hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ গুরুত্ব ও তাৎপর্য

লেখকঃ ড. মোঃ আবদুল কাদের

সৎকাজে আদেশ দেয়া ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করার ক্ষেত্রে শর্তাবলী
শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমিয়াহ বলেন,

তার কাজ সুষ্ঠু হবে না যদি না সেটা পরিমিত শিক্ষা ও তীক্ষ্মজ্ঞানভিত্তিক হয়।

যেমন- উমার ইবন আবদুল আযীয (রহ.) বলেছেন-

‘‘যে ব্যক্তি বিনা বিদ্যায় আল্লাহর ইবাদত করে, সে যতটুকু ভাল করে, তার চাইতে খারাপই বেশি করে।’’

যেমন- মু‘আয ইবন জাবাল (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর হাদীসে আছে:

‘‘কাজ করার আগে প্রয়োজন জ্ঞান; কাজের স্থান হল বিদ্যার্জনের পর।’’ এটা তো একেবারেই স্পষ্ট। কেননা ইচ্ছা করা ও কর্ম সম্পাদন করা যদি জ্ঞানের আলোকেই না হয়, তাহলে সেটাই মূর্খতা ও পথভ্রষ্টতা, সর্বোপরি প্রবৃত্তির অনুসরণ। সুতরাং সৎ ও অসৎকাজ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা ও উভয়ের মধ্যে পার্থক্য করার মত উপযুক্ত শিক্ষা থাকা অবশ্যই প্রয়োজন এবং যাকে কোন বিষয়ে আদেশ করা হবে বা কোন কাজ হতে নিষেধ করা হবে, তার অবস্থা সম্পর্কেও জ্ঞান থাকা অপরিহার্য।

উত্তমভাবে আদেশ বা নিষেধ করা। যেমন, সিরাতাল মুস্তাকীম তথা সরলপথ অনুযায়ী হয়। আসলে সিরাতাল মুস্তাকীম হল-উদ্দেশ্য অর্জনের দিকে অতি দ্রুত পৌঁছাবার মত সংক্ষিপ্ত তথা নিকটতম পথ।

সুনম্র ব্যবহার ঐ কাজের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যেমন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

‘‘যে বিষয়েই নম্রতা পাওয়া গেছে তা সে বিষয়কেই সুশোভিত করেছে, আবার যে বিষয়েই খানিকটা কঠোরতা পাওয়া গেছে তা সে বিষয়কেই অশোভিত করেছে- দৃষ্টিকটু করে ফেলেছে’’- (মুসলিম: হা: নং- ২৫৯৪)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন-

নিশ্চয়ই আল্লাহ দয়াশীল, প্রত্যেকটি বিষয়েই নম্র ব্যবহার তিনি পছন্দ করেন, নম্রতাপূর্ণ ব্যবহারের ফলে তিনি যা দান করেন কঠোরতার কারণে তা দেন না।’’

(বুখারী: ১২/২৮০, ফাতহুল বারী আলা শারহিল বুখারী, কিতাবুল ইসতিহাবাহ; মুসলিম: কিতাবুসসিয়ার, ৮/২২; আবু দাউদ, কিতাবুল আমওয়াল, ৫/১৫৫; আত-তিরমিযী: ৫/৬০, হা: নং-১৭০১; ইবনে মাজাহ: ২/১২১৬, কিতাবুল আদব-বাবুন ফিররিফক; আল-দারিমী: ২/৩২৩; ইববে হাম্বল: ১/১১২)

আদেশ দানকারী বা নিষেধকারীকে অবশ্যই কষ্টে সহিষ্ণু ও ধৈর্যশীল হতে হবে। কেননা, এ কথা সত্য যে, তার উপর বিপদ আসবেই। এমন সময় যদি সে ধৈর্য ধারণই না করে, সহ্যই না করে, তাহলে সে যা ভাল করতে পারত তার চাইতে নষ্টই করে বসবে বেশি। যেমন- লুকমান হাকীম তদীয় তনয়কে উপদেশ দানকালে বলেছিলেন:

﴿ وَأۡمُرۡ بِٱلۡمَعۡرُوفِ وَٱنۡهَ عَنِ ٱلۡمُنكَرِ وَٱصۡبِرۡ عَلَىٰ مَآ أَصَابَكَۖ إِنَّ ذَٰلِكَ مِنۡ عَزۡمِ ٱلۡأُمُورِ ١٧ ﴾ [ لقمان : ١٧ ]

‘‘এবং (হে বৎস)! সৎকাজ আদেশ দান কর এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ কর, (এ কাজ করতে যেয়ে) তোমার উপর যে বিপদ আপতিত হবে তাতে ধৈর্য অবলম্বন কর, নি:সন্দেহে সেটা একটি মহৎ কাজ।’’ (সূরা লুকমান:১৭)

এজন্যই আল্লাহ তা‘আলার রাসূলগণ, অথচ তাঁরা সৎকাজে আদেশ দানকারী ও অসৎকাজ হতে নিষেধকারীদের নেতা, তাদেরকেও ধৈর্য অবলম্বনের আদেশ দিয়েছেন। যেমন- তিনি সর্বশেষ রাসূল (স.) কে বলেছেন। আসলে সেটা (ধৈর্য) রিসালাতের দায়িত্ব তাবলীগের সাথেই জড়িত। কেননা সর্বপ্রথম যখন তাঁকে (সা) রাসূল হিসেবে গণ্য করা হল, তখনই সূরা ‘ইকরা’ নাযিল হবার পর (যার মাধ্যমে তাঁকে নাবী বলে সংবাদ দেয়া হয়েছে) আল্লাহ তাঁকে আদরভরে সম্বোধন করে বলেছেন:

﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلۡمُدَّثِّرُ ١ قُمۡ فَأَنذِرۡ ٢ وَرَبَّكَ فَكَبِّرۡ ٣ وَثِيَابَكَ فَطَهِّرۡ ٤ وَٱلرُّجۡزَ فَٱهۡجُرۡ ٥ وَلَا تَمۡنُن تَسۡتَكۡثِرُ ٦ وَلِرَبِّكَ فَٱصۡبِرۡ ٧ ﴾ [ المدثر : ١، ٧ ]

‘‘হে চাদর আচ্ছাদনকারী! উঠুন এবং ভয় প্রদর্শন করুন এবং আপনার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন, আপনার বেশভূষা পবিত্র করুন, অপবিত্রতা (মূর্তি) পরিত্যাগ করুন, আর কাউকেও এ উদ্দেশে দান করবেন না যে, অতিরিক্ত বিনিময় প্রত্যাশা করেন এবং আপনার প্রতিপালকের সন্তুষ্টির উদ্দেশেই ধৈর্য অবলম্বন করুন।’’ (সুরা আল-মুদ্দাসসির:১-৭)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল হিসেবে সৃষ্টি জগতে প্রেরণের এ আয়াতগুলো ভীতি প্রদর্শনমূলক বিষয় দ্বারাই শুরু তথা সূচনা করেছেন এবং ধৈর্য ধারনের আদেশ দানের মাধ্যমে শেষ করেছেন। মুলত শাস্তির ভয় প্রদর্শনই হল সৎকাজে আদেশ দান ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করা।

অতএব জানা হয়ে গেল যে, ধৈর্য ধারণ করা ওয়াজিব, তথা অপরিহার্য। এ সম্পর্কে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা বলেছেন:

﴿ وَٱصۡبِرۡ لِحُكۡمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعۡيُنِنَاۖ ٤٨ ﴾ [ الطور : ٤٨ ]

‘‘এবং আপনার প্রতিপালকের এ ব্যবস্থার উপর (ফায়সালার অপেক্ষায়) ধৈর্য অবলম্বন করুন, নিঃসন্দেহে আপনি আমাদেরই দৃষ্টিতে আছেন।’’(সূরা আত-তুর:৪৮)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা অন্যত্র আরও বলেছেন:

﴿ وَٱصۡبِرۡ عَلَىٰ مَا يَقُولُونَ وَٱهۡجُرۡهُمۡ هَجۡرٗا جَمِيلٗا ١٠ ﴾ [ المزمل : ١٠ ]

‘‘তাদের কথায় (বিচলিত না হয়ে বরং) ধৈর্য অবলম্বন করুন এবং তাদেরকে নির্দ্বিধায় পরিত্যাগ করুন।’’ (সূরা আল-মুযযাম্মিল:১০)

অন্য আয়াতে এ প্রসঙ্গে আল্লা তা‘আলা আরও বলেছেন:

﴿ فَٱصۡبِرۡ كَمَا صَبَرَ أُوْلُواْ ٱلۡعَزۡمِ مِنَ ٱلرُّسُلِ ٣٥ ﴾ [ الاحقاف : ٣٥ ]

‘‘দৃঢ় সংকল্পচিত্ত রাসূলগণের মতই আপনিও ধৈর্য ধারণ করুন।’’ (সূরা- আল-আহকাফ:৩৫)

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘আলা আরও বলেছেন:

﴿ فَٱصۡبِرۡ لِحُكۡمِ رَبِّكَ وَلَا تَكُن كَصَاحِبِ ٱلۡحُوتِ ٤٨ ﴾ [ القلم : ٤٨ ]

‘‘আল্লাহর আদেশের অপেক্ষায় ধৈর্য ধারণ করুন এবং (খবরদার) মাছের কাহিনীর সে লোক (ইউনুস) আলাইহিস সালাম এর মতো অধৈর্য হবেন না।’’ ( সূরা আল-কালাম:৪৮)

ধৈর্য সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা অন্যত্র আরও বলেছেন:

﴿ وَٱصۡبِرۡ وَمَا صَبۡرُكَ إِلَّا بِٱللَّهِۚ ١٢٧ ﴾ [ النحل : ١٢٧ ]

ধৈর্য অবলম্ব করতে থাকুন, আসলে আপনার ধৈর্য ধারণ তো একমাত্র আল্লাহরই জন্য ছাড়া নয়।’’ (সূরা আন-নাহল:১২৭)

আবার আর এক স্থানে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ وَٱصۡبِرۡ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجۡرَ ٱلۡمُحۡسِنِينَ ١١٥ ﴾ [ هود : ١١٥ ]

‘‘আপনি ধৈর্য ধারণ করুন, কেননা আল্লাহ তা‘আলা নিষ্ঠাবানদের কর্মফল বিলীন অর্থাৎ- নষ্ট করেন না।’’ (সূরা হূদ:১১৫)

সুতরাং শিক্ষা, নম্রতা ও ধৈর্য-এ তিনটি বিষয় ছাড়া কোন ক্রমেই চলবে না। আদেশ করা বা নিষেধ করার পূর্বেই জ্ঞানের দরকার এবং সে সঙ্গে নম্রতা, আর এটার পরেই প্রয়োজন ধৈর্যের। যদিও এ ত্রিবিধ বিষয়গুলোই সর্বাবস্থাতেই একই সঙ্গে পাওয়া যেতে হবে।

যেমন- সালফে সালিহীনদের কোনো একজনের উক্তি বর্ণনাকারী পরস্পরায় কাজী আবূ ইয়ালা ‘‘আল-মু‘তামাদ’’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন:

لايأمرهم با لمعروف ولا ينهى عن المنكر إلا من كان فقيها فيما يأمرهم به فقيها فيما ينهى عنه رفيقا فيما يأمربه رفيقا فيما ينهى عنه حليما فيما يأمربه حليمافيما ينهى عنه .

‘‘যিনি সৎকাজে আদেশ করবেন ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করবেন, তিনি যদি ঐ বিষয়ে সুবিজ্ঞ আলিম তথা ফকীহ না হন, তাহলে তিনি তা করতে পারেন না। অনুরূপ তিনি যে বিষয়ে আদেশ দিবেন, সে বিষয়ে নম্র হবেন এবং যে বিষয় হতে নিষেধ করবেন সে বিষয়েও নম্র হবেন এবং যে বিষয়ে আদেশ দিবেন সে বিষয়ে তাকে সহিষ্ণু হতে হবে, আবার যে বিষয় হতে নিষেধ করবেন সে বিষয়েও তাকে সহিষ্ণু হতে হবে।’’ তা না হলে তিনি সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করতে পারবেন না। সে যেন এটাও জেনে রাখে যে, সৎকাজে আদেশ ও অসৎকাজ হতে নিষেধ করার কতগুলো পদ্ধতি তথা নীতি আছে, যার জটিলতা অনেকের উপরই এনে ফেলে। তখন সে ধারণা করে যে, ঐ সকল জটিলতার কারণে সেটা হতে বাদ পড়ে যাবে। ফলে সে এ কাজই ছেড়ে দেয়। সেটা এমন বিষয়সমূহের অন্তর্গত যে, এ পদ্ধতিগুলো না পাওয়া গেলে তার মূল বিষয়টিকে (সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজ হতে নিষেধ) ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কেননা অবশ্য করণীয় কাজটি না করাও পাপ। আবার আল্লাহ তা‘আলা যা করতে নিষেধ করেছেন সেটা করাও পাপ।

সুতরাং এক পাপ হতে অন্য পাপে জড়িয়ে পড়ার উদাহরণ হল, একটি বাতিল দীন হতে সরে অন্য আর একটি বাতিল দীন গ্রহণ করা। এমন হওয়াও সম্ভব যে, প্রথমটির চাইতে দ্বিতীয়টি বেশী মাত্রায় খারাপ, আবার এটার মাত্রা একটু কমও হতে পারে। হয়তো বা দু’টি দীনই খারাপ হিসেবে সমান। সৎকাজে আদেশদানকারী ও অসৎকাজ হতে নিষেধকারী যাদের মধ্যে ত্রুটি পাওয়া যাবে, অর্থাৎ ভালরূপে দায়িত্ব পালন করতে পারে নি অথবা তাতে সীমালঙ্ঘন করেছে, তাদের কাউকে পাবে যে, এই জনের দোষ সাংঘাতিক বড়, ঐ জনের পাপ সাংঘাতিক ধরনের বড়, আবার হয়তো বা উভয়েই পাপে বরাবর বা একই শ্রেণীভুক্ত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন