস্ত্তত হয়ে যায়।
১৯৪৭-এর পরে তিনি পাকিস্তানের লাহোরে হিজরত করেন ও পাকিস্তানে ইসলামী হুকূমত প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তানে মাওলানা আব্দুর রহীম (১৯১৮-১৯৮৭) তাঁর বইসমূহ বাংলায় অনুবাদ করেন। ফলে বাংলাদেশে তাঁর অনুসারীদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থকে। পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশে এই দল বর্তমানে তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
মাওলানা মওদূদী বিভিন্ন বিষয়ে বেশুমার লেখনীর অধিকারী ছিলেন। ফলে অনেক কিছু ভুল হওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। তিনি নিজেও সেকথা স্বীকার করেছেন এবং তাঁর তাফসীর ‘তাফহীমুল কুরআন’-এর প্রথম সংস্করণের অনেক বিষয় তিনি পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করেছেন। যেমন সূরা বাক্বারাহ ২০৩ আয়াত ও সূরা নিসা ১১ আয়াতের ভুল তাফসীর তিনি পরবর্তী সংস্করণে সংশোধন করেছেন। অনুরূপভাবে তাঁর পত্রিকা ‘তারজুমানুল কুরআনে’ (৪র্থ বর্ষ ৬ষ্ঠ সংখ্যা ১৯৫৫ পৃঃ ৩৭৯)। যখন তিনি মোতা‘ ( نكاح متعہ ) বা ঠিকা বিবাহ জায়েয ফৎওয়া দিলেন, তখন ওলামায়ে কেরামের প্রতিবাদের মুখে পরে তিনি তা থেকে প্রত্যাবর্তন করেন এবং স্বীয় ‘রাসায়েল ও মাসায়েল’ বইয়ের মধ্যে এজন্য দুঃখ প্রকাশ করেন ।[1] যদিও শী‘আরা তাঁর উক্ত ফৎওয়া নিজেদের পক্ষে ও সুন্নীদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু ‘তাফহীমুল কুরআনে’ আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সংত্রুান্ত আয়াতসমূহের ব্যাখ্যায় তিনি ভ্রান্ত ফির্কা মু‘তাযিলাদের অনুকরণে যেসব তাবীল করেছেন, তা থেকে প্রত্যাবর্তন করেননি।
অনুরূপভাবে মু‘জেযা সংক্রান্ত কিছু কিছু আয়াতের ব্যাখ্যায় তিনি তাবীলের আশ্রয় নিয়েছেন। যেমন সূরা আম্বিয়া ৭৯ আয়াতের ব্যাখ্যায় ‘পাহাড়সমূহ ও পক্ষীকুলকে আমি দাঊদ-এর জন্য অনুগত করে দিয়েছি, যারা তাসবীহ পাঠ করে’-এর ব্যাখ্যা তিনি এভাবে করেছেন যে, দাঊদ (আঃ) যখন তাঁর সুন্দর কণ্ঠে আল্লাহর প্রশংসা করতেন, তখন পাহাড়সমূহ তাঁর মিষ্টিমধুর আওয়াযের কারণে কেঁপে কেঁপে উঠত এবং পক্ষীকুল দাঁড়িয়ে যেত’। ‘পর্বত সমূহের অনুগত হওয়া’কে ‘সুর লহরীতে প্রকম্পিত হওয়া’র এই কাল্পনিক ব্যাখ্যার জন্য খ্যাতনামা মুফাসসির আব্দুল মাজেদ দরিয়াবাদী বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, এটি তাফসীর নয়, বরং তাহরীফ অর্থাৎ কুরআনের মর্ম পরিবর্তন (দ্রঃ তাফসীরে মাজেদী)। এধরনের আরও বহু উদাহরণ বিদ্বানগণ উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু এসব বিষয়ে ওলামায়ে কেরাম ভুল ধরিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও তিনি প্রত্যাবর্তন করেননি। অথচ এসব ভুলের মূল কারণ হ’ল, কুরআনের তাফসীর করার সময় হাদীছের প্রতি গুরুত্ব কম দেওয়া এবং যুক্তিবাদের প্রতি অধিক ঝুঁকে পড়া।
অনুরূপভাবে তিনি হাদীছ শাস্ত্র, হাদীছের প্রামাণিকতা, সনদ ও মতনের বিশুদ্ধতা যাচাই ইত্যাদি বিষয়ে মুহাদ্দেছীনের গৃহীত جرح وتعديل তথা ‘সমালোচনা ও পর্যালোচনা’র নীতিমালা সম্পর্কে অযৌক্তিক সন্দেহবাদ আরোপ করেছেন। বরং তাঁদের তীব্র সমালোচনায় তিনি এতদূর পৌঁছে গেছেন যে, কোন কোন ক্ষেত্রে হাদীছ অস্বীকারকারীদেরও ছাড়িয়ে গেছেন। ফলে হাদীছ অস্বীকারকারী দলের নেতা গোলাম আহমাদ পারভেয মাওলানা মওদূদীর বক্তব্যকে নিজেদের পক্ষে দলীল হিসাবে পেশ করেন। যেমন তিনি স্বীয় পত্রিকায় লিখেন যে, ‘হাদীছ অস্বীকারের ব্যাপারে আমার ও মাওলানা মওদূদীর আক্বীদা একই রূপ। অতএব ‘জামায়াতে ইসলামী’ যেন এব্যাপারে আমার সাথে বেশী ঝগড়া না করে’।[2]
গোলাম আহমাদ পারভেয-এর উক্ত মন্তব্য সত্য নয় এবং মাওলানা মওদূদীও নিঃসন্দেহে হাদীছ অস্বীকারকারী নন। কিন্তু হাদীছ সংক্রান্ত তাঁর লেখনী সমূহ পরীক্ষা করে দেখলে তা পাঠককে হাদীছ অস্বীকারের চূড়ান্ত সীমায় চলে যেতে বাধ্য করে। এর কারণ (১) তিনি হাদীছ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে মুহাদ্দিছ বিদ্বানগণের গৃহীত মূলনীতি ও পদ্ধতিসমূহের তোয়াক্কা না করে তার তীব্র সমালোচনা করেছেন (২) ‘কেবল রেওয়ায়াতের দিকে মুহাদ্দিছগণ দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছেন, দেরায়াতের দিকে রাখেননি’ বলে হাদীছ অস্বীকারকারীদের সুরে সুর মিলিয়ে তাঁদের উপরে অযথা তোহমত দিয়েছেন। (৩) বুখারী ও মুসলিমের কতিপয় হাদীছের বিশুদ্ধতা সম্পর্কে তিনি সন্দেহ পোষণ করেছেন (৪) ‘খবরে ওয়াহেদ’ পর্যায়ের হাদীছসমূহের বিশাল ভান্ডারকে তিনি ‘ধারণা নির্ভর’ হওয়ার দোষ চাপিয়ে তা অগ্রাহ্য করতে চেয়েছেন।
অথচ উপরের দাবীগুলির কোনটিই তাঁর নিজস্ব নয়, বরং বিগত যুগের মু‘তাযিলা দার্শনিক, আধুনিক কালের খ্রিষ্টান প্রাচ্যবিদগণ ও তাদের বশংবদ মুসলিম পন্ডিতগণ হাদীছের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ ইতিপূর্বে উত্থাপন করেছেন, সেগুলিই মাওলানা নিজের যুক্তিবাদী ভাষায় আরো জোরালোভাবে উপস্থাপন করেছেন। শুধু তিনিই নন, তাঁর সাহিত্যের ভক্ত ও আন্দোলনের অনুসারীদের চিন্তাধারায়ও তার স্পষ্ট ছাপ পরিদৃষ্ট হয়। ফলে কুরআন-সুন্নাহর হুকূমত কায়েম করার শ্লোগান নিয়ে মাঠে নামলেও এই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সুন্নাতের পাবন্দী অতীব নগণ্য। ছহীহ হাদীছের প্রতি আকর্ষণবোধ বলা চলে শূন্যের কোঠায়। ‘এটাও ঠিক ওটাও ঠিক’ বলে শুদ্ধ-অশুদ্ধ সবকিছুকে তারা একাকার করতে চান। এমনকি শহীদ মিনারে যাওয়া ও সেখানে ফুল দেওয়ার মত শিরকী ও বিদ‘আতী বিষয়গুলিকেও তারা ‘পাপও নেই পুণ্যও নেই’ বলে হালকা করে দেখেন।[3]
[3]. জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ-এর আমীর মাওলানা মতীউর রহমান নিজামী ও সহ-সেক্রেটারী আব্দুল কাদের মোল্লার বক্তব্য দ্রষ্টব্য : দৈনিক ইনকিলাব ১১.১০.০২ ও ২২.৬.০৩ ইং।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/362/14
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।