HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
যিশু কি সত্যিই ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন
লেখকঃ ডা. জাকির নায়েক
৮
৪. যিশু ক্রুশবিদ্ধ না হওয়ার শ্রেষ্ঠ প্রমাণশ্রদ্ধেয় প্যাস্টর রুক্নি। আপনি বললেন, আমি নাকি অযৌক্তিক কথা বলেছি। যদিও আমার সব প্রশ্নের যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। আপনি অবশ্য আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছেন। আর আমিও ইনশাআল্লাহ এখন তার প্রশ্নের উত্তর দেব। আর আপনারাই বিচার করবেন কার কথা অযৌক্তিক। আমার নাকি প্যাস্টরের। প্যাস্টর রুক্নি বললেন যে, ডিকশনারির সংজ্ঞাগুলো তিনি চেক করে দেখেননি। তবে এটা জেনেছেন যে, আমি সত্যি বলেছি। বড় হাতের আর ডিকশনারির বক্তব্য অনুযায়ী বলা হয়েছে, যিশুখ্রিস্ট উঠেছিলেন মৃত অবস্থা থেকে।
পুনরুত্থানের জন্য তাকে অবশ্যই উঠতে হবে। প্যাস্টরকে ডিকশনারির সব কথা মেনে নিতে বলছি না। কারণ, ডিকশনারির সব কথা তিনি হয়তো মানবেন না। আমিও হয়তো মানব না। তবে তিনি বাইবেল তো মানবেন। সেইন্ট পল এরকথা বলেছেন ফার্স্ট কোরিনথিয়নে ১৫ নং অধ্যায়ের ৪৪ নং অনুচ্ছেদে যে, পুনরুত্থানে শরীর আত্মা হয়ে যায়। আপনি যিশুকে মানেন? নাকি মানেন না? বোধহয় মানেন। তাহলে যিশুখ্রিষ্টের নিজের কথা অনুযায়ী তিনি যদি পুনরুত্থিত হন তাহলে তিনি এখন আত্মা হয়ে, মানুষ হয়ে আসবেন না।
আমার বলা চৌদ্দটা পয়েন্টের সবগুলোই প্রমাণ করে যে, যিশু জীবিত ছিলেন। তিনি বললেন, সবকিছুই ক্রসকে কেন্দ্র করে। ঈশ্বরের সব আদেশ। এটা কার কথা? পল! আমি বলিনি। পল বলেছেন, কোলোশিয়ানস্ ২নং অধ্যায়ের ১৪ নং অনুচ্ছেদে যেটা যিশুখ্রিস্টের শিক্ষার বিরুদ্ধে যায়। গসপেল অব ম্যাথিও ১৯নং অধ্যায়ের ১৬ ও ১৭নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলো। আমিও মানি। যিশু ঠিক কথাই বলেছেন। পাপ থেকে মুক্তি চাইলে ঈশ্বরকে মেনে চলুন। পল বলেছেন, সবকিছুই ক্রসকে কেন্দ্র করে। প্যাস্টরও বললেন, আমাদের ভালো কাজগুলো সব মূল্যহীন। ক্রুসিফিক্সন না থাকলে বাইবেলের দাম দুই পয়সাও না। এখন বাইবেল দিয়েই প্রমাণ করছি ক্রুসিফিক্সন হয়নি। যিশুখ্রিস্ট ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। তিনি একটা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম আমাকে গসপেলের মাত্র একটা অনুচ্ছেদ দেখে বলা আছে যে, যিশুখ্রিস্ট মৃত অবস্থা থেকে পুনরুত্থিত। একটাও পাবেন না। তিনি গসপেল অব ম্যাথিও ২৮ অধ্যায়ের ৬ নং অনুচ্ছেদটা বললেন, আমি অনুচ্ছেদটি পড়ছি “তিনি এখানে নেই কারণ তিনি উত্থিত হয়েছেন যেমনটা বলেছিলাম। আসো দেখে যাও। মহান প্রভু কোথায় শুয়েছিলেন? তিনি উত্থিত হয়েছেন।”
এখানে বলা হয়নি যে, যিশু পনুরুত্থিত হয়েছেন। উত্থিত মানে তিনি জীবিত। আমি ঘুমাই তারপর উত্থিত হই। তার মানে কি আমি পুনরুত্থিত? তার মানে কি এই? প্যাস্টর বললেন, একটা মেয়েকে দেখেছিলেন তার কথা অনুযায়ী মেয়েটা মারা গিয়েছিল। তারপর প্যাস্টরের কথা অনুযায়ী যিশুর দয়ায় মেয়েটা বেঁচে গেছে। তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। মেয়েটা কি পুনরুত্থিত হয়েছে? না মেয়েটা মৃত্যু থেকে ফিরে এসেছে। যিশুখ্রিস্ট ক্রুসিফাইড হয়ে মৃত অবস্থা থেকে জীবিত হননি। তিনি মৃত্যু থেকে ফিরে এসেছেন। চার নম্বর পয়েন্টে প্যাস্টর বললেন, বাইবেলে আছে যিশু নাকি দেয়াল ভেদ করে এসেছিলেন? বাইবেলে এমন কথা বলা হয়নি। এটা অনুমান। অনুমান করা হয়। আর পুরো ঘটনাটা জানলে আপনারাও বুঝবেন। তবে হাতে সময় কম।
যিশুখ্রিস্ট তার হাত-পা দেখিয়েছিলেন কি জন্য? গর্তগুলো দেখানোর জন্য। এটা কে বলেছেন, প্যাস্টর। বাইবেল বলেনি। গসপেল ব্যুক ২৪ নং অধ্যায়ের ৩৭ নং অনুচ্ছেদ বলছে যে, তোমরা আমার হাত পা দেখ। এটাতো আমি নিজেই। তোমরা আমার হাত-পা দেখ। এটা তো আমি। কারণ, আত্মার রক্তমাংসের শরীর থাকে না। তিনি তার হাত-পায়ের ক্ষতগুলো দেখান নি। এ কথা তিনি বলেননি। যিশুর শিষ্য থমাস দেখতে চেয়েছিল। সেই উপরের ঘরে বলেছিলেন, আমি কোনো আত্মা নই। কী প্রমাণ হয়? তিনি পুনরুত্থিত হননি। ছয় নম্বর পয়েন্ট, তিনি বললেন সমাধিটা বড় ছিল, কারণ এটার মালিক ছিল ধনী। এ কথাটা আমি আগেই বলেছি। সমাধিটার মালিক ছিল খুব ধনী আর প্রভাবশালী। আরামাথিয়ার জোসেফ। সেটা আমিও বলেছি। সাত নম্বর পয়েন্ট, পাথরটা কেন সরানো হয়েছিল? প্যাস্টর উত্তরে বললেন দেবদূত পাথরটা সরিয়েছিল।
আমি একথা বলিনি, কে পাথরটা সরিয়েছে? প্রশ্নটা ছিল কেন সরানো হয়েছে? প্যাস্টর বললেন, লোকজনকে বোঝানোর জন্য যে যিশু মারা যান নি। তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম লোকজনকে বোঝানোর জন্যে পাথরটা সরানো হয়েছিল। যিশুর দেহকে জড়িয়ে রাখা কাপড়টা খোলার প্রয়োজন হলো কেন? দুইটা প্রশ্ন এক সাথে- পাথর সরানো আর কাপড়টা খুলে ফেলা। কাপড়টা খুলে রাখা হয়েছিল। একথা বলা আছে গসপেল অব জন ২০ নং অধ্যায়ে যে, কাপড়টা খুলে রাখা হয়েছিল। গসপেল অব মার্কের ১৬ অধ্যায়েও আছে। এগুলোর কোনো উত্তর নেই।
একমাত্র উত্তর হলো যিশুখ্রিস্ট আসলে তখন জীবিত ছিলেন। আর যেহেতু জীবিত ছিলেন তাই কাপড়টা খুলতে হয়েছিল এবং পাথরটাও সরিয়ে ছিলেন। প্যাস্টর বললেন, যিশু বলেননি যে তিনি তিমির পেটে যাবেন। আমি কখন বলেছি, যিশু তিমির পেটে যাবেন? কথাটা পরিষ্কার, যিশুখ্রিস্ট অনুচ্ছেদে আছে যে, ইউনুস নবী যেভাবে তিন দিন তিন রাত তিমির পেটে ছিলেন একইভাবে ঈশ্বরের পুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর বুকে থাকবেন। যিশুখ্রিস্ট একথা কখনোই বলেন নি যে, তিনি তিন রাত পৃথিবীর বুকে থাকবেন। ভেতরে থাকবেন।
আমার ধারণা, আপনি যিশুখ্রিস্টের পরিষ্কার করে বলা কথাটা বুঝতে পারছেন না। যেভাবে ইউনুস তিন দিন তিন রাত তিমির পেটে ছিলেন অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর বুকের ভেতরে থাকবেন। যিশু তিমির পেটে এ কথাটা তাহলে আসছে কোত্থেকে? এটা পানির মতো পরিষ্কার। ইউনুস যেভাবে তিমির পেটে ছিলেন অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র পৃথিবীর বুকে থাকবেন। ইউনুস ছিলেন জীবিত। তাই যিশুখ্রিস্ট যদি এ ভবিষ্যদ্বাণীটা পূরণ করতে চান তাহলে তিনিও থাকবেন জীবিত। কিন্তু খ্রীষ্টানরা বলে, তিনি ছিলেন মৃত। ভবিষ্যদ্বাণীটা পূরণ করতে গেলে তাকে জীবিত থাকতে হবে। প্যাস্টর বললেন, সময়ের কথা। আমিও একমত। গসপেল বলছে, তৃতীয় দিনে তিনি উত্থিত হয়েছেন।
এছাড়াও খ্রিষ্টান মিশনারিরা একথা বলেন। তারা বলেন তাই তো প্যাস্টরও বললেন, একদিন মানে চব্বিশ ঘণ্টা না। আর তর্কের খাতিরে আমি একথাটা মেনে নিলাম। এক মিশনারিও আমাকে বলেছিল। ধরুন, আপনি নিউইয়র্কে গেলেন, দুপুর দুইটায় সেখানে পৌছালেন। আর পরের দিন নিউইয়র্ক ছেড়ে চলে গেলেন খুব সকালবেলায়। কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি নিউইয়র্কে কয়দিন ছিলেন? আমি খুব সকাল বেলায়। কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি নিউইয়র্কে কয়দিন ছিলেন? আমি বলব দুই দিন। টেকনিক্যালি কথাটা ভুল। তবে বুঝার জন্য আমি মেনে নিলাম, কোনো সমস্যা নেই। আমি চব্বিশ ঘণ্টাও থাকলাম না। তারপরও দুই দিন, আচ্ছা ঠিক আছে। তর্কের খাতিরে মানলাম।
আর বাইবেল বলছে, প্যাস্টরও বললেন আমিও একমত যে, যিশুখ্রিস্ট, তিনি উত্থিত হয়েছিলেন তৃতীয় দিনে। একটা দিনের অংশ সেটাকেও ধরা হচ্ছে একটা পুরো দিন। তাই প্যাস্টরের কথা মানলাম অতো খুটিয়ে দেখলাম না যে, কখন তাকে সমাধিতে রাখা হলো শুক্রবারে সন্ধ্যার পরে। ধরুন, আপনি বললেন, সন্ধার আগে। সেটাও মানলাম তর্কের খাতিরে মানলাম। যদি বললেন বিকেল। সেটাও মানলাম। যদি তিনি বলেন যে, যিশু রবিবার সকালে সমাধি ছেড়ে যান নি তিনি গেছেন বিকেলে। সেটাও মানলাম। তাহলে যিশুখ্রিস্ট সেই সমাধিতে ছিলেন। দিনের একটা অংশকেও পুরো দিন ধরছি। প্রথম দিনটা শুক্রবার দিন শুক্রবার রাত। শনিবার দিন শনিবার রাত। রবিবার সকাল। এর পরেও যদি সময় বাড়ান। আগে আর পেছনে। তারপরও পাবেন তিন দিন আর দুই রাত।
ইউনুসের নিদর্শন এমনটা বলছে না যে, ইউনুস যেভাবে তিন দিন ছিলেন তিমি মাছের পেটে অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র তিনদিন থাকবেন পৃথিবীর বুকের ভিতরে। বলা আছে, ইউনুস যেভাবে ছিলেন তিন দিন তিন রাত অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র থাকবেন তিন দিন এবং তিন রাত পৃথিবীর বুকের ভেতরে। এখানে কি পেলেন? তিন দিন আর দুই রাত। তিন দিন-তিন রাত কোনোভাবে হচ্ছে না। যত জিমন্যাসটিক্সই করেন। এমনকি যদি আইনস্টাইনকেও নিয়ে আসেন বাইবেল থেকে প্রমাণ করতে পারবেন না। এটা তিন দিন তিন রাত। কখনো না।
আর যদি কোনো মিশনারি বলেন, তিনি নিউইয়র্কে গেলেন একদিন দুপুর দুইটায়। পরের দিন সকালে আসলেন এটা দুই দিন। এটা মানলাম কিন্তু যদি বলে আমি নিউইয়র্কে দুই দিন দুই রাত ছিলাম আমি বলবো, তিনি মিথ্যাবাদী। বড় প্রকসের মিথ্যাবাদী। এটা বলতে পারেন দুই দিন। এটাও মানলাম যে একটা দিনের অংশই পুরো দিন। তর্কের খাতিরে মানলাম। কিন্তু দুই দিন দুই রাত বলতে পারবেন না। যদি এমনটা বলেন মিথ্যা বলছেন। প্যাস্টর বললেন শেষ পয়েন্ট, তিনি বললেন, যিশুখ্রিস্টকে কেউ নাকি জীবিত অবস্থায় দেখেনি। এটা আগেই প্রমাণ করেছি। আমি চৌদ্দটা পয়েন্টের কথা বলেছি। তিনি কয়েকটার উত্তর দিয়েছেন। সেই যুক্তিগুলো আবার খণ্ডন করেছি। যুক্তি বলে যিশুখ্রিস্ট তখন ছিলেন জীবিত। তার মানে সেন্ট পলের কথা অনুযায়ী যিশুখ্রিস্টের নিজের কথা অনুযায়ী ওয়েবস্টার ডিকশনারি অনুযায়ী তিনি ক্রুসিফাইড হন নি এবং পুনরুত্থিত হন নি।
আর যদি ক্রুসিফাইড না হন ক্রুসফিক্সন নেই খ্রিষ্টান ধর্মেও নেই। আর প্যাস্টর তার এসব কথা লেকচারে বললেন। এ কথাটা তিনি বেশ ভালোভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন। সেটা হলো মানুষের আদি পাপ। যে মানুষজাতির প্রত্যেকেই চার্চও এমন শিক্ষা দেয় যে, সব মানুষই পাপের মধ্যে জন্মায়। প্রত্যেকটা শিশুই এ পাপ নিয়ে জন্মায়। উনি যে আদি পাপের কথা বললেন, আর যেটা বলেছেন ঠিকই বলেছেন। তবে তাঁর সিদ্ধান্ত সেটা যৌক্তিক না। তিনি বললেন যে, আদম আর হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহকে অমান্য করেছিলেন। আর তারা একটা নিষিদ্ধ গাছ থেকে নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন। সে জন্য আল্লাহ তায়ালা তাদের শাস্তি দিলেন। আর তিনি বললেন বেহেশত থেকে বের হয়ে যাও। এটাই যথেষ্ট না?
এ ছাড়াও বলা আছে, উনি রেফারেন্সটা বলেননি। জেনেসিস ৩ অধ্যায়ের ১৬ নং অনুচ্ছেদ বলছে যে, পুরুষরা তোমরা কষ্ট করে উপার্জন করবে। আর নারী তোমরা তোমাদের স্বামীর অধীনে থাকবে। আর তোমরা প্রসব যন্ত্রণা পাবে। গর্ভধারণ অভিশাপ। বাইবেল তেমনই বলছে। আর খ্রিষ্টানরা বলে যে, প্রত্যেক শিশু পাপের মধ্যে জন্মায় আদমের সময় থেকে। আদমের সময় থেকে পৃথিবীর শেষ শিশু না জন্মানো পর্যন্ত সবাই পাপের ভেতরে। আমি একটা প্রশ্ন করি। যখন আদম সেই নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন? খাওয়ার আগে জিজ্ঞাসা করেছিলেন? না হয়তো প্যাস্টরকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, আমাকে জিজ্ঞাসা করেননি। আমাকে জিজ্ঞাসা না করলে আমি কেন দায়ী থাকব? কেন? অযৌক্তিক। ঈশ্বর কি অযৌক্তিক? না। খ্রিষ্টানরা পাপের প্রায়শ্চিত্তের কথা বলে।
যে ঈশ্বর তার একমাত্র পুত্রকে পাঠিয়েছেন প্রায়শ্চিত্ত করতে যাতে সে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে পারে। আসুন দেখি, পবিত্র বাইবেল এ ব্যাপারে কি বলে? তারা পাপের প্রায়শ্চিত্ত সম্পর্কে বলেন যে, যিশুখ্রিস্ট জীবন দিয়েছেন মানুষ জাতির পাপের জন্য। একথাটা তিনিও বলেছেন, আর খ্রিস্টান মিশনারিরাও বলেন। বাইবেল বলছে, যে পাপ করবে সে মারা যাবে। এ কথাটা দুইবার আছে ওল্ড টেস্টামেন্টে। ইজেকিল ১৮ নং অধ্যায়ের ২০ নং অনুচ্ছেদে। ইজেকিল ১৮নং অধ্যায়ের ৪নং অনুচ্ছেদে আছে, যে পাপ করবে সে মারা যাবে। তবে যদি ইজেকিলের ২০ নং অনুচ্ছেদটি পড়েন, সেখানেই অনুচ্ছেদটা শেষ হয় নি। এটা হলো অনুচ্ছেদটার শুরু, পুরো অনুচ্ছেদটা বলছে। খ্রিষ্টান মিশনারিরা বলেন, যে পাপ করবে সে মারা যাবে। তবে পুত্র পিতার পাপের বোঝা বইবে না। আর পিতাও পুত্রের পাপের বোঝা বইবে না। ভালো লোকের ভালো কাজ তার সাথেই থাকবে। খারাপ লোকের খারাপ কাজও তার সাথে থাকবে।
এর পরের অনুচ্ছেদটি বলছে ইজেকিল ১৮নং অ্যায় ২১ নং অনুচ্ছেদ এখানে বলা হয়েছে, যদি সেই ব্যাক্তি পাপ থেকে সরে আসে আর তারপর থেকে সব ভালো কাজ করে সে বেঁচে থাকবে। সে মারা যাবে না। এটা কে বলেছে? বাইবেল ওল্ড টেস্টামেন্টে ইজেকিল ১৮ নং অধ্যায়। ২০ থেকে ২১নং অনুচ্ছেদ। সে মারা যাবে না। যদি ভালো কাজ করেন আপনি মারা যাবেন না। যিশুখ্রিস্ট নিজেই বলেছেন, পাপ থেকে মুক্তি চাইলে ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলো। আর সেন্ট পল বলেছেন, যে যদি যিশু মৃত থেকে উত্থিত না হন আমাদের শিক্ষা মূল্যহীন, তোমাদের বিশ্বাসও মূল্যহীন। আমি প্রমাণ করেছি যে, যিশুখ্রিস্ট আসলেই ক্রুসিফাইড হয়েছিলেন। এটা ভুল ধারণা। কারণ, বাইবেলের ওপর অনেক বিশেষজ্ঞ আছেন যারা বলেন যে, যিশুখ্রিস্ট আসলে ক্রুসবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। হ্যাঁ, ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। তবে নামানোর সময় জীবিত ছিলেন।
খ্রিষ্টান ধর্মের প্রথমদিকে কম করে হলেও সাতটা গোত্র ছিল যারা বিশ্বাস করত যে, যিশুখ্রিস্টের বদলে অন্য কাউকে ক্রুশে ঝোলানো হয়েছিল। এটাকে তারা বলে সাব্স্টিটিশন থিয়োরি। সে সময় ব্যাসিলিনিয়ানরা এটা বিশ্বাস করত। কার্পোক্রটরাও। সবাই খ্রীস্টান। এটাই বিশ্বাস করত যে, সেখানে যিশুখ্রিস্টের বদলে অন্য কাউকে ক্রুশে ঝোলানো হয়েছিল। গসপেল অব বারনাবাসে আছে। প্যাস্টর সম্ভবত এটা মানেন না। বারনাবাস যিশুখ্রিস্টের সময়কালীন একজন চাক্ষুষ সাক্ষী। তিনি বলেছেন যে, তখন যিশুখ্রিস্টের বদলে আসলে জুডাসকে ক্রুশে ঝোলানো হয়েছিল। যদি আপনারা নাজাহ হামাদির পুথি পড়েন দেখবেন এখানেও বলা হয়েছে যে, যিশুখ্রিস্ট ক্রুসিফাইড হন নি। এরাও খ্রীষ্টান।
আমি এই কথাগুলো আগে বলি নি। কারণ, প্যাস্টর বলবেন, যে তিনি গসপল অব বারনাবাসে বিশ্বাস করেন না। তিনি নাজাহ হামদির পুথিগুলো বিশ্বাস করেন না। তিনি তাহলে কি বিশ্বাস করেন? বিশ্বাস করেন এ বাইবেল। আমি বাইবেল থেকেই প্রমাণ করেছি যে, যিশুখ্রিস্ট নাকি আমাদের পাপের জন্য মারা গিয়েছেন? স্বেচ্ছায় মারা গেছেন। যদি গসপেল অব ম্যাথিও পড়েন দেখবেন ২৭ নং অধ্যায়ের ৪৬ নং অনুচ্ছেদ বলছে। এছাড়াও গসপেল অব মার্ক ১৫ নং অধ্যায়ের ৩৪ নং অনুচ্ছেদ বলছে, যখন যিশুকে ক্রুশে ঝোলানো হলো তিনি কাঁদছিলেন এল্লাই এল্লাই লামা সাবাকতানি। এল্লাই এল্লাই লামা সাবাকতানি। যার অর্থ হে ঈশ্বর, হে ঈশ্বর, কেন তুমি আমাকে ত্যাগ করলে। চিন্তা করুন যিশুখ্রিস্ট স্বেচ্ছায় ক্রুশবিদ্ধ হলেন। তারপর সেখান থেকে কাঁদছিলেন ঈশ্বর, ঈশ্বর, কেন তুমি আমাকে ত্যাগ করলে? এতে প্রমাণ হয় যে, তিনি স্বেচ্ছায় ক্রুশবিদ্ধ হননি। তাহলে কাঁদবেন কেন? হোক সেটা মারাঠি বাইবেল অথবা উর্দু বাইবেল অথবা হিব্রু উদ্ধৃতিটা সব বাইবেলেই আছে। এল্লাই এল্লাই লামা সাবাকতানি। অনুবাদটা তার পরে। ঈশ্বর, ইশ্বর, কেন তুমি আমাকে ত্যাগ করলে? এতে প্রমাণ হয় যে, যিশুখ্রিস্ট স্বেচ্ছায় ক্রুশবিদ্ধ হননি।
এবারে আমার লেকচারটি শেষ করার আগে বলবো যে, যিশুখ্রিস্ট আসলে ক্রুসিফাইড হন নি। এটা ছিল ক্রুসিফিকশন। আমি আমার লেকচার শুরু করার সময় পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম। সূরা ইসরা’র ১নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে–
“যখন সত্য এসে মিথ্যার সামনে দাঁড়ায় মিথ্যা তখন বিলুপ্ত হয়। কারণ, মিথ্যা তার প্রকৃতিগত কারণেই বিলুপ্ত হবে।”
সমাপ্ত
পিস টিভির আরো দুটি লেকচার সিরিজ সংযোজন করা হল–
বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ–
ক. আঃ রহিম গ্রীন ও
খ. ইউসুফ এসটেস।
পুনরুত্থানের জন্য তাকে অবশ্যই উঠতে হবে। প্যাস্টরকে ডিকশনারির সব কথা মেনে নিতে বলছি না। কারণ, ডিকশনারির সব কথা তিনি হয়তো মানবেন না। আমিও হয়তো মানব না। তবে তিনি বাইবেল তো মানবেন। সেইন্ট পল এরকথা বলেছেন ফার্স্ট কোরিনথিয়নে ১৫ নং অধ্যায়ের ৪৪ নং অনুচ্ছেদে যে, পুনরুত্থানে শরীর আত্মা হয়ে যায়। আপনি যিশুকে মানেন? নাকি মানেন না? বোধহয় মানেন। তাহলে যিশুখ্রিষ্টের নিজের কথা অনুযায়ী তিনি যদি পুনরুত্থিত হন তাহলে তিনি এখন আত্মা হয়ে, মানুষ হয়ে আসবেন না।
আমার বলা চৌদ্দটা পয়েন্টের সবগুলোই প্রমাণ করে যে, যিশু জীবিত ছিলেন। তিনি বললেন, সবকিছুই ক্রসকে কেন্দ্র করে। ঈশ্বরের সব আদেশ। এটা কার কথা? পল! আমি বলিনি। পল বলেছেন, কোলোশিয়ানস্ ২নং অধ্যায়ের ১৪ নং অনুচ্ছেদে যেটা যিশুখ্রিস্টের শিক্ষার বিরুদ্ধে যায়। গসপেল অব ম্যাথিও ১৯নং অধ্যায়ের ১৬ ও ১৭নং অনুচ্ছেদে বলা আছে, ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলো। আমিও মানি। যিশু ঠিক কথাই বলেছেন। পাপ থেকে মুক্তি চাইলে ঈশ্বরকে মেনে চলুন। পল বলেছেন, সবকিছুই ক্রসকে কেন্দ্র করে। প্যাস্টরও বললেন, আমাদের ভালো কাজগুলো সব মূল্যহীন। ক্রুসিফিক্সন না থাকলে বাইবেলের দাম দুই পয়সাও না। এখন বাইবেল দিয়েই প্রমাণ করছি ক্রুসিফিক্সন হয়নি। যিশুখ্রিস্ট ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। তিনি একটা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম আমাকে গসপেলের মাত্র একটা অনুচ্ছেদ দেখে বলা আছে যে, যিশুখ্রিস্ট মৃত অবস্থা থেকে পুনরুত্থিত। একটাও পাবেন না। তিনি গসপেল অব ম্যাথিও ২৮ অধ্যায়ের ৬ নং অনুচ্ছেদটা বললেন, আমি অনুচ্ছেদটি পড়ছি “তিনি এখানে নেই কারণ তিনি উত্থিত হয়েছেন যেমনটা বলেছিলাম। আসো দেখে যাও। মহান প্রভু কোথায় শুয়েছিলেন? তিনি উত্থিত হয়েছেন।”
এখানে বলা হয়নি যে, যিশু পনুরুত্থিত হয়েছেন। উত্থিত মানে তিনি জীবিত। আমি ঘুমাই তারপর উত্থিত হই। তার মানে কি আমি পুনরুত্থিত? তার মানে কি এই? প্যাস্টর বললেন, একটা মেয়েকে দেখেছিলেন তার কথা অনুযায়ী মেয়েটা মারা গিয়েছিল। তারপর প্যাস্টরের কথা অনুযায়ী যিশুর দয়ায় মেয়েটা বেঁচে গেছে। তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। মেয়েটা কি পুনরুত্থিত হয়েছে? না মেয়েটা মৃত্যু থেকে ফিরে এসেছে। যিশুখ্রিস্ট ক্রুসিফাইড হয়ে মৃত অবস্থা থেকে জীবিত হননি। তিনি মৃত্যু থেকে ফিরে এসেছেন। চার নম্বর পয়েন্টে প্যাস্টর বললেন, বাইবেলে আছে যিশু নাকি দেয়াল ভেদ করে এসেছিলেন? বাইবেলে এমন কথা বলা হয়নি। এটা অনুমান। অনুমান করা হয়। আর পুরো ঘটনাটা জানলে আপনারাও বুঝবেন। তবে হাতে সময় কম।
যিশুখ্রিস্ট তার হাত-পা দেখিয়েছিলেন কি জন্য? গর্তগুলো দেখানোর জন্য। এটা কে বলেছেন, প্যাস্টর। বাইবেল বলেনি। গসপেল ব্যুক ২৪ নং অধ্যায়ের ৩৭ নং অনুচ্ছেদ বলছে যে, তোমরা আমার হাত পা দেখ। এটাতো আমি নিজেই। তোমরা আমার হাত-পা দেখ। এটা তো আমি। কারণ, আত্মার রক্তমাংসের শরীর থাকে না। তিনি তার হাত-পায়ের ক্ষতগুলো দেখান নি। এ কথা তিনি বলেননি। যিশুর শিষ্য থমাস দেখতে চেয়েছিল। সেই উপরের ঘরে বলেছিলেন, আমি কোনো আত্মা নই। কী প্রমাণ হয়? তিনি পুনরুত্থিত হননি। ছয় নম্বর পয়েন্ট, তিনি বললেন সমাধিটা বড় ছিল, কারণ এটার মালিক ছিল ধনী। এ কথাটা আমি আগেই বলেছি। সমাধিটার মালিক ছিল খুব ধনী আর প্রভাবশালী। আরামাথিয়ার জোসেফ। সেটা আমিও বলেছি। সাত নম্বর পয়েন্ট, পাথরটা কেন সরানো হয়েছিল? প্যাস্টর উত্তরে বললেন দেবদূত পাথরটা সরিয়েছিল।
আমি একথা বলিনি, কে পাথরটা সরিয়েছে? প্রশ্নটা ছিল কেন সরানো হয়েছে? প্যাস্টর বললেন, লোকজনকে বোঝানোর জন্য যে যিশু মারা যান নি। তর্কের খাতিরে মেনে নিলাম লোকজনকে বোঝানোর জন্যে পাথরটা সরানো হয়েছিল। যিশুর দেহকে জড়িয়ে রাখা কাপড়টা খোলার প্রয়োজন হলো কেন? দুইটা প্রশ্ন এক সাথে- পাথর সরানো আর কাপড়টা খুলে ফেলা। কাপড়টা খুলে রাখা হয়েছিল। একথা বলা আছে গসপেল অব জন ২০ নং অধ্যায়ে যে, কাপড়টা খুলে রাখা হয়েছিল। গসপেল অব মার্কের ১৬ অধ্যায়েও আছে। এগুলোর কোনো উত্তর নেই।
একমাত্র উত্তর হলো যিশুখ্রিস্ট আসলে তখন জীবিত ছিলেন। আর যেহেতু জীবিত ছিলেন তাই কাপড়টা খুলতে হয়েছিল এবং পাথরটাও সরিয়ে ছিলেন। প্যাস্টর বললেন, যিশু বলেননি যে তিনি তিমির পেটে যাবেন। আমি কখন বলেছি, যিশু তিমির পেটে যাবেন? কথাটা পরিষ্কার, যিশুখ্রিস্ট অনুচ্ছেদে আছে যে, ইউনুস নবী যেভাবে তিন দিন তিন রাত তিমির পেটে ছিলেন একইভাবে ঈশ্বরের পুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর বুকে থাকবেন। যিশুখ্রিস্ট একথা কখনোই বলেন নি যে, তিনি তিন রাত পৃথিবীর বুকে থাকবেন। ভেতরে থাকবেন।
আমার ধারণা, আপনি যিশুখ্রিস্টের পরিষ্কার করে বলা কথাটা বুঝতে পারছেন না। যেভাবে ইউনুস তিন দিন তিন রাত তিমির পেটে ছিলেন অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর বুকের ভেতরে থাকবেন। যিশু তিমির পেটে এ কথাটা তাহলে আসছে কোত্থেকে? এটা পানির মতো পরিষ্কার। ইউনুস যেভাবে তিমির পেটে ছিলেন অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র পৃথিবীর বুকে থাকবেন। ইউনুস ছিলেন জীবিত। তাই যিশুখ্রিস্ট যদি এ ভবিষ্যদ্বাণীটা পূরণ করতে চান তাহলে তিনিও থাকবেন জীবিত। কিন্তু খ্রীষ্টানরা বলে, তিনি ছিলেন মৃত। ভবিষ্যদ্বাণীটা পূরণ করতে গেলে তাকে জীবিত থাকতে হবে। প্যাস্টর বললেন, সময়ের কথা। আমিও একমত। গসপেল বলছে, তৃতীয় দিনে তিনি উত্থিত হয়েছেন।
এছাড়াও খ্রিষ্টান মিশনারিরা একথা বলেন। তারা বলেন তাই তো প্যাস্টরও বললেন, একদিন মানে চব্বিশ ঘণ্টা না। আর তর্কের খাতিরে আমি একথাটা মেনে নিলাম। এক মিশনারিও আমাকে বলেছিল। ধরুন, আপনি নিউইয়র্কে গেলেন, দুপুর দুইটায় সেখানে পৌছালেন। আর পরের দিন নিউইয়র্ক ছেড়ে চলে গেলেন খুব সকালবেলায়। কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি নিউইয়র্কে কয়দিন ছিলেন? আমি খুব সকাল বেলায়। কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞাসা করেন আপনি নিউইয়র্কে কয়দিন ছিলেন? আমি বলব দুই দিন। টেকনিক্যালি কথাটা ভুল। তবে বুঝার জন্য আমি মেনে নিলাম, কোনো সমস্যা নেই। আমি চব্বিশ ঘণ্টাও থাকলাম না। তারপরও দুই দিন, আচ্ছা ঠিক আছে। তর্কের খাতিরে মানলাম।
আর বাইবেল বলছে, প্যাস্টরও বললেন আমিও একমত যে, যিশুখ্রিস্ট, তিনি উত্থিত হয়েছিলেন তৃতীয় দিনে। একটা দিনের অংশ সেটাকেও ধরা হচ্ছে একটা পুরো দিন। তাই প্যাস্টরের কথা মানলাম অতো খুটিয়ে দেখলাম না যে, কখন তাকে সমাধিতে রাখা হলো শুক্রবারে সন্ধ্যার পরে। ধরুন, আপনি বললেন, সন্ধার আগে। সেটাও মানলাম তর্কের খাতিরে মানলাম। যদি বললেন বিকেল। সেটাও মানলাম। যদি তিনি বলেন যে, যিশু রবিবার সকালে সমাধি ছেড়ে যান নি তিনি গেছেন বিকেলে। সেটাও মানলাম। তাহলে যিশুখ্রিস্ট সেই সমাধিতে ছিলেন। দিনের একটা অংশকেও পুরো দিন ধরছি। প্রথম দিনটা শুক্রবার দিন শুক্রবার রাত। শনিবার দিন শনিবার রাত। রবিবার সকাল। এর পরেও যদি সময় বাড়ান। আগে আর পেছনে। তারপরও পাবেন তিন দিন আর দুই রাত।
ইউনুসের নিদর্শন এমনটা বলছে না যে, ইউনুস যেভাবে তিন দিন ছিলেন তিমি মাছের পেটে অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র তিনদিন থাকবেন পৃথিবীর বুকের ভিতরে। বলা আছে, ইউনুস যেভাবে ছিলেন তিন দিন তিন রাত অনুরূপভাবে ঈশ্বরের পুত্র থাকবেন তিন দিন এবং তিন রাত পৃথিবীর বুকের ভেতরে। এখানে কি পেলেন? তিন দিন আর দুই রাত। তিন দিন-তিন রাত কোনোভাবে হচ্ছে না। যত জিমন্যাসটিক্সই করেন। এমনকি যদি আইনস্টাইনকেও নিয়ে আসেন বাইবেল থেকে প্রমাণ করতে পারবেন না। এটা তিন দিন তিন রাত। কখনো না।
আর যদি কোনো মিশনারি বলেন, তিনি নিউইয়র্কে গেলেন একদিন দুপুর দুইটায়। পরের দিন সকালে আসলেন এটা দুই দিন। এটা মানলাম কিন্তু যদি বলে আমি নিউইয়র্কে দুই দিন দুই রাত ছিলাম আমি বলবো, তিনি মিথ্যাবাদী। বড় প্রকসের মিথ্যাবাদী। এটা বলতে পারেন দুই দিন। এটাও মানলাম যে একটা দিনের অংশই পুরো দিন। তর্কের খাতিরে মানলাম। কিন্তু দুই দিন দুই রাত বলতে পারবেন না। যদি এমনটা বলেন মিথ্যা বলছেন। প্যাস্টর বললেন শেষ পয়েন্ট, তিনি বললেন, যিশুখ্রিস্টকে কেউ নাকি জীবিত অবস্থায় দেখেনি। এটা আগেই প্রমাণ করেছি। আমি চৌদ্দটা পয়েন্টের কথা বলেছি। তিনি কয়েকটার উত্তর দিয়েছেন। সেই যুক্তিগুলো আবার খণ্ডন করেছি। যুক্তি বলে যিশুখ্রিস্ট তখন ছিলেন জীবিত। তার মানে সেন্ট পলের কথা অনুযায়ী যিশুখ্রিস্টের নিজের কথা অনুযায়ী ওয়েবস্টার ডিকশনারি অনুযায়ী তিনি ক্রুসিফাইড হন নি এবং পুনরুত্থিত হন নি।
আর যদি ক্রুসিফাইড না হন ক্রুসফিক্সন নেই খ্রিষ্টান ধর্মেও নেই। আর প্যাস্টর তার এসব কথা লেকচারে বললেন। এ কথাটা তিনি বেশ ভালোভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন। সেটা হলো মানুষের আদি পাপ। যে মানুষজাতির প্রত্যেকেই চার্চও এমন শিক্ষা দেয় যে, সব মানুষই পাপের মধ্যে জন্মায়। প্রত্যেকটা শিশুই এ পাপ নিয়ে জন্মায়। উনি যে আদি পাপের কথা বললেন, আর যেটা বলেছেন ঠিকই বলেছেন। তবে তাঁর সিদ্ধান্ত সেটা যৌক্তিক না। তিনি বললেন যে, আদম আর হাওয়া আলাইহিস সালাম আল্লাহকে অমান্য করেছিলেন। আর তারা একটা নিষিদ্ধ গাছ থেকে নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন। সে জন্য আল্লাহ তায়ালা তাদের শাস্তি দিলেন। আর তিনি বললেন বেহেশত থেকে বের হয়ে যাও। এটাই যথেষ্ট না?
এ ছাড়াও বলা আছে, উনি রেফারেন্সটা বলেননি। জেনেসিস ৩ অধ্যায়ের ১৬ নং অনুচ্ছেদ বলছে যে, পুরুষরা তোমরা কষ্ট করে উপার্জন করবে। আর নারী তোমরা তোমাদের স্বামীর অধীনে থাকবে। আর তোমরা প্রসব যন্ত্রণা পাবে। গর্ভধারণ অভিশাপ। বাইবেল তেমনই বলছে। আর খ্রিষ্টানরা বলে যে, প্রত্যেক শিশু পাপের মধ্যে জন্মায় আদমের সময় থেকে। আদমের সময় থেকে পৃথিবীর শেষ শিশু না জন্মানো পর্যন্ত সবাই পাপের ভেতরে। আমি একটা প্রশ্ন করি। যখন আদম সেই নিষিদ্ধ ফল খেয়েছিলেন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন? খাওয়ার আগে জিজ্ঞাসা করেছিলেন? না হয়তো প্যাস্টরকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, আমাকে জিজ্ঞাসা করেননি। আমাকে জিজ্ঞাসা না করলে আমি কেন দায়ী থাকব? কেন? অযৌক্তিক। ঈশ্বর কি অযৌক্তিক? না। খ্রিষ্টানরা পাপের প্রায়শ্চিত্তের কথা বলে।
যে ঈশ্বর তার একমাত্র পুত্রকে পাঠিয়েছেন প্রায়শ্চিত্ত করতে যাতে সে নিজের জীবন উৎসর্গ করতে পারে। আসুন দেখি, পবিত্র বাইবেল এ ব্যাপারে কি বলে? তারা পাপের প্রায়শ্চিত্ত সম্পর্কে বলেন যে, যিশুখ্রিস্ট জীবন দিয়েছেন মানুষ জাতির পাপের জন্য। একথাটা তিনিও বলেছেন, আর খ্রিস্টান মিশনারিরাও বলেন। বাইবেল বলছে, যে পাপ করবে সে মারা যাবে। এ কথাটা দুইবার আছে ওল্ড টেস্টামেন্টে। ইজেকিল ১৮ নং অধ্যায়ের ২০ নং অনুচ্ছেদে। ইজেকিল ১৮নং অধ্যায়ের ৪নং অনুচ্ছেদে আছে, যে পাপ করবে সে মারা যাবে। তবে যদি ইজেকিলের ২০ নং অনুচ্ছেদটি পড়েন, সেখানেই অনুচ্ছেদটা শেষ হয় নি। এটা হলো অনুচ্ছেদটার শুরু, পুরো অনুচ্ছেদটা বলছে। খ্রিষ্টান মিশনারিরা বলেন, যে পাপ করবে সে মারা যাবে। তবে পুত্র পিতার পাপের বোঝা বইবে না। আর পিতাও পুত্রের পাপের বোঝা বইবে না। ভালো লোকের ভালো কাজ তার সাথেই থাকবে। খারাপ লোকের খারাপ কাজও তার সাথে থাকবে।
এর পরের অনুচ্ছেদটি বলছে ইজেকিল ১৮নং অ্যায় ২১ নং অনুচ্ছেদ এখানে বলা হয়েছে, যদি সেই ব্যাক্তি পাপ থেকে সরে আসে আর তারপর থেকে সব ভালো কাজ করে সে বেঁচে থাকবে। সে মারা যাবে না। এটা কে বলেছে? বাইবেল ওল্ড টেস্টামেন্টে ইজেকিল ১৮ নং অধ্যায়। ২০ থেকে ২১নং অনুচ্ছেদ। সে মারা যাবে না। যদি ভালো কাজ করেন আপনি মারা যাবেন না। যিশুখ্রিস্ট নিজেই বলেছেন, পাপ থেকে মুক্তি চাইলে ঈশ্বরের আদেশ মেনে চলো। আর সেন্ট পল বলেছেন, যে যদি যিশু মৃত থেকে উত্থিত না হন আমাদের শিক্ষা মূল্যহীন, তোমাদের বিশ্বাসও মূল্যহীন। আমি প্রমাণ করেছি যে, যিশুখ্রিস্ট আসলেই ক্রুসিফাইড হয়েছিলেন। এটা ভুল ধারণা। কারণ, বাইবেলের ওপর অনেক বিশেষজ্ঞ আছেন যারা বলেন যে, যিশুখ্রিস্ট আসলে ক্রুসবিদ্ধ হয়ে মারা যাননি। হ্যাঁ, ক্রুশবিদ্ধ হয়েছিলেন। তবে নামানোর সময় জীবিত ছিলেন।
খ্রিষ্টান ধর্মের প্রথমদিকে কম করে হলেও সাতটা গোত্র ছিল যারা বিশ্বাস করত যে, যিশুখ্রিস্টের বদলে অন্য কাউকে ক্রুশে ঝোলানো হয়েছিল। এটাকে তারা বলে সাব্স্টিটিশন থিয়োরি। সে সময় ব্যাসিলিনিয়ানরা এটা বিশ্বাস করত। কার্পোক্রটরাও। সবাই খ্রীস্টান। এটাই বিশ্বাস করত যে, সেখানে যিশুখ্রিস্টের বদলে অন্য কাউকে ক্রুশে ঝোলানো হয়েছিল। গসপেল অব বারনাবাসে আছে। প্যাস্টর সম্ভবত এটা মানেন না। বারনাবাস যিশুখ্রিস্টের সময়কালীন একজন চাক্ষুষ সাক্ষী। তিনি বলেছেন যে, তখন যিশুখ্রিস্টের বদলে আসলে জুডাসকে ক্রুশে ঝোলানো হয়েছিল। যদি আপনারা নাজাহ হামাদির পুথি পড়েন দেখবেন এখানেও বলা হয়েছে যে, যিশুখ্রিস্ট ক্রুসিফাইড হন নি। এরাও খ্রীষ্টান।
আমি এই কথাগুলো আগে বলি নি। কারণ, প্যাস্টর বলবেন, যে তিনি গসপল অব বারনাবাসে বিশ্বাস করেন না। তিনি নাজাহ হামদির পুথিগুলো বিশ্বাস করেন না। তিনি তাহলে কি বিশ্বাস করেন? বিশ্বাস করেন এ বাইবেল। আমি বাইবেল থেকেই প্রমাণ করেছি যে, যিশুখ্রিস্ট নাকি আমাদের পাপের জন্য মারা গিয়েছেন? স্বেচ্ছায় মারা গেছেন। যদি গসপেল অব ম্যাথিও পড়েন দেখবেন ২৭ নং অধ্যায়ের ৪৬ নং অনুচ্ছেদ বলছে। এছাড়াও গসপেল অব মার্ক ১৫ নং অধ্যায়ের ৩৪ নং অনুচ্ছেদ বলছে, যখন যিশুকে ক্রুশে ঝোলানো হলো তিনি কাঁদছিলেন এল্লাই এল্লাই লামা সাবাকতানি। এল্লাই এল্লাই লামা সাবাকতানি। যার অর্থ হে ঈশ্বর, হে ঈশ্বর, কেন তুমি আমাকে ত্যাগ করলে। চিন্তা করুন যিশুখ্রিস্ট স্বেচ্ছায় ক্রুশবিদ্ধ হলেন। তারপর সেখান থেকে কাঁদছিলেন ঈশ্বর, ঈশ্বর, কেন তুমি আমাকে ত্যাগ করলে? এতে প্রমাণ হয় যে, তিনি স্বেচ্ছায় ক্রুশবিদ্ধ হননি। তাহলে কাঁদবেন কেন? হোক সেটা মারাঠি বাইবেল অথবা উর্দু বাইবেল অথবা হিব্রু উদ্ধৃতিটা সব বাইবেলেই আছে। এল্লাই এল্লাই লামা সাবাকতানি। অনুবাদটা তার পরে। ঈশ্বর, ইশ্বর, কেন তুমি আমাকে ত্যাগ করলে? এতে প্রমাণ হয় যে, যিশুখ্রিস্ট স্বেচ্ছায় ক্রুশবিদ্ধ হননি।
এবারে আমার লেকচারটি শেষ করার আগে বলবো যে, যিশুখ্রিস্ট আসলে ক্রুসিফাইড হন নি। এটা ছিল ক্রুসিফিকশন। আমি আমার লেকচার শুরু করার সময় পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম। সূরা ইসরা’র ১নং আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে–
“যখন সত্য এসে মিথ্যার সামনে দাঁড়ায় মিথ্যা তখন বিলুপ্ত হয়। কারণ, মিথ্যা তার প্রকৃতিগত কারণেই বিলুপ্ত হবে।”
সমাপ্ত
পিস টিভির আরো দুটি লেকচার সিরিজ সংযোজন করা হল–
বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ–
ক. আঃ রহিম গ্রীন ও
খ. ইউসুফ এসটেস।
রিডিং সেটিংস
Bangla
System
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন