মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনসমক্ষে বসা ছিলেন। এমন সময় তাঁর কাছে এক ব্যক্তি এসে জিজ্ঞাসা করলেন ‘ঈমান কী?’ তিনি বললেন, ‘ঈমান হলো, আপনি বিশ্বাস রাখবেন আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, (কিয়ামতের দিন) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের প্রতি এবং তাঁর রাসূলগণের প্রতি। আপনি আরো বিশ্বাস রাখবেন পুনরুত্থানের প্রতি।’ তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইসলাম কী?’ তিনি বললেন, ‘ইসলাম হলো, আপনি আল্লাহর ইবাদত করবেন এবং তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করবেন না, সালাত কায়েম করবেন, ফরয যাকাত আদায় করবেন এবং রমযানের সাওম পালন করবেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘ইহসান কী?’ তিনি বললেন, ‘আপনি এমন ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবেন যেন আপনি তাঁকে দেখছেন, আর যদি আপনি তাঁকে দেখতে না পান তবে (বিশ্বাস রাখবেন যে,) তিনি আপনাকে দেখছেন।’ ঐ ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কিয়ামত কবে হবে?’ তিনি বললেন, ‘এ ব্যাপারে যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, তিনি জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশি জানেন না। তবে আমি আপনাকে কিয়ামতের আলামতসমূহ বলে দিচ্ছি, বাঁদী যখন তার প্রভুকে প্রসব করবে এবং উটের নগণ্য রাখালেরা যখন বড় বড় অট্টালিকা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে। (কিয়ামতের বিষয়) সেই পাঁচটি জিনিসের অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।’ এরপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই আয়াতটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করলেন,
“কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহই নিকট।” [সূরা লুকমান, আয়াত: ৩৪]।
এরপর ঐ ব্যক্তি চলে গেলে তিনি বললেন, ‘তোমরা তাকে ফিরিয়ে আনো।’ তারা কিছুই দেখতে পেল না। তখন তিনি বললেন, ‘ইনি জিবরীল আলাইহিস সালাম। লোকদের দীন শেখাতে এসেছিলেন”।
উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “একবার আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমীপে অবস্থান করছিলাম। এমন সময় একজন লোক আমাদের কাছে এসে হাযির হলেন। তার পরিধানের কাপড় ছিল সাদা ধবধবে, মাথার কেশ ছিল কালো কুচকুচে। তার মধ্যে সফরের কোনো চিহ্ন ছিল না। আমরা কেউ তাকে চিনি না। তিনি নিজের দুই হাঁটু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই হাঁটুর সাথে লাগিয়ে বসে পড়লেন আর তার দুই হাত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই উরুর উপর রাখলেন। তারপর তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম সস্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইসলাম হলো, তুমি এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোনো সত্য ইলাহ নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, সালাত কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে, রমযানের সাওম পালন করবে এবং বাইতুল্লাহ পৌঁছার সামর্থ্য থাকলে হজ পালন করবে। আগন্তুক বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। তার কথা শুনে আমরা বিষ্মিত হলাম যে, তিনিই প্রশ্ন করেছেন আর তিনিই-তা সত্যায়িত করছেন। আগন্তুক বললেন, আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঈমান হলো আল্লাহর প্রতি, তার ফিরিশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসূলগণের প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান আনবে, আর তাকদিরের ভাল-মন্দের প্রতি ঈমান রাখবে। আগন্তুক বললেন,আপনি ঠিকই বলেছেন। তারপর বললেন, আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইহসান হলো, এমনভাবে ইবাদত-বন্দেগী করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, যদি তুমি তাকে নাও দেখ, তাহলে এ বিশ্বাস রাখবে যে, তিনি তোমাকে দেখছেন। আগন্তুক বললেন, আমাকে কিয়ামত সস্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বিষয়ে প্রশ্নকারীর চাইতে যাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তিনি অধিক অবহিত নন। আগন্তুক বললেন, আমাকে এর আলামত সস্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তা হলো এই যে, দাসী তার প্রভুর জননী হবে এবং নগ্নপদ, বিবস্ত্রদেহ দরিদ্র মেষপালকদের বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে। উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, পরে আগন্তুক প্রস্থান করলেন। আমি বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, হে উমার! তুমি জানো, এই প্রশ্নকারী কে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই সম্যক জ্ঞাত আছেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিনি তো জিবরীল। তোমাদের তিনি দীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন”।
সহীহ, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৮, কয়েকটি সনদে। যাতে ইয়াহইয়া ইবন ই‘য়ামার রহ. থেকে বর্ণিত,
“সর্বপ্রথম ‘কাদর’ (তাকদীরের ভালো-মন্দ) সম্পর্কে বসরা শহরে ‘মা‘বাদ আল জুহানী কথা তোলেন। আমি (ইয়াহইয়া ইবন ই‘য়ামার) এবং হুমাইদ ইবন আব্দুর রহমান আল হিমইয়ারী হজ অথবা উমরা আদায়ের জন্য মক্কায় আসলাম। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছিলাম যে, যদি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো সাহাবীর সাক্ষাৎ পাই তাহলে তার কাছে এসব লোক তাকদীর সস্পর্কে যা বলে বেড়াচ্ছে, সে বিষয়ে জিজ্ঞেস করতাম। সৌভাগ্যক্রমে আমরা আব্দুল্লাহ ইবন উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুকে মসজিদে প্রবেশরত অবস্থায় দেখা পাই। আমরা তার কাছে গিয়ে একজন তার ডানপাশে এবং আর একজন বামপাশ দিয়ে তাকে ঘিরে ধরলাম। আমার মনে হলো, আমার সাথী চান যে, আমিই কথা বলি। আমি বললাম, হে আবু আব্দুর রহমান! (আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর কুনিয়াত ছিল আবু আব্দুর রহমান) আমার দেশে এমন কতিপয় লোকের আবির্ভাব হয়েছে যারা কুরআন পাঠ করে এবং ইলমে দীন সম্পর্কে গবেষণা করে। তিনি তাদের অবস্থা সস্পর্কে আরো কিছু উল্লেখ করেন এবং বলেন যে, তারা মনে করে তাকদীর বলতে কিছু নেই। সবকিছু তাৎক্ষনিকভাবে ঘটে। আব্দুল্লাহ ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, তাদের সাথে তোমাদের দেখা হলে বলে দিও যে, তাদের সাথে আমার কোনো সস্পর্ক নেই এবং আমার সঙ্গে তাদেরও কোনো সম্পর্ক নেই। আল্লাহর কসম! যার উপর আবদুল্লাহ ইবন উমর শপথ করছে তা হলো, যদি এদের কেউ উহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনার মালিক হয় এবং তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে, তাকদীরের প্রতি ঈমান না আনা পর্যন্ত আল্লাহ তা কবুল করবেন না। তারপর তিনি বললেন, আমাকে আমার পিতা উমার ইবন খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হাদীস শুনিয়েছেন। অতঃপর তিনি পুরো হাদীস বর্ণনা করেন।
হাদীসে উল্লিখিত বাক্য «فَاكْتَنَفْتُهُ أَنَا وَصَاحِبِي» এর অর্থ হলো, আমি ও আমার সাথী তার দুপাশে (একজন ডান পাশে আরেকজন বাম পাশে) ঘিরে ধরলাম।
হাদীসে উল্লিখিত আরেকটি বাক্য «يَتَقَفَّرُونَ الْعِلْمَ» এর অর্থ, তারা ইলমে দীন অনুসরণ করে এবং তা খুঁজে বেড়ায়, تقفر হচ্ছে কোনো কিছুর অনুসরণ করা।
হাদীসে উল্লিখিত আরেকটি বাক্য «أَنَّ الْأَمْرَ أُنُفٌ» এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো সবকিছু তাৎক্ষনিক ভাবে ঘটে। এতে তাকদীর বা কারো ইচ্ছার হাত নেই। যেমন বলা হয়, روضة أنف যেখানে আগের কিছু বিবেচনা করা হয় না, أنف الشيء কোনো কিছুর আগ্রভাগ।
ইমাম বাগভী রহ. বলেন, “এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাহ্যিক আমলকে ইসলাম এবং অন্তরের বিশ্বাসকে ঈমান বলেছেন। মূলত এ কথা দ্বারা এটা বুঝার সুযোগ নেই যে, আমলসমূহ ঈমানের অংশ নয়। অথবা এটাও বলা যাবে না যে, অন্তরের সত্যায়নকে ইসলাম বলে না। বরং এটা একটি মৌলিক বাক্যের ব্যাখ্যা যে বাক্যটি সবকিছুকেই শামিল করে, আর তা হচ্ছে দীন। আর এ জন্যই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
«ذلك جِبْرِيلُ أَتَاكُمْ يُعَلِّمُكُمْ أمر دِينَكُمْ» .
“তিনি জিবরীল আলাইহিস সালাম। তোমাদেরকে তিনি দীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন”। বস্তুত: ঈমান ও ইসলাম উভয় শব্দ দ্বারাই অন্তরের সত্যায়ন ও আমল বুঝায়। এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী,
“আর যে ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো দীন চায়, তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না এবং সে আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ৮৫]
এসব আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন যে, তিনি যে দীনের ওপর রাজি-খুশি ও বান্দাহর থেকে গ্রহণ করবেন তা হলো ইসলাম। আর অন্তরের সত্যায়নের সাথে আমল না থাকলে আল্লাহর কাছে তা গ্রহণযোগ্য ও সন্তুষ্টির পর্যায়ে যাবে না”। শরহে সুন্নাহ, ১/১০-১১।
ইয়াহইয়া ইবন ইয়া‘মুর রহ. বলেন, আমি ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমাকে বললাম, আমাদের মধ্যে কিছু লোক আছেন যারা মনে করেন ভালো-মন্দ সবই তাদের হাতে (তাকদীর- বলতে কিছু নেই। সবকিছু তাৎক্ষনিকভাবে ঘটে)। তারা মনে চাইলে আমল করে আর ইচ্ছা করলে আমল ছেড়ে দেয়। ইবন উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তুমি তাদেরকে বলে দাও যে, আমি তাদের দলভুক্ত নই এবং তারাও আমার দলের অন্তর্ভুক্ত নয়। অতঃপর তিনি বলেন, একবার জিবরীল আলাইহিস সালাম রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে মুহাম্মাদ! ইসলাম কী? তিনি উত্তরে বললেন, ইসলাম হলো, তুমি এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, আল্লাহ ব্যতীত (সত্য) কোনো ইলাহ নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল, সালাত কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে, রমযানের সাওম পালন করবে এবং বাইতুল্লাহ পৌঁছার সামর্থ্য থাকলে হজ পালন করবে। জিবরীল বললেন, আমি যখন এ কাজগুলো করবো তখন কি আমি মুসলিম? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। তারপর বললেন, ইহসান কী? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইহসান হলো, এমনভাবে আল্লাহকে ভয় করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ। যদি তুমি তাকে নাও দেখো, তাহলে তিনি তোমাকে দেখছেন। জিবরীল বললেন, আমি যখন এ কাজগুলো করবো তখন কি আমি মুহসিন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন। তাহলে ঈমান কী? রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঈমান হলো আল্লাহর প্রতি, তার ফিরিশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসূলগণের প্রতি এবং মৃত্যুর পরে পুনর্জীবিত হওয়া, জান্নাত, জাহান্নাম আর তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান আনা। জিবরীল বললেন, আমি যখন এ কাজগুলো করবো তখন কি আমি মুমিন? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন”।
সহীহ, মুসনাদ আহমদ, হাদীস নং ৫৮৫৬।
মুসনাদে আহমদের অন্য বর্ণনায় এসেছে,
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمِثْلِهِ، قَالَ : وَكَانَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ يَأْتِي النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي صُورَةِ دِحْيَةَ . ইনব উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উপরের হাদীসের ন্যায় অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, “জিবরীল আলাইহিস সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ‘দেহইয়া কালবী’ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর আকৃতিতে আসতেন”।
আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মজলিসে বসা ছিলেন। এমন সময় জিবরীল আলাইহিস সালাম আসলেন। তিনি নিজের দুই হাঁটু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই হাঁটুর সাথে লাগিয়ে তাঁর সামনে বসে পড়লেন আর তার দুই হাত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুই হাঁটুর উপর রাখলেন। তারপর তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমাকে ইসলাম সস্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইসলাম হলো, তুমি নিজেকে আল্লাহর সামনে সমর্পণ করবে আর এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করবে যে, একমাত্র আল্লাহ ব্যতীত কোনো (সত্য) ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দাহ ও রাসূল। জিবরীল বললেন, আমি যখন এরূপ করবো তখন আমি মুসলিম হবো?। রাসূল বললেন, আপনি যখন এরূপ করবেন তখন আপনি আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) হবেন। জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ঈমান হলো আল্লাহর প্রতি, আখিরাতের প্রতি, তাঁর ফিরিশতাদের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণের প্রতি, মৃত্যু হওয়ার প্রতি, মৃত্যুপরবর্তী জীবনের প্রতি, জান্নাত ও জাহান্নামের প্রতি, হিসাব নিকাশ, মিযান ও তাকদীরের ভালো-মন্দের প্রতি ঈমান রাখবে। জিবরীল বললেন, আমি যখন এরূপ করবো তখন আমি কি ঈমান আনয়নকারী (মুমিন) হলাম? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ, আপনি যখন এরূপ করবেন তখন আপনি মুমিন হবেন। তারপর বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে ইহসান সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ইহসান হলো, আল্লাহর জন্য এমনভাবে আমল করবে যেন তুমি আল্লাহকে দেখছ, যদি তুমি তাকে নাও দেখ, তাহলে তিনি তো তোমাকে দেখছেন। জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন, আমাকে কিয়ামত কখন হবে তা বিবৃত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি। এ তো এমন পাঁচটি বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত যা আল্লাহ ব্যতীত কেউ (সত্যিকারের জ্ঞান) জানেন না।
“নিশ্চয় আল্লাহর নিকট কিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। আর তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং জরায়ূতে যা আছে, তা তিনি জানেন। আর কেউ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন স্থানে সে মারা যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত”। [সূরা : লুকমান, আয়াত: ৩৪]
তবে আপনি চাইলে আমি এর চেয়ে ছোট বিষয় কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে আপনাকে বলতে পারি। তখন জিবরীল আলাইহিস সালাম বললেন, নিশ্চয়ই হে আল্লাহর রাসূল, আপনি আমাকে এর আলামত সস্পর্কে অবহিত করুন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যখন তুমি দেখবে যে, দাসী তার প্রভু- বা পালনকর্তাকে জন্ম দিচ্ছে, আর মেষপালকদের বিরাট বিরাট অট্টালিকার প্রতিযোগিতায় গর্বিত দেখতে পাবে। আর তুমি দেখবে নগ্নপদ, ক্ষুধার্ত, অভাবী লোকেরা মানুষের নেতা হবে। এগুলো কিয়ামতের নিদর্শন ও আলামত। জিবরীল আলাইহিস সালাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মেষপালক, নগ্নপদ, ক্ষুধার্ত (নিঃস্ব), অভাবী লোক কারা? তিনি বললেন, এরা আরব”।
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।