মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়াহ এর মতে এক্ষেত্রে মানুষ ত্রিবিধ:
এক. এমন সম্প্রদায় যারা তাদের নাফস সমূহের চাহিদা ব্যতিরেকে তারা কিছুই করবে না। তাদেরকে যা দেয়া হবে, তা ছাড়া তারা সন্তুষ্ট হবে না। আবার তাদেরকে যা হতে বঞ্চিত করা হবে, তা ব্যতীত (অন্য কোন কারণে) তারা রাগও করবে না। আর যখন তাদের কাউকেও তার প্রবৃত্তির চাহিদা অনুযায়ী, তা হারাম হোক বা হালাল হোক, দেয়া হবে দেখবে তার রোষাগ্নি নির্বাপিত হয়ে গেছে এবং সাথে সাথে সে খুশিও হয়ে গেছে। আর ক্ষণিক পূর্বেও সে বিষয়টি তার নিকট অসৎ ছিল সেটা হতে নিষেধ করত, সেটা করার কারণে শাস্তি দিত, সেটা যে করত তাকে ভৎর্সনা করত, এখন সে স্বয়ং সেটার কর্তাব্যক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটা সম্পাদনে সে নিজেও শরীক ও সহযোগী এবং যে সেটা হতে নিষেধ করবে ও তাকে ঘৃণা করবে তার ঘোর শত্রু হয়ে উঠেছে।
এরূপ অবস্থা আদম সন্তানদের মধ্যেই বেশি প্রবল। তুমি দেখে থাকবে, মানুষ সেটার ঘটনা এত শুনছে যে, আল্লাহ ছাড়া সেটার পরিসংখ্যান আর কেউ দিতে পারবে না।
কারণ হলো যে, মানুষ আসলে অতিশয় যালিম ও অজ্ঞ। এজন্যই সে ন্যায়বিচার করে না। বরং সে হয়ত বা উভয়বিধ অবস্থাতেই অত্যাচারী। সে কোন রাজার হাতে প্রজা সাধারণের প্রতি অবিচার ও তাদের উপর সীমাহীন নির্যাতনের কারণে কোন সম্প্রদায়কে ঐ সম্প্রদায়ের হর্তাকর্তার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করতে দেখবে। অত:পর ঐ রাজা ঐ সকল অনাস্থাবান লোকদেরকে যৎকিঞ্চিৎ দান-দক্ষিণা দিয়ে সন্তুষ্ট করে নিবে, অত:পর তারা ঐ অত্যাচারী রাজার সাহায্যকারী হয়ে বসবে। তাদের অবস্থাসমূহের মধ্যে মজার বিষয় হল যে, তারা ঐ যালিমের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করা হতেও বিরত (চুপ) থাকবে। অনুরূপভাবে (হে পাঠক) তাদের কাউকেও কোন মদ্যপায়ী বা ব্যভিচারীর নিকটে দেখবে এবং গানবাদ্য শুনতে থাকবে, শেষ পর্যন্ত তারা তাদের সাথে একত্রে ঐ কাজে প্রবেশ করবে, অথবা সেটার কিছু অংশ দ্বারা তারা তাকে সন্তুষ্ট করে ফেলবে, তখন দেখবে যে, সে তাদের সাহায্যকারী হয়ে গেছে।
দুই. অন্য আর এক সম্প্রদায়, তারা সহীহ দীনী কাজ-কর্মই করে থাকে এবং তাতে তারা একমাত্র আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে এবং যা করে তাতে তারা একনিষ্ঠ হয়ে থাকে এবং ঐ কাজও তাদের জন্য বিশুদ্ধ ও নির্ভেজাল হয়ে থাকে। এমনকি যে সকল ব্যাপারে তাদেরকে কষ্ট দেয়া হয় তাতে তারা ধৈর্যও অবলম্বন করে থাকে। আর আসলে ঐ সম্প্রদায়ই হল সেসব লোক, যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে ও সৎকর্ম সম্পাদন করেছে। আর ঐ সকল লোকই তো (উত্তম-উম্মাহ) অতি উত্তম জাতি, যারা মানব জাতির মহা কল্যাণ সাধনের জন্য সৃজিত হয়েছে। তারাই সৎকাজের আদেশ দান ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করে থাকে এবং আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখে।
তিন. আর এক সম্প্রদায়, তারা হল মু’মিনদের (বিশ্বাসীদের) বৃহত্তম অংশ। যাদের অন্তরে দীন আছে, আরও আছে কামরিপু, আবার অন্তরে আল্লাহর আনুগত্যের বাসনাও আছে ও ওদিকে অবাধ্যচরণের ইচ্ছাও বিদ্যমান। তাই কখনও এ আকাঙ্খা প্রবল হয়ে যায় আবার কখনও ঐ বাসনা হয় বেশী প্রবল।
এ ত্রিবিধ বণ্টনটা হল যেমন কথিত আছে নাফসসমূহ (আত্মা) তিনটি:
নাফস আম্মারাহ: যা খারাপ কাজে উদ্ধুদ্ধ করে।
লাওয়ামাহ : যা বেশি বেশি ভৎর্সনা করে।
মুতমাইন্নাহ: যা ভাল কাজে তৃপ্ত থাকে।
তন্মধ্যে প্রথম শ্রেণীর লোক তারা যারা নাফসে আম্মারার অধিকারী, যারা কু-কাজের জন্য বেশি আদেশ দিয়ে থাকে। আর মধ্যম দল তারা, যারা নাফসে মুতমাইন্নার অধিকারী, যাকে সম্বোধন করে (কিয়ামতের দিন আল্লাহর পক্ষ হতে) বলা হবে-
‘‘হে নাফসে মুতমাইন্নাহ (অর্থা- শান্তিময় আত্মা) তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকে চল এভাবে যে, তুমি তার প্রতি সন্তুষ্ট্ এবং তিনিও তোমার প্রতি সন্তুষ্ট। অনন্তর তুমি আমার বিশিষ্ট বান্দাদের মধ্যে শামিল হয়ে যাও, আর আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।’’ (সূরা আল ফাজর:২৭-৩০)
আর ঐ সকল লোক হল বেশি ভৎর্সনাকারী আত্মার অধিকারী যারা পাপকাজ করে এবং তজ্জন্য আবার নিজেদের ভৎর্সনাও করে এবং রং-বেরং ধারণ করে। কখনও এরূপ, আবার কখনও বা সেরূপ এবং ভাল কাজসমূহের সাথে খারাপ কাজ মিলিয়ে ফেলে।
আর এজন্যই যখন মানুষ আবু বকর (রা.) ও ঊমার (রা.) এর যুগে ছিল-তাঁরা দু’জন তো এমন ছিলেন যে, তাঁদের আনুগত্য তথা অনুসরণ করার জন্য মুসলিমগণকে আদেশ দেয়া হয়েছিল। যেমন- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
‘‘হে লোক সকল! আমার (অব্যবহিত) পরেই যে দু’জন আসবেন- আবু বকর ও উমর- তাদের অনুসরণ করো।’’ (আবু-দাউদ: ৫/১৩: কিতাবুস সুন্নাহ বাবু-ফি লুজুমিস সুন্নাহ; আন-নাসায়ী: ৫-৪৪, হা: নং- ২৬৭৬, কিতাবুল ইলম, বাবু-মাযায়া ফি আল-আখজি বিসসুন্নাহ; ইবনে মাজাহ: ১/১৫, আল-মুকাদ্দিমাহ, বাব-ইত্তিবা-ই- সুন্নাতিল খুলাফা-ইর- রাশিদীন; আল- দারিমী: ১/৪৪, আল-মুকাদ্দিমাহ বাবু ইত্তিবা-ইস সুন্নাহ; ইবনে হাম্মাল: ৪/১২৬-১২৭)
যখন মানুষ রিসালাত (নাবুওয়াতের)-এর অতি নিকটতম যুগে ছিল, ঈমান ও সততার দিক হতে ছিল সুমহান, তখন তাদের নেতৃবর্গও ছিলেন দায়িত্ব পালনে অত্যধিক তৎপর এবং শান্তিময়তার ক্ষেত্রে ছিলেন বেশি স্থির। তখন ফিতনাহ-ফাসাদ ঘটে নি। ঐ সময় তারা মধ্যবর্তী দলের মধ্যে বিবেচিত হতেন।
যখন মানুষ উসমান (রা.)-এর খিলাফাতের শেষ পর্যায়ে ও আলী (রা.) এর খিলাফাতের সময় ছিল তখন তৃতীয় শ্রেণীর লোক সংখ্যা বর্ধিত হয়ে গিয়েছিল, ঐ সময় মানুষের মধ্যে দীন ও ঈমান থাকা সত্ত্বেও আকাঙ্খা ও সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছিল। সেটা কতিপয় প্রাদেশিক গভর্ণর ও কিছু সংখ্যক প্রজা সাধারণের মধ্যেও সৃষ্টি হয়েছিল। অতঃপর সেটা ক্রমান্বয়ে (আরও বেড়ে) বেশি হয়ে পড়েছিল।
এভাবেই ফিতনার সৃষ্টি হয়েছে, যার কারণ, শাসক (গভর্নর) ও প্রজা উভয় পক্ষেরই তাকওয়া (আল্লাহভীতি) ও আনুগত্য অবলম্বন না করা, শাসক ও প্রজা উভয় শ্রেণির মধ্যেই এক প্রকারের প্রবৃত্তির অনুসরণ ও গুনাহের প্রতি আকর্ষণের সংমিশ্রণ ঘটা, আর উভয় পক্ষই ছিল মনগড়া ব্যাখার আশ্রয়গ্রহণকারী যে সে সৎ কাজের আদেশ করে এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ করে থাকে এবং সে সত্য ও ন্যায়নীতির সাথে আছে বলে দাবী করা। অথচ এরূপ মনগড়া ব্যাখ্যার সাথে এক প্রকারের প্রবৃত্তি অনুসরণের মনোবৃত্তিও রয়েছে। আর এর মধ্যে রয়েছে একটু কিছু সন্দেহ এবং মন যা চায় তারই আকাঙ্খা পোষণ। যদিও দু‘পক্ষের একপক্ষ সত্যের (খিলাফাতের) জন্য অধিকযোগ্য ছিল।
অতএব বিশ্বাসী ব্যক্তির উচিত হল, সে যেন আল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করে এবং তার অন্তরকে ঈমান ও আল্লাহভীতি দ্বারা আবাদ করে, অন্তরকে বক্র না করে তাকওয়া (আল্লাহভীতি) ও হিদায়াতের উপর স্থির রাখে এবং সে যেন প্রবৃত্তির অনুসরণ না করে, এ সকল বিষয়ে আল্লাহরই উপর পূর্ণ আস্থা রাখে। যেমন- আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেছেন-
‘‘অতএব আপনি সেদিকেই ডাকতে থাকুন এবং আপনাকে যেরূপ নির্দেশ দেয়া হয়েছে(তাতে) দৃঢ় থাকুন আর তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না, আর বলে দিন আল্লাহ যত কিতাব নাযিল করেছেন আমি তাতে ঈমান আনছি আর আমি আদিষ্ট হয়েছি যে, তোমাদের মধ্যে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠিত রাখি, আল্লাহ আমাদেরও মালিক এবং তোমাদেরও মালিক।’’ (সূরা আশ-শূরা ৪২:১৫)
এটাই হল জাতির অবস্থা ঐ সকল বিষয়ে, যাতে সে বহুধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং কথাবার্তা ও ইবাদাতে মতবিরোধ করেছে। এগুলো এমন সব বিষয়ের আওতাভুক্ত যার ফলে মু’মিনদের উপর বিপদাপদ প্রকট হয়ে আসে। সুতরাং তারা দুটি জিনিসের মুখাপেক্ষী:
নিজেদের থেকে দুনিয়া ও ধর্মীয় ফিতনা, যদ্বারা তাদের অনুরূপ লোকজন (পূর্বেও) পরীক্ষিত হয়েছিল, সেটার কারণ থাকা সত্বেও তা প্রতিহত করা। কেননা তাদের সাথেও রয়েছে নাফসসমূহ ও শয়তান, যেমন রয়েছে অন্যদের সাথেও। ... অনেক এমন লোক আছে যে সে অন্যকে করতে না দেখা পর্যন্ত কোনও ভাল কাজ বা খারাপ কাজ করে না, তারপর অপরের দেখাদেখি সেটা করে বসে।
আর এজন্যই কোন ভাল বা মন্দ কাজের সূচনাকারী ( তার) অনুকরণকারীদের সকলের সমান পূর্ণ বা পাপের অধিকারী হবে। যেমন- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ সম্পর্কে ইরশাদ করেছেন-
‘‘যে ব্যক্তি কোনও সুন্দর আদর্শের প্রচলণ করবে সে সেটার প্রতিফল (সাওয়াব) তো পাবেই তদুপরি কিয়ামত পর্যন্ত যারা তার অনুসরণে আমল করবে তাদের সকলের সম্মিলিত ‘আমলের সাওয়াবও ঐ প্রচলনকারী পাবে(অথচ) ঐ সকল অনুসরণকারীদের সাওয়াবে কোনরূপ ঘাটতি হবে না। অপরদিকে যে ব্যক্তি কোন খারাপ আদর্শের প্রচলন করবে সে সেটার ফলে পাপী তো হবেই তদুপরি কিয়ামত পর্যন্ত যারা তার অনুসরণে আমল করবে তাদের সকলের সম্মিলিত পাপরাশির পরিমাণ পাপের দায়ীও সে ব্যক্তি হবে, (অথচ) ঐ সকল অনুসরণকারীদের পাপে এতটুকুও ঘাটতি হবে না। (মুসলিম: কিতাবুল ‘ইলম: ৮/৬১, কিতাবুল যাকাত: ৩/৮৭, আন- নাসায়ী: ৫/৭৮; ইবনে হাম্বল: ৪/৩৫৭-৩৫৯)
যেহেতু তারা মৌলিক বিষয়ে শরীক হয়েছে এ কারণে। আর যেহেতু কোন জিনিসের জন্য সেটার সমতূল্য জিনিসের ব্যাপারে গৃহীত সিদ্ধান্তই প্রযোজ্য। কোন জিনিসের অনুরূপ বস্ত্ত তারই দিকে আকর্ষিত হয়ে থাকে। সুতরাং যখন এ আহবানকারীদ্বয় শক্তিশালী হবে, তখন যদি আরও দু’জন আহবানকারী এসে তাদের সাথে মিলিত হয়ে সংগঠিত হয়, তবে এ অবস্থায় বিষয়টি কেমন দাঁড়াবে?
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/473/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।