hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল্লাহ তা‘আলার নান্দনিক নাম ও গুণসমগ্র কিছু আদর্শিক নীতিমালা

লেখকঃ শাইখ মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন রহ.

৪২
দ্বাদশতম উদাহরণ
হাদীসে কুদসীতে এসেছে:

«من تقرب مني شبرا تقربت منه ذراعا، ومن تقرب مني ذراعا تقربت منه باعاً، ومن أتاني يمشي أتيته هرولة» .

যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ আমার নিকটবর্তী হলো, আমি এক হাত পরিমাণ তার নিকটবর্তী হলাম। আর যে ব্যক্তি এক হাত পরিমাণ আমার নিকটবর্তী হলো আমি এক গজ পরিমাণ তার নিকটবর্তী হলাম। আর যে ব্যক্তি আমার কাছে হেঁটে এল, আমি তার কাছে দৌড়ে যাই।

হাদীসটি সহীহ। ইমাম মুসলিম হাদীসটি যিকির ও দো‘আ অধ্যায়ে আবু যর রাদিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনায় উল্লেখ করেছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেও অনুরূপ একটি হাদীস তিনি উল্লেখ করেছেন। ইমাম বুখারী কিতাবুত্ তাওহীদ, অনুচ্ছেদ পনেরতে আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে অনুরূপ একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন। [- বুখারী, হাদীস নং ৭৪০৫; মুসলিম হাদীস নং ২৬৭৫]

[জওয়াব:]

এই হাদীসটি আল্লাহ তা‘আলার ওই সকল কর্মকে বুঝাচ্ছে যা তিনি সম্পাদন করতে ইচ্ছা করেন। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তা‘আলা যা ইচ্ছা তাই করেন। এ বিষয়টি কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। যেমন আল্লাহ তা‘আলার নিম্নোক্ত বাণীসমূহে:

﴿ وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌۖ أُجِيبُ دَعۡوَةَ ٱلدَّاعِ إِذَا دَعَانِۖ ﴾ [ البقرة : ١٨٦ ]

আর যখন আমার বান্দাগণ তোমাকে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে, আমি তো নিশ্চয় নিকটবর্তী। আমি আহবানকারীর ডাকে সাড়া দেই, যখন সে আমাকে ডাকে। (সূরা আল বাকারা: ২: ১৮৬)

﴿ وَجَآءَ رَبُّكَ وَٱلۡمَلَكُ صَفّٗا صَفّٗا ٢٢ ﴾ [ الفجر : ٢٢ ]

আর তোমার রব ও ফেরেশতাগণ উপস্থিত হবেন সারিবদ্ধভাবে। (সূরা আল ফাজর: ৮৯: ২২)

﴿ هَلۡ يَنظُرُونَ إِلَّآ أَن تَأۡتِيَهُمُ ٱلۡمَلَٰٓئِكَةُ أَوۡ يَأۡتِيَ رَبُّكَ أَوۡ يَأۡتِيَ بَعۡضُ ءَايَٰتِ رَبِّكَۗ﴾ [ الانعام : ١٥٨ ]

তারা কি এরই অপেক্ষা করছে যে, তাদের নিকট ফেরেশতাগণ হাজির হবে, কিংবা তোমার রব উপস্থিত হবে অথবা প্রকাশ পাবে তোমার রবের আয়াতসমূহের কিছু? (সূরা আল আনআম: ৬: ১৫৮)

﴿ ٱلرَّحۡمَٰنُ عَلَى ٱلۡعَرۡشِ ٱسۡتَوَىٰ ٥ ﴾ [ طه : ٥ ]

দয়াময় (আল্লাহ) আরশে সমাসীন। (সূরা তাহা: ২০: ৫)

অনুরূপভাবে হাদীসে এসেছে:

«ينزل ربنا كل ليلة إلى السماء الدنيا حين يبقى ثلث الليل الآخر»

আমাদের রব প্রতি রাতেই নিম্নাকাশে নেমে আসেন, যখন রাতের শেষ তৃতীয় প্রহর অবশিষ্ট থাকে। [- এ হাদীসটির সূত্র পূর্বে গিয়েছে]

অন্য এক হাদীসে এসেছে:

«ما تصدق أحد بصدقة من طيب ولا يقبل الله إلا الطيب- إلا أخذها الرحمن بيمينه»

যখন কোনো ব্যক্তি হালাল সম্পদ থেকে কিছু দান করে - আর আল্লাহ হালাল ব্যতীত গ্রহণ করেন না- তখন দয়াময় তা তাঁর ডান হাত দিয়ে গ্রহণ করেন। [- বুখারী, যাকাত অধ্যায়, অনুচ্ছেদ : হালাল উপার্জন থেকে সদাকা করা, হাদীস নং ১৪১০; মুসলিম, যাকাত অধ্যায়, অনুচ্ছেদ : হালাল উপার্জনের সদাকা কবুল হওয়া, হাদীস নং ১০১৪]

এ জাতীয় আরো অন্যান্য আয়াত ও হাদীস যা ইচ্ছাকৃত কর্মসমূহ আল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়াকে নির্দেশ করে। অতএব হাদীসে যে উল্লিখিত হয়েছে, ‘আমি তার নিকটবর্তী হই’, ‘আমি তার দিকে দৌড়ে আসি’ তা এই পর্যায়ের।

সালাফগণ তথা আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত উল্লিখিত ধরনের বাণীসমূহকে আল্লাহ তা‘আলার শানের জন্য উপযোগীভাবে বাহ্যিক ও প্রকৃত অর্থেই নিয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে তারা কোনো ‘তাকঈফ’ তথা ধরন-ধারণ নির্ধারণ এবং ‘তামছীল’ তথা উদাহরণ নির্ধারণের আশ্রয়ে যান না। শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. আল্লাহর নিম্নাকাশে নেমে আসা বিষয়ক হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন (দ্র. মাজমুউল ফাতাওয়া: খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৪৬৬): আল্লাহ তা‘আলার নিকটবর্তী হওয়া এবং কিছু বান্দার কাছে আসা- যারা আল্লাহ তা‘আলার ইচ্ছাকৃত কর্ম, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার আগমণ, তাঁর অবতরণ ও আরশের ওপরে আরোহনকে সাব্যস্ত করে - তারা উল্লিখিত হাদীসে নিকটবর্তী হওয়ার যে কথা আছে সেটাকেও সাব্যস্ত করেন।’

অতএব এ কথা বলতে বাধা কি যে, আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার নিকটবর্তী হন, তিনি যেভাবে চান সেভাবে, তাঁর ঊর্ধ্বাবস্থান সত্ত্বেও?

কোনো ধরন-ধারণ নির্ধারণ না করে, অথবা কোনো উদাহরণ না দিয়ে এ কথা বলতে বাধা কি যে আল্লাহ তা‘আলা যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে আসবেন?

এটা তো আল্লাহ তা‘আলার কামাল ও পূর্ণাঙ্গতারই একটি বিষয় যে তিনি তাঁর শান মোতাবেক যা ইচ্ছা তাই করবেন।

কেউ কেউ বলেছেন যে, এ হাদীসে আল্লাহ তা‘আলার যে কথাটি এসেছে যে, ‘আমি তাঁর নিকট দৌড়ে যাই’, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, যে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনের জন্য কাজ করে যায় এবং শরীর ও অন্তর উভয়টা নিয়ে আল্লাহর পানে ধাবিত হয়, তাকে আল্লাহ তা‘আলা অতিদ্রুত গ্রহণ করে নেন। আর আল্লাহ তা‘আলা আমলকারীকে যে প্রতিদান দেন তা আমলকারীর আমলের চেয়েও অধিক পরিপূর্ণ। তারা তাদের এ বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন যে, আল্লাহ তা‘আলা হাদীসে কুদসীতে বলেছেন, ‘যে আমার কাছে হেঁটে আসে’। আর এটা জ্ঞাত বিষয় যে, আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জনকারী, আল্লাহ তা‘আলার কাছে পৌঁছতে আগ্রহী ব্যক্তি কেবলমাত্র হাঁটার মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জন করে না, বরং কখনো হাঁটার মাধ্যমে, যেমন সালাতের উদ্দেশে মসজিদের দিকে হেঁটে যাওয়া, হজ পালনের উদ্দেশে হেঁটে যাওয়া, আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশে হেঁটে যাওয়া ইত্যাদি। আবার কখনো রুকু-সিজদা ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জন করে থাকে, যেমন হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘নিশ্চয় বান্দা আল্লাহ তা‘আলার অতি নিকটবর্তী থাকে তখন যখন সে সিজদারত থাকে।’ [- মুসলিম, সালাত অধ্যায়, অনুচ্ছেদ : রুকু ও সিজদায় যা বলা হবে, হাদীস নং ৪৮২] বরং বান্দা বিছানায় শুয়ে থেকেও আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

﴿ ٱلَّذِينَ يَذۡكُرُونَ ٱللَّهَ قِيَٰمٗا وَقُعُودٗا وَعَلَىٰ جُنُوبِهِمۡ﴾ [ ال عمران : ١٩١ ]

যারা আল্লাহহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে। (সূরা আলে ইমরান: ৩: ১৯১)

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইমরান ইবনে হুসাইনকে বলেছেন:

«صل قائما، فإن لم تستطع فقاعداً، فإن لم تستطع فعلى جنب»

তুমি দাঁড়িয়ে সালাত পড়, যদি না পার তাহলে বসে, আর যদি না পার তাহরে কাত হয়ে। [- বুখারী, জুমআ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ : যদি বসে নামাজ পড়তে না পাড়ে তবে কাত হয়ে, হাদীস নং ১১১৭]

উক্ত ব্যাখ্যার প্রবক্তাগণ বলেন: যদি বিষয়টি এ রকমই হয়, তাহলে হাদীসটির উদ্দেশ্য হবে আল্লাহ তা‘আলা বান্দার আমলের যে বিনিময় দেন তা বর্ণনা করা। আর যে ব্যক্তি একনিষ্ঠ হয়ে আল্লাহর প্রতি ধাবিত হবে, সে যদি ধীরগামীও হয় তবুও আল্লাহ তা‘আলা তাকে তার আমলের চেয়েও উত্তম ও পূর্ণাঙ্গ প্রতিদান দেবেন। আর এটাই হলো হাদীসটির বাহ্যিক অর্থ যার অনন্য বক্তব্য থেকে শরঈ ইঙ্গিত অনুযায়ী বুঝা যাচ্ছে।

যদি অনন্য বক্তব্য থেকে শরঈ ইঙ্গিত অনুযায়ী এ অর্থ বুঝা যায় তবে তা বাহ্যিক অর্থ থেকে দূরে যাওয়া হবে না, আহলে তা‘তীলদের তাবিলের মতোও তাবিল করা হবে না, অতএব তা আহলে সুন্নতের বিরুদ্ধে দলিল হিসেবে দাঁড়াবে না।

উল্লিখিত অভিমত ব্যক্তকারী যা বললেন, তা ফেলে দেওয়ার মতো না। তবে প্রথম কথাটি অধিক পরিষ্কার, ত্রুটিমুক্ত এবং সালাফদের মাযহাবের অধিক উপযোগী।

শরঈ ইঙ্গিতের যে কথাটি বলা হয়েছে, অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলার নৈকট্য অর্জন শুধু হাঁটার সঙ্গেই বিশিষ্ট নয়, বরং বলা হবে যে হাদীসটি একটি উদাহরণতুল্য। কোনটি ইবাদত এবং কোনটি ইবাদত নয়, তা নির্দিষ্ট করার জন্য হাদীসটি উল্লিখিত হয়নি। অতএব হাদীসটির অর্থ হবে: যে ব্যক্তি আমার কাছে এমন ইবাদতের ক্ষেত্রে হেঁটে আসল যাতে হাঁটার প্রয়োজন পড়ে, যেমন জামাতের সঙ্গে সালাত আদায়ের জন্য মসজিদের যাওয়ার প্রয়োজনে হাঁটতে হয়, অথবা এমন ইবাদত যা মূলত হেঁটেই সম্পন্ন করতে হয়, যেমন তাওয়াফ এবং সাঈ।

আল্লাহ তা‘আলাই সর্বোত্তম জ্ঞানী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন