hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহ তা‘আলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র কিছু আদর্শিক নীতিমালা

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন রহ.

২০
তৃতীয় অধ্যায়: নাম ও সিফাত প্রমাণকারী দলিল-বিষয়ক মূলনীতি প্রথম মূলনীতি: নাম ও সিফাত প্রমাণের উৎস বা দলিল হলো মাত্র দুটি। একটি হলো আল্লাহর কিতাব আর অপরটি হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত।
সুতরাং এ দুটির বাইরে অন্যকোনো দলিল দ্বারা আল্লাহর নাম ও সিফাত প্রমাণিত হবে না।

অতএব কুরআন-সুন্নাহর বক্তব্যের মাধ্যমে আল্লাহর জন্য যেসব নাম ও সিফাত প্রমাণিত হয়েছে তা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত করা আবশ্যকীয়। আর কুরআন-সুন্নাহ দ্বারা যা সাব্যস্ত হয়নি তা আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত না করা আবশ্যকীয়। পাশাপাশি যা সাব্যস্ত হয়নি তার বিপরীতে যে পূর্ণাঙ্গ গুণ রয়েছে তা সাব্যস্ত করা আবশ্যকীয়। আর যে বিষয়টি কুরআন সুন্নায় সাব্যস্তও হয়নি এবং অসাব্যস্তও হয়নি সে বিষয়টি নির্দেশকারী শব্দের ব্যাপারে হাঁ বা না কোনোটিই বলা যাবে না। বলা যাবে না যে এ শব্দটি আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত অথবা সাব্যস্ত নয়। অর্থাৎ কুরআন-সুন্নাহ যেহেতু এ জাতীয় শব্দের ব্যাপারে নীরব থেকেছে কাজেই আমাদেরও নীরব থাকতে হবে।

আর এ জাতীয় শব্দের অর্থের ব্যাপারে বলা যায় যে, তা যদি এমন হয় যা আল্লাহ তা‘আলার জন্য উপযোগী তবে আল্লাহর জন্য ব্যবহার করা বৈধ। আর যদি এমন হয় যা আল্লাহর জন্য উপযোগী নয় তবে তা প্রত্যাখ্যান করা ওয়াজিব।

অতএব কুরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী যেসব সিফাত আল্লাহর জন্য প্রমাণিত তা হলো:

প্রত্যেক ওই সিফাত যা আল্লাহ তা‘আলার নামের সরাসরি নির্দেশনা হিসেবে প্রমাণিত অথবা এমন সিফাত যা আল্লাহ তা‘আলার নামে সংবলিত রয়েছে অথবা এমন সিফাত যা আল্লাহ তা‘আলার নামের দাবিগত অর্থ হিসেবে প্রমাণিত।

আল্লাহ তা‘আলার জন্য প্রমাণিত সিফাতসমূহের মধ্যে আরেক প্রকার হলো ওইসব সিফাত যা নির্দেশকারী হলো আল্লাহ তা‘আলার কোনো ক্রিয়া। যেমন আরশের ওপরে ওঠা, নিম্নাকাশে অবতরণ করা, কিয়ামতের দিন বান্দাদের মধ্যে ফয়সালার জন্য আসা এবং এ জাতীয় আরো অন্যান্য ক্রিয়া যা গুণে শেষ করা সম্ভব নয়; কেননা আল্লাহ তা‘আলা যা ইচ্ছা তাই করেন। ইরশাদ হয়েছে:

﴿وَيَفۡعَلُ ٱللَّهُ مَا يَشَآءُ ٢٧ ﴾ [ ابراهيم : ٢٧ ]

আর আল্লাহ তা‘আলা তা করেন যা তিনি চান। (সূরা ইব্রাহীম: ১৪: ২৭)

অনুরূপ প্রমাণিত সিফাতের মধ্যে আরও রয়েছে: চেহারা, দু‘চোখ, দু‘হাত ইত্যাদি।

প্রমাণিত সিফাতের মধ্যে আরো আছে: কালাম বা কথা, ইচ্ছা এবং চাওয়া- হোক তা মহাবৈশ্বয়িক অথবা শরীয়ত-কেন্দ্রিক। তন্মধ্যে মহাবৈশ্বয়িক হচ্ছে তাঁর ঐকান্তিক ইচ্ছা (যার সাথে তাঁর শরীয়তগত চাওয়া কিংবা ভালোবাসার সম্পর্ক নেই) আর দ্বিতীয় চাওয়াটি হচ্ছে শরীয়তগত এবং তার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে।

প্রমাণিত সিফাতের মধ্যে আরো শামিল রয়েছে: সন্তুষ্টি, মহব্বত, রাগ ও ঘৃণা ইত্যাদি।

আর যেসব সিফাত আল্লাহ তা‘আলার জন্য সাব্যস্ত না হওয়া প্রমাণিত এবং এর বিপরীত পূর্ণাঙ্গ সিফাত আল্লাহর জন্য সাব্যস্ত তা হলো:

মৃত্যু, নিদ্রা, তন্দ্রা, অক্ষমতা, ক্লান্তি, যুলম, বান্দাদের আমল সম্পর্কে উদাসীনতা, আল্লাহ তা‘আলার কোনো সমতুল্য বা সমকক্ষ থাকা ইত্যাদি।

আর যে সব গুণনির্দেশক শব্দ আল্লাহর জন্য সাব্যস্তও করা হয়নি এবং অসাব্যস্তও করা হয়নি, তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে:

( الجهة ) অর্থাৎ দিক। অতএব কেউ যদি প্রশ্ন করে বলে যে, আমরা কি আল্লাহর জন্য দিক শব্দটিকে সাব্যস্ত করব? এ প্রশ্নের উত্তরে বলব যে ‘দিক’ শব্দটি কুরআন-সুন্নায় আসেনি। হাঁ এবং না কোনোভাবেই আসেনি। অতএব ‘দিক’ শব্দের ক্ষেত্রে হাঁ ও না কোনোটিই সাব্যস্ত না করে এক্ষেত্রে এতটুকুই বলা যথেষ্ট যে আল্লাহ তা‘আলা উপরে আছেন। আর ‘দিক’ শব্দটির যে অর্থ তার দ্বারা হয়ত নিম্নদিক বুঝানো হবে, অথবা এমন ঊর্ধ্বদিক বুঝানো হবে যা আল্লাহ তা‘আলাকে পরিবেষ্টন করে আছে অথবা এমন ঊর্ধ্ব দিক বুঝানো হবে যা আল্লাহ তা‘আলাকে পরিবেষ্টন করে নেই। তন্মধ্যে:

প্রথমটি অর্থাৎ নিম্নদিক আল্লাহ তা‘আলার জন্য প্রযোজ্য নয়, তা বরং বাতিল; কেননা তা আল্লাহ তা‘আলার ঊর্ধ্বতা, যা কুরআন-সুন্নাহ, যুক্তি, ফিতরত ও ইজমা দ্বারা প্রমাণিত, তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

দ্বিতীয়টি অর্থাৎ এমন ঊর্ধদিক যা আল্লাহ তা‘আলাকে পরিবেষ্টনকারী, এটিও আল্লাহ তা‘আলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, তা বরং বাতিল; কারণ কোনো সৃষ্টবস্তু দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা পরিবেষ্টিত থাকবেন তা থেকে তিনি পবিত্র ও মহান।

তৃতীয়টি অর্থাৎ এমন ঊর্ধ্বদিক যা আল্লাহ তা‘আলাকে পরিবেষ্টন করে নেই। এটি আল্লাহ তা‘আলার জন্য প্রযোজ্য এবং তা সত্য; কেননা আল্লাহ তা‘আলা সকল সৃষ্টির ঊর্ধ্বে এবং সৃষ্টির কোনো কিছুই তাকে পরিবেষ্টন করতে পারে না।

এই মূলনীতির পক্ষে দলিল হলো ওহী ও যুক্তি:

ওহী থেকে দলিল হলো আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণীসমূহ:

﴿ وَهَٰذَا كِتَٰبٌ أَنزَلۡنَٰهُ مُبَارَكٞ فَٱتَّبِعُوهُ وَٱتَّقُواْ لَعَلَّكُمۡ تُرۡحَمُونَ ١٥٥ ﴾ [ الانعام : ١٥٥ ]

আর এটি কিতাব- যা আমি নাযিল করেছি- বরকতময়। সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও। (সূরা আল আনআম: ৬: ১৫৫)

﴿فَ‍َٔامِنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِ ٱلنَّبِيِّ ٱلۡأُمِّيِّ ٱلَّذِي يُؤۡمِنُ بِٱللَّهِ وَكَلِمَٰتِهِۦ وَٱتَّبِعُوهُ لَعَلَّكُمۡ تَهۡتَدُونَ ١٥٨ ﴾ [ الاعراف : ١٥٨ ]

সুতরাং তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান আন ও তাঁর প্রেরিত উম্মী নবীর প্রতি, যে আল্লাহ ও তাঁর বাণীসমূহের প্রতি ঈমান রাখে। আর তোমরা তার অনুসরণ কর, আশা করা যায়, তোমরা হিদায়েত লাভ করবে। (সূরা আল আরাফ: ৭: ১৫৮)

﴿وَمَآ ءَاتَىٰكُمُ ٱلرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَىٰكُمۡ عَنۡهُ فَٱنتَهُواْۚ﴾ [ الحشر : ٧ ]

রাসূল তোমাদের যা দেয় তা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও এবং আল্লাহকেই ভয় কর, নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি প্রদানে কঠোর। (সূরা আল হাশর: ৫৯: ৭)

﴿ مَّن يُطِعِ ٱلرَّسُولَ فَقَدۡ أَطَاعَ ٱللَّهَۖ وَمَن تَوَلَّىٰ فَمَآ أَرۡسَلۡنَٰكَ عَلَيۡهِمۡ حَفِيظٗا ٨٠ ﴾ [ النساء : ٨٠ ]

যে রাসূলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, তবে আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি। (সূরা আন নিসা:: ৪: ৮০)

﴿فَإِن تَنَٰزَعۡتُمۡ فِي شَيۡءٖ فَرُدُّوهُ إِلَى ٱللَّهِ وَٱلرَّسُولِ إِن كُنتُمۡ تُؤۡمِنُونَ بِٱللَّهِ وَٱلۡيَوۡمِ ٱلۡأٓخِرِۚ ذَٰلِكَ خَيۡرٞ وَأَحۡسَنُ تَأۡوِيلًا ٥٩ ﴾ [ النساء : ٥٩ ]

অতঃপর কোন বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ কর তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করাও- যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখ। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর। (সূরা আন নিসা: ৪: ৫৯)

﴿ وَأَنِ ٱحۡكُم بَيۡنَهُم بِمَآ أَنزَلَ ٱللَّهُ وَلَا تَتَّبِعۡ أَهۡوَآءَهُمۡ﴾ [ المائ‍دة : ٤٩ ]

আর তাদের মধ্যে তার মাধ্যমে ফয়সালা কর, যা আল্লাহ নাযিল করেছেন এবং তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না। (সূরা আল মায়েদা: ৫: ৪৯)

এ ছাড়া আরো অন্যান্য আয়াত যা কুরআন-সুন্নাহর প্রতি ঈমান আনাকে ফরয হিসেবে সাব্যস্ত করে। আর প্রত্যেক ওই আয়াত যা কুরআনের প্রতি ঈমান আনাকে ফরয হিসেবে সাব্যস্ত করে তা সুন্নাহর মাধ্যমে যা কিছু এসেছে তার প্রতিও ঈমান আনাকে আবশ্যক বলে সাব্যস্ত করে; কেননা আল কুরআনে যেসব নির্দেশ এসেছে তন্মধ্যে একটি হলো, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহি আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনুগত্য করা এবং বিতর্ক সৃষ্টি হলে তা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সোপর্দ করা। সরাসরি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে সোপর্দ করা তাঁর জীবদ্দশায় এবং তাঁর সুন্নতের কাছে সোপর্দ করা তাঁর মৃত্যুর পর।

অতএব, যে ব্যক্তি আল কুরআনের প্রতি ঈমান রাখার দাবি করে অথচ আল কুরআনের নির্দেশ সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণের ব্যাপারে দম্ভ প্রদর্শন করে, সে কীভাবে আল কুরআনের প্রতি ঈমানের দাবিতে সত্যবাদী হতে পারে?

আল কুরআনে আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশ সত্ত্বেও যে ব্যক্তি বিতর্কিত বিষয় রাসূলুল্লাহর কাছে সোপর্দ করে না, সে আল কুরআনের প্রতি ঈমানের দাবিতে কীভাবে সত্যবাদী হতে পারে?

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নায় যা কিছু এসেছে, তা গ্রহণ করার ব্যাপারে আল কুরআনে নির্দেশ আসা সত্ত্বেও যে তা গ্রহণ করে না, সে কীভাবে আল কুরআনের প্রতি ঈমানের দাবিতে সত্যবাদী হতে পারে?

অথচ আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿وَنَزَّلۡنَا عَلَيۡكَ ٱلۡكِتَٰبَ تِبۡيَٰنٗا لِّكُلِّ شَيۡءٖ﴾ [ النحل : ٨٩ ]

আর আমরা তোমার উপর কিতাব নাযিল করেছি প্রতিটি বিষয়ের স্পষ্ট বর্ণনাস্বরূপ। (সূরা আন্-নাহল:৮৯)

আর এটা স্পষ্ট যে ইসলামী শরীয়তের তথ্যগত ও প্রায়োগিক বহু বিষয়ের ব্যাখ্যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহর মাধ্যমে এসেছে। অতএব সুন্নাহর মাধ্যমে বর্ণিত হওয়া প্রকারান্তরে কুরআনের মাধ্যমেই বর্ণিত হওয়া।

যুক্তি: আল্লাহ তা‘আলার জন্য কোনটি সাব্যস্ত করা ওয়াজিব, কোনটি সাব্যস্ত করা নিষিদ্ধ এবং কোনটি বৈধ, এ বিষয়গুলো গায়েবের আওতাভুক্ত। অর্থাৎ তা এমন বিষয় যা মানুষ তার বুদ্ধি-বিবেচনা দ্বারা নির্ণয় করতে পারে না। অতএব এ ক্ষেত্রে কুরআন-সুন্নাহর আশ্রয়ে যাওয়া ওয়াজিব।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন