HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নাবালক ছেলের ইমামতের বিধান

লেখকঃ সানাউল্লাহ নজির আহমদ

একদল ফিকাহবিদ এর সাথে দ্বিমত পোষণ করেন, এবং এর উত্তর:
তারা বলেন নফল সালাতে নাবালক ছেলের ইমামত বৈধ, ফরয সালাতে নয়। তাদের দলিল ইব্‌ন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস:

لا يؤم الغلام حتى يحتلم .

“কোন ছেলে ইমামত করবে না, যতক্ষণ না সে সাবালক হয়”। মুসান্নাফ ইব্‌ন আব্দুর রায্‌যাক: (৩৮৪৭)

এর উত্তর: নাইলুল আওতার: (৩/২০২) গ্রন্থে শাওকানি ও ফাতহুল বারি: (২/২১৭) গ্রন্থে ইব্‌ন হাজার প্রমুখগণ হাদিসটি দুর্বল বলেছেন, এ হাদিস দলিল হিসেবে পেশ করার উপযুক্ত নয়।

তাদের দ্বিতীয় দলিল যুক্তি: নাবালক ছেলের সালাত তার ব্যাপারে নফল, সে যদি ফরয আদায়কারীর ইমামত করে তাহলে ইমাম ও মুক্তাদির সালাতে অমিল ও বৈপরীত্য সৃষ্টি হয়, কারণ তার সালাত নফল, এখনো তার ওপর সালাত ফরয হয়নি, আর মুক্তাদির সালাত ফরয, অথচ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

إِنَّمَا جُعِلَ الْإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ فَلَا تَخْتَلِفُوا عَلَيْهِ، فَإِذَا رَكَعَ فَارْكَعُوا ...

“ইমাম নির্ধারণ করা হয়েছে তার অনুসরণ করার জন্য, অতএব তোমরা তার বিরোধিতা করো না, যখন সে রুকু করে তোমরা রুকু কর...” বুখারি: (৬৮৩), মুসলিম: (৬৩০)

এর উত্তর: এ হাদিসের ব্যাপকতা সালাতের সকল আমলের সাথে নিয়তকে অন্তর্ভুক্ত করে ঠিক, কিন্তু মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহুর হাদিসের কারণে নিয়ত এ ব্যাপকতায় শামিল হবে না, যেখানে রয়েছে:

أَنَّ مُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، كَانَ يُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ يَأْتِي قَوْمَهُ فَيُصَلِّي بِهِمُ الصَّلَاةَ،

“মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে সালাত আদায় করতেন, অতঃপর নিজ সম্প্রদায়ের নিকট এসে তাদের সাথে পুনরায় তা আদায় করতেন”। বুখারি: (৫৬৬৮); আবু দাউদ: (৫০৬), মুসনাদে আহমদ: (১৩৯৫৪) ও বায়হাকি: (৪৬৯৭) ইত্যাদি গ্রন্থে রয়েছে তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে এশার সালাত আদায় করে নিজ কওমের নিকট এসে তাদের সাথে পুনরায় তা আদায় করতেন। এখানে তার সালাত ছিল নফল আর তার মুক্তাদির সালাত ছিল ফরয, এ থেকে প্রমাণিত হয় নিয়তে ইমামের অনুসরণ জরুরি নয়, অতএব নাবালক ছেলের সালাত যদিও নফল তার পিছনে সাবালকের ইক্তিদা সহিহ।

তারা বুখারিতে বর্ণিত আমর ইব্‌ন সালামা থেকে বর্ণিত হাদিস সম্পর্কে বলেন, তিনি নফল সালাতে ইমামত করেছেন।

এর উত্তর: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “অমুক সালাত অমুক সময়ে আদায় কর ও অমুক সালাত অমুক সময়ে আদায় কর” দ্বারা স্পষ্ট বুঝে আসে যে, এ ঘটনা ছিল ফরযের ক্ষেত্রে। অধিকন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বাণী: “যখন সালাত উপস্থিত হয়, তখন তোমাদের কেউ যেন আযান দেয়” ফরয ব্যতীত নফলের কোন সম্ভাবনা রাখে না, কারণ নফল সালাতে আযান বৈধ নয়। জামাতের সাথে আদায় করার নির্দেশও প্রমাণ করে এ সালাত ফরয, নফল নয়, কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ নির্দেশ নেই যেখানে তিনি নফল সালাত জামাতের সাথে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন।

ফিকাহবিদদের একটি মূলনীতি হচ্ছে, নফল সালাতে যার ইমামত সহিহ ফরয সালাতে তার ইমামতি সহিহ। এ হিসেবেও নাবালক ছেলের ইমামত বৈধ।

কতক আলেম বলেছেন:

নাবালক ছেলের পিছনে সালাত আদায় করা মকরুহ।

অপর একদল ফিকাহবিদ বলেন:

ফরয ও নফল সালাতে নাবালক ছেলের ইমামত নাজায়েজ। তাদের দলিল নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিস:

" رُفِعَ الْقَلَمُ عَنْ ثَلَاثَةٍ : عَنِ النَّائِمِ حَتَّى يَسْتَيْقِظَ، وَعَنِ الصَّبِيِّ حَتَّى يَحْتَلِمَ، وَعَنِ الْمَجْنُونِ حَتَّى يَعْقِلَ "

“তিন ব্যক্তির ওপর থেকে কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে, ঘুমন্ত ব্যক্তির ওপর থেকে যতক্ষণ না সে জাগ্রত হয়, বাচ্চার ওপর থেকে যতক্ষণ সে সাবালক হয়। পাগলের ওপর থেকে যতক্ষণ না তার চেতনা ফিরে আসে”। আবু দাউদ: (৩৮২৭), তিরমিযি: (১৩৩৯), ইব্‌ন মাজাহ: (২০৩১)

এর উত্তর: তাদের ওপর থেকে কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে বা তারা শরিয়তের আদিষ্ট নয় তাই তাদের পিছনে সালাত শুদ্ধ নয় এ কথা সঠিক নয়। বুঝমান নাবালক ছেলের সালাত তার নিজের জন্য সহিহ এতে কারো দ্বিমত নেই, যার নিজের সালাত সহিহ তার অপরের ইমাম হওয়া সহিহ, এটা ফিকাহবিদদের নিকট স্বীকৃত মূলনীতি। সুতরাং নাবালক ছেলের ইমামতি সহিহ।

তারা আরো বলেন: নাবালক ছেলের ব্যাপারে নিশ্চয়তা থাকে না সে সালাতের শর্ত পূর্ণ করেছে কি-না। তাই তার পিছনে সালাত শুদ্ধ নয়।

এর উত্তর: এ কথা ভিত্তিহীন, এর পশ্চাতে কোন দলিল নেই।

শায়খ বাস্‌সাম রাহিমাহুল্লাহ বুখারিতে বর্ণিত আমর ইব্‌ন সালামার হাদিস উল্লেখ করে বলেন: এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত হয় বুঝমান ছেলের ইমামতি দুরস্ত আছে, এমনকি ফরয সালাতেও। যদি বলা হয়: হতে পারে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ইমামতি সম্পর্কে জানতেন না?

এর উত্তর: নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা জানতেন, এর ওপর তার নীরবতা পালন করা ও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর ওহি নাযিল না করা প্রমাণ করে যে, তাদের কর্ম সঠিক ছিল”। দেখুন: তাওযিহুল কালাম মিন বুলুগুল মারাম।

আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ সালেহ আল-উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহ “যাদুল মুস্তাকনি” গ্রন্থের ব্যাখ্যায় বলেন: নাবালক যদি ইমাম হয় আর মুক্তাদি যদি হয় সাবালক, তাহলে সাবালকের সালাত শুদ্ধ হবে না দু’টি দলিলের কারণে: একটি হচ্ছে হাদিস, অপরটি যুক্তি।

হাদিস যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করা হয়, তিনি বলেছেন:

(( لا تقدموا سفهاءكم وصبيانكم في صلاتكم ...))

“তোমরা তোমাদের সালাতে বোকা ও বাচ্চাদের অগ্রসর কর না”। দায়লামি: (৭৩১০)

আর যুক্তি হচ্ছে নাবালকের সালাত নফল, সাবালকের সালাত ফরয, নিঃসন্দেহে ফরযের মর্তবা নফলের ঊর্ধ্বে। তাই ফরয আদায়কারী হবে অনুকরণীয় নফল আদায়কারী হবে অনুকরণকারী। আমরা যদি ফরয আদায়কারীর সালাত নফল আদায়কারীর পশ্চাতে বৈধ বলি, তাহলে আমরা অধিক মর্যাদাশীলকে কম মর্যাদার অনুগত করে দিলাম, যা কিয়াস ও যুক্তির বিপরীত, যুক্তি হচ্ছে ফরয আদায়কারী অনুকরণীয় হবে, অনুকরণকারী নয়। হ্যাঁ নাবালকের পিছনে নাবালকের সালাত বৈধ, এতে কোন দ্বিমত নেই। লেখক [যাদুল মুস্তাকনি‘ এর লেখক] এ অভিমত গ্রহণ করেছেন। এটা এক অভিমত।

দ্বিতীয় অভিমত হচ্ছে সাবালকের সালাত নাবালকের পিছনে বৈধ। এর দলিল বুখারিতে বর্ণিত আমর ইব্‌ন সালামার হাদিস। আর যে হাদিস পেশ করা হয়েছে:

(( لا تقدموا صبيانكم في صلاتكم )) فهو حديث لا أصل له إطلاقا، فلا يصح عن النبي صلى الله عليه وسلم .

“তোমরা তোমাদের সালাতে বোকা ও বাচ্চাদের অগ্রসর কর না” এ হাদিসের কোন ভিত্তি নেই।

আর যে কিয়াস ও যুক্তি পেশ করা হয়েছে, তার উত্তর হচ্ছে একটি মূলনীতি: নস ও দলিলের মোকাবিলায় কিয়াস ও যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ কিয়াস মূলত মানুষের অভিমত, ভুল ও সঠিক উভয় হতে পারে, দ্বীনের ব্যাপারে মানুষের অভিমত গ্রহণযোগ্য নয়, যেহেতু আমাদের সামনে সহিহ হাদিস রয়েছে, তাই এখানে কিয়াসের কোন মূল্য নেই।

হ্যাঁ কেউ বলতে পারে, আমর ইব্‌ন সালামার ঘটনা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতেন, না জানতেন না?

এর উত্তরে আমরা বলতে পারি তিনি জানতেন, অথবা জানতেন না, অথবা আমরা তা জানি না। যদি তিনি জানতেন তাহলে এ হাদিস দ্বারা দলিল দেয়া স্পষ্ট। আর যদি তিনি না জানেন তাহলে আমরা বলব আল্লাহ অবশ্যই জানতেন, ওহি নাযিলের সময় কোন বিষয়ে আল্লাহর নীরবতা ও মৌন সমর্থন তার বৈধতার প্রমাণ। কারণ যদি তা নিষিদ্ধ হতো, তাহলে আল্লাহ অবশ্যই তার নিষেধাজ্ঞা জারি করতেন, রাসূলের জানা থাক বা না থাক। এর দলিল:

প্রথমত: আল্লাহ তাআলার বাণী:

﴿يَسۡتَخۡفُونَ مِنَ ٱلنَّاسِ وَلَا يَسۡتَخۡفُونَ مِنَ ٱللَّهِ وَهُوَ مَعَهُمۡ إِذۡ يُبَيِّتُونَ مَا لَا يَرۡضَىٰ مِنَ ٱلۡقَوۡلِۚ وَكَانَ ٱللَّهُ بِمَا يَعۡمَلُونَ مُحِيطًا ١٠٨﴾ [ النساء : ١٠٨ ]

“তারা মানুষের কাছ থেকে লুকাতে চায়,আর আল্লাহর কাছ থেকে লুকাতে চায় না। অথচতিনি তাদের সাথেই থাকেন যখন তারা রাতেএমন কথার পরিকল্পনা করে যা তিনি পছন্দকরেন না। আর আল্লাহ তারা যা করে তাপরিবেষ্টন করে আছেন”। সূরা নিসা: (১০৮)

এখানে আল্লাহ তাদের রাতের অন্ধকারের পরিকল্পনা ফাঁস করে দিয়েছেন। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহ কোন অবৈধ বিষয়ের ওপর নীরবতা পালন করেন না, মানুষের জানা থাক বা না থাক।

দ্বিতীয়ত: সাহাবায়ে কেরাম আযল বৈধতার প্রমাণ হিসেবে বলেন:

" كُنَّا نَعْزِلُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَالْقُرْآنُ يَنْزِلُ "

“আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে আযল করতাম, এ দিকে কুরআনও নাযিল হতো”। বুখারি: (৪৮৩৪) তারা কুরআন নাযিলের সময় আযল করত, কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে নিষেধ করেননি, তাই তারা আল্লাহর মৌন সমর্থন ও নীরবতা থেকে বুঝেছেন আযল বৈধ। অতএব আমর ইব্‌ন সালামার ইমামত বৈধ। ইব্‌ন উসাইমিন রাহিমাহুল্লাহুর কথা এখানে শেষ।

[আযল: স্ত্রী সহবাসের সময় যোনীতে বীর্যপাত না করে বাইরে বীর্যপাত ঘটানোকে আযল বলা হয়।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন